ডুবেছি_আমি_তোমাতে #Aiza_islam_Hayati #পর্ব_২৮

0
138

#ডুবেছি_আমি_তোমাতে
#Aiza_islam_Hayati
#পর্ব_২৮
অজ্ঞান অবস্থায় থাকা আহনাভের চোখ-মুখে কেউ পানি ছিটিয়েই সরে যায়।আহনাভ পিট পিট করে তাকায়।ভালো করে চোখ মেলে তাকাতেই আহনাভ চরম বিস্ময় নিয়ে নিজের দিকে চোখ বুলায়,তাকে একটি চেয়ারে বসিয়ে হাত পা দড়ি দিয়ে বেঁ’ধে রাখা হয়েছে।আহনাভ আশেপাশে তাকালো,বিশাল এক ঘরের মাঝে তাকে বসিয়ে রাখা হয়েছে।ঘরটি ফুল ও আলোকসজ্জায় সজ্জিত।আহনাভ চেঁচিয়ে বলে উঠে,”কার এত বড় সাহস আমাকে বেঁধে রেখেছে।সামনে আয় একবার,দেখ তোদের কী করি।জায়ান আবরাহার আহনাভ কে এইভাবে বেঁধে রাখার মত কলিজা কার আছে আমিও দেখতে চাই বেরিয়ে আয় শা’লা।”

আহির দরজা খুলে পকেটে দুই হাত গুজে এগিয়ে আসতে আসতে বলে,”আমার বোনকে তোর কাছে বিয়ে দিয়ে এমনিতেই শালা হবো।আর তোকে এইভাবে বেঁধে রাখার সাহস এই আহিরের ছাড়া আর কার বা হতে পারে।”

“আহিরের বাচ্চা আমাকে এইভাবে বেঁধে রেখেছিস কেনো?শালা আমার হাত পায়ের দড়ি খোল বলছি। হাত পায়ের বাঁধন খুলতে পারলে কিন্তু তোকে আমি শুটকি ভর্তা বানাবো।”,আহনাভ চেঁচিয়ে কথা গুলো বলে হাঁপাতে লাগলো।

আহির বুকে দুই হাত গুজে বলে,”আই ডোন্ট লাইক শুটকি ভর্তা।”

আহনাভ পুনরায় চেঁচিয়ে বলে উঠে,”আহির!খোল আমার হাত পায়ের দড়ি।”

আহির শরীর ছেড়ে দিয়ে চেয়ার টেনে বসে বলে,”দেখ ভাই তোর মত আশি কেজির বস্তা কে এইখানে আনতেই আমার সত্তর কেজি থেকে মাইনাস হয়ে মনে হয় আমি পয়ষট্টি কেজি হয়ে গেছি।”কথাটি বলেই ভাবনায় পড়ে গেলো আহির কত সাধনা করে আহনাভ কে এইখানে আনা ….

….. আহিরের অফিসের কাজ শেষ হলে আহির আহনাভের কেবিনে গিয়ে বলে,”আজ মুগ্ধ রানির রেস্টুরেন্টে এক নতুন খাবার লঞ্চ হবে চল তুই আর আমি যাই।”

“কিন্তু।”

“কোনো কিন্তু না চল।”

আহির আহনাভ কে নিয়ে বেরিয়ে আসে।পার্কিং লটে এসে আহির গাড়ির ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসে গাড়ি বের করে আনলে আহনাভ আহিরের পাশের সিটে বসে পড়ে।আহির পকেট থেকে মাস্ক বের করে পড়ে নেয়। আহিরকে মাস্ক পড়তে দেখে আহনাভ বলে উঠে,”কিরে তুই মাস্ক পড়েছিস কেনো?এখন তো আর করোনা নেই।এই তোর করোনা হলো না তো?”

আচমকা পিছনের সিট থেকে আহান এগিয়ে এসে হাতের স্প্রে দিয়ে আহনাভের নাকে মুখে স্প্রে করে দেয়,আহনাভ সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে যায়।

“আহ আমি।”,বাকিটা আর বলতে পারলো না আহান নিজেও অজ্ঞান হয়ে পিছনের সিটে গা এলিয়ে দেয় কারণ আহান ভুল বশত নিজে মাস্ক না পড়েই আহনাভের মুখে স্প্রে করে।

আহির আহান এর দিকে তাকিয়ে কপাল চাপড়ে বলে,”কী শালা আমার।কাজ তো করলো করলো সাথে শালা একটা অকাজ ও করলো।”

আহির গাড়ি স্টার্ট দিয়ে আহান এর উদ্দেশ্যে বলে,”শালা তুই ঘুমা।”
.
কাঙ্ক্ষিত জায়গা,মুগ্ধতার রেস্টুরেন্টের সামনে এসেই আহির গাড়ি থামায়।বড় এক শ্বাস নিয়ে আহনাভের দিকে একবার ও আহান এর দিকে একবার তাকায় অতঃপর বিড়বিড় করে বলে উঠে, একশত ষাট কেজির এই দুই বস্তা কে আমার মত সত্তর কেজির আহির কিভাবে উঠিয়ে দোতলা অব্দি নিয়ে যাবে?”

