#এই_অবেলায়_তুমি
#পর্ব_২৮
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
নিস্তব্ধ আকাশ, দূর দূরান্তর থেকে কুকুরের আওয়াজ ভেসে আসছে। ঝিঁঝি পোকারা খেলায় মেতেছে যেনো, হালকা বাতাস বইছে। নিস্তব্ধ চারপাশ মাঝ রাতে ছাঁদের কিনার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে এক যুবক হাতে পুড়ে যাওয়া সিগারেট এর কিছু অংশ। আকাশের দিকে মুখ করে ধোঁয়া ছারলো।
আচ্ছা আকাশে তাকালে কি কষ্ট কমে..?
নিজের ভেতরের সত্তাটা উওর দিলো,’ মোটেও না, আকাশে তাকালে মনের কোনে লুকিয়ে থাকা কষ্ট গুলো বেরিয়ে আসে।’
আজ নিজের জীবনের হিসেব মিলাচ্ছে আদি।
কাল রাতে যখন শুনে ছিলো নূরের বিয়ে তাও রুদ্রের সাথে। মনে হয়ে ছিলো কেউ হয়তো ওর বুকে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে ছিলো। তাই তো সকাল না হতেই বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়ে ছিলো আর এখন বাসায় এসেছে। আর যাই হোক নূরকে রুদ্রের সাথে দেখার শক্তি ওর নেই। আচ্ছা আমি যখন রুহি কে বিয়ে করে ছিলাম। তুই কেনো এসে আটকালি না..? তোর কি একটু ও কষ্ট হয়নি..?
আদি অনেক বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে আর এই দেশে থাকবে না।দুই একদিনের মধ্যেই দেশ ছারবে ও আর কখনো এই দেশের মাটিতে পা রাখবে না। দেশ ছেড়ে সব থেকে প্রথম রুহি কে ডিভোর্স দিবে। তারপর আর কারো সাথে কোনো যোগাযোগ রাখবে না।ও চায় না ওর জন্য রুদ্র আর নূরের জীবনে আর কোনো বিপদ আসুক।
———
ফুলে ফুলে সাজানো একটা রুমে বসে আছে মাহি৷ খুব সুন্দর করে যত্ন করে রুমটা সাজানো হয়েছে। বিছানার মাঝ খানে খুব সুন্দর করে মাহির নাম লেখা।
মাহি কয়েক বার হামি দিচ্ছে অনেক রাত হয়েছে খুব ঘুম পাচ্ছে। কিন্তু শাশুড়ী আম্মু খুব করা ভাবে বলে দিয়েছে বিছানার মাঝ খানে মাথা নিচু করে বসে থাকতে। যতক্ষন না ফায়াজ রুমে আসে।
কিছু সময় আগের কথা,
মাহি যখন ড্রয়িং রুমে পা রাখে সাথে সাথে ফায়াজের আম্মু রোকেয়া বেগম বলে উঠলো, ‘ দাঁড়াও নতুন বউ! ’
এমন শক্ত কন্ঠে কথা শুনে মাহির পা এমনিতেই থেমে যায়।
ফায়াজ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ওর আম্মুর দিকে।
রোকেয়া বেগমঃ আমি এক আহাম্মক পেলে বড় করেছি। পুরাই বাপের মতো হইছে।এখনো আমি সব বলে দিতে হবে।
ফায়াজ লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে ফেললো। ছি! ছি! ছি
সদ্য বিয়ে করা বউয়ের সামনে ওর আম্মু ওর মান সম্মান চান্দে উঠায় দিলো।
রোকেয়া বেগমঃ যা বউ নিয়ে আবার দরজার বাহিরে যা।
কথা না বাড়িয়ে ফায়াজ ঘরের বাহিরে যেতে নিলে রোকেয়া বেগম আবার ধমক দিয়ে বলে উঠলো,’ তোকে কি একা যেতে বলেছি..? বউয়ের হাত ধর।
