#ফ্লুজি #অনুপ্রভা_মেহেরিন [পর্ব ২১]

0
537

#ফ্লুজি
#অনুপ্রভা_মেহেরিন
[পর্ব ২১]
এলোনের বিয়ের ফুটেজগুলো আরশাদের কাছে পাঠানো হয়েছে সকালে।ব্যস্ততা নিয়ে বিয়ের ফুটেজগুলো আর দেখা হলো না তার।সন্ধ্যার সময় ফ্লুজির জন্য কাটলেট ভাজলো সে।সাথে দুই মগ কফি নিয়ে বসলো সোফায়।বিয়ের ফুটেজগুলো দেখতে ব্যবস্থা করলো টিভিতে। কাটলেটে কামড় বসিয়ে মনোযোগ দিয়ে দুজনে দেখছিল বিয়ের ফুটেজ।এলোনের খুশিতে আরশাদ বলে,

” দেখলে এডনাকে পেয়ে কি খুশি ছেলেটা।”

” ওরা লিভইনে ছিল না?”

” হুম সাত মাস।”

” এদের কি লজ্জা লাগে না?বিয়ের আগে ছিহ্।”

” তো?ওদের কাছে এসব নতুন নয়।এলোন এর আগে আরেকটা মেয়ের সাথে লিভইনে ছিল ওদের সাথে বনিবনা হয়নি বলেই তো ব্রেকাপ করলো।”

” আপনার বাকি বন্ধুরাও কি এমন?”

” ডিলান ছাড়া সকলে লিভইনে আছে।ডিলান মাত্র একটা সম্পর্কে জড়ালো।”

” আপনি কয়জনের সাথে লিভইনে ছিলেন আরশাদ?”

কফির মগে চুমুক বসাতে গিয়েও থেমে গেল আরশাদ।চোখ পাকিয়ে তাকালো ফ্লুজির পানে।

” আমি এক নারীতে আসক্ত।”

” বিশ্বাস করবো কীভাবে?বিয়ের আগে সম্পর্কে থাকতেই পারেন।”

” ছিলাম তো তোমার সাথেই তো ছিলাম।যা করলে জান…মানসিক রোগী বানিয়ে ছাড়লে।”

খুশবু প্রত্যুত্তর করলো না।ভিডিওর দিকে মনোনিবেশ করলো সে।হঠাৎ ভিডিও ফুটেজে আরিব আর এলিনাকে দেখতে পেল খুশবু।মেয়েটা আরশাদকে ধাক্কা দিয়ে বলে,

” দেখনু দেখুন এলিনা আর আরিবকে কি সুন্দর লাগছে।”

” লাগলেও লাগা বারণ।”

” কেন বারণ?”

আরশাদ চুপ হয়ে যায়।ভিডিও ফুটেজটিতে সবাইকে দেখা যাচ্ছে।খুশবু আরশাদকে ঠেলে যখন দূরে সরিয়ে দেয় সেই সময়টাতে আরশাদ খুশবুর চোখে চোখ রাখে।

” কীভাবে পারলে আমাকে সরিয়ে দিতে ফ্লুজি?একটুও বুক কাঁপলো না?”

” না কাঁপলো না।”

হঠাৎ একটি সিন দেখে আরশার ছলকে উঠলো।গরম কফি ছিটকে পড়লো তার হাতে।এলিনা এবং আরিবকে চুম্বনরত অবস্থায় দেখে হতবাক সে।ভিডিওটিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে আরিব নিজেকে সরিয়ে আনলেও এলিনা সেচ্ছায় আরিবকে কাছে টেনেছে।আরশাদ ঢোক গিললো এতো সাংঘাতিক ব্যপার!ভালোবাসতে বাঁধা নেই কিন্তু এদের সম্পর্কে অনেক দিক বেদিক জড়িত।
খুশবু আরশাদের বাহু চেপে ধরে আতঙ্কিত নয়নে তাকায় তার পানে,

আরশাদ কফির মগটা রেখে উঠে দাঁড়ায়।কিয়ৎক্ষণ পায়চারি করে চলে যায় আরিবের কাছে।আরিব তখন বন্ধুদের সাথে গ্রুপ কলে ব্যস্ত।ভিডিও কলে হেসে হেসে কথা বলছে ছেলেটা।প্রতিবারের মতো আরশাদ আজ আর অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করলো না।সরাসরি চলে এলো ভাইয়ের কক্ষে।হঠাৎ আরশাদকে দেখে অবাক হলো আরিব,

” ব্রো কিছু বলবে?”

