দেওয়ানা ( আমার ভালোবাসা) #লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_২৫

0
1004

#দেওয়ানা ( আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_২৫

🍂
হসপিটালের কেবিনে ভিতর অজ্ঞান অবস্থায় বেডে শুয়ে আছে মায়া,, তার পাশের সিটে বসে আছে রিদ, তার সাথে রয়েছে একজন ডক্টর যিনি রিদকে ব্যান্ডেজ করিয়ে দিচ্ছেন,, রিদের কপাল আর হাত অনেকটা লেগেছে সেখানটাই ব্যান্ডেজ করিয়ে দিচ্ছে ডক্টর,,, কিন্তু রিদের সেখানে কোনো মনোযোগ নেই সে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মায়ার মুখের দিকে,, যদিও মায়া কোনো ক্ষতি হয়নি জাস্ট অজ্ঞান হয়ে আছে,,, তখনই মায়া পিটপিট করে চোখ খোলে তাকায় সামনের দিকে, জায়গায়টা বেশ অপরিচিত হওয়ার প্রথমে কিছু বুঝতে পারেনি, একমিনিট সময় নিয়ে ভাবার পর সবকিছু মনে পড়ে যায় মায়ার,, পর মূহুর্তের উত্তজিত হয়ে সামনে তাকায় সাথে সাথে দেখতে পেল আশিককে,,,, আশিক কেবিনে এক কোনায় দরজার পাশে দাঁড়িয়ে আছে তবে সেটা মায়ার জন্য সামনে ছিল,,,

মায়া উত্তজিত হওয়ার কারণে আর আশেপাশে তাকাবার প্রয়োজন বোধ মনে করেনি,,, ঠাস করে শুয়া থেকে উঠে বসে আশিককে উদ্দেশ্য করে বললো,,,,

—” উনি , উনি কই? উনি কই আশিক ভাইয়া? উনি (রিদ) ঠিক আছে তো..? আর আমি এখানে কেন ভাইয়া আ….

মায়া কথাগুলো বলতে বলতে পাশে তাকাতেই চোখে পড়ল রিদের শান্ত দৃষ্টি যা ওর দিকে নিক্ষেপ করা ছিল। মায়া রিদকে দেখে মুখে হাসি ফোটে উঠল মূহুর্তেই,, তাড়াতাড়ি করে নিজের সিট থেকে নেমে রিদের উদ্দেশ্যে দৌড়ে দেয়,, কিন্তু পথি মধ্যেই হঠাৎ থামে যায়, রিদকে ছুঁয়া বারণ মায়ার। এমনকি রিদের করা সবকিছুই ওর এক মূহুর্তেই মনে পড়ে যায়, মায়ার নিজের উত্তেজনায় কি করতে চাইছিল ভেবেই ভয়ে সিটিয়ে যায়, ভয়ে ছাপ স্পষ্ট ওর চেহারায়,, ভয়ে আষ্টশ মায়া এদিক ওদিক তাকাচ্ছে আর পা ফ্লোরে খুটাচ্ছে, তো হাত দুটো কছলাচ্ছে,,, পাশ ফিরে আশিক দেখে ভরসার স্থান করল তাই কোনো দিক চিন্তা না করেই দৌড়ে গিয়ে আশিকের পিছনে লুকিয়ে পড়ে না ধরে। আশিকের পিছন থেকে কিছুক্ষন পর পর উকি মেরে রিদকে দেখছে,,,,

মায়ার হঠাৎ এমন কাজে আশিক ভ্যাবাচেকা খেয়ে একবার মায়ার দিকে তাকিয়ে সামনে তাকায় রিদের দিকে করুণ চোখে। আশিক বুঝতে পারছে যে তার পাতানো বোন এ মূহুর্তে তারই গুনধর স্বামীকে ভয় পাচ্ছে, কিন্তু তাই বলে তার পিছনে লুকাবে? তার তো কিছুই করার নেই, সে রিদের চাকরি করে তার হাত পা বাধা, রিদ খান যা বলবে তাকে তাই করতে হবে। চাইলেও মালিকের বিরুদ্ধে যেতে পারবে না। আশিক অসহায় মুখ করে তাকিয়ে থাকল রিদের দিকে,,,,,

