তোমাকে_চাই_নিরবধি #পর্বঃ৪ লেখনীতেঃ #সুমাইয়া_আফরিন_ঐশী

0
347

#তোমাকে_চাই_নিরবধি

#পর্বঃ৪

লেখনীতেঃ #সুমাইয়া_আফরিন_ঐশী

“তুমি বড় অবুঝ, বালিকা! কবে বড় হবে তুমি? কবে বুঝবে সব?”

মুখোবাক্য শেষ করে ততক্ষণাৎ নববধূ’র মাথাটা বুকের বা পাশটায় চেপে ধরলো, ফারহান মল্লিক। তার বুক ধড়ফড় করছে, মৃদু কম্পন হচ্ছে বুকে। মিনিট পাঁচেক এভাবে কেটে গেলো। কুহেলিকা এখনো বেহুঁশ, ভারী ভারী নিঃশ্বাস ছাড়ছে সে। মেয়েটা প্রচন্ড ভয় পেয়েছে। বেহুঁশ অবস্থায়ই শরীর কাঁপছে তার। ষোড়শী এক কিশোরী, বয়স আর কত! এসব র’ক্ত, ভয়ংকর মানব’কে আগে কখনো দেখেনি সে। যার ফলে এতো ভয় তার।
পুরুষালী চওড়া বক্ষে’র উষ্ণতা অনুভব করে মেয়েটা বুকের মাঝে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যেতে চাইছে যেন। যা দেখে ফারহান আলতো হাসলো। তাচ্ছিল্যের সহিত শুধালো,

“যাকে ভয় করছো এতো, ভয় নিয়ে তার বুকের মাঝেই লুকাতে চাইছো। বালিকা তুমি বড্ড অদ্ভুত!”

সেসব শুনলো না মেয়েটা। হুট করেই ফারহান কুহেলিকা’কে হাতের বাঁধন থেকে ছাড়িয়ে নিলো। পালঙ্কে রাখা শিমুল তুলার তুলতুলে বালিশে শুইয়ে গায়ে একখানা কাঁথা টেনে ঢেকে দিলো শরীর।

কাজ শেষ করে চট করে উঠে দাঁড়ালো সে। মিনিট দু’য়েক সময় নিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালালো। অতঃপর লম্বা লম্বা পা ফেলে পালঙ্কে’র পাশে রাখা টেবিল থেকে ক্লাস ভর্তি পানি নিয়ে কুহেলিকা’র মাথার পাশে বসলো। হাত দিয়ে কিছুটা পানি মেয়েটার চোখে মুখে ছিটিয়ে দিয়ে গাল ছুঁয়ে গম্ভীর কণ্ঠে ডাকলো,

“ওহে্ বালিকা, উঠো?চোখ খুলে তাকাও, আমি তোমায় ডাকছি।”

কয়েক মিনিট চলে গেলো এভাবে। ফারহান আরো কয়েকবার ডাকলো। সাড়াশব্দ নেই মেয়েটার। অস্হির হয়ে গেলো পুরুষটি’র বক্ষে! অধৈর্য হয়ে পুনরায় বেশ কিছু পানি ছিটিয়ে বললো,

“ওই মেয়ে, শুনছো? শুনছো, তুমি? আমি ডাকছি তোমায়? উঠো।”

চোখে জলের স্পর্শ পেয়ে পিটপিট করে চোখ খুলে তাকালো, কুহেলিকা। চোখ মেলতেই ফারহান’কে পুনরায় এভাবে দেখে ভয়ে সিটিয়ে গেলো। ভয়ার্ত কণ্ঠে শুধালো,

“আপনি দূরে সরুন, সরুন আমার কাছ থেকে। আপনাকে আমার ভয় হয়, ফারহান ভাই। আপনার শরীরে র’ক্ত, হাতে র’ক্ত মাখা তরবারী দেখেছি আমি। আপনি খু নি, আলতাফ চাচা’কে আপনিই মে’রে’ছে’ন।”

বলতে বলতে নিজ হাতে ভর দিয়ে নিজেই উঠে দাঁড়ালো, কুহেলিকা। ভয়ে ভয়ে মানুষটার কাছ থেকে একটুখানি দূরে সরার চেষ্টা চালালো। যা দেখে বাঁকা হাসলো, ফারহান মল্লিক। নিজের হাতের শুকনো র’ক্ত আঙুলে লাগিয়ে হাত বাড়িয়ে কুহেলিকা’র গালে লাগিয়ে দিয়ে আগের ন্যায় গম্ভীর কণ্ঠেই শুধালো,

