প্রেয়সীর হৃদয় ব্যাকুল – ২০
__________________________
দূর থেকে ইকোপার্কের গেইট দেখা যাচ্ছে। গাড়ি পার্ক করে নিজেদের ব্যাকপ্যাক নিয়ে বেরিয়ে এসেছে প্রত্যেকে৷ অরু সকলকে পেছনে ফেলে আগে হেঁটে চলে যাচ্ছিলো। হঠাৎ টান অনুভব করলো ব্যাগে। তন্ময় পেছন থেকে তার ব্যাগ টেনে ধরেছে। মাথা ঘুরিয়ে তাকাল। কিন্তু তন্ময় তাকে কেন ধরেছে বলেনি! সে তখন ড্রাইভার চাচার সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত। আসমানের অবস্থা তেমন ভালো দেখাচ্ছেনা। ধীরে ধীরে পরিষ্কার আকাশে ছোট ছোট মেঘ জমতে শুরু করেছে। ড্রাইভার বলছে আজ না যাওয়াই ব্যাটার। কিন্তু অরুর জেদের বসে সকলকে যেতেই হবে। হাঁটা ধরলো সামনে। কিছুটা হেঁটে চলে এলো মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক গেইটের সামনে। ইটের তৈরি গেইট। গেইটের উপরে সাদায় কালো রঙে লেখা ‘ বন বিভাগ – মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক। ‘ ছোট করে ক্যাচি গেইট রয়েছে চারপাশের ইটের মধ্যখানে। গেইটের ভেতরে আকাশী রঙের টি-শার্টের সাথে কালো প্যান্ট পরে, চেয়ার পেতে দারোয়ান বসে। হাতে লাঠি। দশ টাকার টিকিট কাটে জনপ্রতি একজন করে মোট আটটি। নিজেদের টিকেট নিয়ে ঢুকে পড়ে। ঢুকতেই অরু দৌড় লাগায় সঙ্গে দীপ্ত। দুপাশে সবুজ গাছ। মধ্যে দিয়ে যাচ্ছ আঁকাবাকা রাস্তা। পাখিদের কিচিরমিচির শোনা যাচ্ছে। দেখা মিলছে নানান জাতের মূর্তির। রয়েছে বসার সিট। শাবিহা আঁড়চোখে দৌড়ে ছুটে চলা অরুর দিক তাকাল। তার ও ইচ্ছে করছে দৌড়াতে। কিন্তু নিজেকে আটকে রাখল। তার পাশেই অয়ন দাঁড়িয়ে। অয়নের কাঁধে একটা ব্যাগ সাথে তার হাতেও। হাতের ব্যাগটা শাবিহার। অয়ন আড়ালে তার কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছে। যেমন এতটুকু ভারের ব্যাগ শাবিহা ক্যারি করতে পারবেনা।
–‘ আমার ব্যাগ আমাকেই দাও! ‘
–‘ আমি নিলে কি সমস্যা? ‘
–‘ সমস্যা নেই। ‘
–‘ তাহলে? ‘
–‘ উফ দিবে তুমি? ‘
–‘ শাবিহা আপু ব্যাগটা আমি নেই। কি হয়েছে! আমার এতটুকু ওজনের ব্যাগ নিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ‘
শাবিহা ভীষণ রেগে গেল। লজ্জায় তার গাল দুটো লাল হয়ে উঠছে। এইযে হুট করে অয়ন তাকে আপু ডাকে, এটা কতটা লজ্জায় ফেলে ইদানীং তাকে, সেটা কী ছেলেটা জানে? আকাশ বিরক্ত সুরে
বলল,
–‘ অয়ন ব্যাগটা তোর জন্য ক্যারি করছে, এতে খারাপ কী? ছোট ভাই হিসেবে এতটুকু করতেই পারে। ‘
