ওহে_প্রিয় #জান্নাতুল_নাঈমা #পর্ব_২৩

0
595

#ওহে_প্রিয়
#জান্নাতুল_নাঈমা
#পর্ব_২৩
____________
বাড়িতে দু দন্ড শান্তি তে বসতে পারছেনা হ্যাভেন। সারাক্ষণ জ্বালিয়ে মারছে আহি। কানের কাছে সর্বক্ষণ প্রেমময় বাক্য আওড়াচ্ছে। কখনো বা বাচ্চা দের মতো কোলে চড়ার বায়না করছে। হুটহাট এসে কপালে,গালে,ঠোঁটে চুমু দিচ্ছে। হ্যাভেন বিরক্ত হয়ে চোখ রাঙালেই ঠোঁট উল্টিয়ে ন্যাকা কান্না করে বলছে, ‘আপনি এতো আনরোমান্টিক কেনো ‘? রেগে গিয়ে রোমান্টিকতা দেখানোর নাম করে বিধ্বস্ত করে ফেললে চোখের পানি ফেলে বলবে,’আপনি খুব অসভ্য, খুব খারাপ আপনি ‘। ঢং দেখিয়ে অভিমান করে থাকবে কিছুক্ষণ পরই আবার গলা জরিয়ে বলবে, ‘ একটু ভালোবাসা দিন না ‘। সোফায় বসে কাজ করলে গলা জরিয়ে কোলে বসে থাকবে। শুয়ে থাকলে জোর পূর্বক বুকে মাথা রেখে নিজেও শুয়ে পড়ছে। গভীররাতে স্বেচ্ছায় কাপড় খুলে নিজেকে উজার করে দিবে। এসব যেনো আর নেওয়া যাচ্ছে না। এতোদিন সে জ্বালিয়েছে এখন আহি জ্বালাচ্ছে। ভালোবাসা, ভালোবাসা করে মাথা খেয়ে ফেলছে। এই মেয়ে কি বুঝেনা স্বেচ্ছায় জান কবজ আর হবেনা। হঠাৎ করেই সব হিসেবে গড়মিল ধরে গেলো। যতো যাইহোক এবার ফাঁদে পা দেবে না সে। এসব কপটতা তাঁর সাথে আর চলবে না। আহির টর্চার গুলোতে বিরক্ত হয়ে ইদানীং বাড়িতে খুব কম সময় কাটায় হ্যাভেন। আগের মতো বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় বা বাড়িতে প্রবেশের সময় আহিকে নিজ থেকে চুমু দিতে হয় না। বরং আহি নিজেই বএিশটা দাঁত বের করে হিহি’হিহি করতে করতে কপাল এগিয়ে দেয়। একজন মানুষ আরেকজন মানুষ কে প্রতিনিয়ত টর্চার করার জন্য কিছু করলে সে কাজ গুলো যদি ঐ মানুষ টা একটা সময় এসে এনজয় করে, স্বেচ্ছায় করার জন্য সুযোগ করে দেয় তখন টর্চার উল্টোদিকের মানুষ টাই হয়। যেমনটা এখন হচ্ছে হ্যাভেন। বাড়ির সবাই হ্যাভেনের এমন জব্দ হওয়া দেখে কখনো হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খায়। কখনো বা ভয়ে নিরব থাকে। না জানি ক্রোধের বসে কখন কি কেলেঙ্কারি ঘটিয়ে ফেলে বিশ্বাস নেই।
.
হুমায়ুন তালুকদার ডক্টরের সাথে কথা বলেছেন। আগের প্রেসক্রিপশনও দেখিয়েছেন। সব কিছু দেখে নতুন করে ওষুধ পএ লিখে দিয়েছেন। আহিকেও ফোনে সবটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বিপদ ঘটালো হ্যাভেন। তাঁর আড়ালে বড়সড় ষড়যন্ত্র চলছে তা আহির আচার-আচরণেই সন্দেহ করেছিলো। মনে হাজার সন্দেহ থাকলেও এতোদিন প্রকাশ করেনি। শুধু শেষটা দেখার অপেক্ষাতে ছিলো। অবশেষে দেখেও ফেললো। রাতে ঘুমানোর সময় আহি একগাদা ট্যাবলেট তাঁর সম্মুখে তুলে ধরলো। বললো,

-‘ এগুলো খেয়ে তারপর ঘুমাতে যান ‘।

ভ্রুযুগল কুঁচকে আহির মুখপানে তাকালো হ্যাভেন। তীক্ষ্ণ গলায় প্রশ্ন ছুঁড়লো,

-‘ এসব কিসের ওষুধ ‘?

