#দেওয়ানা_(আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাল মায়া
#পর্বঃ_১৩
🍂
নিজের রুমে সোফাই বসে, সোফার টেবিলের ওপর দু পা ভাজ করে পা নাড়িয়ে চলছি আমি, আর আমার মাথা সোফায় খেলিয়ে দিয়ে চোখে ওপর একহাত রেখে, কিছু একটা চিন্তা করে চলছি আমি, কিন্তুু আমার এত চিন্তা ভাবনার পরে ও ফলাফল বরাবরই মতোই শূন্য,,,
যোগ + বিয়োগ অংকটা কিছুতেই কষে উঠতে পারছি না আমি,,, আর আমার এত এত চিন্তা মূখ ও প্রধান কারণ হলো নিহা আপুর,,,, কারণ কাল শপিং মলে ফয়সাল ভাইয়া আর আপুকে আমি একসাথে দেখেছি কিন্তুু সেটা স্বাভাবিক ভাবে নয়,,,,
ফয়সাল ভাইয়া নিহা আপুকে দেয়াল এ সাথে চেপে ধরে রেখেছিল আর নিহা আপুর কাঁদো কাঁদো গলায় কিছু একটা বলছিলেন ভাইয়াকে,,,,
আমার কৌতূহল জিনিসটা বরাবরই মতো খুব বেশি তাই নিজেকে আর চেয়েও আটকাতে পারিনি,,, ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম তাদের কাছে,,,, তখনি ফয়সাল ভাইয়া কাজে আমি বাক্ব রোগহীনতাই ভোগতে লাগলাম চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ছিলাম তাদের দিকে,,,, ফয়সাল ভাইয়া নিহা আপুর গলায়, ঘাড়ে পর পর তিন তিনটা কামর বসিয়ে বলে উঠে,,, এটা নাকি ওনার দেয়া লাভবার্ডস মানে ভালোবাসা চিন্হ, বর এ দেওয়া এসব নাকি বউকে রাখতে হয়,,,
উনার এমন কথায় বা কাজে কিছু আমার মাথায় ঢুকল না,,,, তাই আমার এত এত চিন্তা দূর করতে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে পরি,,,, আর সাথে সাথে পারি জমালাম ড্রয়িংরুমে দিকে, উদ্দেশ্য লাভবার্ডট সম্পর্কে জানতে হবে নিহা আপুর থেকে,,,,
সিঁড়ি ওপর থেকে ড্রয়িংরুমে চোখ বুলিয়ে নিয়ে নিহা আপুর খুঁজতে লাগলাম অবশেষে পেয়েও গেলাম সবাই সাথে ডাইনিং এ বসে খাবার খাচ্ছেন,,, খুশিতে আপুর আশেপাশের কে আছে তা দেখার প্রয়োজন বোধ মনে করেনি আমি,,, তাই দৌড়ে গিয়ে আপুর পাশে চেয়ারটাতে বসে পড়লাম আমি,,, আর সাথে সাথে বলতে শুরু করি আমি,,,, আচ্ছা আপু লাভবার্ডট কি,,?
আমার এমন আকস্মিক ঘটনায় সবাই ড্যাপ ড্যাপ করে দেখছে আমাকে, আমি সেসব এ মাথা না ঘামিয়ে উৎসুক দৃষ্টিতে আপুর দিকে তাকিয়ে গালে দু হাত দিয়ে আবারও বলে উঠি,,,, বলোনা আপু লাভবার্ডট কি,,,
আপু কাচুমাচু করে সবাইকে এক পলক দেখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
—” আমি কি জানি মায়া, আর তুই আমাকে কেন বলছিস এসব কথা, তুই গিয়ে অন্য কেউকে জিগাসা কর না আমাকে কেন বলছিস,,,,
আমি শতসঃফূর্তি গলায় বলে উঠে
—-” তুমি জানো,,, ভাইয়া তোমাকে বলেছে আমি দেখেছি কাল শপিং মলে তোমার গলায়, ঘাড়ে ভাইয়া কামড় দিয়েছে,, আর বলেছে এটা নাকি লাভ বার্ডট ভালোবাসা চিন্হ,,, বর এ দেওয়া চিন্হ নাকি বউদের রাখতে হয়,,, আর এখন তুমি আমাকে বলছো তুমি জানো নাহ, একদম মিথ্যা বলবা না আমাকে,,,
আমার এমন কথায় আপুর মূহুর্তের যক্ষ্মা নামক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন, যেমন এ রোগের সাটিফিকেট আজকেই নিয়ে নিবেন ডাক্তার থেকে কোনো থামা থামি নাই,,,
তখনি পাশ থেকে ফিহা বলে উঠে,,,
