#হৃদয়ে_লিখেছি_তোমারি_নাম
#Nusrat_Jahan_Bristy
#পর্ব_৭
খলিল তালুকদার বাড়িতে এসেই ছেলেকে হাঁক ছেড়ে ডাকে। লিপা বেগম রান্না করে কাজ করছিলেন স্বামীর এমন চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে বসার ঘরে এসে বলেন।
“কি হলো এভাবে ছেলেটাকে ডাকছেন কেন?”
খলিল তালুকদার জোরে জোরে নিঃশ্বাস ছেড়ে বলেন, “তোমার ছেলে কোথায়?”
“হবে কোথাও হয়ত!”
“ওকে ফোন দিয়ে এক্ষুনি আসতে বলো বাড়িতে।”
লিপা বেগম চিন্তিত হয়ে বলেন, “কি হয়েছে বলবেন একটু?”
“তোমার এত কিছু জানতে হবে না। যেটা করতে বলছি সেটা করো আগে।”
স্বামীর এমন দ্বারা চিৎকার শুনে অন্তর আত্মা কেপে উঠে লিপা বেগমের। বত্রিশ বছরের সংসার জীবনে এমন চিৎকার চেঁচামেচি শুনে অভ্যস্ত হয়ে আছেন লিপা বেগম। তাই এখানে আর দাঁড়িয়ে না থেকে অন্য রুমে গিয়ে ছেলেকে ফোন করে জলদি বাড়িতে আসতে বলেন।
সাদিক সবে মাত্র বন্ধুমহলে এসে যোগ দিয়েছে। মায়ের ফোন পেয়ে আর দেরি না করে তালুকদার ম্যানশনে এসে হাজির হয়। বাড়িতে প্রবেশ করে বাবাকে এমন রাগী রাগী চেহারা নিয়ে বসে থাকতে দেখে সাদিক বলে।
“কি হয়েছে আব্বা?”
খলিল তালুকদার ছেলের দিকে তাকিয়ে ঠান্ডা গলায় বলে, “নির্বাচনের আগের তিন মাসে পাঁচ বছরের যত কাজ ফেলে রেখেছি সবটা পূরণ করতে হবে।”
সাদিক বাবার মুখে হঠাৎ করে এমন কথা শুনে অবাক হয়ে যায়। যে লোক এই সব কাজ নিজে থেকে এড়িয়ে যায় আজ কিনা সেই লোক নিজে থেকে এসব করতে বলছে। মানে তার আব্বার কি মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে জাহিনের সাথে দেখা করে এসে। সাদিক সোফায় বসে ভ্রু কুচকে বাবার দিকে তাকিয়ে অবিশ্বাস্য গলায় বলে।
“কি বলছেন আব্বা এই তিন মাসে পাঁচ বছরে জমে থাকা অধিকাংশ সকল কাজ কি করে শেষ করব?”
খলিল তালুকদার চিৎকার করে বলেন, “আমি কিচ্ছু জানি না এই তিন মাসে জনগণের কাছে ভাল সাজতে হবে আমাদের। এক বার শুধু নির্বাচনে জিতে যাই তারপর আমি ওই জাহিনের থোঁতা মুখ ভোঁতা করে দেব। আমাকে, আমাকে এই মেয়র খলিল তালুকদারকে বলে এই বারের নির্বাচনে আমি হেরে যাব। ওকে আমি জিতিয়ে দেখিয়ে দেব আমার দৌঁড় কত দূর পর্যন্ত। চাচাকে রাজনীতি জীবন থেকে চিরতরে সরিয়ে দিয়েছে এবার ভাতিজাকেও চিরতরের জন্য সরিয়ে দিব রাজনীতির মাঠ থেকে।”
“আব্বা সবেই বুঝলাম আপনার কথা। কিন্তু হঠাৎ করে নির্বাচনের তিন মাসে আগে আমরা যদি এসব কাজ শুরু করি তাহলে জনগণরা তো ধরে ফেলবে যে আমরা তাদের ভোট পাওয়ার লোভে এমনটা করছি। যাদের পাঁচ বছরে কোনো খবর ছিল না তারা হঠাৎ করে নির্বাচনের আগে আগে এসে ভাল ভাল কাজ শুরু করে দিয়েছে। তখন তো তা দেখে জনগণরা আমাদের উপরে মনে মনে ক্ষেপে যাবে।”
