তোর_জন্য #sumaiya_moni #সূচনা পর্ব

0
850

#তোর_জন্য
#sumaiya_moni
#সূচনা পর্ব

এয়ারপোর্টের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আছি বললে ভুল হবে,,,, ছিলাম দাঁড়িয়ে প্রায় ১ ঘন্টার মতো। কিন্তু ১ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরে এত বড় যে একটা ধমাকা দেখবো বুঝতে পারিনি।
এত বড় উপহার যে আমি নিতে পারছিনা আর।
হয়তো আমি অনেক ভাগ্যবতী তাই দীর্ঘ ৮ বছর পড়ে আজকে এত বড় একটা উপহার পেলাম। কতোটা ভাগ্যবান হলে মানুষ এমন উপহার পায় আমার জানা নেই।

**আমি সুমাইয়া মনি। সবাই মনি বলেই ডাকে। মা-বাবা কেউ নেই। আমার পরিবার বলতে শুধু মাসুদ আংকেলের পরিবারের সবাই। মাসুদ আংকেল হলেন আমার বাবার খুব কাছের বন্ধু। মা-বাবা মারা যাবার পরে তারাই আমার দায়িত্ব নিয়েছেন।
আজকে এয়ারপোর্টে যার জন্য দাঁড়িয়ে আসছিলাম,,,, সে আর কেউ নয়। মাসুদ আংকেলের একমাত্র ছেলে আদ্রিয়ান মাহমুদ।
সে আমার থেকে ৬-৭বছরের বড় হবে।ভাইয়া বলেই ডাকতাম নয়তো আন্টি রাগ করতো।কিন্তু যখন আমার বয়স ১২ বছরে চলে তখন আমার মা-বাবা খুন হয়ে যায়। কারা করে আমি ছোট থাকায় কিছুই জানতাম না। আর আমাকে জানানোও হয়নি। যতবারই জিজ্ঞেস করছি কাউকে,,,ততবারই ধমক খাইছি।আমার মা-বাবা থাকা অবস্থায় মাসুদ আংকেল ও আশরাফ( আমার বাবা),,,,,,,,, আমার ও আদ্রিয়ানের বিয়ে নিয়ে কথা বলেন। বড় হলে নাকি আমাকে আদ্রিয়ান ভাইয়ার বউ করে আনবে। আর আমার বাবাও বউ সাজিয়ে আমাকে শশুড় বাড়িতে তুলে দিবে।
সেই স্বপ্ন আর আমার বাবার পূরণ করা হলোনা। স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেছে।
বর্তমানে আমার বয়স ২০ বছর। আদ্রিয়ান ভাইয়ার ২৬ বছরে চলে। কিছুদিন পরেই ২৭ এ পদার্পণ করবে,,,মানে কিছুদিন পরেই ভাইয়ার জন্মদিন।
আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ি। আদ্রিয়ান ভাইয়া মাস্টার্স শেষ করে আসছে।
এতগুলো বছর কতোইনা স্বপ্ন বাধঁছিলাম মনে মনে। কখনো আদ্রিয়ান ভাইয়ার সাথে যোগাযোগ করতে পারতাম না রোহানা আন্টি(আদ্রিয়ানের মা) চাইতোনা, যে আমি আদ্রিয়ান ভাইয়ার সাথে কথা বলি। মাঝে মাঝে যদি আমি ফোন ধরতামও আদ্রিয়ান ভাইয়া কথা বলতোনা,,, লাইন কেটে দিতো।তবুও একাএকা অনেক স্বপ্ন বেঁধেছিলাম। নিমিষের মধ্যেই সবকিছু শেষ হয়ে গেলো।
যাকে নিয়ে কত স্বপ্ন বেঁধেছি, সবকিছুই ভেঙে গেলো।
!
!
!
আদ্রিয়ান ভাইয়াকে জরিয়ে ধরে গালে চুমু খাচ্ছে একটা মেয়ে। আদ্রিয়ান ভাইয়াও কিছু বলছেনা,,, তিনি হাসছেন।ওই মেয়েটা যে ভাইয়ার গার্লফ্রেন্ড তা বুঝতে আমার বেশি সময় লাগেনি।
আদ্রিয়ান ভাইয়ার সাথে তার চারজন বন্ধু আসছে। দুইজন ছেলে আর দুজন মেয়ে।
তার মধ্যে তার ওই গার্লফ্রেন্ডও একজন।
তারা সেল্ফি তুলছেন। কিন্তু ওই মেয়েটা আদ্রিয়ানের গাঁ ঘেঁষেই থাকছেন।

