#বৃষ্টিস্নাত প্রেমের গল্প
#পর্ব-১৬
#লেখনীতে-আসমিতা আক্তার ( পাখি )
সময়টা সকালের!হুর রুদ্ধের দরজার বাইরে উঁকি ঝুঁকি মারছে। এখন রুদ্ধের দর্শন চাইছে। নিচে অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করার পর যখন দেখল রুদ্ধ নিচে নেমে আসছে না, তখন বাধ্য হয়ে হুর নিজেই উপরে রুদ্ধের রুমের সামনে চলে গেল।দরজায় টোকা দেয়ার পর বুঝতে পারল দরজা খোলা। তবুও আরেকবার টোকা দিল। ভেতর থেকে সাড়াশব্দ পেল না সে। তাই ভীত মন নিয়ে আস্তে আস্তে করে দরজা খুলতে লাগলো। এক সময় অর্ধেকের বেশি দরজা খুলে গেল। তবে ভেতরে অন্ধকার ছাড়া কোন কিছুই দেখতে পেল না।ঘুটঘুটে অন্ধকার দেখে ভয় পেল হুর। ভয়ে ভয়ে রুদ্ধকে বলতে লাগলো।
“আপনি কি রুমের মধ্যে আছেন?
প্রশ্নের পিঠে উত্তর পেল না হুর।দ্বিতীয়বারের মতো যখন রুদ্ধের রুমে তার প্রস্থান হয়েছিল তখন ভালো করে রুম পরখ করে নিয়েছিল সে। হাতের ডান পাশে সাদা ফকসকা দেয়ালে সুইচ বোর্ড দেখতে পেয়েছিল। দেয়ালে হাতের স্পর্শ করে তা অনুসরণ করে সুইচ বোর্ড খুঁজে সুইচ টি/পতে লাগলো। অসংখ্য সুইচের মেলা।কয়েকটা সুইচ টি/পার পরও বাতি জ্বলছে না। তাই এক এক করে সব সুইচ টি/পতে লাগলো। এমন করতে করতে এক সময় কয়েকটা বাতি জ্বলে গেল। বাতি জ্বলার সাথে সাথে শান্তির এক নিঃশ্বাস ত্যাগ করল হুর। বেখেয়ালি ভাবে খাটের দিকে তাকাতেই হতবিহ্বল হয়ে গেল।আশ্চর্যে চোখ বড় বড় হয়ে এলো।খাটের অনেকটা জায়গা জুড়ে শুয়ে আছে রুদ্ধ। পিঠ তার উপরে। পায়ের স্টাইল ” দ” এর মতো। এতে আশ্চর্য হলো না হুর। সে তো আশ্চর্য হয়েছে রুদ্ধের পরনের কাপড় দেখে। বিশাল লম্বা শরীর জুড়ে শুধুমাত্র ছোট একটি প্যান্ট পড়ে আছে সে। যাকে বলা হয় আন্ডা/র/ওয়্যার। দুধ সাদা ফর্সা চামড়ায় কালো রঙা আন্ডা/র/ওয়্যার শরীরের সাথে যেন ফুটে উঠেছে।আরেকটা জিনিস খেয়াল করতেই আরো আশ্চর্য হল সে। রুদ্ধের শরীরে লোমের অস্তিত্ব নেই। যেখানে পুরুষদের লোম মহিলাদের থেকে অত্যাধিক বড় হয় সেই জায়গায় লোমের ছোট কনাও রুদ্ধের শরীরে দেখতে পেল না।চোখ পরলো এবার দুহাতে। কনুইয়ের নিচে অবধি দুই হাতে কালো এবং নীল রংয়ের বড় বড় ট্যাটু করা। সম্ভবত কোন ডিজাইন হবে। তবে উল্টো শুয়ে থাকার কারণে ডিজাইনগুলো বুঝতে পারছে না সে।
রুদ্ধকে আর এভাবে দেখতে পারলো না হুর। এলোমেলো হয়ে আসছে তার মস্তিষ্ক। থর থর করে কাঁপছে শরীর। পিছন ঘুরে বড় বড় নিশ্বাস নিতে লাগলো। এলোমেলো পা ফেলে দরজার দিকে যেতে নিলেই দেয়ালের সাথে লেগে থাকা ছোট টেবিলের ওপর ফুলদানি দুর্ভাগ্যবশত হুরের হাত লেগে পড়ে গেল। বিকট শব্দ হল। কাচের ফুলদানি। তার মধ্যে ছ থেকে সাতটা কালো গোলাপ রাখা ছিল। যা এখন ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে। বিকট শব্দে ধরফরিয়ে ঘুম থেকে উঠে বসে গেল রুদ্ধ। সামনে তাকিয়ে দেখল হুর দাঁড়িয়ে আছে। হুর কে দেখে চমকে গেল।ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখল ফুলদানি ।যা ভেঙ্গে এখন চুরমার। হুর ভয়ে ভয়ে রুদ্ধের দিকে তাকালো। ভয় মিশ্রিত কন্ঠে বলল,
“সসসর্যি,আমি ইচ্ছে করে ফেলিনি। ভুলে পড়ে গিয়েছে।
ঘুম পূরণ না হওয়ায় চোখ লাল হয়ে আছে রুদ্ধের।গতকাল রাতে অনেক দেরি করে ঘুমিয়েছি। মাঝ রাত বলা যায়। মাথাটা ও ঝিম ধরে রয়েছে। টিস টিস করে ব্যথা অনুভব হচ্ছে। এক হাত মাথায় ধরে আধো আধো চোখ খুলে রুদ্ধ প্রশ্ন করল,
“তুমি এখানে কি করছো?
