মন_শহরে_বসন্ত_হাওয়া |১৫| #কে_এ_শিমলা ®

0
257

#মন_শহরে_বসন্ত_হাওয়া |১৫|
#কে_এ_শিমলা ®

ধীরে ধীরে কেটেছে দীর্ঘ একটি মাস। সময় বহমান। তাঁর নিজ গতিতে সে তো চলে যাবেই। রণয়ী নিজ ভাবনায় মশগুল জানালার কাছে বসে‌। নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে তো? দ্বিতীয়বার সংসার জীবন শুরু করতে পারবে? সেই ভাগ্য আছে কী? এরকম নানান ধরণের কথাবার্তা ভাবতে ভাবতে তাঁর দিন চলছে‌। এতোটা দিন সময় পেল। আর বোধহয় নেওয়া ঠিক হবে না।‌ সেদিন মায়ের কথা শুনে বড্ড বেশি অবাক হয়েছিল রণয়ী। এই দিনে এসেও যে বিবাহের প্রস্তাব দিবেন উনারা কল্পনাতীত ছিল। চোখ বন্ধ করতেই দুর্জয়ের মুখ ভেসে উঠলো হঠাৎ। কী আজব! আজ কয়েকদিন থেকে তাকে ভাবনা থেকে সরানো যাচ্ছে না। জীবনে আসার আগেই ভাবনায় চলে আসছেন! অথচ রণয়ী পালিয়ে বাঁচতে পারলেই যেন বাঁচে। এইসব সংসার জীবন তাঁর জন্য নয় আর। এটাও সে মানে একবার শেষ হওয়া মানে পুরোপুরি শেষ হওয়া নয়। দ্বিতীয়বারেও সবকিছু শুরু করে শেষ অব্দি নিয়ে যাওয়া যায়। আর সেই দ্বিতীয় সফর সুন্দর হয়। যতটা সুন্দর সহজতা ভাবনায় আসে না‌। রণয়ী মত দিত না। শুধু কেবল মা ভাইয়ের কথায় দিয়েছিল। কিন্তু আজ দু’দিন ধরে মনে হচ্ছে মতামতটা নিজেরই‌। নিজের সাথে বোঝাপড়া হয়েছে! আরো একবার সুযোগ দেওয়া উচিত বোধহয়। দ্বিতীয় সুযোগ কাজ ও তো করতে পারে। মা ভাইয়ের কথা গুলো পুনারায় স্মরণ করলো রণয়ী।”

‘রণয়ী!”

‘জ্বী আম্মু!”

ইতস্তত করতে লাগলেন রাবিয়া খানম। কি থেকে কী শুরু করবেন বুঝে আসছে না। মনে হচ্ছে গুলিয়ে ফেলছেন সব।”
রণয়ী নিজেই বললো,’কিছু বলবে?”

‘হ্যাঁ! বলছিলাম মা। অনেকদিন তো হলো আর কত! নিজেকে আর কত এভাবে রাখবি। শোন মায়ের কথা। এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যা। দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে। তোর ভাইয়ের সাথেও আপা কথা বলেছে। রনক বাসায় আসলেই তোর সাথে কথা বলবে।”

‘বিয়ের প্রস্তাব এসেছে! তাও আমার জন্য। আম্মু প্লিজ! তাদের ফিরিয়ে দাও‌। সংসার জীবন আমার জন্য নয় আর। প্রস্তাবটা দিয়েছে কে? পরিচিত?”

‘হ্যাঁ! জোহরা আপা দিয়েছে।”

‘কীহ! উনি। আরো আগে না করো আম্মু। উনার ছেলে আরো ভালো মেয়ে বউ হিসেবে পাওয়ার যোগ‌্যতা রাখেন। আমার মতো মানুষ কে নয়।”

‘কেন আমার মেয়ে কী ভালো নয়? নিজেকে এভাবে ছোট করে দেখছিস কেন মা?”

‘না মা! নিজেকে ছোট করে দেখছি না। তবে আমি উনার যোগ্য না। আর সব জেনে শুনে তুমি কীভাবে বলছো আমায়!”

