ডুবেছি_আমি_তোমাতে #Aiza_islam_Hayati #পর্ব_২৬

0
196

#ডুবেছি_আমি_তোমাতে
#Aiza_islam_Hayati
#পর্ব_২৬
রুমের চারিপাশে ভাঙ্গা জিনিস পত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।আলো জ্বলছে তো পুনরায় বন্ধ হচ্ছে।বিছনায় ঠেস দিয়ে ফ্লোরে বসে আছে আহনাভ তার এলোমেলো চুল,চোখের কোণে বিন্দু পানির দেখা মিলছে।

আহনাভ চুল খামচে পুনরায় চেঁচিয়ে বলে উঠে,”আহ হায়া কেন তুমি ওই লোকটিকে গু’লি করলে।তুমি ওই লোকটিকে গু’লি না করলে আমি তোমাকে কিছু বলতাম না।কেনো মা’র’লে?তুমি একটা খু’নি!কেনো আমার মন কে বুঝাতে পারছি না তুমি খু’নি।তুমি আমার চোখের সামনে লোকটিকে গু’লি করে মে’রে’ছ”

..
হোটেল থেকে বেরিয়ে সবাই আহিরের গাড়িতে উঠে বসলে আহির গাড়ি ছেড়ে দিয়েছিল।আহিরের গাড়ির পিছন পিছন আহনাভ গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিল,মাঝের দিকে আহনাভের গাড়ি পিছনে পড়ে যায়।হঠাৎ আহির রাস্তার বাম বাক নিয়ে চলে গেলে আহনাভ খেয়াল করতে পারে না,আহনাভের গাড়ির সামনে একটি ট্রাক চলে আসায়।

আহনাভ রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে আহিরকে ফোন করার জন্য মোবাইল বের করতেই দেখতে পায় নেটওয়ার্ক নেই।আহনাভ কিছুক্ষন ভেবে রাস্তার ডান বাক ধরে চলে যায়।ডান বাক ধরে আরো কিছুটা দূরে যেতেই আহনাভ বুঝতে পারে সে ভুল রাস্তায় যাচ্ছে কারণ এই রাস্তাটি ধরে কোনো রিসোর্টে যাওয়া সম্ভব নয় পুরোই জঙ্গলের পাশ ঘেঁষে যাওয়া একটি রাস্তা।

আহনাভ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে গাড়ি ঘুড়িয়ে নিবে তখনই নজরে পড়েছিল দৌড়ে আশা লোকটির দিকে,তারপর আরো ভালো করে তাকাতেই আহনাভ দেখতে পেয়েছিল লায়ানাকে।

লায়ানা যখন লোকটির পায়ে গু’লি করে আহনাভ গাড়ির স্টেরিং শক্ত করে চেপে ধরে নিজের চোখকে তখন আহনাভ বিশ্বাস করতে চাইছিল না।লায়ানা ব’ন্দু’ক কোমড়ে গুজে পাশ থেকে বাঁশ নিয়ে লোকটিকে এ’লো’পা’থা’ড়ি মারার সময় আহনাভের শরীর ছেড়ে দেয় ধীর গতিতে বেরিয়ে আসে গাড়ি থেকে লায়ানা ব’ন্দু’ক পুনরায় তা’ক করলে আহনাভ ছুটে গিয়ে মাঝে দাড়িয়ে পড়ে।
..

আহনাভের ফোন বেজে উঠে।আহনাভ ঘাড় ঘুরিয়ে বিছনার মধ্যে পড়ে থাকা ফোনটি হাতে নিয়ে রিসিভ করে নেয়।কানে ধরতেই ওই পাশ থেকে আহির বলে উঠে,”আহনাভ কোথায় তুই?”

