রণরঙ্গিণী_প্রেমরঙ্গা |৫১| #ঊর্মি_আক্তার_ঊষা

0
670

#রণরঙ্গিণী_প্রেমরঙ্গা |৫১|
#ঊর্মি_আক্তার_ঊষা

সকল গ্লানি কাটিয়ে একটি সুন্দর সকাল উদয় হয়েছে ধরিত্রীর বুকে। সকাল থেকেই মালঞ্চ নীড়ে কোলাহল লেগে রয়েছে। বাড়িতে তো কম মানুষ নেই। প্রায় পঁচিশ জনের মতো সদস্য রয়েছেন। রান্নাঘরে নাস্তার বন্দোবস্ত করছেন ফিরোজা‚ ফাহমিদা আর রাবিয়া। সাবিনা কে ঘর পরিষ্কার করানোর কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন ফিরোজা। এদিকে আজ শাহাদাৎ মোড়ল উনার পরিবার নিয়ে গ্রামে ফিরে যাবেন। মহুয়াও তাদের সঙ্গে গ্রামে ফিরে যাবেন। মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে তো একাধারে বেশিদিন থাকা যায় না। মোর্শেদ শিকদার অনেকবার বারণ করেছেন শাহাদাৎ মোড়লকে। কুটুম মানুষ দিন দুয়েক তো থাকাই যায়। কিন্তু শাহাদাৎ মোড়ল রাজি হলেন না। খালি বাড়ি রেখে এসেছেন৷ তারউপর গ্রামে ব্রিজ বানানোর কাজ চলছে৷ অনেক দায়িত্ব উনার কাঁধে। আরশও তার বাবা মায়ের সঙ্গে গ্রামে ফিরে যাবে। ইরাও তার হোস্টেলে ফিরে যাবে। বাকি মেহমানরাও আজ ফিরে যাবে। সবাই নিজেদের কাজ থেকে দুদিনের ছুটি নিয়ে এসেছিলেন। তার ওপর লাম লামিয়ার পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে এই মাসেই। রাফির ডিউটি কাল থেকে শুরু তাই তাদেরও আজ ফিরে যেতে হবে। তবে গুলবাহার হয়তো কিছুদিন মেয়ের কাছেই থাকবেন। যাওয়ার ব্যাপারে তিনি এখনো কিছু বলেননি। তিনি ফজরের আযান পড়ার আগেই ঘুম থেকে ওঠেন। বৈঠকখানা অথবা রান্নাঘরে নতুন বউকে দেখতে না পেয়ে গুলবাহার বললেন‚

“তা তোর ছেলের বউ কোথায়—এখনো পড়ে পড়ে ঘুমচ্ছে? বেলা তো কম হলো না!”

কিছুটা বিরক্তি নিয়ে মাধুরী বললেন‚ “আমি কিছু জানিনা। সব কী আর আমার হাতে আছে নাকি?”

“এখনো সময় আছে লাগাম টেনে ধর।”

প্রত্যুত্তরে কিছুই বললেন না মাধুরী। মোর্শেদ শিকদার‚ মেহরাব শিকদার‚ অর্পণ নিজেদের কাজে বের হবে নাস্তা করেই। মাধুরী উঠে গেলেন কারণ মোর্শেদ শিকদারকে উনার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোকে হাতে হাতে এগিয়ে দিতে হয়। তিনি নিজেদের ঘরে চলে গেলেন। অন্যদিকে বাকিরা নিজেদের ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছে। নাস্তা করেই বেরিয়ে পড়বেন উনারা। এইজন্য রান্নার দিকটা ফিরোজা নিজেই সামলাচ্ছেন৷ এই নিয়েও আরেক ঝামেলা। সবটা কেন উনাকে একা করতে হবে? বাড়ির বউ কেন পড়ে পড়ে ঘুমচ্ছে?