এক ঢোক গিললো আহি। হাতে থাকা গ্লাসটা পাশের টেবিলে রেখে হ্যাভেনের মুখোমুখি হয়ে বসলো। হ্যাভেন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়েই আছে। সে দৃষ্টিতে নির্নিমেষ তাকিয়ে আহি বললো,

-‘ আমি বাবাকে বলেছিলাম আপনার যে একটা অসুখ রয়েছে সেটা সাড়িয়ে তুলতে চাই। তাই বাবা আমাকে সাহায্য করেছে। প্লিজ আপনি ওষুধ গুলো খেয়ে নিন। আপনার সব অসুখ সেড়ে যাবে। আমরা অনেক সুন্দর একটা জীবন উপভোগ করবো। আমাদের দাম্পত্য জীবনে কোন অসুখ থাকবেনা থাকবে শুধু সুখ ‘।

বলেই ওষুধ গুলো এগিয়ে দিতেই মাথা খারাপ হয়ে গেলো হ্যাভেনের৷”কতো বড় সাহস হলে এতোদূর যাওয়া যায়? এই মেয়ের বাড়াবাড়ি আজ কমাতেই হবে” ভেবেই একহাতে পিছন থেকে আহির এক হাত মুচড়ে ধরে ওষুধ গুলো কেড়ে নিলো এবং জোর করে আরেক হাতে আহির মুখেই ওষুধ গুলো ঢুকিয়ে মুখ চেপে ধরে দাঁত চেপে বলতে থাকলো,

-‘ আমার না তোর অসুখ কমাবো আজ সবগুলোই তিন সেকেন্ডে গিলবি গিল গিল। উহুম নো নড়নচড়ন একদম মাথা গরম করবিনা একদম চিবিয়ে খাবো আজ তোকে যদি এটা না গিলিস গিল বলছি গিল ‘ বলেই ঠোঁট কামড়ে ধমকে ওঠলো।

বেচারি ওষুধগুলো গিলতেও পারছেনা ফেলতেও পারছেনা৷ পানি ছাড়া শুকনো ট্যাবলেট গিলা সম্ভব নাকি? হাতে ব্যাথায় চোখ,মুখ রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে মেয়েটার৷ মুখ বন্ধ তারওপর ওষুধ গুলো জ্বিহ্বার লালায় গলতে শুরু করেছে। কি ভয়ংকর পরিস্থিতি! শরীরে ঘাম ছেড়ে দিয়েছে আহির। বদ্ধ ঘরে দুজন মানুষের ক্রমাগত ভারী নিঃশ্বাসের শব্দ ভয়ংকর নৈশব্দ্যের সৃষ্টি করেছে। প্রচন্ড গা গুলাতে শুরু করলো আহির। আর সহ্য করতে না পেরে ধস্তাধস্তি শুরু করে দিলো। হ্যাভেন মুখ থেকে হাত সড়িয়ে গলা চিপে ধরতে যাবে এমন সময় গা ভর্তি বমি করে দিলো আহি। ফর্সা মুখশ্রীর রক্তিম আভা, রক্তিম চোখ হ্যাভেনের সমস্ত ইন্দ্রিয় যেনো নাড়িয়ে দিলো। আহির দূর্বল শরীরটা নেতিয়ে পড়লো বিছানায়৷ সমস্ত রাগ নিভে গিয়ে চোখে,মুখে ভর করলো একরাশ মায়া। সেই মায়ার টানেই মাথায় হাত রেখে কয়েকবার নাম ধরে ডাকলো ‘আহি’। আহি চোখ বুজেই শুয়ে রইলো হ্যাভেনের দিকে ফিরেও তাকালো না। শুধু বিরবির করে বললো,

-‘ ছোবেন না আপনি আমায়। আপনি খুব খারাপ, খুব খারাপ আপনি ‘।

বমি হওয়া তে শরীর দূর্বল লাগছে বুঝলো হ্যাভেন তাই আর কিছু বললো না। শুধু বমির বিচ্ছিড়ি গন্ধে মুখোভঙ্গি বিকৃত করে ফেললো। নাক,মুখ কুঁচকে বিছানা ছেড়ে নামলো। কয়েক পা এগিয়ে আবার থেমে গেলো পিছন ঘুরে ভৎসনার সুরে বলে ওঠলো,

-‘ এই খরগোশের বাচ্চা তোর সাহস হয় কি করে আমাকে উল্টাপাল্টা ওষুধ খাওয়াতে আসার ‘?

