রিদ-মায়ার প্রেমগাঁথা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
১০
টানা তিনদিনের জ্বরে কলেজ- কোচিং সবকিছুই বন্ধ করল মায়ার। আহত মাথা ব্যান্ডেজ ছাড়ল আরও একদিন আগে। আপাতত কাটা জায়গা মলম লাগিয়ে কলেজের জন্য রেডি হচ্ছে সে। আর কয়েক দিন বাদেই তো মায়ার বড় বোনের বিয়ে, অবশ্যই লম্বা ছুটিতে থাকবে ওরা। তাই এই মূহুর্তে কলেজ অফ করা মানেই নোটিশনামা আরিফের হাতে যাওয়া। যেটা মায়া আপাতত চায়ছে না। তাছাড়া অসুস্থতার ছাড়িয়ে এখন মায়া ঠিকঠাকই আছে। আরিফও আজ আশুগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামে ফিরবে বিগত চারদিন পর। এখন আরিফ বাসায় এসেই যদি মায়াকে অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় পরে থাকতে দেখে তাহলে প্রশ্ন করবে না? মায়া অসুস্থ কেন? কি হয়েছে? এতো ব্যথা কিভাবে পেল? তখন মায়া কি উত্তর দিবে? উত্তর কি আছে নাকি মায়ার কাছে? না নেই তো! এজন্যই তো মায়া পালিয়ে বাঁচতে চাইছে আরিফ হতে। তাছাড়া একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে কি বা বলবে সে? রিদ খান নামক উগ্রবাদী লোকটা ইচ্ছাকৃত ভাবে মায়াকে আঘাত করেছে এটা বলবে? আরিফ কি বিশ্বাস করবে মায়ার এ কথা? অবশ্যই করবে না! বরং উল্টো মায়াকে ধমকাবে আর বলবে, রিদের সাথে মায়ার কি এমন শত্রুতা চলছে যার জন্য রিদ খানের মতো লোক নিজে মায়াকে জেনে-বুঝে এতোটা আঘাত করলো। এখান মায়া নিজেই জানে না রিদ খানের সাথে আসলে মায়ার কি নিয়ে এতো শত্রুতামি। যেটা না জানে সেটা বলবে কিভাবে? মায়া তো শুধু জানে রিদ খান শুরু থেকে মায়াকে পছন্দ করে না। তাদের দেখা হলেই শুধু অকারণে মায়াকে অপমান করে। বারবার করে! যার জন্য মায়ার খুব আত্মসম্মানে লাগে। এজন্য মায়াও রিদ খানকে একদমই পছন্দ করে না। মায়ার অপছন্দের লিস্টে সর্বপ্রথম রিদ খানই আছে হুহহ।
দীর্ঘ মনস্তাত্ত্বিক চিন্তার মধ্যেই ধীর হাতে মাথায় হিজাব বাঁধল মায়া। কলেজ ব্যাগে বই গুছিয়ে নিতে নিতে ততক্ষণে জুইও মায়ার টিফিন বক্স গুছিয়ে মায়াকে নিয়ে ছুটল সদর দরজা দিয়ে বাহিরে। বাহির থেকে দরজায় তালা ঝুলিয়ে সিড়ি বেয়ে নামল চারতলা থেকে নিচে। রাস্তায় যেতে যেতে দুজনই নেমে-ঘেমে একাকার। বিরক্তি চাপিয়ে রিকশার জন্য অপেক্ষা করলো অনেক্ক্ষণ। তারপরও একটা গাড়ির হুদিশ পেল না। একটা সময় বিরক্তি নিয়েই বাধ্য হয়ে দুজন হাঁটা ধরল কলেজের উদ্দেশ্য। আজ অনেকটায় লেট হয়ে গেছে দুজনের। এর মধ্যে ক্লাস টাইম অভার হতে চললো। তাই প্রথম ঘন্টা না পেলেও দ্বিতীয় ঘন্টা ধরা চায়। এদিকে টনটনে কোমরের ব্যথা নিয়েও মায়া পা খুঁড়িয়ে পাক্কা বিশ মিনিট হাঁটার পরও যখন কোনো গাড়ির দেখা পেল না তখনই বিরক্তির কপাল কুঁচকায় জুই। অসুস্থ মায়াকে নিয়ে হাঁটতে ওরও সমস্যা হচ্ছিল বেশ। জুই হাঁটতে হাঁটতে বিরক্তির চোখে রাস্তার এপাশ ওপাশ দুইপাশে মাথা নাড়িয়ে দেখে নিয়ে তিক্ততা প্রকাশ করে বলল…
‘ বালের গাড়ি! বিপদের সময় একটা গাড়িও পাওয়া যায় না। অন্য সময় হলে ‘আপা যাবেন’ আপা যাবেন’ বলে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। অথচ আজ দেখ! একটা গাড়িরও খবর নাই। ধুর বাল, ভালো লাগে না।
জুইয়ের কথায় ফুটপাত থেকে দৃষ্টি সরিয়ে জুইয়ের উপর রাখল মায়া। কপালের ভ্রুর জোড়া হালকা উঁচিয়ে আর চোখে বেশ কৌতূহল। বেশ আগ্রহ নিয়ে মায়া প্রশ্ন করে জুইকে…
‘ বাল কি?