রুদ্ধের গলার স্বর শুনে বুঝতে পারল রুদ্ধ তার ওপর ক্ষিপ্ত নয়। তাই ভয় কমে আসলো হুরের। মিনমিন করে বলল,
“আসলে আমি আপনার সাথে কথা বলতে এসেছিলাম।
থেমে গিয়ে চোখ ফ্লোরের দিকে রেখে হাত কচলাতে কচলাতে আবার মিনমিন স্বরে বলল।
“আপনি প্লিজ গায়ে কিছু জড়িয়ে নিন।
ঈষৎ ভ্রু কুঁচকে এলো রুদ্ধের।পুরোপুরি ভাবে চোখ খুলে চোখ বুলালো নিজের উদাম গায়ে।নিজের এই অবস্থা দেখে নিজেই ভড়কে গেল।গলা খাকারি দিয়ে পাতলা কম্বল নিজের কোমর অব্দি ঢেকে নিল।তারপর আদেশের স্বরে বলল,
“তুমি নিচে অপেক্ষা করো আমি আসছি।
ফ্লোর থেকে চোখ তুলে রুদ্ধের দিকে এক নজর তাকালো।প্রথমে চোখ গেল তার খালি বুকের ওপর।হাতের সাথে সাথে ঘাড, গলায় এবং বুকের একটু উপর দিয়েও ট্যাটু দ্বারা আবৃত। দেখতে খুবই ভালো লাগছে।তবে এক নজরের ব্যবধানে বুঝতে পারলো না ট্যাটুগুলোর ডিজাইন।আর এখানে দাঁড়িয়ে থাকার শক্তিও পেল না হুর।দ্রুত পা চালিয়ে চলে গেল নিচে।ড্রইং রুমে বসে অপেক্ষা করতে লাগলো৷১০ মিনিট পার হলো। তাও রুদ্ধ আসছে না। হাত ঘড়িতে সময় দেখে নিল হুর।ক্লাসের সময় হয়ে যাচ্ছে। হুর ভাবলো আর অপেক্ষা করবে না। তাই বসা থেকে উঠে দাড়ালো। কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে চলে যেতে নিলে রুদ্ধের ডাকে থেমে গেল।
” কোথাও যাচ্ছো?
পিছন ঘুরে রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে তাড়াহুড়া করে বললো,
“কলেজের জন্য অনেক লেট হয়ে যাচ্ছে।
” কিছু বলতে চাচ্ছিলে তুমি!
“এখন বলার সময় নেই। কলেজ থেকে ফিরে বললো।
” আসো।
হাটতে লাগলো রুদ্ধ। পিছে আসছে হুর।গাড়ির কাছে এসে রুদ্ধ হুরকে বসতে বললো।সময় ব্যয় করলো না হুর, বসে পড়লো।মিডিয়াম স্প্রিড রেখে গাড়ি চালাচ্ছে ড্রাইভার। রুদ্ধ জিজ্ঞেস করলো,
“এখন বলো!
রুদ্ধের দিকে তাকাতে লজ্জা করছে হুরের। রুদ্ধের কথা ভাবলেই তখনকার দৃশ্য ভেসে উঠে চোখের সামনে। একটা মানুষ কিভাবে শুধু আন্ডা/র/ওয়্যার পড়ে ঘুমাতে পারে তাই তো আশ্চর্যের ব্যাপার।মাথা নত করে হুর বললো,
“আজ মিম এর জন্মদিন। আমাদের সবাইকে ইনভাইট করেছে।সন্ধ্যায় যেতে বলেছে।
সিটে গা এলিয়ে কড়া গলায় বললো,
” ড্রাইভার কে নিয়ে যাবে। আর কতক্ষন লাগবে আসতে?
