ওহে_প্রিয় #জান্নাতুল_নাঈমা #পর্ব_৪৫

0
541

#ওহে_প্রিয়
#জান্নাতুল_নাঈমা
#পর্ব_৪৫
_________________
সকালের ঘুরাঘুরি শেষে বাড়ি ফেরার পর আহির সঙ্গে আর কথা হয়নি হ্যাভেনের। বিয়ের অনুষ্ঠান চলাকালীন দু’একবার দেখা হয়েছে তবে কোন বাক্য বিনিময় হয়নি। সন্ধ্যার পর কনে বিদায়ের ক্ষণে দূর থেকে সকলের পাশাপাশি আহিকেও অশ্রুপাত করতে দেখলো হ্যাভেন। এ বাড়ির সকলকে খুব তাড়াতাড়িই আপন করে নিয়েছে আহি। নিজেকে যতোই কঠোর প্রমাণ করার জন্য ওঠে পড়ে লাগুক না কেনো মেয়েটার মন ভীষণ নরম। সকলেই ভীষণ কান্নাকাটি করছে। রিদির মা জ্ঞান হারিয়েছে তাই সকলে তাকে ধরাধরি করে ভিতরে নিয়ে গেছে। একে একে সকলেই ভিতরে যাচ্ছে। হ্যাভেন আহিকেও ব্যস্ত ভঙ্গিতে ভিতরে যেতে দেখলো। ছোট্ট একটি নিঃশ্বাস ছেড়ে সেও হ্যারিকে কল করে ছাদের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো।
.
রাত আট টা। বাড়ির মুরব্বিরা বসে গল্প গুজব করছে। যাদের খাওয়া প্রয়োজন তারা খেয়ে নিচ্ছে। আত্মীয় স্বজনরা যে রুম ফাঁকা পেয়েছে সে রুমেই শুয়ে বসে রেষ্ট করছে। শাড়ি পাল্টানোর জন্য
কোন রুম ফাঁকা না পেয়ে নিরাশ হয়ে নানুমনির রুমে গেলো আহি। সেখানেও একি অবস্থা। রুবিনা,রত্না আরো ক’জন মহিলা মিলে আজ কে কোন রুমে শুবে তা নিয়ে আলোচনা করছে। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নানুমনির রুমের সামনে থেকেও সরে গেলো সে। আর বুঝলো আজ রাতে শোয়া নিয়ে বেশ ঝামেলা পোহাতে হবে। না জানি কতোজনকে গাদাগাদি করে ঘুমাতে হবে। ভাবতেই অস্থির হয়ে ওঠান পেরিয়ে চাপকলের কাছে এসে কল চেপে চোখে মুখে পানির ঝাপটা দিলো। শাড়ি চেঞ্জ করতে না পারলেও মুখের মেক-আপ সহ লিপস্টিক কাজল ওঠাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো। পাশের বাথরুম থেকে ফ্রেশ ওয়াশ বের করে সেটি দিয়ে ভালো ভাবে মুখ ধুয়ে নানুমনির রুমে গিয়ে টিস্যু পেপার দিয়ে মুখ মুছে নিলো। ভাবলো এবার নানুমনির কাছে একটু বসবে। কিন্তু চেয়ে দেখলো এতো মানুষের মাঝে একটু বসার জায়গাও নেই। গাদাগাদি করে বসা গেলেও এদের ভীরে প্রচন্ড অস্বস্তি লাগবে। তখনি মনে পড়লো হিয়া,শশীদের কথা। আর এও মনে পড়লো তারা সকলে মিলে ছাদে ছোট খাটো পার্টির আয়োজন করেছে। কি সব ছাইপাসও নাকি গিলবে ভাবতে ভাবতে সেও ছাদে চলে গেলো। এবং দেখতে পেলো সকলে মিলে বেশ আড্ডার আসর জমিয়েছে। তাদের থেকে বেশ দূরে বর্ডার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফোঁকছে হ্যাভেন। পড়নে আঠারো,ঊনিশ বছরের যুবকদের মতো সাদা একটি শর্ট প্যান্ট, কালো পাতলা একটি টিশার্ট। চোখ, মুখ কুঁচকে হ্যাভেন থেকে চোখ সরিয়ে হিয়া,হ্যারি,হিরা,শিফা,শশী,রিমনের দিকে তাকালো। তারা কোন একটা খেলা খেলছে। কিছু সময় খেয়াল করতেই বুঝলো তারা ট্রুথ এন্ড ডিয়ার খেলছে। মৃদু হেসে তাদের দিকে এগিয়ে গেলো সে। তাকে দেখে সকলেই হৈহৈ করে ওঠলো তখনি পিছন তাকালো হ্যাভেন। আহি’কে দেখে কিছুটা ঘাবড়ে গেলো এবং উৎকন্ঠা হয়ে বললো,