সাড়ে আটটা…

পড়নের সেই লাল জরজেট শাড়িটা বিছানার এক কোণায় পড়ে৷ বিছানা আর মেঝেতে গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে৷ জানালা দুয়ার হুট করে খোলা। তবে পর্দা ঝুলিয়ে রাখা৷ সফেদ পর্দা গুলো বাতাসের তালে তাল মিলিয়ে উড়ছে৷ বালিশের উপর কনুইয়ে ভর করে এপাশ ফিরে ঘুমন্ত ভূমি কন্যাকে দেখে যাচ্ছে প্রলয়। নিশ্চিন্তে ঘুমচ্ছে মেয়েটা৷ পাতলা চাদরটা গায়ে জড়িয়ে রাখা। গ্রীবার দুটো জায়গায় লালচে আদুরে দাগ। চুলগুলো এলোমেলো। খোলা চুল বিছানার অপাশের মেঝেতে লুটোপুটি খাচ্ছে। ভূমির কপালের উপর থাকা একগুচ্ছ চুল ডান হাত দ্বারা ঠিক করে দিল প্রলয়৷ আঁখিপল্লব কিছুটা কেঁপে উঠল ভূমির। ঘুম হালকা হয়ে আসছে৷ গ্রীবায় থাকা লালচে দাগটায় আলতো হাত ছোঁয়াল৷ চোখ বন্ধ রেখেই আড়মোড়া ভাঙল মেয়েটা। পাশে প্রলয়কে এভাবে আস’ক্ত দৃষ্টিতে চেয়ে থাকতে দেখে তাড়াতাড়ি উঠে বসল। শরীরের উপর থেকে চাদরটা খসে পড়ল৷ একবার গভীর ভাবে তাকিয়ে দেখল প্রলয়। ভূমিকে এভাবে দেখে নেশ ধরে যাচ্ছে তার৷ ফর্সা উন্মুক্ত পেট দৃশ্যমান। প্রলয় নিজেকে সামলে বলল‚

“এ রূপেও তোমাকে দারুণ লাগছে।”

ভূমি এবার নিজের দিকে তাকাল। লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলল মুহূর্তেই। চুল দ্বারা নিজেকে ঢেকে নিল সে৷ শুধুমাত্র পেটিকোট আর ব্লাউজ পড়ে রয়েছে। প্রলয় একদৃষ্টে চেয়ে ছিল৷ বিছানার কোণে পড়ে থাকা শাড়িটা কোনো মতো শরীরে পেঁচিয়ে বিছানা ছাড়তে নিলে‚ শরীরে কিঞ্চিৎ ব্যথা অনুভূত হলো। কিছু ব্যথা আদুরেও হয়। ত্রস্ত হস্তে হাত খোপা করে ফেলল ভূমি৷ যার দরুন গ্রীবায় লালচে দাগ ভেসে উঠল। গৌরবর্ণে জ্বলজ্বল করছে। ভূমির হাতটা ধরে বিছানায় শুইয়ে দিল প্রলয়৷ শরীরের সেই চিনচিনে ব্যথায় “আহ্!” বলে আর্তনাদ করে উঠল৷ ভূমির উপর কিছুটা ঝুঁকে বিচলিত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল‚

“লেগেছে?”

দুটো দৃষ্টি বিনিময় হলো৷ সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিল ভূমি৷ প্রলয়ের চোখের দিকে সে কখনোই তাকিয়ে থাকতে পারে না। ঘোর লেগে যায়৷ আকর্ষণ অনুভূত হয়৷ লজ্জা করছে ভীষণ। কাল রাতের কথা মনে পড়তেই মূর্ছা যাচ্ছে ভূমি। শরীরের উপর জড়িয়ে রাখা শাড়ি আর চাদরটুকু খিঁচে ধরে রেখেছে। অর্ধাঙ্গিনীর লজ্জা মিশ্রিত হাসি দেখে প্রলয় ফিসফিসিয়ে বলল‚

