#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৩৩
🍂
দাদীর আঁচল ধরে গাল ফুলিয়ে অসহায় ফেস করে দাঁড়িয়ে আছি আমি,,, এ মূহুর্তে দাদীর আঁচলটা আমার একমাত্র নিবাস হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ আমার দাবি পূর্ণ না হওয়ার পযন্ত দাদীর আঁচলটাই থাকবে আমার নিবাস, আর তার জন্যেই আজ সারাদিন ধরে দাদীর আঁচল ধরে ঘুরঘুর করছি আমি,,, সেই সকালে দাদীর আঁচলটা ধরেছিলাম, আমার দাবি পূর্ণ না হওয়ার আমি একি জায়গায়তে আটকে আছি,,, কিন্তুু দাদীর আমার ওপর কোনো করুনা হচ্ছে না, তিনি দিব্বি নিজের কাজ করেই চলছে আমাকে নিয়ে,,, দাদী যেখানে যাচ্ছেন সাথে আমিও যাচ্ছি তার আঁচল ধরে,,, দাদীর এই ব্যাপারে কোনো হেলদোল না থাকলেও আমি এতে চরম বিরক্ত,, এভাবে আর কত থাকবো, এভাবে কি আর থাকা যায়, না যায় না, তবুও থাকতে হবে নয়তো আমার মিশন সম্পন্ন হবে না, তাই নিজের দাবি রক্ষাতে এই কঠিন অসাধ্য কে সাধ্য সিদ্ধি করার জন্য আমার এই পথ অবলম্বন করা,,,, তাই দাদীর কানের কাছে গুনগুন করেই চলছি আমি দাদী খানিকটা বিরক্তি নিয়ে নিজের কাজ বন্ধ করে আমার দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই বলে উঠে,,,,
.
—” বললাম তো কোথাও যেতে দিব না, আর কত বার বলা লাগবে তোকে আমার,,, আমি বিনা আর হাসানকে (আমার মা – বাবা) বলবো এখানে আসতে, তারপর তোর সাথে অনেক দিন থাকবে,,, তারপরও তোকে আমি কোথাও যেতে দিব না ব্যাস, এবার তুই যদি আমার আঁচলে ধরে সারাজীবন থাকিসও এতে আমার কোনো আপত্তি নেই বরং ভালোই হবে,,,
.
বলেই দাদী তার কাজে মনো নিবেস করেন,,, আর আমি দাদীর এমন কথায় সারাদিন ধরে আহত নিহত হচ্ছি,,, তারপরও জেদ ধরে রেখেছি, আমি আমার বাড়ি যাব মানে যাবই, এবার যতকিছুই হোক না কেন,,, তাই আমি দাদীর আঁচল ধরেই ঠোঁট উলটিয়ে বিনিময় সুরে বলে উঠি…..
.
—” প্লিজ দাদী যেতে দাওনা আমাকে, আট মাস ধরে এখানে আছি আমি,,, এবার আমি বাসায় যেতে চাই,,, আমার বাসার সবার জন্য মায়া লাগছে,,, আর মা বাবা এখানে এসে আমার সাথে দেখা করলেও, আমার বাড়িটা তো তুমি আর আনতে পারবে না এখানে,,, তাই আমার বাড়িটাও দেখতে চাই,,, আমার বাড়িটা জন্য ও পেটটা ভিষন পুড়ছে,,, প্লিজ দাদী যেতে দাওনা আমাকে প্লিজইইই আর তু….
.
—” কি সোনামা তোমার দাবি এখনো পর্যন্ত অক্ষত অবস্থায় আছে পূর্ণ হয়নি,,,
.
পাশ থেকে দাদাজান এর কন্ঠ কানে আসতেই আমি চমকে পিছন ফিরে তাকায় সাথে সাথে চোখে পড়ল দাদাজান আর আয়ন ভাইয়াকে, দুজনই অফিসে গেটআপে ড্রয়িংরুমে দরজা সামনে আছে,,, অফিস থেকে ফিরছেন হয়তো দুপুরের খাবার জন্য, মাঝে মাঝেই তারা দুজন একসাথে বাসায় আসে আমাদের সাথে দুপুরের খাবার খেতে আবার একসাথে চলে যায়, রাতে ফিরে কাজ শেষ করে,,, উনি (রিদ) কখনোই আসে না দুপুরে হয়তো আমি থাকি বলে, আমি চলে গেলে হয়তো আসবেন,,,, এসব ভাবতে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম নিশ্চুপে পরে দাদীর আঁচল ছেড়ে দৌড়ে গিয়ে দাদাজান এর কোর্টের কোনা ধরে দাঁড়িয়ে পড়লাম আমি,, গাল ফুলিয়ে ঠোঁট উলটিয়ে দাদাজানকে বলে উঠি…..