-‘তুমি এখানে কেনো যাও নিচে যাও। ঘুমিয়ে পড়ো গিয়ে ‘।

আশ্চর্যান্বিত হয়ে হ্যাভেনের দিকে তাকালো আহি। তারপর হিয়াদের দিকে তাকিয়ে বললো,

-‘ এখানে আমার আসা নিষেধ কেউ বলোনি তো ‘?

শিফা বাদে প্রায় সকলেই কাচুমাচু হয়ে বসে রইলো। হিয়া ইশারায় ইঙ্গিতে বোঝালো তারা একটুআধটু ড্রিংক করবে আজ। আহি কিছুটা বুঝলেও ক্লিয়ার ভাবে জানতে চাইলো। তাই হিয়া ওঠে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করে বললো,

-‘ ভাবি অনেক কষ্টে দাদানকে রাজি করিয়েছে। বিয়ারের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু দাদানের শর্ত ছিলো তোমাকে এসবে নেওয়া যাবে না ‘।

কথাটা শুনে আহি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তে হ্যাভেনের দিকে তাকিয়ে হিয়া’কে বললো,

-‘ আচ্ছা তোমরা এনজয় করো আমি তোমার দাদানের সঙ্গে কিছু জরুরি কথা বলেই চলে যাবো ‘।

সারাদিনে আহি বেশ খেয়াল করেছে হ্যাভেন এবং রিজভীকে। দুজনেই দুজনকে এড়িয়ে চলেছে কেউ কারো সঙ্গে কথা বলেনি। হিয়ার সঙ্গে স্বাভাবিক হতে পেরেছে অথচ রিজভীর সঙ্গে হতে পারেনি। তাই আহি ভেবেছিলো এ বিষয়ে হ্যাভেনের সঙ্গে কথা বলবে। হ্যাভেনকে এক পাশে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এ সুযোগ টা’কেই কাজে লাগালো৷ গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গিয়ে হ্যাভেনের ডান পাশে দাঁড়ালো সে। হ্যাভেন সিগারেটে শেষ কয়েক টান দিয়ে নিচে ফেলে দিয়ে বাম পাশে মুখ ঘুরিয়ে ওষ্ঠজোরা একবার চৌকা করে ধোঁয়া ছাড়লো তো আরেকবার সম্পূর্ণ হা করে ধোঁয়া ছেড়ে ডানপাশে আহির দিকে চেয়ে মুচকি হাসি দিলো। আহি শাড়ির আঁচলে মুখ চেপে চোখ কটমট করে চেয়ে দাঁত চিবিয়ে চিবিয়ে বললো,

-‘ আহা মনে হয় বিশ্বজয় করলেন এমনভাবে হাসছেন ‘?

হ্যাভেন ভ্রু নাচিয়ে ওষ্ঠ কোণে দুর্বৃত্ত হাসি ফুটিয়ে উত্তর দিলো,

-‘ বলতে পারো বিষয়টা তেমনই। বউয়ের সামনে মাথা উঁচু করে বুক ফুলিয়ে ক’জন এভাবে সিগারেট ফোঁকতে পারে ‘?

হাসলো আহি। হাসিটায় কতোটা অপমান মিশানো ছিলো তা শুধু হ্যাভেনই জানে। তবুও আহির তিক্ত বুলি শোনার অপেক্ষাতে ছিলো৷ তার অপেক্ষাটি খুব বেশী দীর্ঘ করলো না আহি। দাঁত কিড়মিড় করতে করতে বললো,

-‘ হ্যাঁ… বুক ফুলিয়ে, মাথা উঁচু করে দুনিয়ার যতো অপকর্ম আছে তা কেবল আপনার দ্বারাই সম্ভব ‘।

-‘এই শোনো ঝগড়া করার মুড নেই। তোমরা মেয়ে’রা প্রচন্ড ঝগরাটে হও। নিচে যাও আর ঘুমিয়ে পড়ো সারাদিন বসার জন্য তেমন সুযোগ পেয়েছো বলে মনে হচ্ছে না। সো রেষ্ট করো গো ‘।