আহির থেমে গিয়ে পকেট থেকে ফোন বের করে নওশাদ কে কল করে কিন্তু নওশাদ ফোন না ধরেই কেটে দেয়। আহির বলে উঠে,” নওশাদ তোর সাহস কী করে হয় এই বিপদের সময়।”আহিরের বাকিটা বলা হয়ে উঠে না নওশাদ আহিরের গাড়ির সামনে এসে গ্লাসে টোকা দিয়ে বলে,”স্যার এইযে আমি।”

আহিরের ঠোঁটের কোণে এক খুশির ঝলক ফুটে উঠে। আহির গাড়ি থেকে বেরিয়ে বলে,”নওশাদ তুমি ওই আশি কেজির বস্তা আহান কে তলো আমি আমার ভাই নামক বস্তা টাকে তুলি। ……

“আহির সিরিয়ালি আমাকে কেন বেঁধে রেখেছিস বলবি?”

আহনাভের কণ্ঠ কর্ণকুহরে পৌঁছাতেই আহির ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে।

“আজ তোমার বিয়ে যে জনাব,তাই তোমায় বেঁধে রাখা।”, মেয়েলী কণ্ঠে এহেন কথা ভেসে আসতেই আহনাভ আহিরের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সামনে তাকায়।আহনাভ তার সামনে দাড়ানো লায়ানাকে দেখেই সাথে সাথে দৃষ্টি সরিয়ে আহিরের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,”কী বলছে এইসব।”

আহির চেয়ার থেকে উঠে দাড়িয়ে রুমটি ত্যাগ করতে করতে বলে ,” আজ তোর আর হায়াতির বিয়ে তাই তোকে কিডন্যাপ করা।তোর হাতে দশ মিনিট টাইম আছে নিজেকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত করেনে। দশ মিনিট পর কাজি নিয়ে আসছি।”

আহনাভ স্তব্ধ হয়ে বসে আছে। আহির চলে গেলে লায়ানা আহনাভের সামনে গিয়ে হাঁটু মুড়ে বসে মিষ্টি হেঁসে বলে,”আমাকে কেমন লাগছে?” (লায়ানার পরনে হালকা গোলাপি রঙের ভারী কাজের মধ্যে লেহেঙ্গা,মাথায় চুনরি,গলায় ভারী নেকলেস,হাতে মুঠ ভর্তি চুরি,মুখে প্রশাধনির ছোঁয়া রয়েছে।)

আহনাভ কণ্ঠে কাঠিন্য এনে বলে,” তুমি বিয়ের কথা বলবে আর আমি কী ধ্যাং ধ্যাং করে তোমাকে বিয়ে করে ফেলবো।আমি একটা খু’নি’কে কখনোই বিয়ে করবো না।”

লায়ানা লেহেঙ্গা ধরে উঠে দাড়ায়,পাশ থেকে চেয়ার টেনে এনে আহনাভের ঠিক সামনে বসে পড়ে।লায়ানা আহনাভের চোখের দিকে অনিমেষ তাকিয়ে থাকে,আহনাভ বলে উঠে,”আমার বিরক্তি লাগছে আমার হাত পায়ের বাঁধন খোলো।আর এইখানে কোনো বিয়ে হবে না।”

লায়ানা দুই হাতে আহনাভের মুখ আগলে নিয়ে মলিন কণ্ঠে বলে,”বার বার খু’নি বলবে না।তুমি আদও সব জানোনা আহনাভ।বিয়ে টা হোক তারপর নাহয় সব বলবো তোমায়।তুমি আমাকে এমন করে খু’নি বললে আমার বুকের মাঝে এক তিক্ত ব্যাথা অনুভূত হয় কেনো বুঝনা।”লায়ানা থেমে গিয়ে হেঁসে বলে ,” ধ্যাং ধ্যাং না করে হলে নাচতে নাচতে বরং বিয়ে করতে পারো।”

