#তবে_ভালোবাসো_কী
#Mehek_Enayya(লেখিকা)
#পর্ব ১৩
এলাম বাজতেই ঘুম ভেঙে যায় মাহানুরের। প্রতিদিনের মতো আড়মোড়া দিয়ে বিছানা থেকে নেমে পরে। জালানার পর্দা সরিয়ে ওয়াশরুম চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলগুলো উঁচু করে ঝুঁটি করে নেয়। মুখে একটু পাওডার আর ঠোঁটে লিপ বাম লাগিয়ে নেয়। ফোন চার্জে দিয়ে দরজা খুলে বাহিরে বেরিয়ে যায়। বারান্দা থেকে নিচে তাকাতেই দেখে বাড়ির সকলেই ভীষণ ব্যস্ত। বিয়ের আমেজ জানো পুরো বাড়িতে ছড়াছড়ি! কাল বাদে পরশু মাহানুরের হলুদ। তাই বাড়ির সকলেই নিজেদের কাজে ব্যস্ত। হামযা খান সবাইকে যার যার কাজ ভাগ করে দিয়েছে। এই যেমন, আয়াসকে দিয়েছে ডেকোরেশন, লাইটিং, গান বাজনার ব্যবস্থা করার কাজ। আসীনকে দিয়েছে বাবুর্চিদের সাথে থাকার কাজ। সামি, সাদি, আবির এই তিনজনকে দেওয়া হয়েছে বাড়ি সাজানোর কাজ। বাড়ির কর্তীদের কাজ হলো বাসায় রান্না করা, মেহমান আসবে তাঁদের ঠিক ভাবে আপ্যায়ন করা আর মাহানুরের সাথে থাকা। করিম খানকে বিয়ের সম্পূর্ণ বাজার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মাহানুরের মেজ চাচ্চু কাজে আটকে পরায় কানাডা থেকে আসতে পারবে না। ভীষণ মন খারাপ তার। রইলো মেহরাব আর হামযা খান। তাঁদের কাজ সব কিছু ঠিকঠাক হচ্ছে কি না সেটা যাচাই করা।
মাহানুর ড্রইংরুমে এসে ভ্রু কুঁচকায়। বড় বড় সাইজের বক্স রাখা ড্রইংরুমে। আয়াস আর সাদি মিলে সেগুলো খুলছে। মাহানুর ওদের দিকে এগিয়ে যায়।
-এই বক্স গুলোতে কি আছে ভাই? (মাহানুর)
-নেয়ী নাবেলি দুলহান উঠ গায়ি!(সাদি)
মাহানুর সাদির শয়তানি করা দেখে মুখ ভেংচি দেয়। সাদির মাথায় একটা চড় মেরে বলে,
-বল না কী আছে এটায়? (মাহানুর)
-লাইট আছে। (আয়াস)
-ওওও!(মাহানুর)
রামিশা মাহানুরকে দেখে তাড়া দিয়ে বলে,
-নুর দ্রুত নাস্তা করে নে মার্কেটে যাবি না আবার? (রামিশা)
-জি মেজ চাচী। (মাহানুর)
নাস্তা করতে ডায়নিং টেবিলে বসে পরে মাহানুর। লুৎফা এগিয়ে এসে মাহানুরকে খাবার বেড়ে দেয়। গতকাল আরহাম ঢাকায় এসেছে। আজ বিয়ে মার্কেটিং করতে যাবে তারা দুইজন। আরহানের দেরিতে আসার কারণে মার্কেটিং করতে করতে একটু দেরি হয়ে হয়ে গেলো। মাহানুর খাচ্ছে আর সবাইকে দেখছে। ছোট ফায়াজও কী ব্যস্ত। বড় ভাইদের সাথে মিলে লাইট গুলো বের করছে। খাওয়া শেষ করে বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় মাহানুর। তখনই হামযা খান বাহির থেকে বাড়ির ভিতরে ঢুকে। মাহানুরের সামনে এসে বলে,
-আম্মা নাস্তা করেছো?
-হ্যাঁ বড় বাবা।
-বেশ। আরহাম বাবা এসেছে বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে তোমাকে দ্রুত যেতে বলেছে।
-সে ভিতরে আসবে না?