আংকেল, আন্টি আদ্রিয়ান ভাইয়ার কাছে গেলেন। কিন্তু আমি দাঁড়িয়ে আছি তাদের থেকে দূরে। আন্টি আমাকে বারবার বলছেন আমি যেনো আদ্রিয়ানের পাশ ঘেঁষে না থাকি।
এমনকি আমাকে এয়ারপোর্টেও নিয়ে আসতে চাননি,,,মাসুদ আংকেল জোর করে নিয়ে আসছেন আমাকে। আমিও নির্লজ্জের মতো আসছি, ভাবছিলামতো আদ্রিয়ানকে দেখে সব কষ্ট ভুলে যাবো। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে মা-বাবার সাথে চলে যাওয়াটাই হয়তো আমার সব কষ্টের ইতি ঘটাতে পারতো।
আদ্রিয়ান ভাইয়া সবার সাথে হেসে হেসে কথা বলছেন। আমার দিকে একবারের জন্যও তাকাননি।
অথচ ৮ বছর আগে!!! তখন আমি কথা না বললে, রাগ করলে,,,ভাইয়া কতোভাবে রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করতো। কখনো কান ধরে উঠবস করতো, আবার কখনো চকলেট এনে দিত।
সেই আদ্রিয়ান ও আজকের এই আদ্রিয়ান মাহমুদের মধ্যে কত পার্থক্য।
!
!
!
কিছুক্ষন পরে সবার সাথে সাক্ষাৎকার করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
আদ্রিয়ান ভাইয়া, তার বন্ধুরা ও তার কাজিনরা একটা মাইক্রোবাসে গেল।

আমি, রোহানা আন্টি ও আদ্রিয়ান ভাইয়ার ফুফু ও খালাদের সাথে একটা গাড়িতে।

মাসুদ আংকেল আমাদের সাথে ছিলেননা। তিনি আলাদা গাড়িতে গেলেন।

রোহানা আন্টিঃ এই মেয়ে!! আগেও বলছি আর এখনও বলে দিচ্ছি,,, একদম আমার আদ্রিয়ানের দিকে কোনো নজর দিবিনা। ওর পাশে ঘুরঘুর করবিনা। পা ভেঙে দিবো,,,, বলে দিলাম(রাগ দেখিয়ে)

আদ্রিয়ানের খালাঃ বাড়ির আশ্রিতা,,,, আশ্রিতার মতোই থাকবে। আদ্রিয়ানের পিছু ঘুরবে কেন!(হাসির ছলে)

আদ্রিয়ানের ফুফুঃ আহা! মেয়েটাকে একবার যখন বলছো। ওতো শুনছে,,,ও যাবেনা আদ্রিয়ানের কাছে। এত বারবার বলার কি আছে!!
(আদ্রিয়ানের ফুফু,,, মাসুদ আংকেলের পরে তিনিই একমাত্র ভালোবাসেন আমায়। কিন্তু বেশি কথা খাটাতে পারেননা রোহানা আন্টির উপরে।
তাহলেই রোহানা আন্টি অপমান করে দেয়।
মানুষ যাই হোক,, সম্মান আগে খুজে। তাই হয়তো ফুফুও সম্মানের কথা ভেবে মুখেমুখে তর্ক করেননা রোহানা আন্টির সাথে)

#চলবে

(ভূল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here