#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_২৭
🍂
মায়া রিদকে বুঝে উঠার আগেই রিদের পেটের ওপর বসে পড়ে,,, পরে রিদের একহাতে চুল আর অন্য হাতে বাহু শক্ত করে চেপে ধরে গলায় মুখ গুজিয়ে কামড় বসায় গালায়,ও গালে,,,, পরে একটু নিচে নেমে রেগে নিজের ডান হাতটা দিয়ে রিদের শার্ট টেনে ধরে পর পর তিন তিনটা বোতাম চিরে ফেলে খালি বুকে কামড়িয়ে ধরে……
বুকের তীব্র ব্যাথায় রিদ মায়াকে উল্টো ঘুরিয়ে বিছানা সাথে চেপে ধরে,,, এবার মায়া নিচে আর রিদ ওপরে,,, রিদ মায়াকে বিছানার সাথে চেপে ধরে রেখেই এক পলক নিজের বুকের দিকে তাকিয়ে থেকে আবার মায়া দিকে তাকায় পরে ভ্রু কুঁচকে মায়াকে বললো,,,,
—” এটা কি ছিল,,,?
মায়া নিজেকে রিদ থেকে ছাড়ানোর জন্য নড়াচড়া করতেই রিদ মায়ার হাত দুটো আরও চেপে ধরে বিছানার সাথে,,, মায়া অশ্রুসিক্ত চোখে কান্না মিশ্রিত গলায় বললো,,,,
—” কামড়,,, (নাক টেনে টেনে)
রিদ আরও খানিকটা ঝুঁকে এসে মায়াকে বললো
—” তাই,, আমি তো জানিই না এটাকে যে কামড় বলে,,, তা তোমার কামড় খেয়ে আমারও এখন কামড় কামড় খেলতে ইচ্ছা করছে,,, কি খাব,,,?
মায়া ভীতু গলায় কান্না করতে করতে বললো….
—” আমি ইচ্ছে করে কামড় খাইনি তো,,, এমনি এমনি কামড় খেয়েছি,,, আপনি তো বলেছেন,,
—” এমনি এমনি তুমি কামড়াকামড়ি করো নাকি,,, আর
আমি কখন বললাম তোমাকে কামড়াতে,,, (ভ্রু কুঁচকে)
(রিদ)
—” তখন বলেছেন তো,,, আর আমি কারও সাথে রাগ করতে পারি না তো,,, ভাইয়া সাথে যখন ঝগড়া করতাম তখন ভাইয়াকে কামড় খেতাম রাগ করে,,,৷ তাই তো আপনি বলাতে আপনাকেও খেয়েছি,,, আর খাব না সত্যি বলছি,,, (নাক টেনে টেনে)
রিদ মায়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে,, মায়ার বামহাতটা ছেড়ে দিল,, পরে মায়ার গালে আদুরে হাত বুলাতে বুলাতে আরও অনেকটা ঝুকে ধীর গলায় বললো,,,,,
—” তোমার এই কামড়ের স্পর্শে কতটা ভেঙ্গে গুলিয়েছে আমায়, কতটা পুড়িয়েছে আমাকে জানো তুমি,,,, আজও পুড়ায়া, তোমার দেওয়া স্পর্শে দাগ আজও আছে আমার গলায়,,, মুছতে দেয়নি আমি বারবার ক্ষত করছি আমি সেই জায়গায়,,, আমার তোমার কাছ থেকে আসলে কি চাই তাতো জানি না আমি,,, তবে তোমার কামড়ে স্পর্শে এতটা বুঝে গেছিলাম যে তোমাকে আমার প্রয়োজন,,, আর যায় হোক তোমাকে আমার কাছে আমার সাথেই থাকতে হবে সারাজীবন,,,, থাকতে তুমি বাধ্য,, আমি বাধ্য করবো তোমাকে,,,
মায়া রিদের কথায় কিছু বুঝতে না পেরে ভয় ভয় নজর তাকিয়ে থেকে রিদকে উদ্দেশ্য করে বললো…
—-” আমি দাদী কাছে যাব,,, আমি আপনার সাথে থাকতে চাই না,,, আপনাকে আমার ভালো লাগে না, আমি বাসায় যাব দাদা-দাদি কাছে,, আমাকে দিয়ে আসুন….