অয়ন মিষ্টি করে হাসলো। শাবিহা হনহনিয়ে অয়নকে পিছু ফেলে চলে গেল। ছোট ভাই, ছোট ভাইয়ের মতো থাকে না কেন তাহলে! ডিস্টার্ব কেন করে শাবিহাকে প্রতিনিয়ত। পেছনে অয়ন জিহ্বায় কামড় বসালো। মজা করতে গিয়ে, রাগিয়ে দিয়েছে। আকাশ না জেনে সেখানে কেরাসিন ঢেলে দিয়েছে। এখন অয়নকে বেশ কাঠখড় পোহাতে হবে তার মহারানীকে মানাতে।
গেইট থেকে ১০ – ১৫ মিনিট হাঁটতেই দেখা মিললো সেই আশ্চর্য সৌন্দর্যের নিদর্শন ‘মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত’। পাথারিয়া পাহাড়ের গাঁ বেয়েই মাধবকুন্ড জলপ্রপাতের সৃষ্টি। গঙ্গামারায় প্রবাহিত হয়ে যাওয়া জলধারা প্রায় ১৬২ ফুট উচ্চতা থেকে মাধবছড়া দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এই জলপ্রপাত।
দৈর্ঘ্য প্রায় তিরাশি মিটার উচু পাথরের টিলার ওপর থেকে অবিরাম গতিতে ঝর্ণা আছড়ে পড়ছে নিচে। প্রায় ১৮০ ফুট উপর হতে অবিরাম গতিতে জলরাশি নিচে পতিত হওয়ার ফলে নিচে সৃষ্টি হয়েছে একটি কুন্ড। আর এই কুন্ডের প্রবাহমান বারিষার মতো স্রোতধারা শান্তির বারিধারার মতো মাধবছড়া দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শান্তির প্রতিক। অরুর চোখ জুড়িয়ে গেল এই সৌন্দর্যে। পাশেই প্রত্যেকে নিজেদের ব্যাগপত্র রেখেছে। অরু নিজেরটা ফেলে পাশে দাঁড়ানো তন্ময়কে প্রশ্ন করলো,
–‘ এটা কতটা উঁচু তন্ময় ভাইয়া? কতো উঁচু থেকে পানি পড়ছে? ‘
–‘ ১৬২ ফুট উঁচু থেকে। ‘
–‘ শুনেছি ঝর্নার আশেপাশে নাকি একটি কাব থাকে। যেখানে কাপড়চোপড় বদলায়! ‘
তন্ময় হাতের ইশারায় কৌতূহল অরুকে দেখাল। মনে হচ্ছে পাথরের তৈরি একটা গুহা। ভয়ংকর গুহা যার নাম কাব।
–‘ কি সুন্দর! সেখানে যাওয়া যাবে? আমি ঢুকে দেখতে চাই। ‘
–‘ বেশি করলে এক্ষুনি তোকে বের করে দিব। ‘
অরু মুখ ভেঙাল আড়ালে। পরপর আবার বলল,
–‘ তন্ময় ভাইয়া আপনি এখানে, এই ঝর্নায় দাঁড়িয়ে গোসল করেছেন? আমি শুনেছি এখানে গোসল করে। ‘
–‘ হু। ‘
–‘ আমিও ভিজতে চাই। ‘
–‘ ঝর্নায় যাবার রাস্তা বেশ দুর্গম এবং পিচ্ছিল। এখান থেকে দেখ। ‘
–‘ কি!! ‘
অরুর চোখজোড়া রসগোল্লার মতো বড়ো হয়ে গিয়েছে। যেকোনো সময় বেরিয়ে আসবে। এত কষ্ট করে জলপ্রপাতের সামনে এসে দূর থেকে দেখবে? এটা আদৌও সম্ভব? তন্ময়কে অগ্রাহ্য করে দ্রুত পায়ে যেতে নিয়েছিলো। তন্ময় ধমকে উঠলো,
–‘ এই তুই দাঁড়া! ওখানে যাবি না। ‘
–‘ কেন? আল্লাহ কেন! পানিতে না নামলে মজা কোথায়? ওই আকাশ ভাইয়া! ‘