ফায়াজ বুঝতে পারছে না ওর আম্মু এতো রেগে আছে কেনো। তাও মায়ের কথা মতো মাহির হাত ধরলো।
দরজার বাহিরে দাড়িয়ে আছে ফায়াজ আর মাহি।
রোকেয়া বেগম ওদের সামনে গিয়ে বললেন,” এবার বউকে কোলে নিয়ে ঘরে প্রবেশ কর”
সাথে সাথে মাহির শরীর মনে হয় বিদ্যুৎ ঝটকা খেলো।এত গুলো মানুষের সামনে কোলে নিবে মানে। এই মহিলার কি মাথায় সমস্যা আছে।
ফায়াজ হাসি হাসি মুখ করে মাহির দিকে তাকিয়ে কোলে তুলে নিলো।
রোকেয়া বেগমঃ এটা এই বংশের নিয়ম। নতুন বউ কে প্রথম ঘরে প্রবেশ করানোর সময় বর কোলে করে বাসায় নিয়ে ঢুকে।
অনেক মহিলা এসে ছিলো নতুন বউ দেখতে কিন্তু রোকেয়া বেগম বলে দিয়েছেন বউ দেখতে যেনো সকালে আসে। এমনিতেই আসতে আসতে রাত হয়ে গেছে। বউ এখন নিশ্চয়ই ক্লান্ত । বউ দেখার হলে যেনো কাল সকালে এসে দেখে যায়।
দরজা খোলার শব্দে ভাবনা থেকে বের হয় মাহি।পাক্কা তিন ঘন্টা এই এক ভাবে বসে থাকতে থাকতে কোমর ব্যথা হয়ে গেছে।
ফায়াজ রুমে এসে মাহিকে এভাবে বসে থাকতে দেখে অবাক হয়ে যায়। এই মেয়ে কি তিন ঘন্টা ধরে এভাবে বসে আছে না কি..!?
ফায়াজঃ মাহি তুমি এখনো ঘুমাও নি.? আর এভাবে বসে আছো কেনো? কাপড় চেঞ্জ করো নি কেনো?
মাহি রা*গে না পারছে কিছু বলতে। দাঁতে দাঁত চেপে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।মা বলবে একদম উঠবে না যতক্ষন না স্বামী এসে ঘোমটা না সরায়। আর ছেলে বলছে ঘুমাই নি কেনো?
ফায়াজঃ মাহি কি হয়েছে?
মাহি এক ঝটকায় ঘোমটা সরিয়ে ফায়াজের দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে উঠে দাঁড়ালো।
মাহিঃ এত তারাতারি এসেছেন কেনো.? আরেকটু দেরি করে রাতটা শেষ করে সকালেই আসতেন।
ফায়াজ বুঝতে পারছে না আজ সবাই কেনো ওর উপর রাগ ঝারছে। কখনো মা, প্রেম করেছি মাকে একবার ও জানাইনি, বিয়ে ঠিক করে তারপর মা কে আর জানানোর কি দরকার ছিলো। এই নিয়ে মায়ের অভিমান। এখনো মা ছেলের বউয়ের মুখ দেখেনি৷ যতক্ষন কথা বলেছে অন্য দিকে তাকিয়ে বলেছে। আর মাহি ঘোমটা বড় করে দিয়ে রেখেছে যার কারনে তাকালেও বউ দেখার কোনো সম্ভবনা নেই।
বন্ধুরা রাগ বিয়েতে কাউকে দাওয়াত দিলো না। একবার বললো ও না। এই নিয়ে হাজার অভিযোগ।
আর এদিকে বউ রাগ দেরি করে কেনো রুমে আসলো।
মাহিঃ একটা কিছু হবে এই ভাড়ি শাড়ি খুলে পড়ার জন্য।
ফায়াজঃ শাড়ি আছে হবে..?
———
” মুখের উপর পানি জাতীয় তরল কিছু পড়াতে নূর ভয়ে চিতবার দিয়ে উঠলো, ‘ আম্মুউউউউউউউ চোর চোর বলে সামনে তাকিয়ে দেখে রুদ্র হাতে গ্লাস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
নূরের মনে হলো সে ভুল দেখছে চোখ কচলে আবার তাকালো। না সত্যি তো দাঁড়িয়ে আছে। আবার দরজার দিকে তাকালো এবার ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলো।
রুদ্রঃ কি হয়েছে কাঁদছো কেনো..?