উত্তর দিলো না আহি। উত্তর না পেয়ে গটগট পায়ে বাথরুম ঢুকে গেলো হ্যাভেন।

রোগি যদি চিকিৎসা নিতে না চায় আশেপাশের মানুষ শত চেষ্টা করেও লাভ হয়না৷ হ্যাভেনের চিকিৎসা করানোও সম্ভব হলোনা। আহিও মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো ‘ আমি আর আপনাকে ট্রিটমেন্টের জন্য জোর করবোনা হ্যাভেন এমন একটা দিন আসবে আপনি নিজ থেকেই নিজের ট্রিটমেন্ট করাবেন। সেই সাথে এখনকার করা ভুলের জন্যও অনুতাপ করবেন ‘।
.
ডিভোর্স পেপারে সাইন করেনি জিসান। তাই নিয়ে রূপসার মাথা প্রচন্ড গরম। জিসান ডিভোর্স পেপারে সাইন না করলে হ্যাভেনকে সেকেন্ড টাইম ফিরে পাওয়া জাষ্ট অসম্ভব। এ’কমাসে হ্যাভেনের সাথে যোগাযোগ রেখেছে সে। অসংখ্যবার ভালোবাসার দাবিও করেছে৷ কিন্তু প্রতুত্তরে হ্যাভেন শুধু মুচকি হেসেছে। আগের সেই হ্যাভেন আর এই হ্যাভেনকে একদম মেলাতে পারছেনা। রাতের সাথে যেমন দিনের কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। তেমনি অতিতের চেনা পরিচিত হ্যাভেনের সাথে বর্তমানের হ্যাভেনের মিল পাওয়াও দুষ্কর। বর্তমান হ্যাভেন পুরোটাই যেনো রহস্যেঘেরা। যে মানুষ টার চোখের ভাষা একসময় অতিসহজেই পড়ে ফেলা যেতো আজ সেই মানুষ টার চোখের ভাষা পড়া তো দূরের কথা বোঝাও মষ্কিল। ভেবেছিলো হ্যাভেনকে ভুলিয়ে ভালিয়ে নিজের কাছে টেনে নেবে। একবার যদি খুব গভীরে যেতে পারে তাহলেই কেল্লাফতে। কনসিভ করে ফেলবে বাচ্চার জন্য হলেও বাঁধা পড়বে হ্যাভেন তাঁর কাছে। কিন্তু সে অবদি যেতেই পারছেনা। যতোবারই কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করেছে ততোবারই হ্যাভেন থামিয়ে দিয়েছে আর বলেছে, ‘ডিভোর্স না হওয়া অবদি তুমি জিসানের থালার ভাত আর অন্যের থালার ভাত আমি খাইনা’।
.
বেলকনিতে বসে কফি খাচ্ছে হ্যাভেন। মাঝে মাঝে আড়চোখে আহিকেও দেখছে। কালো রঙের সুতি শাড়ি পড়েছে আহি। ভরসন্ধ্যা বেলা কালো শাড়িতে খোলা চুলে মারাত্মক সৌন্দর্য ভর করেছে মেয়েটার ওপর। সচরাচর খোলা চুলে আহিকে দেখা যায় না। শুধু সকাল ছাড়া। সবসময় মাঝখানে সিঁথি করে খোঁপা করে রাখে।
অন্যান্য মেয়েদের মতো আহি ঘনকালো লম্বা চুলের অধিকারী নয়। বরং তাঁর চুলগুলো হালকা কোঁকড়ানো পিঠ অবদি। কাঁধ অবদি সোজা হলেও নিচের দিকে বেশ কোঁকড়ানো। চুলের কালারটাও ডিফারেন্ট হালকা বাদামি বর্ণের। অন্যান্য মেয়েদের মতো তাঁর কাজল কালো চোখ নেই বরং ডাবের পানির ন্যায় ঘোলাটে চোখ দুটোর মনি হালকা বাদামি বর্ণের। কফির মগে চুমুক দিচ্ছে আর আহির সারা অঙ্গে সন্তর্পণে চোখ বুলাচ্ছে হ্যাভেন। পৃথিবীতে কাজল কালো চোখের রমণীদের নিয়ে কবিরা অসংখ্য কবিতা বুনে গেছেন৷ আহির মতো ঘোলাটে চোখের রমণীদের জন্য কোন কবিতা কেনো বুনেনি কেউ? সে কি বুনে দেবে এক লাইন কবিতা?