মায়া রিদের সাথে থাকতে না চাওয়াটা যেন রিদের শান্ত দৃষ্টি বঙ্গিটা রাগে পরিনিত হয়ে আসে মূহুর্তেই,,,
রিদের আদুরি হাতটা শক্ত হয়ে আসে,,,, মায়া কথা গুলো শেষ করার সাথে সাথে তার কন্ঠ নালিটাও বন্ধ হয়ে আসে মূহুর্তের,,, আটকে আসা নিশ্বাস টাও ফেলতে পারছে না,,,, মায়ার চোখে কানিস বেয়ে জল গরিয়ে পরতেই,, রিদ প্রচন্ড রেগে শক্ত গলায় বললো….
—” আমার যা প্রয়োজন তা আমি নিজেই নিয়ে নেয় কারও কাছ থেকে চাওয়াটা আমার হেবিটে নেই,,, আর যেটা আমার তার দিকে কারও নজর ও পরতে দেয় না,,,, আমি তোকে রিকুয়েষ্ট করছি না আমার সাথে থাকা জন্য আমি আমার কথা শুনিয়েছি তোকে,,,
আর এই নিশ্বাসটাও আমার দমেই চলছে তোর,,, তাই অবাধ্য হওয়ার চেষ্টা ও করবি না,, তোকে পুড়িয়ে গুলিয়ে আবারও নতুন করে তৈরি করবো আমি বুঝেছিস তুই,,, (দাঁতে দাঁত চেপে )
বলেই রিদ মায়ার গলার ছেড়ে উঠে বসে নিজের দুহাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে নিজের রাগটা কন্ট্রোল করার চেষ্টা করতে থাকে,,,,
মায়া রিদ থেকে ছাড়া পেয়ে নিজের গলায় হাত দিয়ে কাশতে থাকে,,, হা করে নিজের আঁটকে আসা নিশ্বাসটা নিয়ে নেয়,,, মায়া নিজের অবাঞ্চনিয় অবস্থায় আরও অনেকটা সিটিয়ে যায় ভয়ে,,, রিদকে এমনিতেই ভয় পায় আর এখন রিদ নিজেই মায়ার ভয়টা আরো একধাপ বাড়িয়ে দেয় তার এমন কাজে,,,, মায়া শুয়া অবস্থায় নিজের দু’হাতে মুখ ডেকে শব্দ করে কান্না করতে লাগল,,,,
মায়ার কান্না শব্দ কানে আসতেই রিদ তার ঘাড় ঘুরিয়ে মায়ার দিকে তাকায় পরে মায়াকে এক ঝটকায় শুয়া থেকে তুলে বসিয়ে আবারও টেনে নিজের কোলে ওপর বসায়,,, মায়া ছাড়া পাবার জন্য ছুটাছুটি করতেই রিদ মায়ার দুহাত চেপে ধরে নিজের পিছনে নিয়ে মায়াকে নিজের বুকে সাথে মেশাই,,, পরে মায়ার হাত রিদের পিছনে রেখে রিদ নিজের দুহাত সামনে এনে এক হাত মায়ার পিঠে আর অন্য হাত মায়ার মাথায় শক্ত করে চেপে ধরে রাখে নিজের বুকের মাঝে যাতে করে মায়া কোনো নড়াচড়া করতে না পারে,,,, রিদ নিজেকে কিছুটা শান্ত রেখে মায়াকে বললো,,,,
—-” আমি চাই না তোমার পাগলামোটা আমার রাগের নিচে চাপা পড়ুক,,, তুমি সবকিছু করতে পারবে তবে সেটা আমাতেই সীমাবদ্ধ হতে হবে,,,, তোমার শুরুটা আমি, শেষটাও আমিই, তাই এমন কিছু করোনা,, “উহুম,, করতে তো আমি নিজেই দিব না,,, তাই এমন কিছু বলোনা যাতে তোমার সমস্যা হয়,,,,
রিদ কিছুটা থেমে নিশ্চুপে নিজের দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আবারও বললো
—” আমরা এখানে একদিন থাকবো পরে বাসায় ফিরে যাব,,,, আর তুমি এখন থেকে আমার সামনেই থাকবে সবসময়,,,, ঐ ফ্ল্যাটে আর তোমার থাকা হবে না,,, এবার সবটা আমি নিজেই বুঝে নিব,,, এখন চুপচাপ একটু ঘুমিয়ে পর আমি তোমার পাশে রুমে আছি,,,,
বলেই রিদ মায়াকে কিছু বলতে না দিয়ে বিছানায় শুয়ে দিয়ে মায়ার চোখের পানি মুছে, কিছু না বলে লাইট অফ করে দ্রুত উঠে রুম ত্যাগ করে নিজের রুমে চলে যায়,,,,,
