হৃদয়ে_লিখেছি_তোমারি_নাম #Nusrat_Jahan_Bristy #পর্ব_১১

0
778

#হৃদয়ে_লিখেছি_তোমারি_নাম
#Nusrat_Jahan_Bristy
#পর্ব_১১

নির্বাচন অফিসে এসে পৌঁছায় জাহিন। নির্বাচন অফিসের ভেতর ঢুকে সোজা মিটিং রুমে প্রবেশ করে জাহিন। মিটিং রুমের মাঝ বরাবর লম্বা একটা টেবিল ফেলে রেখেছে , তার দুই পাশে নেতা কর্মীদের জন্য আরামদায়ক চেয়ার রাখা। সকল নেতা কর্মীরা অনেক আগেই চলে এসেছেন শুধু জাহিনের আসতে একটু দেরি হয়ে গেল। জাহিনকে দেখে নির্বাচন কমিশনার রশিদ আহমেদ বলেন।

“আরে জাহিন চলে এসেছো বসো বসো তোমার অপেক্ষায় ছিলাম আমরা এতক্ষণ।”

জাহিন সোজা গিয়ে নিজের চেয়ারে বসতেই খলিল তালুকদার ঠাট্টা করে বলেন, “আসলে নতুন বিয়ে হয়েছে তো তাই একটু সময়টা‌ মেনটেন করতে পারছে না তাই না জাহিন। আর তার উপরে নতুন বউকে ছেড়ে কি আসা যায় বলুন।”

জাহিন ছোট ছোট চোখ করে খলিল তালুকদারের দিকে তাকিয়ে থেকে নিজের হাত ঘড়িতে সময় দেখে গম্ভীর গলায় বলে।

“এখনো সাড়ে দশটা বাজতে আরো তিন মিনিট বাকি আছে ঘড়িতে। আর রইল সময় মেনটেন করার কথা আমি সময়টা খুব ভালো করেই মেনটেন করতে জানি মেয়র সাহেব। হোক সেটা বিয়ের আগে কিংবা পরে। আর আপনারও সময় মতো মুখে লাগাম আনা দরকার কারণ এই বয়সে আপনার মুখে এসব কথা মানায় না।”

রশিদ আহমেদ পরিস্থিতি অবনতি যাতে না হয় তার আগেই বলেন, “আচ্ছা আচ্ছা এসব কথা বাদ দেন। এখন কাজের কথা আসা যাক।”

সব নেতা কর্মীরা নড়ে চড়ে বসলেন। রশিদ আহমেদ আবরো বলা শুরু করেন, “নির্বাচন কিন্তু দোরগোড়ায়। আর তিন মাস পরেই কিন্তু নির্বাচন। আর এবারের নির্বাচনটা তো একটু বেশিই আলোড়ন সৃষ্টি করবে যখন জানতে পারবে জননেতা জাহিন মেয়র পদে দাঁড়াচ্ছে।”

খলিল তালুকদার তুচ্ছ গলায় বলেন, “এখানে আলোড়ন সৃষ্টি হওয়ার কি আছে আমি ঠিক সেটা বুঝতে পারলাম না।”

রশিদ আহমেদ বলেন, “অবশ্যই আলোড়ন সৃষ্টি হবে কারণ এই প্রথম কোনো তরুণ নেতাদের মাঝে কেউ একজন মেয়র পদে দাঁড়াচ্ছে।”

নেতা কর্মীদের মাঝ থেকে একজন বিদ্রুপের স্বরে বলেন, “শুধু দাঁড়ালেই তো হবে না জনগন সেটা গ্রহণ করবে কি না সেটাও দেখতে হবে।”

খলিল তালুকদার এই‌ কথায় সায় দিয়ে বলেন, “হুম একদম ঠিক বলেছেন আর একজন অভিজ্ঞ নেতা যেটা বুঝতে পারবে সেটা নিশ্চয়ই নব্য নেতারা বুঝতে পারবে না আমার ধারণা।”