“হুম।ফোন রাখো।”

” পাঁচ মিনিট সময় দাও।”

” পাঁচ সেকেন্ডো দিতে পারবো না।”

আরশাদের কড়া জবাবে আরিব দ্রুত কল কাটে।

” কি হয়েছে?তোমাকে চিন্তিত লাগছে কেন?”

” এলিনাকে পছন্দ করো তা আমি জানি।এলিনা কি তোমাকে পছন্দ করে?”

” হঠাৎ এসব কথা কেন?”

” এলোনের বিয়ের ডান্সে তোমরা কি করেছিলে?সজ্ঞানে করেছিলে?এলিনা ডান্স শেষ করার পরেও মাতাল ছিল না আমার ঠিক ঠাক মনে আছে।তাহলে তোমরা….”

বুকের ভেতরটা প্রবল ভাবে কেঁপে উঠলো আরিবের।গলাটা কেমন বেঁধে গেল আচমকা।আরশাদ জানলো কি করে?

“ব্রো প্লিজ ভুল বুঝনা ওটা এক্সিডেন্ট ছিল।”

” সিরিয়াসলি?ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে দুজনকে,বাই দা ওয়ে এলিনা এরপরে তোমাকে কিছু জানিয়েছে?”

” সে তার ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত ব্যস এইটুকুই।আর কোন কথা হয়নি আমাদের।ও যে মাতাল হয়েছিল এসব ঘোরেই হয়েছিল।”

” তুমি কি এলিনাকে চাও?”

” এলিনা আমাকে চায় না।সেদিনের পর এলিনা আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছে অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম।”

” শুনো,এলিনা খ্রিস্টান আমরা মুসলমান।এলিনার বাবার পক্ষের পরিবারের কেউ আমাদের পছন্দ করে না সেটা নিশ্চয়ই তোমার অজানা নয়।”

” আমি জানি।আমি নিজেকে বুঝিয়েছি আমার এলিনার দিকে ঝুঁকে পড়া বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।”

” এলিনার বাবার বন্ধুর ছেলে সাথে আন্টি চান তার বিয়ে দিতে সেদিন আমাকে ছেলের ছবিও দেখিয়েছে।তোমরা যদি দুজনে দুজনের অনুভূতিকে সম্মান জানাও তবে আমি একটা ব্যবস্থা করবো।”

” আমি নিজেকে বুঝিয়েছি শুধু শুধু আমাদের পারিবারিক সম্পর্কটা নষ্ট হবে।আমি চাই না এই সম্পর্কে জড়াতে।”

” এলিনা?”

” তার সাথে আমি কথা বলবো।’

আরশার দ্বিতীয় বার কথা বলার আগ্রহ পেল না।আরিবের পিঠে হাত বুলিয়ে চলে গেল তৎক্ষণাৎ।
.
আজ জনের জন্মদিন পার্টিতে আরিব,আরশাদ এবং খুশবুকে ইনভাইট করা হলেও আরশাদ খুশবুকে নিয়ে পার্টিতে গেল না।জনের মতিগতি তার মোটেও ভালো লাগে না।তাছাড়াও খুশবুকে নিয়ে জনের এত আগ্রহ কীসের?যতবার খুশবুকে সে দেখেছে বিভিন্ন ভাবে নানান ইঙ্গিতে কথা বলেছে।

জন্মদিনের পার্টি শেষে বন্ধুরা সবাই মিলে নাইট ক্লাবে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।আজ জনের বন্ধুরাও আছে।সব মিলিয়ে প্রায় বিশজনের দল তারা।পার্টির সবকিছু বুঝে শুনে সমাপ্ত জানিয়ে ক্লাবে আসবে বললো জন তাই জনের বন্ধুরা সবাই নিজ নিজ গাড়ি নিয়ে ক্লাবে রওনা হলো।

আরশাদ তখন ওয়াইনের গ্লাস হাতে মাত্র চুমুক বসালো।কডি জনকে উদ্দেশ্য করে বলে?

” আজ রাতটা কি আমাদের দেবে নাকি সুন্দরীদের দেবে?”

” অবশ্যই সুন্দরীদের।নারীর সঙ্গ ছাড়া কি রাতের মজা আছে?তোমার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে আসো।”

” সে নেই।পরিবারের সাথে শহরের বাইরে গেছে।”

” লিভইনে যাবে কবে?”