‘তো কী করছিস? বলবো না তো কী করবো? বয়স কত হলো তোর! মাত্র ছাব্বিশ। এখনো পুরো জীবন বাকি। কারো কী আর দ্বিতীয়বার বিয়ে হয় না? সংসার হয় না? হয় প্রচুর দেখা যায়।‌ আর তারা দ্বিতীয় সংসার জীবনে সুখী হয়। নিজেকে আরো একটাবার অন্তত সুযোগ দে। দুর্জয় ভালো ছেলে মা। তোকে অবহেলায় রাখবে না।”

‘আমি জানি মা উনি ভালো মানুষ। কিন্তু উনার সাথে আমার যায় না।”

‘দেখ তোর বাবা থাকলেও তোকে আবার বিয়ে দিতেন। মায়ের কথা কী রাখবি না? কদিনই বা তোদের মাঝে আছি আর। মুখ ফুটে মানুষটা বলেছে‌। সেই দশ এগারো বছর আগে সে তোকে পুত্র বধু করার কথা ভেবেছিল। কিন্তু হলো না। এখন একটা সুযোগ উনি পেয়েছেন। তুইও নিজেকে একটা সুযোগ দে। আপা তোকে খুব যত্নে রাখবে দেখিস। মায়ের কথা রাখ আম্মা! সুখী হবি তুই।”

‘এখন ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করবে?”

‘তুই যা ভাবিস! এই শেষ বয়সে মায়ের একটা কথা রাখ। শেষ আবদার ধরে নে।”

‘আম্মু!”

‘আর যদি মনে হয় রাখার দরকার নেই। তাহলে বাদ দে। আর যাই হোক নিজের মন না থাকলে তো সংসার হবে না। না পারলে শুধু মায়ের মন রক্ষার্থে মত দিস না। ছেলে নিজেও শুধু মায়ের কথায় হ্যাঁ বলেনি। বুঝে শুনে পছন্দ করেই মত দিয়েছে।”

‘উনি মত দিয়েছেন? পছন্দ! কে বলেছে আম্মু তোমায়?”

‘আপা নিজেই তো বললো। ছেলে শুধু তাঁর মন রক্ষা করতে মত দেয়নি। ভেবে চিন্তে তারপর বলেছে তোর সমস্যা না থাকলে তারও সমস্যা নেই। পাত্রী হিসেবে পছন্দ করেছে। ভেবে দেখিস তুই ও। তাঁর যেহেতু তোকে নিয়ে, তোর জীবন নিয়ে সমস্যা নেই। আমার মতে তোর ও তো থাকার কথা না।”

মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে রাবিয়া খানম বললেন, ‘ভেবে দেখিস কেমন? রনক ফিরলে কথা বলবে তোর সাথে। কী বলবি ভেবে দেখিস।’ কপালে অষ্ট ছুঁইয়ে বেরিয়ে গেলেন রাবিয়া খানম।”

রণয়ী সে সন্ধ্যায় কেবল দুর্জয়ের কথাই ভেবেছে। সে রাজি! মায়ের মন রক্ষার্থে নয়! আদৌ বিশ্বাস করা যায় কী তা?”
রাবিয়া খানমের পরে এসে রিদিমা নিজেও বসে রণয়ীর কাছে। কথা বলে তাঁর সাথে। বুঝায়! জীবন থেমে থাকে না। জীবনের শুন্যস্থান গুলোও কারো না কারো মাধ্যমে পূর্ণ করে তুলতে হয়। তুমি হয়তো কারো দ্বিতীয় ভালোবাসা হয়ে মূল্য পাওনি। কিন্তু তুমি মূল্য দাও। আর আমি জানি তুমি পারবেই। জীবনে আসা কিছু দ্বিতীয় মানুষ। প্রথম জীবনে কালো অতীত ভুলিয়ে দিতে ঔষধের মতো কার্যকারী হয়। তুমিও নাহয় মিলিয়ে নিও। শুধু তোমার উপরে এখন দুই পরিবারের মানুষের ভরসা। তিনি যখন এসবে পাত্তা দেননি‌! যে সংসার করবে। সেও যখন এইসব অতীত কে তোয়াক্কা করেনি, তোমার নিজের ও নিজেকে সুযোগ দেওয়া উচিত। একটা সুযোগ অন্তত দেওয়া উচিত!”

