পারবোনা আমি ছাড়তে তোকে ❤❤ #লেখিকাঃ লামিয়া ইসলাম তন্নি ❤ #পর্বঃ ২১ ❤ .

0
422

#পারবোনা আমি ছাড়তে তোকে ❤❤
#লেখিকাঃ লামিয়া ইসলাম তন্নি ❤
#পর্বঃ ২১ ❤
.
.
🍁
.
চোখ খুলে বোঝার চেষ্টা করছি আমি ঠিক কোথায় আছি। কিছুক্ষণের মাঝে সফলও হলাম। ডানপাশে সূর্য হাত দিযে মাথা চেপে ধরে বসে আছেন। আমাকে নড়েচড়ে উঠতে দেখে বললেন…..
.
—- এখন কেমন আছিস?
.
—- ভালো।
.
—- তুই জানিস না তোর মাথায় প্রেসার দেওয়া নিষেধ। সাথে চেঁচানো!
.
আমি কিছুই বলছিনা। শুধু চুপচাপ শুনছি। কারণ কিচ্ছুই বলার নেই যে আমার। উনার কথাটা সত্যি। এক্সিডেন্টের পর থেকে আমার মাথায় অল্প আঘাতেই আমি সেন্সলেস হয়ে যাই। তাই ডক্টর বলেছেন যাতে আমি মাথায় কোনো আঘাত নাই পাই। কোনো প্রেসার ক্রিয়েট না করি। উনার কথায় ভাবনার ছেঁদ হলো আমার……
.
—- চল… খেতে হবে। খেযে মেডিসিন নিতে হবে।
.
—- আই এম সরি!
.
—- হুয়াই?
.
—- আমি আপনাকে হার্ট করতে চাই নি।
.
উনি কিছু বললেন না। চুপচাপ নিজে নেমে গেলেন। আমার খুব রাগ লাগছে। কিন্তু এভাবে প্রেসার দেওয়া তো যাবেনা। অনেক চেষ্টা করেও রাগটা কন্ট্রোল করতে পারছিনা না। আচ্ছা! আমার এতো রাগ কেন? কেন এতো অল্পতেই রেগে যাই আমি? নিজের রাগটাই নিজে কন্ট্রোল করতে পারিনা। তাহলে উনারটা কি করে করব?
.
🍁
.
বিকেল ৪ টা বেজে ২০ মিনিট। আমি নীল শাড়ি,নীল চুড়ি, সাদা পাথরের কানের দুল, ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপ্সটিক, চোখে গাঢ় কাজল দিয়ে লম্বা কোমড় সমান চুলগুলো পিঠ জুড়ে বিছিয়ে দিয়ে কানের কাছে ছোট একটা লাল গোলাপ লাগিয়ে তৈরী হয়ে নিলাম। আজ রিয়া আপুকে ছেলে পক্ষ দেখতে আসবে। আম্মুরা সবাই কালকেই চলে গিয়েছে। সূর্যর অফিস ছিল প্রথমে উনাকে বলেছিল অফিস থেকেই চলে যেতে। কিন্তু আমি আম্মুদের সাথে না যাওয়ায় সূর্যকে বলা হয় বাসায় এসে আমাকে নিয়ে রাতেই মামুদের বাসায় পৌঁছে যেতে। কিন্তু রাতে আমার জন্যই যাওয়া হয়নি। সকালে এইসব কাহিনীর জন্য যাওয়া হয়নি। সকাল থেকে মামু প্রায় ২০ বারের উপরে ফোন করেছেন। বড় আম্মুরা ২ ভাই-বোন। মামু ছোট বড় আম্মু বড়। আর সূর্য ভাইয়া শুধু আমাদের না তার নানু বাড়িতেও সেই সবার বড়। আর মামুর সাফ কথা পরিবার বড় ছেলে ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবেনা। সূর্য ভাইয়া যদিও এসব পছন্দ করেনা। বাট মামুর কথা রাখতেই একপ্রকার জোড় করেই যেতে রাজি হতে হয। সূর্য একটা নীল পাঞ্জাবি, কালো জিন্স, বা হাতে ব্রান্ডের ঘড়ি, ছোট ছোট সিল্কি চুলগুলো কপালে এসে পড়েছে। ফর্সা শরীরে নীল রঙটা মারাত্মক লাগছে। এমুহূর্তে যেকোনো মেয়ে উনাকে দেখলে ক্রাশ খাবে। ইশ! উনি এতো সুন্দর কেন? এখন তো যাওয়ার সময় সবাই উনাকে দেখবে আর চোখ দিয়ে গিলে খাবে। আম্মু…..। উনি হয়তো কিছু আঁচ করতে পেরেছে। তাই আমার দিকে কিছুটা এগিয়ে এসে বললেন…….
.
—- কি হয়েছে পিচ্চিটার? মন খারাপ? আজকে তো পিচ্চিটাকে আর পিচ্চি লাগছেনা৷ অনেক বড় বড় লাগছে। তা ম্যাডাম কাহিনী কি বলুন তো! শাড়িটা কি আমাকে দেখাতে পড়েছেন? নাকি অন্য কাউকে?
.
আমি কথার কোনো জবাব দিলাম না উল্টো বললাম…….
.
—- আমি যাবো না।
.
—- কেন? কি হয়েছে ?
.
—- আমি যাবোনা মানে যাবো না।
.
—- তুই যাবি।
.
—- যাবো না আমি বললাম তো! আমাকে একদম জোড় করবেন না।
.
—- কারণটা তো বলবি?