“জমিদার বাড়ির পুত্র বধূ হয়ে তুমি সামান্য র’ক্ত ভয় পাচ্ছো, বালিকা?এখন থেকে এসবে তোমার অভ্যস্ত হতে হবে তো! কত র’ক্ত ঝড়বে জমিনে, রক্তে’র স্রোতে হাঁটবে তুমি। সে-সব সহ্য করতে হবে, তো বালিকা।”

মানুষটার কথায় কেঁদে উঠলো, ষোড়শী কুহেলিকা। নিজের কাজে নিজেই বিরক্ত সে। না এই লোকটাকে সে ভয় পাবে না। একদম না। উনি যদি হয় জমিদার পুত্র তাহলে কুহেলিকা’ও জমিদার বাড়ির কন্যা। জমিদারি র’ক্ত তার শরীরেরও বইছে। চ’ট করে নিজের চোখের জল থামানোর বৃথা চেষ্টা চালালো। কাঁপা কণ্ঠনালী’কে শক্ত করে খানিকটা উচ্চ স্বরেই বললে উঠলো,

“আমার যদি কখনো কাউকে খু ন করার প্রয়োজন হয়, তবে প্রথম খু ন টা আমি আপনাকেই করবো। র’ক্তে’র স্রোতে হাঁটতে হলে, আপনার শরীরে’র র’ক্ত ঝড়িয়ে হাঁটবো। আপনি নিজেকে কি ভাবছেন, ফারহান ভাই? আপনি জমিদার পুত্র হলে আমিও জমিদার বাড়ির কন্যা। আপনার র’ক্তে সাহসিকতা থাকলে, আমারও আছে। আপনার ভালো মুখোশের আড়ালে’র কুৎসিত মুখোশ আমি খুলে সবাইকে দেখিয়ে দিবো।
আপনি আপনি আজ আলতাফ চাচা’কে মে’রে’ছে’ন, আমি সবাইকে বলে দিবো। বলে দিবো।”

মেয়েটার কথা শুনে কেঁপে উঠলো, ফারহানে’র বক্ষ। কথাগুলো কেমন তী’রে’র মতো বিঁধেছে তার বুকে, অদৃশ্য এক যন্ত্রণা’য় বক্ষ নীল হয়ে আসছে। সহ্য করতে পারলো না, ফারহান মল্লিক। মুহুর্তেই ভয়ংকর ক্রো’ধে ফে’টে পড়লো। হন্তদন্ত হয়ে বসা থেকে উঠে, মেঝেতে পড়ে থাকা তরবারী’টি হাতে নিলো। দ্রুত গতিতে এক হাতে মেয়েটার মুখ চেপে ধরে চিবিয়ে চিবিয়ে শুধালো,

‘তার আগে আমি তোমাকেও খু’ন করে দিবো, বালিকা। মুখ বন্ধ করো, মুখ বন্ধ রাখো। নয়তো গলা কে’টে ফেলবো তোমার।”

কুহেলিকা হাসলো। আগের ন্যায় আর ভয় পেলো না, লোকটাকে। বরং ঠায় বসেই রইলো, নড়লো না একবিন্দু। সেভাবেই তাচ্ছিল্যের সহিত শুধালো,

“বাঁচিয়ে রেখে আপনি যে যন্ত্রণা দিচ্ছেন আমায়, সে যন্ত্রণা’র চেয়ে ম’র’ণ যন্ত্রণা ঢের সহজ!”

মুহূর্তেই মেয়েটাকে ছেড়ে দিলো, ফারহান মল্লিক। কোনো বাক্য ব্যয় না করে হন্তদন্ত পায়ে কক্ষ ছাড়লো। কক্ষ থেকে বের হয়ে একবার সতর্ক দৃষ্টিতে চারপাশ বুলিয়ে নিলো। না কেউ নেই। পুনরায় দরজায় তালা ঝুলিয়ে সাবধানি পায়ে মহলের পিছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে কোথাও চলে গেলো।
.
.
মহলে থাকা প্রতিটি প্রাণী গভীর আচ্ছন্ন। বাড়ির কর্তা’রা আজ মহলে ফিরবে না। সবাই ঘুমোলেও ঘুমায়নি, কিরণমালা ও বীণা। ফারহান মহলে পৌঁছেছে তা টের পায়নি তারা। কুহেলিকা’র জন্য চিন্তা হচ্ছে তাদের, কারো চোখে ঘুম ধরছে না। কিরণমালা নিজ কক্ষে কিয়ৎ ক্ষণ আশপাশ করে সাবধানী পায়ে কক্ষ থেকে আবারো বের হলো। ছোট দাদা-ভাইয়ের ঘরের দিকে উঁকি দিয়ে দেখে নিলো একবার। দরজায় এখনো মস্ত বড়ো একখানা তালা ঝুলছে।
মহলের এক কোণায় মশাল জ্বলছে। আগুনের লালচে আলোয় চারপাশ আবছা আলো-অন্ধকার। ধীরগতির এগিয়ে আসলো, কিরণমালা। অতঃপর দরজার কড়া নেড়ে মৃদু আওয়াজ করলো,

“কুহু ও কুহু? ঘুমিয়েছিস কুহু?”

