রিদ-মায়ার প্রেমগাঁথা #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া ১৬

0
778

রিদ-মায়ার প্রেমগাঁথা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া

১৬
টিফিন টাইম চলছে। সময় ১ঃ১৫। পুরো ক্লাস খালি করে সবাই যার যার মতোন করে কেন্টিনে বা ক্যাম্পাসের মাঠে আড্ডায় বসে। ক্লাসে তেমন কেউ না থাকলেও, মায়াকে নিয়ে হাতেগোনা সাত আটজন বসা আছে, যারা নিজস্ব কাজ নিয়ে ব্যস্ত। তাদের মাঝে মায়াও একজন। বিগত কয়েক দিনের বন্ধের ক্লাস নোট সংগ্রহ করছে মায়া শ্রেয়ার খাতা দেখে লিখে। জুইকে দিতে হবে এইগুলো তাই। জুই আজ কলেজে না আসায় একা সকল পড়ার চাপ পরেছে মায়ার উপর। আর সেই থেকেই ব্যস্ত হাতে লেখালেখি করছে শ্রেয়াদের সাথে ক্যান্টিনে না গিয়ে। তাছাড়া মায়া এমনও কলেজের ক্যান্টিনে যেত না। মায়ার না যাওয়ার অবশ্য দুটো কারণ আছে। প্রথম কারণ ছিল রিদ মায়ার টিফিনবাক্স রেখে দিয়েছে। এজন্য লেখার চাপ রেখে টিফিন করতে গেল না সে। শ্রেয়া, নাদিয়া দুজনই মায়াকে রিকুয়েষ্ট করে ছিল সঙ্গে যেতে পরে না-হয় তিনজন একত্রে মায়াকে নোট করে দিবে এমনটাও প্রমিজ করেছিল দুজন। কিন্তু তারপরও মায়া যায়নি লেখা ফেলে। দুই নাম্বার কারণটা ছিল রিদের ভয়। মায়ার ধারণা, মায়া যদি ক্যানটিনে যায় তাহলে নিশ্চয়ই রিদ সকালের মতোন করে ক্যান্টিনেও চলে আসবে মায়াকে হুমকি ধামকি দিতে। তাই মায়া মনে মনে ঠিক করে রেখেছে যতদিন না পছন্দ রিদ এই চট্টগ্রাম শহর ছেড়ে ঢাকায় চলে না যাচ্ছে ততদিন পযন্ত মায়া ক্যান্টিনে যাবে না। লুকিয়ে চুকিয়ে পালিয়ে বেড়াবে রিদ হতে। তারপরও খারাপ রিদ খানের মুখোমুখি না। সঙ্গীহীন মায়া ভিষণ মনোযোগ দিয়ে নিজের লেখাটা শেষ করছিল। কারণ টিফিন টাইম শেষ হলেই পঞ্চম ঘন্টা শুরু হয়ে যাবে। তখন আর লেখালেখি সুযোগ থাকবে না। ক্লাস টিচার্স থাকবে।

‘ ভাবি এটা আপনার জন্য ভাই পাঠিয়েছে। নিন!

অর্ধ পরিচিত কন্ঠ কানে আসতেই মনোযোগ নষ্ট হয় মায়ার। লেখা থামিয়ে কপাল কুঁচকে সামনে তাকাতেই চোখে পরে দশ এগারো বছরের ছেলে সুমনকে। ছোট সুমন নামক ছেলেটিকে মায়া চিনে। এই কলেজের ক্যান্টিনে কাজ করে বাবার সঙ্গে। মায়া সুমনদের ক্যান্টিনে রোজ খাওয়া-দাওয়া করে,আড্ডা দেয় শ্রেয়াদের সাথে। পরিচিত সুমনকে দেখে মায়া মনে করে সুমন অন্য কারও খোঁজে এসেছি এখানে। তাই সুমনের ভুল শুধিয়ে বলে…

‘ তুমি মনে হয় অন্য কারও খোঁজে এসেছো সুমন। আমি তোমার ভাবি না। আর এই পার্সেলও আমার না।

মায়ার কথায় তৎক্ষনাৎ নাহুচ করলো সুমন। মায়াকে শুধালো দৃঢ় গলায়। সুমন বলল..