“আমাদের মাঝে যতটুকু দূরত্ব ছিল সেটা কাল রাতেই ঘুচিয়ে দিয়েছি। আর কোনো লজ্জা নয়। এখন থেকে তুমি আমার আমি তোমার।”

ঘাড় বাঁকিয়ে ভূমি একবার দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকাল। সকাল সাড়ে আটটা বাজতে চলল। তার মানে বেলা অনেক হয়েছে। মাথা আর শরীর ঝিমঝিম করছে। চিনচিনে ব্যথা সর্বাঙ্গ জুড়ে। রাতে ঘুম হয়নি ঠিক করে। প্রলয় তাকে ঘুমতে দেয়নি। অলসতা কাবু করছে ক্রমশ৷ শুধু শুয়ে থাকতেই ইচ্ছে করছে৷ উঠে গোসল যে করবে সেই ইচ্ছাটুকু অবশিষ্ট নেই। নিচে যাবে তো দূরের কথা। চোখমুখ ফ্যাকাসে হয়ে রয়েছে। এবার অন্তত সমস্ত অলসতাকে দূর করতে হবে৷ প্রলয়ের বুকে হাত রেখে সরানোর চেষ্টা করল ভূমি৷ কিন্তু পুরুষালি শক্তির সাথে কী আর তার শক্তি চলবে? ভূমিকে হারিয়ে দিতে প্রলয় নিজের সঙ্গে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিল৷ গৌর কপোলে শব্দ করে অধর ছোঁয়াল। তার এহেন কাজে বোকা বনে গেল ভূমি৷ প্রলয় এবার নিজে থেকেই সরে গেল৷ ছাড়া পেয়েই বিছানা ছাড়ল ভূমি। ওয়ারড্রব থেকে নিজের জামাকাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে ছুটে গেল।

অনেকটা সময় নিয়ে গোসল করে বের হয়েছে ভূমি। ঝটপট তোয়ালে দিয়ে চুলগুলো মুছে হাত খোপা করে নিল৷ মাথায় বড়ো করে ওড়না পেঁচিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল সে৷ তার ওয়াশরুম থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রলয় গোসল করতে ঢুকেছিল। সে সুযোগ বিছানা আর ঘর ঝাড়ু দিয়ে এসেছে। যা বেহাল দশা ছিল ঘরটার। যে কেউ দেখলেই মজা উড়াত। ভাগ্যিস কেউ ডাকতে আসেনি। বৈঠকখানার কাছে আসতেই সেখানে গুলবাহারকে দেখতে পেল ভূমি৷ সে গিয়ে উনাকে সালাম জানাল। সালাম গ্রহন করলেন গুলবাহার। জিজ্ঞেস করলেন‚

“কী গো নাতি বউ এখন বুঝি সময় হলো ঘুম থেকে ওঠার?”

মাথা নিচু করে নিল ভূমি৷ সত্যিই আজ দেরি হয়ে গিয়েছে৷ এমনটা তো কখনো হয়নি। শরীর ক্লান্ত থাকায় মূলত ঘুমটা গাঢ় ছিল৷ কিন্তু এমপি মশাই তো জেগে ছিলেন তাহলে কেন ডেকে দিলেন না? ইতিমধ্যেই সকলে নাস্তা করে নিয়েছে৷ শুধু বাকি রয়েছে পূর্ণতা পুষ্পিতা‚ প্রলয় আর সে৷ পূর্ণতা পুষ্পিতা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য একদম তৈরি। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে দুবোন পড়তে বসেছিল৷ ভূমি ওদের চার জনের জন্য নাস্তা বেড়ে রাখল। এরই মাঝে স্কুল ড্রেস পড়ে ডাইনিং টেবিলের কাছে চলে এসেছে পূর্ণতা পুষ্পিতা। ভূমি ওদের দুজনকে আগে খেতে দিয়ে দিল৷ ওরা খেতে শুরুও করে দিল৷ তা না হলে পরে দেরিও হয়ে যেতে পারে৷ প্রলয় ওদের দুজনকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে নিজের কাজে যাবে।