—-” ফয়সাল ভাইয়া কাল কি করে শপিং মলে আসবে আমরা তো কেউ দেখিনি, তুই দেখলি কি করে,,, (ভ্রু কুঁচকে)
ফিহার এমন কথায় আমি বিরক্তি নিয়ে বলে উঠি
—-” চোখ দিয়ে দেখছি,,,,
তারপর আবার আপুর দিকে কৌতূহল চোখে তাকিয়ে বলি,,, আপু বার্ডট তো বুঝলাম মানে কামড় দেওয়া বা চিন্হ যেটা তোমার গালায় আছে, কিন্তুু লাভটা কোথায় মানে ভালোবাসাটা কোথায় সেটা আমি দেখতে পারছি না কেন,,, এ আপু ভাইয়া কি তোমার সাথে চিটিং করেছে মানে তোমাকে কামড় দিয়ে ভালোবাসা না দিয়ে চলে গেল,,, এখন কি তোমাকে ভাইয়া নামক ইনজেকশন নিতে হবে এ কামড় থেকে বাঁচা জন্য,,,,
আমর এমন কথায় সবাই হো হো করে হাসলে ও দাদা-দাদি স্বাভাবিক ভাবেই মুসকি হাস ছিল, যেমন আমার দ্বারা এমন কথা অপ্রতাশিত কিছু না,,, আর নিহা আপুর লজ্জায় লাল হয়ে গেল মূহুর্তেই, কিন্তুু আমিও দমে যাবার পাএী নয়, আমারও লাভবার্ডট চাই-ই চাই,,, আবারও আপুকে বলে উঠি,,, বলো না আপু,,, ”
তখনি আবারও ফিহা বলে উঠে,,,,
—-” না, আপুকে কোনো ভাইয়া নামক ইনজেকশন নিতে হবে না,,, তবে বর রা একটু আরেকটু কামড় খেতেয়ে থাকে বউ নামক মানুষটির কাছ থেকে,,, তাই নারে আপু,,,,
ফিহার কথায় আমি বলে উঠি,,,
—-” তাহলে আমিও খাব লাভবার্ডট, আমারও চাই,,,,, আমারও বর আছে,,,
আমার এমন কথায় সবাই অদ্ভুত ও ভয় ভয় নজরে আমার পাশে চেয়ারটা তাকায়,,, কিন্তুু আমি তাদের এই তাকানোর মানে বুঝলাম না, তাই ঘাড় ঘুরিয়ে আমার পাশে চেয়ারটা তাকিয়ে দেখি উনি বসে আছে, মানে সেখানে আমার গুনধর স্বামী বসে বসে শান্তি মত অন্ন নিবারণ করছেন,,, এমন ভাবে চামচ দিয়ে নাড়িয়ে নাড়িয়ে শান্ত ভাবে খাবার খাচ্ছেন যেন এখানে কোনো কিছু হচ্ছে না, আর না হচ্ছে কোনো কথা,,,, উনার আশেপাশে কেউ নেই এমন ভাবে মনোযোগ দিয়ে খাবার খাচ্ছেন,,,,,
কিন্তুু উনার দেখে এ মূহুর্তে আমার ভয় করলো না আরও অনেক খুশি হলাম আমি,,, কারণ এ আশায় যে আমি এখন আমার লাভবার্ডট পাবো তাই,,,, কথায় আছে না যে বাচ্চারা যখন কোনো কিছু পাওয়া জন্য তীব্র আগ্রহ প্রকাশ করে আর তা না পাওয়া পযন্ত কোনো কিছু মানতে চাই না,,, হোক সেটা যতটা ভয়ানকি না কেন, তার সেটায় চাই-ই চাই,,, আমার ক্ষেত্রে ও তাই লাভবার্ডট পাওয়া আশায় এ মূহুর্তে সকল ভয় ভুলে গেলাম আমি,,, আর উনার দিকে গোল গোল চোখে তাকিয়ে রইলাম,,, উনার দৃষ্টি ছিল স্থির খাবার এ ওপর,,,,
আবারও আমার ধ্যান ভঙ্গ করে আয়ন ভাইয়া আমার সামনে চেয়ার থেকে বলে উঠে,,,,
—-” মায়া তুমি যখন বড় হবে তখন ঠিক সময়ে ঠিক ব্যাক্তি কাছ থেকে তোমার লাভবার্ডট পেয়ে যাবে,,,
এখন তুমি ছোট আগে বড় হও তারপর সবকিছু, ঠিক আছে,,,,,
আয়ন ভাইয়া এমন কথায় আহত হলাম আমি, আমাকে উনার ছোট মনে হয়, আমার বয়স ১৮+, আর আমার হাত পা কত বড় হয়ে গেছে তার কোনো ধারনা আছে তার আজব,,,, একটা লাভবার্ডট খাব তাতেও আপত্তি সবার , কিন্তুু আমি এসব কিছু মানি না আমার চাই মানে চাই,,, তাই আর কাউকে কিছু বলতে না দিয়ে ঝাপিয়ে পড়লাম উনার ওপর,,, আমার এমন আকস্মিক হামলায় উনি সাথে সাথে হকচকিয়ে উঠে, আর উনার একহাত দিয়ে আমার কমড় জড়িয়ে ধরে,,,, আর আমি উনার কোলে বসে একহাত দিয়ে চুল আকরে ধরে অন্য হাত দিয়ে উনার ঘাড় চেপে ধরে বসে গলায় মুখ গুজিয়ে কামড় বসিয়ে দিলাম জোরে,,,, উনি সাথে সাথে “আহহা,, শব্দ করে আমাকে নিজের সাথে আরও চেপে ধরে কাছে টেনে নেন,,,, আমি সুযোগ পেয়ে পর পর তিন তিনটা কামড় বসায় উনার গলায়,,,,