রিদ মায়ার হঠাৎ এমন করার কাজে একদমই আবাক হয়নি,,, কারণ সে জানত এমন কিছুই হবে,,,, ঐ সময়ে রিদকে জরিয়ে ধরে ছিল গুন্ডা গুলোর ভয়ে,, রিদকে গুন্ডা গুলোর আঘাত করছিল দেখে মূহুর্তে নিজের ভয়ে কথা ভুলে রিদের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছিল বাঁচাতে, যাতে ওরা রিদকে আঘাত না করে তাই,,, সবটা বুঝতে পারছে রিদ। তাই সে আপাতত কিছু বলছে না। আর না অন্য কোথাও তাকাচ্ছে। শুধু এক দৃষ্টিতে মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে। মায়ার বারবার আশিকের পিছন থেকে উঁকি দেওয়ার কারণে বরাবরই দুজনে চোখাচোখি হয়ে যাচ্ছে। মায়া ভয়ে আবার লুকিয়ে ও পরছে তো পুনরায় আবার উঁকি ও মারছে রিদকে দেখার জন্য, বিষয়টা দারুণ লাগছে রিদের কাছে। সে জানে মায়া কেন বারবার উঁকি দিচ্ছে, ভয়ে তার সামনে আসতে পারছে না কিন্তু সে ঠিক আছে কিনা দেখার জন্য বারবার উঁকি মেরে দেখতে চাইছে,,,,
তাই রিদ শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মায়া দিকে
রিদের এমন শান্ত দৃষ্টি অপেক্ষা করে হুড়মুড়িয়ে কেবিনে ঢুকল খান বাড়ি সবাই। বেশ উত্তেজনা সাথে আর চাপা কান্না নিয়ে এগিয়ে আসল মিসেস হেনা খাঁন,,, রিদকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দেয় তিনি উত্তেজিত কন্ঠে বললো,,,,

—” তুই ঠিক আছিস তো সোনাবাবার? ডক্টর আমার সোনাবাবার বেশি লাগেনি তো,, ওহ তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে তো,,, (বুকে জরিয়ে ধরে)

—” না তেমন কিছু হয়নি ওনার, হাতে আর কপালে একটু লেগেছে, যদিও হাতের কাটাটা একটু গভীর কিন্তু কিছুদিন রেষ্ট নিলে ঠিক হয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ, (ডক্টর)

হেনা খাঁন আরও কিছু বলবে তখনি পাশ থেকে আরাফ খান থামিয়ে দেয় হাতের ইশারায় আর ডক্টরকে উদ্দেশ্য করে বললো,,,,

—-” ডক্টর আপনি আমার সাথে একটু কেবিনে বাইরে চলুন,,, আপনার সাথে রিদ সম্পকিত কিছু কথা বলার আছে,,,

ডক্টর বাহিরে যেতেই রিদের ফুপি-ফুপা এগিয়ে আসে রিদের দিকে আর হেনা খাঁন থেকে ছাড়িয়ে নিতে নিতে আদুরি গলায় বললো,,,,

—” বাবা তোর এক্সিডেন হলো কিভাবে আর তুই তো বডিগার্ড ছাড়া কোথাও যাসনা তাহলে আজকে কেন গেলি,,, হলত বিপদ,, (আদুরি হাত বুলাতে বুলাতে)

পাশ থেকে আয়ন তার মাকে উদ্দেশ্যে বলে উঠে,,,,

—” আহ,,, মা ওকে একটু বলতে তো দাও যে কি হয়েছে ওর সাথে,,, তোমরা একের পর এক প্রশ্ন করেই যাচ্ছো,,, তো ভাই (রিদকে উদ্দেশ্য করে) বলতো একজ্যাক্টি কি হয়েছে তোর সাথে,, এক্সিডেন্ট তো দেখে মনে হচ্ছে না,,, আমার তো অন্য কিছু মনে হচ্ছে,,, আশিক যখন আমায় কল করেছিল তখনি বুঝতে পেরেছিলাম কি একটা হয়েছে, নয়তো ওহ আমাকে এতো রাতে কল করতো না,,,, তাই চুপচাপ না থেকে বল কি হয়েছে,,,,

