ডুবেছি_আমি_তোমাতে #Aiza_islam_Hayati #পর্ব_৩১

0
207

#ডুবেছি_আমি_তোমাতে
#Aiza_islam_Hayati
#পর্ব_৩১
“আমার বউকে এনে দাও।বউ কোথায়?আমি আমার বউ এর কাছে যাবো।আমার হায়া পাখি কোথায়?এনে দাও তাকে।”,সেইদিন সকালে মুগ্ধতাদের বাড়ি থেকে চলে এলে হুট করে রাতে আহনাভের আরো গা কাঁপা জ্বর চলে আসে,জ্বর রয়ে যায় আর তিন দিন।আর ওই তিনদিন ধরে জ্বরের ঘোরে এহেন কথা বলে পাগলামি করে যাচ্ছে আহনাভ।

ওই তিন দিনে একটা জিনিস ভালো করে বুঝে গিয়েছে আবরাহার বাড়ির সকলে,’তাদের ছেলে কত বড় বউ পাগলা।’

আহির আহনাভকে সামলাতে সামলাতে শেষ অব্দি নিজেই নিজেকে বলে উঠেছিল,”এ তো আমার থেকেও বড় বউ পাগলা।”?

.
আরো দুইদিন লেগে গিয়েছিল আহনাভের সুস্থ হতে।আহনাভ সুস্থ হওয়ার পর থেকে এই অব্দি প্রতিদিন লায়ানাকে ফোন করেছে কিন্তু একবারও লায়ানা ফোন ধরেনি।লায়ানা কেমন আছে প্রত্যেকটি খোঁজ খবর মুগ্ধতার থেকে পেয়েছে আহনাভ।আহনাভ যখন বলেছিল মুগ্ধতাকে লায়ানা কেনো আহনাভের ফোন ধরছে না?মুগ্ধতা বলেছিল লায়ানা বলেছিল তোমাকে এই এক মাস জ্বালাবে না তাই ধরছে না ফোন, জ্বালাচ্ছে না তোমাকে।

.
আজ পুরোপুরি এক মাস হয়ে এসেছে।পরশু আহনাভ,লায়ানা,আহির,মুগ্ধতার গায়ে হলুদ।এই এক মাসে আহির কাজের ফাঁকে মুগ্ধতাকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছে অনেকবার।আরো ভালো করে জেনেছে মুগ্ধতাকে।

.
আহনাভ নিজের কেবিনে বসে আছে।ফোন হাতে,নিউজফিড স্ক্রল করছে।হুট করে একটি ছবি স্ক্রল করে উপরে উঠিয়ে দিয়েও আবার স্ক্রল করে টেনে নিচে নামিয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠে,”সাহস কী করে হয় আমার বউয়ের হাত ধরেছিস?হা’রা’ম’জা’দা আমার বউয়ের হাত ছার।”

আহির কেবিনে ঢুকেই আহনাভ কে এইভাবে চেঁচাতে দেখে বলে উঠে,”কে তোর বউয়ের হাত ধরার সাহস করলো?”

আহনাভ চেয়ার থেকে উঠে আহিরের কাছে এসে ফোন এগিয়ে বলে দেখ তুই।আহির ছবিটি দেখে হো হো করে হেঁসে উঠল।ছবিটিতে লায়ানা স্টেজে দাড়িয়ে আছে তার এক হাত স্টিভ ধরে আছে আর স্টেজের হোস্ট লায়ানার ট্রফি ধরা হাত উচুঁ করে ধরে রেখেছে।

আহির হাঁসি থামিয়ে বলে,”ভাই ছবি বাদ দে আগে উপরের লিখা পর।আমাদের হায়াতি বেস্ট আরকিটেক্ট অফ দা ইয়ার হয়েছে তাও যেই প্রজেক্ট এর জন্য গিয়েছিল কানাডা,স্টিভ এর জন্য যেই গোল্ডেন ইন্ডাস্ট্রির আর্কিটেকচার ডিজাইন করেছিল তার জন্য!”