-‘এই আপনার সমস্যা কি এমনিতে তো গা ঘেঁষে থাকার চেষ্টা করেন এখন তাড়িয়ে দিচ্ছেন কেন? আমি আপনার সঙ্গে খোশগল্প করার জন্য আসিনি বরং প্রয়োজনেই এসেছি। আর শুনুন এখানে কি হচ্ছে সেটাও আমি জানি তাই অপকর্ম নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই ‘।

মুখের ওপর থেকে আঁচল সরিয়ে বেশ মেজাজ দেখিয়ে এক দমে কথাটা বললো আহি। হ্যাভেন তার দিকে ভাবুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। আহির নজরও তার দিকে তীক্ষ্ণ। এক ঢোক গিলে দৃষ্টিতে শীতলতা মিশিয়ে মাতাল করা কন্ঠে হ্যাভেন প্রশ্ন করলো,

-‘কি বলবে বলো ‘?

হ্যাভেনের কন্ঠস্বর শুনে বুকটা কেঁপে ওঠলো আহির। দৃষ্টির প্রখরতা কমিয়ে সচকিত হয়ে প্রশ্ন করলো,

-‘ নেশা করেছেন ‘?

বাঁকা হাসলো হ্যাভেন দৃঢ় দৃষ্টি তে তাকিয়ে দৃঢ় কন্ঠে বললো,

-‘ করতে তো চাই নেশা তো ধরা দেয় না ‘।

-‘ মানে ‘?

-‘ কিছুনা তুমি কিছু বলতে এসেছো সো সেটা বলো আমাতে হারাতে নিশ্চয়ই আসোনি তাহলে কেনো হারাচ্ছো ‘?

-‘ আশ্চর্য! আপনি নিজেকে কি মনে করেন ‘?

-‘ আরে রেগে যাচ্ছো কেন তুমি কি বলতে এসেছো সেটা বলো ‘।

চরম অস্বস্তি নিয়ে তীক্ষ্ণ কন্ঠে আহি বললো,

-‘ সারাদিন খেয়াল করলাম আপনি এবং রিজভী ভাইয়া দুজন দুজনকে এড়িয়ে চলছেন৷ কেউ কারো সঙ্গে কথা বলছেন না এটা কি ঠিক? হিয়ার সঙ্গে যখন স্বাভাবিক হয়েছেন রিজভী ভাইয়ার সঙ্গেও স্বাভাবিক হয়ে যান ‘।

চোখে, মুখে গম্ভীরতা টেনে এনে আহির থেকে দৃষ্টি সরিয়ে হ্যাভেন বললো,

-‘ এসব বিষয়ে এতো মাথা ঘামাচ্ছো কেন আহি? সব ঠিক হয়ে যাবে পরিস্থিতি’টা এমন তৈরি করেছে ওরা যে স্বাভাবিক হতে টাইম লাগবে। যাই হোক না কেনো হিয়া আমার ছোট বোন। আমি রিজভী’কে ক্ষমা করতে পারছিনা ওর উচিত হয়নি বিয়ের আগেই এভাবে আমার বোনকে স্পর্শ করা ‘।

-‘ হ্যাভেন… হিয়া আপনার বোন তাই মেনে নিতে পারছেন না অথচ হিরা অসংখ্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জরিয়ে ডেটে যাচ্ছে। আপনি একবার নিষেধ অবদি করেন নি কখনো। ও যেসব মেয়েদের সঙ্গে জড়াচ্ছে তারা আপনার বোন না কিন্তু তারা আপনার মতোই কারো না করো বোন এটা কেন ভাবেন না’।

-‘ তুমি ঐসব মেয়েদের সঙ্গে হিয়ার তুলনা করতে পারোনা। তাছাড়া হিরার সঙ্গে যাদের রিলেশনশিপ আছে তাদের ক্যারেক্টার সম্পর্কে বেশ ধারণা রয়েছে আমার৷ যদি অন্যায় দেখি অবশ্যই নিষেধ করবো। যতোক্ষণ মেয়ে রাজি ততোক্ষণ আমি কিছু বলতে পারিনা। সবারই ব্যাক্তিগত স্বাধীনতা রয়েছে সেখানে আমি হস্তক্ষেপ করতে পারিনা। যতোটুকু পারি শাসন করি। গোপনে কার সঙ্গে কি করে বেড়াচ্ছে এসব কানে এলেও সরাসরি এট্যাক করতে পারিনা ‘।

হ্যাভেনের কথাটি পছন্দ হলো না আহির। তাই ক্ষুব্ধ হয়ে বললো,

-‘ আমি কারো সঙ্গে তুলনা করছি না৷ আর আপনি এসব কি বলছেন হিরা যাদের সঙ্গে মিশে তাদের ক্যারেক্টার ভালো না তাহলে আপনার ভাইও ক্যারাক্টার লেস ‘।

-‘ উত্তেজিত হচ্ছো কেনো আহি? আমি তো বলিনি হিরা গুড ও যেমন যাদের সঙ্গে মিশে তারাও তেমন ‘।

-‘ আপনি এসব জেনে বুঝেও চুপ থাকবেন ‘?

