উধয়রনী #লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ ||পর্ব-৫০||

0
666

#উধয়রনী
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
||পর্ব-৫০||

১০২।
ভোর পাঁচটা। দূর থেকে ভেসে আসছে আজানের ধ্বনি। আশেপাশে নিরবতা ছেয়ে আছে। আর এসবের মধ্যে সোফায় স্থির হয়ে বসে আছেন রিজওয়ান কবির। তার মুখোমুখি বসে হাঁসফাঁস করছে লাবণি। তার বুক ধড়ফড় করছে। হাত কাঁপছে। ঠোঁট শুকিয়ে গেছে। আহি লাবণির পাশে বসে চাপা স্বরে বলল,
“মাম্মা, কেনাকাটা কি শুরু করে দেবো? চারদিন পর মনে হয়, আপনার কুলখানিটা খেতে হবে।”

লাবণি রাগী দৃষ্টিতে আহির দিকে তাকালো। সে উঠে রিজওয়ান কবিরের পায়ের কাছে বসে বলল,
“তুমি কি আমাকে বিশ্বাস করো না, রিজওয়ান?”

রিজওয়ান কবির তার হাত থেকে ক্যামেরাটি টেবিলের উপর রেখে বললেন,
“বিশ্বাস? তাজওয়ার আর তোমার নোংরামি দেখার পরও আমি তোমাকে বিশ্বাস করবো? এতোটা অন্ধ ভেবেছো আমাকে?”

“আমি কিচ্ছু করি নি। সবটাই তোমার মেয়ের সাজানো নাটক।”

রিজওয়ান কবির উঠে দাঁড়িয়ে উঁচু স্বরে মুনিয়া খালাকে ডাকলেন। মুনিয়া খালা দৌঁড়ে বসার ঘরে এলো। রিজওয়ান কবির তাকে বললেন,
“এই অসভ্য মহিলাকে এক্ষুণি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে এই বাড়ি থেকে বের করে দাও।”

লাবণি তা শুনে রিজওয়ান কবিরের হাত ধরতে যেতেই রিজওয়ান সশব্দে লাবণির গালে চড় বসিয়ে দিলেন। আহি তা দেখে চোখ বন্ধ করলো। ঠিক এভাবেই এক সকালে, দেরীতে টেবিলে নাস্তা আসায় বাবা তার মায়ের গায়ে হাত তুলেছিল। খুব আত্মসম্মানী নারী সালমা ফাওজিয়া। মুনিয়া খালা আর চুনির সামনে চড় খাওয়াটা সহ্য করতে পারেন নি তিনি। তবুও আহির জন্য সংসারটা ছাড়তে পারছিলেন না। কিন্তু আজ তার উপর হওয়া অন্যায়ের শোধ তুলেছে এই একটা চড়ের গুঞ্জন।

লাবণি গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রিজওয়ান কবির বললেন,
“তোকে আমি তালাক দিলাম। তোকে আমি তালাক দিলাম। তোকে আমি তালাক দিলাম।”

লাবণি স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আহির ঠোঁটে বিজয়ের হাসি, আর চোখে অশ্রু টলমল করছে। যেই নারীর জন্য তার মায়ের সংসার ভেঙেছে, আজ সেই নারীর পরিণতি দেখার মতো সৌভাগ্য সৃষ্টিকর্তা আহিকে দিয়েছেন। তাই হয়তো সেদিন সে বেঁচে ফিরেছিল। এদিকে লাবণি কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বললো,
“আমি কোথায় যাবো, রিজওয়ান?”

আহি বলল,
“কেন, তাজওয়ার খান তো আছেই। আপনি না হয় তার কাছেই ফিরে যান।”

আহি অবাক হওয়ার ভান ধরে বলল,
“ওপস, আমি তো ভুলেই গেছি। তাজওয়ার খান তো আপনাকে শুধু রক্ষিতা হিসেবেই রেখেছিল।”

“জাস্ট শাট আপ, আহি। সব তোমার জন্য হয়েছে। আমি তোমাকে ছাড়বো না।”

রিজওয়ান কবির লাবণির বাহু চেপে ধরে বললেন,
“কি করবে তুমি? তোমার কী ক্ষমতা আছে? আমার টাকায় তোমার যতো জোর ছিল। এখন সেসবও থাকবে না।”

লাবণি কাঁদতে কাঁদতে বলল,
“আমি তোমার জন্য সব ছেড়ে এসেছি, রিজওয়ান। আর তুমিই আমাকে ছেড়ে দিচ্ছো?”