জাহিন চুপচাপ‌ বসে সবার সবার কথা শুনছে। কেউ জাহিনের পক্ষে কথা বলছে তো আবার কেউ জাহিনের বিরুদ্ধে কথা বলছে। রশিদ আহমেদ সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন।

“জাহিন নিজ যোগ্যতায় মেয়র পদে দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে। আর রইল অভিজ্ঞতার কথা আমার মনে হয় প্রবীণ নেতাদের থেকে এখনকার নবীন নেতারাও কম বিচক্ষণ নয়। আর জনগণদের উপরে‌ ছেড়ে‌ দেন তারা কাদের চায় প্রবীণ নেতাদের নাকি নবীন নেতাদের।”

কেউ আর এই বিষয়ে কথা বলে না। খলিল তালুকদার দাঁতে দাঁত চেপে পুরো‌‌ মিটিংটা শেষ‌ করল।

________

জারা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে গ্রিলের উপরে হাত রেখে নির্নিমেষ ভঙ্গিতে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে। আর বার বার দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ছে। আঁখি যুগলের কার্নিশে জমে রয়েছে নোনা জল। অনেকটা সময় কান্না করার পর এখন মনে হচ্ছে বুকের ভেতর থেকে একটা চাপা কষ্ট একটু হলেও কমেছে। হঠাৎ করেই জারার নজর পড়ে আম গাছটার একটা‌ ডালে দুইটা নাম না জানা হলদে পাখি বসে রয়েছে। দেখেই মনে হচ্ছে পাখি দুটো কপোত কপোতি হবে। একজন আরেকজনের পেছন পেছন গিয়ে ডালে বসছে। হয়তো ছেলে পাখিটা মেয়ে পাখিটার পেছন পেছন ডানা ঝাপটে যাচ্ছে আর মেয়ে পাখিটা হয়তো তা উপভোগ করছে। অজান্তেই জারার ওষ্টদ্বয়ের কোণে হাসি‌ ফুটে উঠে। আচ্ছা তার পেছন পেছন কোন নুহাশ ঘুরে না এভাবে? যদি নুহাশ তার পেছন পেছন ঘুরতো তাহলে জারা সেই সুন্দর মুহূর্তটা উপভোগ করতে পারত। কিন্তু নুহাশ তো তাকে ভালোই বাসে না বার বার তাকে ইগনোর করে যায়। নুহাশের তার প্রতি কি একটুও মায়া জন্মায় না। নাকি সে সব মেয়েদের মতো এতোটাও সুন্দরী না বলে নুহাশ তাকে পছন্দ করে না। আচ্ছা ভালোবাসায় কি সৌন্দর্যটাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় নাকি নিজের মনকে কোনটা? জারা তো নুহাশকে মন থেকে ভালোবেসে নিজের ছোট হৃদয়টাতে তার নাম লিখেছে, সে নাম চাইলেও সে মুছতে পারবে না। জারা এসব ভেবে ডুকরে কেঁদে উঠে আর বলে।

“খুব খারাপ তুমি নুহাশ ভাই খুব খারাপ। তুমি বুঝেও না বুঝার ভান ধরো। আমাকে এভাবে কষ্ট দিচ্ছো তো দেখে নিও তুমি এর চেয়ে হাজার গুণ কষ্ট ভোগ করবে। তখন আমি বুঝিয়ে দিবো তোমাকে কেমন লাগে এই কষ্ট সইতে।”

__________

সবাই মিটিং শেষে নির্বাচন অফিস ত্যাগ করে কিন্তু জাহিনকে রশিদ‌ আহমেদ থাকতে বলেন। সবাই চলে যাওয়ার পর জাহিন রশিদ আহমেদের নিজস্ব কেবিনে এসে বসে। রশিদ আহমেদ স্মিত হেসে বলেন।

“বাড়ির সবাই ভাল‌ো‌‌ আছেন?”

“জি আলহামদুলিল্লাহ সবাই ভালো‌ আছে।”

“তোমার চাচ্চু! সে কেমন আছে‌?”