“আমি রাস্তা গুলিয়ে ফেলেছিলাম তাই হোটেলে ব্যাক করেছি।”

“ঠিক আছে আমরা আর আধ ঘণ্টা পর ফিরে আসছি।তোদের জন্য খাবার নিয়ে আসবো সাথে করে।”বলেই ঐপাশ থেকে ফোন কেটে দেয় আহির।

আহনাভের রুমের দরজায় বারি পড়লে আহনাভ এক রাশ বিরক্তি নিয়ে ফোন বিছানায় ছুড়ে মারে অতঃপর উঠে গিয়ে দরজা খুলে দেয়।হোটেলের ম্যানেজার দাড়িয়ে।

হোটেলের ম্যানেজার আমতা আমতা করে বলে,” স্যার ভাঙচুরের আওয়াজ আসছিল এই রুমটি থেকে।”

আহনাভ ঘাড় কাত করে রুমটির নাজেহাল অবস্থা দেখে, পকেট থেকে ওয়ালেট বের করে নেয়।ওয়ালেট থেকে টাকা বের করে ম্যানেজার এর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,” আশা করি এই টাকায় যা যা ভেঙেছে তা রিপেয়ার হয়েও টাকা অবশিষ্ট থাকবে।আর একটাও কথা বলবেন না এই বিষয়ে প্রয়োজনে আরো কিছু টাকা দিতে পারি।”বলেই আহনাভ মানি ব্যাগ থেকে আরো কিছু টাকা বের করে ম্যানেজারের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,”আঙ্কেল এইবার আসুন আমি বিশ্রাম নিবো।”

“ওকে স্যার।আপনি বিশ্রাম করুন কেউ ডিস্টার্ব করবে না আপনাকে।”বলেই চলে যায় ম্যানেজার।

আহনাভ দরজা আটকাতে নিবে ওই মুহূর্তে লায়ানা হুড়মুড়িয়ে রুমে ঢুকে দরজা আটকে দেয়।আহনাভ দাতে দাঁত পিষে বলে উঠে,”গেট লস্ট।”

“দেখো আহনাভ আমাকে বলতে দাও।”

আহনাভ দরজা খুলে লায়ানার হাত ধরে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দেয়।তর্জনী তুলে আহনাভ বলে উঠে,”আমি ওয়ার্ন করছি আমার থেকে দূরে থাকবে নাহলে আমি উল্টো পাল্টা কিছু করে ফেলবো।চোখের সামনে থেকে সরে যাও।”

লায়ানা পাথরের ন্যায় দাড়িয়ে থেকে নিজের রুমের দিকে চলে যায়।মুগ্ধতা হোটেলের সামনে এসে গাড়ি থামাতেই লায়ানা এইভাবে ছুটে আসে আহনাভের কাছে।মুগ্ধতা গাড়ি পার্ক করে রুমে এসে দেখে লায়ানা এক দৃষ্টিতে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে বসে আছে।

মুগ্ধতা এগিয়ে গিয়ে বলে,”এইভাবে ভেঙ্গে পড়বি তুই?”

লায়ানা মুগ্ধতার কোমড় জড়িয়ে কেঁদে ফেলে।কাঁদতে কাঁদতে বলে,” আমার আহনাভের এমন অভিমান দূরে ঠেলে দেয়া সহ্য হচ্ছে না।আমি পারছি না।আমার কোনো কথা শুনছে ওই ব’জ্জা’ত আহনাভ।একটু শুনলে কী হয় ওর কান পচে যাবে নাকি।ব’জ্জা’ত ওর বউ ওকে শান্তি দিবে না অভিশাপ দিলাম,ওর চুল একটাও রাখবে না টেনে ছিঁড়ে ফেলবে।”

“আচ্ছা বিয়ের ইচ্ছে মত চুল ছিঁড়িস আহনাভের।এখন বোন আমার কান্না বন্ধ কর।যেভাবেই হোক আহনাভ কে বোঝানোর চেষ্টা কর।এখন আমিও তোহ আর আহির কে বলতে পারব না,আহনাভ কে বোঝানোর কথা বেপারটাই এমন হয়ে গিয়েছে।তুই ওকে কিডন্যাপ করে হোক বা হাত পা বেধে মুখ বন্ধ করে যেভাবেই হোক ওকে তোর কথা গুলো বুঝা।”

