গল্পের নাম : #বৃষ্টি_থামার_পরে
পর্ব ২২: #লিগ্যাল
লেখিকা: #Lucky_Nova
“হ..হাত ছাড়ুন, প্লিজ।” একদম নিচু গলায় বলে হাত মোড়ামুড়ি করতে শুরু করে মিহি।
এতক্ষণে এরোন ফোনটার স্ক্রিন অফ করে টেবিলের উপর রাখলো। তারপর ঠোঁটের কোনের সুক্ষ্ম হাসিটা সহ মিহির দিকে তাকালো।
সে মাথা হালকা নত রেখে হাত মোড়ামুড়িতে ব্যস্ত। মুখ দেখেই বুঝতে পারা যাচ্ছে যে একটু আগের ঘটনাটার জন্য সে অনেক বিব্রতবোধ করছে।এজন্যই ঘেমেটেমে মুখটার নিদারুণ অবস্থা হয়ে উঠেছে। গলার কাছেও বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে তার।
এরোন এক আঙুল দিয়ে ঠোঁটের উপরের ঘাম মুছে দিতে যেতেই মিহি হকচকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
“আ..আপনি কি শুরু করেছেন! হাত ছাড়ুন না!” মহা বিপত্তিতে পরে যায় মিহি।
এরোন ওর মুখের দিকে আবিষ্ট মনে তাকিয়ে বলল, “হাত ছাড়বো কিন্তু উঠে যেতে পারবা না। এখানেই বসে থাকবা। ওকে?”
মিহি জলদি মাথা নাড়ে। কারণ এভাবে ধরে থাকলে কখন আরোহী চলে আসে ঠিক নেই। আবার এরিকও ত এসেছে বাসায়। কেউ দেখলে কি ভাববে!
এরোন ওর হাত ছেড়ে দিয়ে নিজের চেয়ার ওর আরো কাছে এগিয়ে আনলো।
মিহি হালকা বিচলিত হয়ে জড়থবু হয়ে বসল।
“খাচ্ছ না কেনো তুমি?” টেবিলে এক হাত ভাজ করে রেখে মিহির দিকে তাকায় এরোন।
“শান্তিতে খাচ্ছিলামই ত! কেনো যে এসে হাজির হলেন?!” মিহি মনে মনে বলল।
কোনো সারাশব্দ না পেয়ে এরোন একটা ফ্রেঞ্চফ্রাই তুলে মিহির মুখের সামনে ধরে বলে,”নেও, হা করো।”
মিহি সরু চোখে এরোনের হাতের দিকে তাকায়।
“আমার নিজের হাত আছে। আমি..।” কথা শেষ হবার আগেই এরোন ওর মুখে ফ্রেঞ্চফ্রাইটা ঢুকিয়ে দেয়।
মিহি হতবুদ্ধি হয়ে এরোনের দিকে তাকায়। আর তাকাতেই চোখে চোখ পরে যায়। গভীর সেই চাহনি।
মিহি নিমিষেই চোখ সরায়। বুকের মধ্যে ধুকধুক শব্দটা হঠাৎ বাড়তে শুরু করে দেয়।
শাড়ির আঁচল খামচে ধরে ও।
আশ্চর্য! এমন কেনো হচ্ছে! নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে মিহি।
এরোন মিহিকে দেখে কিছু একটা আন্দাজ করে নিঃশব্দে হেসে ফেলে। অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে রাখায় মিহি সেই হাসি দেখতে পায় না। দেখলে হয়তো হৃদপিণ্ড আরেক দফা ধুকধুক করত।
“কাহিনী কি বল ত?!”
