#এই_অবেলায়_তুমি
#পর্ব_১৪
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
পিছন থেকে আচমকা কেউ জড়িয়ে ধরায় আমি ঘাবড়ে যাই।বাসায় তো কেউ নেই তাহলে কে জড়িয়ে ধরলো? তখনি মামীর বোনের ছেলের কথা মনে পরে। রাগে আমার সারা শরীর কাপতে থাকে।হাতে গরম খুন্তি ছিলো।ওই ছেলে যেই হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে ছিলো ওই হাতে গরম খুন্তি চেপে ধরি।সাথে সাথেই ছেলেটা চিৎকার দিয়ে উঠে। খুন্তিটা এতই গরম ছিলো যে খুন্তির সাথে হাতের চামড়া ও উঠে আসে।তখনি মামা-মামী বাসায় আসে। নিজের বোনের ছেলের এই অবস্থা দেখে মামী আমাকে মারতে আসে। তখন আমি মামীকে বলি আমাকে জড়িয়ে ধরায় এমন করেছি। কিন্তু মামী আমার কথা বিশ্বাস যায়নি।খুব মেরে ছিলো।সেই একি খুন্তি আমার হাতে চেপে ধরে ছিলো।রাতে মামীর রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় শুনতে পাই। মামী বলছে,” খবরদার আশিক আদিবার দিকে নজর দিবি না। একবার যদি হাতের বাহিরে চলে যায়।তাহলে আমার সব প্লেন শেষ হয়ে যাবে।ওর বাবার সব সম্পত্তির মালিক ও। নিশ্চয়ই ওই বেটা জানতো মারা যাবে তাই সব সম্পত্তির আদিবার নামে লেখে দিয়ে গেছে।২২বছর আগে ওকে বিয়ে দেওয়া যাবে না। ২২বছর পর ওকে যে বিয়ে করবে। অর্ধেক সম্পত্তির মালিক সে নিজে হবে।এই সব কিছু আদিবা জানে না। তুই ওর সামনে ভালো সেজে থাক।আমি তোর সাথে ওর বিয়ে দিবো।বিয়ের কয়েক দিন পর সম্পত্তি সব নিজের নামে করে নিবি। তারপর মন চাইলে নিয়ে সংসার করবি না হলে ছুঁড়ে ফেলে দিবি।”এই সব কথা শুনে সেই রাতে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা সারা রাত ঘুমাতে পারিনি।এই সম্পত্তির লোভে তাহলে মামী মামা আমাকে পালছে!!আর আজকে বাসায় দেরি করে ফিরবার কারনে মামী মামার কাছে বিচার দেয়। মামা আমাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। বলে থামলো আদিবা।
আদিবার জীবন কাহিনি শুনে সবার চোখে জল চলে আসলো।
মাহির মেঝো আম্মু আদিবা কে জড়িয়ে ধরলেন নিজের বুকের সাথে।
আদিবাঃ সে কি আন্টি আপনি কান্না করছেন কেনো?
~আজ থেকে তুমি এই বাসায় থাকবে।আমাদের আরেক মেয়ে হয়ে।কি রে বল হবি না আমাদের আরেক মেয়ে?
আদিবার চোখে দিয়ে পানি পরছে।
মাহির আম্মু এসে ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো। আমাদের আরেক মেয়ে। আজ থেকে আমার তিন মেয়ে।
আদিবা মাথা নিচু করে বললো। আন্টি আমি তিনটা টিউশন করাই। আমি যত দিন এই বাসায় থাকবো টাকা দিয়ে থাকবো।
~বুঝতে পেরেছি আমাদের আপন ভাবতে পারোনি এখনো।
আদিবাঃ প্লিজ আন্টি এভাবে বলবেন না। আপনারা থাকতে দিয়েছেন এই ঋণ আমি কোনো দিন বুলবো না।নিজের মেয়ে বলে বুকে টেনে নিয়েছেন।আর ঋণী করবেন না প্লিজ।
ঠিক আছে তোমার যেভাবে ভালো লাগে থাকো।নিজের বাসা মনে করে থাকবে।
মাহি আদিবাকে আবিরের পাশের রুমটা গুছিয়ে দে।
আবিরের নাম শুনেই কেঁপে উঠল আদিবা।মাহি মুচকি হেসে বললো, ” ঠিক আছে মেঝো আম্মু। বলে উপরে চলে গেলো”…
ফায়াজের নিজের ও খুব কষ্ট হলো আদিবার কথাগুলো শুনে। মা-বাবা ছাড়া বেঁচে থাকা কতটা কষ্টের এক মাত্র তারাই বুঝে যাদের মা-বাবা নেই।
——
নূরের রুমের সামনে গিয়ে শুভ্রতা বললো,” নূর আসবো?”