লায়ানা থেমে গিয়ে মুগ্ধতার মুখ পানে তাকিয়ে বলে,”আচ্ছা বনু ওকে যদি কিডন্যাপ করে বিয়ে করে ফেলি কেমন হয় তাহলে আমাকে আর দূরে ঠেলে দিতে পারবে না।”

“জোস আইডিয়া তুই বললে আমি মা,বাবা,বড় মা,বড় বাবার সাথে কথা বলতে পারি।”

লায়ানা ঠোঁটের কোণে হাঁসি ফুটিয়ে মুগ্ধতাকে আরো ভালো করে জড়িয়ে ধরে বলে,”আহ তুসি গ্রেট হো বনু।”

…..

তিনদিন হয়ে গেলো রাঙামাটি থেকে ফিরে এসেছে সকলে।ফিরে এসেই লায়ানা অনেক বার চেষ্টা করেছে আহনাভের সাথে কথা বলার কিন্তু আহনাভ কোনো ভাবেই লায়ানার কথা শুনতে চাইছে না।

রাঙামাটি থেকে আসার দিন লায়ানা আহনাভের গাড়িতে ওর পাশের সিটে বসতে চাইলে, আহনাভ আলিযাকে ডেকে নিজের পাশের সিটে বসিয়ে দেয়।
আহনাভের এমন ব্যাবহার দেখে লায়ানার রাগ তুঙ্গে চড়ে গিয়েছিল।সেও রেগে গিয়ে আহিরের গাড়িতে মুগ্ধতার পাশেই বসে আসে ঢাকায়।

লায়ানা এখন নিজেকে কাজের মধ্যে ব্যাস্ত রাখতে চাইছে কিন্তু চেয়েও যেনো পেড়ে উঠতে পারছে না বারংবার আহনাভের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।আর এইদিকে আহনাভ রাঙামাটি থেকে আসার পর আবার আগের মতো গম্ভির হয়ে গিয়েছে ।আহির অনেকবার জানার চেষ্টা করেছে আহনাভের এমন হুট করে আগের মত হয়ে যাওয়ার কারণ কী,কিন্তু কিছুই বলতে চায়নি আহনাভ।

.
মুগ্ধতার গাড়ি এসে থামে পিএস ইন্ডাস্ট্রির সামনে।মুগ্ধতা গাড়ি পার্ক করে ভিতরে চলে যায়।

লায়ানা আহনাভকে কিডন্যাপ করে বিয়ে করবে,আহির কিভাবে রিয়েক্ট করবে এইটি শোনার পর।মুগ্ধতা ভাবতে ভাবতে চলে যায় রিসেপশনে।রিসেপশনিস্ট মুগ্ধতাকে দেখেই দাঁড়িয়ে সালাম দিয়ে বলে, “ম্যাম স্যার নিজের ক্যাবিনেই আছে আপনি যেতে পারেন”।
.
মুগ্ধতা লিফ্ট করে সোজা ১৬ তলায় এসে পৌঁছায়।বড় বড় পায়ে আহিরের কেবিনের সামনে এসে দরজায় নক করেই ভিতরে ঢুকে যায়।আহির অন্য পাশে ফিরে হাতের ফাইলটি পর্যবেক্ষণ করছিল,দরজায় বারির আওয়াজ শুনতেই ফাইলের দিকে তাকিয়ে বলে,”কে?কী বলবেন বলুন।”

“তোর বউ।বলব তোহ অনেক কিছুই।”

আহির সাথে সাথে পিছন ফিরে তাকায়। আহিরের চোখে মুখে ফুটে আছে এক রাশ বিস্ময়।

আহির অবাক স্বরে বলে,” আরেহ আমার মিসেস যে।তুমি হঠাৎ অফিসে?”