রিদিমার কথা গুলোও ভাবায় রণয়ী কে। তাঁর কথা তো ভুল নয়। তাদের যখন তাঁর অতীত নিয়ে সমস্যা নেই। সব জেনে শুনে নিজে থেকেই চেয়ে বসেছেন। তবে নিজের উচিত নয় কী? নিজেকে একটা সুযোগ দেওয়া?”

বাসায় ফিরে রনক নিজেও বোনের সাথে কথা বলে‌‌। রণয়ী তাঁর কথায় কাঁদে। আজ কতটা দিন পর ভাই হাতের মুঠোয় তাঁর হাত নিয়ে রাখলো‌। মাথায় হাত রেখে বুঝিয়ে বললো কথাগুলো।”

‘বনু!”

কয়েকটি বছর পর এই সম্বোধন শুনে পাশে থাকায় রণয়ী। বক্ষস্থল অজানা খুশিতে ভরে উঠলো যেন তাঁর। সোফায় তাঁর নিকটে বসে রনক। রণয়ীর দিকে তাকিয়ে বললো, ‘কেমন আছিস?”

‘ভালোই তো আছি।”

‘কেমন ভালো আমি কী জানিনা? যে মেয়ে মাটির পুতুল ভেঙ্গে যাওয়ায় চিৎকার করে কেঁদেছিল। কাঁচের চুরি হাত থেকে পড়ে ভেঙ্গে গিয়েছিল বলে কেঁদেছিল। সেই মেয়ে আস্ত মন ভাঙ্গার পর কেমন আছে! তা কী তাঁর ভালো আছি বললেই বিশ্বাসযোগ্য। তাঁর বড় ভাইয়ের কাছে তো একদমই নয়।”

একদম বুকে লাগাল মতোন কথা। রণয়ীর চোখ চিকচিক করছে। তবুও মৃদু হেসে বলে, ‘তখন ছোট ছিলাম ভাইয়া। তাই শখের জিনিস গুলো ভেঙ্গে যাওয়াতে কেঁদেছিলাম। কিন্তু এখন বড় হয়ে গেছি। আর মানুষের মন! সে তো ভাঙ্গবেই‌। সহ্য ক্ষমতা আছে তোমার বোনের।”

‘আর সে শখের ছিল না? শখের মানুষ মন ভেঙ্গে চলে গেল। আমার বোনের সহ্য ক্ষমতা বেশি। সহ্য করে নিয়েছে। তবে রাতের আঁধারে নিজেকে কষ্ট দেওয়ার কী মানে? কাকে মনে করে কাদিস বলতো আমায়! ফুলের মতো মন পেয়ে যে ছিঁড়ে চলে গেছে। সে মানুষের জন্য কাঁদা, ক্ষমতাসম্পন্ন তোর তো মানায় না বনু।”

‘ভাইয়া!”

‘এবার আমাদের কথাটা রাখ। দেখবি অভিযোগ করবি না কখনো। নিজেকে একটা সুযোগ দে! নিজেকে নিয়েও তোর আর অভিযোগ থাকবে না।”

রণয়ী চোখ থেকে টপ করে গড়িয়ে পড়ে এক ফোঁটা জল। রনক তা নিজ হাতে মুছে দেয়। তাঁর হাত নিজের হাতের মুঠোয় নেয়। ঠিক যেন সেই নয় দশ বছরের রণয়ী কে বুঝাচ্ছে না কাঁদার জন্য। যা হারিয়ে গেছে তা তো গেছেই। নতুন পুতুল! হাতের চুড়ি এনে দিবে আবার তাকে। যা কখনো ভাঙবে না। বহুদিন থাকবে তাঁর কাছে। চলে গিয়ে আঘাত দেবে না।”