নূরঃ আরে ভাবি তুমি। আমাকে বললেই হতো আমি চলে যেতাম।কষ্ট করে আসতে গেলে কেনো।আসো ভেতরে আসো।
শুভ্রতাঃ কি করছো?
নূরঃ কিছু না ভাবি,তুমি বসো।তোমাকে আজকে খুব সুন্দর লাগছে।শাড়ি পরেছো।ভাই তো আজকে চোখ ফেরাতে পারবে না।
শুভ্রতাঃতোমার ভাইয়ের আমার দিকে তাকানোর সময় কই।উনার তো সারাদিন রাত কাজ শেষ হয় না।
নূরঃ আজও বুঝি ভাই তোমাকে ঘুরতে নিয়ে যায়নি। আহা ভাবিটা আমার রাগ করো না। ভাইয়ার আশা করলে এই জীবনে আর তোমার ঘুরা হবে না।আমি কালকে তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো। এবার একটু হাসো।
শুভ্রতা নূরের গাল টেনে বললো,” জানো তুমি খুব মিষ্টি একটা মেয়ে। আমার আল্লাহর কাছে একটাই চাওয়া তোমার মতো মিষ্টি একটা মেয়ে যেনো আমার হয়।
নূরঃ এতো মিষ্টি মিষ্টি বলো না। দেখা যাবে আমার দিকে মিষ্টির নজরে তাকাবে পরে ডায়বেটিস হয়ে যাবে।
শুভ্রতাঃ হি হি হি তাই নাকি?পরে বসে আড্ডা দিবো এখন নিচে চল খাবার খাবে!!
নূরঃ আসলে ভাবি আমি খাবো না।
শুভ্রতাঃ কেনো খাবে না? মন খারাপ কেনো?কিছু কি হয়েছে?
নূরঃ কিছু হয়নি এমনি খাবো না।
শুভ্রতাঃ এত কথা শুনতে চাই না আমি চল আমার সাথে।
নূরঃ ভাবি প্লিজ জোর করো না।
শুভ্রতা বুঝলো এই মেয়ে এক কথার মেয়ে। যা বলেছে তাই। বাধ্য হয়ে শুভ্রতা নিচে চলে গেলো।
——
মাহি উপরে যাওয়ার সময় ফায়াজের সাথে খেলো এক ধাক্কা।
মাহিঃ এই যে চোখে দেখেন না!! কাঠের চশমা পড়েছেন নাকি?
ফায়াজ নিজের চোখের চশমাটা হাতে নিয়ে ভালো করে দেখে৷আবার চোখে দিলো।
ফায়াজঃ আপনি দেখে চলতে পারেন না,কি ব্যথা ঈ না পেলাম আমি ওওফফ্।
মাহিঃ আপনি নিজে দোষ করে আমাকে যা তা বলা হচ্ছে। আপনাকে তো আমি পরে দেখে নিবো!!
ফায়াজঃ যা দেখার এখনি দেখে নেন৷ আমি তো আপনার সামনেই দাড়িয়ে আছি। মুচকি হেসে…
মাহিঃ আপনাকে তো আমি!!..
ফায়াজঃ কি,কি বলেন। থামলেন কেনো?