‘ না ভাবি এইডা আপনারই। ভাইয়ের মোবাইলে আপনার ছবি আমি দেখছি। এই স্কুল ড্রেস পড়ায় আছিলেন ছবিতে। নিন এবার এইডা রাখেন।

বিস্মিত মায়া স্তব্ধতার নেয় সুমনের দিকে ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল শুধু। কে কার ভাবি? সেটাই মায়ার মাথার উপর দিয়ে গেল। মায়া কখন সুমনের ভাবি হলো? আর কখনই বা সুমনের ভাই নামক মানুষটির কাছে ওর ছবি গেল? মায়ার ছবি তাও অন্য কারও ফোনে আদৌও সম্ভব? মায়া তো ছবিই তোলে না। হাতেগোনা যে কয়েকটা ছবি আছে তাও সেই গুলো পারিবারিক ফোনে তুলা অন্য কারও ফোনে থাকার কথায় না। মায়ার পরিবার নিশ্চয়ই সুমনের ভাই নামক লোকটার কাছে মায়ার ছবি দিতে যাবে না। মায়া এখনো নিশ্চিত যে সুমন অন্য কারও সাথে মায়াকে গুলিয়ে ফেলেছে। এজন্য মায়া মনে মনে সুমনের জন্য দুঃখ পেল! সহজ সরল ছেলেটা কতো বোকা আহারে, ঠিকঠাক ছবিটা দেখতে পারেনি, এজন্য মায়াকে ছবির মেয়েটার সাথে গুলিয়ে এখন ভাবি ভাবছে। সুমন ছেলেটা আসলেই সহজ সরল। এখন মায়ার দায়িত্বের মধ্যে পরে সুমনকে বুঝানো, যে সুমন ভুল ভাবছে মায়াকে তার ভাইয়ের বউ মনে করে। মায়া কারও ভাবি নয়। আর এই পার্সেলের অধিকারীও মায়া নয় অন্য কেউ হবে। মায়া লেখার কলমটা রেখে হাত বাড়িয়ে সুমনের বাড়িয়ে দেওয়া খাবারের পার্সেলটা ঢেলে সুমনের দিকে দিতে দিতে মায়া বলে…

‘ এই পার্সেল আমি রাখতে পারবো না। তুমি ফিরত নিয়ে যাও সুমন। আর তোমার ভাইকে গিয়ে বলো সে যেন সাহস করে নিজে গিয়ে দিয়ে আসে তার বউকে। তোমাকে যেন না পাঠায়। তুমি ভুল করছো! একজনের পার্সেল অন্য জনকে ডেলিভারি দিচ্ছো। আমি এই পার্সেলের মালিক না। এবার তুমি যাও, আমি লেখবো।

উত্তেজিত ভঙ্গিতে মায়াকে তৎক্ষনাৎ শুধালো সুমন..

‘ আরে ভাবি কি বলেন এইগুলা? ভাইয়ের মতোন সাহসী পোলা এই চট্টগ্রাম শহরে দুইডা খোঁজে পাবেন না আপনি। ভাইয়ের সাহসের প্রশংসা তো পুরা বাংলাদেশ করে। আর আপনি তারে সাহসের কথা কি বলেন? ভাই শুনলে কিন্তু রাগ করবে। আসলে ভাবি ভাই এহন ব্যস্ত। ভাইয়ের আব্বা আইছেন। এজন্য ভাইয়ের লোক খাবারটা আমারে দিইয়া পাঠাইছে আপনার জন্য। নিন রাখেন। আর এসব কথা বলবেন কিন্তু ভাইয়ের নামে তাহলে আমি কিন্তু চুপ থাকবো না। সোজা ভাইয়ের কাছে নালিশ করবো আপনার নামে।

সুমনের হঠাৎ চেতে উঠা নাহুচ ভঙ্গি দেখে মায়ার মনেও আগ্রহ জাগে নামক মানুষটির কে তা জানতে। এজন্য মায়াও সুমনের ভাইয়ের মায়াও প্রশংসা করে বলল…

‘ তোর ভাইকে পেয়ে তোর ভাবি মনে হয় অনেক লাকি। তোর ভাই মনে হয় তোর ভাবিকে অনেক ভালোবাসে তাই না?

মায়ার কথা ফের শুধালো সুমন….

‘ আরে ভাবি, আপনি নিজেই তো আমাদের ভাইয়ের বউ।

অতি আগ্রহে জানতে চাইল মায়া…

‘ আচ্ছা তোর ভাইটা কে বলতো শুনি? নাম কি? এই কলেজের সিনিয়র কেউ???