” খুব শীগ্রই।”

আরশাদ আড় চোখে তাকালো কডির পানে।তার বন্ধুরা সব এডভান্স।ভাগ্যিস এসবে সে সাহস করেনি অবশ্য তার সাহস করার সাধ্য নেই ইমরান ইহসান এবং আফরোজ জানলে তাকে বাড়ি ছাড়া করবে।সে তার ফ্লুজিতে মগ্ন।ফ্লুজির কথা ভাবতেই মনটা কেমন আনচান করে,মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরলে একটু শান্তি লাগত।

আরিবের অন্যমনস্ক ভাবটা জনের চোখ এড়ালো না, সুযোগ্য সুযোগ এসেছে। আরশাদকে আজ রাতেই সত্যটা জানাতে হবে।জন আরিবের দিকে তাকিয়ে বলে,

” আরিব তোমার গার্লফ্রেন্ডকে আনোনি কেন?”

” গার্লফ্রেন্ড?”

” কেন এলিনা?দুজনকে সেদিন বেশ লাগছিল।”

” সরি,সে আমার কাজিন।”

” কাজিনকে কেউ কিস করে?”

আরিব থতমত খেয়ে গেল।আরশাদ জবাব দেওয়ার আগেই জন ফোড়ন কেটে বলে,

” শুনো এলিনা ভালো মেয়ে।সময় থাকতে থাকতে এলিনাকে স্বীকৃত দাও না হলে আরশাদের মতো তোমার কপালেও কলগার্ল জুটবে।”

শেষোক্ত বাক্যটি আরশাদের কানে বজ্রধ্বনির ন্যায় পতিত হলো।ওয়াইনের গ্লাসটা রেখে উঠে দাঁড়ালো আরশাদ।ডিলান আরিব সহ বাকিরা এই কথার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না।জন যে এই মুহূর্তে এমন কথা বলবে স্বপ্নেও ভাবেনি তারা।আরশাদ স্থির চোখে তাকালো জনের পানে,

” কী বললে তুমি?”

” ইয়ুর ফ্লুজি ইজ এ কলগার্ল।”

আরশাদ স্তম্ভিত!হতভম্ব নয়নে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ।তারপর আচমকাই ফিক করে হেসে ফেললো।আরশাদের হাসিতে অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো জন।

” সারাদিন কি মাথায় এসব ঘুরে?আজকাল সবাইকে কি এক কাতারে নামিয়ে এনেছো ব্রো?সাবধান করছি আমার বউকে নিয়ে বাজে কথা আমি বরদাস্ত করবো না।”

” আরশাদ তুমি অতি বোকা ছেলে।”

” হ্যাঁ বোকা ছেলে বলেই তোমার কথা এখনো শুনে যাচ্ছি।”

” তোমার ফ্লুজি কলগার্ল।এটা তো মিথ্যা নয়।আমি কক্সবাজার তার সাথে ছিলাম আমার কাছে প্রমান আছে।”

আরশার রেগে গেল।তেড়ে এসে জোর খাটিয়ে ঘুষি দিল জনের নাকে।ভাগ্যক্রমে জন সরে গেল।অবশ্য এই ঝড়ের জন্য প্রস্তুত ছিল জন।ডিলান আরশাদকে চেপে ধরলো এবং শান্ত করতে চাইলো বারবার।কিন্তু আরশাদ কি শান্ত হওয়ার পাত্র?তার স্ত্রীকে নিয়ে বাজে কথা উঠছে সে কি করে পারবে শান্ত হতে।
জন তার কাছে থাকা সকল ছবি আরশাদকে দেখালো।আরশাদ চুপচাপ দেখলো সব।তার ফ্লুজির শরীরের সহিত অন্য পুরুষের শরীর মিশে এই মুহূর্তে তার দাঁড়িয়ে থাকার জো নেই।শরীরের সমস্ত শক্তি এই মুহূর্তে এসে ফুরিয়ে গেছে।আরশাদ বসে পড়লো চেয়ারে।ভাইয়ের ভেঙে পড়া অস্বস্তি দেখে আরিব পাশে দাঁড়াল।এলোন আরশাদকে আশ্বাস দিয়ে বলে,

” মেয়েটা তোমাকে ঠকালো আরশাদ তুমি কি বুঝতে পারলে না?এখন সময় আছে সবটা এসপার-ওসপার করো।”

আরশাদের ভেঙে পড়া দেখে জন যেন সফল হলো।যদিও এতে একদিকে আরশাদের ভালো চাইল জন।তার ভাষ্যমতে সে চায় না আরশাদ ঠকে যাক।জন আরিবের দিকে তাকিয়ে কঠোর ভাবে বলে,

” আরিব তুমি তো সবটা জানতে কেন জানালে না আরশাদকে?”

