#রণরঙ্গিণী_প্রেমরঙ্গা |৪৬|
#ঊর্মি_আক্তার_ঊষা
তমসাচ্ছন্ন অম্বর ম্লান করে দীর্ঘ প্রহর কেটেছে। বৈঠকখানায় লোকসমাগম ভীষণ। একে একে সবাই ঠিকই চলে এসেছে। গ্রাম থেকে কিছুক্ষণ আগেই মোড়ল বাড়ির প্রত্যেকে এখন মালঞ্চ নীড়ে এসে পৌঁছেছে। মেহরাব শিকদারও চলে এসেছেন উনাদের সঙ্গে। কিন্তু একটা ব্যাপার কিছুতেই বুঝতে পারলেন না যে মহুয়া কেন সঙ্গে এসেছেন! পরক্ষণেই ভাবলেন হয়তো মানবতার খাতিরে বাড়ির পরিচারিকাকেও সঙ্গে নিয়ে এসেছেন শাহাদাৎ মোড়ল। তারপরও একটা কিন্তু রয়েই যায়৷ সেই কিন্তুটা হচ্ছে মহুয়ার মেয়ে৷ কই মহুয়া তো একা এসেছে৷ তার মেয়ে কোথায়? মহুয়ার মেয়ের কথা ভেবেও কোনো কাজ নেই উনার। তাই সকল ভাবনাকে দূর করে সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মেহরাব শিকদার। এরপর ক্লান্ত শরীর নিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলেন। কতগুলো দিন পর আম্মাকে চোখের সামনে দেখছে ভূমি। অতিমাত্রায় খুশিতে কান্না করে দিল মেয়েটা৷ মায়ের প্রতি অভিমান বাড়ল৷ কেন তাকে বিয়ে দিলেন? কেন নিজের থেকে আলাদা করে দিলেন? গ্রামে তো দিব্যি দুজনের দিন কেটে যেত৷ সমস্ত অপ্রতুলতার মাঝেও দিনগুলো তো আনন্দে কাটত৷ অশ্রুপ্লুত ঝাপসা চোখে সিঁড়ি ভেঙে নিচে নেমে এলো সে৷ তার পেছন পেছন প্রলয়ও এসেছে৷ বৈঠকখানায় পৌঁছেই মহুয়াকে গিয়ে জাপ্টে ধরল। ক্রন্দনরত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল‚
“কেমন আছ আম্মা? তুমি এমন শুকিয়ে গিয়েছ কেন?”
খুশি মনে মেয়েকে নিজের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়ে মহুয়া বলল‚ “আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি মা৷ অনেকদিন পর দেখছিস তো তাই এমন মনে হচ্ছে৷”
উপস্থিত সকলে একদৃষ্টে তাকিয়ে রয়েছে ওদের দিকে৷ ছোটো সদস্যরাও এখানেই রয়েছে৷ পূর্ণতা পুষ্পিতা‚ তাদের মামাতো ভাই রাফি‚ অর্পণের মামাতো কাজিন ভাইবোন লাম আর লামিয়া। তার খালামণির কোনো সন্তানসন্ততি নেই। তবুও তারা দিব্যি আছেন। রাফি আর অর্পণ সমবয়সী। পেশায় পুলিশ৷ লাম আর লামিয়া এবার উচ্চমাধ্যমিক পরিক্ষার্থী৷ শাহাদাৎ মোড়ল মহুয়াকে ভূমির মা হিসেবে সকলের কাছে পরিচয় করিয়ে দিলেন। ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফেরায় মেহরাব শিকদার তখন নিজের ঘরেই ছিলেন যে কারণে ভূমির পরিচয় উনার জানাই হলো না। মেহমানদের জন্য চারটে কামরা খুলে দেওয়া হলো। মেয়েদের জন্য দুটো ঘর আর পুরুষদের জন্য দুটো ঘর। মহুয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করে ফিরোজা রান্নাঘরে চলে গেলেন। বাড়িতে এতগুলো মানুষ। রাতের খাবার তো তৈরি করতে হবে। উনার পেছন পেছন ফাহমিদা আর রাবিয়াও চলে গেলেন সাহায্য করতে। মাধুরী ঠায় উনার মায়ের সঙ্গে বসে রইলেন। বাড়ির পুরুষেরা এখন বৈঠকখানায় নেই। আসর জমেছে নিচতলার একটি কামরায়। শাহাদাৎ মোড়লও তাদের সঙ্গেই গেলেন। এখানে পুরুষ মেহমানগণ থাকবেন। এদিকে ভূমির পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রলয়। সে এগিয়ে গিয়ে মহুয়ার সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল‚
“আসতে কোনো অসুবিধে হয়নি তো?”
“না বাবা৷ তোমরা সবাই ভালো আছ তো?