আহি বলল,
“বাবার জন্য আপনি কিছুই ছাড়েন নি৷ ছেড়েছেন নিজের স্বার্থের জন্য। নিজের উচ্চাকাঙ্খা পূরণের লোভ চেপে বসেছিল আপনার মাথায়। তাই তো দু’টো সুন্দর সংসার আপনি ভেঙে দিয়েছিলেন। আমার জীবনটাও শেষ করে দিতে যাচ্ছিলেন।”

(***)

লাবণিকে ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিলেন রিজওয়ান কবির। গতকাল রাতে দেড়টায় কাপ্তাই থেকে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল আহি আর আফিফ। ভোর চারটা নাগাদ আফিফ আহিকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলো। বাসায় পৌঁছে লাবণিকে দেখে গা জ্বলে উঠলো আহির। লাবণি রাতেই বাসায় ফিরে এসেছিলো। এদিকে আহি জোরে জোরে চেঁচিয়ে বাবাকে ডাকলো। আর রিজওয়ান কবির বেরিয়ে আসতেই সেই ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওটা বাবাকে দেখালো আহি। লাবণি ভাবতেই পারে নি আহি কিছু ভিডিও করে রাখবে। সে ভেবেছিল, আহি শুধু তাকে আর তাজওয়ারকে একসাথে দেখে ফেলেছিল, আর বাসায় এসেই এসব রিজওয়ান কবিরকে বলবে। এজন্যই বাসায় ফিরে রিজওয়ান কবিরের ব্রেইন ওয়াশের জন্য কি কি বলবে তা গুছিয়ে নিয়েছিল লাবণি। কিন্তু এখন তো সব উলটো হয়ে গেছে। আহি লাবণির ক্লান্ত মুখটির দিকে তাকিয়ে বলল,
“আমার বাবাকে ফাঁসিয়ে আমার মায়ের সংসার ভেঙেছিলে। আমার বাবার মাথা খেয়েছো তুমি। কি ভেবেছিলে? কোনো প্রমাণ নেই আমার কাছে? বাবা জেনে গিয়েছিল তুমি কেমন মহিলা! তোমার এর আগের দুই প্রেমিকের সাথে করা লটরপটরগুলোর ছবি আরো আগেই বাবাকে দেখিয়েছিলাম। বাবা সব জানতো। আমি চেয়েছি, তোমার আর তাজওয়ারের প্রেমলীলাটাও বাবার সামনে নিয়ে আসি। এজন্য সময় চেয়েছিলাম তার কাছে। আর দেখো, সেই সুযোগটা নিয়ে একদম হাতেনাতে তোমাদের লীলা ফাঁস করে দিয়েছি। ভিডিওটা তোমাকে পাঠিয়ে দেবো। তুমি আর তাজওয়ার খান বসে পপকর্ন খেতে খেতে দেখো। বাই।”

আহি কথাটি বলেই লাবণির মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিলো।

(***)

রিজওয়ান কবির চুপচাপ নিজের ঘরে চলে গেলেন। মুনিয়া খালা আহিকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
“এহন এই ঘরে ফেরেশতারা আইবো। আমার মা’টাও থাকবো।”

আহি মুনিয়া খালার হাতে আলতো হাত রেখে বলল,
“খালা, আমি আর এখানে থাকবো না। আমি ছেড়ে দিচ্ছি এই বাসা। সকালে আমার সব জিনিসপত্র নিয়ে আমি চলে যাবো।”

চুনি আহির কাছে এসে বলল,
“তুমি যাইয়ো না আফা। আমার এখানে ভালা লাগে না একা একা।”

আহি চুনির থুতনি ধরে বলল,
“চাঁদনি, আমি কোথাও যাচ্ছি না। আমি আছি। বেশিদূর কোথায়? এই শহরেই থাকবো। শুধু এই বাসাটা ছাড়ছি। তোর বিয়ে দেবো আমি। তোর স্বপ্ন পূরণ করার দায়িত্ব আমার। একটু সময় লাগবে শুধু।”