নূরঃ আমার থেকে দূরে থাকুন দূরে দূরে একদম দূরে।
রুদ্র খেয়াল করে দেখলো নূর কাঁপছে কিন্তু কেনো?? ও তো কিছুই করেনি।
নূর দরজার দিকে ইশারা করে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো দরজা বন্ধ আপনি রুমে আসলেন কিভাবে?
রুদ্র এবার বুঝলো নূরের কাঁপা কাঁপির কারন।
রুদ্রঃ বারান্দা দিয়ে এসেছি। আমার রুম থেকে পাইপ দিয়ে তোমার রুমে আসা যায়।
নূর,’ বেটা তো দেখি আমার টেকনিক কাজে লাগাইছে,মনে মনে…’
——
মাহি ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হলো। হলুদ শাড়ি পড়েছে। কানে,গলায়,হাতে কিছুই নেই সব খোলে ফেলেছে। মুখেও কোনো মেক-আপ নেই। এই সাধারনের মধ্যে মাহি কে অসাধারণ লাগছে ফায়াজের কাছে। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিজের বউয়ের দিকে।
মাহি ফায়াজের দিকে তাকিয়ে অস্বস্তিতে অন্য দিকে ফিরে গেলো।
ফায়াজ আসতে আসতে মাহির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
মাহির বুক ধুকপুক করছে হঠাৎ মনে পড়ে গেলো কলেজের এক বান্ধবীর কথা। তখন মাহি সবে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে উঠে ছিলো। তখন ওর একটা বান্ধবীর হঠাৎ বিয়ে হয়ে যাই।ওর নাম লিয়া ছিলো । প্রায় এক মাস পর ওই বান্ধবী কলেজ আসে। সবাই ওকে ঘিরে ধরলো। ছেলে কেমন? কি করে? বাসর রাতে কি হয়েছিল? সব যখন জিজ্ঞাসা করছিলো তখন লিয়া ওর বাসর রাতের গল্প বলতে শুরু করলো,
সবি ঠিক ছিলো লিয়া যখন ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হয়েছিল তখন ওর বর মুগ্ধ হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলো। তারপর আসতে আসতে ওর সামনে এসে না! না! না ও আর কিছু শুনেনি শুনতে চায় ও না। ছি! মানুষ কিভাবে নিজের বাসর রাতের মতো জঘন্য কথা অন্যকাছে বলতে পারে মাহির তো ওই কথা গুলো মনে পড়তেই লজ্জায় ডুকরে উঠছে।আচ্ছা ফায়াজ স্যার ও কি….
আর কিছু ভাবনার আগেই কপালে টুকা পড়লো। ওফ্ফ বলে কপালে হাত দিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে ফায়াজ মিটমিট হাসতেছে।
মাহি জিজ্ঞাসার দৃষ্টিতে তাকালো হাসছে কেনো…?
ফায়াজঃ তুমি ওয়াশরুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে এমন লজ্জায় লাল নীল হচ্ছো কেনো??
মাহি ফায়াজের কথা শুনে আরো লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো। ইইসস এই লোক কি তাহলে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো.. আবার মাহির ভাবনার মধ্যে ফায়াজ বলে উঠলো,’ সরে দাঁড়াও আমি ফ্রেন্ড হবো৷ দুই রাকা’ত নামাজ পড়তে হবে।’
মাহিঃ আমি ওযু করে এসেছি। আপনি জান বলে ওয়াশরুমের দরজা ছেড়ে দাঁড়ালো।
———
রুদ্র সামনে এগোচ্ছে আর নূর ভয়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে।
নূর অসহায় চোখে তাকালো রুদ্রের দিকে। এদিক ওদিকে তাকিয়ে দেখলো পালানোর জায়গা আছে কি না।কিন্তু না পালানোর কোনো রাস্তা নাই। সামনে রুদ্র পিছনে দেওয়াল।
রুদ্র নূরের গাল ধরে টান দিয়ে বললো,’ অনেক তো পালালে এবার কোথায় যাবে..? বাসর রাতে পালানোর শাস্তি কি হতে পারে বলো তো..??