“জি আমরা সবাই ভালো আছি৷ আপনাদের বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন।”
প্রলয়কে মহুয়ার সঙ্গে হাসিখুশি কথা বলতে দেখে মনে মনে খুবই ক্রুদ্ধ মাধুরী। দাঁতে দাঁত চেপে ক্রোধ সংবরণ করছেন তিনি। নিজের মাকে রেখে ওই মেয়েটার মাকে নিয়ে এত আদিখ্যেতা সহ্য হলো না উনার। এটা দেখে গুলবাহার বললেন‚
“শাশুড়ীকে পেয়ে মাকে ভুলে যেও না নানুভাই।”
কথাটা পছন্দ হলো না প্রলয়ের৷ কিন্তু সে কিছুই বলল না৷ নাজমা নিজে থেকেই বললেন‚ “এ কেমন কথা মাওই মা? মাকে কেন ভুলে যাবে? আমরা তো জানি প্রলয় খুবই দায়িত্ববান।”
বড়োদের মাঝে কথা বাড়াল না প্রলয়। তারা নিজেরাই সব ঠিক করে নেবে‚ এমনটাই তার ভাবনা। রান্নাঘর থেকে সবটাই শুনলেন ফিরোজা৷ মাধুরী দিনকে দিন কেমন রুক্ষ হয়ে উঠছেন! এতটা স্বার্থপর তো উনি ছিলেন না৷ ইন্ডিয়ান সিরিয়ালের বিরূপ প্রভাব পড়ছে উনার উপর। তিনি রান্নাঘর থেকেই কিছুটা উচ্চস্বরে বললেন‚
“বেয়ান আপনারা ঘরে গিয়ে বিশ্রাম নিন। অনেকটা পথ তো জার্নি করে এলেন।”
কথাটা উচ্চস্বরে বললেন যাতে করে উনারা শুনতে পারেন৷ প্রলয়ও ফিরোজার কথায় সায় জানাল৷ উনাদের ব্যাগগুলো সে নিজেই তুলে নিল ঘরে রেখে আসার জন্য। ভূমি তার মায়ের হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছে। মমতাময়ীর স্নেহমাখা হাতটা অনেকদিন পরেই ধরার সৌভাগ্য হলো তার৷
রাত সাড়ে বারোটা…
রান্নাঘরের কাজ সারতে সারতে রাত অনেক হয়েছে। ফিরোজা একা হাতে সবদিক সামলে উঠতে পারছেন না। বাড়িতে বিশেরও অধিক মানুষ। এঁটো বাসন গুলো ধুয়ে রাখতেই সময় পেরিয়ে গিয়েছে৷ সব কাজ সাবিনার উপর রাখাটাও তো কেমন দেখায়! ফাহমিদা আর রাবিয়াও কাজে হাত লাগিয়েছিলেন। তবে মাধুরীর ভাইয়ের স্ত্রী এ বাড়িতে আসার পর ঘর থেকে বের হননি। বেশি মানুষের মাঝে নাকি উনার অস্বস্তি হয়৷ ইতিমধ্যেই অনেকে ঘুমিয়ে পড়েছে। হসপিটাল থেকে দুদিনের ছুটি নিয়েছে অর্পণ। প্রলয় আজ পার্টি অফিসে গিয়েছিল তবে তাড়াতাড়িই ফিরে তার নানুমণিকে নিয়ে এসেছে। অনেকক্ষণ ধরে কাজ করছিল বিধায় ফিরোজা জোর করে ভূমিকে ঘরে পাঠিয়ে দিলেন। খাওয়াদাওয়ার পরপরই ঘরে চলে এসেছিল প্রলয়৷ ছাদে ছোটোদের আড্ডা চলছে। ছোটো বেলা থেকেই তার এসব মোটেও পছন্দ নয়। বাকিদের মতো সবার সঙ্গে খুব সহজে সহজ হতে পারে না সে৷ তবে এরা সবাই তো তার পরিবারের সদস্য কিন্তু একা সময় কাটাতে ভীষণ ভালো লাগে৷ তাই সে ঘরেই অপেক্ষা করছে তার ভূমি কন্যার জন্য। বিছানায় শুয়ে একবার এপাশ তো আরেকবার অপাশ করছে৷ এরই মাঝে ঘরে প্রবেশ করল ভূমি। তাকে দেখা মাত্রই আড়মোড়া ভাঙল প্রলয়। ভূমিকে আজ খুবই চঞ্চল মনে হচ্ছে। মেয়েটা যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে৷ মেয়েটার হাস্যজ্বল মুখটাই বড্ড ভালো লাগে৷ কখনো এতটা ছটফটে দেখেনি প্রলয়। উঠে বসে ভূমিকে জিজ্ঞেস করল‚
“বিবিসাহেবাকে আজ ভীষণ খুশি খুশি মনে হচ্ছে। কী ব্যাপার?”