-বললাম আসতে। কিন্তু আরহাম বলে বিয়ে আগে আর আসছে না বাড়ির ভিতর!
মাহানুর ক্রুটি হাসলো আরহামের বলা উক্তিটি শুনে। রুমে গিয়ে বোরখা পরে তৈরি হয়ে আসে। সবাইকে বলে বেরিয়ে পরে আঙিনায়। এখানেও কাজ চলছে। কিছু লোক বাস দিয়ে ডেকোরেশন করছে। পার্কিং এরিয়ার দিকে তাকাতেই মাহানুর আরহামকে দেখতে পায়। এতো মাস পর সরাসরি আরহামকে দেখে পলক না ফেলে তাকিয়েই থাকে। আরহামও সানগ্লাসে ভিতর দিয়ে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। মাহানুর সামনে এসে সালাম দেয় আরহাম। আরহামও মুচকি হেসে সালামের উত্তর দেয়। গাড়ির দরজা খুলে ভিতরে বসে পরে মাহানুর। তাই আরহামও সময় ব্যয় না করে বসে পরে।
গাড়ি চলছে কয়েক মিনিট ধরে। ফোনে এতো এতো কথা বললেও সরাসরি এতো মাস পর দুইজন দুইজনকে দেখে একদম নিশ্চুপ। মাহানুর কয়েকবার চেষ্টা করেছিল কিছু বলতে। কিন্তু লজ্জারা তাকে একদম আষ্টেপিষ্ঠে ধরে রেখেছে। নিজের এইরকম আচরণ দেখে মাহানুর নিজেই অবাক! একসময় সরম, লজ্জা তার ধারের কাছেও ঘেঁস্ত না আর এখন অকারণেই সরম পাচ্ছে!
আরহাম লুকিং গ্লাসের মাহানুরকেই দেখছে। হালকা কেশে গলা ঠিক করে নেয়। গম্ভীর কণ্ঠে বলে,
-বাসার সবাই ভালো আছে?
-হুম।
-তুমি?
-ভালো আছি। আপনি ভালো আছেন?
আরহাম বিরক্তিকর দৃষ্টিতে মাহানুরের পানে তাকায়। চোখ থেকে সানগ্লাস নামিয়ে বলে,
-এবার তো আপনির জায়গায় তুমি বলো!
-আপনিই ভালো।
-হুম আর রাগ উঠলে তুই আরো ভালো?
-আসলেই ভাই।
-এই শুনো, এইযে কথায় কথায় তোমার যে ভাই বলার অভ্যাস আছে এটা বাদ দেও। নাহলে ফিউচারে দেখা যাবে আমাদের ছেলেমেয়ে কনফিউস হয়ে যাবে। আমাকে বাবা বলবে নাকি মামা!
মাহানুর শব্দ করে হেসে দেয় আরহামের কথা শুনে। নিজের হাসি সংবরণ করে আরহামের উদ্দেশ্যে বলে,
-আমি তাহলে আরো বেশি করে বলবো। ইউ নো, কাউকে রাগাতে আমার ভীষণ মজা লাগে।
-ইটস্ নট ফানি ওকে?
-হয়েছে ইংলিশের বংশধর! এখন বলুন, ড্রেসে থিম কী সেম সেম হবে নাকি?
-অবশ্যই। বলো তুমি কোনদিন কোন রঙের ড্রেস পরতে চাও?
মাহানুর কিছুক্ষন চুপ হয়ে থাকলো। কিছু একটা ভেবে শান্ত স্বরে বলে,
-আমি আমার বিয়েতে নিজের নয় আমার স্বামীর পছন্দের সকল জিনিস পরতে চাই।
আরহাম অবাক হয়ে মাহানুরকে দেখছে। এই মেয়েই কী তার বিবাহিত স্ত্রী! না মানে কয়েকমাস আগে তো এমন মাটির মানুষ ছিল না! আরহাম ইমপ্রেস হয়ে বলে,
-আমার পছন্দের সব কিছু পরবে?
-হ্যাঁ।
-সব কিছু?