.
—” দাদাজান তুমি দাদীকে বলো না, আমি মাত্র তিন দিন থাকবো ঐখানে,,, সারাজীবনে জন্য তো আর যাচ্ছি না আমি, তাও দাদীর এমন করছে কেন,,,, তুমি বুঝাও না দাদীকে প্লিজ প্লিজ প্লিজ,,,, (দাদাজানে কোর্টে ধরে ঝাঁকিয়ে)
.
দাদাজান আমার কথা শুনে একবার আমার দিকে তাকিয়ে আবার দাদীর দিকে তাকায়, দাদীর কোনো হেলদোল না দেখে, স্মিত হেসে উঠে আমাকে নিয়ে সোফায় বসে পরে আমি তখনো দাদাজান এর কোর্টের কোনা আঁকড়ে ধরে আছি, তখনি দাদাজান হেসে বলে উঠে,,,,,
.
—” সোনামা আমার দ্বারা ডাল গলবে না মনে হয়,,, আর সত্যি বলতে আমি তোর দাদী নামক ডালটা গলাতেও চাই না,, এতে করে আমারও ক্ষতি কারণ আমার বাড়ি অন্ধকার হয়ে যাবে তোকে ছাড়া,,, তাই আমি কিছু করতে পরবো না সরি,,, (স্বাভাবিক ভাবেই হেসে)
.
দাদাজান কথায় আবারও খুন্ন্য হলাম আমি, কিন্তুু দমে যায়নি, মনে জেদ কাজ করছে তাই সেই জেদের রেশ ধরে আগাবো আমি,,, যে করেই হোক দাদা-দাদিকে বুঝাতে হবে আমাকে তাই কিছু একটা চিন্তা করতে হবে,,, তাই আমি আহত সুরে দাদাজানকে কিছু একটা বললো তখনি মাথায় আসলো আয়ন ভাইয়া কথা উনি তখনো দরজা সামনে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল দুহাত পকেটে গুজিয়ে,, আমি সময় ব্যয় না করে দাদাজানকে ছেড়ে দৌড় দিলাম আয়ন ভাইয়া উদ্দেশ্য,,,
আয়ন ভাইয়া সামনে দাঁড়াতেই ভ্রু কুঁচকা উনি,হয়তো বুঝতে পেরেছেন কেন এসেছি উনার কাছে,, আমি আয়ন ভাইয়াকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ঝটপট করে শার্টের কোনা আঁকড়ে ধরলাম, কারণ আয়ন ভাইয়া কোর্টটা ভাজ করে হাতে রাখা গরমে কারণে, তাই আমি উনার শাটে কোনা আঁকড়ে ধরি দু’হাতে,,,
আর আহত সুরে বলে উঠি,,,,
.
—” আয়ন ভাইয়া তুমি বলো না প্লিজ,, আমি এখানে আট মাস ধরে আঁটকে আছি বুন্দি হয়ে,,, কোথাও যেতে পারছি না, আমার কেমন জানি লাগছে, কিছুই ভালো লাগছে না নিজেকে কেমন বুন্দি বুন্দি লাগছে,, তাই আমি বাড়ি যেতে চাই, প্লিজ তুমি বুঝাও না দাদা-দাদিকে,,,, (শাটের কোনা ঝাকাতে ঝাকাতে)
.
আমার এমন কথায় দাদা-দাদী চমকে উঠে আমার দিকে তাকায় আর দাদীর হাতে তাকা প্লেটটা টেবিলে পরে যায় মূহুর্তের, এক প্রকার অপরাধ দৃষ্টিতে তাকায় আমার দিকে,, হয়তো আমার কথায় কষ্ট পেয়েছেন, সাথে একটা চরম সত্যি সাথে পরিচয় হয়েছেন নতুন ভাবে,,, আয়ন ভাইয়া তাদের দিকে এক পলক তাকিয়ে আবার আমার দিকে তাকায়,,, উনি হয়তো দাদা-দাদি মনে অবস্থা বুঝতে পেরেছেন তাই হাসি মুখে আমার দুহাত নিজের দু’হাতে মুঠোয় রেখে স্বাভাবিক ভাবেই বলে উঠে……
.
—” ওকে ডান, তোমার কথা থাকলো যেতে দিব তোমাকে কিন্তুু এতে করে আমি কি পাব তোমার কাছ থেকে,, হুম,,, (ভ্রু নাচিয়ে দুষ্টমি করে)
.