“কুহু নয় ভাবিজান বলো। সে তোমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী আর তুমি তাকে নাম ধরে ডাকছো, কিরণমালা?”

পিছন থেকে ছোট দাদাভাইর কণ্ঠ শুনে চমকে উঠলো, কিরণমালা। চট করে পিছনে ঘুরে দেখলো, বুকে হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে ফারহান মল্লিক। অপ্রত্যাশিত লোকটাকে এখানে দেখে ভয়ে তার হাঁটু থরথর করে কাঁপছে। এই বুঝি দাদাভাই একখানা চড় দিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললো,

“আমার কথা অমান্য করে এখানে এসেছো, তুমি? কুহেলিকা’র কাছাকাছি আসতে তোমাদের আমি নিষেধ করছি না। তবুও তুমি এসেছো, তুমি আমাকে অমান্য করছো, কিরণমালা।”

তাকে অবাক করে দিয়ে ফারহান শান্ত কন্ঠে বললো,

“তুমি এতো রাতে এখানে কি করছো, বোন কিরণমালা? তুমি ঘুমাওনি কেন?”

কিরণমালা’র কম্পন বাড়লো। শুকনো ঢোক গিলে আমতা আমতা করে মিথ্যে করে বললো,

“দাদাজান… দাদাজান আমাকে এখানে পাঠিয়েছে দাদাভাই। দয়া করে আমায় মা’র’বে’ন না! আর কখনো আমি আসবো না এখানে। ক্ষমা করবেন দাদাভাই, এবারের মতো ক্ষমা করবেন!”

নিজের জন্য বোনের চোখে-মুখে ভয়, আতঙ্ক দেখে ফোঁস করে শ্বাস টানলো ফারহান মল্লিক। বোনের মিথ্যা ধরতে সময় লাগেনি তার। বোনের ভয় কাটাতে বোনের কাঁধে হাত রেখে স্নেহময়ী কণ্ঠে শুধালো,

“তুমি আমাকে খামোখা ভয় পাইয়াছো,বোন? আমি তোমায় খুব স্নেহ করি! আমি কখনো তোমায় মে’রে’ছি ? কেন এতো ভয় পাইতেছো আমায়? যাও নিজের কক্ষে যাও।”

“আপনাকে আমার বড্ড ভয় হয়, দাদাভাই! আপনার সর্বজনিন গম্ভীর মুখো ভঙ্গিমা দেখিলেই কলিজা কেপে উঠে আমার। আপনি কখনো বড় দাদা ভাইয়ের মতো সুন্দর করে হাসেন না। আপনাকে দেখলেই মনে হয় আপনি রেগে আছেন। আপনাকে আমার বড় ভয় হয়, ছোটভাই!”

বলতে বলতে নিজ কক্ষে’র দিকে দ্রুত পায়ে ছুটে গেল, কিরণমালা। বোনের কথা শুনে হুট করেই মাথা গরম হয়ে গেলো তার। একরাশ আক্রোশ নিয়ে বললো,

“হ্যাঁ, হ্যাঁ! মাহাদ ভাইকে তো পছন্দ হবেই। মাহাদ ভাই’ই হাসতে জানে তাই সে খুউবই ভালো। একমাত্র বোনের পছন্দ, মাহাদ ভাই। সদ্য বিবাহিত স্ত্রী’র পছন্দের লোক, মাহাদ ভাই। সব খানে মাহাদ ভাই আর মাহাদ ভাই। আমাকে তো আর পছন্দ করা যায় না। আমি পৃথিবীতে জন্ম হইয়াছি শুধু তোমাদের রঙ্গলীলা দেখিবার জন্য।”

ফারহান আর সময় নষ্ট করলো না। ততক্ষণাৎ নিজের কক্ষে প্রবেশ করলো। কুহেলিকা জড়সড় হয়ে পালঙ্কে’র এক পাশে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। ঘুমাচ্ছে নাকি সজাগ বুঝা যাচ্ছে না। ক্লান্ত হয়ে, ঘুমাচ্ছে বোধহয়।
জড়োসড়ো হয়ে ঘুমন্ত স্ত্রী’র মলিন মুখের দিকে তাকালো, ফারহান। তান্মধ্যে এক ভৃত্য মাথা নিচু করে খাবার দিয়ে গেলো, কক্ষে। ভৃত্য বের হতেই দরজা ভিতর থেকে আঁটকে দিলো ফারহান। ততক্ষণাৎ স্ত্রী’র ক্ষত স্থানে একবার হাত বুলিয়ে দিলো। বাগান থেকে কিছু ঔষধী পাতা নিয়ে এসেছে। সেগুলো থেঁতো করে ক্ষত স্থানে পাতার রস লাগিয়ে দিবার জন্য বসলো, পালঙ্কে।