মায়ার কথায় সুমন মায়ার দিকে খাবার পার্সেলটা এগিয়ে দিতে দিতে বললো…

‘ আমি কিছু বলতে পারুম না ভাবি। নিষেধ আছে, ভাইয়ের লোক আমারে বকবো। আপনি এইডা রাখেন, আমি গেলাম। আর ভাই আপনারে কইছে এইডা সবটা শেষ করতে। আমি এহন গেলাম।

মায়ার বই খাতায় উপর পার্সেলটা রেখে ফুড়ুৎ করে দৌড়ে পালাল সুমন। মায়া পিছনে থেকে অধৈর্য্যে নেয় ডাকতে লাগলো সুমনকে…

‘ এই শুন! শুন! সুমন এটা নিয়ে যা। আরে বলদ আমি তোর ভাবি না। তুই ভুল জায়গা পার্সেল ডেলিভারি দিছোস বাদর। সুমন শুন! এই সুমন!

মূহুর্তের মাঝে সুমন মায়ার ক্লাস রুম থেকে দৌড়ে পালিয়ে গেল। মায়া পিছন ডেকে লাভ হয়নি বরং মায়ার ক্লাসে যে কয়েকজন স্টুডেন্ট বসা ছিল তাঁরা মায়ার হঠাৎ চিৎকারের ডাকে বিরক্তি সহিত মায়ার দিকে তাকাতেই চুপ করে যায় মায়া। নিশ্চুপ ভঙ্গিতে পার্সেলের প্যাকেট হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ বসে থেকে দ্বিধা নিয়ে একটা সময় প্যাকেট খুলে বের করলো চিজি পাস্তার সঙ্গে বড় বড় গলদা চিংড়ি মাছ ভাজা। সাথে ফ্রেশ পানির বোতলও হয়েছে। বিস্মিত মায়ার খাবার দেখেই মত বদলায়। খাবার গুলোর দুটোই খুব প্রিয় মায়ার। পছন্দের খাবার সামনে পেয়ে লোভ সামলাতে পারলো না মায়া। তৎক্ষনাৎ বই খাতা গুছিয়ে ছুটলো ক্যান্টিনে শ্রেয়াদের উদ্দেশ্য। দুই বান্ধবীদের নিয়ে এই গুলা ভাগাভাগি করে খাবে সে। এখানে এমনই অনেক খাবার আছে। এতো খাবার মায়ার একা পক্ষে শেষ করা সম্ভব নয়। খাবার গুলো নিয়ে মায়া মাঠ পেরিয়ে ক্যান্টিনের দিকে যেতে মনে মনে আরও একবার ভেবে নিলো, অন্য খাবার যেহেতু মায়া খেয়ে নিচ্ছে তাই এই খাবারের বিল আজ যাওয়ার সময় মসজিদে দান করে দিবে। তাহলে আর মায়ার গুণা হবে না। তাছাড়া মায়া এখন এই খাবারের মালিককে কোথায় খুজবে? যার খাবার সে যদি ঠিকঠাক ডেলিভারি দিতে না পারে তাহলে মায়ার কি দোষ হু? মায়া কি ইচ্ছা করে খাবার গুলা রেখেছে নাকি? বরং এই খাবার গুলো জোরপূর্বক মায়াকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু মায়াকে চাপিয়েই দেওয়া হয়েছে সেহেতু মায়া এই খাবার গুলো কেন ফেলে দিয়ে নষ্ট করবে? এতে মায়ার পাপ হতে পারে। তারচেয়ে বরং মায়া এই খাবার গুলো খেয়েদেয়ে ভালো পূর্ণের কাজ করবে।
~~
কলেজ ছুটির পরপরই মায়া সবার সাথে বের হলো। গেইট পার হয়ে রাস্তায় আসতেই আচানক দেখা হয়ে গেল রাকিবের সঙ্গে। রাকিবের হঠাৎ সাক্ষাৎকারে অস্তিত্বে পরে গেল মায়া। আজ জুই নেই বলে একটু বেশি ইতস্তত বোধ করলো সে। মূলত রাকিব কলেজের এদিকটায় বসা ছিল। মায়াকে কলেজ হতে বের হতে দেখে এগিয়ে আসল। মায়ার সাথে কৌশল বিনিময় করলো। জুইকে না দেখে জানতে চাইল জুই কোথায়। মায়া দ্বিধায় জানালো জুই আসেনি। জুই না আসার সংবাদে আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার নেয় খুশি হয়ে গেল রাকিব। চকচক করার নেয় খুশিতে আবদার জানালো মায়াকে আজ বাড়িতে পৌঁছে দিবে সে। মায়া নাহুচ করলো। রাকিব বিনয়ের সঙ্গে ফের মায়ার কাছে অনুরোধ করায়, মায়া রাজি হলো। কিন্তু রাকিবের সঙ্গে এক রিকশা করে যেতে হবে ভেবে মায়া কৌশলে রাকিবকে জানাল মায়া আজ হেঁটে বাসায় যাবে। রিকশা করে যাবে না। কারণ রাস্তা মোরে মায়ার কাজ আছে কিছু নোট পিন্ড করতে হবে তাই। মায়া ভেবেছিল হেঁটে যাওয়ার কথা শুনে রাকিব হয়তো মায়া সঙ্গে যেতে চাইবে না বা