এরোন মিহি দুইজনেই ঘাড় ঘুরিয়ে উল্টোপাশে তাকায়। দেখে এরিক পকেটে হাত গুজে সন্দিহান চোখে দাঁড়িয়ে আছে। চুলগুলো ভেজা ভেজা। হয়তো গোসল সেরে এসেছে মাত্র। পোষাক বদলে গাঢ় নীল টি-শার্ট আর ধূসর রঙের ট্রাউজার পরেছে।
মিহি আবার মুখ ঘুরিয়ে কাচুমাচু হয়ে গেল। ওর মনে হচ্ছে সব দেখে ফেলেছে এই ছেলে। কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছে কে জানে! মান সম্মান সব শেষ।
প্রচন্ড হাঁসফাঁস লাগছে ওর।
“কি কাহিনী?” কন্ঠে ছাড়া ছাড়া ভাব এরোনের।
“হাত ধরছিস! খাইয়ে দিচ্ছিস! কে ও?” বলতে বলতে এরিক মুখটা এমন করলো যেন বিষয়টা ওর হজম হচ্ছেনা।
এরিকের মুখের এই কথাগুলো কানে লাগতেই মিহি লজ্জায় শেষ হয়ে গেল। একটু আগের ঘটনাও ত মনে হয় দেখেছে! চিন্তা হতেই মিহির মাটি খুড়ে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে।
এরোনের তেমন কিছুই মনে হচ্ছে না। তাছাড়া মিহির মুখ থেকে ফ্রেঞ্চফ্রাই নেওয়ার সময় কেউ দেখেনি এটা সে সিওর। বাকি যা দেখেছে ওসব স্বাভাবিক।
তবে মিহির অবস্থা দেখে বুঝতে পারছে যে লজ্জায় আর অস্বস্তিতে ওর নাজেহাল অবস্থা।
“দেখেছিস ভাল, ঢোল পিটিয়ে আমার বউকে লজ্জা দিচ্ছিস কেনো?” কপাল কিঞ্চিৎ কুচকে পূর্বের ন্যায় ছাড়া ছাড়া ভাবে বলল এরোন।
এরিক নাক, মুখ, চোখ বিচিত্র রকমের করে ফেলল। ওর ভাইও কি মজা নিচ্ছে নাকি!
“কে বউ?” আকাশ থেকে পরলো এরিক।
তখনি দু প্লেট ফ্রেঞ্চফ্রাই নিয়ে ডায়নিংয়ে এলেন আরোহী। এরিককে দেখেই মুখোভাব শক্তপোক্ত করে নিলেন।
প্লেট রাখতে রাখতে মিহির নুডলসের বাটির দিকে তাকিয়ে আহাজারি করে উঠলেন।
“হায় হায়! এখনো খাইনি কেনো মেয়ে!”
মিহি চোখ তুলে তাকালো না। সে এখনো লাল হয়ে আছে।
এরোন মিহির আরো কাছে নুডলসের বাটি ঠেলে দিল। তারপর স্বাভাবিক ভাবেই বলল, “নিজে খাবা নাকি খাইয়ে দিব?”
মিহি যেন এবার অস্বস্তিকর এই লজ্জায় শেষই হয়ে গেল।
এরিক বিচিত্র ভঙ্গিতে তাকিয়েই ওর মাকে প্রশ্ন করলো, “ভাই, আমারে এট্টু কইবা কি হইছে? আমার ভাই ডা এরম করে কির লেইগা?”
এরোন বিরক্ত ভঙ্গিমায় তাকায় এরিকের দিকে। আরোহীকে উদ্দেশ্য করে বলে, “ও জানে না?”
আরোহী এবার রাগ ঝাড়লেন।
“দুই অসভ্য। একটার ত কান্ডজ্ঞান রাতারাতি লোপ পেল তাই জোর করে বিয়ে করলো। আরেকটা বেহায়ার ত সারাদিনেও খবর থাকে না। সকাল থেকে কতবার ফোন দিয়েছি? বাসার খবর রাখস?” ঠাঠানো কন্ঠ আরোহীর।
এরোন ভাবলেশহীন ভাবে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল। কিছু বলল না। কারণ কথায় কথা বাড়বে।
অন্যদিকে এরিকের মাথায় জোর করে বিয়ে নিয়ে বলা কথাটা বাজছে।
সে দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে মিহির পাশের চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে।
মিহি বেশ চমকায়। এরোন ভ্রু কুচকে তাকায়।
এরিক তদন্ত করতে মিহির দিকে ঝুঁকে সূচালো দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে, “এই মেয়ে! তুমি বল তো, কে তুমি?”
মিহি ভীত চোখদ্বয় পিটপিটিয়ে তাকায়।
এরোন ভ্রুকুটি করেই বলল, “ভয় দিচ্ছিস কেন ওকে?”