ডাইনিং টেবিলের উপর থাকা এঁটো বাসনগুলোকে ধুয়ে পরিষ্কার করে ঘরে ফিরে এসেছে ভূমি। ঘুম পাচ্ছে ভীষণ। আপাতত আর কোনো কাজ নেই নেই। কিছুক্ষণ পর হয়তো প্রলয় বের হবে৷ ঘরে এসে দেখল এরই মাঝে প্রলয় তৈরি হয়ে নিয়েছে। কালো প্যান্ট সাদা শার্ট৷ শার্টের হাতা গুটিয়ে রাখা। আঁটসাঁট দীর্ঘ দেহে শার্টটা দারুণ মানিয়েছে। দরজার সামনে পা দুটো থমকে গেল৷ ভূমি একদৃষ্টে বেশ কিছুক্ষণ চেয়ে রইল। আয়নায় প্রলয় ঠিকই ভূমির প্রতিবিম্ব লক্ষ্য করল। হাত দ্বারা নিজেকে আড়াল করে প্রলয় বলল‚

“আইলা বউ! চোখ দিয়েই গিলে খাচ্ছ? কী লজ্জা— কী লজ্জা!”

ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইল ভূমি। দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে হলো না৷ তাই সে গিয়ে বিছানায় বসল৷ হাতে ঘড়ি পড়তে পড়তে প্রলয় তার সামনে এসে দাঁড়াল। কিছুটা ঝুঁকে ভূমির গালে শীতল হাতের স্পর্শ করে জিজ্ঞেস করল‚

“শরীর খারাপ লাগছে?”

মাথা দু দিকে ঝাকিয়ে ভূমি বলল‚ “উহু!”

বিছানার পাশের ড্রয়ার থেকে একটা একটা ঔষধের প্যাকেট ভূমির দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল‚

“এই পিলটা খেয়ে নিয়ো। আমার দেরি হচ্ছে একটু বের হতে হবে৷ তারউপর পূর্ণ পুষ্পকে স্কুলে দিয়ে আস্তে হবে।”

ভূমি জিজ্ঞেস করল‚ “এটা কীসের ঔষধ?”

“তোমাকে এত জানতে হবে না। তুমি মনে করে খেয়ে নিয়ো। আমি আসছি।”

ভূমির কপালে অধর ছুঁইয়ে প্রলয় ঘর থেকে বেরিয়ে গেল৷ যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিল বিশ্রাম নিতে৷ ভেজা চুলগুলো বিছানাতেই মেলে দিল ভূমি। মাথার উপর ফ্যান খটখট শব্দ করে ঘুরছে৷ এতে করে চুলগুলো তাড়াতাড়ি শুকিয়েও যাবে তাই আর এসি চালাল না এখন। এরই মাঝে ইরা এলো৷ যাওয়ার জন্য সে একদম তৈরি। শুধুমাত্র ভূমির থেকে বিদায় নিতে এসেছে৷ ভূমি সেই ঔষধের প্যাকেটটাকে বের করে ইরার হাতে দিল৷ ছোটো ছোটো সাদা আর লাল ট্যাবলেট রয়েছে ভেতরে৷ ভূমি জিজ্ঞেস করল‚

“এটা কীসের ঔষধ আপু?”

ইরা আড়চোখে তাকাল৷ ভূমি কিছুটা হেসে বলল‚ “ভূলে গিয়েছিলাম। এটা কীসের ঔষধ ইরা?”

ভূমির হাত থেকে প্যাকেটটা নিল ইরা৷ এরপর ভূমিকে বলল‚ “এগুলো তো জন্ম নিরোধক পিল। সাদাগুলো জন্ম নিরোধক আর লালগুলো আয়রন ট্যাবলেট যা পিরিয়ডের সময় খায়।”

“এই ঔষধ না খেলে কিছু হবে?”