হুর ভেবে বললো,
“অনুষ্ঠান তো সন্ধ্যার পর শুরু হবে। শেষ হতে হতে প্রায় অনেক সময় লাগতে পারে৷
” আমায় কল করবে, নিতে আসবো আমি।
লজ্জা ভুলে রুদ্ধের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো হুর। যেন সে এ কথা বিশ্বাস করতে পারছে না। পরক্ষনে ভাবলো তার তো কোনো ফোন নেই। তাহলে রুদ্ধকে ইনফর্ম করবে কিভাবে!রুদ্ধেরও মনে পড়লো ফোনের ব্যাপার টা। তাই নিজ থেকেই বললো,
“ওহ্ তোমার তো আবার ফোন নেই। আচ্ছা আমি লাঞ্চের সময় নিয়ে আসবো।
মৌন রইলো হুর। কথা বলার মতো কিছু খুজে পেল না। হুরকে কলেজে পৌঁছে দিয়ে রুদ্ধ চলে গেল তার অফিসে।
রুদ্ধ তার কথা মতো লাঞ্চের সময় হুরের জন্য লেটেস্ট মডেলের একটি ” অপো” ফোন নিয়ে আসলো।খাবার টেবিলে একে অপরের মুখোমুখি হয়ে বসেছে দুজন। রুদ্ধ হুরের জন্য আনা ফোনটি সামনে এগিয়ে বললো,
“এখানে সিম কার্ড,এবং সব কিছু সেট করা আছে।কন্টেক্ট লিস্টে আমার নাম্বার সেভ করা আছে।আর তোমার বান্ধুবীদের নাম্বারও অ্যাড করে নিও।
ফোন হাতে নিল হুর।কুচকুচে কালো কালার। তবে দেখতে ভীষণ সুন্দর।আনন্দিত হয়ে গেল তার মন। দ্রুত খাবার শেষ করলো। উদ্দেশ্য রুমে গিয়ে ফোনের দিকে অপলক চেয়ে থাকা।তবে মন বিষন্ন হয়ে গেল।কখনও সে অ্যান্ড্রোয়েড ফোন ব্যবহার করে নি।তবে কল রিসিভ করতে এবং কাটতে জানে। তা ছাড়া কোনো দিন হাতে ছুয়েও দেখে নি।বাবার একটা বাটন ফোন ছিল। সেটা দিয়েই গুরুত্বপূর্ণ আলাপন হতো।বিষন্ন মন ঝট করে প্রফুল্ল হয়ে গেল। লিলি বা জেরিনের কাছ থেকে শিখে নিতে পারবে এই আশায়।কারণ তাদেরকে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করতে দেখেছে হুর।বেসিনে হাত ধুয়েই ফোন নিয়ে দৌড় মারলো রুমের দিকে৷রুদ্ধ হা করে তাকিয়ে রইলো হুরের পানে৷মেয়েটা রাক্ষসের মতো খেয়ে ফুড়ুৎ হয়ে গেল।
দেয়ালে থাকা বড় ঘড়িতে পাঁচটা বাজতে চললো। আর এদিকে হুর কি পড়বে তা ভাবছে।কিছু ভাবতে না পেরে লিলি আর জেরিন কে ডাক দিল। দুজনেই একত্রে রুমে প্রবেশ করলো। লিলি জিজ্ঞেস করলো,
” কি হয়েছে হুর ডাকলে কেন?
ইনোসেন্ট হয়ে আসলো হুরের মুখ।বললো,
“আপু প্লিজ আমায় ড্রেস সিলেক্ট করে দাও না!
লিলি আয়েস করে হুরের বিছানায় বসলো। জেরিন চলে গেল আলমারির কাছে।বেছে বেছে একটা কফি কালার লং গাউন বের করলো। বিছানায় ছড়িয়ে ভালো করে দেখে বললো,
“এটাই পড়ো, সুন্দর লাগবে তোমার উপর।
লিলি বললো,
” হুর জলদি ড্রেস পড়ে আসো। আমি তোমায় আজ সাজাবো৷
হুর গাউন হাতে নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে যেতে যেতে বললো,
“ভূতের মতো লুক দেয়ার ইচ্ছে আমার নেই।
অপমানে থমথমে হয়ে এলো লিলির মুখ।লিলির ফেইস রিঅ্যাকশন দেখে হেসে দিল জেরিন।কিছু সময় পর ড্রেস চেঞ্জ করে হাত মুখ ধুয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসলো।দুপুরে গোছল করার পর বেশিক্ষন চুল খুলে রাখা হয়নি। তাই তো চুল এখনো ভেজা। খোপা করা চুল গুলো খুলে দিল হুর।লিলির কাছে এসে বলল,
“রেডি করে দাও আমায় আপু।
লিলি মুখ বানিয়ে বলল।
“আমার কাছে সাজতে কেন আসছো? আমি না ভুতের মত করে সাজাই?