“তুই সত্যিই বিয়ে করেছিস একে?” অবিশ্বাস্য চোখের চাহনি এরিকের।
“‘এই মেয়ে’, ‘একে’, এগুলো কি ধরনের সম্মোধন?! ওর নাম মিহি। আর হ্যাঁ, আমি বিয়ে করেছি ওকে।” গাঢ় কন্ঠে বলল এরোন।
এরিকের চোখ মুখের ভাজ এবার উধাও হয়। বিস্ময়ে ছেয়ে যায় মুখ।
“ফ্যামিলি ড্রামা নাকি, ভাই?!” দুই তিনবার পলক ফেলে এরিক।
“নাহ। সত্যিই।” এবার মৃদু হাসে এরোন। তার দৃষ্টি মিহির নত মুখের দিকে।
এরিক বিস্মিত মুখে ওর মায়ের দিকে তাকায়। সে গোমড়া মুখে চেয়ারে বসে আছে।
“এসব কখন হলো মা?! টেরই পেলাম না!” ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল এরিক।
“এজন্যই ত তোকে হতচ্ছাড়া বলি।” ছ্যাত করে উঠলেন আরোহী।
“সত্যি বিয়ে করেছিস! নাকি মিথ্যামিথ্যি?” কটাক্ষ করে বলল এরিক।
এরোন দাঁত কিড়মিড় করে তাকালো।
এরিক ভয় পেল না। ও আসলে এখনো বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না। তাই উদ্ভট একটা প্রশ্ন করে বসলো।
“তুই না বিয়ে টিয়ে করবি না?! ত এসব কি? নাকি trial marriage?”
মিহি থমকে গিয়ে এরিকের দিকে তাকালো। এরোনের মেজাজ প্রচন্ড বিঘড়ে গেল। সাথে আরোহীরও।
মিহির ত ইচ্ছেই করছে এই ছেলেরো মাথা ফাটাতে।
এরিক বুঝলো বেখেয়ালে অনেক ফালতু প্রশ্ন করে ফেলেছে।
“তুই কি আমার হাতে মরতে চাস?” চিবিয়ে চিবিয়ে বলল এরোন।
“সরি সরি।” নির্বিকার কন্ঠে বলে এরিক তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে একবার মিহিকে একবার এরোনকে দেখতে লাগলো। তারপর বিড়বিড়িয়ে বলল, “নাহ, সিরিয়াসই মনে হচ্ছে! তাও খটকা লাগছে।”
“বাবা জানে?” সচকিত হয়ে আরোহীকে প্রশ্ন করলো এরিক।
আরোহী ব্যঙ্গাত্মক ভাবে “ন্যাঁ” বলে তারপর চিন্তিত স্বরে বললেন, “এসে যে কিভাবে নেবে বিষয়টা কে জানে!”
“কিভাবে আর নেবে! সহজ ভাবেই নেবে। প্রেম করেছে, বিয়ে করেছে। সিম্পেল! যদিও ধুমধাম করে করলে ভালো হত। কেন যে এভাবে না বলে করলো!” গা ছাড়া ভাবে বলল এরিক।
“প্রেম করে না। তোমার ভাই জোর করে বিয়ে করেছে ওকে।” ব্যঙ্গাত্মকভাবে ঠোঁট এলিয়ে বললেন আরোহী।
“কি?” ক্ষীণ স্বরে এমনভাবে বলল যেন শুনতেই পায় নি সে।
“জে।” ভেঙিয়ে বললো আরোহী।
এরিক সংকুচিত চোখে এরোনের দিকে তাকালো। সে চেয়ালে গা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে।
এরিক দৃষ্টি সরিয়ে মিহির দিকে তাকায়।
এরিক মুখ দিয়ে বিরক্তিসূচক শব্দ বের করে ফ্রেঞ্চফ্রাই এর প্লেট টেনে নিয়ে খেতে শুরু করল। বিষয়টা হজম করতে আরো কিছু সময় লাগবে ওর।
কারণ হুট করে বিয়ে, তার উপর কাউকে না জানিয়ে, তারও উপর নাকি আবার জোর করে! এমন ছেলে ত ওর ভাই না! কাহিনী কি!