নূর ভয়ে ভয়ে বললো,’ ভাইয়া আর কখনো এমন হবে না।’
রুদ্রঃ শাস্তি তো তোমাকে পেতেই হবে। আর বউয়ের মুখে ভাইয়া ডাক খুব তেতো লাগে।কানে ধরে উঠ বস করো।
নূর অবাক হয়ে বললো,’ আমার এক ফ্রেন্ডের বিয়ে হয়ে ছিলো ওর বর ওকে প্রথম রাতে একটা সুন্দর গোল্ডেন আংটি গিফট করে ছিলো আর আপনি কেমন বর? প্রথম রাতেই বউকে গিফট দেওয়া তো ধুর কানে ধরে উঠ বস করতে বলছেন!
রুদ্র ও অবাক হওয়ার মতো মুখ করে বললো,’ তুমি কেমন বউ বিয়ের রাতেই পালিয়ে চলে আসছো।’
নূরঃ আমি পালিয়েছি কোথায়। এক বাড়ি পাশাপাশি ঘর। এটাকে পালানো বলে না।
রুদ্রঃ তাহলে কি বলে? আর দরজায় তো সবাই দাঁড়িয়ে ছিলো। এই রুমে আসলে কিভাবে??..
নূরঃ হিহিহি পাইপ দিয়ে।
রুদ্রঃ কীইইইই!!!
নূরঃ হা বন্ধ করুন মাছি ঢুকবে।
রুদ্রঃ কিন্তু এই ভাড়ি শাড়ি নিয়ে কিভাবে আসলে।
নূরঃ শাড়ি নিয়ে কেনো আসবো। শাড়ি তো আপনার রুমেই আছে।
রুদ্রঃ শাড়ি আমার রুমে আর তুমি এখানে!
নূরঃ শাড়ি নিয়ে হাঁটতেই পারছি লাম না। আর পাইপ দিয়ে কিভাবে আসবো তাই শাড়ি খোলে চলে এসেছি।
——
আদি আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে হঠাৎ মনে হলো পাশে কেউ দাঁড়িয়ে আছে।
আদি ফিরে তাকালো না। সে জানে মানুষটি কে।
~এত রাতে রুমে না গিয়ে এখানে কি করছো..??
…..
~ কি হলো কথা বলছো না কেনো??
আদিঃ না ঘুমিয়ে এখনো জেগে আছো কেনো??
~ঘুম আসছে না। তোমার কি মন খারাপ??
আদিঃ যেনে কি করবে?
~ নূরের জন্য মন খারাপ? এখনো ভালোবাসো ওকে?
আদিঃ যেনে কি করবে? ফিরিয়ে দিতে পারবে ওকে?
~ আমাকে কি একটু ভালোবাসা যায় না আদি।
আদিঃ ঘুমাও গিয়ে অনেক রাত হয়েছে।
~তুমি ঘুমাবে না?..
আদিঃ আমাকে নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না।
~ আমি তোমার অর্ধাঙ্গিনী আমি ভাববো না তো কে ভাববে।
আদিঃ খুব জলদি আমি তোমাকে মুক্তি দিচ্ছি।
~কিসের মুক্তির কথা বলছো? আমি তো কোনো মুক্তি চাই না!
আদিঃ আমি কোনো প্রতারকের সাথে থাকতে চাই না।
~শুধু কি আমি প্রতারণা করেছি। তুমি করনি?
আদিঃ তাই তো প্রতি নিয়তো এর মাশুল দিতে হচ্ছে।
রুহি আর কিছু বললো না। এই নিস্তব্ধ রাতে আকাশের দিকে তাকালো। চোখের কোনে পানিরা খেলা করছে আজ।
———
ইরিন ঘুমিয়ে আছে বার বার মোবাইল রিং হচ্ছে। বিরক্ত হয়ে কল রিসিভ করে কানে দিলো।
~হ্যালো কে….
