পারবোনা আমি ছাড়তে তোকে ❤❤ #লেখিকাঃ লামিয়া ইসলাম তন্নি ❤ #পর্বঃ ২২❤

0
418

#পারবোনা আমি ছাড়তে তোকে ❤❤
#লেখিকাঃ লামিয়া ইসলাম তন্নি ❤
#পর্বঃ ২২❤
.
.

এইটুকু বলতেই উনি আমার দিকে ঝুঁকে পড়লেন। আমি কিছু বলব তার আগেই আমার ঠোঁট জোড়া উনার দখলে চলে গেল। ঘটনায় আমি অবাকের শেষ পর্যায়। ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা কি হচ্ছে আমার সাথে। চোখ গুলো রসগোল্লার মতো গোল গোল করে উনার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি এমনটা করবেন আমি কখনো ভাবতেই পারিনি। আমি ঠিক বুঝতে পারছি না এই মুহূর্তে আমার কি রিয়েকশন দেয়া উচিত। হাসব না কাঁদব! বলতে গেলে আমার বোধ শক্তিটা কিছুক্ষণের জন্য ডেম হয়ে গেছে। আমি পাথর হয়ে গেছি! প্রায় ৫-৭ মিনিট পর উনি আমাকে ছেড়ে সোজা হযে বসলেন। উনি জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছেন। আমি এখনও আগের মতো পাথর হয়েই আছি। হঠাৎ করে কি যেন ভেবে বড় করে শ্বাস টেনে নিয়ে উনার দিকে ঘুরে বসলাম। উনি এখনও হাঁপাচ্ছেন। কিছুটা রাগ দেখিয়ে বললাম……
.
—- ওয়াক থু! আপনি এটা কি করলেন ?
.
—- কেন? দেখিসনি ?
.
—- আপনি এটা কেন করছেন ?
.
—- তোর না খুব শখ হচ্ছিল কিস করার?
.
—- হুম! তবে সেটা মাহিদকে।
.
—- বেয়াদব মেয়ে দেব এক ঠাটিয়ে । লজ্জা করে না বরকে রেখে পরপুরুষকে কিস করার কথা বলতে?
.
—- বর? কে বর? কার বর?
.
—- মানেহ?
.
—- মানে আমার বর কে ? আমার তো বিয়েই হয়নি বর আসবে কোথা থেকে ?
.
—- তোর বিয়ে হয়নি? তাহলে আমি কে?
.
—- কেন ভাইয়া !
.
—- চুপ বেয়াদব! দেব এক ঠাটিয়ে । বরকে আবার ভাই বলিস!
.
—- আমার কি দোষ আপনিই তো বলছেন আপনি আমার বর না । যাক ভালোই হইছে এখন থেকে মাহিদের সাথে ঘুরবো। সেদিন ডেটে যাওয়ার অফার করেছিল। ভাবছি কাল রাজি হে যাব ।
.
—- তোর ডেটে যাওয়া আমি বের করছি বাসায় চল শুধু !
.
—- মানে ? কেন কি হইছে?
.
উনি কোনো জবাব দিলেন না। আপন মনে গাড়ি স্টার্ট দিলেন। আমি অবাক হয়ে উনার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি এটা কি করলেন? আচ্ছা উনি কি রেগে আমাকে কিস করলেন নাকি অন্য কোনো কারণে? বাট যাই হোক আমার খুব খুশি খুশি লাগছে। খাটাশটাকে আজ আচ্ছা মতো শায়েস্তা করেছি। ইশ! ভাবতেই আমার হাসিতে পেট ফেটে যাচ্ছে। কি পরিমাণ রেগে গিয়েছিল উনি ! ওরে রে এতো খুশি খুশি লাগে ক্যারে? আল্লাহ আমারে বাঁচাও আমি খুশিতে পাগল হয়ে গেলাম। কিন্তু হঠাৎই মনের মাঝে এক অজানা ভয় উকি দিয়ে গেল। উনি কি বোঝাতে চাইলেন? বাসায় গেলে কি করবেন ? আল্লাহ আমার মতো নিষ্পাপ শিশুকে এই খাটাশ, জঙলি,বুইড়ার হাত থেকা বাঁচাইও প্লিজ! নয়তো আমার আজ রক্ষে নেই। ভাবতেই কান্না পাচ্ছে আমার !
.
সারা গাড়িতে দু’জনে কেউ কারো সাথে কথা বলিনি। আমি উনাকে বিরক্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। পুড়ো রাস্তা ড্যাব ড্যাব করে উনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। ২ বার চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়েছি। বাট নো রেসপন্স! উনি আপন মনে ড্রাইভ করে যাচ্ছেন। এমন হাবভাব করছে যেন সে এই দুনিয়ায় নাই। না তার পাশে কেউ আছে। এই মুহূর্তে ড্রাইভিং ছাড়া তার কোনো কাজই নাই। গাড়ি থেকে চোখ সড়ালেই যেন কেয়ামত সংঘঠিত হবে। তার এমন ভাব দেখে রাগে সারা শরীর জ্বলে গেল। ইচ্ছে করছে এক ধাক্কা দিয়ে খাটাশ বুইড়াটারে গাড়ি থেকে ফেলে দিই। যত্তসব আজাইরা পাবলিক! এদের মতো ঢংগী লোকের জন্য আমাদের মতো নিষ্পাপ মেয়েরা প্রতিনিয়তই বিরক্ত হচ্ছে। যা মর গিয়া। কে না করছে তোরে? আল্লাহ জানে কোন দুঃখে এই পাথরের লগে রাস্তায় বাহির হইছি। উফহ্ অসহ্য!