“জাস্ট ষাট আপ।আর আমাকে ছুবে না তুমি।হাত সরাও তোমার।তোমার মধ্যে আদও একটা হৃদয় বলতে কিছু আছে?তুমি ওইদিন আমার চোখের সামনে ওই লোকটিকে মে’রে’ছ।তোমার কী দয়াও হয়নি।তুমি এর আগেও মে’রে’ছ কাউকে?আমার তো মনে হচ্ছে মে’রে’ছ।তুমি অন্ধকারে ঘেরা একটি মানুষ যার চারপাশ ঘিরেই শুধু খু’ন’খা’রা’বি।”,শেষ কথাটি মৃদু চেঁচিয়ে বলে আহনাভ।

“আমি অন্ধকার না।আসলে আমার জীবনটাই অন্ধকার জগতের সাথে জড়িয়ে আছে।তুমি বরং আমার এই অন্ধকার ঘেরা জীবনে এসে নাহয় রয়ে যাও।”

“প্লিজ লিভ মি।”,লায়ানা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলল অতঃপর চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে বলে,”তুমি ভালো কথায় মানবে না তাইনা।”

আহনাভের ভ্রু কুঁচকে আসে।লায়ানা ফোন স্ক্রল করে একটি ভিডিও বের করে আহনাভের সামনে ধরে বলে,”এইবারও বিয়ে করবে না আহনাভ?”

আহনাভের বুক ধুক করে উঠে,ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে তার মা জেরিন শপিং মলে আছে আর তার পিছন কালো পোশাক পরা একটি লোক হাঁটছে।লোকটি তার টি শার্ট হালকা উঠতেই কোমড়ে গুজে রাখা ব’ন্দু’ক’টি স্পষ্ট হলো।

আহনাভ কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে শুধায়,”এইসবের মানে কী?তুমি এত নিচে নেমে গেলে?”

“আমি এক থেকে তিন অব্দি গুনবো,তুমি যদি বলো বিয়ে করবে না তাহলে বুঝেই নাও আমি কী করতে পারি।”

আহনাভ ঘৃনা মিশ্রিত কণ্ঠে বলে,”আমি তোমাকে যা ভেবেছিলাম তার থেকেও অধিকতর খারাপ মনের মানুষ তুমি।ঠিক আছে করলাম বিয়ে কিন্তু কখনোই তুমি আমার থেকে স্ত্রীর মর্যাদা পাবে না বা না পাবে ভালোবাসা।আমি শুধু তোমায় ঘৃনা করি।”

লায়ানা নিজেকে সামলে নিয়ে হেঁসে বলে উঠে,” সবাই ভিতরে চলে আসো।”, বলতেই মুগ্ধতা,রাফি,রুদ্র,আহির তার সাথে একজন বৃদ্ধ লোক,নওশাদ অজ্ঞান অবস্থায় থাকা আহানকে ধরে ধরে রুমটিতে প্রবেশ করে।

আহনাভ, মুগ্ধতা ও আহিরের দিকে তাকিয়ে বলে,”আপ্পি আর আহির তোমরাও ওর হয়ে এইসব করছো?”

মুগ্ধতা বলে উঠে,” ভাইয়া তুমি ভুল বুঝো না।দেখো তোমাদের বিয়ে যে তোমার জন্য কত ভালো হবে তুমি বুঝবে একদিন।”

নওশাদ আহান কে চেয়ারে বসিয়ে বসিয়ে দিয়ে টান টান হয়ে দাড়িয়ে আহিরের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলে,”স্যার বিয়ে কবে শুরু হবে,আমার তো এই আহান কে টেনে কোমড় শেষ।মনে হচ্ছে আমার হাড় গুলো এখনই ভেঙ্গে পড়ে যাবে।”

আহির বৃদ্ধ লোকটিকে বলে,”আপনি বসুন বিয়ে পড়ানো শুরু করুন।”

বৃদ্ধ লোকটি বসে পড়ে,তার খাতা কলমের সব কিছুই লিখিয়ে এনেছে আহির।বৃদ্ধ লোকটি লায়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,”মা বলো আলহামদুলিল্লাহ কবুল।”

লায়ানা আহনাভের দিকে তাকিয়ে অনিমেষ তিনবার কবুল বলে ফেলল।বৃদ্ধ লোকটি ঠোঁট টিপে হাসে,না বলতেই গল গল করে কোনো বউ এইভাবে কবুল বলেছে তার জীবনে হয়তো আজ প্রথম দেখা।বৃদ্ধ লোকটি আহনাভের দিকে তাকিয়ে বলে,”বাবা বলো আলহামদুলিল্লাহ কবুল।”

আহনাভ মাথা নুয়ে ফেলে।লায়ানা ভীত কণ্ঠে বলে উঠে,”কী হলো?আহনাভ তুমি ঠিক আছো?বাঁধন খুলে দেব?”