-আরেহ ভাই হো সব কিছু।
মাহানুরের ভড়কে যাওয়া দেখে হাসে আরহাম। না দুনিয়া এদিক থেকে ঐদিক হয়ে যাবে কিন্তু তার ওয়াইফ পরিবর্তন হবে না!
__________________🌸
মার্কেটে এসে আরহাম মাহানুরকে নিয়ে প্রথমে শাড়ীর দোকানে ঢুকে। অনেক গুলো শাড়ী দেখে তিনটা পছন্দ হয় তার। তিনটাই কিনে ফেলে মাহানুরের জন্য। তারপর শাড়ী থেকে শুরু করে মেয়েদের যাবতীয় কসমেটিক্স, জুতো, কয়েকটা থ্রি পিস, গোল ফ্রক, হেজাব কিনে দেয় মাহানুরকে। এতগুলো ব্যাগ তারা দুইজন মিলে ধরতে পারছিল না। তাই ব্যাগ গুলো নিয়ে গাড়ির ভিতরে রেখে দিয়ে পুনরায় তারা মার্কেটে যায়। এখন আরহাম নিজের জন্য কেনাকাটা করছে। জীবনে একবার বিয়ে করবে তাই কৃপণ্যতা দেখাতে চাচ্ছে না আরহাম। আর এতো টাকা বেতন পায় সেগুলো কার জন্য? তাঁদের নিজেদের জন্যই তো। তাই ইচ্ছে মতো মার্কেটিং করে। মাহানুর একবার বলেছিল বাড়তি টাকা খরচ করতে না। আরহাম হয়তো মাহানুরের সেই বাক্যটা শুনতে পায়নি।
মার্কেটিং শেষ হলে দুইজন একটি রেস্টুরেন্টে আসে। খাবার অর্ডার দিয়ে আরহাম শান্ত ভঙ্গিতে বসে। মাহানুর আশেপাশে চোখ বুলাচ্ছে। আরহাম টেবিলের ওপরে ঝুঁকে মাহানুরের হাত নিজের হাতের মুঠোয় পুরে নেয়। হঠাৎ আরহামের শীতল হাতের ছোঁয়া পেয়ে মাহানুর নজর নিচে নামিয়ে ফেলে। আরহাম দুষ্ট কণ্ঠস্বরে আস্তে আস্তে বলে,
-সুন্দরী হোটেল রুমে যাবে নাকি?
মাহানুর বুঝলো আরহাম মজা করছে। তাই মাহানুরও চাঁপা কণ্ঠে বলে,
-হোটেল রুম কেনো? কোনো সুন্দর রিসোর্টে চলুন একবারে হনিমুন ট্রিপ হয়ে যাবে স্বামীমহাশয়।
-বাহ্! আমার বউ তো দেখছি আমার থেকেও ফাস্ট!
-একদম।
-আর মাত্র তিনদিনের অপেক্ষা। তোমাকে সম্পূর্ণ নিজের করে নেই তারপরের দিনই হনিমুন ট্রিপে চলে যাবো। চলবে?
-বিয়ের পরেরদিনই নতুন বউ কোথায় যায়?
-না যায়না। তবে তুমি যাবে। কারণ আমি মাত্র একমাসের ছুটি নিয়ে এসেছি। আবার হঠাৎ কবে চলে যেতে হয় কে জানে! তাই বিয়ের পরেরদিনই আমরা হনিমুনে চলে যাবো।
হঠাৎই মাহানুরের মুখে অন্ধকার নেমে আসে। মুখ ছোট হয়ে যায় তার। মলিন কণ্ঠস্বরে বলে,
-না কোথায়ও যাবো না আমি। সেই সময়টুকু আমরা একান্তই নিজেদের বাসায় স্পেন্ড করব।
-কেনো?
-মাত্র একমাস থাকবেন! এতো কম ছুটি কেনো নিয়ে এসেছে? ভেবেছিলাম বিয়ের পর অন্তুত কয়েকমাস আপনাকে নিজের কাছে পাবো। কিন্তু!
-এখন বেশিই ছুটি তারা দেবে না আমার কী করার?