‘দেখ বনু! আমাদের জীবনে তো অতীত থাকেই‌।‌ কতশত! হাজার হাজার মানুষের অতীত আছে। তবে কী তাদের জীবন থেমে থাকে? না তো‌। যেখানে থেমে যায়। সেখান থেকেই আবার শুরু করতে হয়। আমাদের ভাই কেই দেখ। রামিন! তাঁর নিজেরো তো অতীত ছিল। কেউ না জানুক! আমরা ভাইবোন তো জানি। সে কী আজ সংসারী না? কখনো কোনো অভিযোগ শুনেছিস রাফিনের মায়ের থেকে? যদি অভিযোগ করার থাকতো তবেই করতো‌। আর কাউকে না বলুক! তোকে, রিদিমা কে বলতো। কিন্তু বলেনি আজ তাদের সংসার জীবনের কতটা দিন। সুখী দু’জন। রামিন দ্বিতীয়বার তাকে ভালোবেসেছে। নিজেকে সুযোগ দিয়েছে। ছেড়ে যাওয়া মানুষ কে ভুলে গিয়ে নিজেকে ঠিক রেখেছে। কার জন্য কষ্ট পাবো যে আমাদের কষ্টের কথা কখনো ভাবেই না!”
এবার আমাদের কথা শুন। হ্যাঁ বল। দেখবি তুইও সুখী হবি। দুর্জয় খুব ভালো ছেলে। পশ্চিমাদেশে থেকে এলেও সভ্যতা তাঁর থেকে যায়নি বিন্দু পরিমাণ‌‌। একটুও অহংবোধ নেই তাঁর মধ্যে। এতো বড় ব্যবসায়ী হয়েও গুরুজনদের যথাযথ সম্মান করতে জানে সে। এই যে তোর ভাই! এই আমিকেও বড় ভাইয়ের মতো সম্মান করে। অথচ আমি তাঁর কাছেই যেতে পারবো না সত্যিকার অর্থে। তাঁর ধনসম্পদ নয়। তাঁর মন দেখেই আমি বলছি। সে তোকে ভালো রাখবে! দেখিস কখনো হয়তো তুই আফসোস করবি কিংবা মনে হবে কেন? এই মানুষটা জীবনে প্রথম মানুষ হয়ে আসলো না‌! তবে জানিস তো কিছু মানুষের প্রথম ভালোবাসা ভুল মানুষের প্রতিই হয়। একটা দুঃস্বপ্ন ভেবে অতীত ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যা। ভবিষ্যত তোর ভালো! শেষ বয়সে একজন বিশ্বস্ত মানুষ পাবি। যে তোকে আগলে রাখবে।”

‘আমাকে সময় দাও ভাইয়া। আমি আরেকটু ভেবে দেখি। শুধু নিজের ভালো দেখলেই কী আমার হবে? তার কথাও তো ভাবতে হবে।”

‘হ্যাঁ অবশ্যই! ভাব তুই। তাঁর সাথেও কথা বল। নিজেদের মতো করে আলাপ আলোচনা করো। যদি মনে হয় পারবে‌। তবেই বলবে মতামত। না হলে কোনো জোর করা হবে না তোকে। সংসার জীবন জোর করে হয় না বনু। বিয়েতেও কিন্তু বর কনের মতামত সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মত না দিলে হবে কী!”

অবশেষে সবার কথায় ভাবে রণয়ী। এমন কী দুর্জয় নিজেও কথা বলে রণয়ীর সাথে‌। অতঃপর গত দু’দিন আগে মতামত জানায় নিজের। আগামী শুক্রবার বিয়ে‌। আগামীকাল অনুরিমার! অফিসে এখনো জানাজানি হয়নি। হয়তো কাল বা পরশু জেনে যাবে সবাই।”

