মন_শহরে_বসন্ত_হাওয়া |৯| #কে_এ_শিমলা ®

0
255

#মন_শহরে_বসন্ত_হাওয়া |৯|
#কে_এ_শিমলা ®

এক এক করে সবগুলো পরীক্ষা শেষ হয় রণয়ীর‌। পড়ালেখা থেকে কয়েকদিনের জন্য ছুটি মিলে। মোবাইলের ব্যবহার বাড়ে তাঁর। একা একা লাগতো রণয়ীর। স্কুল বন্ধ! এদিকে ঘুরতে যাবে বাবার ছুটি পেলে। তাই সাহস করে একদিন রাতে মেসেজ করে রক্তিম কে। পূর্বের মতো খানিকটা সঙ্কায় থাকে মেসেজ দেখে রক্তিম উত্তর দিবে কী না? অথবা দেখবেই কী না? তবে এবারেও কয়েক মিনিটের মধ্যেই রক্তিম মেসেজের উত্তর দেয়। এভাবেই টুকটাক করে কথা বৃদ্ধি পায় দুজনার। ফলাফল প্রকাশ হয়। কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় এগিয়ে আসে। রণয়ী যে কলেজে ভর্তি হয়। সেই কলেজে আয়রা ও ভর্তির হয়। সেই কলেজে ভর্তি হওয়ার কয়েকটি দিনের মধ্যেই আয়রার থেকে রক্তিম নূরার প্রণয় সম্পর্কে জানে রণয়ী। তাদের সুন্দর সম্পর্ক শুনে যতটা ঈর্ষা হচ্ছিল‌। ভালো লাগছিল না রণয়ীর। বিচ্ছেদ শুনে কোথাও একটা আশার আলো তো দেখে, তবে তাঁর ব্যথায় ব্যথীত হয় রণয়ীর মন। সপ্তদর্শী রণয়ীর কলেজ জীবন ও যাচ্ছিল এভাবেই। নতুন অনুভূতির রঙ মনে মেখে দিন যাচ্ছিল তাঁর। রক্তিমের সাথেও কথা চলছিল নিয়মিত। বুঝে আসে রণয়ীর, রক্তিম আর শুধু তাঁর ভালোলাগায় নেই। ভালোবেসে ফেলেছে সে এই মানুষটা কে। সাহস করে একদিন জানিয়ে দেয়। রক্তিম শুনে না রণয়ীর কথা। একপ্রকার হেসে উড়িয়ে দেয়।”

‘শুনুন!”

‘হুম বলো।”

‘আপনাকে একটা কথা বলতে চাই।”

‘বলো কী কথা?”

‘হাসবেন না তো?”

‘হাসার মতো হলে কে হাসবে না? যদি না হয় তাহলে তো হাসবো না।”

‘রাগ করবেন না তো?”

‘একই! রাগ না করার মতো কথা হলে রাগ করবো কেন?”

‘তাহলে বলছি শুনুন!”

‘শুনছি আমি! বলো তুমি।”

‘আমি আপনাকে ভালোবাসি।”

‘তাই!”

‘জ্বী তাই!”

‘আমার এখন কী করা উচিত?”

‘কী করা উচিত আবার! জানেন না আপনি?”

‘না! কী জানবো আমি?”

‘আমি আপনাকে ভালোবাসি তাই আপনিও আমায় ভালোবাসবেন!”

‘তুমি আমায় কেন ভালোবাসবে!? তুমি ভালোবাসার মানে জানো না তো। বুঝো কী! প্রণয় সূচনা যত সুন্দর, সমাপনে বিচ্ছেদ ততোই বিষাদের। সহ্য করতে পারবে না।”

‘আমি জানি! বুঝি। আমাদের বিচ্ছেদ না হলে তো আর বিষাদ ব্যথা ছুঁতে পারবে না। সহ্য ও করতে হবে না।”

‘তুমি কোমল মনের। নরম একদম! এসবে জড়িও না। আজ যা বলছো আবেগের বশে বলছো‌। আরো দুটো বছর যেতে দাও। দেখবে এসব মনে করে হাসবে। যে আসলেই তোমার। যখন সে তোমার জীবনে আসবে তখন এই কথা মনে করে হাসবে তুমি।”

