#তোর_জন্য
#sumaiya_moni
#পার্টঃ১৩
আদ্রিয়ানঃ একটা সুযোগ কি পাওয়া যায়না?
আমিঃ হ্যা সুযোগ আছে। ওইদিন রাহুল ভাইয়া স্টোর রুমে গেছে, কিন্তু আপনি কিভাবে জানলেন? এটা বলতে হবে।
আদ্রিয়ান ঃ
একটা গল্প বলছি,,,,
অনেকদিন আগের কথা, একছিলো এক পেত্নী আরেক ছিলো ভদ্র ছেলে
সেই পেত্নীটা শুধু জালাতন করতো ভদ্র ছেলেটিকে। কারনে-অকারনে রেগে থাকতো আর সেই ভালো ছেলেটির বিভিন্ন উপায়ে রাগ ভাঙাতে হতো।
মাঝে কেটে যায় অনেকগুলো বছর। সেই ছেলেটির সাথে ওই পেত্নীর সবরকমের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় যে কোনো কারনে।
কিন্তু ছেলেটি সবসময়ই চোখে চোখে রাখতো। অথচ পেত্নীটি বুঝতেই পারতোনা, কারন অন্য মানুষের সাহায্য নিতো যার জন্য মেয়েটি বুঝতে পারেনি।
মেয়েটির মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখে ছেলেটি নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনা। কিন্তু কিছু করার থাকেনা,, নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।
!
ছেলেটির সাথে মেয়েটির দেখা হয়। মেয়েটিকে দেখার সাথে সাথেই ছেলেটি নিস্তব্ধ হয়ে যায়। আগের চঞ্চলতা খুঁজে পায়না। যে মেয়ে সবসময় দুষ্টুমিতে মগ্ন থাকতো কিন্তু তার এতটা পরিবর্তন দেখে ছেলেটি নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনি।
ছেলেটি পাগলের মত হয়ে যায় সত্যিটা জানার জন্য।
কারন, বাসা থেকে বের হলে মেয়েটি যা যা করে সবকিছু ছেলেটি জানতে পারে, বাসার ভিতরের কিছুই জানেনা।
তাই ছেলেটি বাড়ির ভিতরে গোপন ক্যামেরা রাখে। বিশেষ করে একটা রুমের সামনে ক্যামেরা লাগিয়ে রাখে,, যেখানে ওই মেয়েটি থাকতো।
কিন্তু বিকেলের দিকে মেয়েটি ব্যাগ নিয়ে নিজের রুম থেকে বের হলো। তখন ছেলেটি পিছু নিয়ে দেখে মেয়েটি স্টোর রুমে গেছে।
হঠাৎ ছেলেটির মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি আসলো, তাই স্টোর রুমের ডুপ্লিকেট চাবি নিলো।
কিন্তু স্টোর রুমের কাছে এসে শুনতে পেলো ভিতর থেকে দড়জা আটকানো,,আর মেয়েটি চেঁচামেচি করছে।
তাই ছেলেটি বাধ্য হয়ে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে দড়জা খুললো।
কিন্তু ভিতরে যেয়ে ছেলেটির মাথায় রক্ত উঠে গেল,,।
তাই মারামারি করে পেত্নীটিকে নিজের কাছে নিয়ে গেলো।
কিন্তু সেই পেত্নী তো পেত্নীই,,ছেলেটি কত ভালোবেসে তাকে নিজের কাছে নিলো। কিন্তু সে কিনা স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু তার এমন বোকাবোকা কথা শুনে ছেলেটি বেশ মজা নিলো,,,
মেয়েটিকে রাগানোর জন্য ছেলেটি অন্যএকজনকে নিজেদের মধ্যে আনলো,,,মেয়েটি দেখে তো যেমন রাগে ফুঁসছে তেমনই মন খারাপ।
ছেলেটি কখনোই চায়নি মেয়েটি মন খারাপ করুক, কারন নিজের থেকেও ভালোবাসে তাকে।
!