“হুম আসলাম।এখন কী দাঁড়িয়েই থাকব নাকি বসতেও পারি?”

আহির চেয়ার টেনে দেয় মুগ্ধতার জন্য,মুগ্ধতা এসে বসলে আহির মুগ্ধতার সামনে আরেকটি চেয়ার টেনে নিজেও বসে পরে।

“তো মিসেস কি ভেবে এই একমাত্র জামাইর কথা মনে পড়লো?”

” ভাই আপনার কথা না আসলে আমি একটা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।তো ভাবলাম আগে আপনাকে সেটা জানাই।”

“কি এমন বিষয় নিয়ে ভেবেছো যে জামাই কে আগেই জানাতে চলে এলে?”

” বিষয়টা হলো কাল আমি মা,বাবা,বড় মা,বড় বাবার সাথে কথা বলতে যাবো।কথাটা বলব হলো ভাইয়া আর লায়ানার বিষয়ে।তাই আপনাকে আগেই বলে রাখাটা ভালো মনে করলাম।

“হুম হুম বলো শুনছি। তুমি সারাদিন বললেও তোমার কথাই শুনতে মন চাইবে।”

“হুম জানি মন কত চাইবে বউয়ের কথা শুনতে,মানুষ প্রথম দিনই হয়রান হয়ে যায়।আচ্ছা যা বলতে এসেছি লায়ানা আহনাভ কে কিডন্যাপ করে বিয়ে করবে সেই বিষয়েই কাল কথা বলতে যাবো।আপনি আমার সাপোর্ট করবেন।”,এক নিশ্বাসে বলে উঠলো মুগ্ধতা।

আহির লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,”কিহহহ লায়ানা কিডন্যাপ করবে তাও আহনাভ কে তাও বিয়ে করার জন্য?”

মুগ্ধতা দাঁড়িয়ে আহিরের কাছে গিয়ে ওর বুকে আঙ্গুল দিয়ে গুতো দিয়ে বলে,” তো কি হয়েছে?আমার বোন চেয়েছে বিয়ে করতে ও করবে।আমরা তো আরো ভদ্র যে বড়দের অনুমতি নিয়ে বিয়ে করব নাহয় অভদ্র হলে কবে ছেলে পছন্দ হলে তুলে বিয়ে করে ফেলতাম।”

আহির মৃদু কাছে এসে বলে,”আচ্ছা তোমার কি আমাকে আগে থেকেই পছন্দ টছন্দ ছিল না তো? নাহলে আমাকেও এভাবে তুলে বিয়ে করতে আহা কী মজা হতো বউ। আমার বউ আমাকে তুলে বিয়ে করত বাবাগো এক্কেবারে গুন্ডি স্টাইল।”

“হুম এই গুন্ডি এখন আপনার বউ।এখন যেটা বলছিলাম বারবার কথার মাঝে অন্য কথা ঢুকিয়ে কথাই পালটে দেয়।অসভ্য লোক।আপনাকে যা বলেছি বুঝেছেন?”

“মেরি বিবিজান কি হুকুম সারাখো পে। কিন্তু মনে একটা প্রশ্ন জাগলো করি?”

“বলুন রে ভাই।”

আহির বিরক্তি নিয়ে বলে উঠে,”উফফ তোমার এই ভাইইইইইই। কেন যে আমার এত শালা হয়েছে ওদের ভাই বলতে বলতে আমাকেও ভাই বলেরে এই মেয়ে। কোথায় যে যাবো একে নিয়ে আল্লাহ!”

“চাইলে আপনি একা পুশকুনিতে লাফ দিতে পারেন।”

“না থাক ধন্যবাদ,আইডিয়া দেওয়ার জন্য।যেটা বলছিলাম আহনাভকে কে কিডন্যাপ করবে?”

“আপনি করবেন।”

আহির চেঁচিয়ে বলে উঠে,”এহহহহ আমিই কেন?”

