#তোর_জন্য
#sumaiya_moni
#পার্টঃ০৫
হঠাৎই মাসুদ সাহেবের হাত থেকে টিভির রিমোট পড়ে গেলো।
রিমোট পড়ার শব্দে সবার মনযোগ মাসুদ সাহেবের দিকে গেল। অতঃপর টিভির দিকে চোখ দিতেই মুহুর্তের মধ্যেই নিরবতার ছায়া নেমে আসছে,,,,,,,,,,,,,।
!
!
!
আট বছর আগের কাহিনি আবার শুরু হইছে!!
(মনির মা-বাবা) আশরাফ সাহেব ও তার সহধর্মিণীর খুনের তদন্ত শুরু হচ্ছে নতুনভাবে। ঠিক আট বছর পরে।
কিন্তু আশরাফ সাহেবের এমন ভয় পাওয়ার কি আছে!
জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো সবাই তারদিকে।
আশরাফ সাহেব সবাইকে ঠিক রাখার জন্য মুখে হাসির রেখা টেনে বললেন,,,,,
অবশেষে খুনের রহস্য উদ্ধার হবে।কিন্তু আট বছর পরেই বা আবার নতুন করে তদন্ত শুরু হলো কেন!কারাই বা করলো,,,,
আদ্রিয়ান ঃ পাপ বাপকেও ছাড়েনা।
তাই হয়তো,,,,,,।
আদ্রিয়ানের কথা শুনে ওর বাবা চিন্তিত হয়ে পড়লেন। কথাটা আদ্রিয়ান কাউকে উদ্দেশ্য করে বলেনিতো!!
তিনি সাথে সাথে আদ্রিয়ানের দিকে তাকালো, দেখলেন আদ্রিয়ান মিটমিট করে হাসছে।
মাসুদ সাহেব বুঝতে পারলেন কিছুটা,,, তার ছেলের হাত কিছুটা হলেও আছে এই তদন্তের মধ্যে। তাই তিনি চিন্তিত হয়ে পড়লেন।কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে।
রোহানা আন্টি মাসুদ সাহেবের দিকে তাকালেন একবার। তার মুখটাও চিন্তায় শুকিয়ে গেছে হয়তো।
আশিক আদ্রিয়ানের দিকে তাকালো,,,দেখছে
আদ্রিয়ানের মুখে এখনো হাসির রেখে ফুটে আছে।
রোহানার বোন রোহানার দিকে তাকিয়ে আবার মেয়ের(রিয়ার) মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।
আদ্রিয়ানের ফুফু চা নিয়ে আসলো,,,সবাইকে চুপচাপ দেখে তিনি রান্নাঘরের দিকে পা দিলেন,তখনি,,,,,
আদ্রিয়ান ঃ ফুফু!!
আদ্রিয়ানের ডাকে পিছনে ফিরলেন।
ফুফুঃ হুম।
আদ্রিয়ান ঃ নিলয়কে দেখছিনা যে। আমি আসছি সকালে কিন্তু ও এয়ারপোর্টেও গেলোনা। বাড়িতেও আসলোনা একবারের জন্যও।
আমি আসছি দেশে,,,নিলয় কি জানেনা(মন খারাপ করে)
ফুফুঃ আদ্রিয়ানের কথা শুনে মন খারাপ হহে গেলো।
আসলে নিলয় বাড়িতে আছে।কোথাও বের হয়না বাসা থেকে। আমার অনেক রান্না পড়ে আছে। আমি যাচ্ছি( কথা এড়িয়ে চলে যেতে চাইলেন)।
আদ্রিয়ান ঃ এড়িয়ে যাচ্ছো আমায়?
কি হয়েছে বলো! আমি আসছি জেনেও নিলয় বাড়িতে থাকবে এমন কোনো কথা নাই।
সত্যি বলবা নাকি,, আমি কিছু করবো(রেগে)
ফুফুঃ একটু ভয় পেলো,,,সবাই জানেন আদ্রিয়ানের রাগ হলে কি করতে পারে। এতদিনের সাধনা নিমিষেই শেষ করতে পারেননা।
যাদের সন্দেহ করছেন, কিন্তু টাকা ও ক্ষমতার জন্য তিনি কিছুই করতে পারেননি।
এখন আদ্রিয়ান আসছে,তাহলে হাত ছাড়া কিভাবে করা যায়। এসব ভেবেই তিনি আদ্রিয়ানকে সত্য কথা বলে দিলেন।
~~আসলে নিলয়ের পা নেই(মাথা নিচু করে,, আমতা আমতা করে বললেন)
আদ্রিয়ান ঃ এ কথাটা হয়তো শুনতে চাইছিলোনা।
~মানেএ!!কিভাবে কি হইছে!!