“বাহ্! জমিদার বাড়ির পুত্রদের নিকট নারী ভোগ্যপণ্য বুঝি! যখন তখন আঘাত করবে, আবার মন চাইলে ক্ষ’ত জায়গায় প্রলেপ লাগাবে।”

কুহেলিকা’র কপালে হাত রাখতেই চোখ বন্ধ করে তাচ্ছিল্যের সহিত কথাগুলো বললো উঠলো, মেয়েটা। ফারহান মল্লিক নিজের কার্যে মনোস্হির করে গম্ভীর কণ্ঠে জবাব দিলো,

“অর্ধাঙ্গিনী ভুল করলে তাকে শাসন করবো, আবার ব্যথা পেলে ক্ষ’ত জায়গায় প্রলেপ লাগিয়ে বুকের মাঝে আগলে রাখবো। অর্ধাঙ্গন হিসেবে অর্ধাঙ্গিনী’কে ভালো রাখার দায়িত্ব জমিদার পুত্রের কাম্য।”

দুর্বল চোখ মেলে তাকালো, কুহেলিকা। মানুষটা এখন একদম নববী সাজে সেজেছে। আগের পোশাক, র’ক্ত শরীরে নেই। চোখ পুনরায় বন্ধ করলো। তার শরীর নিস্তেজ হয়ে আসছে। বাড়ন্ত শরীরে সারাটাদিন দানাপানি জুটেনি, তার মধ্যে সারাদিন কেঁদেছে। এভাবে আগে কখনো থাকেনি সে। ফারহান’কে বাঁধা দেওয়া শক্তি তার নেই। নিরব হয়ে রইলো, কুহেলিকা। পুনরায় ক্ষুধার তাড়নায় চোখ বন্ধ অবস্থায়ই টেনে টেনে বললো,

“আমায় একটুখানি ভাত দিবেন,ফারহান ভাই? ভীষণ ক্ষুধার্ত আমি, শ্বাস টানতে কষ্ট হচ্ছে।”

কত অসহায়ত্ব লাগছে মেয়েটাকে। গম্ভীর ফারহান মল্লিক যা দেখে হাসলো। বললো,

“জমিদার কন্যা বুঝলে এবার, এই ভাতের মূল্য কত।”

হাতের কাজটুকু সূক্ষ্ম ভাবে শেষ করে উঠে দাঁড়ালো, ফারহান। দ্রুত খাবার নিয়ে আসলো। এই খাবার তার জন্যই এনে রেখেছে সে। কুহেলিকা খাবারের ঘ্রাণ পেয়ে দ্রুত উঠে বসলো।
ফারহান নিজ হাতে ভাত মেখে এক লোকমা ভাত মুখের সামনে ধরে মৃদু কণ্ঠে বললো,

“খাও।”

কুহেলিকা চটজলদি লোকটার হাত থেকেই খেয়ে নিলো। অন্য সময় হলে এই অপছন্দের লোকটার হাতের খাবার খেতো না, সে। কিন্তু আজ নিরুপায়। ফারহান পরম যত্নে স্ত্রীকে খাইয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ করেই তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি জানান দিলো, তাদের কক্ষে আশেপাশে কেউ রয়েছে, একজোড়া চোখ তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। মুহুর্তেই চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো, ফারহান মল্লিকে’র। কে এই লোক? কার এতো দুঃসাহস রাত-বিরেতে জমিদার পুত্রের শয়ন কক্ষে উঁকি দেওয়ার। বাড়ির কর্তা’রা সকল পুরুষ মহলের বাহিরে। গিন্নি’রা, ছোটরা সবাই ঘুমোচ্ছে।নিদ্রাহীন থাকলেও কস্মিনকালে কেউ এমন অপকর্ম করবে না। আর রইলো মহলের ভৃত্য’রা? উঁহু সে সাহস কোনো ভৃত্য’র। তাহলে কে এই লোক? কার এতো বড় সাহস?

চলবে…..

[রিচেক করিনি আজ। সবাই রেসপন্স করবেন পেজে। কেমন লাগছে আজকের পর্ব? গল্পে কোথাও কোনো ভুল হলে অবশ্যই আমাকে আপনারা জানাবেন। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here