ছেলের কথা শুনে খলিল তালুকদার হুংকার দিয়ে বলেন, “তোকে এত কথা বলতে বলেছে কে হুম? তুই দুনিয়াতে আগে এসেছিস নাকি আমি এসেছি? তাই আমি যেটা বলছি সেটা কর আর আগামীকাল থেকেই শুরু করবি কাজগুলা।”
সাদিক নিচু গলায় বলে, “জি আব্বা।”
“এবার যা এখান থেকে।”
সাদিক বেরিয়ে যায় বাড়ি থেকে। সাদিক মনে মনে জানে এই বারের নির্বাচনে তার আব্বা হারবে। এই তিশ মাস তার আব্বা লোক দেখনোর জন্য যতই ভালো কাজ করুক না কেন? জনগণরা এই লোক দেখানো কাজে ভুলবে না তারা যা বুঝার বুঝে গেছে। আর তার উপরে তার বাবার প্রতিপক্ষ শেখ আবরার জাহিন দাঁড়াবে এবারের নির্বাচনে। গত দশ বছরের মাঝে শেষ পাঁচ বছর তার আব্বা জনগণের পাশে দাঁড়ানো তো দূরে থাক চোখেও দেখে নি তাদের। আর জাহিন ভাই তার উল্টো সবসময় জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে সেই হিসেবে জাহিন ভাইয়ের জেতার সম্ভাবনা একটু বেশি।
সাদিক বাইকে বসতে যাবে ঠিক সেই সময় তার ফোন বেজে উঠে। সাদিক ফোনের স্ক্রিনে ভেসে থাকা “বনু” নামটা দেখে মুচকি হেসে কল রিসিভ করে কানের কাছে ফোন নিয়ে কোমল স্বরে বলে।
“কেমন আছে আমার বনুটা?”
ফোনের ওপর পাশে থাকা সানা আহ্লাদী গলায় বলে, “আমি ভাল নেই ভাইয়া।”
সাদিক গলার স্বর কঠিন করে বলে, “কেন? কে কি বলেছে আমার বনুটা? শুধু নামটা একবার বল তাকে মাটিতে পুঁতে ফেলব এক্কেবারে ?”
ভাইয়ের এমন কথা শুনে সানা ঝটপট উত্তর দেয়, “না না কেউ কিছু বলে নি আমাকে। আসলে তোমাদের ছাড়া হোস্টেলে থাকতে আর ভাল লাগে না।”
সাদিকের মনটা নিমিষেই খারাপ হয়ে যায়। তারও যে আদরের ছোট বোনকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হয়। কিন্তু তার কিছু করার নেই। এই নোংরা পরিবেশ থেকে ফুলের মত বোনকে রক্ষা করতেই হোস্টেলে পাঠানো। সাদিক বোনের মন ভাল করতে বলে।
“আমি আগামীকাল আসব তোর কাছে।”
“না না এখন আর আসতে হবে না তোমাকে আর ক’দিন পরেই তো বার্ষিক পরীক্ষা তখন পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে তুমি এসে আমাকে নিয়ে যেও।”
“আচ্ছা। ভাল করে খাওয়া দাওয়া করবি কিন্তু।”
“তুমিও।”
“রাখি এখন।”
“হুম।”
________
জাহিন আহানকে তার মেমোরি কার্ড ফিরিয়ে দিয়ে নিজের রুমে চলে যায় তৈরি হতে। আর যাওয়ার আগে বলে যায় সকালে অয়ন্তি আর তার ছবি তুলার বিষয়টা যে কেউকে না বলে। আহানও ভাইয়ের কথায় সম্মতি দেয়। কিন্তু আহান এই কথাটা কতক্ষণ চেপে রাখতে পারবে এটাই দেখার বিষয়।