আহনাভের ঠোঁটের কোণে প্রসন্ন হাঁসি ফুটে উঠলো।আহনাভ ছবিটিতে হাত বুলিয়ে বলল,”আমার বউ তো অলয়েজ বেস্ট।বউটা কার দেখতে হবে।”

“তো বউ পাগলা তোমার কী আদও মনে আছে আজ তোমার বউ কানাডা থেকে ব্যাক করছে।”

আহনাভ ঠোঁটের কোণে হাঁসি বজায় রেখে বলে,”কেনো মনে থাকবে না এই দিনের অপেক্ষায় ছিলাম আর আমার কিনা মনে থাকবে না।আমি এখনই বের হবো এয়ারপোর্ট যাওয়ার জন্য।”

আহনাভ ফোন পকেটে ঢুকিয়ে নাচতে নাচতে কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়। আহির পুনরায় হেঁসে উঠে,হাঁসি থামিয়ে বলে,” হায়াতি কী বানিয়ে ফেললে আমার ভাইকে পুরোই বউ পাগলা।ইশ এই ছেলেটা শেষ অব্দি আগের মত হয়ে উঠেছে।তুমি জানলে অবাক হবে প্রতি রাতে তোমার ছবির দিকে তাকিয়ে সরি বলতে বলতে ঘুমিয়ে যায় তোমার বউ পাগলা জামাই।”

.
আহির নিজেও বেরিয়ে যায় কেবিন থেকে।অফিস থেকে নেমে এসে দেখে আহনাভ চলে গিয়েছে। আহির নিশব্দে হাঁসলো এর মাঝেই আহিরের ফোন বেজে উঠলো, আহির পকেট থেকে ফোন বের করে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে,”উফ আমার বউ দেখি ফোন দিচ্ছে আমায়।”

আহির ফোন রিসিভ করলো ঐপাশ থেকে কর্কশ কণ্ঠে ভেসে আসলো,”এই হা’রা’মী লোক কত বার বলেছি লেট করবেন না আজ আমি আমার বোন কে
এয়ারপোর্ট থেকে আনতে যাবো কোথায় আপনি আমি এইযে রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি নিয়ে কতক্ষন হলো দাড়িয়ে আছি।”

আহির ভ্রু কুচকে বলে,”এইযে শুনো আমি একদম লেট নই তুমি বলেছিলে আমাকে অফিসের সামনে থেকে পিক করে নিয়ে যাবে তো তুমি ঐখানে কেনো?”

“ওহ আচ্ছা আমি এইটা বলেছিলাম?”

“নাহ তো আমার বউ বলেছিলো।”

“দাড়ান আমি আসছি আসলে সব গুলিয়ে ফেলেছি আজ।”

.
আহনাভ হাতে গোলাপ ফুলের তোড়া নিয়ে এয়ারপোর্ট এর সামনে দাড়িয়ে আছে পরনে কালো রঙের সুট বুট আজ লায়ানার পছন্দের রঙের মধ্যে একটি রঙের সুট বুট পরে আসাই ভালো মনে করেছে আহনাভ,মুখে তার মাস্ক।আহনাভের পাশে দাড়িয়ে আছে আট-নয় জনের মত গার্ড,প্রত্যেকের হাতে গোলাপ ফুলের তোড়া।আহনাভ বার বার হাতের ঘড়ির দিকে একবার তাকাচ্ছে তো আরেকবার সামনে তাকাচ্ছে।আহনাভ পুনরায় ঘড়ির দিকে তাকাতে গিয়েও তাকালো না সামনেই চোখ আটকে গেলো তার,লায়ানা লাফাতে লাফাতে এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে আসছে ঠোঁটের কোণে এক অমায়িক হাঁসি,পুরো শুভ্রতায় ঘেরা লায়ানা পরনে তার সাদা রঙের ফুল স্লিভ এর শার্ট,সাদা রঙের প্যান্ট,হাঁটু অব্দি লম্বা চুল উন্মুক্ত,শুধুমাত্র ঠোঁটে লিপস্টিক।লায়ানার এক পাশে আহান। আহানের এক হাতে লায়ানার ব্যাগ আরেক হাতে লাগেজ,লায়ানার আরেক পাশে রাফি সহ একজন পুরুষ তাকে চিনলো না আহনাভ।
.
আহনাভ এগিয়ে যায়,লায়ানা আহনাভকে দেখতে পেয়েই ধমকে দাড়িয়ে যায়।লায়ানা ধীর পায়ে এগিয়ে আসে আহনাভের কাছে।