আহনাভ মাথা তুলে তাকায় লায়ানার দিকে তাচ্ছিল্য হেঁসে বলে,”আমাকে ভালো থাকতে দিলে কোথায়?” থেমে গিয়ে বৃদ্ধ লোকটির দিকে তাকিয়ে তিনবার এক নিশ্বাসে বলে উঠে,”আলহামদুলিল্লাহ কবুল।”

বৃদ্ধ লোকটি প্রসন্ন হেঁসে বলে, “আলহামদুলিল্লাহ।”মুগ্ধতা,আহির,নওশাদ,রুদ্র, রাফি এক সাথে বলে উঠে,”আলহামদুলিল্লাহ।” আহান টিপটিপ করে চোখ খুলতে খুলতে বলে,”মিশন ডান শালাবাবু অজ্ঞান।”

আহির বিড়বিড় করে বলে,”শালার শেষমেশ এখন ঘুম ভাঙলো।”

আহান চোখ খুলে তাকিয়ে সবাইকে দেখে নিয়ে কিছু বলবে তার আগেই আহির বলে,”শালা বাবু মিশন পুরপুরি ডান মানে বিয়ে ডান।”

আহান উঠেই লাফ। খুশিতে গদ গদ করে উঠে হুট করে থেমে গিয়ে বলে,”আমি কী এতক্ষন ঘুমাচ্ছিলাম।আমাকে ছাড়াই বিয়ে হয়ে গেলো।”

নওশাদ বলে উঠে,”যেই ঘুম দিয়েছিলে ভাই।”

আহন নিজের পেটে হাত বুলিয়ে বলে,”যেটাই হোক আমার প্রচুর খিদে পেয়েছে। কী সুন্দর বিরিয়ানির গন্ধ আসছে।বিয়ে তো হয়েই গেলো এখন বিরিয়ানি আমাকে ডাকছে,আমি বরং বিরিয়ানিকে সঙ্গ দিয়ে আসি।”

আহির আহান এর হাত টেনে বলে,”নাহ নাহ শালা বাবু এইভাবে পড়ে পড়ে ঘুমিয়ে আমাদের খাটিয়ে এখন কিনা তুমি বিরিয়ানি কে সঙ্গ দিতে যাবে তা কী করে হয়?তুমি আমার সাথে দাড়াও আজ আমরা সবাই খাওয়া দাওয়া করার পর শেষে তুমি খাবে।”

“আমার দারা সম্ভব না বিরিয়ানি আমাকে ডাকছে।”

“শালা বাবু বিরিয়ানি কে বলে দাও তুমি ব্যাস্ত আছো যেতে পারবে না।”

লায়ানা উঠে দাড়িয়ে আহনাভের কাছে গিয়ে তার এক এক করে দড়ি খুলে দিয়ে বলে,”মাফ করে দিও আহনাভ।”

আহনাভ লায়ানার দিকে তাকালো না উঠেই বেরিয়ে যাওয়াও জন্য হাঁটা ধরলো। আহির পিছু ডেকে বলে উঠে,”আহনাভ কোথায় যাচ্ছিস বিয়ের মিষ্টি টা অন্তত খেয়ে যা ভাই।”

আহনাভ ফিরে আহিরের দিকে কটমট চাহনিতে তাকিয়ে বলে,”তোর মিষ্টি তুই ঠুসে ঠুসে খা।তোকে আমি পরে দেখে নিবো আহির।”,বলেই বেরিয়ে যায়।

লায়ানা লেহেঙ্গা তুলেই ছুটে যায় আহনাভের পিছু পিছু।আহনাভ রেস্টুরেন্টের নিচের ফ্লোরে চলে এলে,লায়ানা লিফ্ট থেকে নেমেই বলে উঠে,” জামাই দাড়াও।”

আহনাভের গায়ে শিহরণ বয়ে যায় আজ একসাথে কত গুলো ধাক্কা সামলাবে আহনাভ!আহনাভ থেমে গিয়েও আবার পা বাড়াতে যাবে সেই মুহূর্তে লায়ানা দৌড়ে চলে আসে আহনাভের সামনে।লায়ানা আহনাভের সামনে এসে থেমে যেতেই লেহেঙ্গায় পা পেচিয়ে পড়ে যেতে নেয়,আহনাভ লায়ানার দুই বাহু আকড়ে ধরে ফেলে।লায়ানাকে ঠিক করে দাড় করিয়ে বলে,”এত বড় ক্রি’মি’না’ল হয়েও নিজেকে সামলাতে পারো না।”

লায়ানা হেঁসে বলে,”তুমি আছো না আমাকে সামলে নিতে মাই ডিয়ার হাসবেন্ড।”

আহনাভ পাশ কেটে চলে যেতে নিলে লায়ানা আহনাভের হাত শক্ত করে ধরে বলে,”জামাই বউ কে রেখে কোথায় যাও?”