‘ বাল মানে জানোস না?
‘ না!
‘ মজা লস আমাার সাথে?
‘ না!
‘ দেখ রিক্তা মেজাজ খারাপ করবি না। এমনই রাগ উঠতেছে! বালের একটা গাড়িও পাচ্ছি না। তার উপর আবার তোর কোমরে ব্যথা। আচ্ছা তোর কি বেশি কষ্ট হচ্ছে হাঁটতে?
জুইয়ের চিন্তত চেহারা দেখে মায়া মিনমিন করে ঘাড় ঘুরিয়ে আশেপাশে তাকাল। সত্যি বলতে ওর কোমর টনটন করছে গাঢ় ব্যথায়। হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু উপায় না পেয়ে চুপ করে রয়েছে শুধু। এতক্ষণে বাসায় থাকলে নিশ্চিত মায়া চিল্লাচিল্লি করে কাঁদত। খালি রাস্তায় জুইকে বিপদে ফেলতে চাইছে না বলেই চুপ করে থাকা। কিন্তু জুই যেন মায়ার ব্যাথাতুর লাল মুখটা দেখে ঠাহর করতে পারলো মায়ার মনে অবস্থাটা। তারপরও নিরুপায় জুই। কোথাও কোনো গাড়ির হদিশ নেই। জনমানবহীন নির্জন রাস্তা। তারচেয়ে বেশি আশ্চর্যজনক হলো সকাল সকাল পাবলিক রাস্তা খালি দেখে। যে রাস্তায় সারাক্ষণ গাড়ি ভিড় লেগেই থাকে সেই রাস্তায় হুট করে নিস্তব্ধ দেখে খানিকটা সন্দেহ হলো জুইয়ের। রাস্তা ঘাটে হরতাল চলছে কিনা এই বিষয়ে খানিকটা নিশ্চিত হতে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আশেপাশে তাকাল। হঠাৎই তক্ষুনি কানে আসল কারও হাক ছেড়ে ডাকার শব্দ। জুই মায়া দুজনই চমকালো। ডাকে উৎস ধরে পিছন ঘুরতেই দেখল সিনিয়র ভাই রিফাত ডাকছে রাস্তার ওপাশ থেকে হাত নেড়ে ওদের। পরিচিত মুখ হওয়ায় দুজনেই থামল। মায়া খানিকটা ইতস্তত বোধ করে জুইয়ের শরীর ঘেঁষে দাঁড়াতেই চোখ উঁচিয়ে তাকাল জুই। মায়ার দ্বিধার কারণটি বুঝে চোখের ইশারায় আশ্বস্ত করলো’ সে আছে বলে। রিফাত ততক্ষণে ওদের মুখোমুখি হতে হতে মায়ার দিকে প্রেমময় দৃষ্টি ফেলতে ফেলতে জুইয়ের উদ্দেশ্য বলল…
‘ কি ব্যাপার তোমরা এতোদিন কলেজে যাওনি কেন? শুনলাম মায়া নাকি সেদিন আঘাত পেয়েছিল রিদ ভাইয়ের ছেলেদের হাতে? আমি বাড়িতে ছিলাম না। ঢাকায় ছিল! খবরটা পেয়েই ছুটে এসেছিলাম পরদিন কিন্তু তোমাদের দেখা পায়নি তিনদিন। এখন ভালো আছো মায়া?