আহি সকালেই তার জিনিসপত্র নিয়ে মায়ের বাসায় চলে এলো। জিনিসপত্র ফ্ল্যাটে উঠিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিতে যাবে তখনই তাজওয়ারের কল এলো। আহি কল রিসিভ করতেই তাজওয়ার বলল,
“তোমার খুব সাহস বেড়ে গেছে দেখছি। তুমি এমনটা কেন করেছো? তুমি কি ভেবেছিলে, তোমার বাবা আমার ব্যাপারে জেনে গেলে আমাদের বিয়েটা হবে না? দেখো আহি, আমি কিন্তু তোমার বাবাকে ভয় পাই না। আর তোমাকে আমি যেকোন মূল্যে নিজের করেই ছাড়বো।”

আহি তাচ্ছিল্যের সুরে বলল,
“তুমি আমার বাবাকে ভয় পাও না, আর আমি তোমাকে ভয় পাই না। তোমার যা ইচ্ছে করো। কিন্তু শুধু শুধু এমন মিথ্যে স্বপ্ন দেখো না। শোনো, তুমি আমাকে এই জন্মে তো আর পাচ্ছই না। আর পরের জন্মে তোমার ঠিকানা কোথায় হবে, সেটা তুমি নিজেও জানো না। দেখা যাবে, সেখানে তুমি নিজের পাপের ক্ষমা চাইতে চাইতেই আধমরা হয়ে গেছো।”

আহি এই বলে কলটা কেটে দিল। তাজওয়ার দাঁত কটমট করতে করতে এবার আফিফকে কল করলো। আফিফ তাজওয়ারের কল ধরলোই না। উলটো মেসেজ পাঠিয়ে বলল,
“আমি আর আপনার কোম্পানিতে কাজ করছি না। সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে কাজ ছাড়ছি, তাই আপনি আমার কাছ থেকে বিশাল অংকের টাকা পাবেন। আমি সেই টাকাটাও আপনাকে দিতে পারছি না। কিন্তু সেই টাকা না দেওয়ার জন্য আপনি আমার উপর কোনো মামলা করতে পারবেন না। যদি করেন তাহলে আপনার মানি লন্ডারিংয়ের সব তথ্য আমি ফাঁস করে দেবো। আশা করবো, আমার মত অসহায় মানুষের কাছ থেকে এত টাকা নিয়ে আপনার তেমন কোনো লাভ হবে না। আপনি এমনিতেই কোটিপতি। কিন্তু আপনার মানি লন্ডারিংয়ের সব তথ্য যদি আমি ফাঁস করে দেই, আপনাকে পথে বসাতে আমার বেশি সময় লাগবে না। আর পরিশেষে ধন্যবাদ, আমাকে আপনার এসিস্ট্যান্ট বানানোর জন্য।”

তাজওয়ার আফিফের মেসেজ থেকে তব্ধা খেয়ে গেলো। রাগে তার হিতাহিতজ্ঞান লোপ পেয়েছে। সে ফোনটা জোরে ছুঁড়ে মারলো মেঝেতে। ভেঙে তছনছ হয়ে গেলো তাজওয়ারের ফোনটি। সবকিছুই তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে হচ্ছে। এমনটা হতে দেওয়া যাবে না। আজ পর্যন্ত সে যা চেয়েছে, তাই পেয়েছে। ভবিষ্যতেও তাজওয়ার সেটাই চায়। সে যদি আহিকে না পায়, তাহলে আহির জীবনে দ্বিতীয় কোন পুরুষকে সে জীবিত রাখবে না। আর আফিফকেও তার অতীত মনে করিয়ে দিতে হবে।