অয়ন্তির বাড়ি থেকে সকলে চলে এসেছে। লিজার যেন প্রাণ প্রিয় বান্ধবীর সাথে দেখা করার জন্য আর তর সইছে না তাই দ্রুত পায়ে সদর দরজা পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতে যাবে তখনই কারো সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে যেতে নিলে নিজেকে বাঁচাতে সামনে যা পেয়েছে চোখ বন্ধ করে তাই আঁকড়ে ধরেছে ভয়ে। কিন্তু চোখ খুলে যা দেখে তাতে লিজার চোখ কপালে। তার সামনে সুঠাম দেহের অধিকারী গৌর বর্ণের সুর্দশন একজন পুরুষ মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। চোখ মুখে ফুটে আছে কঠিনত্বের ছাপ, রাগে নাক বার বার ফুলাচ্ছে। মনে হচ্ছে লিজাকে এক্ষুনি গু’লি করে তার মাথার খুলি উড়িয়ে দিবে। গু’লি করার কারণও আছে কারণ লিজা ধরেছে তো ধরেছে ছেলেটির শার্ট ধরেছে আর তার উপরে শার্টের কয়েকটা বোতাম ছিঁড়েও গেছে যার কারণে ছেলেটির বুকের অনেকটা জায়গা দৃশ্যমান রুপে ভেসে আছে। লিজা শুকনো ঢোক গিলে সাথে সাথে পুরুষ মানুষটির শার্ট ছেড়ে দিয়ে বলে।
“সরি সরি আমি সত্যি দেখতে পাই নি।”
ছেলেটি চিৎকার করে বলে, “চোখ কি ব্যাগে নিয়ে হাঁটেন যে দেখতে পারেন নি।”
“আজব আমি সরি তো বললাম।”
“সরি বললেই কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। এখন আপনি ঘরে আগুন লাগিয়ে সরি বলে দিলেন তাতে কি আগুন নিভে যাবে।”
লিজা ভ্রু কুঁচকে বলে, “আশ্চর্য এখানে ঘরে আগুন দেওয়ার কথা কোথা থেকে আসছে? আর এটা একটা জাস্ট এক্সিডেন্ট।”
পুরুষ মানুষটি নিজের সাদা শার্টের দিকে তাকিয়ে দেখে লাল রঙের একটা দাগ। একে তো তার শার্টের বোতাম ছিঁড়ে ফেলেছে তার উপরে মেয়ে মানুষের লিপস্টিকের দাগ। চোয়াল শক্ত করে শার্টের বাকি বোতাম গুলা খুলে গা থেকে শার্টটা খুলে ফেলে। লিজা তা হতভম্ব হয়ে দেখছে। মানে কি করে একটা মানুষ ভরা মজলিসে এভাবে উদাম হয়ে যেতে পারে? কি নির্লজ্জ লোক রে বাবা? লোকটি লিজার হাতে শার্টটা ধরিয়ে দিয়ে বলে।
“আমার শার্টের ছিঁড়ে যাওয়া প্রত্যেকটা বোতাম লাগিয়ে দিবেন আর আপনার ওই লিপস্টিকের লাল দাগটা তুলে আমার শার্ট আমার হাতে হস্তান্তর করবেন মিস বালিকা। আর তা না হলে আপনার নামে আমি মা’ম’লা ঠু’কে দিব বলে দিলাম।”
লিজার মাথা ভনভন করছে। এই সামান্য একটা ঘটনার জন্য তার নামে এই লোক মা’ম’লা ঠু’কে দিবে পাগল নাকি এই লোক। চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে জোহরা বেগম সদর দরজার কাছে এসে শারাফকে এভাবে খালি গায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলেন।
“একি শারাফ তুই উদাম গায়ে এভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?”
শারাফ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে, “আমার শার্টের এই মেয়ে মান ইজ্জত রাখে নি চাচি তাই বাধ্য হয়ে উদাম হতে হল।”
“তা বলে এখানে। পুলিশদের যে লজ্জা শরম কম থাকে সেটা তুই আজ প্রমাণ করে দিলি।”
“চাচি পুলিশদের লজ্জা শরম কম থাকে সেটা আপনাকে কে বলল?”