আহনাভ হাতের দিকে একবার তাকিয়ে আরেক হাতে লায়ানার বাহু চেপে ধরে নিজের সামনে এনে বলে,” কানের কাছে এমন জামাই বলে আর নেক্সট বার ঘ্যান ঘ্যান করবে না।এইটা নাম মাত্রই বিয়ে আমি তোমাকে বউ মানিনা বুঝলে।”বলেই ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় লায়ানাকে।

লায়ানা মলিন হেঁসে পুনরায় এগিয়ে আসে।পায়ের জুতো খুলে পাশে রেখে দেয়।দুই হাতে আহনাভের দুই হাত শক্ত করে ধরে বলে,”একটা জিনিস পাওনা আছে এখনও।ঐটা আমি নাহয় দিয়ে দি তোমাকে।” বলেই আহনাভের পায়ের উপর পা রেখে দাড়িয়ে যায় লায়ানা।আহনাভ চমকে যায়।লায়ানা সময় না নিয়ে আহনাভের কপালে অধর ছুঁয়ে দেয়।

আহনাভের শিরায় শিরায় শিহরণ বয়ে যায়।লায়ানা সরে আসে, আহনাভের পায়ের উপর থেকে নেমে এসে বলে,”তুমি যাই বলো না কেনো এই লায়ানা তার
আহনাভ কে সবসময় উম্মাদের মতোই ভালোবেসে যাবে।তোমার ঐ মুখ থেকে আমার জন্য বেরিয়ে আসা একেকটা তাচ্ছিল্য পূর্ণ কথা আমার ভালোবাসা কমিয়ে দিতে পারবে না।আমি তোমারই বউ।বারবার বলবো আমি আবরাহার আহনাভের বউ।”

আহনাভ চোখ বন্ধ করে শ্বাস নেয়,তার দম বন্ধ হয়ে আসছে।লায়ানার সামনে দাড়িয়ে থাকা তার পক্ষে সম্ভব না।

লায়ানা পুনরায় বলা শুরু করে,”এখন আসল কথায় আসা যাক।বিয়ের জন্য তোমাকে রাজি করতে গিয়ে আর হলো উপরে সকলে থাকায় কথাটি বলতে পারি নি।তুমি সত্যি টা জানলে কখনোই আর আমাকে ভুল বুঝবে না আহনাভ।আসলে”আহনাভ লায়ানার কোনো কথা না শুনেই বেরিয়ে যায় রেস্টুরেন্ট থেকে।

লায়ানা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে পিছু ডাকতে গিয়েও আর ডাকল না।লায়ানা আহনাভের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থেকে বলে,”আমার এই জীবনে স্বাগতম জায়ান আবরাহার আহনাভ।জীবনটা অন্ধকারে ঢাকা হলেও আমি অন্ধকার না আমি অন্ধকারকে ধ্বং’স’কা’রি’নী।একবার দাড়িয়ে গিয়ে আমার কথা গুলো শুনে গেলে কি হতো?যেই মুহুর্তে সত্যি জানবে সেই মুহূর্তটি যেনো খুব বেশি দেরি না হয়ে যায়।আমি যেই জগতের সাথে জড়িয়েছি বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা খুবই কম।” লায়ানা পুনরায় থেমে গিয়ে চাপা নিশ্বাস ফেলে বলে,”আমার পিছনে অনেক হিং’স্র প’শু’র মত মানুষ লেগে আছে আহনাভ,ওরা আমাকে এই পৃথিবী থেকে স’রি’য়ে ফে’লা’র জন্য খুঁজছে।ওরা জেনে ফেলেছে সব আমি কে।মুগ্ধতা আমাকে আর কত দিন ওদের থেকে বাঁচিয়ে রাখবে,আমি বা কত দিন পারবো নিজেকে রক্ষা করে লড়ে যেতে।জানিনা কত দিন পারবো।আমি যদি আর কিছুক্ষন পরও ম’রে যাই আমার আফসোস থাকবে না,আমি খুশি খুশি বলতে পারবো আমি আমার ভালোবাসার মানুষ আমার আহনাভের বউ হয়েই ম’র’লা’ম।কিন্তু তোমার মুখ থেকে বউ কথাটি না শুনেই যদি ম’রে যাই তাহলে তো আমার আত্মাও শান্তি পাবে না আহনাভ।”

#copyrightalert
#চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here