“জি ভালো আছেন।”

“তোমার চাচ্চু কি এখনও নিজেকে দোষারুপ করে অরহানের মৃ’ত্যু’র জন্য।”

জাহিন নিচু গলায় বলেন, “হয়তো মনে মনে নিজেকে এখন দোষারুপ করে যাচ্ছে কিন্তু সবার সামনে সেটা প্রকাশ করে না।”

“জানি অরহানের মৃ’ত্যু’টা মেনে নেওয়ার মতো নয় কিন্তু তুমি সাবধানে থেকো জাহিন। অনেকেই চায় না তুমি‌ মেয়র পদে দাঁড়াও।”

“সেটা জানি আমি।”

“খলিল সাহেব কিন্তু কিছু একটা করতে পারে‌ন জাহিন তার‌ চোখ‌ মুখ দেখে যতটুকু বুঝতে পারলাম। তাই‌ নির্বাচনের আগ‌ পর্যন্ত সাবধানে থাকার চেষ্টা করবে।”

“জি।”

এমন সময় জাহিনের ফোন বেজে উঠে। জাহিন ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে মা কল করেছে। জাহিন কলটা না ধরে কেটে দেয়। রশিদ আহমেদ তা দেখে হেসে হেসে প্রশ্ন করেন।

“কি নববধূ কল করছে নাকি?”

জাহিন মুচকি হেসে বলে, “না মা কল করেছেন।”

“তাহলে ফোনটা ধরো হয়ত দরকারি ফোন হতে পারে।”

জাহিন কল রিসিভ করতেই ফোনের ওপাশ থেকে জোহরা বেগম রেগে বলেন, “কল কেটে দিচ্ছিস কেন তুই বারবার? আর কই তুই‌, ও বাড়ি যাবি না অয়ন্তিকে নিয়ে।”

জাহিন আস্তে‌ করে বলে, “যাবো‌ তো ওনাকে তৈরি হয়ে থাকতে বলো আমি আসছি।”

কথাটা বলেই কল কেটে দেয় জাহিন। রশিদ আহমেদ বলেন, “কি বলছেন তোমার মা, শশুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য।”

“হুম।”

“যাও যাও শশুর বাড়ি থেকে ঘুরে আসো। কথায় আছে “শশুর বাড়ি মধুর হাড়ি।” সেই মধু গিয়ে কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে আসো। নতুন নতুন এই জামাই আদর পাবে এর পরে কিন্তু এই জামাই আদর পাবে না। আর তোমার নতুন জীবনের জন্য শুভ কামনা রইল। বউ ভাতে তো ব্যস্ততার জন্য যেতে পারলাম তাই‌ ছোট একটা গিফট তোমাদের দুজনের জন্য আমার তরফ থেকে।”

রশিদ আহমেদ ডেস্কের‌‌ নিচ থেকে একটা ব্যাগ বের করে জাহিনের দিকে এগিয়ে দেয়। জাহিন তা দেখে বলে, “এসবের কি দরকার ছিল শুধু শুধু।”

“বেশি কথা বলো না তো আর শুধু শুধু কি, দরকার ছিল তাই দিয়েছি। এবার তুমি যাও জলদি না হলে তোমার মা আবার ফোন করে তোমার উপরে চোটপাট করা শুরু করে‌ দিবেন না হলে।”

জাহিন নির্বাচন অফিস থেকে‌ বের হয়ে গাড়িতে গিয়ে নুহাশের পাশে বসে। ড্রাইভিং সিটে নুহাশ বসে‌ আছে। নুহাশ জাহিনের হাতে ব্যাগটা দেখে বলে।

“ব্যাগ! কিসের ব্যাগ এটা?”

“রশিদ‌ চাচ্চু‌ দিলেন বিয়ের উপহার।”

“ওও।”

জাহিন পেছেনের সিটে‌ ব্যাগটা রেখে‌ সিট বেল্ট বেঁধে মাথাটা সিটে‌ হেলিয়ে দিয়ে‌ চোখ বন্ধ‌ করে বলে, “চল এবার।”

নুহাশ গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বলে, “মিটিং‌ কেমন হল?”