“সব পুলিশ না হাতেগোনা কয়েকজন। যারা সুযোগ পেলেই জনগণের কাছে থেকে টাকা দাবি করে বেহায়ার মত।”
লিজা এতক্ষণ বুঝল এই লোক কেন মা’ম’লা ঠু’কে দেওয়ার কথা বলছে নিজেই তো পুলিশ তাই এমন আজগুবি মা’ম’লা দিতে তার কাছে সহজেই হবে। লিজা জোহরা বেগমের কাছে গিয়ে শারাফকে কিছু বলতে না দিয়ে বলে।
“চাচি বিশ্বাস করুন আমি ইচ্ছে করে এমনটা করে নি পড়ে যাচ্ছিলাম দেখে ওনার শার্ট আঁকড়ে ধরেছিলাম আর তাতে ওনার শার্টের বোতাম খুলে যায় আর… ।”
জোহরা বেগম হাত দিয়ে থামিয়ে বলেন “আচ্ছা যা হওয়ার হয়ে গেছে। শারাফ তুই গিয়ে নুহাশের একটা শার্ট পড়ে নে। সবাই তোর দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে দেখ।”
শারাফ যাওয়ার আগে লিজাকে বলে, “আমার শার্ট আমি আগের রুপে ফেরত চাই মিস বালিকা আর সেটাও খুব দ্রুত।”
কথাটা বলে শারাফ চলে যায়। জোহরা বেগম বলেন, “শার্টটা আমাকে দাও।”
লিজা জেদ দেখিয়ে বলে, “না চাচি ওনার শার্ট যেহেতু আমি নষ্ট করেছি সেহেতু আমি ঠিক করে দিব।”
জোহরা মুচকি হেসে বলেন, “আচ্ছা। অয়ন্তির সাথে দেখা করবে তো। অয়ন্তি উপরে আছে যাও।”
জারা চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে নিচে নামতে নিবে প্রতিমুখে শারাফকে এই অবস্থায় দেখে হতবাক হয়ে বলে, “একি শারাফ ভাইয়া তুমি এভাবে কেন?”
শারাফ কিছু না বলে হনহনিয়ে চলে যায়। জারা লিজাকে দেখতে পেয়ে লিজার কাছে গিয়ে বলে, “কখন এলে তুমি লিজা আপু?”
“এই তো এই মাত্র আর এসেই এত বড় এক খাম্বার সাথে ধাক্কা খেলাম।”
জারা ভ্রু কঁচকে বলে, “খাম্বা! এই খাম্বাটা কে আবার?”
“কি নাম যেন শারাফ না খারাফ।”
লিজার মুখে খারাফ নামটা শুনে জারা হাসতে হাসতে বলে, “শারাফ ভাইয়া যদি শুনে তুমি তাকে খারাফ বলে ডেকেছো তাহলে তোমার নামে মা’ম’লা করে দিবে ভাইয়ার নাম বি’কৃ’ত করে ডাকার অপরাধে।”
লিজা ঠোঁট ফুলিয়ে বলে, “ওলরেডি মা’ম’লা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গেছেন এই খারাফ।”
“আচ্ছা চলো ভাবি অনেকক্ষণ ধরে তোমার অপেক্ষা করছে।”
লিজাকে জারা ঘরটা দেখিয়ে দিয়ে নিচে চলে যায়। লিজা ঘরে ঢুকে অয়ন্তির এমন সাজসজ্জা দেখে বলে, “ও হো এটা কি দেখছি আমি? আসমান থেকে মনে হচ্ছে কোনো এক পরী নেমে এসেছে।”
অয়ন্তি লিজার কাছে এসে তার গায়ে থাপ্পড় মেরে বলেন, “ইস! তুই একটু বেশিই বলছিস।”
“সত্যি বলছি তোকে দেখতে মাশআল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে। ভাইয়া দেখলে নিশ্চিত মূর্চ্ছা যাবেন।”
অয়ন্তি লজ্জা পায়। লজ্জায় গাল দুটো রক্তিম বর্ণ ধারণ করে। কিন্তু হঠাৎ করেই ফাইজের কথা মনে পড়তেই বলে, “ফাইজ কোথায়? ও আসে নি?”
“এসেছে কিন্তু এসেই আপনার ছোট দেবরের সাথে খেলায় মেতে উঠেছে। আপনার কথা সে বেমালুম ভুলে গেছে।”
অয়ন্তি লিজার হাতে শার্ট দেখে বলে, “তোর হাতে শার্ট কেন?”
লিজা বিরস গলায় বলে, “আর বলিস না এক বদ লোকের সাথে দেখা হয়েছিল।”
লিজা সবটা ঘটনা অয়ন্তিকে খুলে বলে। অয়ন্তি তা শুনে হাসতে হাসতে বলে, “আমার শ্বশুরবাড়িতে এসে তোর সাথে এমন একটা সিনেমাটিক ঘটনা ঘটে গেল। খুব হাস্যকর ব্যাপারটা!”