ওপর পাশ থেকে কেউ বলে উঠলো, ‘ আজ তোমাকে আমার স্বপ্নে ভেসে বেড়ানো মায়াবতীর থেকেও বেশি মায়াবী সুন্দরী লেগেছিল। আমি চোখ ফিরাতে গিয়েও বার বার ব্যর্থ হয়েছি। তোমার মধ্যে যাদু করার তাবিজ আছে না হলে আমি কেনো এভাবে তোমার মায়ায় আটকে গেছি’ কথাটা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই কলটা কেটে গেলো।
ইরিনের সব ঘুম উড়ে গেলো। কে ছিলো এটা!? এই প্রথম এই আগুন্তকঃ ফোনে কথা বলেছে। প্রতি মাঝ রাতে কলটা আসতো কিন্তু নিঃশ্বাস এর শব্দ বাদে আর কিছুই শুনা যেতো না। ইরিন তো এটাও জানতো না। এটা ছেলে না কি মেয়ে। কিন্তু আজ কথা বলেছে ঘুমের জন্য ঠিক কন্ঠটা বুঝতে পারেনি।
ইরিন মোবাইল হাতে নিয়ে বার কয়েক আবার কল দিলো কিন্তু মোবাইল বন্ধ দেখাচ্ছে। কথাগুলো বার বার কানে বাজতেছে। ইসসস মারাত্মক কন্ঠ ছিলো। বুকের ভেতর ঝড় তুলে দিয়েছে। বিছানা থেকে নেমে বারান্দায় গেলো। তার মানে এই লোক আমার আশেপাশেই আছে। এটা ভাবতেই ভালো লাগায় ছেয়ে গেলো মন। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলো কয়েকটি তাঁরা মিটিমিটি ঝলমল করছে। বাগানের দিকে তাকিয়ে দেখলো ফুলগুলো হালকা বাতাসে দুলছে। মনের ঘরে কি তাহলে বসন্ত এসে গেছে!…
———
নূরের পা ব্যথা হয়ে গেছে উঠ বস করতে করতে। দাঁড়িয়ে হাঁপাচ্ছে। রুদ্র বিছানায় আয়েশ করে বসে ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে।
নূরঃ রা*গে বিরবির করে নিজেই নিজেকে বলছে আর পালা*বি বাসর ঘর থেকে। শখ মিটেছে পালানোর!।
রুদ্রঃ বিরবির না করে এদিকে আসো।
নূর লক্ষি মেয়ের মতো সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।
রুদ্র নেমে নূরের সামনে হাঁটু গেড়ে বসলো।
নূর মনে মনে ভাবছে এই ছেলেকি এখন প্রপোজ করবে না কি?
নূরের ভাবনায় এক গ্লাস জল ঢেলে দিয়ে রুদ্র ওর পায়ে সুন্দর একটা পায়েল পড়িয়ে দিলো।
রুদ্রঃ আম্মু বলে ছিলো বউকে কিছু উপহার দিতে। কিন্তু আমার কাছে তো দেওয়ার মতো কিছু নেই। তাই এই পায়েলটা দিলাম।
নূরঃ খুব সুন্দর ভাইয়া।
রুদ্রঃ পছন্দ হয়েছে?
নূরঃ হুম।
———
মাহি নামাজ পড়ে হালকা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু ঘুম নেই ফায়াজের চোখে। গভীর ভাবে তাকিয়ে আছে মাহির দিকে। এই মেয়েকে একবার দেখার জন্য ঘামানোর আগে গিয়ে রাস্তার পাশে কত দাঁড়িয়ে থেকেছে শুধু এক নজর দেখার জন্য। আজ সেই মেয়েটা সারা জীবনের জন্য ওর হয়ে গেছে। হাতের পায়েলটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো, ‘ খুব শখ করে আমি আর রুদ্র দুটো পায়েল কিনেছি একি রকম। কিন্তু তুমি জেগে থাকতে পড়িয়ে দেওয়ার সাহস হয় নি। এখন তো ঘুমিয়ে আছো।বলেই পায়েল টা পড়িয়ে দিলো মাহির পায়ে।মাহির দিকে তাকিয়ে আছে আজ রাতে আর সে ঘুমাবে না তার প্রেয়সীকে দেখেই কাটিয়ে দিবে।
চলবে…
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।