‘আবেগ সব মানুষেরই তো থাকে। আমি জানিনা আমার আবেগ কাজ করছে কী না। তবে সত্যিই বলছি আমি আপনাকে ভালোবাসি। আজ যেভাবে ভালোবাসি। দশ বছর পরেও সেই ভাবেই এক কথা বলবো।”

‘হাহা হাহা! একদিন তোমার মতো একজন এমন কথা আমাকেও বলেছিল। আজ দেখো আমি কোথায়! আর সে কোথায়! সে চলে গেছে আমায় ছেড়ে।”

‘সবাই এক নয়! আমি কখনো আপনাকে ছেড়ে যাবো না। যদি না আপনি যেতে বলেন।”

‘আমি তো একজন কে ভালোবাসি! না ভালোবাসি কী না জানি না আর। তবে নতুন করে কাউকে ভালোবাসবো না।”

‘প্লিজ! ফিরিয়ে দিবেন না আমায়। আমি সত্যিই আপনাকে ভালোবাসি। আপনার মনে আমি নিজে জায়গায় তৈরি করে নেবো। নিজের ভালোবাসায় সব ব্যথা দূর করে দেবো আপনার হৃদয়ের। প্রমাণ করে দেবো সবাই সমান নয়। আপনি নতুন করে সবকিছু শুরু করবেন।”

‘দেখো মেয়ে এমন করলে আর মেসেজ দিও না আমায়। আমিও আর দেবো না। এসব বিষয়ে আমাকে আর কখনো কিছু বলবে না।”

রক্তিমের প্রত্যাখ্যানে রণয়ী কাঁদে। প্রচুর কাঁদে। তিন চারদিন কথা হয় না দুজনের। রণয়ী অনলাইনে আসে না। চারদিন পর রাতে রক্তিম কল করে তাকে অনলাইনে নিয়ে আসে। অতঃপর বুঝায় রণয়ী কে। রণয়ী অবুঝপনা করে। রক্তিম বেশি কিছু বলে না। এভাবেই দিন যায়। বেশি নয় দুই তিনটি সপ্তাহ যেতেই রক্তিম বুঝতে পারলো সে নিজেই এই মেয়েটাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। না চাইতেও সে হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। তাঁর এড়িয়ে চলা! কিংবা কথা না বলা। মানতে পারে না রক্তিম। অতঃপর সে নতুন সুখের আশায় আর নিজেকে দমায় না। নূরা কে ভুলে রণয়ীর ভালোবাসায় সাড়া দেয়। জানিয়ে দেয় অনুভূতির কথা।”

রণয়ী সেদিন সুখে কেঁদেছিল। নতুন পথ চলা শুরু হয়। এতো প্রেম! ইশশশ! তাদের প্রেম দেখলে যে প্রেম বিদ্বেষী সেও মুগ্ধ হতো। দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়। সময়ের সাথে সাথে প্রেম ভালোবাসা বাড়তে থাকে। রণয়ীর কথায়, ভালোবাসায়, রক্তিম নিজেও বিচ্ছেদের ব্যথা ভুলে যেতে থাকে। রণয়ী পূর্বের থেকেও বেশি ভালোবাসে তাকে। সবকিছুই ঠিকঠাক ভাবে চলছিল‌। কলেজ ফাঁকি দিয়ে ঘুরতেও যেত রণয়ী রক্তিমের সাথে। একটা সুন্দর প্রেমের গল্প চলছিল দুজনের। যেন কারো হাতে সাজানো। রাতভর জেগছ থাকা বলা। তবে সবকিছুর আগে রক্তিম রণয়ীর ভালো থাকাটা দেখতো। রণয়ীর আবেগের বয়স। সে খুব কথা বলতে চাইতো। রক্তিম বুঝে যায় অল্প কদিনেই রণয়ী এক প্রকার আসক্ত হয়ে পড়েছিল। তাই সে খুব বেশি কথা বলতো না। রাত জাগতে দিত না। ধমকে ধামকে মিষ্টি শাসনে রাখতো খানিকটা‌। পড়ালেখার বিষয়ে আগে হিসাব নিতো। এভাবেই সবার আড়ালে এক সুন্দর সম্পর্কের মধ্য দিয়ে তাদের পরা চলা হয় দীর্ঘ দিন যাবৎ‌‌। একে অপরের কাছে অঙ্গীকার বদ্ধ হয় সারাজীবন একসাথে থাকবে বলে। রক্তিমের যে নূরা কে মনে পড়তো না এমনটা নয়। বরং রণয়ীর ভালোবাসার সাথে নূরার ভালোবাসা মিলিয়ে দেখতো। মনে পড়তো তাঁর। তবে তাকে ভুলে কথা দেয়। একসাথে থাকবে। দ্বিতীয় ভালোবাসা কারো জীবনে সহজে আসে না। কেউ দ্বিতীয়বার সহজে অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারে না। কিন্তু সে যখন পেরেছে তাহলে ছেড়ে আর যাবে না। একসময় অন্য একজন কে ভালোবাসতো জেনেও, যে নারী তাঁর ভগ্ন হৃদয়ের ব্যথা সারিয়ে ভালোবাসা অর্জন করে নিয়েছে তাকে ছাড়ার প্রশ্নই তো আসে না।”