আকাশ চোখজোড়া পিটপিট করলো। অরুর অসহায় চোখজোড়া লক্ষ্য করে বলল,
–‘ পাথর গুলো পিচ্ছিল। তুই যেই তুড়তুড়ি। পড়ে টড়ে যাবি। ‘
–‘ না না পড়ব না।ওইযে শাবিহা আপু যাচ্ছে! অয়ন ভাইয়া, দীপ্ত সবাই যাচ্ছে। আমিও যাবো। প্লিজ! ‘
–‘ কলি তো তন্ময়ের পাশে দাঁড়িয়ে। ও তো যাচ্ছেনা। তুই ও দাঁড়িয়ে থাক। ‘
অরু কলির দিক তাকাল। তন্ময়ের পাশেই দাঁড়িয়ে নতুন বউয়ের মতো। বিরক্ত অরুর চোখজোড়া জলে চিকচিক করছে। অসহায়, বেদনাময় মুখশ্রী দেখে তন্ময়ের শক্ত হৃদয় হয়তো কিছুটা নরম হলো। বলল,
–‘ সাবধানে যা। ‘
অরু মুহুর্তেই হেসে এগিয়ে গেল। ঠিকই বলেছে তন্ময়। ভীষন পিচ্ছিল। দুর্গম ও বটে।অতি সাবধানে একেকটি স্টেপ নিতে হচ্ছে। যেকোনো সময় পড়ে যেতে পারে। অরু জুতো জোড়া খুলে ফেললো। তন্ময় চেঁচাবে তার পূর্বেই অরুর তড়িঘড়ি করে পানিতে পা ভিজিয়ে দিলো। ঠান্ডা পানি। সেখানে পা ভিজিয়ে রাখতেই মন ব্যাকুল হয়ে পড়লো।
অরুর থেকে বেশ কিছুটা দূরে শাবিহা। শাবিহার পেছনে অয়ন। সে ভয়ে আছে শাবিহা পড়ে যাবে। বা কিছু একটা হয়ে না যায়! শাবিহা চারপাশ ঘুরে একটা পাথরে বসলো। অয়ন পাশের পাথরে বসলো। দুজনের চাহনি ঝর্নায়৷ জলরাশি অবিরাম ধারায় নিচে পড়ছে। সৌন্দর্যের যেন কমতি নেই এখানে। যেখানে চোখ যায়, সৌন্দর্য! অয়ন হুট করে প্রশ্ন করলো,
–‘ তোমার পছন্দের প্লেস আছে? যেখানে তুমি এখনো যেতে পারোনি। তবে যেতে চাও। ‘
–‘ ছোট ভাইয়া, পাহাড়ি অঞ্চলে যাওয়া হয়নি। ‘
অয়ন কেশে উঠলো। ছোট ভাইয়া ডাকটা ভালোভাবে হজম হচ্ছে না। তবুও নিজেকে ঠিকঠাক রেখে বলল,
–‘ আমি গিয়েছি বেশ কয়েকবার। ‘
–‘ অনেক ঘুরেছ দেখছি! ছোট্ট ভাইয়া! ‘
–‘ অনেক ঘুরেছি তবে তোমার সঙ্গে ঘুরতে পারাটাই সবথেকে প্রিয়। ওসব তুচ্ছ! ‘
–‘ তুমি সেলিংয়ের কাজ কেন করছ না? এভাবে মিঠাই মেরে কাস্টমার জোগাতে পারবে। ‘
–‘ তুমি সেই কাস্টমার হলে আমি মিঠাই মারতে রাজি। ‘
–‘ ধুর! ‘
অয়ন হাসলো। শরীরের উপর অংশ নুয়ে হাতের মুঠোয় পানি নিল। এবং শাবিহার মুখে ছুঁড়ে মারল। আচমকা আক্রমণে শাবিহার চোখমুখ ভিজে গিয়েছে। এক ফোটা পানি ঠোঁটে পড়ে আছে। ঠিক মধ্যখানে। অয়ন সেখানেই বেকুবের মতো তাকিয়ে রইলো। ওই পানির ফোঁটার উপর তার বেশ হিংসা হচ্ছে। দৃষ্টি সরাতে পারছেনা যেন। শাবিহা বিষয়টি খেয়াল করেনি হয়তো। সে নিজেও পানি অয়নের গায়ে ছুড়ে মারল। অয়নের শার্ট অনেকাংশে ভিজে গেল। সে হেসে শাবিহার দিক আবারো পানি ছুড়ল। শাবিহাও ছুড়ল। দুজনের পানি ছোড়াছুড়ি একটি খেলায় পরিনতি হলো। হাসি ঠাট্টা-তামাশার মধ্যে শাবিহা ভুলে বসলো তার সামনের ছেলেটি বয়সে তার থেকে ছোট। ভুলে বসলো প্রতিবেশী, পরিবার। এমুহুর্ত শুধু তার এবং অয়নের ।