নিষেধ করবে। কিন্তু মায়ার ধারণা ভুল করে রাকিব তাতেও রাজি হয়ে গেল মায়ার সঙ্গে যাবে বলে। শ্রেয়ার পারিবারিক গাড়ি আসতে ওহ চলে যায়। নাদিয়াকে উল্টো রাস্তায় রিকশা ধরে যেতে হয়। নাদিয়াও চলে যেতে মায়াকে একা করে। নিশ্চুপ মায়া হাঁটা ধরলে রাকিবও পা মেলায় মায়ার সাথে। ভালোবাসার মানুষকে পাশে পেয়ে বেশ উৎফুল্লতা দেখা যায় রাকিবের কথায়। মায়ার পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে কথার ফুলঝুরি ফুটে মুখে। নিশ্চুপ মায়া অস্তিত্বে পরে রাকিবের কথার হু হ্যা উত্তর করছে শুধু। রাস্তার মাঝেই অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে আবার দেখা হয়ে গেল রিদের সাথে। আর তাতেই মায়া আতঙ্কের নেয় রাকিবে বরাবর হয়ে নিজেকে আড়াল করতে চাইল রিদের কাছে ধরা পরে যাওয়ার ভয়ে। মূলত রাস্তার ওপাশেই রিদ দাঁড়িয়ে আছে তার বাবার সাথে। আশেপাশের অনেক মানুষ ভিড়ও রয়েছে। হয়তো ইলেকশনে সেমিনার জন্য এই ভিড়। মায়া মনে করলো রিদ মায়াকে দেখেনি। আর তাতে মায়া চুপিসারে কেটে পরবে নিজের আড়াল করে। মায়ার এই ধারণাটা ভুল প্রথম করে রিদ হঠাৎই শান্ত চোখ ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল রাস্তা এপাশে মায়ার দিকে। তৎক্ষনাৎ চোখাচোখি হয়ে গেল দুজনের। আতঙ্কিত মায়া তৎক্ষনাৎ নিজেকে আরও গুটিয়ে নিলো রাকিবের পিছনে। রিদ খুবই শান্ত স্বাভাবিক দৃষ্টিতে মায়াকে কয়েক সেকেন্ড দেখে ফের ঘাড় ঘুরিয়ে নেয়। আর তাকাল না। মায়া অবশ্য চুপিচুপি বেশ কয়েকবার তাকিয়ে ছিল রিদের দিকে। মূলত রিদ মায়ার কাছে চলে আসে কিনা সেটা দেখতে। কিন্তু রিদকে আসতে না দেখে স্বস্তির হয় মায়া। তবে বেশ বিরুক্ত হয় মায়া এই ভেবে যে, রিদ খান যখনই চট্টগ্রামে আসে তখন কেন এই কলেজে রাস্তা তাকে দেখা যায়? কেন এই লোকের কি বাড়িঘর নেই? নিজের বাড়ির ঘর ফেলে কেন রাস্তায় পরে থাকে সেটাই বুঝে না মায়া। সেদিনকার মতোন মায়ার সাথে রিদের আর দেখা হয়নি। মায়া বিকালে যখন কোচিংয়ের গেল তখনও না। তবে রাকিবের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। যেহেতু রাকিবও ঐ কোচিংয়ে পড়ায় তাই রাকিবের সঙ্গে দেখা হওয়াটাও স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু পরদিন সকালে আর না বিকালে। গোটা দিনটায় রিদের সাথে মায়ার দেখা হয়নি। মায়া রিদের ছায়াও দেখেনি কলেজে রাস্তায়। এতে মায়া খুশিই হয়েছিল মনে করেছিল রিদ আবার ঢাকায় ফিরে গেছে। এখন মায়া শান্তিতে কয়েকদিন চট্টগ্রামে থাকতে পারবে। তারপর রিদের ফিরার আগে আগে মায়া আশুগঞ্জ চলে যাবে। এতে রিদ খান আর মায়াকে খুঁজে পাবে না। ওদের দেখাও হবে না। মায়ার নিজের কল্পনা জল্পনা বেশ খুশি হলো। কিন্তু মায়ার সকল খুশিতে পানি ঢেলে রিদ হাজির পরদিন সকাল বেলা যখন মায়া কলেজে যাচ্ছি তখন। মায়া সবে একা রিকশার করে কলেজে যাচ্ছিল। জুই আজও কলেজে যায়নি শরীর অসুস্থ বলে। আকস্মিক ঘটনায় মায়া রিকশা হঠাৎই থেমে মায়া ঝুঁকে পরতে নিলে রিকশার হুট চেপে নিজেকে বাঁচায় পরার থেকে। উত্তেজিত মায়া স্বাভাবিক হওয়ার আগেই কেউ একজন গাড়ি থেকে নেমে, মায়ার হাত চেপে ধরলো শক্ত করে। আকস্মিক ঘটনায় মায়া কিছু বুঝার আগেই তৎক্ষনাৎ টান পরে মায়ার হাতে। মায়া ঝুকে পরে রিকশা থেকে নামে কারও টানাটানিতে। মায়া রিকশা থেকে নামতে নামতে উত্তেজিত ভঙ্গিতে আওড়াল…