কিন্তু হঠাৎ ছেলেটির মধ্যে একটা অস্থিরতা ভাব দেখা গেল,,,তার মনে হয়েছিলো মেয়েটি তাকে ছেড়ে চলে যাবে।
তাই আগে থেকেই মেয়েটির অজান্তে স্টোর রুমে একটা ক্যামেরা লাগালো। আর নিজে বসে অপেক্ষা করছিলো,,,,
মেয়েটি রুমে ঢোকা মাত্রই ছেলেটি জরিয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়।
কিন্তু সেই বোকা মেয়েটি তখনও কিছু বুঝতে পারলোনা,,,সেই ছেলেটির যে তাকে ভালোবাসে।
এমনকি সেই মেয়েটি, ছেলেটিকে ছেড়ে চলে যেতে চাচ্ছিলো,,,তাই ছেলেটি বাড়ি থেকে যাওয়ার জন্য সবকিছু বন্ধ করে দেয়।
সবার অজান্তে মেয়েটিকে বিয়ে করে ওইদিন রাতেই।
কত কষ্ট করছে সেই ভদ্র ছেলেটি কিন্তু মেয়েটি বুঝলোই না। শুধু শুধু রাগ করে,এমনকি কাছে যেতে চাইলেও মেয়েটি বাঁধা দেয়। শুধুমাত্র জোর করে কয়বার কিসি দিছিলো,তাতেই মেয়েটির নাকি সবকিছু শেষ।
ছেলেটির আশা আর পূর্ণ হলোনা। তার ভাবনাকে দেখা হবেনা😭।
আমিঃ এতক্ষন কথাগুলো আবেগের সাথে শুনছিলাম৷ সত্যিই তো আমি কখনোই বুঝিনি তাকে।
পেত্নী বলাতেও রাগ হলোনা।
কিন্তু ভদ্র ছেলে!!!সে ভদ্র কিভাবে হয়। আর শেষের কথাগুলো শুনে লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করছে।
সবকিছুর মধ্যে তার এইসব আনতেই হবে।
আদ্রিয়ান ঃ আমায় কেউ ভালোবাসেনা। সবাই অবহেলা করে,,,(কান্নার ভান ধরে)
আমিঃ ওইইই মিয়া। মেয়েদের মতো কি শুরু করছেন! হুম্মম?
সবাই অবহেলা করে মানে!! আর কার কার কাছে ভালোবাসার জন্য গেছিলেন। শুনি??,
আদ্রিয়ান ঃ থতমত খেয়ে,,,,,
ক ক কই কারো কাছে যাইনিতো। ভাবনার আম্মুর কাছেই গেছি, কিছু ভাবনার আম্মু পাত্তাই দিচ্ছেনা।
আমায় ভালোবাসেনা ঠিক আছে, কিন্তু ভাবনার কথা তো ভাবতেই পারে। মেয়েটা কোথায় আছে, কিভাবে আছে কে জানে।
মেয়েটিকে আমাদের কাছে আনার চেষ্টা তো করতেই পারি।
আমিঃ কিইইইইইই(চোখ বড়বড় করে)
আদ্রিয়ান ঃ দেখো আমি কিন্তু আমার মেয়েকে খুব ভালোবাসি।
তুমি আমার মেয়েকে কষ্ট দিতে দিতে পারোনা।
আমিঃ আপনার মেয়েকে আপনি নিয়ে আসবেন আমায় বলছেন কেন!
আদ্রিয়ান ঃ আমি একাএকা 😷!!
আমিঃ তার কথার ধরন বুঝে তারাতারি কেটে পড়লাম। নয়তো কিনা কি বলে ফেলে কে জানে।
.
রোহানা আন্টির সাথে ব্রেকফাস্ট গুছিয়ে আদ্রিয়ানকে ডাকতে আসছি,,,রুমে এসেই দেখি গতকালের মেয়েটি।
এখনো যায়নি!!
তারা হাসাহাসি করছে, কিন্তু আমি যাওয়া মাত্রই চুপ হয়ে গেলো।
মোহনাঃ হাই! আমি মোহনা। আদ্রিয়ানের গুড ফ্রেন্ড।
আমিঃ ওয়ালাইকুম সালাম, আমি মিসেস আদ্রিয়ান মাহমুদ ( সালাম দিতে হয় তাও জানেনা। হাই, হ্যালো পাইছে আর কিছু লাগেনা তাদের যত্তসব)
আমার কথা শুনে মেয়েটি অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। মুখে অবস্থা দেখে খুব হাসি পাচ্ছে। কিন্তু নিজের হাসিকে খুন করতে হলো।
আমার জামাইর পিছনে ঘুরঘুর করা!! দেখাচ্ছি কত ধানে কত চাল।
আদ্রিয়ান আমার কথা শুনে মিটমিট করে হাসছে। কিন্তু আমার মত নিজেকে সামলে নিলো,,,,,
আদ্রিয়ান ঃ কিছু বলবা? ( আমাকে উদ্দেশ্য করে)
আমিঃ হ্যা। ব্রেকফাস্টের জন্য সবাই অপেক্ষা করছে।
আদ্রিয়ান ঃ আচ্ছা। চল মোহনা,,,,।
মোহনাঃ হুম
আদ্রিয়ানের পাশের চেয়ারে তারাতারি যেয়েই আমি বসে পরলাম। মোহনা আপুকে এবারও বিশেষ ধরনের চমক দিলাম।
শখ কত! আমার জামাইর পাশে বসার।
এতদিন যত নষ্টামি করুক আদ্রিয়ান। এখন আর কোনো সুযোগ দিচ্ছিনা।
গতকাল অবধি ভালো ছিলাম বাড়িত অতিথি ছিলো বলে।
আদ্রিয়ান তাকিয়ে বললো,,,
এখনও ভাবনার জগতে যেতে হবে!! আগে খেয়ে নাও তারপর যতখুশি ভাবতে থাকো😉
আমিঃ হুহ
*খাবারের একপর্যায়ে আদ্রিয়ানের কথায় বিষম খেল মাসুদ সাহেব।
#চলবে