মুগ্ধতার গাড়ি এয়ারপোর্ট এর সামনে এসে থামতেই মুগ্ধতা ও আহির বেরিয়ে আসে।দুজন বেরিয়ে আসতেই তাদের চোখে পড়ে লায়ানা আর আহনাভকে।দুইজন এগিয়ে যায়।

আহনাভ মুখের মাস্ক খুলে ফেলে,হাঁটু মুড়ে ফুলের তোড়া লায়ানার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,”ভালোবাসি বউ তোমাকে অসম্ভব রকমের ভালোবাসি।তুমি প্রথম যেইদিন এসে আমার সামনে দাড়িয়ে ছিলে ওইদিন তোমার প্রতি কোনো অনুভূতি না হলেও কিছু মুহূর্তের জন্য তোমার ঐ চোখের মায়ায় পড়েছিলাম,তোমার ঐ চোখে এক অদ্ভুত মায়া জড়িয়ে আছে,তোমার ঐ চোখের পানে যত বার তাকিয়েছি থমকে গিয়েছি,বেহায়া মন বারবার বলে যেত আহনাভ তুই দেখে যা এই মায়ায় জড়িয়ে থাকা চোখ দুটি।তোমার পাগলামো গুলো আমার গুছিয়ে রাখা মনটিকে মুহূর্তের মাঝে ওলোট পালোট করে ফেলে।আর তোমার গায়ের রঙ,তার বর্ণনা করার সাধ্য আমার নেই,ভাষা হারিয়ে ফেলবো এই গায়ের রঙের বর্ণনা করতে গিয়ে।তুমি পুরাটাই এক মায়ায় ঘেরা পাখি,তুমি শ্যামবতী তুমি আমার শ্যামবতী হায়া পাখি।তুমি এমন এক প্রলয় যে অন্ধকার ধ্বংসকারীনি।আমি কখনোই আর তোমাকে বাঁধা দিবো না,এই অন্ধকার ধ্বংসকারীনিকে আমি ভুল বুঝে কত কি না বলেছিলাম আমি ভুল ছিলাম।আমি এমন নারী কে আমার অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে পেয়ে ধন্য।বউ আমি জানি আমি তোমাকে কত’টাই কষ্ট দিয়েছি,আজ আমি সব কিছুর জন্য ক্ষমা চাইছি দয়া করে এই অধমকে মাফ করে দাও।এই এক মাস খুব কষ্ট কাটিয়েছি পাখি।তুমি ঝড়ের মত এসে আমার জীবন টাকে তোমার ভালোবাসায় ওলোট পালোট করে দিয়ে,ঝড় চলে গেলে পরিবেশ যেমন ঠান্ডা হয়ে যায় কিন্তু সব তছনছ করে যায় তুমিও ঠিক সেভাবেই চলে গিয়েছিলে ঐদিন।তোমার বলা ঐদিনের কথাগুলো আমার বুকে গাঢ় করে এক দাগ কেটেছিল।তুমি আমার থেকে আবার দূরে গেলে হয়তো আমি বেঁচে থেকেও এক মরা লাশ হয়ে যাবো।তোমার প্রতি এক ভয়ঙ্কর মায়ায় জড়িয়ে গিয়েছি আমি।তোমার ঐ মায়ায় ডুবে গিয়েছি ,আমি তোমাতে ডুবেছি হায়া পাখি।তোমার এই অধমকে ও তার ভালোবাসা কে গ্রহণ করে নাও।

মুগ্ধতা চোখ বড় বড় করে আহনাভের দিকে তাকিয়ে আছে,তার পাশে দাড়িয়ে থাকা আহিরকে জোরে চিমটি দিয়ে মুগ্ধতা আনমনে বলে উঠে,”আমি কী ঠিক দেখছি আহির সাহেব নাকি আমি স্বপ্ন দেখছি?”