জাহিন চোখ বন্ধ অবস্থায় বলে‌, “যেমন হওয়ার কথা‌ ছিল।”

“খলিল তালুকদার কি‌ এবারও উল্টাপাল্টা কথা বলেছেন।”

“বাদ দে নুহাশ‌ এসব কথা।”

নুহাশ আর কোনো কথা‌ না বলে গাড়ি চালানোতে মন দেয়। জাহিন আগের ন্যায় চোখ বন্ধ করে‌ রেখেছে। মাথায় ঘুরছে হাজারটা চিন্তা। ভবিষ্যতে কি হতে চলেছে সেই বিষয় সে অবগত নয় তাই আগে থেকেই নিজেকে তৈরি করে রাখতে হবে সব পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়ার জন্য। হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করাতে জাহিন সামনের দিকে‌ ঝুঁকে পড়ে আর নুহাশকে বলে।

“কি হলো এভাবে গাড়ি ব্রেক করলি কেন?”

নুহাশ সামনের দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে বলে, “ভাই দেখো।”

জাহিন নুহাশের কথামতো সামনের দিকে তাকায়। মেয়র খলিল তালুকদার, তার ছেলে সাদিক তালুকদার আর তাদের দলের কয়েকজন ছেলে দাঁড়িয়ে রাস্তার কাজ করা দেখছে। যে রাস্তা দু বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। রিকশা কিংবা অটো এই রাস্তা দিয়ে গেলেই এক্সিডেন্ট হয়ে মানুষ আ’হ’ত হতো, কিন্তু তারপরও মেয়র তা দেখেও কোনো পদক্ষেপ নিতো না সেই রাস্তা আজকে মেরামত করছে তাও আবার স্বয়ং মেয়র সাহেব নিজে দাঁড়িয়ে থেকে। নুহাশ জাহিনের দিকে তাকিয়ে বলে।

“এসব কি ভাই?”

জাহিন বাঁকা হেসে বলে, “দাওয়াই তাহলে ভালো কাজেই‌ দিয়েছে দেখা যায়।”

নুহাশ অবাক হয়ে বলে, “মানে!”

“মানেটা খুব সোজা ওই দিন মেয়র সাহেব আমাদের পার্টি অফিসে এসেছিলেন তখন একটু দাওয়াই দিয়েছিলাম ওনাকে। কিন্তু ভাবতে পারি নি দাওয়াই যে এত জলদি প্রভাব ফেলে দিবে ওনার উপরে।”

নুহাশ ভ্রু কুঁচকে বলে, “কিন্তু ভাই এসব লোক দেখানো কাজ দেখিয়ে তো ওনি জনগণকে হাত করার চেষ্টা করছেন।”

জাহিন আবারো সিটে মাথা হেলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে ভাবলেশহীন হয়ে বলে, “এবার মনে হয় না জনগণকে ওনি হাত করতে পারবে। দশ বছরে জনগণ ওনার সম্পর্কে যা বোঝার বুঝে গেছে।”

নুহাশ কন্ঠে গম্ভীরতা এঁটে বলে, “এই লোক গিরগিটিকেও হার বানিয়ে দিবে।”

_____

সাড়ে বারোটার দিকে জাহিন শেখ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। জাহিনকে আর নুহাশকে দেখেই জোহরা বেগম বলেন, “এতক্ষণে আসার সময় হল তোদের? মেয়েটা কখন থেকে তৈরি হয়ে বসে আছে।”

জাহিন তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে বলে, “জ্যামে পড়ে গিয়েছিলাম মা তাই দেরি হয়ে গেছে।”

“ঠিক আছে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নে যা।”