আমার প্রথম কামড়ে আহহা শব্দ করলে ও পরের দুটো কামড়ে তিনি শান্ত ভাবেই বসে ছিলেন আমাকে চেপে ধরে রেখে,,,,,
আমি কামড় দিয়ে মনে সুখে উনার কোলে বসে, ঘাড় ঘুরিয়ে সামনে দিকে তাকিয়ে দেখি সবাই দাঁড়িয়ে আছে আর আমার দিকে ড্যাব ড্যাব তাকিয়ে আছে ভয় ভয় নজর নিয়ে,,,, আমি তাদের এই তাকানোর মানে বুঝতে পারলাম না তাই জিগাসু দৃষ্টিতে আমিও তাকালাম তাদের দিকে,,,,,
তখনি পাশ থেকে ফিহা বলে উঠে,,,,,
—–” মায়ু বেবি তো তহ গেয়া কামছে,,,, এখন তর কি হবে রের ভাইয়া তো তকে মেরে ফেলবে রে,,,, আল্লাহ তর সহায় হোক আমিন,,,,
ফিহার কথায় কিছু বুঝতে না পারলেও দাদীর কথায় আমি বুঝতে পারলাম যে আমি এতক্ষণ কি করেছি,,,
দাদী যখন উনাকে উদ্দশ্য করে বললো,,,,
—-” রিদ দেখ মায়া ছোট মানুষ বাচ্চামো করে ফেলেছে, তুই ওকে কিছু করিস না প্লিজ, ওহ আর এমন করবে না, আমি ওকে বুঝাবো,,, মায়া তুই আমার কাছে আয় তাড়াতাড়ি,,,,
দাদী এমন কথায় আমার মনে ভিতরে একরাশ ভয় কাজ করে শুরু করে দেয় মূহুর্তেই,,,, আমি ভয়ে ভয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে দেখি, উনি আগে নেয় আমার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার কমড় জড়িয়ে ধরে রেখে,,,, আমি নিজেকে উনার কোলে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে দেখে কাঁদো কাঁদো হয়ে, আর ভয়ে চিৎকার করে দৌড়ে গিয়ে আয়ন ভাইয়া পিছনে লুকিয়ে পড়লাম আর ভাইয়াকে পিছন থেকে দু হাত দিয়ে খামচি ধরলাম,,,
তখনি ভয়াৎ কন্ঠে নিহা আপুর বলে উঠে,,,,,
—-” রক্ত ” ভাইয়া তোমার গলায় থেকে রক্ত বের হচ্ছে,,,,,
নিহা আপুর কথায় আমি চমকে আয়ন ভাইয়া পিছন থেকে উকি মেরে উনার দিকে তাকালাম,,, উনি আমার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল পরে উঠে দাঁড়িয়ে কাউকে কিছু না বলে হনহন করে নিজের রুমে প্রস্তান করেন,,, উনার চলে যাওয়া দেখে আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম,,, আয়ন ভাইয়া পিছনে থেকে সামনে বের হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম আমি, পরে একটা দীর্ঘশ্বাস নিতেই উপরে তাকিয়ে আবারও এক জোড়া লাল চোখ দেখতে পেলাম আমি,,,
আয়ন ভাইয়া চোখ মুখ শক্ত করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে,,, আমি উনার হঠাৎ রেগে যাওয়া কারণটা বুঝতে পারলাম না তাই ভয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে তাকালাম উনার সামনে,,, উনিও কাউকে কিছু না বলে রেগে নিজের রুমে দিকে পা বাড়ায়,,,, আর আমি বোবা পাখির মতো তাকিয়ে ছিলাম,,,, আর পাশ থেকে দাদী দৌড়ে এসে আমাকে একহাত দিয়ে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে রাখে,,,
চলবে,,,,,,,,,