#দেওয়ানা_(আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাল মায়া
#পর্বঃ_২০
🍂
ভার্সিটি মাঠে বসে আছি আমি, হেনা, মনা, আর আমার নতুন ফেন্ড নিতু সাথে,,, নিতু সাথে ফেন্ডশিপ্টা হুট করেই হয়ে গেছে কোনো কারণ ছাড়া,,, তবে মাঝে মাঝে একটু অন্য রকম ব্যবহার করলেও এমনিতে অনেক ভালো,,, ওদের সাথে বসে থাকতেও, ওরা তিন জনই মিলে গল্প করছে আমি শুধু বসে আছি,,, কারণ মাথায় আমার অন্য চিন্তা আর এ চিন্তা দূর করার জন্য ঘাড় ঘুরিয়ে আমার বডিগার্ডদের দিকে তাকায় আশিকের উদ্দেশ্য,,, কারণ আমার এত এত চিন্তা মূল হল আশিক,, কিন্তুু এ মূহুর্তে আশিকে ছাড়া বাকি চার জনকে দেখে ভ্রুঁ কুঁচকে এলো আমার,,, আজব সবসময় তো আমার পাশেই ঘোর ঘোর করে আর এখন কাজে সময় হওয়া হয়ে গেল,,, বিরক্তি নিয়ে বডিগার্ডদের উদ্দশ্য করে বলে উঠে,,
—” আপনারা এখানে, কিন্তুু আশিক কোথায়,,,
পাশ থেকে একজন বডিগার্ড বলে উঠে,,,,
—” ম্যাম বস্ কল করেছে, তাই কার পার্কিং এরিয়াতে গেছে কথা বলতে,, ঐ যে দেখা যাচ্ছে,,,
ওদের কথা শুনে আমি ঘাড় ঘুরিয়ে সামনে তাকিয়ে কাউকে কিছু বলতে না দিয়ে এক দৌড় দিলাম আশিক এ উদ্দেশ্য,,, আমার পিছন পিছন বাকি গাডরা ও আসছেন দৌড়ে,,, আমি দৌড়াচ্ছি আমার কাজে,,, ওদের ও আমার সাথে দৌড় দিতে হবে নাকি আজব,, না এরা মরলেও মানুষ হবে না এটা নিশ্চিত হুহহহ,,,,
দৌড়ে আশিকে পিছনে দাঁড়িয়ে হাফাতে হাফাতে বললাম,,,,
—-” আশিক ভাইয়া,,,
আমার এমন ডাকে আশিক চমকে উঠে সাথে সাথে পিছনে ফিরে তাকায় আমার দিকে,, কানে তার ফোন চেপে ধরে রেখেছে হয়তো কারো সাথে কথা বলছে,,, আমার এমন ভাইয়া ডাক কানে আসতেই চমকে চোখ দুটো বড় বড় ডিমে মতো করে আশেপাশে তাকিয়ে আবার সামনে দিকে তাকায় পরে আমাকে বিনিময় সুরে আমতা আমতা করে বললো,,,,
—” ইয়ে ম্যাম কাকে বলছেন,,,
আমি মিষ্টি হেসে আশিকের সামনে থেকে গিয়ে পিছনে কারটি মধ্যে বসে পড়লাম দু পা ঝুলিয়ে,,, আমি বসতেই আশিক আমার দিকে ফিরে তাকায় চোখে মুখে তার একরাশ প্রশ্নে ঝুঁরি,, হয়তো বুঝার চেষ্টা করছে আমি কি করতে বা বলতে চাইছি,, আমি ওর মনের ভাবটা বুঝে তাই একটু নড়ে বসে বলে উঠে,,,,
—” তোমার সাথে ডিল করতে এসেছি,,, আর ডিলটা পরে শুনবে কিন্তুু তুমি আমার নামে আর দাদা-দাদিকে নালিশ করবে না আর সবসময় বলবে মায়া ম্যাম গুড গাল ঠিক আছে,,,
—” সরি ম্যাম আমি পারব না এটা আমার কাজ,,, আর কিসের ডিল,,, (আশিক)
—-” তোমাকে গফ খুঁজে দিব, প্রেম করা জন্য,,, সবাই যেমন করে ঐ প্রেম করিয়ে দিব,,, শুধু তুমি আমার কাজ করে দিবে তাহলেই হবে,,
আমার কথা আবারও আশিক বলে উঠে,,,
—” আমি প্রেম করবো না,,, আর আমি বা বাকিরা কেউ আপনাকে সাহায্য করতে পারবো না ম্যাম,,,
আশিকে কথায় তেলবৈগুরে উঠে বললাম,,,
—” প্রেম করবা না,, মানে কি,,? প্রেম তো তোমাকে করতেই হবে,,, নয়তো মানুষ কি বলবে যে মায়ার পাতানো ভাই প্রেম করে না ছেহ,,, আহা কি লজ্জা,,, আর রইলো আমাকে সাহায্য করা তো তা তোমাদের কাউকেই করতে হবে না,,,, আমি নিজেই নিজের সাহায্য করতে পরবো,,, তোমারা শুধু চুপ থাকবে তাহলেই হবে,,,,