আমি খুশিতে আত্মহারা হয়ে লাফিয়ে বলে উঠি,,,,
.
—” তুমি যা চাইবে, সব দিব আমি, আমার চকলেট বক্স থেকে তোমাকে অধেক চকলেট দিয়ে দিব আমি কেমন,,, সাথে তোমার সব কথাও শুনব প্রমিস,,, (খুশি হয়ে)
.
আমার কথায় কপাল কুচকে এলো আয়ন ভাইয়া, পরে কিছু একটা চিন্তা করে আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো……
.
—” মায়াপাখি ভেবে বলো, আমার যা চাই তা তুমি দিতে পারবে তো,, পরে কিন্তুু তুমি না করলে ও শুনব না আমি,,, আমি কিন্তুু আমার কাজে অটল থাকবো, তাই ভেবে চিন্তে প্রমিস কর আমাকে, আমি কিন্তুু অতোটাও ভালো মানুষ নয়, যে ছেড়ে দিব, তুমি প্রমিস ভাঙতে চাইলেও আমি কিন্তুু দিব না,,,, তাই ভেবে বলো,,,, (সিরিয়াস হয়ে)
.
আয়ন ভাইয়া কথা গুলো আমার কান পযন্ত পৌঁছালেও আমার মাথা অব্দি পৌঁছাতে পারেনি, উনি কি বলেছেন তা ঠিকই শুনেছি, কিন্তুু কথা গুলো মানে বুঝতে পারেনি, তাই আমার ছোট মাথা চাপ না দিয়ে ঠোঁট প্রশারিত করে হাসে বলে উঠি…..
.
—” প্রমিস, প্রমিস, প্রমিস, তিনবার প্রমিস করলাম এবার তো বিশ্বাস করো আমায়, তোমার সব কথা শুনব আমি, অবাধও হবো না, তুমি শুধু দাদা-দাদিকে বুঝাও তাহলেই হবে,,,,,
.
আমার কথা গুলো শেষ করার সাথে সাথে আয়ন ভাইয়া আমাকে খানিকটা টেনে নিজের আরও সামনে এনে দাড় করায়, পরে উনার একহাত দিয়ে আমার কপালে আসা চুল গুলো কানের পিছনে গুজিয়ে দিতে দিতে সুরেলা কণ্ঠে বললো,,,,,
.
—” তোমার প্রমিসটা, আমার সূচনা হয়ে গেল নতুন পথে,,, আজ থেকে আমাতেই তুমি বিচক্ষণ থাকবে সারাক্ষণ,,, আর তোমাতে আমি থাকার সেই ব্যবস্হায় আমি করবো,,, এবার তুমি রুমে গিয়ে প্যাকিং কর, আমি তোমাকে নিয়ে যাব তোমার বাসায়, আর হা তিনদিন এর বেশি থাকা যাবে না কিন্তুু ঠিক আছে, আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই রওনা দিব, এবার যাও তাড়াতাড়ি করে গিয়ে প্যাকিং কর নয়তো লেট হয়ে যাব আমরা,,,,
.
আয়ন ভাইয়া কথায় আমি দাদা-দাদি দিকে তাকায়, সাথে সাথে দাদাজান হাসি মুখে সমতি জানায় কিন্তু দাদী টায় জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে,, দাদীকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অপরাধ বোধ কাজ করল আমার মনে, আমি কি বেশি কিছু বলে ফেললাম, দাদীর টলমল চোখ দেখে আমি নিজেকে স্থির রাখতে পারলাম না দৌড়ে এসে জরিয়ে ধরলাম দাদীকে, পরে কাঁদো কাঁদো গলায় বলে উঠি,,,,
.
—” আই এম সরি দাদী, আমি বাসায় যেতে চাইবো না, তবু তুমি কান্না করও না প্লিজ, তুমি কান্না করলে আমারও কান্না পেয়ে যায়, আমার খুব কষ্ট হয়,, আমি যাব না তোমাকে ছে…..
.
—” তুই রুমে যা আমি আসছি তোকে প্যাকিং করে দিচ্ছি,,,, আর শুন তিন এর বেশি থাকা যাবে না বলে দিলাম,,, বাড়িতে গিয়ে একদম উল্টা পাল্টা কাজ করে বেড়াবি না ঠিক আছে,,, তুই যা আমি আসছি,,,
.
বলেই দাদী আমাকে সোজা করে দাড় করায়, আমি কিছু বলতে যাব, তখনি দাদী আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে রুমে পাঠিয়ে দেয় প্যাকিং করার উদ্দেশ্য,,, আমিও নিশ্চুপে চলে আসি, কারণ কিছু বলার মতো আমার কিছুই নেই,,,
.