১০৩।

এক সপ্তাহ কেটে গেলো। আফিফ খুব সূক্ষ্মভাবে তাজওয়ারের বিরুদ্ধে জমিয়ে রাখা সব প্রমাণ সাজিয়েছে। আহি গেল সপ্তাহে তাজওয়ারের নামে হয়রানীর মামলা করে এসেছিল। সেই মামলা এখনো চলছে। এখন এই তথ্যগুলো দিলে, তাজওয়ার আরো কিছু মামলায় ফেঁসে যাবে। অন্যদিকে উজ্জ্বলও তাজওয়ারের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের ফাইলটি এখনো কোর্টে জমা দেয় নি। তাজওয়ারকে অন্য মামলায় ফাঁসানোর জন্য সাক্ষী খুঁজছে উজ্জ্বল। সাক্ষী পাওয়ার পর প্রমাণগুলো রাখবে। সাক্ষী ছাড়া প্রমাণ ভিত্তিহীন। সমস্যা ওই এক জায়গায়। তাজওয়ারকে সবাই এতো ভয় পায় যে কেউ সাক্ষী দিতেই আসে না। এদিকে আফিফ সব প্রমাণ তার ফাইলে ঢুকিয়ে আহিকে কল করে বলল,
“আহি, সব প্রমাণ আমার কাছে আছে। আজ সবগুলো উজ্জ্বলকে দিয়ে দেবো।”

আহির সাথে তাজওয়ারের বিষয়ে আরো কিছু কথা বলে কল কেটে দিলো আফিফ। এরপর ফাইলটা টেবিলের ড্রয়ারে রেখে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লো সে। আফিফ চলে যাওয়ার পর পদ্ম রুমে এলো। ড্রয়ার খুলে ফাইলটা বের করলো। এতক্ষণ সে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আফিফ আহিকে যা যা বলেছে সব শুনছিলো।

পদ্ম ফাইলটা হাতে নিয়ে মনে মনে ভাবতে লাগলো,
“যদি তাজওয়ার ফেঁসে যায়, তাহলে আহি আর আফিফের জীবন থেকে সে সরে যাবে। আফিফ যেই ভয়ে আহিকে ছেড়ে এসেছিলেন, সেই কারণটা তাদের জীবন থেকে চলে গেলে, তারা তো আবার এক হতে চাইবে। এখন আফিফ জেনে গেছেন, আমি তাকে ঠকিয়ে বিয়ে করেছিলাম। উনি আমাকে এখন আর ভালোবাসেন না। আহি তো খুব সহজেই সেই জায়গাটা নিয়ে নেবে। যাকে পাওয়ার জন্য এতোকিছু করলাম, সেই মানুষটা যদি আমার হয়েও না হয়, তাহলে আমি তো হেরে যাবো। হ্যাঁ, আমি ভুল করেছি। কিন্তু আমি তো ভালোবেসেছিলাম। আফিফ আমার ভালোবাসাটা দেখছে না কেন? থাক, না দেখুক। আমি বসে থাকবো না। রাদ আহিকে ভালোবাসে। আমি চাই, আহি রাদের সাথে ভালো থাকুক। কিন্তু এই মুহূর্তে আমি যদি তাজওয়ারকে না বাঁচাই, তাহলে আমি আফিফকে হারিয়ে ফেলবো। এখন তাজওয়ার খানই আমাকে সাহায্য করবে।”

পদ্ম ফোন বের করে তাজওয়ারকে কল করে আফিফের সংগ্রহ করা প্রমাণের ব্যাপারে সবটা জানালো। তাজওয়ার বলল,
“আমি তোমাকে ঠিকানা দিচ্ছি। তুমি প্রমাণগুলো নিয়ে আমার বাড়িতে চলে এসো। তুমি তো জানো, আমার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। আমি বাসা থেকে বের হতে পারছি না। তাই তোমাকে আসতে বলছি।”

পদ্ম খুব সাহস নিয়ে ফাইলটা হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। যাওয়ার আগে আফিফা বেগম কয়েকবার ডাক দিয়েছিলেন পদ্মকে। পদ্ম শুনলো না। সে চলে গেলো দ্রুত পদে। আধাঘন্টার মধ্যে পৌঁছে গেলো তাজওয়ারের ফ্ল্যাটে। পদ্ম বেল দিতেই দরজা খুলে দিলো একটা ছেলে। পদ্ম তার দিকে সেকেন্ড খানিক তাকিয়ে বলল,
“তাজওয়ার খান আছেন?”