_____________
দীপ্ত অন্যপাশে যাবে। চারপাশে বাচ্চাদের দেখার মতো সুন্দর সুন্দর স্থান আছে। সাথে আছে পুতুলে মুর্তি। বেশকিছু ভাস্কর্য রয়েছে বলা যায়। দীপ্ত সেগুলো দেখবে৷ আকাশ তাকে নিয়ে যাবে সেসময় তন্ময় বলল,
–‘ কলিকে সঙ্গে নে। ও জলপ্রপাত দেখতে তেমন ইন্ট্রেস্ট না। ‘
কলি দ্রুত মাথা দুলিয়ে বলল,
–‘ না সমস্যা নেই। আমি আপনার সাথে
থাকতে…. ‘
তন্ময় তাকে কথা শেষ করতে দেয়নি,
–‘ যাও আকাশের সাথে। ‘
আকাশ বলল,
–‘ চলো। খুব সুন্দর চারপাশ। জলপ্রপাত এতক্ষণ দেখার মতো কিছু না। ‘
কলি একদমই যেতে চাচ্ছে না। কিন্তু কি করার? চোখমুখ অন্ধকার করে ওদের সাথে গেল। তন্ময় একাই দাঁড়িয়ে। তার দৃষ্টি কিছুটা দূরের অরুতে। অরু পাথর পেরিয়ে কিছুটা নামছে তো আবার উঠে আসছে। দু’হাতে পানি তুলে দূরে ছুড়ে মারছে। নাহলে চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করছে। হঠাৎ পেছনে ফিরে দেখল তন্ময় এগিয়ে এসেছে। দুহাত দূরে হবে তার থেকে। অরু একগাল হেসে পানি ছুড়ে মারল তন্ময়ের দিক৷ তন্ময় হাত নিজের মুখের সামনে ধরে বলল,
–‘ অরু! ‘
অরু থামলো না। পুনরায় ঝুকে দু’হাতের সাহায্যে একগাদা পানি ছুড়ল। পরপর আরও কিছু। মুহুর্তেই তন্ময়ের উপরের অংশ ভিজে গিয়েছে। তাও তার চোখমুখে রাগের আভাস নেই। অরুর সাহস বেরে গেল। সে পাগলের মতো পানি ছুড়তে লাগলো। তন্ময় একপর্যায়ে পাথর টপকে এগিয়ে যাচ্ছে অরুর দিক৷ অরু হেসে সেখান থেকে যেতে নিয়েছে। কিছুটা গিয়েছেও! কিন্তু তন্ময় একদম কাছে চলে এসেছে দেখে হন্তদন্ত ভঙ্গিতে ছুটতে নিয়ে পাথরে পা পিছলে পড়ে যায়। বে-কায়দায় পড়ে আর্তনাদ করছে। চোখের পানিতে গাল ভিজে উঠেছে। তন্ময় তখনই চিৎকার দিয়ে দৌড়ে ছুটেছে। কিন্তু ধরতে সক্ষম হয়নি সময়মতো। দ্রুত পায়ে এসে অরুকে তুলতে চাইল। অরু উঠতেও পারছেনা। অতঃপর অরুর ঘাড়ে এবং হাটুর নিচে ধরে, পাজা’কোলে তুলে নিলো। যেখানে ব্যাগ গুলো রাখা সেখানে এনে বসালো। অরুর হাটু ছুঁলে গিয়েছে। হালকা রক্তের দাগ উঠেছে প্যান্টের উপর দিয়ে। পায়ের পাতা ছুঁলেছে সাথে হাড্ডি বেকেছে হয়তো। নড়াতেও পারছেনা। তন্ময় ধমকাতে গিয়েও ধমকাল না। রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে পায়ে ছুঁতে যেতেই অরু পা সরিয়ে ফেলল,