রিফাতের অনবরত কথায় সুন্দর হাসে জুই। ছেলেটির চোখে মুখে ভাসে মায়ার জন্য ভালোবাসা। জুই সেটা বুঝতে পারে। তাই রিফাতের প্রশ্নে মায়া জড়তায় পরলেও জুই অন্তত আন্তরিক সাথে উত্তর দিয়ে বলে…
‘ জ্বি ভাইয়া এখন ভালো আছে ওহ। গত তিনদিনে একদম ফিট এন্ড ফাইন হয়ে গেছে। এজন্যই তো কলেজে যাচ্ছে, দেখছেন না?
জুইয়ের কথায় কপালের চিন্তিত ভাজ শিথিল হয় রিফাতের। মায়ার জড়তার মুখটার দিকে আরও একবার চোখ বুলিয়ে জুইয়ের দিকে তাকাল, আর বলল…
‘ তোমরা আজ এই রাস্তা দিয়ে কলেজে যাচ্ছো কেন? এই রাস্তা তো বন্ধ! সামনে যে রাজনৈতিক সংগঠন হচ্ছে জানো না?
দীর্ঘ সময়ের মাথায় ঘুরতে থাকা ফাঁকা রাস্তার রহস্য উন্মোচন হলো রিফাত কথায়। অনেকটা পথ হাঁটার বিরক্তিটা আবারও চেহারায় দেখা গেল। জুই বিরক্তি নিয়ে বলল…
‘ জানি না বলেই তো এসেছি। এখন কি করবো বলুন? এতদূর হেঁটে এসে আবার বাসায় ফিরে যাব? সামনেই তো আমাদের কলেজেটা কোনো ভাবে কি যাওয়া যাবে না? নাকি সমস্যা হবে কোনো?
চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল রিফাত…
‘ সঠিক বলতে পারছি না। পুরো রাস্তা ব্লক! আচ্ছা চলো দেখি সামনে গিয়ে কি হয়। যদি কেউ বাঁধা দেয় তাহলে দেখা যাবে। আসো আমার সাথে।
রিফাতের সঙ্গে যাওয়া বিষয়ে মন্ত মায়া এবার নড়েচড়ে দাঁড়াল। হাল্কা দ্বিধায় পরে বলল….
‘ আপনিও যাবেন আমাদের সাথে?
মায়ার কথায় পূর্ণ দৃষ্টিতে মায়ার দিকে তাকাল রিফাত। অন্তত নরম গলায় বললো…
‘ হ্যাঁ! কেন কোনো সমস্যা?
মুখে উত্তর করলো না মায়া। শুধু দ্বিধার মাথা নাড়িয়ে না বলল। মায়ার উত্তরে মুচকে হাসলো রিফাত। একত্রে তিনজন হাঁটা ধরলে রাকিবের চোখে ভাজলো মায়ার পা খুঁড়িয়ে হাঁটা বিষয়টি। বুঝতে পারলো এটা সেদিনকার দূর্ঘটনার ফলে। প্রেমিক পুরুষের মনটা হঠাৎ মোচর দিয়ে উঠে ব্যথায়। মায়ার পাশাপাশি হেঁটে অসুস্থতার কথাও জিগ্যেসা করলো বেশ করে। ইতস্তত মায়া শুধু হুম-হ্যা উত্তর করলো জুইয়ের একটা হাত চেপে ধরে রেখে। মায়ার সামান্য সহানুভূতিতে যেন রিফাতের মনে বিশাল প্রশান্তির অনুভব হলো। সেজন্য ঠোঁটে গাঢ় হাসি টেনে বাকিটা রাস্তা মায়ার পাশাপাশি হাটলো রিফাত। কিন্তু কলেজ গেইটের কাছাকাছি আসতেই বাঁধার সম্মুখীন হলো তিনজন। বিপুল জনগণের ভিড়ে কলেজ যাওয়ার রাস্তা খুঁজে পেল না।