আহির “মা গো মা” বলে মৃদু চেঁচিয়ে হাত ডলতে ডলতে বলে,”এত জোরে চিমটি মারলে কেনো? আমার হাতের মাংস উঠিয়ে ফেলছে মনে হয়,মা গো!”

মুগ্ধতা আহিরের দিকে নজর দিয়ে দাঁত কেলিয়ে বলে,”ওহ আচ্ছা আমি সত্যি দেখছি,স্বপ্ন না।আচ্ছা ব্যাথা পেয়েছেন জামাই?সমস্যা নাই ব্যাথা পাইলে পান আমার কী,আমি দেইখা নেই।”

আহিরের মুখ হা হয়ে যায়,বিস্মিত কণ্ঠে বিড়বিড় করে বলে,”চিমটি মেরে মাংস উঠিয়ে এখন বলে তার কী?

লায়ানার চোখের কার্নিশ ঘেঁষে কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো।লায়ানা আহনাভের সামনে দুই হাঁটু মুড়ে বসে পড়ে,আহনাভের হাত থেকে ফুলের তোড়া নিয়ে বলে,”তোমাকে তো কবেই আমার মনে জায়গা দিয়েছি আহনাভ।সেই প্রথম দিন থেকেই তোমাতে ডুবেছি আমি।তোমায় ভালোবেসে বারংবার উম্মাদের মত ছুটে গিয়েছি তোমার কাছে।আর অবশেষে আজ তোমার মুখ থেকে আমার জন্য বলা কথা গুলো শুনে যেনো নিজেকে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভাগ্যবান নারী মনে হচ্ছে।আমি যে কত খুশি তুমি ধারণাও করতে পারবে না।”

আহনাভ প্রসন্ন হাঁসে,আহনাভ এর সেই গার্ডরা আহনাভ আর লায়ানার চারিপাশে দুজনকে ঘিরে দাড়িয়ে আছে,গার্ডরা আচমকা পাশ থেকে দুজনের উপর গোলাপ ফুলের পাঁপড়ির বর্ষণ করতে লাগলো।

লায়ানা হেঁসে ফেলে,আহনাভ পকেট থেকে কালো রঙের একটি ছোট বক্স বের করে তার থেকে একটি আংটি বের করে লায়ানার হাত নিজের হাতে নিয়ে অনামিকা আঙ্গুলে আংটি’টি পরিয়ে দেয়,সেই হাতে অধর ছুঁয়ে দেয়।লায়ানা কেঁপে উঠে,চোখ বড় বড় করে বলে,”এমন করে সক দিও না জামাই।”

আহনাভ হেঁসে উঠে।লায়ানা উঠে গিয়ে আহান এর হাত থেকে নিজের ব্যাগ নিয়ে এসে,ব্যাগ থেকে একটি ছোট বক্স বের করে পুনরায় আহনাভ এর সামনে বসে বলে,”কাল সবার জন্য শপিং এ গিয়ে এই আংটি’টা পছন্দ হয় তোমার জন্য।তাহলে তুমি কি আমার ক্রা’ই’ম পার্টনার হতে রাজি জামাই?”

