পারবো না আমি ছাড়তে তোকে ❤❤ #লেখিকাঃ লামিয়া ইসলাম তন্নি ❤ #পর্বঃ ২৩ ❤

0
747

#পারবো না আমি ছাড়তে তোকে ❤❤
#লেখিকাঃ লামিয়া ইসলাম তন্নি ❤
#পর্বঃ ২৩ ❤
.
.
🍁
.
রাত ১০ টা বেজে ৩০ মিনিট। ছেলেপক্ষকে একটু আগেই বিদায় দাওয়া হয়েছে। যদিও তারা রাতে এখানে খেতে চাননি কিন্তু মামু আর নানু আপুর জোড়াজুড়িতেই একপ্রকার বাধ্য হয়ে এখানে ডিনার করতে রাজি হন। অবশেষে রাতের খাওয়া কমপ্লিট করে সূর্য বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। কিন্তু বাঁধ সাধলো আমাকে নিয়ে। সে আমাকে রেখে যাবেনা। আর আমি তার সাথে যাবোনা। আমাদের ঝগড়া দেখে মামু সূর্যকে বললেন এতো প্রবলেম হলে যেন উনিও থাকেন। কিন্তু উনার সেই এক কথা যাই হোক উনি বাসায় যাবেন আর আজ এই মুহূর্তে! এবং আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন। কিন্তু আমি যাবোনা কারণ গেলেই আমার কপালে দুঃখ আছে ! কিন্তু কে শুনে কার কথা? উনি আমাকে নিয়ে যাবেই যাবে। আর আমি যাবোনা মানে যাবো না। অবশেষে খাটাশটা একাই বাড়ি ফিরে গেল।
.
আমি তো মহা খুশি! খুশিতে আমার বিছানায় উঠে নাচানাচি করতে ইচ্ছে করছে। ইশ! এতো খুশি খুশি লাগে ক্যারে? না না খুশি হওযা যাবে না। খুশি টেকে না আমার কপালে ! আবার খাটাশটা কিছু না কিছু করব। আজকে তো বেঁচে গেলাম কিন্তু কাল কি হবে ? কথাটা ভাবতেই আমার কান্না পেযে গেল। অথচ একটু আগে হাসছিলাম। আশ্চর্য! উনাকে এতো ভয় পাওয়ার কি হলো বুঝলাম না? উনি কি বাঘ নাকি ভাল্লুক? কিছুই না! তো ভয পামু ক্যা? ভয়ও পামু না হুহ ।
.
নিজে মনে মনে বিরবির করে রুমে গিয়ে দরজা লক করে সোজা বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে চোখটা বন্ধ করে স্বপ্নের দেশে পাড়ি জমালাম। অনেকদিন স্বপ্ন দেখিনা। সেদিন দেখতে নিয়েও শান্তি পাইনি। আজ শান্তিতে খুব সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখব। যেখানে আমি খুব ভালো একজন ডক্টর হবো। আমারও সুন্দর একটা পরিবার হবে। আমারও কিউট গুলুমুলু একটা প্রিন্স বা প্রিন্সেস হবে। আমাকে ছোট্ট ছোট্ট হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরবে। কিউট করে আম্মু বলে ডাকবে। আমার আর সূর্যের দুজনেরই খুব আদুরে হবে সে। ইশ! ভাবতেই মন জুড়ে অদ্ভুত এক ভালো লাগা কাজ করছে। কিন্তু ঐযে আমার পোড়া কপাল! সে কি দেয় আমাকে শান্তিতে থাকতে? সে তো চায় না আমি স্বপ্ন দেখি।
.
হঠাৎ মেসেজের টুনে ফোনের সব ভাবনা উধাও। বিরক্তি লুক নিয়ে ফোনের স্ক্রিনে তাকালাম। তাকিয়ে আমার চোখ কপালে। সূর্যের নম্বর থেকে একটা মেসেজ এসেছে। যতটা না বিরক্ত ছিলাম। উনার মেসেজ দেখে তা আরও শত শত গুন বেড়ে গেল। তবুও মন বলে একটা শব্দ আছে না? তার যে জানার খুব ইচ্ছে কি আছে মেসেজে? কি লেখে সে আমায়? তাই মনের কৌতূহলটা আর ধরে রাখা সম্ভব হলো না। বাধ্য হয়েই মেসেজটা অপেন করলাম…..
.