হেসে উঠল হুর। লিলির গাল টেনে দিয়ে আদুরে স্বরে বলল।
“ভুত এবং পরী দুটোই তুমি সাজিয়ে দিতে পারো। এখন আমার ইচ্ছে হচ্ছে পরী সাজার।ফট করে আমায় পরী বানিয়ে দাও তো।
ভেংচি কেটে মুখ ফুলিয়ে লিলি বলল।
“শেষবারের মতো তোমায় সাজাচ্ছি।পরেরবার কান্নাকাটি করে গড়াগড়ি খেলেও সাজিয়ে দিব না।
কিছুক্ষণ হলো মিম দের বাসায় এসেছে হুর।রুদ্ধের কথা অনুযায়ী ড্রাইভারকে নিয়েই এসেছে।সিম্পল ভাবে লিলি তাকে সাজিয়ে দিয়েছে।তবে লম্বা ঘন চুলগুলো ছেড়ে রেখেছে।অজুহাত চুল ভেজা। লিলির কথা শুনতে চায়নি হুর। সে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল চুল বেধে আসতে। কিন্তু জেরিন আর লিলির সাথে পেরে উঠতে না পেরে চুল ছেড়েই রেখেছে।চুল ছাড়া অবস্থাতে নাকি তাকে দেখতে পুরো হুরপরী লাগছে।ঘরের মধ্যেই আয়োজন করা হয়েছে মিমের জন্মদিনের অনুষ্ঠান।আশেপাশের কিছু আত্মীয় এবং বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে জন্মদিন সেলিব্রেট করতে চায় সে।মুক্তা, স্নেহা, হুর চলে আসলেও তিন বন্ধুর এখনো খবর নেই।যেই না স্নেহা হুর কে জিজ্ঞেস করবে আকাশদের কথা সেই মুহূর্তে দরজা দিয়ে আকাশ, ফিহান আর শিহাব আসতে লাগলো।তিনজন এসে থামল স্নেহা আর হুরের কাছে এসে।আকাশ চোখ ফেরাতে পারছে না হুরের দিক থেকে।হুর স্বাভাবিকভাবে তার কাছে আসলে চোখ ফেরানো মুশকিল হয়ে যায় আকাশের। তার ওপর আজ হুরপরী সেজে এসেছে। হঠাৎ খেয়াল গেল হুরের চুলের দিকে। দেখামাত্রই হতভম্ব হয়ে গেল। চোখের পলক ফেলতে ভুলে গেল।আকাশকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সবাই আকাশের দিকে তাকালো। আকাশের চোখ অনুসরণ করে সবাই হুরের চুলের দিকে তাকালো।আশ্চর্য হয়ে গেল ফিহান আর শিহাব।আশ্চর্য হয়ে বলল,
“ও মাই গড হুর,তোমার চুল এত বড়!এতদিন তো দেখতেই পেলাম না।
অস্বস্তি হতে লাগল হুরের।নিজের সৌন্দর্যতা আর চুলের প্রশংসা পেতে বরাবরই তার অস্বস্তি হয়।অস্বস্তির জন্য কোন কিছু বলতেও পারছে না সে। স্নেহা ফিহান আর শিহাবকে আশ্চর্য হতে দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল।
“তোমাদের মত আমিও আশ্চর্য হয়েছিলাম।কিছুক্ষণ তো ঘোর কাটিয়ে উঠতে পারিনি।
“উফ তোমরা কি শুরু করে দিলে বলতো?আমরা এখানে মিমকে উইশ করতে এসেছি,সেলিব্রেশন করতে এসেছি।তোমরা তা না করে আমার পিছে পড়ে গেলে।এখন চলো সবাই মিলে একবার মিমকে উইশ করে আসি।
১জোট হয়ে মিম এর কাছে চলে গেল সবাই।এক এক করে মিমকে সবাই উইশ করছে এবং তার হাতে গিফট দিচ্ছে। হুরও আসার সময় মিমের জন্য মাঝারি সাইজের একটি টেডি বিয়ার এবং চকলেট বক্স নিয়ে এসেছে। র্যাপিং পেপার দিয়ে সুন্দর করে দোকানদার টেডি বিয়ার এবং চকলেট দুটো প্যাক করে দিয়েছে। রুদ্ধের কিছু টাকা হুরের কাছে ছিল। সেটা দিয়েই হুর মিমের জন্য গিফট কিনেছে।ছোট সাউন্ড বক্সে গান বাজছে। ছোট বাচ্চারা গানের সাথে সাথে কোমর দুলিয়ে নাচ এবং হৈ হৈ করছে। ওরা সবাই সোফায় বসে কোলড্রিংস হাতে নিয়ে গল্প করছে এবং মোমেন্ট টাকে ইনজয় করছে। হুর কখনো এর আগে বার্থডে পার্টিতে আসেনি। যদিও বার্থডে পার্টিটা খুবই ছোট মোটো ভাবে আয়োজন করা হয়েছে।তবে এটাই যেনো হুরের জন্য অনেক বড় একটা পার্টি। কারণ তাদের বংশে জন্মদিন পালন করা নিষেধ।তাই কখনো নিজেদের জন্মদিনের উৎসব এবং কি কারো বার্থডে পার্টি ইনজয় করেনি সে। কারণ হুরের বাবা এসব পছন্দ করেন না।কথার তালে তালে আকাশ বারবার আড় চোখে হুরকে দেখে যাচ্ছে। আকাশের ভালো লাগে, যখন হুর খিল খিল করে হাসে এবং দাঁত কেলিয়ে হাসে তখন তার গালে টোল পরে।তখন তার হাসি এবং টোল পড়ার দৃশ্যটা হৃদয় কাঁপিয়ে দেয়ার মত অবস্থা।যা এখন ঘটছে আকাশের সাথে।তৃষ্ণা মিটে যাওয়ার বদলে আরো বেড়ে যাচ্ছে। এই বয়সে সবারই আবেগ কাজ করে। তার বেলাতেও হয়তো আবেগ-ই কাজ করছে।এমনটা ভেবেই ঝিম ধরে বসে রইল সে।