—- কোনো কারণ নেই। এমনি ভালো লাগছে না।
.
—- তাহলে সেজেছিস কেন?
.
—- এমনি! আমি ছাঁদে যাবো। একটু পর এসে ঘুমোবো। খুব মাথা ব্যথা। আপনি চলে যান।
.
উনি দু’হাতে মাথা চেপে ধরে বসে পড়লেন। আমি দরজার দিকে পা বাড়াতেই পেছন থেকে আমার বা হাতটা ধরে হেঁচকা টানে আমাকে কোলে তুলে নেন। আমি নামবার জন্য চেষ্টা করেও পারছিনা। আল্লাহই ভালো জানে খাটাশটা খায় কি! কি শক্তি রে বাবা!
.
—- এই এই আমাকে ছাড়েন। আমি পড়ে যাবো ছাড়েন আমাকে।
.
—- একদম লাফাবি না আলো চুপচাপ যা বসে থাক। নয়তো ফেলে দিব!
.
—- দেখুন আমি যাবো না।
.
—- দেব এক ঠাটিয়ে বেয়াদব৷ আমরা কি হেঁটে যাব নাকি? আমাদের গাড়ি আছে না? তাহলে মেয়েরা আমাকে দেখবে কি করে?
.
—- আমি যাবোনা। রাস্তায় না হয় কোনো মেয়ে আপনাকে দেখবে না। কিন্তু ও বাড়িতে তো দেখবে!
.
—- দেব এক চড়? দেখলে দেখুক তাতে আমার কি? আমি তো আর দেখছি না!
.
—- না ওরা আমার বরকে কেন দেখবে ?
.
—- আল্লাহ! কেয়ামত দাও আল্লাহ! এতো বড় মেয়ে কথায কথায় কান্না করে? আমারে বাঁচাও এর হাত থেকে।
.
—- আমি যাবো না মানে যাবো না ।
.
—- আলো এবার বাড়াবাড়ি হচ্ছে বলেদিলাম!
.
—- যাবো এক শর্তে! রাজি?
.
—- কি ?
.
—- এভাবে না ভালো করে বলুন ।
.
—- আগে বল!
.
—- আপনাকে ড্রেস চেঞ্জ করতে হবে। যদি রাজি থাকেন তাহলেই যাবো। নয়তো না।
.
—- অসম্ভব!
.
—- তাহলে আমাকে নামান আমি যাবো না।
.
—- আলো !
.
—- আমি বলে দিয়েছি। বাকীটা আপনার ইচ্ছা!
.
—- ওকে আমি রাজি৷ বাট আই হেব আ কন্ডিশন!
.
—- কি ?
.
—- তুইও শাড়ি পাল্টে ড্রেস পড়বি।
.
—- ইম্পসিবল!
.
—- তাহলে আমিও করব না ।
.
—- এটা ঠিক না ।
.
—- আমার কথা রাখতে তোর শর্ত আমি রাজি হয়েছি। তবে আমার শর্তে তুই রাজি থাকলেই আমি তোর শর্ত পূর্ণ করব।
.
এই খাটাশের এতো বুদ্ধি কই থেকা আসে ? এখন হয়তো যেতে হবে নয়তো ড্রেস চেঞ্জ করতে হবে । আমি কি করব ? খাটাশ তোরে তো আমি উগান্ডা পাঠামু। তোর বউ তোরে অত্যাচার কইরা মারব। বউর জ্বালায় বাঁচতে পারবি না শান্তিতে তুই । দেখেনিস হুহ!
.
অবশেষে জেতেই রাজি হলাম। কি আর করার শাড়ি চেঞ্জ করা অসম্ভব। অনেকদিন পরে শাড়ি পড়ছি। চেঞ্জ করমু না ।
.
___________________
.