–‘ ব্যথা পাই। ‘
তন্ময় চোখ রাঙিয়ে পা’টা টেনে নিজের দিক আনল। দু একটা মোচড় দিবে পূর্বেই অরু চিৎকার করে উঠলো।
–‘ মরে যাবো। ধরবেন না একদম। ‘
অরুর হাত তন্ময়ের কাঁধ শক্ত করে চেপে। ব্যথা আর ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। ঠোঁটে ঠোঁট চেপে রেখেছে। গাল বেয়ে চোখের পানি পড়ছে। তাকে তন্ময় কিছুক্ষণ দেখে বলল,
–‘ চোখ খোল ত! ‘
অরু ভয়ে ভয়ে খুলল। তন্ময় বলল,
–‘ এখানে আরেকটি ঝর্না আছে জানিস? ‘
–‘ সত্যিই? কি নাম? ‘
–‘ পরিকুন্ড ঝর্না। সেটাও খুব সুন্দর। ‘
–‘ আমরা যেতে পারবো না সেখানে? ‘
–‘ হু পারবো। দশ মিনিট হেঁটে গেলেই সেটা দেখতে পারবো। ‘
–‘ সত্যি? ‘
অরু খুশিতে হঠাৎ পরিবর্তন হওয়া তন্ময়কে একদমই খেয়াল করতে পারেনি। চোখজোড়া জ্বলজ্বল করছে তার। স্বপ্নে বিভোর সে হঠাৎ পিনপিনে কষ্ট অনুভব করলো। গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে উঠলো। পরপর তার পায়ে তন্ময় জুতো পড়িয়ে দিল। তারপর উঠে দাঁড়ালো। বলল,
–‘ দেখি উঠে দাঁড়া! ‘
অরু ভেজা নয়নে উঠে দাঁড়ালো। পা ঠিক হয়ে গিয়েছে। একটা মোচড় দেওয়ার জন্য কী ব্রিলিয়ান্ট অভিনয় না করলো। এতো সুন্দর অভিনয় তন্ময় কবে শিখেছে? অরু কি গাঁধি!
–‘ তারমানে সব মিথ্যে বলেছেন? ‘
–‘ না ঝর্না আরেকটি আছে পাশে। ‘
–‘ চলুন যাই সেখানে। প্রমিজ আর দৌড়াদৌড়ি করবো না। আপনার পাশেপাশে থাকব। ‘
তন্ময় শক্ত চোখে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। যেমন ওয়ার্নিং দিচ্ছে এটাই শেষবার। অবশেষে রাজি হলো। অরুকে নিয়ে সেদিকটায় হাঁটা দিল। হাঁটতে অরুর একটু কষ্ট হচ্ছে বটে। পা থেকে চিনচিন ব্যথা অনুভব করছে। তন্ময় হঠাৎ তার বাম হাত অরুর সামনে এগিয়ে দিল। কিন্তু আজ হাত ধরতেও লজ্জাবোধ করছে অরু। পরপর বেশকিছু লজ্জাজনক সিচুয়েশনে পড়েছে সে। অবশেষে ধীরে তন্ময়ের হাতের সাহায্য নিয়ে হাঁটতে লাগলো। চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে পৌঁছে গেল সেই আকর্ষণীয় ঝর্নার সামনে। এই ঝর্না অন্যরকম সৌন্দর্যে ঘেরা। তবে এবার আর তন্ময় তাকে যেতে দেয়নি কাছে। দূর থেকেই দেখতে হচ্ছে।
অরু বলল,
–‘ আমাকে একটা ছবি তুলে দিবেন? ‘
–‘ না। ‘
–‘ না বলবেন না। এইযে এখানটায় দাঁড়াব। আপনি পুরো ঝর্না সহ আমাকে তুলবেন কেমন? ‘
চলবে ~~~~