আহনাভ হেঁসে বলে,”অবশ্যই।”লায়ানা বক্সটি থেকে আংটি বের করে আহনাভের হাতে পরিয়ে দেয়।আহনাভ লায়ানার দুই বাহু ধরে দাড় করিয়ে জাপটে জড়িয়ে ধরে লায়ানাকে।লায়ানা আহনাভের বুকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলে,”আমি জানতাম আমি বেহায়া নির্লজ্য,এখন দেখি আমার জামাইয়ের আরো শরম নেই এত মানুষ তাকিয়ে আছে কোনো খেয়াল আছে?কিভাবে জড়িয়ে ধরেছে।”

আহনাভ হিসহিসিয়ে বলে,”আমার বউকে জড়িয়ে ধরেছি তাতে কার কি হে?”বলেই আরো ভালো করে জাপটে ধরে বলে,”আর কনগ্রাচুলেশন বউ,বেস্ট আর্কিটেক্ট অফ দা ইয়ার হওয়ার জন্য,তুমি পেরেছো তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে।কিন্তু আফসোস থেকে যাবে বউকে সামনাসামনি এওয়ার্ড পেতে দেখলাম না।”
.
এতক্ষনে ভিড় জমে গিয়েছে সবাই চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠেছে,”অ্যাক্টর আহনাভ।” আহনাভের গার্ড’রা আহনাভ ও লায়ানাকে ঘিরে রাখায় কেউই ওদের কাছে এসে উঠতে পারছে না।

মুগ্ধতা আহির এগিয়ে গেলে গার্ড ওদের দুজনকে যাওয়ার জন্য জায়গা করে দেয়।আহির গলা খাকারি দিয়ে বলে উঠে,”বউ পাগলা ছার বউকে আশপাশের মানুষ ভিডিও করছে।পড়ে কালকের হেড লাইন বের হবে অ্যাক্টর আহনাভ তার বউকে এয়ারপোর্ট’এ জড়িয়ে ধরে দাড়িয়ে ছিল কী শরম!”

আহনাভ লায়ানাকে ছেড়ে লায়ানার হাত শক্ত করে ধরে বলে,”বউকে এক মাস পর পেয়েছি তো আমি জড়িয়ে ধরবো না কী অন্য কেউ ধরবে?আমার বউকে যেদিকে খুশি ঐদিকে দাড়িয়ে জড়িয়ে ধরবো তাতে করো সমস্যা হলে হোক তাতে আমার কোনো সমস্যা নেই।”

এইদিকে আহনাভের লাগাম ছাড়া কথা শুনে লাল,নীল,বেগুনী,হলুদ,কমলা থেকে শুরু করে একেক রঙের শরমের ডিজে লাইট জ্বলছে লায়ানার মনে।

মুগ্ধতা বলে উঠে,”আরেহ ভাই ছাড়েন।বাসায় গিয়ে নিজের রুমে নিয়ে যা ইচ্ছে করবেন পরে।আগে এখান থেকে চলুন আমরা বুঝতে পেরেছি আপনি রোম্যান্টিক পুরো জাতিকে জানানো লাগবে না।আনরোম্যান্টিক ব্যক্তির ভাই হয়ে এরকম রোম্যান্টিক হলে চলে?”

আহির ঘাড় কাত করে মুগ্ধতার দিকে তাকিয়ে বলে,” পরশু গায়ে হলুদ তারপর বিয়ে তারপর বাসরে বুঝাচ্ছি তোমাকে কে আনরোমান্টিক।”

মুগ্ধতা আড় চোখে তাকিয়ে বলে,”থামেন তো বজ্জাত লোক।আসছে আমার রোম্যান্টিক। ঘোড়ার ডিমও করতে পারবেন না হুহ যান যান।”থেমে গিয়ে লায়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,”আর এই এমন লাল নীল বেগুনি না হয়ে চল এখন।বেশরম, শরম তো নেই হঠাৎ কোথেকে যে আসে এত শরম উফফ বাবাহ।”

লায়ানা ঠিক হয়ে দাড়িয়ে বলে,”ভালো করে শরম ও পেতে দিবি না?”

“শরম তো নাই বেশরম!আর শরম কি পাবি।’

“এইভাবে বলতে পারলি বনু!