“বসে আছ কেনো? খাও, খাও।” ব্যস্ত ভঙ্গিতে মিহিকে বললেন আরোহী।
মিহির চিন্তার সুতা ছিড়লো। হালকা অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে তাকিয়ে দ্রুত মাথা নাড়লো। তারপর বাটি হাতে নিলো সে।
এরোন চেয়ারে গা এলিয়ে রেখেই ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো মিহির দিকে। মুখটা কেমন থমথমে দেখাচ্ছে ওর। হঠাৎ কি হলো!
🌸
রাতের খাবারের পর চিন্তা বেঁধে গেল মিহির। ওর চিন্তাটা হলো ঘুমানো নিয়ে। তাই খাওয়া শেষ করেও চেয়ার থেকে নড়লো না। জড়থবু হয়ে বসে নখ খোটাতে লাগলো।
আরোহী টেবিল পরিপাটি করতে করতে মিহিকে বললেন, “মন খারাপ?”
মুখ তুলে তাকালো মিহি। তারপর জোরপূর্বক হেসে না সূচক মাথা নাড়ল সে।
“চিন্তা করো না। ওর বাবা তোমায় কিছু বলবে না। বকা খেলে এরোন খাবে। তুমি না। আর ওর বাবা সবটা জানলে তারপর তোমার বাসায় গিয়ে একটা পাকাপোক্ত সম্পর্ক করতে হবে।” বলে মৃদু হাসলেন তিনি।
মিহি ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে চেয়ে রইল।
আরোহী টেবিল পরিপাটি করে নিলেন। তারপর মিহিকে বললেন, “চলো, ঘুমাবে না! সারাদিন ত রেস্ট নেওয়াই হয়নি।”
মিহি এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে উঠে দাঁড়ালো। কিন্তু কিভাবে কি বলবে বুঝতে পারলো না।
“কি হয়েছে?” মিহির মতিগতি দেখে প্রশ্ন করলেন তিনি।
“আ..আমি আসলে…।” আমতা আমতা করতে লাগলো মিহি।
আরোহী প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন।
মিহি একটু সময় নিয়ে নিজেকে সামলে চোখ বুজে গটগট করে বলে উঠল, “আমি অন্য রুমে ঘুমাবো।”
আরোহী ভ্রু বাঁকালেন।
এরোন সোফাতে বসে ফোনে কিছু করছিলো। মিহির কথা শুনে কপাল কুচকে ঘুরে তাকালো।
আরোহী ফিক করে হেসে দিলেন। ওনাকে হঠাৎ হাসতে দেখে মিহি বিব্রতবোধ করে ঠোঁট কামড়ে নতজানু হয়ে রইল।
“আমার ছেলের সাথে ঘুমাবা না, তাই ত?” হাস্য উজ্জ্বল মুখেই বললেন তিনি।
মিহি চুপ করে রইলো।
“আচ্ছা বাবা! কেউ জোর করছে না। তুমি তোমার মত থাকো।” বলেই মিহির মাথার চুলগুলো নেড়ে দিলেন তিনি।
মিহি মনে মনে স্বস্তিবোধ করলো। এমনিও কারো সাথে বেড শেয়ার করতে পারেনা ও। তার উপর এই ছেলের সাথে বেড শেয়ারের ত প্রশ্নই আসেনা!