ওর পা নেই(আফসোস নিয়ে)
ফুফুঃ চোখের পানি চলে আসলো।কিন্তু ভয়ে কিছু বললোন। তাড়াতাড়ি রান্না ঘরে ছুটে গেলেন।
আদ্রিয়ানের বিষ্ময় কাটছেনা এখনও। এটা কি শুনলো! নিলয়ের পা নেই!
মানুষ এতটা খারাপ কিভাবে হতে পারে!! নিলয়কেও শেষ পর্যন্ত ছাড়লোনা!
আদ্রিয়ান রাগে ঘৃনায় তাকালো,কারো দিকে। কিন্তু কিছু বললোনা।
শুধু আফসোস জানালো ইশারায়।
অতঃপর দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে উঠে গেল। নিলয়কে দেখার উদ্দেশ্য। সাথে ওর দুইটা বন্ধু গেল আশিক, নিবিড়।
মাসুদ সাহেব কিছু একটা ভেবে আদ্রিয়ানের জন্মদিনের আয়োজন নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়লেন। যা করতে হবে খুব তাড়াতাড়ি। পরে হয়তো অনেক সময় চলে যাবে কাজের কিছুই হবেনা।
~~~
রুমে বসে বসে আদ্রিয়ান ভাইয়ার কথাগুলো ভাবছি। হঠাৎ হঠাৎ পরিবর্তন হচ্ছে। ঠিক গিরগিটির মতো।
আমার ভাবনায় আগুন ধরিয়ে জ্বালিয়ে -পুড়িয়ে ছাই করে দিলো মিস. হাফ প্যান্ট রিয়া।
দেখলেই গা জ্বালা করে। ইচ্ছা করে ঘোড়ার লেজের মতো চুলগুলোকে কেটে দিতে পারি। তাহলে আর আমার আদ্রিয়ান ভাইয়ার কাছে ঘেষে থাকবেনা।
আমার আদ্রিয়ান ভাইয়া!!কথাটা মনে পড়তেই নিজে নিজেই লজ্জা পেলাম। সে আমার কিভাবে হয়। সে তো এই মিস. ঘোড়ার লেজেরই।
ঘোড়ার লেজ!!নামটা বড়ই অদ্ভুত,,, মানুষের নাম এটা হয়!!
ভেবেই নিজে নিজে হেসে দিলাম।
রিয়া জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আর রাগে কটমট করছে। মনে হচ্ছে গিলে ফেলবে আমায়।
গিলে ফেলতেও পারে,,,আস্ত একটা রাক্ষসী। আদ্রিয়ান ভাইয়াকেই নিয়ে গেল। হুহ,,।
তাতে আমার কি,,,,!
~~~~~~~~~~~~~
আদ্রিয়ান যে এমন একটা কান্ড করতে পারে। তা বুঝতেই পারছিল মাসুদ সাহেব।
আদ্রিয়ানের ফুফু ভয়ে ঢোক গিললেন। কোনো বিপদ আসবেনা তো আবার!!
আদ্রিয়ান ও ওর বন্ধুরা নিলয়ের বিছানার পাশে বসে আছে। নিলয়ের মাথার কাছে আদ্রিয়ান।
নিলয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
নিলয় ঘুম থেকে জেগে উঠে আদ্রিয়ানকে দেখে খুশিতে দিশেহারা হয়ে পড়লো।
আদ্রিয়ানের সাথে ওর ফিরে যাওয়া অনেক কথা বললো। আদ্রিয়ান বিদেশে যাবার পর থেকে নিলয় আদ্রিয়ানকে কতোটা মিস করছে সেই কথাগুলো।
!
!
!
!
!
কথার শেষে আদ্রিয়ান নিলয়কে প্রশ্ন করলো। ওর পা ভেঙে গেলো কিভাবে।
আদ্রিয়ানের এমন প্রশ্নের জন্য নিলয় তৈরি ছিলনা। কিন্তু আদ্রিয়ানের রাগ ও জেদের কাছে হার মেনে নিলয়কে সত্যি কথাটাই বলতে হলো।
নিলয়ের বলা কথাগুলো শুনে আদ্রিয়ানের ঘোর কাটছেনা। হাত-পা কাঁপা শুরু করলো,,,,,।
#চলবে