‘ আরেহ! আরেহ! কে আপনি? আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? ছাড়ুন বলছি! ছাড়ুন!

আগমনকারী লোকটা পিছনের পিঠ নজরে আসলো মায়ার। লোকটা মায়াকে তখনো টেনে নিয়ে যাচ্ছে নিজের গাড়ির দিকে। মায়া চিৎকার করে লোকটা হাত হতে নিজেকে ছাড়াতে টানাটানি করতে লাগলো অনবরত। গাড়ির মুখোমুখি হতে ড্রাইভিং সিট হতে বের হয়ে আসলো আসিফ। আসিফকে দেখেই আত্মা উড়াল দেওয়ার জোগাড় হলো মায়ার। মায়ার বুঝতে আর বাকি রইলো কে মায়াকে এমন চিনতায় কারীর মতো টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আসিফকে দেখেই ভয়ে আতঙ্কে চিল্লাচিল্লি থেমে গেল। তবে রিদের ভয়ে কেঁদে উঠল তখনই। রিদ মায়াকে টেনে পাশের সিটে বসিয়ে সে ঘুরে গিয়ে বসলো ড্রাইভিং সিটে। আসিফের রেখে, রিদ দক্ষ হাতে গাড়ি ঘুরাল বিপরীত রাস্তা ধরে। মায়া রিদের ভয়ে সিঁটিয়ে নিশ্চুপে কাঁদতে লাগলো। তারপরও শব্দ করছে না বিন্দুমাত্র। আজ কপালে কি আছে কে জানে? এই লোক এমনই রাগান্বিত অবস্থায় মায়াকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তাও বুঝতে পারছে না মায়া। হয়তো মায়াকে আজ মেরে ফেলবে। তারপর বস্তা ভরে কোনো নদী ফেলে দেওয়ার জন্য মায়াকে এমন চিনতায় করে তুলে এনেছে মাঝ রাস্তা থেকে রিদ। নিজের মরার কথা চিন্তা করতেই মায়ার কান্নার বেগ আরও বাড়ে। আজ কলেজে আসার সময় জুইকে বকে এসেছিল মায়া। এজন্য জুইয়ের জন্যও মায়া লাগছে। মায়া যদি জানতো আজ ওর শেষ দিন তাহলে কক্ষনোই জুইকে বকে আসতো না। বরং আদর করে শেষ বিদায় নিয়ে আসতো।

( জানি ছোট হয়েছে। এজন্য নেক্সট পার্টটা তাড়াতাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ)

#চলিত….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here