“কারন প্রশ্নটা আপনি করেছেন।উত্তর আপনাকেই বানাবো।”,বলেই হাসে মুগ্ধতা।

“হুম এখন আমাকে উল্লু বানিয়ে দাত বের করা হচ্ছে।”

“তো কি করব আপনি ছাড়া কে করবে।ভাইয়া কি কোনো কিডন্যাপারের গাড়িতে সেধে গিয়ে বলবে যে আয় ভাই আমাকে কিডন্যাপ কর।বা সেই লোকেরাও তো ভাইয়ার সাথে পেরে উঠবে না।ভাইয়া জীম-টীম করে কম বডি বানিয়েছে।আপনার মতো নাকি হুলু বানর যে বলবে আয় ভাই আমাকে তুলে নিয়ে বিয়ে দিয়ে দে। তাই কিডন্যাপটা বুঝে শুনে আপনারই করতে হবে পরে আমি প্ল্যান বলে দিব।”

“বউ খালি আমাকে সুযোগ পেলেই অপমান করে।এই আমি কি কম বডি বানিয়েছি হ্যা?আমার ভবিষ্যৎ এর বউ কে দেখাব বলে কি সুন্দর বডি বানালাম আর আমার বউ আমাকে নাকি বলে হুলু বানর।এই তোমাকে আমি আমার শার্ট খুলে দেখাব আমার বডি?”

বলেই শার্ট এর বোতাম খুলতে নেয়। মুগ্ধতা আহির এর হাত ধরে থামিয়ে বলে,”ভাই তুই থাম এত্ত টারজেনগিরি করতে তোকে কেউ বলেনি।”

“আরেহ তোমার কাছে টারজেনগিরি করবো না তো কার কাছে করবো?”

“হুম বুঝেছি শরম লজ্জা নেই এখন অফিসে শার্ট খুলে দেখাবে।”

আহির মুগ্ধতার কোমর জড়িয়ে এক টানে নিজের কাছে এনে,কানে ফিসফিস করে বলে,” তুমি চাইলে আমি তোমাকে বাড়িতে নিয়ে প্রাইভেটলি নিজের শার্ট খুলে বডি দেখাতে পারি মুগ্ধ রানি।কি বলো?”
বলেই মুগ্ধতার দিকে তাকিয়ে চোখ মারে।

মুগ্ধতা জোরে ধাক্কা দিয়ে আহির কে সরিয়ে দেয়।আচমকা এহেন ধাক্কায় আহির ধপ করে চেয়ারে বসে পরে।

“নির্লজ্জ লোক।যেটা বলেছি শুনেছেন কাল আমি আপনাদের বাড়িতে যাচ্ছি।আমাকে সাপোর্ট করবেন বুঝেছেন? কাল বিকেল পাচটায় যাবো আপনার বাড়িতে তার আগে যেন আপনি বাসায় চলে যান।আর রইলো আহনাভ ভাইয়া,ভাইয়া যেন অফিসেই থাকে সেই সময়।উনি যেন বাড়ি না যায় সেই ব্যবস্থাও আপনি করবেন।আমি যাই এইবার।

বলেই মুগ্ধতা বড় বড় পায়ে বেরিয়ে যায়।মুগ্ধতা আহিরের কেবিনে আরো কিছুক্ষন থাকলে আহিরের এমন কর্মকাণ্ডে মুগ্ধতা দুর্বল হয়ে পড়বে।

.
মুগ্ধতা গাড়িতে বসে ফোন বের করে লায়ানা কে ফোন করে।শেষ রিং বেজে বন্ধ হওয়ার আগেই লায়ানা ফোন রিসিভ করে।

মুগ্ধতা জোরে বলে উঠে,”বইনায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া।”

লায়ানা কানের কাছ থেকে ছিটকে সরিয়ে নেয় ফোন।মুগ্ধতা থেমে গেলে লায়ানা বলে,” বল বল ”

” ফুটবল।”

“ওহ কি বলল?”