-আমি আপনার সাথে চট্টগ্রাম চলে যাবো।
-কী বলছো তুমি! বিয়ের পর শশুরবাড়ি থাকবে বাবারবাড়ি বেড়াবে। আমিও তো কয়েকমাস পর পর আসবো।
-না আমাকে সাথে নিয়ে যাবেন আপনি।
-সেখানে গিয়ে কোথায় থাকবে?
-একটা বাসা ভাড়া নিয়ে দেবেন তাহলেই হবে। সেখানে থাকলে আপনিও কয়দিন পর পরই আমাকে দেখতে পারবেন।
-তুমি সবকিছু যতটা সহজ মনে করো ততটা সহজ নয়।
-হ্যাঁ আমি জানি ততটা সহজ নয়। আচ্ছা একমাস আগে থাকবো। যদি কোনো প্রবলেম হয় তাহলে ঢাকায় এসে পরব আমি।
-দেখি আমি।
-কাল, পরশু আর দেখা হবে না?
-না, একবারে বাসরঘরে দেখা হবে।
মুখ ভেংচি দেয় মাহানুর। চোখ ছোট ছোট করে কপাল কুঁচকে বলে,
-আপনি আসলেই অসভ্য হয়ে গিয়েছে! বিয়ে দিনও বলতে পারতেন।
-আর কত সভ্য চাও?
মাহানুর প্রতিউত্তরে কিছু বললো না। চোখ গরম করে আরহামের দিকে তাকায়। আরহাম সেই চাহনি পরোক্ষ করে হাসে। এতক্ষনের মধ্যে তাঁদের অর্ডার দেওয়া খাবার এসে পরে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে বেরিয়ে পরে বাসার উদ্দেশ্যে।
_________________🌸
আজ মাহানুরের হলুদ। এক এক করে মেহমানরা আসছে। বাড়িতে জমজমাট আয়োজন চলছে। কর্তীরা রান্নাবান্নায় ব্যস্ত। বাচ্চা পোলাপানরা খেলছে, চিল্লাচিল্লি করছে। মাহানুর তার রুমে বসে আছে গোমড়া মুখ করে। পাশেই তন্দ্রা আর তার দুই চাচী দাঁড়িয়ে আছে। মাহানুর জেদ করছে সে পার্লারে সাজবে না। তন্দ্রা তাকে এতবার বুঝালো তবুও সে নিজের জেদ নিয়েই বসে আছে। অবশেষে অনেক কষ্টে তার দুই চাচী মিলে রাজি করায়। কিছুক্ষন পর পার্লারের মেয়েরা আসবে। তন্দ্রা তাড়া দিয়ে মাহানুরকে ওয়াশরুমে পাঠায় ফ্রেশ হতে।
অন্যদিকে, আরহামদের বাড়িতেও বিয়ের কাজকর্ম চলছে। আরহাম জামাই মানুষ সে নিজেই ব্যস্ত। এক এক করে তাঁদের সকল আত্মীয়স্বজন চলে আসছে। জিয়া সবাইকে আপ্যায়ন করছে। হাসি মুখে কথা বলছে। তার মুখ থেকে হাসি জানো আজ সরছেই না। নিজের পছন্দের মেয়েকে ছেলের বউ করে আনছে এর থেকে সুখের আর কিছু আছে!