-‘ কি ব্যাপার হা করে তাকিয়ে আছেন কেনো? মগটা দিন কফিতো শেষ’।

হাতে তুরি বাজিয়ে কথাটি বললো আহি৷ এতোটাই মগ্ন হয়ে দেখছিলো যে কখন আহি সম্মুখে এতো কাছে চলে এসেছে টেরই পায়নি। তাই খানিকটা চমকে ওঠলো। তা দেখে আহির ঠোঁটে দুষ্টু হাসি। আমতা আমতা করে কফির মগটা হাতে ধরিয়ে ওঠে দাঁড়ালো হ্যাভেন। আহি মগটা নিয়ে রুমে ফিরে গিয়ে আবার দ্রুত হ্যাভেনের সম্মুখে এসে দাঁড়ালো। ডানহাত বাড়িয়ে হ্যাভেনের বুকের বা’পাশে শক্ত করে চেপে ধরলো। হ্যাভেন ধমক দিতে গিয়েও দিতে পারলো না। বুকের ভিতর কেমন চিনচিনে ব্যাথা দিয়ে ওঠার পাশাপাশি শান্তি শান্তি অনুভব হলো। আহি হ্যাভেনের মুখপানে নির্নিমেষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে হাতটা বা’পাশে শক্ত করে চেপে ধরেই রইলো। এক ঢোক গিললো হ্যাভেন। তাঁর দৃষ্টিও আহির শুভ্র মুখশ্রী তে নিবদ্ধ । নিজেকে ধাতস্থ করে নিয়ে আহির হাতের ওপর নিজের হাত রেখে সড়াতে নিতেই আহি শীতল কন্ঠে বলে ওঠলো,

-‘ আপনারতো হার্টবিট দ্রুত চলছে হ্যাভেন ‘।

বিচলিত হয়ে গেলো হ্যাভেন। শতচেষ্টা করেও নিজের কাঠিন্য রূপের জাগরণ ঘটাতে পারলো না। আহি এক পা এগিয়ে অন্য হাত হ্যাভেনের কাঁধে রাখলো। এবার হ্যাভেন ঘামতে শুরু করলো৷ আহি একইভাবে তাকিয়ে বললো,

-‘ একি আপনি তো ঘামছেন এতো নার্ভাসনেস কেনো? আপনার মাঝে নব্য অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে হ্যাভেন আপনি কি বুঝতে পারছেন? অনুভব করতে পারছেন’?

ফোন বেজে ওঠতেই দুজনই চমকে গেলো। চট করে আহির থেকে সড়ে গিয়ে পিছন ঘুরে প্যান্টের পকেট থেকে ফোন বের করলো। রিসিভ করার পূর্ব মূহুর্তেই আহি ফোনটা কেড়ে নিলো। আঙুল ওঠিয়ে বললো,

-‘ এই মেয়েকে আজ আমি দেখেই ছাড়বো ‘। বলেই রুমের দিকে পা বাড়িয়ে ফোন রিসিভ করতে নিবে তখনি হ্যাভেন পিছন থেকে হাত আঁটকে ধরে ক্রোধান্বিত স্বরে বললো,

-‘ ফোনটা দাও ‘।

আহি এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে রুমে গিয়ে ফোন রিসিভ করেই বললো,

-‘ এই বেহায়া মেয়ে তোর লজ্জা করেনা দিন নাই রাত নাই অন্যের জামাইকে বিরক্ত করিস থার্ডক্লাস মেয়ে কোথাকার। নোংরামি অন্য জায়গায় গিয়ে কর আমার বরের কাছে তোর কি ‘?

-‘ আহি ‘ ধমকে ওঠে এগিয়ে আসতেই আহি সড়ে গেলো। হ্যাভেন কাছে গিয়ে জোর পূর্বক ফোন নিতে চাইলেই দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। না পেরে হ্যাভেন আহিকে টেনে বিছানায় ফেলে নিজের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে আবদ্ধ করে ফেলে। নিজের দুপা দিয়ে আহির দুপা এবং একহাতে আহির দুটো হাত আঁটকে অন্যহাতে ফোন নিজের কানে দিয়ে হ্যালো বলে। আহি এবার চিৎকার শুরু করে দিয়েছে। প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে হ্যাভেনের গালে সাজোড়ে এক কামড় দিলো। হ্যাভেন সেদিকে পাত্তা না দিয়ে রূপসাকে বললো,