অসংখ্য মানুষের গমগমে পরিবেশ। পুলিশ, প্রশাসন, সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে মন্ত্রী মহোদয় নেহাল খানও সেখানে উপস্থিত ছিল। বাবার সঙ্গ দিয়ে রিদ দাঁড়িয়ে শুভ্র সাদা পাঞ্জাবিতে। ঘামন্ত মুখশ্রী লাল হয়ে আছে অতিষ্ঠে গরমে। তারপরও গম্ভীর মুখে দাঁড়িয়ে বাপ-দাদার পাশে। রিদের পিছনে আরও অনেক নেতাকর্মী দাঁড়িয়ে। সবাই কি নিয়ে এতোবড় সংগঠনের আয়োজন করলো জানা নেই মায়ার। তবে চারপাশে উত্তেজিত পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে এটা কোনো সাধারণ সমাবেশ নয়। হৈ-হুল্লোড় এই উত্তেজিত পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ বাহিনী থেকে শুরু করে ছাত্র লীগের ছেলেরা পযন্ত সেই সম্মেলনে পাহারা দাঁড়িয়ে। অসংখ্য মানুষের ভিড়ে পুরো রাস্তা ব্লক করে ভিড় লেগে আছে পুলিশে জীপ থেকে শুরু করে অসংখ্য বাইক,কার, ট্রাক, সিএনজি আর অটোরিকশা। মায়ারা সেই সমাবেশের সামনেই আটকা পড়লো। রিফাত এগিয়ে গিয়ে পরিচিত কয়েকজন ছেলেদের সাথে কথা বললো যাতে মায়াদের যাওয়ার রাস্তা করে দেয়। বাঁধা না করে। সম্মতি পেয়ে রিফাত মায়াদের নিয়ে রাস্তার পাশ ঘেঁষে চললো কলেজের উদ্দেশ্য। অসংখ্য মানুষের ভিড়ে হওয়ায় রিফাত সেইফটির জন্য জুঁই আর মায়ার হাত চেপে ধরলো নিজের দু’হাতে! কিন্তু কয়েক কদম যেতেই ফের আটকাল পড়লো পুলিশে কাছে। জুই মায়া তখনো ভয়ে সিঁটিয়ে দাঁড়িয়ে রিফাতের হাত ধরে। ভয়ার্ত মায়া যখন ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে চারপাশে ভীতু চোখ ঘুরাচ্ছিল তখনই চোখাচোখি হয় মঞ্চে দাঁড়িয়ে থাকা রিদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টির সাথে। ভয়ার্ত মায়া আরও ভয়ার্ত হলো। ফের রিদের সাথে মুখোমুখি হবে কালক্ষণে ভাবিনি। তাই ভয়ার্ত মায়া রিদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টির আড়াল হতে তৎক্ষনাৎ রিফাত পিছনে লুকিয়ে পড়লো নিজেকে আড়াল করে। মায়ার হঠাৎ কান্ডে গম্ভীর রিদকে আরও গম্ভীর দেখাল। তাঁর কুঞ্জিত ললাটের ভাঁজ আরও গাঢ় হলো। ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল আসিফের দিকে। চোখের ইশারায় কিছু একটা বলতেই তৎক্ষনাৎ মঞ্চ ছাড়ল আসিফ। দ্রুত পথে এগিয়ে আসল মায়াদের কাছে। পুলিশের সাথে কথা বলে মায়াদের যাওয়া রাস্তা করে দিল। এবং নিজ দায়িত্ব নিয়ে কলেজ গেইট পযন্ত এগিয়ে দিল। মায়া বা রিদ কেউ আর কারও দিকে তাকাল না। যার যার মতোই রইল। কিন্তু যখন মায়া কলেজ গেইট পার হয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো তখনই পিছন ডাকল আসিফ। মায়া পিছন ঘুরতেই অন্তত বিনীত সহিত আসিফ একটা গোল প্যাকেট এগিয়ে দিতে দিতে বললো…
‘ এটা আপনার।
মায়া বুঝল না আসিফের কথার মানে। তাই প্যাকেটের এদিকে তাকিয়ে ফের আসিফের উদ্দেশ্য শুধিয়ে বললো…
‘ আমার মানে?