মাহিঃ আস্ত একটা বেয়াদব!! বলে উপরে চলে গেলো।
ফায়াজঃ কি ডেঞ্জারাস মেয়েরে বাব্বাহ্ দুই বোন পুরাই এক।
সে কি ফায়াজ বাবা তুমি ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো? আসো এখানে এসে বসো।
রুদ্র ও নিচে নিমে আসলো।আম্মু খাবার দাও।ফায়াজ চল।বলে ফায়াজ কে নিয়ে খাবার টেবিলে বসলো।
নূর রেগে বোম হয়ে আছে। রুদ্র যখন শুনেছে ও তিন বিষয় ফেল।কিছু সময় চুপ করে থেকে তারপর ৫০বার কান ধরে উঠ বস করিয়েছে।শুধু করালে এতোটা রাগ তো না। ওই সাদা হনুমান ভিডিও করেছে।নূরের মন চাচ্ছে নিজের চুল নিজেই ছিরতে।পা গুলো ও খুব ব্যথা করছে।রাগ করে খাবার খেতে যায়নি।সবাই এসে ডেকে গেছে রুম থেকেও বের হয়নি।
——
ফায়াজ চলে গেছে। অনেকক্ষন হবে। অনেক বার বলেছে থাকার জন্য কিন্তু ফায়াজের কালকে কলেজ আছে তাই চলে গেছে।
রুদ্র হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে নূরের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে। দরজা টোকা দিতেই দরজা খুলে দিলো নূর। রুদ্র কে দেখেই রেগে গেলো। এই বেটা এখানে কেনো এসেছে।
রুদ্র রুমে না ঢুকেই নূরের হাতে খাবারের প্লেট দরিয়ে দিলো।
রুদ্রঃ পুরো খাবারটা দশ মিনিটে খেয়ে শেষ করবে। দশ মিনিট পর আমি আবার আসবো। আর যদি না খাও বলে সামনে নূরের কান ধরে উঠ বস করার ভিডিওটা ধরলো। এটা সবাই কে দেখিয়ে দেবো।
নূরঃ আরেহ ভাইয়া আমি পাঁচ মিনিটে খেয়ে শেষ করছি। আপনি তাও এই ভিডিও ডিলিট করে দেন প্লিজ। কাঁদো কাঁদো মুখ করে বললো।
রুদ্রঃ বেশি কথা আমার পছন্দ না । বলে চলে গেলো।
——
তুমি আসবে বলে বসন্ত এসে ফিরিয়েছে চৌকাট,,
তুমি আসবে বলে শিশিরে শিশিরে ভরে গেছে মাঠঘাট,, [২]
মনের জানালা খোলেছে পাল্লা আলো মন একাখার
যেনো হাজারো স্বপ্ন ভুলে অযত্ন রামধনু পারাপার[২]
তুমি আসবে বলেই,,
তুমি আসবে বলেই করিঘাট শুনে বাদল বেলার ঘুম।
তুমি আসবে বলেই হঠাৎ আনন্দে দুপুরটা নির্ঝুম[২]
তুমি আসবে বলেই পাকনা সংশয় এ হাওয়ায়,,
বৃষ্টি ধারায় ঝাপসা তারায় সুখের শান্তনায়,,[২]
তুমি আসবে বলেই,,……🎶
বিদ্যুৎ চলে গেছে। অন্ধকারে জোনাকি পোকাগুলো আলো জ্বালিয়ে নূর আর আদিবা কে পাহাড়া দিচ্ছে। আজ রাতটা যেনো অন্য রাতগুলোর থেকে শতগুণ বেশি সুন্দর লাগছে।
নূরঃ ঘুমাবে না আপু।
আদিবাঃ হুম চলো, সকালে আবার উঠতে হবে।
নূরঃ আরে আপু আমাদের বাসায় কিন্তু সকাল সকাল কেউ ওঠে না।আর কাল তো তোমার ভার্সিটি বন্ধ।
আদিবাঃ সকাল সকাল উঠে অবাস হয়ে গেছে।
——
রুহি একটা নাইটি পরে রেডি হয়ে এসে দেখে। আদি মোবাইলে গেমস খেলছে।
রুহি পিছন দিয়ে গিয়ে আদিকে জড়িয়ে ধরে বললো,” গেমস রাখো, ঘরে যে বউ আছে সে দিকে খেয়াল আছে তোমার!!
রুহির কথায় আদি বিরক্ত হয়ে বললো,” আহা ছাড়ো ত,গেমস খেলছি দেখছো না।”
আদির কথা শুনে রুহি রেগে বললো, ” সারা দিন তো বাসায় থাকো না। কোথায় থাকো তুমি সারা দিন। আব্বু বললো কাজেও যাও না। তাহলে সারাদিন করটা কি?আর এখন রাতে একটু কাছে পাই। তাও পরে আছো গেমস নিয়ে। আসলে তুমি চাচ্ছ টা কি?