কেক কাটার পর খাবারের জন্য বসানো হলো সবাইকে। বিরিয়ানি, সাথে আছে মুরগীর রোস্ট,সালাদ, বোরহানি।হুর সবকিছু খেলো বোরহানি খেলো না।বোরহানি খেলেই তার বমি পায়। তাই এটা স্কিপ করল। অনুষ্ঠান যখন শেষ মুহূর্তে তখন হুর পার্স থেকে নিজের ফোন বের করে রুদ্ধকে কল করলো।রুদ্ধ জানালো সে কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসবে।হুর অপেক্ষা করতে লাগলো রুদ্ধর জন্য।রাত এখন ১১ টা বাজে। চার ভাগের এক ভাগ মেহমান আগেই চলে গিয়েছে।হুরের সাথে হুরের বন্ধু বান্ধব রাও একসাথে বের হবে ভেবেছে। তাইতো সবাই রুদ্ধের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। প্রায় কিছুক্ষণ অতিক্রম হওয়ার পর হুরের ফোনে রুদ্ধের কল আসে।ফোন রিসিভ করলে শুনতে পায়,
“বাহিরে আসো।
মিম এবং মিমের ফ্যামিলি কে বিদায় জানিয়ে বের হয়ে পড়ে হুর। হুরের সাথে সাথে স্নেহা, মুক্তা,ফিহান, আকাশ তারাও বের হয়।রুদ্ধ গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির অনেকটা দূরে দাঁড়িয়ে ফোনে আলাপ করছে।তবে চোখ তার স্থির হয়ে আছে সামনে থাকা বিল্ডিংটির ওপর।বিল্ডিং এর মেইন গেইট থেকে হুর যখন বের হচ্ছিল তখন রুদ্ধের চোখ হুরের ওপর আটকে গেল।এতক্ষণের চলাচল হতে থাকা ঠোঁট ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে গেল।পরস্পর মিলিত হলো দু ঠোঁট।ফোনের অপর পাশে থাকা ব্যক্তিকে কোন কিছু না বলেই ফোন কান থেকে সরিয়ে বিনা দেখেই কেটে দিলো।কথা বলতে বলতে গেইট থেকে বেরিয়ে রুদ্ধের সামনে আসছে হুর। ঠোঁটে তার ইয়া বড় চওড়া হাসি।কথা বলার মাঝে মুক্তা দূরে থাকা রুদ্ধের দিকে এক নজর তাকিয়ে হুরকে উদ্দেশ্য করে বলল।
“বইন আজকের মত বিদায়, যা তুই এখন।তোর মুখ লটকানো কাজিন চলে এসেছে।ব্যাটার উপর মনে মনে ফিদা হয়ে গেলেও লটকানো মুখ দেখে প্রেমে পড়লাম না।
হেসে দিল উপস্থিত সবাই। হাসির শব্দ এবার বেশি ছিল। তাই তো দূরে থাকার পর ও রুদ্ধ শুনতে পেল।বিল্ডিং এর বাহিরে থাকা ল্যাম্পপোস্টের হলুদ বাতির আলো সবার মুখে উপচে পড়ছে।হলুদ বাতির কিরণ হুরের মুখের ওপর পড়তেই সৌন্দর্য যেন আরো বৃদ্ধি পেল।মুক্তা আরেকটু বিনোদন দেওয়ার জন্য পুনরায় বলে উঠল।
“বইন তোর ওই লটকানো কাজিনরে মাঝে মাঝে একটু কৌতুক শুনাইনা হাসাইছ।নাইলে এই না হাসার কারনে কত মাইয়া তারে প্রত্যাখ্যান করব তা গুইনাও কুলাইতে পারবো না।ব্যাডার লাইগা বড্ড মায়া হয় আমার।তাইতো সম্পর্ক ছাড়াই ফ্রিতে এক সাজেশন দিয়ে দিলাম।
মুক্তার রসিকতা শুনে আবার হাসির রোল পড়ে গেল। হাসতে হাসতে পেট ব্যথা হয়ে গেছে। পেটে ব্যথা অনুভব হতেই হুর পেটে এক হাত চেপে ধরল।তার চোখে পানি টলোমলো করছে। অতিরিক্ত হাসার ফল। আকাশ শব্দ করে না হাসলেও মাঝে মাঝে মুচকি হাসছে এবং ঠোঁটে এলিয়ে হাসছে।হুরের অবস্থা শোচনীয় দেখে আকাশ সবাইকে থামিয়ে বলে।
“হুর এখন তোমার যাওয়া উচিত। তোমার কাজিন তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।কাল আবার দেখা হবে, আল্লাহ হাফেজ।
নিজের হাসি নিয়ন্ত্রণে এনে বিদায় জানালো সবাইকে। তারপর সামনে এগিয়ে চলে আসলো রুদ্ধের কাছে। হুর হাসি বন্ধ করে দিলেও তার মুখে হাসির রেশ রয়ে গেছে।নিষ্পলক ভাবে হুরের দিকে তাকিয়ে রইল রুদ্ধ।সামনে থাকা ছোট বেবি হেয়ার ঠিক করতে করতে হুর বলল,
“চলুন!