‘ জ্বিই! ভাই পাঠিয়ে এটা আপনাকে দিতে। হয়তো আপনার কিছু হবে আমি চেক করিনি। আপনি পরে চেক করে নিবেন। এখন ধরুন।
আসিফের সহজ সরল কথায় মায়া ভিষণ ভাবে চমকায়। রিদ খানের মতো মানুষ মায়াকে ভালো কিছু দিবে এটা হতেই পারে না। মায়ার ধারণা আসিফের হাতে এই ছোট্ট খামের প্যাকেটটিতেও এমন কিছু আছে যেটা মায়াকে ফের অপমানিত করবে। মায়া আসিফের হাতের প্যাকেটটি নিল না। উল্টো কড়া গলায় নিষেধ করে পালিয়ে গেল কলেজে। আসিফ পিছন ডেকেছিল বেশ কয়েকবার কিন্তু মায়া সারা দেয়নি এজন্য ব্যথা হয়ে খামটি নিয়ে ফিরল রিদের কাছে। আসিফ রয়েসয়ে সবটায় রিদকে জানাল মায়ার নাহুচ করার বিষয়টি নিয়ে। মঞ্চ দাঁড়িয়ে থাকা গম্ভীর রিদ তখনো কিছু বললো না, আর না তাঁর ভাবমূর্তি পরিবর্তন হলো। শুধু গম্ভীর মুখোর রিদের চোয়াল শক্ত দেখাল তৎক্ষনাৎ। অতি রাগ চেপে রাখার প্রয়াসে তার গম্ভীর চোখ দু’টো খানিকটা লালাভময় দেখাল। শক্ত চোয়ালে সামনে তাকাতে তাকাতে আসিফের উদ্দেশ্য বলল…
‘ তোর বেয়াদব ভাবির খোঁজ পেয়েছিস?
‘ না ভাই!
‘ হাফেজ সাহেবকে বল আমার সাথে দেখা করতে।
‘ জ্বিই ভাই!
~~
পরপর তিনদিন মায়া সাথে রিদের মুখোমুখি হতে হতেও হয়নি। কারণ ভয়ার্ত মায়া বরাবরই রিদকে এরিয়ে পালিয়ে গেছে। একদিক থেকে রিদ আসলে অন্যদিক থেকে মায়া পালিয়ে বাঁচে। এমন না যে রিদ মায়ার সাথে দেখা করতে আসতো। সে মূলত নিজের কাজেই আসত। কিন্তু তারপরও মায়া পালিয়ে বাঁচতো। রিদের বিগত কয়েক দিন বাবার সঙ্গ দিয়ে চট্টগ্রামে থাকায় মায়ার মুখোমুখি বেশ কয়েকবারই হয়েছিল কিন্তু প্রতিবারই রিদের মায়াকে দেখার আগে মায়া পালিয়ে গেছে অন্যথায়। যাতে রিদের চোখে না পরে।এজন্য মূল্যে দুজনের দেখা আর হয়নি। তবে রিদ যখন নিজের কাজে ঢাকা চলে আসে তখন মায়াও বড় বোনের বিয়ে জন্য বাড়িতে চলে যায়। দুজনের দেখা না হওয়ার পিছনে মায়ার দিন দিব্যি যাচ্ছিল। বড়বোনের বিয়ের জন্য দুম বাদিয়ে কেনাকাটা করতে লাগল কিন্তু মাঝখানে দিয়ে একদিন সকল বান্ধবী মিলে আবারও নরশিন্দীর উদ্দেশ্য গেল মায়ার অচেনা স্বামীকে খুঁজতে। ব্যর্থ হলো! কিন্তু বিপত্তি বাজল সেখানেই। ঝামেলা মাঝে আরও ঝামেলা সৃষ্টি হলো। এলোমেলো জীবনের ডোর আর অগোছালো হলো। ভুলবুঝির রেশ বাড়ল ভয় কমলো না। রিদ মায়া মুখোমুখি হওয়ার থেকে আরও দূরত্ব বাড়ল।
#চলিত…..