সন্ধ্যার পর থেকেই খান বাড়িতে কৃত্রিম রঙবেরঙের লাইট জ্বলে উঠে। পুরো বাড়িই আজ সাদা, নীল রঙের লাইটে সজ্জিত। কিছুক্ষন আগেই পার্লার এর মেয়েরা মাহানুরকে তৈরি করে দিয়ে গিয়েছে। মাহানুরের সাথে তন্দ্রা, ইফতিও সেজেছে। হাজেরা মাহানুরকে দেখতে তার রুমে প্রবেশ করে। মুগ্ধ ভরা দৃষ্টিতে সামনে বসিত মাহানুরের পানে চোখ রাখে। হলুদ লাল সংমিশ্রনের লেহেঙ্গা পড়েছে মাহানুর। তাঁজা গোলাপ ফুলের গহনা পড়েছে। এ জানো কোনো গোলাপ রানী! মাহানুরের গালে হাত দিয়ে বলে,
-মাশাআল্লাহ! আমার মেয়েকে একদম পরীর মতো লাগছে। (হাজেরা)
মাহানুর মুচকি হাসে। মাহানুরের নানার বাড়ির কেউ তাকে পছন্দ করে না। তারা মনে করে মাহানুরের জন্যই তারা নিজের মেয়েকে হারিয়েছে। সেই কারণেই মাহানুরের বিয়েতে কেউই আসেনি। এতে মাহানুরেরও মাথা ব্যাথা নেই। লুৎফা বলে,
-আমাদের মেয়ে তো এমনেই সুন্দর।(লুৎফা)
-একদম ঠিক বলেছো ছোট চাচী। (তন্দ্রা)
-এইযে তন্দ্রা তারপর কিন্তু আমার তোমার বিয়ে খেতে চাই!(রামিশা)
-বাবা রে! (তন্দ্রা)
-হুম, তন্দ্রা আছে ইফতি আছে সবার বিয়ে খাবো আমরা। (হাজেরা)
-ইয়াসিন আর সিয়াম এসেছে না? (মাহানুর)
-হ্যাঁ নিচে আছে। আজ নাকি ওরা পাগলা ডান্স দেবে!(তন্দ্রা)
-হুম ওদের নাচিয়েই ছাড়বো আজ। (মাহানুর)
সবার কথার মাঝেই রুমে ঢুকে মাহানুরের ভাই ও বন্ধুরা। ইয়াসিন মহিলাদের উদ্দেশ্য করে বলে,
-লেডিস টাইম শেষ এবার বয়েস টাইম। আমরা ছবি তুলবো ব্রাইডের সাথে। (ইয়াসিম)
-প্রতিবন্ধী এখানে কেনো ছবি তুলবি? স্টেজে গিয়ে তুল। (তন্দ্রা)
-এখানে একটা তুলে নেই। (ইয়াসিন)
মুহূর্তেই ছেলে দিয়ে ভরে যায় পুরো রুম। রুমে উপস্থিত মহিলারা হেসে দূরে সরে যায়। সিয়ামের হাতে ক্যামেরা। সবাই মাহানুরকে ঘিরে বসে পরে আবার কেউ কেউ দাঁড়িয়ে আছে। আয়াস শয়তানি করে বলে,
-একদম পেত্নীর মতো লাগছে! (আয়াস)
-হুম তোকে তো হিরঞ্চি লাগছে। (মাহানুর)
-বেচারা আরহাম ভাই, পুরো জীবনটাই তার নষ্ট হয়ে যাবে এই চূড়েলকে বিয়ে করে। (ইয়াসিন)
-আমি চূড়েল? (মাহানুর)
-হুমমম। (আয়াস)
-তোদের বউ চূড়েল। যা কাল একবারের জন্য চলে যাবো আর আসব নাতো এই বাসায়। দেখুম নে তখন কার সাথে শয়তানি করিস? কে তোর বাঁদরামির সাথী হয়?(মাহানুর)
আয়াসের হাসি হাসি মুখটা চুপসে যায়। শুধু আয়াসের না মাহানুরের সব ভাই বন্ধুরাই উদাসীন হয়ে যায়। আয়াস জড়িয়ে ধরে বোনকে। আয়াসের দেখাদেখি আসীনও মাহানুর আর আয়াসকে আঁকড়ে ধরে। মাহানুরের চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তেই তন্দ্রা চেঁচিয়ে বলে,
-একদম কান্না করবি না। এতো টাকা দিয়ে মেকআপ করিয়েছে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য নাকি! ভাইয়ারা আপনারা শুধু শুধু ইমোশনাল হয়েন না। কালকের জন্য চোখের পানি বাঁচিয়ে রাখুন।
তন্দ্রার কথায় সকলেই হেসে দেয়। তারপর সবাই মিলে ছবি তুলে। ছবি তুলার ফাঁকে ফাঁকে হাসাহাসি তো আছেই।
>>>চলবে।