-‘ এগারোটার দিকে আসছি ‘।

ফোন কাটতেই আহি আরো হিংস্র হয়ে কামড়াতে যেতেই হ্যাভেন ফোনটা বিছানার একপাশে ছুঁড়ে ফেলে বললো,

-‘ বড্ড বেশী বুঝো তুমি মিসেস. এবার এই বেশী বোঝার দাম দাও ‘ বলেই উন্মাদের মতো আহির শরীরে টর্চার করতে থাকলো। প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে কাছে গেলেও ধীরে ধীরে দুজনই উন্মাদনায় মত্ত হলো। কিছুক্ষণ আগে কি হয়েছে তা যেনো কারোরই বোধগম্য নেই। অনেকটা সময় পর আহিকে ছাড়লো হ্যাভেন।

-‘ আপনি ওর কাছে যাবেন না হ্যাভেন। একটা মেয়ে কখনো তাঁর স্বামীর ভাগ কাউকে দিতে পারে না ‘। চোখ বুজে বিছানার চাদর খামচে ধরে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো আহি।

চোখ বুজে নিশ্চুপ থাকলো হ্যাভেন৷ শুধু তাঁর নিঃশ্বাসের প্রবল অস্থিরতা বুঝতে পারলো আহি।

-‘ আপনি কেনো এমন করছেন? যে মেয়েটা আপনাকে একদম নিঃশ্বেষ করে দিয়েছে তাঁর ডাকে কেনো বার বার সাড়া দিচ্ছেন? যদি তাঁকে নিয়েই থাকবেন তাহলে আমাকে ছেড়ে দিন। আমি কোন চরিএহীনের সঙ্গে সংসার করতে চাইনা। স্বামীর ভালোবাসা নাই পেলাম তবুও চরিএবান হলে এও শান্তি ‘।

-‘ উফফ সুন্দরী বকবক করোনা তো ভীষণ ক্লান্ত আমি মেয়ে মানুষ সামলানো এত্তো কঠিন। বাঘিনী হতে গিয়েছিলেনা? মিউ মিউ করো কেনো এখন ‘?

-‘ কয়টা মেয়ে সামলিয়েছেন আপনি ‘?

প্রশ্নটি শুনে হো’হো করে হাসতে শুরু করলো হ্যাভেন। আহির জেলাসি আচরণ গুলো তাঁর মনে পৈশাচিক আনন্দ দেয়। হাসতে হাসতেই আবারো আহির অনেকটা কাছে চলে গেলো৷ দুহাতের আঙুলের ফাঁকে আঙুল ঢুকিয়ে শক্ত করে ধরে গলায় মুখ ডুবিয়ে উন্মুত্ত স্বরে বললো,

-‘ এগারোটার পর লাইভ দেখাবো তৈরী থেকো ‘।

কথাটি শোনামাএই চমকে গিয়ে হ্যাভেনের দুহাত শক্ত করে চেপে ধরে ভারী কন্ঠে বললো,

-‘ মানে ‘?

নাক ঘষতে ঘষতে হ্যাভেন উত্তর দিলো,

-‘ দেখলেই বুঝবে ‘।

দুচোখ উপচে পানি বেরিয়ে এলো আহির। কি দেখাবে হ্যাভেন? অসহনীয় কিছু নয় তো? বুকের ভিতরটা বড্ড অস্থির হয়ে ওঠলো। বুঝতে পেরে মুচকি হেসে আহির কানের লতিতে ওষ্ঠ ছুঁয়িয়ে ওঠে গেলো হ্যাভেন।

চলবে….
পুরোপুরি সুস্থ হইনি৷ তবে আল্লাহর রহমতে এবং আপনাদের দোয়ায় জ্বর কমে গেছে। এন্টিবায়োটিক খাওয়ার ফলে দিনরাত ঘুমাতে ঘুমাতে চোখ খুলতে পারিনা। একটু পর পর চোখে পানি দিতে হয়েছে এই পার্টটা লিখার সময়। মন,মস্তষ্ক বলে লিখ চোখ বলে ঘুমা ঘুমা বেশী ঘুমও শরীরের জন্য ক্ষতিকর তাই ঘুমকে জোর করে আঁটকে লিখলাম। রিচেক দেওয়া হয়নি তাই ভুলগুলো ধরিয়ে দেবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here