কান অবদি হুরের কথা পৌছেছে কিনা তা বোঝা গেল না।সে আগের চাহনি নিয়েই হুরের দিকে তাকিয়ে রইল।তাকে স্ক্যান করতে লাগল।হালকা করে মুখে ফাউন্ডেশন লাগানো।যা হুরের স্কিনটোন এর সাথে ম্যাচ করছে।দেখতে খুবই ন্যাচারাল মনে হচ্ছে।চোখে হালকা করে কাজল দেয়া। হালকা করে ব্লাশন এবং হাই লাইটার ও দেয়া আছে।ঠোটে নুড কালার লিপস্টিক।কানে বড় বড় লম্বাটে দুল।হেয়ার স্টাইল এর দিকে নজর পড়তেই কপালে ভাঁজ পড়ল তার।সেভাবেই প্রশ্ন করল,
“তোমার চুল খোলা কেন?
সরলতার সহিত উত্তর দিল হুর।
“লিলি আপু জোর করে ছেড়ে দিয়েছে।চুল ভেজা ছিল তাই আমিও আর বারণ করিনি।
“দ্বিতীয়বার যেন আমি আর তোমার চুল ছেড়ে বাহিরে যেতে না দেখি। বাড়িতে যতক্ষণ থাকবে চুল ছেড়ে রাখবে। ফ্যানের নিচে কিছুক্ষণ বসে থাকবে।চুল এমনিতেই শুকিয়ে যাবে।তাতেও যদি না হয় আমি হেয়ার ড্রায়ার অর্ডার করে দিব সেটা ব্যবহার করবে।
তাড়াহুড়া করে হুর বলল,
“না, না আমার হেয়ার ড্রায়ারের দরকার নেই।শুনেছি হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করলে চুল ক্ষতি হয়। আমি চাইনা আমার চুল ক্ষতি হোক।
কপালের ভাঁজ শিথিল হয়ে আসলো রুদ্ধের।শান্ত দৃষ্টিতে হুরের দিকে তাকিয়ে আবার বলল,
“চুল ছেড়ে রাখার মতো দ্বিতীয়বার ভুল আর তুমি করবেনা। না, হলে সেদিনই তোমার চুল কুচি কুচি করে কেটে নাপিতের কাছে বিক্রি করে দিব।
কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল হুর।সামান্য চুল ছেড়ে দেয়ার দায়ে চুল কেটে নাপিতের কাছে বিক্রি করে দিবে,তা ভেবে হতবাক হয়ে গেল।ভুলটা তো তার এত বড়ও না যে চুল বিক্রি করে দিবে।মনে মনে নিজের সাথে কথা বলতে লাগলো হুর।
“আচ্ছা, উনি আমার চুল বিক্রি করে কি করবেন?চুল বিক্রি করলে তো টাকা পাওয়া যাবে। সামান্য কিছু টাকার জন্য উনি আমার চুল বিক্রি করে দিবেন?কোন অংশে তো তাকে গরিব বলে মনে হয় না।রাজপ্রাসাদের মতো বাড়ি,আলিশান কয়েকটি গাড়ি,এবং চামচিকারও আছে।তাহলে শুধু শুধু আমার চুলের পেছনে পড়ল কেন?
মনের ভেতর এত সব প্রশ্ন জমিয়ে রাখতে না পেরে মুখে প্রশ্ন করে বসলো।
“আপনাকে তো কোন অংশে গরীব মনে হয় না। তাহলে আপনি কেন আমার চুলের পেছনে পড়ে গেলেন। আর চুল বিক্রি করেই বা কত টাকা পাবেন। তার থেকে বরং এটাই ভালো হবে যে আপনি আমার চুলকে রেহাই দিয়ে দিন।
হুরের কথা শুনে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে রুদ্ধ হুরের দিকে তাকালো। আকস্মিক রুদ্ধের ফেইস রিঅ্যাকশন চেঞ্জ হতে দেখে ফ্যাল ফ্যাল করে রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে রইল হুর। সেসব তোয়াক্কা না করে রুদ্ধ হুর কে ধমকে বলল,
“চুপচাপ গাড়িতে বসো।
বাধ্য মেয়ের মত হুর গাড়িতে বসতে যাচ্ছিল।বাধ সাধলো রুদ্ধ। হুরকে থামিয়ে দিয়ে বলল।
“সামনে বসো, সাথে ড্রাইভার আসেনি।
অবাক নয়নে চেয়ে হুর প্রশ্ন করল,
“আপনি গাড়ি চালাতে পারেন?