ভূমি দরজা আটকে বিছানায় গিয়ে বসল৷ ক্ষীণ হেসে বলল‚ “আম্মাকে পেয়ে আমার ভীষণ আনন্দ লাগছে৷”
“আর তোমার এই আনন্দটাই আমার খুব প্রিয়।”
❑
পূর্বাকাশে নবোদিত অরুণের ছটা সমগ্র অম্বর জুড়ে৷ পাখিদের কিচিরমিচির কলরবে ঘুম ভেঙেছে ভূমির। ঘড়িতে একবার সময় দেখে নিল সে। সকাল সাড়ে সাতটা বাজছে৷ বারান্দায় দুটো চড়ুই পাখি বাসা বেঁধেছে৷ প্রতিদিন সকালে তাদের কিচিরমিচিরেই ঘুম ভাঙে তার। ফজরের নামায আদায় করে ঘুমিয়েছিল৷ ভূমি ঝটপট উঠে পড়ল৷ ঘরটা গুছিয়ে হাতমুখ ধুয়ে নিল সে৷ এরপর ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। প্রলয় এখনো ঘুমচ্ছে৷ আজ মনে হয় না সে কোথাও বের হবে। কাল এবাড়িতে অনুষ্ঠান রয়েছে৷ মাথায় ওড়না পেঁচিয়ে সিঁড়ি ভেঙে নিচে নেমে এলো ভূমি। ভাবল নাস্তা বানিয়ে নেবে। কিন্তু এতগুলো মানুষের খাবার রান্না করতে বেশ হিমসিম খেতে হবে। এ বাড়িতে এসে তো তাকে দশ জনের খাবার অনায়াসেই বানাতে পেরেছিল। তবে সমস্যা হবে না। সাবিনার সাহায্য নিয়ে নেবে সে। যেই ভাবা সেই কাজ৷ রান্নাঘরে এসে দেখল‚ সাবিনা সবেই ঘুম থেকে উঠেছে। এ বাড়ির সবাই ঘুম থেকে দেরি করেই ওঠেন। রান্নাঘরে সাবিনা কাজে হাত দিয়েছে৷ এমন সময় ভূমিকে রান্নাঘরে দেখে সাবিনা জিজ্ঞেস করল‚
“আরে ভাবি আমনে এই সময়?”
“রান্না করতে হবে তো।”
“আমি একলা করতে পারমু।”
“আমি সাহায্য করি। তুমি একটু মশলা গুলো ব্লেন্ড করে দিয়ো?”
“আইচ্ছা ভাবি। আর কী কী করতে হইব আমারে কইয়েন!”
কথা বলতে বলতেই কাজে হাত দিয়ে দিয়েছে ভূমি। ভেবেছিল খিচুড়ি রান্না করবে। সঙ্গে কয়েক পদের ভর্তা‚ বেগুন আর আলু ভাজা৷ ভূমি পেয়াজ কাটতে শুরু করল৷ সাবিনা ব্লেন্ডারে মশলাগুলোকে একে একে পিষছে৷ বড়ো বড়ো দুটো হাড়ি বসিয়েছে চুলোয়৷ এতগুলো মানুষের খাবার। বেশি করেই রান্না করা হচ্ছে। সাবিনা ধাপে ধাপে কাজে সাহায্য করছে ভূমিকে৷ ইতিমধ্যেই সে কাটাকুটি শুরু করে দিয়েছে। প্রথমে আলু কে’টে ধুয়ে রেখেছে তারপর বেগুন। সবকিছু রান্নাবান্না হতে ঘণ্টা দেড়েক সময় লেগেছে ওদের৷ এর ফাঁকে ফিরোজা এসেছিলেন। এসে দেখলেন সকালের নাস্তার বন্দোবস্ত আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। ভূমির প্রতি তিনি খুবই সন্তুষ্ট। মেয়েটা এ বাড়িতে যথাসম্ভব মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। অথচ ওকে নিয়েই মাধুরীর যত অবহেলা৷ রান্নাঘরের কাজ হয়ে যেতেই ভূমি ঘরে চলে গেল প্রলয়কে ডাকতে৷ সকাল নয়টা বাজতে চলল। বেলা তো হয়েই গিয়েছে৷ সবাই ঘুম থেকে আরও আগেই উঠে পড়েছে। ভূমি সাবিনাকে দিয়ে চা পাঠিয়েছিল সকলের জন্য৷
ভূমি ঘরে এসে দেখল প্রলয় এখনো চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমচ্ছে। লোকটা কী আসলেই এতটা ঘুমকাতুরে? কই চাচি মার কাছে তো শুনেছে‚ প্রলয় খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে! ভূমির প্রলয়ের মাথার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে ডাকতে শুরু করল। কিছুটা নড়েচড়ে আবারও ঘুমে তলিয়ে গেল প্রলয়৷ এবার তার বাহুতে ঝাকিয়ে ডাকতে শুরু করল‚
“এমপি মশাই আপনি এখনো ঘুমচ্ছেন? উঠুন তাড়াতাড়ি। সবাই আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।”
ঘুমু ঘুমু ভারী কণ্ঠে প্রলয় বলল‚ “আজ আমার শরীরটা ভালো লাগছে না৷”
ভূমির প্রলয়ের কপালে হাত রাখল৷ না! জ্বর তো নেই৷ তাহলে কী হলো লোকটার? ভূমি কিছুটা ব্যস্ত হয়ে প্রলয়কে জিজ্ঞেস করল‚
“আপনার কী খুব বেশি খারাপ লাগছে? আমি কী ভাইয়াকে ডাকব?”