বছর দেঢ় দুই যাওয়ার পর রক্তিমের গ্ৰ্যাজুয়েশন কমপ্লিট হয়। রণয়ীর উচ্চ মাধ্যমিক শেষ হয়। পুরোদমে সে ব্যস্থ হয় এডমিশন টেস্টের জন্য। একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পেতেই হবে। এটা তাঁর ছোট বেলার স্বপ্ন। অপর দিকে রক্তিম নিজেও মাস্টার্সে ভর্তি হয়। বাবার ব্যবসা ছিল। মোটামুটি একটা অবস্থা। নিজস্ব অফিস! অনেক কর্মচারীও ছিল। তাই সেখানে বাবার সাথে সাথে রক্তিম নিজেও যেত। নতুন নতুন কাজের নির্দেশনা দিত। কীভাবে আরো বেশি এগিয়ে নেওয়া যায় সে কাজ করতো। দু’জনের সম্পর্ক ঠিকই চলছিল সুন্দর। এর মধ্যে নূরার সাথে দেখা হয়নি অবশ্য রক্তিমের। সে নিজেও খুঁজতো না আর। মূলত প্রয়োজন পড়তো না খোঁজার। যে চলে গেছে তাকে ভেবে আর কী হবে। যে বর্তমানে আছে তাকে নিয়েই ভেবে সামনে অগ্রসর হতে হবে।”

সারাদিনের ব্যস্থতা ভুলে রাতে কিংবা অবসর সময়ে ঠিকই একে অপরকে সময় দিত। তখন রণয়ী সাবালিকা হয়ে উঠেছে। বুঝ ভালো। বাহিরে যাওয়া আসা চলছিল। দূরে গিয়ে কোচিং সেন্টারে পড়তো‌। সবদিক দিয়ে সচেতন। তাই তার পরিবারের কেউ তেমন একটা খোঁজ নিতেন না। বিশ্বাস ছিল মেয়ে উল্টাপাল্টা কোনো কাজ করবে না। করেওনি অবশ্য রণয়ী কখনো‌। তিন বছরের সম্পর্কে বোধহয় তিনবার জড়িয়ে ধরেছিল রক্তিম। তাও যখন রণয়ী অভিমান করে চারদিন কথা বলেনি। পাগলের মতো এসে কলেজ ছুটির পর রণয়ী কে নিয়ে লোক সম্মুখের আড়ালে যায়। শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। এমনই আরো দু’দিন ছিল। হাত ধরা এতোটুকুই ছিল সম্পর্কে শেষ। রক্তিম নিজেও কখনো কোনো ধরণের আবদার করেনি। কখনো কামনার নজরে তাকায়নি‌। তাঁর চাহনি সবসময় ছিল স্নিগ্ধ নির্মল মুগ্ধতার। তাঁর চোখের চাহনির দিকে তাকালেই কোনো নারী প্রেমে পড়বে এক নিমিষে। আর সেই পুরুষটি ছিল রণয়ীর। তাকে ভালোবাসতো পাগলের মতো। তাঁর চোখের চাহনিতে বার বার কতবার যে প্রেমে পড়েছিল রণয়ী। অসংখ্যবার প্রেমে পড়েছে। তাঁর এডমিশন টেস্ট শেষ হয়। চান্স পায় রণয়ী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। নতুন জীবনে পা রেখেও জীবন চলছিল রণয়ীর ভালোই। রক্তিম খুব খুশি হয় রণয়ীর চান্স পাওয়াতে। সে পরিশ্রম করেছে বিধায় পেরেছে।”