রিদকে সবাই গিরে ধরে আছে,, রিদ রাগি ভাবে আশিকের দিকে তাকায়, কারণ রিদ কখনোই কোনো সমস্যায় পড়লে বাসায় জানায় না ভুলেও,,, কারণ ওহ কাউকে টেনশনে রাখতে চাই না,,, রিদ কখনোই ভুলে কারও সাথে মিথ্যা বলে না সে যেই হোক না কেন,, তাই এ মূহুর্তে তা ফ্যামেলিকে বলার জন্য কিছুই নেই,,, তাই এই মূহুর্তে আশিককে চোখ রাঙ্গাচ্ছে,,,, আর আশিক ভয়ে কাচুমাচু করছে,,,,

আয়ন রিদের দৃষ্টি অনুসরণ করে পিছন ফিরে আশিককে দেখে হালকা হেসে বললো,,,

—-” ওকে চোখ রাঙ্গায়ে কোনো লাভ নেই,,, ওহ ওর কাজ করেছে মাত্র আর ওর কো….

আয়নকে মাঝ পথে থামতে হয় কারণ তার চোখে সামনে মায়াকে দেখে আবাক হয়ে তার না বলা বাকি কথা গুলো কন্ঠ নালিতেই আটকিয়ে যায়.. হঠাৎ দাঁড়িয়ে যায়, আর চোখ দুটো বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে মায়ার দিকে,, আর বুঝার চেষ্টা করে যে মায়া রাত দুটোই এখানে কি করছে,,, ওর তো এখান নিজের রুমে থাকার কথা তাহলে…

মায়া মিসেস হেনা খাঁনকে দেখে খুশিতে জরিয়ে ধরে টলমলে চোখে আর মিসেস হেনা খাঁনের বুকে মুখ লুকান,,, আর হেনা খাঁন মায়ার এমন কান্ডে কিছু বুঝে উঠতে না পেরে মূহুর্তেই চমকে যান, পরে মায়াকে দেখে, একহাত মায়া পিঠে আর অন্য হাত মায়ার মাথায় রাখে,,,, পরে সাথে সাথে মায়াকে উত্তেজিত কন্ঠে বললো,,,,,

—” সোনামা তুই এখানে কি করছিস,,, তোর তো এখন ফ্ল্যাটে থাকার কথা তাই না,,, আর তুই এত ভয় পাচ্ছিস কেন,,, আমাকে বল কি হয়েছে তোর,,,,

দাদীর কথায় মায়া নিজের মাথাটা বাঁকা করে দাদীর বুকে চেপে রেখে বাঁকা চোখে রিদ এ দিকে তাকায় ভয় ভয় নিয়ে,,, সাথে সাথে দু’জনে আবার চোখাচোখি হয়ে যায়, মায়া ভয়ে সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিজের মাথাটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে নেয়,,, রিদকে মায়ার প্রচন্ড ভয় লাগে, মায়ার জন্য রিদ মানেই আতঙ্ক…. তাই সে ভয় থেকে বাচার জন্য নিজের দাদীর কাছে থ্রায় নিয়েছে,,, কিন্তুু মিসেস হেনা খাঁনের কোনো কথা উত্তর দিচ্ছে না শুধু চুপ করে শুনে যাচ্ছে….

মায়াকে ভয় পেতে দেখে মিসেস হেনা খাঁন আরও উত্তেজিত হয়ে পাশে আশিককে রেগে বললো,,,

—-” আশিক ওহ এখানে আসলো কিভাবে,,, আর আমি তোকে না বলেছিলাম যে আমার সোনামা আমার পারমিশন ছাড়া ঘর থেকে বের হবে না তাহলে এখানে ওহ আসলো কিভাবে,,,,

আশিক ভয়ে কাচুমাচু করছে আর রিদের দিকে তাকাচ্ছে,,, আশিককে অবস্থা দেখে ভ্রু কুচকে আসে আয়ন এর,,, তখনি রিদ নিজের কাটা হাতটা একটু ঝেড়ে নিয়ে, স্টং হয়ে দাঁড়িয়ে মিসেস হেনা খাঁনকে উদ্দেশ্য করে বললো,,,,,

—” আমি গিয়ে ছিলাম তোমার সোনামা কাছে,,, তাই ওহ এখানে,,, (স্বাভাবিক ভাবে)

রিদের কথা শুনে সবাই ভ্রু কুঁচকে তাকায় রিদের দিকে,,, আর আয়ন আশিক থেকে চোখ সরিয়ে রিদের দিকে তাকায় সন্দেহ দৃষ্টিতে, আয়ন কিছু বলবে তার আগে মিসেস হেনা খাঁন মায়াকে টেনে নিজের বুক থেকে উঠিয়ে মায়াকে ভালো করে দেখতে দেখতে বললো,,,,

—” সোনামা তুই ঠিক আছিস তো,, রিদ তোকে কিছু করেনি তো আর তোম…..