.
মামুদের বাড়িটা উত্তরা ১ নং সেক্টরের মধ্যে পরে। আর রাস্তায়ও প্রচুর জ্যাম ছিল যার কারণে আমাদের এখানে এসে পৌঁছাতে প্রায় ২:৩০/৩ ঘন্টা লেগে যায়।
সেখানে পৌছে খুব টায়ার্ড লাগছে। লাগবে নাই বা কেন? প্রায় ২ ঘন্টা জ্যামে থাকা কি ঘরের কথা? তাও এতোটা রাস্তা! বাড়িতে ঢুকে সবার সাথে কুশল বিনিময় করে নানু আপু,মামু, মামিকে সালাম করে রেস্ট নিতে রিয়ার দেখানো রুমে চলে যাই।
.
রিয়া মামুর ছোট মেযে। মামুর ২ ছেলে মেয়ে। বড় ভাই নাম রিয়াদ। মাস্টার্স লাস্ট টার্মের স্টুডেন্ট। সূর্যের ৩/৪ বছরের ছোট হবে। আর অন্যদিকে রিয়া ছোট। অনার্স শেষে মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছে। আজ ওকে দেখতে আসছে। রিয়া ফরহাদ নামের একটা ছেলেকে ভালোবাসে। ওরই ভার্সিটির টিচার। সেখানেই ওদের পরিচয়। রিয়া যখন অনার্সে ১ম বর্ষের ছাত্রী তখনই ফরহাদ এখানে প্রফেসর পদে নিযুক্ত হন। ৩বছরের রিলেশন ওদের। দু’জনের ফ্যামিলিই রাজি। তবে বিয়েটা তাড়াতাড়ি হওয়ার কারণ আছে। ফরহাদের দাদু খুব অসুস্থ তিনি চান নাতবউ দেখে যাবেন। তাই হুট করেই সব।
.
রুমে এসে দরজাটা লক করতে যাবো অমনি খাটাশটা এসে হাজির। খাটাশটাকে দেখেই আমার গাড়ির কথা মনে পড়ে গেলো। এখন তো আমার ভয়ে জান যায় যায় অবস্থা। ইশ! না জানি এখন আমার কি অবস্থা করবেন ! আল্লাহ আমর মতো নিষ্পাপ মাসুম বাচ্চাকে তুমি বাঁচাও। ভয়ে আমার হাত পা কাঁপছে। আমাকে কাঁপতে দেখে উনি বললেন……
.
—- কিরে কাঁপছিস কেন? এখনও তো কিছুই করলাম না এখনই কাঁপা-কাঁপি? তো যদি কিছু করি তখন কি করবি? (এগোতে এগোতে)
.
—- দদদেখুন! আমার দিকে এগোবেন না। ( তুতলে)
.
—- কেন? তোর না খব শখ কিস করার?
.
—- দেখুন প্লিজ! এমন করবেন না। সবাই কি না কি ভাববে!
.
—- ভাবুক আমার কি? আমি আমার বউর শখ মেটাচ্ছি ব্যস!
.
আমি পেঁছাতে পেছাঁতে আলমারির সাথে ধাক্কা খাই। এখন কি করব কই যাবো? উনি এখনও এগোচ্ছেন। উনার আর আমার মাঝে সর্বোচ্চ ৫ -৭ ইঞ্চি দূরত্ব হবে। উনি আস্তে আস্তে আমার দিকে এগোচ্ছেন। এক পর্যায় উনি আমার গাঢ় বরাবর যেতেই আমি চোখ বন্ধ করে ফেলি। কারো ফিসফিস কথার শব্দে চোখ খুলে তাকাই। একি উনি আমার কানে ফিসফিস করে কি যেন বলছেন। অন্য ধ্যানে থাকার জন্য আমি শুনতে পারছিনা। উনি তুরি মেরে আমার ধ্যান ভেঙে দিলেন। হাসতে হাসতে বললেন…..
.
—- খুব মজাই লাগছিল তোকে ভয পেতে দেখে।
.
—- মানে?
.
—- তুই কি ভেবেছিস? একদমই না। আমি তো জাস্ট তোকে ভয় দেখাচ্ছিলাম। তবে বাসায় গেলে তোর শাস্তি অবশ্যই আছে।
.
খাটাশটার কথা শুনে রাগে গা পিত্তি জ্বলে গেল আমার। কয় কি সালা খচ্চর আমাকে ভয় দেখাচ্ছিল? সাহস তো কম না? আবার কয় বাসায় গেলে শাস্তি? সমস্যাটা কি? ইচ্ছে তো করছে উগান্ডা পাঠাই দিই হুহ !
.
__________________
.
রাত ১০টা বেজে ৩০ মিনিট………….