সময় যাচ্ছিল ভালোই। প্রিয় ভার্সিটিতে রণয়ীর ক্লাস যায় সুন্দর। এদিকে বাসায় বিয়ের প্রস্তাব আসতে থাকে। বড় বড় ঘর থেকে। রণয়ীর বাবা মা ফিরিয়ে দেন। ভাইয়েরা বোনের কথায় সায় জানায়। আগে সে তাঁর পড়ালেখা যেহেতু কমপ্লিট করতে চায়। সেহেতু উনারাদের না আগানোই ভালো। পরিবার কিংবা রণয়ী যেমন তেমন। রক্তিমের মনে ভয় ঢুকে যায়। মাস কয়েকটা যায়। রক্তিমের মাস্টার কমপ্লিট হয়। প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা এগিয়ে আসছে রণয়ীর। রক্তিম একজন সরাসরি প্রস্তাব রাখে রণয়ীর নিকট।”

‘ওই শুনো।”

‘বলো।”

‘এই মাসে বিয়ের প্রস্তাব কয়টা?”

‘রক্তিম তুমিও না।”

‘বলো বলো।”

একটা এসেছে। আর আসবে না। আসলেও ‘আমাকে জানানো হবে না। আর আমি না জানলে তুমিও জানবে না। চিন্তা ও করতে হবে না।”

‘না না! আর মানবো না। আমি প্রস্তাব নিয়ে আসবো এই সপ্তাহেই।”

‘কী বলছো কী তুমি? আমার পরীক্ষা সামনে। বিয়ে হঠাৎ কীভাবে কী হবে?”

‘পরীক্ষা তোমার বাসা থেকে দেওয়া যে কথা। আমার বাসা থেকে দেওয়াই তো সে কথা।”

‘তবুও রক্তিম! নতুন জীবনে পা রাখতে হলে একটা প্রস্তুতির ব্যাপার স্যাপার তো আছে নাকি।”

‘আচ্ছা মানলাম তোমার কথা। তোমার পরীক্ষা শেষ হলেই তবে মা বাবা কে নিয়ে আসবো।”

‘আচ্ছা দেখা যাক!”

‘দেখা যাক নয়! আমি সত্যিই বলছি।”

‘অধৈর্য হচ্ছ কেন তুমি?”

‘তোমাকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে।”

‘আগে তো ভালোই বাসতে চাইছিলেন না মশাই।”

‘এখন ভালোবেসে ফেলেছি।”

‘কতটা?”

‘যতটা ভালোবাসলে এক জীবনে ছেড়ে যাওয়া যায় না।”

‘সত্যিই যাবে না তো কখনো ছেড়ে?”

‘কখনোই না!”

‘কথা দিচ্ছ তবে!”

‘প্রতিদিনই দেই।”

‘কথা রেখো তবে।”

‘সবটা দিয়ে রাখবো‌। সেজন্যই তো চাই তোমাকে নিজের করে। একদম নিজের করে! যতটা নিজের করলে কেউ নিতে পারবে না। ছেড়ে যেতে পারবে না‌। ছেড়ে যেতে পারবো না নিজেই।”

‘এতো ভয়!”

‘জানি তো আমি হারিয়ে ফেলার যন্ত্রণা কেমন? এক ছলনাময়ী কে হারিয়ে যদি তোমায় না পেতাম। তবে তো আমি তিলে তিলে কবেই শেষ হয়ে যেতাম। ফাটল ধরা হৃদয়ে তুমি প্রেমের বীজ বপন করে ভালোবাসার ফুল ফুটালে। এমন ভালো কোন নারী বাসবে বলো? যে জানে তার প্রেমিক পুরুষ কে আগেও কেউ ছেড়ে গিয়েছে। আগে কাউকে ভালোবাসতো। সব জেনে শুনে তুমি আমায় ভালোবেসে তুমি পথ চলেছো আমার সাথে। এখন তোমাকে হারাই কী করে? তোমাকে হারানোর ভয় হওয়াটা কী স্বাভাবিক নয়?”