“তোর জামাইকে আর নিজের জামাইকে এইভাবে বলতে পারলে তোকে তো আরো আগে বলবো।”

আহনাভ লায়ানার হাত ছেরে এক হাতে কোমড় জড়িয়ে লায়ানার দিকে মিষ্টি হেঁসে বলে,”থাক না আপ্পি আমার বউকে আজ কিছু বলো না।”

লায়ানা হেঁসে বলে উঠে,”উফ জমাই আসলেই আমি সক এর উপর সক খাচ্ছি,এই এক মাস কী হলো এত রোম্যান্স জেগে উঠেছে।”

আহির মুগ্ধতার কাছ ঘেঁষে বলে,”মুগ্ধ রানি তুমি তো সাইকোলজিস্ট তোমার কি মনে হয় ওর সব তার ছিঁড়ে পাগল হয়ে গিয়েছে ও?”

মুগ্ধতা বলে উঠে,”আপনি চুপ থাকেন।আর আসছে বউ পাগলা জামাই।আমি যাই ভাই আপনারা এখানেই থাকেন আজকে সারাদিন।”থেমে গিয়ে আহিরের দিকে তাকিয়ে বলে,”আমার সাথে যাবেন নাকি আমি একা চলে যাবো?”

“যাবো তো চলো।”, আহির ও মুগ্ধতা হাঁটা ধরে।গিয়ে গাড়িতে উঠে বসে।

রাফি লায়ানাকে বলে উঠে,”তাহলে ম্যাম চলুন।” আহনাভ ঘাড় কাত করে পিছনে তাকায়,রাফির পাশে দাঁড়ানো পুরুষটিকে দেখেই ভ্রু কুঁচকে বলে উঠে,”একে তো চিনলাম না ও কে?”

লায়ানা পিছনে ঘুরে তাকালো হেঁসে বলল,”ও তুহিন আমার নতুন পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট।আমি আবার কানাডা চলে গেলে ও আমার, এইখানের শাখা নেক্সট ইন এর সকল কিছু সামলাবে।”

“ওহ।”
.
গার্ড’রা আহনাভ,লায়ানাকে ঘিরে গাড়ি অব্দি নিয়ে গেলে লায়ানা,আহনাভ গাড়িতে উঠে বসে।গার্ড’রা আহান,রাফি ও তুহিন কে পিছনের এক গাড়িতে উঠে বসতে বলে অতঃপর মুগ্ধতাদের গাড়ি ছেড়ে দিয়ে এক এক করে গাড়ি ছেড়ে দেয়।
.
আহনাভ এক হাতে গাড়ি চালাচ্ছে আরেক হাতে লায়ানার বাহু ধরে তাকে নিজের বুকে আগলে রেখেছে।লায়ানা ঘাপটি মেরে আহনাভের বুকে মাথা ঠেকিয়ে রেখেছে।লায়ানা হুট করেই বলে উঠে,”আমার কপালে এত ভালোবাসা সইবে তো আহনাভ?”

আহনাভ আরো শক্ত করে এক হাতে জড়িয়ে ধরে লায়ানাকে,মাথায় ওষ্ঠ ছুঁয়ে দিয়ে বলে,”কেনো হবে না পাখি।এখন তো আমি তোমার ক্রা’ই’ম পার্টনার তোমাকে আঘাত করার আগে তাকে আমার সম্মুখীন তো হতেই হবে,এই আহনাভ যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে তার দিকে কেউ হাত বাড়ালে তার ওই হাত ভেঙেচুরে দিতে একবারও ভাবে না।”আহনাভ থেমে যায় পুনরায় শুধায়,”পাখি এখন বাড়ির সামনে ড্রপ করে দিলে ফ্রেশ হয়ে,একটা জম্পেশ ঘুম দিবে বুঝলে তারপর রাতের দিকে রেডি থাকবে আমরা ঘুরতে বের হবো।জানো আজকে রাতে ঘুরতে যাওয়ার বুদ্ধি গত পরশু আমি আর আহির বের করেছিলাম।আপ্পিকে বলা আছে।আমি আর আহির বাইক নিয়ে আসবো বুঝলে।”

#copyrightalert
#চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here