—-“ঘুমিয়ে গিয়েছিস? নাকি তোর ঐ মাহিদের কথা ভাবছিস? সে যাই হোক! আমার জানার বিষয় না। বাসায যাবি কিনা? গেলে এখন এই মুহূর্তে আমার সাথে যাবি। নয়তো কাল আর তোকে বাড়িতে নেওয়া হবেনা বরং তোর ঐ মাহিদকে কাল রামধোলাই দেওযা হবে। এবার তুই ডিসাইড কর কি করবি? আমি নিচে আছি গেলে তাড়াতাড়ি আয় নয়তো কাল মাহিদের ১২টা আমি বাজাবো। মাইন্ড ইট! ”
.
মেসেজটা পড়ে আমার মেজাজ আরও বেশি খারাপ হলো। এটা কেমন কথা আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছে মাহিদকে দিয়ে? আশ্চর্য! কিন্তু বেচারা মাহিদ মাঝখান থেকে মার খাবে আমার জন্য। কিন্তু আমি কি করব? উনার সাথে গেলে কপালে শনি আছে নির্ঘাত। আল্লাহ বাঁচাও!
.
অবশেষে উপায না পেয়ে উনার সাথেই যেতে রাজি হলাম। কারণ আমি জানি উনি যা বলেন তাই করেন। তাই একটা নির্দোষ ছেলেকে মার খাওযানোর মানেই হয়না। এট লিস্ট আমার জন্য তো নাই!
.
রুম থেকে বের হয়ে সোজা আম্মুর কাছে গেলাম। গিয়ে বললাম…..
.
—- আম্মু! আসবো?
.
—- হুম, ভেতরে আয়। বল কি বলবি?
.
—- আম্মু আমি বাসায় যাবো।
.
—- কেন কি হয়েছে?
.
—- না তেমন কিছুই না। উনার শরীরটা নাকি খারাপ। তাই ড্রাইভার চাচাকে পাঠিয়েছে আমাকে নিতে। আমি বরঙ যাই। তুমি মামুকে বুঝিয়ে বলো। আর বড় আম্মুকে এব্যাপারে কিচ্ছু বলতে হবেনা। পরে দেখা যাবে যে টেনশন করে প্রেসার হাই করে ফেলবে।
.
—- আচ্ছা যা! তবে সাবধানে। আর পৌছে এটা ফোন দিস!
.
—- আচ্ছা!
.
ওখান থেকে বেড়িয়ে সোজা নিচে চলে এলাম। সিঁড়ি থেকে নেমে আসতেই দেখি উনি গাড়ির ডিঁকিতে বসে ফোন টিপছেন। কে যানে এতো রাতে কোন জান পরাণের লগে কথা কয়! উনার ভাব দেখে মেজাজ আমার ফর্টি নাইন! আশ্চর্য! মানুষ এতোটা নিষ্ঠুর কি করে হয়! নিজের মনে কথাগুলো ভেবে রাগ দেখিয়ে উনার সামনে গিয়ে দাঁড়াই। উনি কিছু বলার আগেই ওখান থেকে এসে সিটে বসে পড়ি। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে! কিন্তু কেউ কাউকে কিচ্ছু বলছিনা। দু’জনই চুপচাপ। এমন ভাব যে আমরা একে ওপরকে চিনিনা!
.
________________
.
রাত ২টা বেজে ১০ মিনিট। সারারাস্তায় একজন আরেক জনের সাথে কথা বলিনি। দুজই চুপচাপ ছিলাম। বাসায় এসে রুমে ঢুকে কোনো রকম শাড়িটা চেঞ্জ করে বিছানায এসে গা এলিয়ে দিতেই উনি শুরু করলেন…….
.
—- তুই শুচ্ছিস কেন?
.
—- মানে তো কি করব?
.
—- আমার কাজ কর!
.
—- আপান কাজ মানে?
.
—- মান! তুই আমার হাত পা টিপপি!
.
—- কিহ্!
.
—- কিহ্ না জ্বী!
.
—- আমি পারব না।
.
—- বললেই হলো নাকি?
.
—- হুম হলো!
.
—- পা না টিপলে কালকে মাহিদ মার খাবে! রাজি?
.
আবার মাহিদ! অবশেষে সেই পা টিপতে বসলাম। আমি পা টিপছি আর খাটাশটা নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে। ইচ্ছা তো করছে উগান্ডা পাঠিয়ে দিই। হুহ ! বউহীন খাটাশ !

#চলবে…….

[ রি-চেইক করা হয়নি ভুলক্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন । ধন্যবাদ,❤।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here