রিদ চলে যাওয়ার পর মায়া বালিশে মুখ গজিয়ে কান্না করতে লাগে,,, আর রিদের করা সবকিছু মনে করতেই মায়ার কান্নাটা যেন আরও বেড়ে যায়,,, মায়া সবকিছুর থেকে মুক্তি পেতে চাই, রিদ থেকে মুক্তি পেতে চাই, তার করা অত্যাচার মুক্তি পেতে চাই,,, সবকিছু থেকে ছুটে পালাতে চাই, অজানা রাজ্যে পারি দিতে চাই,,, যেখানে রিদ নামক কোথায় আতংক থাকবে না মায়ার জীবনে,,,,
রিদ কি পারবে মায়াকে আটকাতে, নাকি মায়া লাগব টানবে রিদের এই দু-টানা ফিলিংস এর মধ্যে,,, সত্যি কি মায়া হারিয়ে যাবে নাকি রিদ মায়াকে আঁকড়ে ধরে রাখবে,,,, সবটাই সময়ে সাথে বহুমান,,, সময় তার গতিতে চলছে আর তার সাথে চলছে মায়া, রিদ ও আয়নে জীবন,,,,,,,
🍁
নিজের রুমে ব্যালকুনিতে স্টং হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দুহাত পকেটে গুঁজানো আয়নে,,, দৃষ্টি তার ঘুড় অন্ধকার দূর আকাশে শূন্যে মাঝে,,, যেখানে চোখ যায় সেখানেই শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার,,, নিস্তব্ধতা ছেয়ে আছে চারদিকে তার সাথে আয়নে মনটাও বিষন্নতা গেড়া,,, আজ সবকিছুই তার বিষাক্ত লাগছে নিজেকেও ভারি ভারি মনে হচ্ছে,,,,
রিদ মায়াকে নিয়ে যাওয়ার পর আয়ন কারও সাথে কোনো কথা না বলে হসপিটাল থেকে বের হয়ে এসে নিজের রুমে ঢুকে আর বের হয়নি কারও সাথে কথা ও বলেনি, তখন থেকেই নিজের রুমে ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে আছে আয়ন,,,, আর এক মনে কিছু একটা ভেবে চলছে,,,,,
রিদের আমার বউ বলার কথাটি মেনে নিতে পারছে না আয়ন,,, এই সামন্য একটি ছোট কথার জন্য আজ আয়ন রিদকে থামাতে পারেনি,,, আর না পেরেছে মায়াকে রিদের হাত থেকে মুক্ত করতে,,,, এই কথাটি যেন আয়নকে কূড়রে খাচ্ছে,,,, আমার বউ এই কথাটি কি সব অন্য কিছু কি কোনো মূল্য নেই,,, বউ তো নিজের হয় অন্য কারও অধিকার থাকে না এতে, আর থাকতে দেয়ও না,,, বউ সম্পূর্ণ নিজের অধিকার,,,, এজন্য হয়তো রিদের কথার প্রতিবাদ করতে পারিনি,,,, তাই এই সম্পর্কে লাগব টানতে চাই আয়ন,,, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মায়াকে নিজের বউ বানাতে চাই আয়ন,,, অনেক হয়েছে এসব লুকোচুরি খেলা,,, এতদিন রিদের ফিলিংসে দাম দিয়ে এসেছে ভাই হিসাবে কিন্তুু একবারও মায়ার কথা চিন্তা করেনি মায়ার ফিলিংস সম্পর্কে বা মায়া কি চাই কিছুই জানতে চাই নি আয়ন,,, কিন্তুু এখন সবটা জানবে আয়ন, মায়া রিদকে চাই না তাই মায়াকে কোনো কালেই থাকতে দিবে না রিদের সাথে,,,, মায়ার ও সুখ চাই,,,
আয়ন জানে রিদ মায়ার সাথে খারাপ কিছু করবে না,,, এতে আয়নের বিশ্বাস বিন্দু মাত্র কম নেই বরংছ একটু বেশিই আছে,,,, কিন্তুু সমস্যা হলো রিদ যদি রাগে বষে আবারও মায়াকে আঘাত করে তখন,,,,
আয়ন এমন সব চিন্তা ভাবনায় মাঝে, আরও কঠিন একটা কিছু চিন্তা করলো আয়ন, যার মাধ্যমে বদলাতে পারে মায়ার জীবন,,,, এখন শুধু সময়ে পালা, সময় তা রং দেখাবে সময়ে সাথেই,,,,
চলবে………