#চলবে……

[#বিঃদ্রঃ সরি গাইস! সর ফর লেইট। আজকে সারাদিন খুব নেট প্রবলেম ছিল তাই গল্প দেওয়া হয়নি। বলেছি রাতে দিব একটু বিজি ছিলাম। তাই এতো লেট। জানি ছোট হয়েছে। তবে নেক্সট পার্ট থেকে বড় করেই দিব৷ আসলে হাত প্রচুর পরিমাণ ব্যাথা করছে। কি লিখেছি জানিনা। তবে দিব যখন বলেছি তখন তো দিতে হতোই। তাই অনেক কষ্টে লিখেছি একটু মানিয়ে নেবেন প্লিজ,! আর হ্যাঁ,,, আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি আপনারা নেক্সট নেক্সট না বলে লেখিকাকে উৎসাহ দিন। গল্পের ভালো মন্দের দিকটা তুলে ধরুন। এতে আপনাদেরও আনন্দ আর লেখিকারও সংশোধন করা হলো। সে আপনাদের আরও বেস্টটা দিতে ট্রাই করল। তবে আপনারা যদি নেক্সট নেক্সট করেন এতে লেখিকা উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। আচ্ছা আপনারা না বললে কি আমি নেক্সট পার্ট দিব না? অবশ্যই দিব! তাহলে কেন লেখিকার উৎসাহটা নষ্ট করে দিচ্ছেন? কেউ কেউ হয়তো এখন নেক্সট বলা ছেড়ে স্টিকার কমেন্ট শুরু করবেন! আমি আগেই না বলছি এটা আরও আগে করবেন না। এতে প্রচুর বিরক্ত লাগে। কেউ মাইন্ড করবেন না। ব্যপারটায় আমি চরম রকম বিরক্ত তাই বলা। সবাই ভালো থাকবেন। শুভ সকাল ❤]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here