সত্যি বলতে আমি উনার কাছ থেকে দূরে থাকতে চাই তাই আমি এমন জেদ ধরেছি,, কাল রাতে ঘটনা পর আমি উনার সামনে ভুল করেও পরেনি, উনি বাসায় থাকলে আমি নিজেকে ঘর বুন্দি করে রেখেছি,,, উনিও আমার সাথে কথা বলার বা দেখা করা চেষ্টাও করেনি,,,
দাদা-দাদি আয়ন ভাইয়া জানে আমি তিন দিন এর জন্য যাচ্ছি আমাদের বাড়িতে,,, কিন্তুু আমি জানি আমি তিন দিন এর জন্য যাচ্ছি না,,, এখানে আর আসব কিনা আমি নিজেও জানি না,,, আর আমার এখানে না আসাটাই মঙ্গল সবার জন্য,,, দাদা-দাদি প্রথমে আমার জন্য কষ্ট পেলেও পরে আমাকে ভুলে যাবে উনি যখন ডলি আপুকে বিয়ে করে এ বাড়িতে বউ করে আনবে তখন এমনি এমনি আমাকে সবাই ভুলে যাবে,,, আমাকে তো সবাই উনার (রিদ) বউ বলে এত আদুর করে,,, যখন বউই থাকবে অন্য কেউ তাহলে আমাকে মনে রাখার প্রশ্নই আসে না তাই না,,,,
.
ডলি আপু আর উনি (রিদ) একে অপরকে ভালোবাসে, এটা ডলি আপু নিজেই আমাকে বলেছে সবটা কাল দুপুরে,,,, ডলি আপু আরও উনি নাকি অনেক বছর ধরে একে অপরের সাথে রিলেশনশিপ এ আছে,,, কিছু দিনের মধ্যেই নাকি বিয়ে করবে দু’জন,,, উনি (রিদ) নাকি পার্টিতে আপুকে বলেছেন আপুর জন্য সারপ্রাইজ প্লেয়িং করছে বিয়ে জন্য,,,, আমিও হালকা শুনেছিলাম উনার মুখে সারপ্রাইজ কথাটা,,,, তাই শিওর হয়ে নিলাম আপুর থেকে,,, ডলি আপু এখনো জানে না যে আমি উনার বউ,,, বা উনার বিয়ে হয়েছে,,, উনি বলেনি হয়তো আমার জন্য উনার সম্পর্কটা খারাপ করতে চাই না,,, তাই আমিও তাদের মাঝে কাটা হয়ে থাকতে চাই না, তাই চলে যাচ্ছি সবকিছু ছেড়ে,,,
.
এ বাড়ির সবকিছু জন্য মায়া হচ্ছে কিন্তুু দেখাতে পারছি না, আমার খুব কান্না পাচ্ছে কিন্তুু করতে পারছি না, কারণ যদি এ মূহুর্তে ভেঙে পরি তাহলে সবাই সবটা বুঝে যাবে, তখন আমার জন্যই উনার বিপদ হবে,,, তখন সবাই উনার আর ডলি আপু সম্পর্কটা মেনে নিতে চাইবে না,,, আমি চলে গেলে হয়তো সবাই আমাকে খারাপ বলে উনাদের সম্পর্কটা মেনে নিবেন,,, তাই আমাকে এখন চুপ থাকতে হবে,,৷
.
.
.
🍁
মায়া নিজের রুমে যাওয়া পরই আয়ন তার নানুমাকে ধরে সোফায় বসিয়ে, তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে উঠে….
.
—” আমি জানি নানুমা তুমি মায়ার জন্য যা করে এসেছ, আর ভবিষ্যতে যা করবে, সবিই ঠিক করবে,,,
আমি জানি তুমি বা নানাভাই মায়াকে বন্দী করে রাখনি,, মায়া পরিস্থিতি শিকার হয়ে বন্দী হয়ে ছিল মাত্র,,, ওকে সেইফ রাখার জন্য তোমরা ওকে কোথাও যেতে দাওনি,,,, কিন্তুু মায়া অবুঝ হওয়াতে ওর ছোট মাথা সেটা ইফেক্ট করছে,,, ওর মনে হচ্ছে আমরা সবাই ওকে বন্দী করে রেখেছি, এখন যদি ওকে ওর মতো করে যেতে না দাও তাহলে আরও খারাপ কিছু হতে পারে,,, পরে দেখা যাবে ওর চঞ্চলতা হারিয়ে যাবে এই চার দেয়ালে মাঝে তাই ওকে একটু স্পেস দাও,, নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার জন্য,,, আর বাকিটা আমার ওপর ছেড়ে দাও আমি বুঝে নিব ওকে,,,,,
.