-‘ আরে অদ্ভুত ওরা ওপেনলি কিছু করছে? নাকি দিন-রাত আমার বাড়িতে বসে আমার সমানে এসব করে বেড়াচ্ছে? এ দুনিয়াতে ক’জনের খবর রাখো ক’জনের ব্যপারে জানো তুমি? হিরা আমার ভাই তার দশটা গার্লফ্রেন্ড আছে তাদের সঙ্গে সে কতটা ঘনিষ্ঠ তা শুধু সে আর তার গার্লফ্রেন্ডরাই জানে। আমরা দূর থেকে শুনি সে হিসেবে শাসন যা করা লাগে করি। এর বাইরে আর কি করবো ‘।

বেশ অনেকটাই রেগে গেছে হ্যাভেন৷ আহি নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে। সত্যি সে কি বলতে এসে কোন টপিকে চলে গেছে। এতো ঘাটাঘাটি উচিত হয়নি তার। বর্তমান যুগটাই এমন তারওপর যারা এসব রাজনীতিতে জরিয়ে আছে তাদের ক্যারেক্টারের কোন ঠিক নেই। শুধু শুধু কথা বাড়ালো সে। মনটা খারাপ হয়ে গেলো আহির৷ অনেকদিন পর হ্যাভেন তার ওপর এভাবে সিরিয়াস রাগ দেখালো। বুকটা কেমন কাঁপছে তার। তাই সিদ্ধান্ত নিলো চলে যাবে ছাদ থেকে। এক পা পিছিয়ে নিজেও ঘুরতে যাবে তখনি হাত চেপে ধরলো হ্যাভেন। চমকে তাকালো আহি। হ্যাভেনও তার চিকচিক করে ওঠা দৃষ্টিতে দৃষ্টি মেলালো। নরম কন্ঠে বললো,

-‘ আহি…যাদের চরিত্রহীন থাকে তাদের চরিত্র নিয়ে এতো ঘাটাঘাটি করে কি লাভ? যেসব মেয়েরা রাত নেই দিন নেই ক্লাবে যায় এক ঝাঁক ছেলেদের সঙ্গে পার্টি করে। সেসব মেয়েদের চরিত্র কতোটা ভালো হতে পারো বলো? হিরা অমন মেয়েদের সঙ্গেই সম্পর্কে জরায়। কোন মেয়ের সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলা খেলে না। জানো তো কাকি নেই কাকা কাছে থাকে না। বেপরোয়া ভাবে চলা ফেরা করে। আমার জীবনে যেমন তোমাকে পেয়েছি ওর জীবনেও এমন একজন শুভাকাঙ্ক্ষী এলে সবটা ঠিক হয়ে যাবে ‘।

কিছু বললো না আহি শুধু হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করলো। হ্যাভেন কপাল কুঁচকে চোখ দুটো ছোট ছোট করে তাকিয়ে বললো,

-‘ রাগ করছো কেনো ‘?

-‘ রাগ করিনি ছাড়ুন আপনারা আপনাদের কাজ করুন আমি যাই ‘।

-‘ আচ্ছা গিয়ে শুয়ে পড়ো সারাদিন বেশ ধকল গেছে এখন ঘুমানো উচিত’।

-‘ হ্যাঁ চৌদ্দ জন গাদাগাদি করে শুয়ে ঘুমাই গিয়ে ‘। বলেই এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে দিলো আহি। সঙ্গে সঙ্গে আবারো হাত টেনে বর্ডার ঘেঁষে দাঁড় করালো হ্যাভেন। আহির দু’পাশে হাত দিয়ে বর্ডার চেপে ধরলো। যাতে আহি যেতে না পারে। আহি এতে রেগে গিয়ে বললো,

-‘ এসব কি হচ্ছে ‘?