“পিএস ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলাম আহিরের সাথে কাল ওদের বাড়িতে যাওয়ার বিষয় নিয়ে কথা বলতে।বলেছি আমাকে সাপোর্ট করতে কাল।তুই বেশি ভাবিস না।আহান কে দিয়ে আমি রেস্টুরেন্ট সাজিয়ে ফেলব আর কিছুদিন পর তোর বিয়ে গিয়ে পার্লার থেকে স্পা-টিস্পা ফেসিয়াল করেনে।বসে বসে চিল মার।

লায়ানা বলে উঠে,” আগে ওরে বিয়ে করেনি তারপর চিল কি চিল পাখির উপরে বসে উড়ব প্রয়োজনে।”

” আচ্ছা আমি চিল পাখি ধরে খাচায় ভরার ব্যবস্থা করছি। বিয়ের পরের দিন তোর সেই চিলের উপরে বসে উড়তে হবে।”

“তুই সব কিছু এত বেশি সিরিয়াস নিস কেন বল তো?

“এই প্রশ্নটা তুই আমাকে জীবনে কত্ত বার করেছিস বল তো?

“উফফ আচ্ছা ঠিক আছে রাখছি।পরে বাসায় এসে সব শুনব।”,বলেই লায়ানা ফোন রেখে দেয়।মুগ্ধতা ফোন রেখে গাড়ি স্টার্ট দেয় বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে। লায়ানা সারাদিন কাজ করে রাত একটা দুইটা বাজিয়ে বাড়ি ফিরবে,লায়ানা নিজেকে কাজের মাঝেই ডুবিয়ে রাখতে চায়।

.
ঘড়ির কাঁটা এখন বারো টা ছুঁইছুঁই।পুরো নেক্সট ইন ইন্ডাস্ট্রি ফাঁকা, এম্প্লয়রা সন্ধ্যা সাতটায় চলে গিয়েছে,পুরো বিল্ডিংয়ের মধ্যে শুধু দ্বিতীয় তলায় আলো জ্বলছে।লায়ানা কেবিনেই বসে আছে,এক হাতে ট্যাব আরেক হাতে ফাইল।

রাফি দরজা ঠেলে কেবিনে প্রবেশ করে এক হতে কোল্ড ড্রিঙ্কস আরেক হতে কফি নিয়ে।রাফি এগিয়ে এসে কোল্ড ড্রিঙ্কস লায়ানার সামনে এগিয়ে দিয়ে বলে,”ম্যাম আজ অন্তত এখন বাড়ি চলুন।”

লায়ানা ট্যাব রেখে কোল্ড ড্রিংকস খেতে খেতে বলে,” রাফি টেবিলে আরো পাঁচটি ফাইল বাকি,দেখো সব ঠিক আছে কিনা।”

রাফি মুখটা কাচুমাচু করে বলে,”ম্যাম প্লিজ আপনার মুখটা এমন গম্ভীর করে রাখবেন না ভালো লাগে না।”

“রাফি কাজ করো বেশি বকর বকর করলে তোমার মাথা ফাটিয়ে দিবো।”

“ম্যাম মাথা ফাটালে ফাটান তাও এমন মন খারাপ করে থাকবেন না।আচ্ছা পৃথিবীতে ছেলের অভাব পড়েছিল যে মিস্টার আহনাভ কেই পছন্দ করলেন।’

লায়ানা আড় চোখে তাকালো, রাফি বলে উঠে,”এমন করে তাকালে আমি চুপ যাবো না হাহ।শুনুন ম্যাম আহান আসছে আপনাকে বাড়ি নিয়ে যেতে।”

লায়ানা বিরক্তিতে বলে উঠে,”বডি গার্ড তোর মত রাখলে জীবন তেনা তেনা হইয়া যাবে।ভালো করে ডিপ্রেশনেও যেতে দিবি না তোরা।”

#copyrightalert
#চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here