আয়নে দিকে হেনা খাঁন আর আরাফ খান দুজনই অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল পরে আয়ন এর কথায় স্বস্তি নিশ্বাস ফেলে, কারণ আয়ন যা বলেছে সবই ঠিক বলেছে,,, আর এ মূহুর্তে তাদের চুপ থাকা ছাড়া অন্য কোন পথ নেই,,, আর যদি মায়াকে জোর করতে গিয়ে তাকেই হারিয়ে ফেলে তাহলে তারা তাকবে কিভাবে,,, তাই এ মূহুর্তে তাদের চুপ তাকায় শ্রেয় বলে মনে হচ্ছে,,,,,
.
.
.
🍁
গাড়ি বসে আছি আমি আর আমার সাথে রয়েছে আয়ন ভাইয়া, উনি গাড়ি ড্রাইব করছে আর আমি তার পাশে সিটে বসে আছি,,, আমার মনটা ভিষন খারাপ সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি বলে,,, দাদা-দাদি, ফুপি-ফুপা, নিহা আপুর ফিহা, ডলি আপু, বাসার সব কাজ লোক আমার বডিগার্ড সহ সবার সাথে দেখা করে বিদায় নিয়ে এসেছি, কিন্তুু উনাকে একটি বার এর জন্যও দেখেনি,,, উনি (রিদ) বাড়িতে ছিল না তাই,,, থাকলেও হয়তো আমার সামনে আসতো না,,, উনি হয়তো জানে না আমি চলে যাচ্ছি সেটা,, আর জানলেও হয়তো খুশিই হতেন,,, কারণ আমি যে উনার খুবিই অপছন্দে পাত্রী তাই,,,,,,,
.
আচ্ছা আমি কি আর উনার মনে পড়ব না,,, নাকি উনি আমাকে আর মনে রাখবেন না,,, ডলি আপুকে নিয়ে হয়তো ভালোই থাকবে, তাই অপ্রয়োজনীয় কাউকে মনে না রাখাই ভালো,,,
.
আচ্ছা আমি কি পারব উনাকে ভুলে থাকতে, আমার এত কষ্ট কেন হচ্ছে, আমার শুধু কান্না করতে মনে চাচ্ছে,,, আমি পারছি না আমার কষ্টটা লাগব টানতে, পারছিনা উনার আর আমার দূরত্বটা মেনে নিতে,,, কিন্তুু আমাকে সবকিছু মেনে নিতে হবে, এটাই আমার ভাগ্য,,,
.
আমার এমন সব চিন্তা ভাবনায় ইতি ঘটে গালে কারও আলতো স্পর্শ পেয়ে,,, আমি সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়েছিলাম, হঠাৎ করেই গালে হাতে স্পর্শ পেয়ে চমকে উঠলাম আমি, পরে পাশে তাকাতেই চোখে পড়ল আয়ন ভাইয়া বিস্ময়কর চেহারা,,, উনি আমার গালে একহাত রেখে চিন্তা সুরে বলে উঠে,,,,
.
—” তুমি ঠিক আছো মায়াপাখি,,, কি খারাপ লাগছে তোমার,,,,
.
আমি কিছু বললাম না শুধু তাকিয়ে রইলাম উনার দিকে, আমাকে এভাবে তাকাতে দেখে স্মিথ হেসে, গাড়ি থামিয়ে, আমার দিকে ফিরে বসে দু’হাতে আমার গাল জরিয়ে চোখে পানি মুছে, বলে উঠে,,,,,
.
—-” তুমি যদি এখন এভাবে কান্না করও তো আমি কিন্তুু তোমাকে আমার সাথে নিয়ে যাব খান বাড়িতে,,, পরে আমাকে কিছু বলতে পারবে না,,,
.
আয়ন ভাইয়া কিছুক্ষন থেমে আবারও বললো….
.
—” আচ্ছা চলো এখন তোমাকে আগে ফুচকা খাওয়াবো, তোমার মুড ঠিক করবো, পরে তোমাকে নিয়ে ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়াতে যাব,,, ঠিক আছে পাখি,,,
.
উনার কথায় আমি শুধু ভুবন ভুলানো একটা হাসি দিলাম, আমার হাসি দেখে আয়ন ভাইয়া বুকে হাত দিয়ে বলে উঠে,,,,
.
—“ষড়যন্ত্র ঘুড় ষড়যন্ত্র,,, ,
চলবে…………