আরিব আরশাদের চোখে চোখ রেখে থমকে গেল।প্রত্যুত্তর করার আগে আরশাদ তার দিকে তাকিয়ে স্থির চোখে বলে,

” আরিব ফ্লুজি এমন বিশ্বাস করো?”

” ন…না।”

” কেন বিশ্বাস করো না তুমি?”

কেন বিশ্বাস করে না আরিব? এর সঠিক উত্তর সে নিজেও জানে না।তার ভাবনা চিন্তায় ধারণায় এইটুকুই বুঝে ফ্লুজি এমন মেয়ে হতেই পারেনা।আরিবের নীরবতা মানতে পারলো না আরশাদ।চট করে আরিবের গালে চড় বসিয়ে দিল সে।

” তুমি কেন বিশ্বাস করো না?আচ্ছা সব বাদ আমাকে আগে জানাওনি কেন?”

” আমি…”

আরিব কথা শেষ করার আগে জন বলে,

” তুমি তো তোমার ফ্লুজির অন্ধভক্ত।তাকে নিয়ে কোন কথা তুমি সহ্য করো?সবাই এসব জানে কেউ তোমাকে সাহস করে জানায়নি।ফ্লুজিকে অন্ধবিশ্বাস করা এবার বন্ধ করো।”

” না করবো না।বরং আজকের পর থেকে।আরো বেশি বিশ্বাস করবো তার পাশে থাকবো।তাকে সম্পূর্ণ সাপোর্ট করবো।তার পেছনে যে কুকুর লেগেছে সেই কুকুরগুলোকে সরাতে হবে।ফ্লুজিকে নিয়ে বাজে কথা কখনো সহ্য করিনি আর করবো না।”

” চোখ থেকেও অন্ধ তুমি।”

” হ্যাঁ আমি অন্ধ।অন্ধ বলেই তো বুঝতে পারছি ছবির মেয়েটি আমার ফ্লুজি নয়।আমি ওর হাজবেন্ড ওর খুঁত নিখুঁত সব আমি জানি।”

” কী জানো?মেয়েটার ছলনায় ডুবেছো তুমি।”

” ভালোয় ভালোয় কথা বলছি বলে তোমার ভালো লাগছে না তাই না?আমি তো বলেছি ছবির মেয়েটি আমার ফ্লুজি নয়।”

আরশাদ জোরালো গলায় বললো।বন্ধুরা সবাই অবাক হয়ে দেখলো আরশাদের কান্ড।অ্যাডেন এর সত্যতা জানতে মুখিয়ে আছে সে আরশাদের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে বলে,

” এই মেয়ে যদি তোমার ফ্লুজি না হয় তাহলে এই মেয়েটা কে?জন মিথ্যা বলছে না, জনের সিনিয়রাও এই মেয়ের সাথে থেকেছে।”

” অ্যাডেন তুমি আমার বন্ধু এমন কোন কথা বলনা যার কারণে তোমার মুখ দেখার ইচ্ছাও আমার মরে যায়।আমি বলছি তো এই মেয়ে আমার ফ্লুজি নয়।এই মেয়ের হাতের পুরোনো কাটা দাগ গর্ত হয়ে আছে আমার ফ্লুজির কোন কাটা দাগ নেই।এই মেয়ের শরীরের বিভিন্ন অংশে টেটু আর আমার ফ্লুজির এসব নিয়ে কোন ধারণাও নেই।”

আরশাদ বোঝাতে চাইল মানাতে চাইল।কডি বলে,

” তাহলে কল গার্ল মেয়েটা কে?”

” জানি না।”

জন ওয়াইনের বোতলে চুমুক বসিয়ে হেসে ফেললো আরশাদের কাঁধে হাত চাপড়ে বলে,

” আরশাদ মজা করছো?তোমার ওয়াইফ যে কলগার্ল… ”

আচমকা কাঁচ ভাঙার শব্দে চমকে গেল সবাই।জনের কপাল ফেটে গলগলিয়ে রক্ত ঝরছে।আরশাদ ওয়াইনের বোতল দিয়ে জনের মাথায় ফা টি য়েছে।আরিব দ্রুত আরশাদকে ধরে ফেললো।বাকি বন্ধুরা ভয়ে ঢোক গিলে সরে দাঁড়ালো,

” আজ ট্রেলার দেখালাম।পরবর্তীতে মুভি দেখিয়ে ছাড়বো।এত বড় অপবাদ তোলা হয়েছে এর সত্যতা আমি বের করেই ছাড়বো।”
.
আরিব কতবার কত কথায় আরশাদকে শান্ত করতে চাইলো কিন্তু আরশাদ শান্ত হলো না।সে বিশ্বাস করতে নারাজ তার ফ্লুজি এমন মেয়ে।এসব কথা ভাবতেও আরশাদের বুক কাঁপে।
তারা একে অপরের কাছে আসার প্র‍থম রাতটা কি আরশাদকে প্রমান করে দেয় না তার ফ্লুজি নির্দোষ?