রুহির কথায় আদি আরো বিরক্ত হয়ে, হাতটা যারা দিয়ে ফেলে দিয়ে বললো,” যাও একটু বাসায় এসেছি। তোমার এই ঘ্যান ঘ্যান ভালো লাগে না।তোমার না কোমরে ব্যথা পেয়েছো যাও ঘুমাও।”
রুহি চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পরলো। সে দিন দিন বুঝতে পারছে।আসলে আদির সাথে ভালোবাসার অভিনয় করতে গিয়ে। সে কত বড় ভুল করেছে।আজ তার নূরের একটা কথাই বার বার মনে পরছে”যে পুরুষ এত বছরের ভালোবাসাকে দুই দিনের সুখের জন্য ভুলে যেতে পারে। সে পুরুষ কখনো এক নারীতে আসক্ত হতেই পারে না। সে দুই দিন পর সুখ কুড়ানোর জন্য আবার অন্য নারীর কাছে যেতে পারে।যে পুরুষের জন্য আজ তুই আমার সাথে এত বড় বড় কথা বলছিস। একদিন এই পুরুষের জন্যই তুই কাঁদতে হবে” নূরের কথা তো মিলে যাচ্ছে। আজ সে কাঁদছে। আজ তার চোখের পানি বাঁধ মানছে না।ভুল করেছে সে অনেক বড় ভুল করেছে।যাকে কষ্ট দিতে চেয়েছে সে সুখে আছে।
———
আদিবা সকালে উঠে আগে গোসল করে নিলো।তারপর নামাজ পড়ে কোরআন তিলাওয়াত করছে।
আবির সব সময় সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে কফি খেয়ে হাঁটতে বের হয়।আজ সকালে উঠে নূরের রুম থেকে কোরআনের তিলাওয়াত এর কন্ঠ শুনে অবাক হয়ে যায়। নূর এতো সকালে উঠে না। আবার কোরআন তিলাওয়াত করছে। দরজার সামনে গিয়ে দেখলে দরজা খোলা।ভেতরে কি উঁকি দিবে কি না ভাবছে।হালকা করে দরজা ধাক্কা দিলো।ভিতরে না ঢুকে দরজার কাছ থেকে দেখলো একটা মেয়ে বসে আছে নিচে। সামনে কোরআন শরিফ চুল থেকে টপটপ করে পানি পরছে। হয়তো একটু আগে গোসল করেছে। ভালো করে মুছেনি।আবির মুগ্ধ হয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে তিলাওয়াত শুনতে লাগলো।বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখলো নূর ঘুমাচ্ছে। তাহলে এই মেয়ে কে। মেয়েটা অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে আছে। যার জন্যই মুখ দেখতে পারছে না।মেয়েটা দাঁড়িয়ে গেলো সাথে সাথে আবির দরজা থেকে সরে গেলো।নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালো। কিন্তু মনটা রয়ে গেছে মেয়েটার কোরআন তিলাওয়াত এর প্রতি শব্দের মধ্যে। কত সুন্দর করে তিলাওয়াত করলো।
আদিবা নিচে নেমে দেখলো রান্না ঘরে নূরের মেঝো আম্মু কফি বানাচ্ছে।
আদিনাঃ আন্টি আমি কি হেল্প করতে পারি।আমি অনেক ভালো কফি বানাতে পারি।দেন আমি বানিয়ে দেই।
~তুমি রান্না ঘরে কেনো এসেছো? আমাদের বাসার মেয়েরা রান্না ঘরে আসা নিষেধ। যাও রুমে যাও।কিছু লাগলে বলো আমি বানিয়ে দিচ্ছি।
আদিবাঃ আমার কিছু লাগবে না। ওকে আমি আর আসবো না। তবে আজকের কফি আমি বানাই দেন।
~আচ্ছা ঠিক আছে। সাবধানে হাত যেনো না পোড়ে।
আদিবা কফি বানিয়ে নিজের রুমে যাওয়ার সময়। পিছন থেকে মেঝো আম্মু ডাক দিয়ে বললো,”তুমি তো উপরে যাচ্ছ এই কফিটা একটু আবিরের রুমে দিয়ে আসতে পারবে মা।
আবিরের নাম শুনেই বুকের ভেতর ধুকপুক করে উঠলো। ভদ্রতার সাথে মাথা নাড়িয়ে বললো। আচ্ছা দেন..