মিসেস হেনা খাঁন এর কথা শেষ করার আগেই রিদ মায়াকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে আসে কেউ কিছু বুঝে উঠার আগে,,,, এবং মায়ার হাত শক্ত করে চেপে ধরে হেনা খাঁনের উদ্দেশ্যে বললো…..

—” তোমার সোনামাকে এখনো খায়ে ফেলেনি আমি,,, তবে খেয়ে ফেলবো যদি তোমার সোনামা আমার কথা না শুনে তো,,, আর অনেক রাত হয়েছে তোমরা সবাই বাসায় যাও,, আশিক সবাইকে পাশায় দিয়ে আয় তো…. (স্বাভাবিক ভাবেই)

রিদের খাওয়ার কথাটা শুনেই মায়া ভয়ে কান্না করে দেয়৷,,,আর রিদ থেকে নিজের হাতটা ছাড়ানো জন্য নিজের হাতটা মুছড়াতে থাকে,,এতে রিদের বড্ড সমস্যা হচ্ছে তাই রাগী ভাবে মায়ার দিকে তাকাতেই মায়া ভয়ে হাত ছাড়ানো চেষ্টা বন্ধ করে দেয়,আর চুপচাপ দাঁড়িয়ে কান্না করতে লাগে আর হেনা খাঁন এ দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে থেকে,,,,

রিদের কথা শুনে আর মায়ার অবস্থা দেখে মিসেস হেনা খাঁন তেলবেগুনে জলে উঠে বললো,,,,

—-” তোর সাহস তো কম না,,, তুই আমার সোনামা কাছে কেন গিয়েছিস,,, আর ওহ তোর কি এমন ক্ষতি করেছে যে তুই ওর সাথে এমন করছিস,,, আর তোর যদি ওর সাথে বিয়েটা নিয়ে সমস্যা হয় তো আমি তোকে এ বিয়ে থেকে মুক্তি দেব,,, তবো তু…..

মিসেস হেনা খাঁনের বাকি কথা শেষ করার আগেই রিদ মায়াকে নিয়ে দরজা দিকে এগোতে লাগে আর তার দাদীর দিকে না তাকিয়ে বলতে লাগল…..

—-” লাভ ক্ষতি বোঝা পড়াটা আমাকে করতে দাও দাদী,, আর বাকি রইলো বিয়েটা নিয়ে,,, তো বিয়েটা করেছি তোমাদের ইচ্ছেতে আর পরেটা হবে আমার ইচ্ছেতে,,, তো তোমাদের এতো না ভাবে ও চলবে,,,

রিদ কথা শুনে কিছু বুঝতে না পেরে মিসেস হেনা খাঁন দৌড়ে এসে রিদ পথ আটকায় মায়াকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে আসতে চাই তার আগেই রিদ মায়াকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে আসে এটা দেখে হেনা খাঁন রাগী ভাবে বললো….

—-” ওকে নিয়ে তুই কোথায় যাচ্ছিস,,, ওহ তোর সাথে কোথাও যাবে না কে তুই,,, ওকে আমার কাছে দে বলেছি….. (হাত বাড়িয়ে)

রিদ মিসেস হেনা খাঁন এ কথায় মায়াকে কোলে তুলে নিয়ে আর শান্ত ভাবে বললো….

—” দাদী তুমি ভুলে যাচ্ছো তোমার সোনামা আমার বিয়ে করা বউ,,, সে আমার সাথেই যাবে আর যদি তুমি আমাকে আটকাতে চাও তবে, আমি তোমার সোনামাকে নিয়ে সারাজীবনে জন্য এখনি চলে যাব অনেক দূরে তখন আমাকে বা তোমার সোনামাকে কাউকেই আর খুঁজে পাবে না, আর তুমি ভালো করেই চিনো আমাকে …..