বাঁকা চোখে হুরের দিকে তাকিয়ে রুদ্ধ উত্তর দিল।
“বিমান ও চালাতে পারি।শুধু গাড়ি আর বিমান কেন!আমি গরু গাড়ি, বেলগাড়ি, ঠেলাগাড়ি,ঘোড়ার গাড়ি সবই চালাতে পারি।
বিস্ময়ে হতবাক হুর,হা হয়ে গেছে তার মুখ। তৎক্ষণাৎ মুখে হাত চলে গেছে।বিস্ময় নিয়ে প্রশ্ন করল,
“সত্যিই আপনি এত কিছু চালাতে পারেন?
হতাশ হলো রুদ্ধ।আর কথা বলতে মন চাইলো না। তাই কথা না বাড়িয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়ল।ঠোঁট টিপে হেসে হুর ফ্রন্ট সিটে বসে পড়ল। ব্যাপক মজা পেয়েছে সে রুদ্ধের সাথে কথা বলে। রুদ্ধ যে তার সাথে ফাইজলামি করছিল তা সে আগেই ধরতে পেরেছিল। কিন্তু মজা নেয়ার জন্য কাহিনীটা একটু দীর্ঘ করল। গাড়ি হিনা রাস্তা দিয়ে গাড়ি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে রুদ্ধ। জানালার কাঁচ নামানো। শা শা করে ঠান্ডা বাতাস গাড়ির ভেতর প্রবেশ করছে।ছুঁয়ে দিচ্ছে দুজনের মুখ।শীতল হয়ে যাচ্ছে সর্বাঙ্গ।এই মুহূর্তে একটা সফট মিউজিক এর গান শুনলে মন্দ হয় না। সফট মিউজিকের একটা গান প্লে করল রুদ্ধ।হুর জানালার বাহিরে মাথা একটু বের করে আকাশের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি বদল না করে চাঁদ দেখে যাচ্ছে। চাঁদের আশেপাশে তারার অস্তিত্ব ও আছে।তখনই কর্ণকুহরে ভেসে আসলো গানের কিছু লাইন।
“Zara Zara bahekta Hai.
mahakata hai aaj to Mera.
tan Badan Mein Pyasi Hoon.
Mujhe Bhar le apni Bahon Mein.
দৃষ্টি জানালার বাহির থেকে সরিয়ে রুদ্ধর দিকে তাকালো হুর।এই গানের অর্থটা সে ভালোভাবেই জানে। কিছুদিন আগে মুক্তা তাকে এই গানটি শুনিয়ে ছিল। তার মোবাইল ফোনে। এবং গানের অর্থ সমূহ ও বুঝিয়েছিল। রুদ্ধের দিকে তাকিয়ে কিছুটা লজ্জা পেল সে। লজ্জায় মাথা নত করে দৃষ্টি আবার বাহিরের দিকে রাখলো।হুরের লজ্জা রাঙা চেহেরা আয়নায় বারবার দেখছে রুদ্ধ।রোমাঞ্চকর গান,সাথে পাশে বসা আগুন সুন্দরী রমণী।নিস্তব্ধ পরিবেশ। টানটান উত্তেজনা কাজ করছে রুদ্ধের শরীরে।ক্ষণে ক্ষণে বিচলিত হচ্ছে তার মন। বড় বড় কয়েকবার শ্বাস নিল। লাভ হলো না।ফাঁকা রাস্তার সাইডে গাড়ি থামালো। গাড়ি থেকে বের হয়ে গেল। দুহাত মুঠ করে রাস্তার মাঝেই পায়চারি করতে লাগলো। ইতিমধ্যে গাঁয়ের কালো শার্ট ভিজে গেছে।রুদ্ধকে হঠাৎ বিচলিত হতে দেখে ঘাবড়ে গেল হুর। মনে করল তার শরীর খারাপ করছে। তাই কোন কিছু বিবেচনা না করে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালো সে। রুদ্ধের কাছে এসে বিচলিত স্বরে প্রশ্ন করল,
“কি হয়েছে? হাসফাঁস করছেন কেন? আপনার শরীর খারাপ করছে?কাউকে ডাক দিব আমি?