“হ্যাঁ হবে তো!”

বোকা স্বরে ভূমি বলল‚ “কী?”

“বেবি হবে মানে বাচ্চা।”

ভূমি মনে মনে ভাবল ঔষধটা খাবে না। প্রলয় যখন যখন খেতে বলবে তখন ফেলে দেবে৷ একবার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে গেলে আর রাগ করে থাকতে পারবে না৷ প্যাকেটটা সেভাবেই বিছানার পাশের টেবিলের উপর রেখে দিল ভূমি। ইরা তার কাছে থেকে বিদায় নিতে এসেছিল৷ কিছুক্ষণ পর হয়তো হোস্টেলে চলে যাবে। অর্পণ তাকে পৌঁছে দিয়ে হসপিটালে যাবে৷ মেহরাব শিকদার আগেই বেরিয়ে পড়েছিলেন। শাহাদাৎ মোড়লও নিজের পরিবার নিয়ে কিছুক্ষণ পর রওনা হবে৷ এরই মাঝে মহুয়া এলেন ভূমির ঘরে। আম্মাকে দেখা মাত্রই ভূমি সেই ঔষধের প্যাকেটটাকে বালিশের নিচে লুকিয়ে ফেলল৷ ইরা চলে গেল৷ মা মেয়েকে একাকী কথা বলার সুযোগ করে দিল। ভূমির মন খারাপ হলো। আজ তার আম্মা চলে যাবে। আবার না জানি কবে দেখা হয় আম্মার সঙ্গে। কান্না পাচ্ছে ভীষণ। আম্মাকে কাছে পেয়ে কতটা খুশি ছিল সে। নেত্র যুগল অশ্রুপ্লুত হয়ে ঝাপসা হলো। সঙ্গে সঙ্গে কয়েক ফোঁটা উষ্ণ অশ্রুকণা গড়িয়েও পড়ল। মহুয়া মেয়ের চোখের পানি মুছিয়ে দিলেন। ক্রন্দনরত কণ্ঠে ভূমি বলল‚

“এখানে দুদিন থেকে গেলে হত না আম্মা? মাত্র দুটো দিন তোমাকে কাছে পেলাম। এত তাড়াতাড়ি কেন চলে যাচ্ছ আম্মা?”

“মেয়ের শ্বশুর বাড়ি যে বেশিদিন থাকতে হয় না রে মা।”

“এটা তো তোমারও শ্বশুর বাড়ি।”

“চুপ! এই কথা আজ বলেছিস‚ আর কোনোদিন যেন এই কথা তোর মুখ দিয়ে না বের হয়।”

চেঁচিয়ে উঠলেন মহুয়া। কেঁপে উঠল ভূমি৷ তার আম্মা ভীষণ রেগে গিয়েছেন সে বেশ বুঝতে পারল তা। ভূমি আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে নেবে তার আগেই মহুয়া ভূমিকে এমন কিছু কথা বললেন‚ যেগুলো না জানালেই নয়। কিছু সত্যি এখনই বলে রাখা প্রয়োজন। ভূমি মোটেও ঘাবড়াল না৷ এই লোকের থেকে এমনটাই আশা করা যায়। যে নিজের অনাগত সন্তানকে ভূমিষ্ঠ হবার আগেই নষ্ট করে ফেলতে চায়। তার থেকে বড়ো অন্যায় এ পৃথিবীতে আর একটা হয় না। যাওয়ার আগে মহুয়া একটা কথা বলে গেলেন‚

“সম্পর্ক হলো মুঠোয় ধরে রাখা জলের মতো। ঠিকই ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যেতে চাইবে। কিন্তু তোদের হতে হবে কড়ঙ্গাকৃতির।”

একটু থামলেন তারপর ভূমির গালে স্নেহময় হাত রেখে; কান্না সংবরণ করে বললেন‚ “ভালো থাকিস মা। সুখী হ।”

চলবে?…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here