বলেই রিদ মায়াকে নিয়ে কোলে করে বেড়িয়ে যায়,,, রিদের বেড়িয়ে যাওয়া দেখে ভয়ে হু হু কান্না করে দেয় মায়া আর বলতে থাকলো,,,,

—” দাদী আমাকে বাঁচাও আমি যাবনা উনার সাথে,,, আমাকে উনি খেয়ে ফেলবে দূরে কোথাও নিয়ে গিয়ে,,, দাদী, দাদী প্লিজ উনার থেকে আমাকে বাঁচাও,, দাদী দাদী, দাদাজান তুমি কই, আমাকে তোমার ভিলেন নাতির হাত থেকে বাচিয়ে নিয়ে যাও,,, দাদাজান, দাদাজান….

মায়া এমন চিৎকারে, চাপা কান্না করে উঠেন মিসেস হেনা খাঁন কিন্তুু তিনি কিছু করতে পারছেন না কারণ সে রিদকে ছোটো থেকেই চিনে,, রিদ খুব তীক্ষ্ণ মাইন্ড,, আর রিদের মাইন্ড কি চলে সে কাউকে কিছু বলে না,,,, আর না বলার প্রয়োজন বোধও মনে করে,,,, নিজের যা ভালো লাগে সেটাই করে, এখন যদি তিনি কিছু বলে তাহলে রিদ আর মায়া দুজনকেই হারাতে হবে তার,, তাই নিরবে চোখে জল পড়ছে তার….

এতক্ষন নিরব দর্শক এর মতো সবটা শুনে যাচ্ছিল দাঁত চেপে আয়ন,,, লাস্ট কথা গুলো শুনে এগিয়ে গিয়ে রিদের পথে আটকে দাঁড়ায় আর শান্ত ভাবে রিদকে উদ্দেশ্য করে বললো,,,,,,

—-” মায়াকে নামা রিদ, ওহ তোর সাথে কোথাও যাবে না, মায়া আমাদের সাথে যাবে, আর রইলো মায়া তোর বউ সেটা আর মাত্র কয়েক দিনের এর জন্য,, এ বিষয়ে তোর সাথে পরে কথা বলবো আমারা,,, পাশে তাকিয়ে নানুমা তুমি মায়াকে নিয়ে যাও,,,,

আয়ন এ কথায় রিদ মায়াকে নিয়ে স্টং হয়ে দাঁড়িয়ে রিদ, পরে কপাল কুচকে বললো,,,,

—-” তোর কি মনে হয় আমি দূরে ছিলাম বলে ওর খবর আমি রাখিনি,,, আমার বউ,,, আই রিপিট (দুই কদম এগিয়ে এসে আয়ন এর সামনে দাঁড়িয়ে শান্ত ভাবে বললো) এগেন আই রিপিট,,, আমার বউ দিনে কয়
কদম হেঁটেছে তার হিসাব যদি আমার কাছে থাকে,,, বাকি সবতো পরের বিষয়,, ওর সাথে জরিত সকল বিষয় আমার জানা,,, এমনকি তোর সবকিছুও,,, আর তোর না বলা কথা গুলো ও আমি জানা,,,, আর রইলো ওর কথা তাহলে (একটু ঝুকে আস্তে করে আয়নকে বললো)
ওকে আমি আমার অনুমতি ছাড়া এক গ্লাস পানি পযন্ত খাওয়া পারমিশন দেয় নি কখনো সবকিছুই আমার সামনেই হয়েছে,,, আর নিজের বউকে যদি ছাড় না দেয় বাকি সবতো পরে বিষয়,,,

বলেই সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে মায়াকে নিয়ে এগোতে লাগলো তখনি আয়ন এর ডাক রিদের কানে আসতেই পিছনে ফিরে না তাকিয়ে সামনে দিকে হেটে যেতে যেতে আয়নকে উদ্দেশ্য করে বললো,,,,

—” No more Word, আয়ন (শান্ত ভাবে)

বলেই রিদ মায়াকে নিয়ে হসপিটাল থেকে বের হয়ে আসে,, আর সবাই রিদের যাওয়ার দিকে শুধু তাকিয়ে আছে,,, রিদ গাড়ি সামনে যেতেই রিদের বডিগার্ড এসে পিছনে দরজা খুলে দেয় পরে রিদ এক প্রকার মায়াকে গাড়ি ভিতরে ছুড়ে মারে, মায়া পিছনে সিটে হুমড়ি খেয়ে পড়ে এলোমেলো ভাবে,,, মায়া নিজের ঠিক করার আগেই রিদ এসে ওর পাশে বসে পরে,,, তখনি ড্রাইবার গাড়ি চালাতে শুরু করে অজানা গন্তব্যে দিকে,,,, আর মায়া রিদের ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে আছে সিটের এক কোনায় গিয়ে গুন সুটি মেরে বসে আছে,, আর কোনা চোখে রিদকে বারবার দেখচ্ছ আর ভয় পাচ্ছে,,, না জানি রিদ এর পরে কি করে ওর সাথে আর কোথায় নিয়ে যাচ্ছে ওকে,,, প্রচন্ড ভয়ে সিটিয়ে আছে মায়া,, একটু সাহস জুগিয়ে কাপা কাপা গলায় রিদকে উদ্দেশ্য করে বললো,,,,