হুরের দিকে না তাকিয়ে রুদ্ধ উত্তর দিল,
“এখান থেকে যাও। কাউকে প্রয়োজন নেই আমার। গাড়িতে গিয়ে বসো। আমায় একা ছেড়ে দাও।
মন মানলো না হুরের।এই প্রথম রুদ্ধকে সে অশান্ত হতে দেখল।ঘন ঘন নিঃশ্বাস ছাড়ছে সে।কিছু সময়ের ব্যবধানে বিধ্বস্ত অবস্থা তার।রুদ্ধ তাকে একা ছেড়ে দিতে বললেও হুর তাকে একা ছাড়ে না।হুর আবার বলে,
“আপনাকে দেখতে মোটেও সুবিধার মনে হচ্ছে না।আপনি বলুন আপনার কি সমস্যা হচ্ছে আমি হেল্প করার চেষ্টা করব।
এবার মাথা তুলে হুরের দিকে তাকালো রুদ্ধ।লালচে মুখ নিয়ে প্রশ্ন করল,
“হেল্প করবে তুমি আমার?
অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে মাথা উপর নিয়ে করে হ্যাঁ জানালো সে। যার অর্থ সে রুদ্ধকে হেল্প করতে চায়। সম্মতি পাওয়ার সাথে সাথে তড়িৎ গতিতে হুরের সামনে আসলো রুদ্ধ।আকস্মিক ঘটনায় চমকে উঠলো হুর। কয়েক কদম পিছিয়ে গেল।আবার এগিয়ে গিয়ে হুরের ঘাড়ের পিছে এক হাত রেখে আরেক হাত কোমরে ধরে নিজের ওষ্ঠের মাঝে হুরের পাতলা ওষ্ঠ চেপে ধরল।শরীর ঢিলু হয়ে আসলো হুরের। খেই হারিয়ে ফেলল। বাকরুদ্ধ হল।
১০ থেকে ১২ সেকেন্ড হুরের ওষ্ঠের সাথে নিজের ওষ্ঠ চেপে ধরার পর চোখ বন্ধ করে প্রগাঢ় ভাবে চু’মু খেতে লাগলো। বহুদিনের তৃষ্ণার্ত পথিক সে। তাই হুরের ওষ্ঠের মাঝে নিজ পিপাসা মিটাচ্ছে।হুর রুদ্ধের দিকে চোখ বড় বড় করে চেয়ে আছে। যখন বুঝলো রুদ্ধ এক্স্যাক্টলি তার সাথে কি করছে তখন রুদ্ধকে ধাক্কা দিয়ে সরানোর চেষ্টা করল। নিজের কাজে বাধা পড়ায় চোখ বন্ধ রাখা অবস্থাতেই চোখ কুঁচকে আসে রুদ্ধের।চোখ খুলে হুরের দিকে তাকিয়ে হুরের কোমর চেপে ধরে সামনে এগিয়ে হুরকে গাড়ির সাথে চেপে ধরল। হুরের ডান হাত গাড়ির সাথে চেপে ধরে গভীরভাবে চু’মু খেতে লাগলো। মাঝে মাঝে ঠোঁটে পুশ করে চু’মু খাচ্ছে।২ মিনিটের মতো ঠোঁটে চু’মু খেয়ে গালে নিজের ঠোঁট বোলাতে লাগলো রুদ্ধ। হুরের যে গালে টোল পড়ে সেই গালে আলতো করে কামড় দিল। গালে কামড়ের অস্তিত্ব মনে হতেই ডান হাত রুদ্ধের কোমরে চেপে ধরল হুর।অপর গালে ঠোঁট চেপে কিছুক্ষণ সময় নিয়ে ঠোঁট ছাড়িয়ে নিল।অধরে পরপর তিনটে চু’মু দিয়ে হুরের কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকালো। ফোঁসফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়তে লাগল। রুদ্ধের নিঃশ্বাস হুরের মুখে বারি খাচ্ছে।আস্তে ধীরে চোখ খুলে তাকালো হুর।বিধস্তর রুদ্ধকে এখন একটু শান্ত মনে হচ্ছে।তবে তার মন উথাল পাথাল হয়ে গেছে। এমন একটা পরিস্থিতির শিকার হতে হবে তাকে তা আজীবনেও কল্পনা করেনি।
রুদ্ধ হুরকে গাড়ির সাথে চেপে ধরে তার দু’গালে হাত রাখল। কোমল স্বরে বলল,
“তুমি হেল্প করতে চাইছিলে তাই আর আমি দ্বিমত করিনি।থ্যাংকস টু ইয়র হেল্প।
( পর্বটা আজ বড় করে দিলাম। হুর আর রুদ্ধের মাঝে রোমান্টিকতা এত জলদি আনতে চাইনি।তবে কিভাবে কিভাবে যেন আজ এই পর্বে লিখে ফেললাম!ইচ্ছে ছিল এই গল্পে রোমান্টিক কথা একটু কমই উল্লেখ করবো।তবে যা হওয়ার তা হয়েই গেল। যা মাথায় আসলো তা লিখে ফেললাম।লেখা এতদুর অব্দি চলে গিয়েছিল যে লেখাগুলো কাটতে মন চায় নি।)