উনি বলে দিলেন আবিরের রুম কোনটা।
আদিবা কফি নিয়ে দরজার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে আছে। কিভাবে ডাক দিবে বুঝতে পারছে না। ভীষণ লজ্জা লাগছে। বার বার ওই দিনের কিস দেওয়ার মুহূর্তটা মনে পরছে।
হটাৎ ভেতর থেকে একটা পুরুষালি কন্ঠ বেসে আসলো, ” বাহিরে দাড়িয়ে না থেকে ভেতরে আসো।এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে কফি শরবত হয়ে যাবে।”
আদিবা থমকে গেলো।তার মানে উনি দেখেছে আমি বাহিরে দাড়িয়ে আছি।তাহলে এতক্ষন বললো না কেনো? আর আমাকে কি উনি দেখেছে? নাকি অন্য কেউ ভেবে কথা বলছে!!…
আবিরঃ কি হলো ভেতরে আসো।
আবিরের ধমকের গলায় কথা শুনে ভয়ে রুমে ঢুকলো। আবির রেডি হচ্ছে অফিসে যাওয়ার জন্য।
আদিবাঃ নিয়ে আবিরের সামনে কফির মগ ধরলো।হাত কাঁপছে ভীষণ। যতই শক্ত করে ধরার চেষ্টা করছে। মনে হচ্ছে এখনি পড়ে যাবে।
আবির কিছু সময় আদিবার কাঁপা কাঁপা হাতের দিকে তাকিয়ে। মুখের দিকে তাকালো।আবির চমকে উঠার অভিনয় করে বললো, ” তুমি!!! এখানে কি করছো?রাস্তায় কিস আর আজকে বউ হয়ে বাসায় চলে এসেছো।”
আদিবা বেআক্কেল হয়ে তাকিয়ে আছে আবিরের দিকে। বউ হয়ে এসেছে মানে।এই বেটা কি ভাবছে উনার ভাইয়ের বউ হয়ে এসেছি আমি?
আবিরঃ আরে তোমার হাত কাঁপছে কেনো? বলে হাত থেকে কফির মগ টা নিলো।
আদিবা চলে আসতে নিলে আবির আবার বলে উঠলো, ” তুমি এই বাসায় কি করছো? আগে তো কখনো দেখিনি। আর আমার জন্য সকাল সকাল কফি নিয়ে আসলে। ”
আদিবা কি বলবে বুঝে পাচ্ছে না।
আদিবাকে চুপ থাকতে দেখে আবির বললো,” কফি কে বানিয়েছে?”
আদিবাঃ জ্বি ভাইয়া আমি।
আবির কপাল কুঁচকে বললো,” এই লাস্ট ভাইয়া বলেছো।আমাকে একদম ভাইয়া বলবে না। আমার এমনি তেই অনেক গুলো বোন আছে। কফিতে বেশি করে চিনি দিয়েছো তো?
আদিবাঃ ভাইয়া না বললে কি বলবো?
আবিরঃ সেটা তুমি ভালো জানো। এদিকে আসো।
আদিবা আবিরের সামনে দাড়াতেই আবির কফির মগ টা আদিবার হাতে দিয়ে বললো,”দেখো তো মিষ্টি কেমন হয়েছে..বেশি খাবে না। একটু খাবে।
আদিবা আবিরের কথা মত কফি খেয়ে বললো,” মিষ্টি ঠিক আছে “..
আবিরঃ তাহলে এখন যাও।বলে কফি মগে চুমুক দিলো আবির।
——
নূর কলেজের জন্য বাসা থেকে বের হবে। রুদ্র বলে উঠলো, ” নূর আমার গাড়িতে উঠে বসো। আমি তোমাকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে হসপিটাল যাবো।
নূর বিরক্ত হয়ে তাকালো রুদ্রের দিকে। এই বেটা কি ওকে শান্তিতে চলাফেরা ও করতে দিবে না।
চলবে….
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।