স্বার্থ ছাড়া জন কেন জল ঘোলা করছে?এসবে নিশ্চয়ই জনের স্বার্থ জড়িয়ে।
আরশার বাড়ি ফিরলো মাঝ রাতে।স্টোর রুমের দরজা দিয়ে ভিলায় প্রবেশ করলো সে।ফ্লুজি তখন ঘুমে বিভোর।মেয়েটার নিষ্পাপ ঘুমন্ত মুখখানী আরশাদকে প্রবল ভাবে টানে।আরশাদ শরীরের ভর ছেড়ে দেয় ফ্লুজির শরীরের উপর।মেয়েটার বুকে মাথা রেখে ভিজে উঠে তার চোখ,

বুকে ভারী চাপে দম আটকে আজে খুশবুর।মেয়েটা পিটপিট চোখে তাকাতে আরশাদকে দেখে শান্ত হয়।

” আরশাদ কখন এলেন?”

” এইতো এখন।”

“মন খারাপ?”

” আমাকে একটু জড়িয়ে ধরো।শক্ত করে ধরো, তোমার স্পর্শ আমার প্রয়োজন।তোমার স্পর্শে আমার দুশ্চিন্তারা মুখ থুবড়ে পড়ে।”

খুশবু মৃদু হেসে জড়িয়ে ধরে আরশাদকে।ছেলেটার হঠাৎ আবার কী হলো?

” আরশাদ কি হয়েছে?”

” কিছু হয়নি।তোমাকে আরো ভালোবাসা প্রয়োজন,আরো বিশ্বাস করা প্রয়োজন।”

” এই কি হলো আপনার?”

” কিছু হয়নি হওয়া জরুরি,তবে তুমি সামলাতে পারবে না আমি জানি।এই ঘরে একটা ছোট বাচ্চার প্রয়োজন।”

” কিসব বলছেন।আরশাদ আপনার কি মন খারাপ?”

” তুমি আমায় বিশ্বাস করো?”

” না করি না।আপনাকে বিশ্বাস না করলে এতদূর আসতাম?আপনি আমায় বিশ্বাস করেন আরশাদ?”

” কি বলেছি মনে নেই?চামড়া কেটে দেখবে?”

” না দেখতে হবে না।আমি বিশ্বাস করি আপনাকে।বিশ্বাস আস্থা উভয় আছে আপনার উপর।”

” তুমি আমার উপর বিশ্বাস রাখো,আমি তোমার বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে বাধ্য”

খুশবু প্রত্যুত্তর করে না।আরশাদের চুলে হাত বুলাতে বুলাতে চিন্তার দুয়ারে হুমড়ি খেয়ে পড়লো সে।

চলবে…..
~ বলা যায় গল্পটা টার্নিং পয়েন্টে চলে এসেছে।তাই গল্প সম্পর্কে মতামত জানাবেন।গল্পের কোন অংশ ধোয়াশা থাকলে মানে আমি যদি লেখনীর মাধ্যমে বুঝিয়ে উঠতে না পারি তাহলে আমাকে অবশ্যই জানাবেন।যেহেতু এটি আমার লেখা প্রথম ধারাবাহিক বড় গল্প তাই ভুল ক্রুটি থাকতেই পারে।

আরেকটা কথা যারা অতি তাড়া দেখান ফ্লুজির রহস্য বের করেন… বের করছেন না কেন?..তাদের বলছি গল্পটার মূল ফ্লুজিকে ঘিরে তাহলে হুট করে যদি আমি ফ্লুজি কে তা জানিয়ে দি তাহলে গল্পের রহস্য কোথায়?ফ্লুজিকে নিয়ে তাহলে আমার এত কিছু ভাবাই তো বৃথা।
যখন ২০ টা পর্ব ধৈর্য নিয়ে পড়েছেন তখন বাকি কয়েকটা পর্বে এত অধৈর্য হলে চলে?🥺
আসসালামু আলাইকুম পাঠক।গল্পের ছোট্ট গ্রুপে আপনাদের সবাইকে আমন্ত্রণ..
🔺গ্রুপ লিংক-https://facebook.com/groups/764407025608497/
🔺আইডির লিংক-https://www.facebook.com/profile.php?id=61555546431041

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here