-‘ আমারও কিছু জরুরি কথা আছে সুন্দরী ওয়েট ওয়েট ‘।

হ্যাভেনের মুখের গরম শ্বাস আহির মুখে পড়তেই চোখ, মুখ কুঁচকে ফেললো আহি বললো,

-‘ ইশ সরুন যা বলার সরে বলুন ‘।

মৃদু হেসে সরে দাঁড়ালো হ্যাভেন আহিও সোজা হয়ে স্বাভাবিক ভাবে দাঁড়ালো।

আজ যে শোয়া নিয়ে ভেজাল হবে। এ বিষয়টা আগে ভেবে দেখেনি হ্যাভেন। তবে এ বাড়িতে ঘর তো কম নেই আবার মেহমানও কম নেই। এক বিছানাতে কমপক্ষে তিন,চারজন করে শুতেই হবে। নিচেও বিছানা পাততে হবে হয়তো৷ সে থাকতে আহিকে রাতে শোয়া নিয়ে প্রবলেম ফেস করতে হবে? তারপরই মনে পড়লো চিলেকোঠার ঘরটির কথা। নিচে সবাই যেভাবে খুশি থাকুক সে আর আহি না হয় আজ রাতটা ছাদে দাঁড়িয়ে খোলা আকাশ,প্রকৃতির নির্মল বাতাস উপভোগ করবে। প্রকৃতির সকল স্নিগ্ধতা ফুরিয়ে যখন দুচোখে ক্লান্তি নামবে তখন না হয় চিলেকোঠার ছোট্ট ঘরটিতে একজোরা চড়ুই পাখির মতোন স্থান দখল করে নেবে।
খানিকটা বিচলিত হয়ে পকেট থেকে ফোন বের করে হ্যারিকে ম্যাসেজ করলো হ্যাভেন। ম্যাসেজটা ছিলো এমন –

-‘ ব্রাদার সকলকে নিয়ে নিচের কোন ঘরে বা প্যান্ডেলের ভিতর চলে যা। আর হ্যাঁ যাওয়ার আগে অবশ্যই ছাদের দরজাটা বাইরে থেকে লাগিয়ে যাবি পারলে তালা মেরে দিয়ে যাস। সময় দশ মিনিট। দশমিনিটের এক সেকেণ্ড সময়ও যদি পাস হয় তাহলে শশীর সঙ্গে তোর বিয়ের উদ্যেগটা এবার আমিই নেবো ‘।

হ্যারি ম্যাসেজটা পাওয়ার ঠিক দশমিনিটের মধ্যেই পুরো ছাদ খালি হয়ে গেলো। সেই সাথে ছাদের দরজা লাগিয়ে দিয়েও গেলো। আর যাই হোক বিয়ে সাদির প্রতি তার কোন ইন্টারেস্ট নাই। তাছাড়া শশীর প্রতি তার ফিলিংসের ‘ফ’ ও কাজ করেনা৷ হ্যাভেনের কপালে শিফা যেমন শনি তার কপালে শশী তেমন রবি’র মতোন। তবে এই দু’বোনের যদি আর একটা ছোট বোন থাকতো সেটা অবশ্যই হিরার জন্য মঙ্গল হতো।
যদিও এমন জঘন্য থ্রেট না দিলেও ভাইয়ের কাজ সে করে দিতো হ্যারি তবুও থ্রেট দেওয়ার কারণে প্রচন্ড সিরিয়াস হয়ে কাজটা কমপ্লিট করলো। এই নিয়ে শিফার প্রশ্নের শেষ ছিলো না। সবাইকে ম্যানেজ করলেও এই একটা লেডিকে ম্যানেজ করতে তার বেশ বেগ পেতে হয়েছে।
.
এতো কিছু ঘটে গেলো। অথচ এর কানাকড়িও টের পেলো না আহি। সে রাতের আঁধারে প্রকৃতির নির্মল বাতাসের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে হ্যাভেনের পাশেই ছাদের কার্নিশে দাঁড়িয়ে আছে। অপেক্ষা করছে হ্যাভেনের থেকে জরুরি কথা শোনার জন্য৷ আর হ্যাভেন উদ্বিগ্ন মনে ভেবে যাচ্ছে ঠিক কোন টপিক নিয়ে কথা শুরু করবে।

চলবে…
রাতে আরেক পার্ট দেওয়ার চেষ্টা করবো।
ইনশাআল্লাহ আর এক পার্ট পরই সাবা ম্যামকে পাবেন সবাই সেই সাথে ধামাকাও থাকবে ধামাকা টা কি হতে পারে কেউ ধারণা করতে পারছো?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here