তাজওয়ার ভেতর থেকে ডেকে বলল,
“পদ্ম, আসো ভেতরে।”

পদ্ম ভেতরে এসে বসলো। ফাইলটা তাজওয়ারের সামনে রেখে বলল,
“আফিফের কোনো ক্ষতি করবেন না। আহিরও কোনো ক্ষতি করবেন না। আমি আহির ভালো চাই। ও যার সাথেই ভালো থাকে, থাকুক। কিন্তু ও কখনো আফিফের সাথে ভালো থাকবে না।”

তাজওয়ার বাঁকা হেসে বলল,
“যার সাথে ভালো থাকে! আহি তো শুধু আমার সাথেই ভালো থাকবে। ইনফ্যাক্ট, আমিই আহির সাথে ভালো থাকবো।”

পদ্ম চুপ করে রইলো। তখনই দরজা খুলে দেওয়া ছেলেটি বসার ঘরে এসে বসলো। সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বলল,
“হাই, আমি সজিব।”

পদ্ম মাথা নিচু করে তাজওয়ারকে উদ্দেশ্য করে বলল, “আচ্ছা, আমি এখন যাই।”

পদ্ম উঠে দাঁড়ালো। সে দরজার দিকে পা বাড়াতেই সজিব আর জিলান সোফায় আয়েশ করে বসে বলল,
“তাজ, মেয়েটা কে?”

তাজওয়ার ফাইলটি উল্টেপাল্টে দেখতে দেখতে বলল,
“আফিফের বউ।”

সজিব বলল, “সেই তো!”

জিলান বলল, “রেখে দে না।”

তাজওয়ার ফাইল দেখা বন্ধ করে পদ্মের দিকে তাকালো। বাঁকা হেসে বলল,
“সুযোগ যদি পায়ে হেঁটে আমার কাছে চলে আসে, তাকে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত নয়। কি বলিস?”

সজিব হেসে বলল, “হ্যাঁ, সেটাই তো।”

তাজওয়ার জিলানকে ইশারা করতেই সে পদ্মকে পাশ কাটিয়ে দরজার কাছে গিয়ে ভালোভাবে দরজা বন্ধ করে দিলো। পদ্ম দরজার দিকে তাকিয়ে বলল,
“দরজা আটকে দিলেন যে!”

জিলান বিদঘুটে হাসি হেসে বলল,
“তোমাকে মিষ্টি না খাইয়ে যেতে দিচ্ছি না।”

পদ্ম কয়েক পা পিছিয়ে তাজওয়ারের কাছে গিয়ে বলল,
“আমাকে দরজাটা খুলে দিন।”

তাজওয়ার হেসে বলল,
“নো। আজ রাতটা না হয় এখানেই থাকো৷ কাল যেও। আই প্রমিজ, তোমার আফিফ কখনোই আমার আহির হবে না। আমি হতে দেবোও না।”

পদ্ম ভীত চোখে তাজওয়ারের দিকে তাকালো। কাঁপা কন্ঠে বললো,
“আমি আপনার কাছে সাহায্যের জন্য এসেছি।”

“আমার কাছে?”

তাজওয়ার অট্টহাসি হেসে বলল,
“আমার নিজেরই তো সাহায্যের প্রয়োজন। তোমার সাহায্য। আহি তো আমার কাছে আসছে না। আর তাই আমার অন্যদিকে চোখ পড়ছে। তুমি এই মুহূর্তে আমাকে শান্ত করতে পারবে।”

তাজওয়ার পদ্মের কোমড় ধরে তার কাছে আসার চেষ্টা করতেই পদ্ম তাকে ধাক্কা দিয়ে অন্য রুমের দিকে দৌঁড়ে গেলো। কিন্তু পারলো না। জিলান পদ্মের উড়না টেনে ধরে তাকে মেঝেতে ফেলে দিলো। সজিব আর তাজওয়ার তাকে টেনে নিয়ে গেলো পাশের রুমে। এরপর তিন বন্ধু ভেতরে ঢুকেই ধড়াম করে দরজাটা লাগিয়ে দিলো। আর এরপর পদ্মের ক্রন্দন বেঁধে গেলো চার দেয়ালের ফাঁকে।

চলবে-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here