গাড়ির সিটে গা এলিয়ে বসে আছি। বারবার করে কানে বাজছে উনার হার্ট দ্রুক বিট করার সেই আওয়াজটা। ইশ! কতোটা শান্তি! উনার এতো কাছে কখনো আসব ভাবতেই পারিনি। সেদিন ধাক্কা লেগে দূর্ঘটনা বশত উনার উপরে পড়ি। কিন্তু আজ উনি নিজেই আমাকে কোলে নিলেন? কথাগুলো ভাবতেই ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠল। একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে চোখ দুটি খুললাম৷ উনি আপন মনে গাড়ি ড্রাইভ করে চলেছেন। আর আমি? এক দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকিয়ে আছি। ইশ! কি সুন্দর মাযা! কি মাসুম লাগছে উনাকে। ইশ! উনি এমন কেন? সব ছেলেরা তো এতো কিউট হয় না। ইশ! উনি যদি আমাকে বলতো, ” আলো! আমি তোকে ভালোবাসি। হ্যাঁ,, আমি শুধু আর শুধুই তোকে ভালোবাসি!”।কথাগুলো ভাবছিলাম।
.
হঠাৎ উনার রাম ধমকে আমি চমকে উঠি।
.
—- কি সমস্যা কি তোর? এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন ? চোখ দিয়ে গিলে খাবি মনে হচ্ছে!
.
—- আপনি এতো সুন্দর কেন?
.
উনি হয়তো আমার কথার আগা মাথা কিছুই বুঝতে পারেনি। তাই অবাক হযে বলল…
.
—- মানে?
.
—- আপনি এতো কিউট কেন?
.
এবার উন থতমত খেয়ে গেলেন। আমতা আমতা করে বললেন…..
.
—- কককি বলছিস কি? মাথা ঠিক আছে?
.
—- আমার মাথা একদম ঠিক আছে। ইশ! এত্তো কিউট হতে নেই ছেলেদের। আইসক্রিম ভেবে আবার খেয়ে ফেলব তো!
.
কথাটা বলে উনার গালের দিকে এগিয়ে যেতেই উনি আরেক দফা ধমকে উঠলেন….
.
—- চুপ বেয়াদব! কি করতে যাচ্ছিলি?
.
—- কেন? আপনাকে ছোট্র একটা কিসি দিব! আপনি কত্তো কিউট ।
.
—- ঠাটিয়ে দেব এক বেয়াদব মেয়ে । লজ্জা শরমের মাথা খেয়েছিস? রাস্তার ভিতর এসব কি?
.
—- রাস্তা কোথায় ? আমরা তো গাড়িতে। আর আমার বরকে আমি কিস করি জড়িয়ে ধর নয়তো তার সাথে মাখামাখি করি কার কি?
.
—- চুপ কর ডাফার! দিন দিন এসব কি রকম ওয়ার্ড শিখছিস? অশ্লীল ভাষা! দেব এক ঠাটিয়ে।
.
—- আচ্ছা আমি আপনাকে না মাহিদকে কিস করব। কালই ওকে ফোন করে দেখা করতে বলব। দেখা করলে জড়িয়ে ধরে জোড়ে একটা কিস…..
.
কথাটা শেষ করার আগেই উনি জোড়ে গাড়ি ব্রেক করে রাগি চোখে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলে উঠলেন…..
.
—- কি বললি?
.
—- কেন শোনেন নি ?
.
—- না আবার বল !
.
—- আমি কালই মাহিদকে……
.

এইটুকু বলতেই উনি আমার দিকে ………….

#চলবে……

[#বিঃদ্রঃ সরি গাইস! আমি সত্যিই খুব দুঃখীত গল্পটা দিতে লেট হয়েছে। আসলে আমি খুব অসুস্থ। আজ দু’দিন যাবৎ একটু বেশিই অসুস্থ। ঠিক করে বসতে পারছিনা। জ্বরে পুড়ে যাচ্ছি। সাথে প্রচন্ড মাথা ব্যথা। এইটুকু লিখতেই আমার ভীষণ কষ্ট হয়েছে। তবুও কি আর করার দিতে তো হবেই! রি-চেইক করতে পারিনি। ভুলক্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ ❤]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here