‘এভাবে বলো না তুমি। আমার ভয় হয়‌।”

‘ভালোবাসা যদি দুজনের সমান হয়‌। ভয়টাও সমান হওয়া উচিত নয় কী!”

রক্তিমের ভয় স্পর্শ করে রণয়ী কেও। সে নিজেও ভাবুক হয় এই ব্যাপারে। ভালোয় ভালোয় পরীক্ষা দেয়। অতঃপর বাসায় কথা তুলে বিয়ের। লজ্জা শরম ভুলে নিজেই পরিবারের সবার সামনে বলে বিয়ের কথা।”

‘আব্বু! একটা করা বলতে চাইছিলাম। তোমাদের সবাই কে।”

রণয়ীর কথায় তাঁর দিকে তাকায় সবাই। রনক! রিদিমা! রামিন! রাবিয়া খানম! সবাই।
রহমান রহিম বরাবরের মতোই আদুরে গলায় জিজ্ঞেস করেন, ‘বলো! আমার মা কী বলে দেখি।”

রণয়ী ইতস্তত করে বুকে এক আকাশ সম ভয় রেখে বলে, ‘আব্বু আমি বিয়ে করবো।”

তাঁর কথায় সবাই বিস্ফোরিত চোখে তাকায় তার দিকে। বিষম খায় রিদিমা। সবাই যেখানে তাকে বিয়ে সংসার থেকে মুক্ত রাখছে‌। সে নিজেই সেখানে বলছে বিয়ে করবে!”

রাবিয়া খানম পানি পান করে মেয়ের মাথায় হাত রেখে বললেন, ‘কী বলছিস আম্মা? আমরা এতো ভালো ভালো প্রস্তাব ফিরিয়ে দিচ্ছি তুই না করলি। আর এখন এসব বলছিস।”

রণয়ী ইতস্তত করতে থাকে‌। কী বলবে এবার সে! রক্তিমের কথা মুখ দিয়ে বের হতে চাচ্ছে না তাঁর। কন্ঠনালী গলিয়ে কোনো শব্দ আসতে চাইছে না মুখে। ভয় হচ্ছে খুব বাবা ভাইয়ের নিরবতায়। আর তাঁর সেই ভয় কে আরো বাড়িয়ে দিতে রনক বলে, ‘হঠাৎ বিয়ে! আচ্ছা বেশ। তোর পছন্দ আছে বনু?”

যতটা সহজে রনক প্রশ্নটা করলো রণয়ী ততোটা সহজে নিতে পারলো না। ঘেমে নেয়ে তাঁর একাকার অবস্থা। শ্বাস রুদ্ধকর অবস্থা তাঁর। হাঁসফাঁস করতে লাগলো। পাশ থেকে রিদিমা পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে পান করার জন্য ইশারা করে‌। রণয়ী কৃতজ্ঞ চোখে তাকায় ভাবীর পানে। খুব প্রয়োজন ছিল পানির। আজ কায়দা করে বাবার পাশের চেয়ারে সে বসেনি। বসেছেন রাবিয়া খানম। মাঝখানে সে আর তাঁর পরেই রিদিমা।”

রামিন হাড় থেকে গোশত ছাড়াতে ছাড়াতে বলে, ‘কী রে ভাইয়ার কথার উত্তর দে। পছন্দ আছে তোর কোনো ছেলে। ভালোবাসিস কাউকে? বলে ফেল।”

রণয়ী সবাই কে আরেকপলক দেখে। সবাই উৎসুক চোখে তাকিয়ে আছেন তাঁর দিকে। তাঁর জবাবের আশায়। রণয়ী সামলায়! নিজেকে ধাতস্থ করে। আবারো পানি পান করে। এই নিয়ে দুই গ্লাস পানি শেষ তিন চার মিনিটে। সুক্ষ্ম চোখে তা পরখ করে রনক।”

চলবে!

|এটা অতীত! হয়তো অতীতের একটি পর্ব আসবে। একটি মন্তব্য করে যাবেন ইচ্ছে হলে। আর একটু রেসপন্স করবেন প্লিজ। ছি পর্বে রিচেক দেওয়া হয়নি খুব। ভুল হলে তাই ধরিয়ে দিবেন মার্জিত ভাষায়। ধন্যবাদ!|

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here