—” আমি আর ভুল করবো না, তবু আপনি আমাকে খাবেন না, আমি আর একটু বড় হয়ে নেই না তারপর না হয় খেয়েন,, দাদী বলে আমি নাকি ছোট তাই ছোট মানুষ খেয়ে আপনি স্বাদ পাবেন না তাই আরকি,, আচ্ছা আপনি কি আমাকে টমের মতো করে টপ করে গিলে ফেলবেন, যেভাবে টম জেরিকে টপ করে গিলে পেটে ভিতর রেখে দেয় আবার পুনোরায় বের করেও দেয়,,, আর আপ……

মায়ার কথা শেষ করার আগেই রিদ মায়ার দিকে না তাকিয়ে ফোন চালাতে চালাতে বললো,,,,,

—-” আমার ছোট মানুষ খেতে ভালো লাগে, ছোট মানুষ খাওয়ার স্বাদই আলাদা তাই তো তোমাকে খাব আমি আজকে,,, আর আমি তোমাকে গিলে ফেলবো ঠিকিই কিন্তুু পুনোরায় আবার বের করবো না পেট থেকে,, আজকে তুমি শেষ,,,,, (গম্ভীর ভাবে বললো)

রিদের কথা শুনে মায়ার নিজের কষ্টটা চেপে রাখতে পারেনা হু হু কান্না করে দেয় দু’হাতে নিজের মুখ ডেকে,,,

রিদ বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে খানিটা রেগে বললো,,,

—” তুমি কি চাও আমি তোমাকে এখনি খেয়ে ফেলি, তোমার কি আমার পেটে যাওয়া তাড়া বেশি নাকি,,, আর যদি কান্নার একটুও আওয়াজ আমার কানে আসে তো আই সয়ের আমি এখনি তোমাকে খেয়ে ফলবো,,, এখন তুমি বল কি চাও….(দাঁতে দাঁত চেপে)

রিদ কথা শুনে মায়া করুন কন্ঠে বললো,,,

—” একটু পরে তো আমাকে খেয়ে ফলবেন, আপনার পেটের ভিতর তো আমাকে পুড়ে ফলবেন, তাই এখন একটু কাঁদে নিয়,,, কাল তো আর কান্না করতে পারবো না,,, তাই এখন একটু আমার কষ্টে কান্নাটা কেঁদে নিয় আগে,,, (অশ্রু সিক্ত চোখে)

বলেই মায়া নিজের কান্না মায়া মনোযোগ দিবে তার আগেই রিদের সোজাসাপটা উওর দেয়….

—- ” কোনো কান্না চলছে না ব্যাস,, না মানে না,, সোজা চুপচাপ বসে থাকো কোনো কষ্টে কান্না চলবে না,,, জাস্ট সাটার ডাউন ইউর মাউথ,,, গেট ইট,,, (ধমক শুধরে)

বলেই রিদ নিজের কাজে মনোযোগ হল ফোন টিপতে,, আর মায়া রিদের কথা শুনে নিজের কষ্টে কান্নাটাও কাঁদতে পারছে না তাই নিরবে চোখে জল ফেলছে,,, আর মায়া রিদের ভয়ে সিটিয়ে আছে এবং নড়াচড়া ও করছে না রিদের ভয়ে, চুপচাপ থেকে নিজের মাথাটা নিজের হাটুর মধ্যে গুজিয়ে দিয়ে কান্না করতে লাগল,,,

আর গাড়ি চলতে লাগল অজানা গন্তব্যের দিকে,, মায়া যতটা বিচিলিত, রিদ ততটাই শান্তা,,,, রিদের মাথায় কি চলছে শুধু রিদই জানে,,, মায়ার সাথে আজ কি হতে চলছে সেটা শুধু রিদ জানে,,,

.
চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here