“যে রুম ভালো লাগে সেই রুম বেছে নেও। তবে সেইদিন আর দূরে নেই যেদিন আমার ছেলের কাছে ঘুমানোর জন্য অস্থির হয়ে যাবা।”
মিহি সচকিত হয়ে তাকালো। আরোহীর মুখে সুন্দর, অকপট হাসি।যা দেখে অপ্রস্তুত হয়ে পরমুহূর্তেই চোখ নামালো মিহি।
আরোহী একবার ছেলের দিকে তাকালেন।
সে মুচকি হাসি সমেত ফোনে তাকিয়ে আছে।
“আসো, উপরে যাই।” বলে এগুতে ইশারা করলেন আরোহী।
মিহি কোনদিকে না তাকিয়ে তার পিছু পিছু উপরে উঠে গেল। কারণ তাকালেই হয়তো এরোনের তীক্ষ্ণ দৃষ্টির খপ্পরে পরতে হত।
মিহি যে রুমে বসে ফ্রেস হয়েছিলো সেই রুমটাই বেছে নিলো। আরোহী বিছানা করার জন্য দরকারি সবই দিয়ে গেলেন। বিছানাটাও করে দিতে চাচ্ছিলেন কিন্তু মিহি দেয়নি। সে নিজেই করবে বলে দেয়। এমনিও উনি সেই কখন থেকে আপ্যায়ন করেই চলেছে। তাই এটুকু নিজেই করবে বলে ঠিক করলো মিহি।
“আমি কম্বল নিয়ে আসছি। তুমি ততক্ষণে বিছানা করে নেও।” বললেন আরোহী।
মিহি মাথা নাড়লো।
বিছানা করার পরে মিহি ফ্রেস হয়ে বের হলো। তোয়ালে দিয়ে নাক মুখ মুছতে মুছতে বিছানার দিকে তাকাতেই চোখ চড়কগাছে উঠে গেল ওর।
এরোন বসে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
মিহি পরে গেল বিপদে। যদিও সে দরজাটা আটকে দিত বের হয়েই। আরোহীর কম্বল দিয়ে যাবার কথা তাই-ই দরজা খোলা রেখেছিল ও।
মিহি কাঠ কাঠ হয়ে চোখ সরিয়ে ড্রেসিং টেবিলের দিকে তাকালো। তোয়ালেটা আঁকড়ে ধরল হাতে।
“আপনি… এখানে… আমার বিছানায় কেনো!” কপালে ভাজ ফেলে বলল মিহি।
“হয় আমার সাথে আমার রুমে ঘুমাবা। নাহলে আমি তোমার সাথে এই রুমে ঘুমাবো।” সোজাসাপ্টা উওর তার।
“কোনোটাই না। আপনি… আপনার রুমে যান।” তেজহীন শুষ্ক কন্ঠে বলল মিহি।
“যাব না।” ত্যাড়াভাবে বলল এরোন।
“তাহলে থাকুন আমিই যাচ্ছি।” কন্ঠের তেজ বাড়িয়ে বলল মিহি। তারপর গটগট করে দরজার এগিয়ে গেল।
কিন্তু এখন বেঁধে গেল আরেক বিপত্তি। দরজা খুলছে না। একদমই খুলছে না। কোনো ছিটকিনিও দেওয়া নেই। ভারি অদ্ভুত কান্ড!
মিহি এরোনের দিকে কটাক্ষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল, “কি করেছেন আপনি?”
“এই রুমের দরজাও চায় না তুমি যাও। তাই চুপচাপ এখানে আসো আর ঘুমাও।” নিষ্পাপ কণ্ঠে সুন্দর একটা হাসি দিয়ে বলল এরোন।
মিহির গলা শুকিয়ে গেল। বুঝতে আর বাকি রইল না এসব কার কারসাজি।
“তাড়াতাড়ি আসো।” তাড়া দিয়ে বলল এরোন।
মিহি চোখ মুখ কুচকে মেঝের দিকে তাকিয়ে রইল।
“কোলে করে আনবো?”
মিহি বড়সড় চোখ করে তাকাল।
“আমার সাথে ঘুমাতে কি সমস্যা তোমার? বিয়ে ত হয়েছেই। এমন ত না যে বিয়ে ছাড়া আছো আমার কাছে!” বিরক্তমাখা কন্ঠ এরোনের।
মিহি তোয়ালেটা শক্ত করে ধরে এলোমেলো চোখে এদিক ওদিক তাকাতে লাগল।
“চুপচাপ আসো এখন।”
“আমি মোটেই বিশ্বাস করিনা আপনাকে।” মিনমিনে গলায় বলল মিহি।
“কোন বিষয়ে বিশ্বাস করো না?!” মিহির দিকে সরু চোখে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো এরোন।
মিহি চঞ্চল চাহনিতে নিচ পানে চেয়ে রইল। উওর দিল না।
এরোন মুচকি হাসলো। মিহিকে জ্বালানোর জন্য সে বলে উঠল,”তুমি ত এখন সম্পূর্ণভাবে শুধু আমার। আর আমি তোমার। এক কথায়, সব রকম রোম্যান্স লিগ্যাল এখন।”
কথাগুলো কর্ণগোচর হতেই মিহি বুকের ভিতরটা ধক করে উঠলো। চোখ যেন কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম। এই ছেলে কি বলে এসব?
(চলবে…)