জাহিন নিজের রুমে আসে। এসে দেখে বেডের উপরে লাগেজ রাখা। কিন্তু অয়ন্তি কোথায়? জাহিন ওয়াশরুম চেক‌ করে বেলকনি চেক করে দেখে অয়ন্তি নেই। জাহিন টাওয়াল হাতে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হতেই দেখে অয়ন্তি লাগেজের চেইন লাগানোর ট্রাই করছে কিন্তু একা পারছে না। জাহিন ধীর পায়ে হেঁটে অয়ন্তির পেছনে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে চেইনটা লাগিয়ে দেয়। আকস্মিক এমনটা হওয়াতে অয়ন্তি চমকে পেছন ফিরে তাকায়। জাহিনকে নিজের এতটা কাছে দেখে অয়ন্তির বুকটা কেঁপে উঠে। জাহিন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অয়ন্তির দিকে। অয়ন্তি বেগুনি রঙের জামদানির শাড়ি পড়েছে। গলায় সোনার মাঝারি সাইজের একটা হার, কানে দুল, হাতে সোনার বালা। মেকাপবিহীন মুখ, চোখে গাঢ় কাজল, ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক। অয়ন্তিকে দেখতে কেমন বউ‌ বউ লাগছে জাহিনের কাছে আগের দিন গুলার তুলনায়। অয়ন্তি চুল গুলা হালকা করে খোপা করে রেখেছে যার দারুন কানের সাইডের চুল গুলা গালে উপরে পড়ে রয়েছে। জাহিনের খুব ইচ্ছে করছে হাত বাড়িয়ে অয়ন্তির চুল গুলা কানে গুজে দিতে। জাহিন নিজের ইচ্ছেটা সংযম করতে না পেরে ধীরে ধীরে হাতটা বাড়িয়ে নেয় অয়ন্তির মুখের দিকে। অয়ন্তি শ্বাস নেওয়া বন্ধ করে চোখ বন্ধ করে নেয়। দাঁতে দাঁত চেপে রেখেছে। বুকের ভেতর মনে হচ্ছে কেউ হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছে। জাহিন তর্জনী বাড়িয়ে‌‌ যেই অয়ন্তির চুল সরাতে যাবে এমন সময় জারা বলতে বলতে রুমে ঢুকে।

“ভাবি মা তোমাদের বাড়ির সকলের জন্য যে জিনিসগুলা কিনেছিল সেগুলা না নিয়েই চলে এলে যে।”

বোনের কন্ঠস্বর শুনতে পেয়ে জাহিন তড়িৎ বেগে অয়ন্তির কাছ থেকে দূরে সরে যায়। অয়ন্তিও হকচকিয়ে যায়। জাহিন উল্টো দিকে ফিরে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। জারা ভাবি আর ভাইয়াকে এমন অপ্রস্তুত হয়ে যেতে দেখে বোকার মতো বলে।

“কি হয়েছে?”

জাহিন কোনো কথা না বলে আলমারি থেকে নিজের পোশাক নিয়ে এক প্রকার ওয়াশরুমে পালিয়ে যায়। জারা হা হয়ে ভাইয়ের কর্ম গুলা দেখল। অয়ন্তি ঢোক গিলে নিজেকে সামলিয়ে জারাকে বলে।

“জারা ব্যাগগুলা আমাকে দাও।”

অয়ন্তি জারার কাছ থেকে ব্যাগ গুলা নিয়ে বিছানার উপরে রেখে দেয়। জারা নির্বিকার ভঙ্গিতে বলে, “এখানে ঠিক কি হয়েছে বুঝলাম না আমি। নাকি আমি ভুল সময়ে এই ঘরে চলে আসলাম।”

অয়ন্তি চোখ বন্ধ করে নেয়। জারা অয়ন্তির মুখ দেখে ঠোঁট কামড়ে হেসে বলে, “আমি বরং যাই এখন ভাবি আমার নক করে আসা উচিত ছিল।”

কথাটা বলেই জারা দৌঁড়ে বের হয়ে যায়। অয়ন্তি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বেডের উপরে ধপ করে বসে পড়ে। একটু আগে‌ কি ঘটে গেল তার সাথে? সবটা কিভাবে যেন চোখের পলকে ঘটে গেল।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here