প্রলয় মনে মনে কয়েকটা কথা আওড়াল। কথা গুলো এমন যে‚ “ইস! এসেছে ভাইয়ার দুলালি।” প্রলয়কে চুপ থাকতে দেখে ভূমি আবারও জিজ্ঞেস করল‚
“কী হলো কিছু বলছেন না কেন?”
“অর্পণকে ডাকতে হবে না। তুমি আমার খাবারটা ঘরে নিয়ে এসো৷ বেশি করে নিয়ে আসবে। আমার প্রচুর ক্ষিধে পেয়েছে৷ সবকিছু দ্বিগুণ নিয়ে আসবে। ক্ষিধে পেলে আমি অনেক খাই।”
থম মে’রে রইল ভূমি। লোকটা তার ব্যস্ততাকে তোয়াক্কা না করে খাবার নিয়ে আসতে বলছেন? ভূমিকে এভাবে বসে থাকতে দেখে মুখের সামনে তুড়ি বাজাল প্রলয়৷ চমকে উঠে তাকাল ভূমি। এরপর ঘর থেকে বেরিয়ে গেল৷ প্রলয় বিছানা ছেড়ে উঠে ঝটপট ফ্রেশ হয়ে এলো। সকালে এরইমাঝে খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। মিনিট পাঁচেক পর ট্রেতে করে খাবার নিয়ে ঘরে প্রবেশ করল ভূমি। প্রলয় বিছানায় বসে রয়েছে৷ ভূমি তাড়া দিয়ে বলল‚
“আপনি হাতমুখ ধুয়ে আসুন আমি বেড়ে রাখছি।”
প্রলয় বলল‚ “আমি ফ্রেশ হয়ে এসেছি।”
ভূমি খাবারের প্লেটটা প্রলয়ের দিকে এগিয়ে দিল। প্রথম লোকমা নিজে না খেয়ে ভূমির মুখের সামনে তুলে ধরল৷ প্রলয় ইচ্ছে করেই বেশি করে খাবার আনিয়েছে। দুজনে একসঙ্গে খাবে বলে। সময় অতিবাহিত হলো। ভূমি একই ভঙ্গিতে ড্যাবড্যাব করে তার এমপি মশাইয়ের মুখপানে চেয়ে রইল৷ প্রলয় বলল‚
“অপেক্ষা করা আমার মোটেও পছন্দ নয় ভূমি কন্যা। ঝটপট হা কর।”
ভূমি খাবারটা মুখে নিল৷ প্রলয়ের জোরাজুরিতে ভূমিও তার সঙ্গে খেয়ে নিল। সে এবার বুঝতে পারল প্রলয়ের মতিগতি।
দুপুরে…
নিচতলার ঘরে একাই রয়েছেন মহুয়া৷ রান্নাঘর থেকে এদিক সেদিক পর্যবেক্ষণ করছে ভূমি। না এখন কেউ নেই এখানে। দুপুরের খাবার খেয়ে কেউ হয়তো ঘুমচ্ছে আবার কেউ হয়তো নিজেদের ঘরে রয়েছে। বাহিরে ডেকোরেশনের কাজ চলছে৷ কয়েকজন হয়তো সেখানেই রয়েছে৷ মালঞ্চ নীড় মরিচ বাতি দিয়ে সাজানো হচ্ছে। কাউকে বৈঠকখানার কাছে দেখতে না পেয়ে ভূমি তার মায়ের কাছে চলে গেল। বিছানায় বসে ছিলেন মহুয়া৷ সে গিয়ে দরজা আটকে দিল। আকস্মিক এমন হওয়ায় কিছুটা ঘাবড়ে গেলেন মহুয়া। পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন‚
“এভাবে কেউ দরজা লাগায়? বাকিরা দেখলে ভাববে‚ আমি তোকে কুম’ন্ত্রণা দিচ্ছি।”
কোনো রকমের ভণিতা ছাড়াই ভূমি জিজ্ঞেস করল‚ “আম্মা আমার বাবা কে?”
চলবে?…..