রাতের খাওয়া দাওয়ার পর্ব সেরে ঘুমোতে চলে এলো রণয়ী। বাহিরে ভাই! ভাবী! মায়ের কত হিসাব নিকাশ‌। কাল নাগাদ রামিম ও চলে আসবে। সবাই মিলে কেনাকাটা করবে। অতঃপর! আজ আর কোনো ভাবনা নেই রণয়ীর। ঘুমের ঔষধ নিল একটা।”
অতঃপর এক ঘুমে সকাল‌।‌ নয়টা নাগাদ উঠলো সে। ধীরে ধীরে তৈরি হয়ে বের হলো বাড়ি থেকে। চারজন যাবে তারা। রাজন, রাইজু, তারা দুই ভাইবোন, রিদিমা এবং সে। গাড়ি ঠিক করে দিয়েছে রনক। অবশেষে যানজট পারি দিয়ে এসে পৌঁছায় তারা। বিয়ের বাড়ির জমজমাট পরিবেশ। চারদিকে মানুষ গিজগিজ করছে। যাদের মুখ সারা বছরেও একবার দেখা যায় না। বিয়ের অনুষ্ঠানে তাদের দেখা যাবেই যাবে। অনুরিমার সাথে দেখা করলো রণয়ী। লাল লেহেঙ্গা! মাথায় লাল খয়েরী রঙের ওড়নায় স্কাফ করা। সুন্দর সাজ! গয়না ঘাঁটিতে সাজানো তাকে খুব মায়াবী লাগছে।”

রোজা, নয়না, চৈতির সাথে দেখা হলো। অনুরিমার পরিবারের সবার সাথে সাক্ষাৎ হলো‌। তাদের আন্তরিক ব্যবহার! কী অমায়িক। একটা টেবিলে সবাই বসলো ওরা। সময় কাটলো। অফিসের আরো পরিচিত মুখের দেখা মিললো বিয়ের অনুষ্ঠানে। এসেছে আবু সাঈদ! অবশেষে দেখা মিললো স্বয়ং দুর্জয়ের। তাঁর দুই পক্ষ থেকেই ইনভাইট ছিল। অনুরিমার হাজব্যান্ড সিফাতের কলেজ জীবনের বন্ধু সে। ভার্সিটিতেও একসাথেই পড়েছে তারা। এতো দৃঢ় সম্পর্ক না থাকলেও ভালো সম্পর্ক ছিল। এখনো কথা হয় ! মাঝেমধ্যে দেখা সাক্ষাৎ! বাকিরাও থাকে।”

অনুরিমার সাথে সিফাতের দেখাটা ছিল একটু ভিন্ন রকম। প্রথমত রং নাম্বারের মাধ্যমে দুজনের কথা হয়। অতঃপর শপিং মলে দেখা হওয়া হঠাৎ। এরপর থেকে প্রায়শই কথা হতো। দেখাও হয়ে যেতো। তারপর সেখান থেকেই প্রেমের বদলে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সিফাত‌। সে মানুষ কে প্রত্যাখ্যান করার মতো নয়। অনুরিমাও পারেনি। অতঃপর আজ সেই শুভদিন। মাত্র চার মাসের পরিচয়ে বিয়ে অব্দি সম্পর্ক। এরমধ্যেই যেন বোঝাপড়া, একে অপরকে চেনা জানা শেষ‌। অথচ চার বছর নিয়েও মানুষ কে চেনা হলো না। বিশ্বাস থাকতে হয়। বিশ্বাস অটুট রাখতে হয়। শুধু এক পক্ষের চেষ্টায় হয় না। দুই পক্ষ থেকেই থাকতে হয়।”

বিয়ে অনুষ্ঠান ধীরে ধীরে শুরু হলো। খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ। প্রায় সাড়ে চারটার দিকে রিদিমা চলে গেল ছেলে মেয়েকে নিয়ে। রণয়ী কে ওরা যেতে দেয়নি। এমনকি অনুরিমা নিজেও। আর তাছাড়া রণয়ী নিজেই থাকতো। আসলো, বসলো, খেলো তারপর কী চলে যাবে? বিদায় জানিয়ে ধীরে ধীরে যাওয়া যাবে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো‌। ধীরে ধীরে বিদায়ের পালা। অতঃপর একজন নব বিবাহিতা মেয়ের বিদায় কতটা কঠিন। সেটা সেই জানে।”

চলবে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here