লিজা বিরক্ত নিয়ে বলে, “তুই চুপ করবি। তুই না নতুন বউ কোথায় মাথায় ঘোমটা টেনে মুখ নিচু করে বসে থাকবি। তা না করে তুই এভাবে দাঁত বের করে হাহা হিহি করে হাসছিস।”
অয়ন্তি হাসি থামিয়ে দেয়। সত্যি তো সে তো নতুন বউ। এখন যদি তার হাসির আওয়াজ কেউ শুনে ফেলে তাহলে সত্যি খুব খারাপ ভাববে।
কিন্তু অয়ন্তির হাসির শব্দ অন্য কেউ না শুনতে পেলেও জাহিন ঠিকেই শুনে ফেলে। সবে মাত্র জাহিন রেডি হয়ে রুম থেকে বের হয়েছে ফোন কথা বলতে বলতে। কিন্তু কারো হাসির শব্দ শুনে জাহিন দাঁড়িয়ে পড়ে। লিজার কথাটা শুনে বুঝতে পারে হাসির মালিকটা কে? কিন্তু জাহিনের খুব জানতে ইচ্ছে করছে অয়ন্তি কি কারণে এভাবে প্রাণ খুলে হাসছিল? ফোনে থাকা নুহাশের গলার স্বর শুনে জাহিন পুনরায় কানের কাছে ফোন নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ভরাট গলায় বলে।
“রাজনীতির মাঠে নেমেছি আমি, কোনো ফুটবল খেলার মাঠে নয় যে যেটা বলবে আমাকে সেটা করতে হবে আমায়। আমি নিজের গতিতে চলব অন্যরা কে কি বলল তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না।”
কথাটা বলে শেষ করতেই আযহার শেখ এসে জাহিনকে বলে, “জাহিন তোমার কাছে যাচ্ছিলাম।”
জাহিন নুহাশকে পরে ফোন করবে বলে কল কেটে দিয়ে চাচাকে বলে, “কি হয়েছে চাচ্চু?”
“তোমার শশুর মশাই তোমার সাথে কথা বলতে চান।”
“আমি ওনার সাথেই দেখা করতে যাচ্ছিলাম।”
“ও আচ্ছা তাহলে চলো।”
জাহিন হামিদ খন্দকারকে দেখে মুখে সালাম দেয়। হামিদ খন্দকারও সালামের জবাব দিয়ে জাহিনকে বসতে বলে। হামিদ খন্দকারের পাশেই আজমল শেখ বসে আছেন। জাহিন একটা চেয়ার টেনে বসতেই হামিদ খন্দকার জাহিনকে উদ্দেশ্যে করে বলেন।
“তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।”
“জি বলুন।”
“তোমার আর অয়ন্তি মায়ের বিয়েটা জানি স্বাভাবিক ভাবে হয় নি। কিন্তু আমার অয়ন্তি মা খুব ভালো মেয়ে। আমার আদরের বড় মেয়ে। ওর মুখ থেকে আমি প্রথম বাবা ডাক শুনেছি। ছোট বেলা থেকে মেয়েটা আমার অনেক ঝড় ঝাপটা সহ্য করে এতটুকু বড় হয়েছে। তাই আমি চাই আমার মেয়েটাকে তুমি সুখে রাখো ভাল রাখো। বাবা হয়ে এইটুকু তোমার কাছে চাই। জানি তুমি রাজনীতি করো কিন্তু…. ।”
আজমল শেখ ফোড়ন কেটে বলেন, “আহা বেয়াই সাহেব অয়ন্তি মা এখানে খুব ভাল থাকবে আপনাকে এসব নিয়ে ভাবতে হবে না।”
জাহিন মুচকি হেসে বলে, “চিন্তা করবেন না অয়ন্তি যখন আমার দায়িত্বে আছেন আমি ওনাকে সবসময় আগলে রাখব নিজের সবটুকু দিয়ে। ওনার উপরে ঝড় আসার আগে আমার সাথে সেই ঝড়কে মোকাবেলা করতে হবে। আর রাজনীতির কোনো বিষয় ওনার উপরে আঁচ কাটবে না। আমি আঁচ কাটতে দিব না।”
হামিদ খন্দকার জাহিনের কথাটা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বলেন, “নিশ্চিন্ত হলাম বাবা।”
#চলবে______
গত পর্বে আমি একটা ভুল করেছি মেকাপ নিয়ে এটা লাইট মেকাপ হবে না ভারী মেকাপ হবে। আমি তার জন্য ক্ষমা প্রার্থী।