আশিক আবাক হওয়ার সুরে বললো,,,,
—-” ম্যাম আমি আপনার ভাই কখন হলাম,,,
আমি স্বাভাবিক ভাবেই বলে উঠি,,,,
—” কিছুক্ষন আগে হলে,,, যখন আমি তোমাকে ভাইয়া বলে ডাকলাম তখন থেকে তুমি আমার পাতানো ভাইয়া হয়ে গেলে,,,, তাই এখন থেকে আমার সব কথা তোমাকে শুনতে হবে আর মানতে হবে,,, কারণ ভাইরা কিন্তুু বোনদের না করে না তাই তুমিও না করতে পরবে না,,,, তুমি জানো আমি একটা সোলিড প্লেন করেছি পালানোর জন্য,,,
আমার কথা বুঝতে না পেরে আশিক কিছুটা সন্দেহা চোখে তাকিয়ে প্রশ্ন করে বললো,,,
—-” পাতানো ভাইয়া, আর কি প্লেনিং,,,,
আমার সোজাসাপটা উত্তর,,,
—” বাড়ির থেকে পালানোর জন্য প্লেয়িং করেছি,,,
—-” কিহহহ,,, কিন্তুু কেন ম্যাম,,, (আবাক হয়ে আশিক)
আশিকে আবাক হওয়ার সুর আর তীক্ষ দৃষ্টি দেখে আমি কিছুটা নড়েচড়ে বসে আবারও বলে উঠি,,,
—–” দেখো এ ছাড়া আমার আর কোনো পথ নেই,,, দাদা-দাদি আমাকে কেন এখানে রেখেছেন উনার (রিদ)জন্য,, উনার বউ বলে আমি,,, আমার মাধ্যমে যাতে উনার লাইফটা সুন্দর হয় এর জন্য,,,, কিন্তুু আমি আসাতে উল্টো উনার আরও সমস্যা হচ্ছে অনেক,,, আমার জন্য উনি নিজের ফ্যামেলি আর দেশ ছেড়ে পরে আছেন অন্য দেশে,,, আমার জন্য নিজের পরিবারের সাথেও রাগ করে আছেন এটা আমি কিভাবে মেনে নিব,,, আমি প্রথমে চেয়ে ছিলাম আমি পাশে থেকে উনার পছন্দের মানুষের সাথে বিয়ে দিতে কিন্তুু উনি আমাকে এতটা ঘৃণা করে যে উনি আমার মূখই দেখতে চাই না,,, তাই আমি থেকে কিছু করতে পরবো না,,, আমি চলে গেলে উনি নিজের ঠিক হয়ে যাবে,,,, পরিবার এ কাছে ফিরে আসবে,,,
আমার জন্য কেন উনি উনার পরিবার ছেড়ে থাকবেন,, থাকতে হলে আমি থাকবো,,,, আমি তো উড়ে এসে জোরে বসে আছি উনার কপালে,,,
আর রইলো আমার কথা, তাহলে দেখো আমি দাদাজান এ টাকা আর সময় শুধু শুধু খরচ করছি,, কারণ এগুলো আমার জন্য না উনার (রিদ) বউ এ-র জন্য,, তাহলে আমি কেন মাঝখান থেকে ভোগ করবো এটাতো অন্যনায় তাই না,,, দাদা-দাদি ভালোবাসা ও তো উনার বউ এজন্য তাই না,,, যেটা আমি মাঝখান থেকে দখল করে আছি,, যেটা আমার না সেটা আমি কিভাবে নেই বলো,,, তাই আমি একটা সলিড প্লেয়িং করেছি বাসা থেকে পালানোর,,,,
কোথায় যাব, কবে যাব, তা তোমাদের কাউকে বললো না কিন্তুু যাব যে সেটা বললাম কারণ তোমাদের জন্য যাতে সমস্যা না হয় আমার,,,,
আমার এমন কথায় মূহুর্তে আশিকের চেহারায় ভয়ে চাপ ফুটে ওঠে,,, একবার আমার দিকে তো একবার নিজের হাতে ফোন এ দিকে তাকাচ্ছে,,, পরে বিরবির করে বললো,,,
—-” সবসময় ভুল জায়গায় ভুলবাল কথা বলবেই মেয়েটা,,, (ফোনের দিকে তাকিয়ে)
আমি ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই আমি, আশিক উচ্চ সুরে বললো,,,,
—-” ম্যাম আপনি কি শুনির আগে হাঁটেন নাকি শুনি আপনার পিছনে হাঁটে কোনটা,,, আপনাদের কি পারস্পরিক সম্পর্ক আছে বিপদের সাথে,,, না মানে আপনি আবারও নিজের বিপদ ডেকে আনলেন তাই বললাম আরকি,,,,
বলেই আশিক ভয়ে ভয়ে হাতে থাকা ফোনটা কানে ধরেই মূহুর্তে ঘামতে লাগল আর ভয়ে ভয়ে বলতে লাগল,,
—-” ইয়েস বস্,,
—“,,,,,
—-” নো বস্,,,
—“,,,, ,,, ,,,
—-” ওকে বস্,,, ঠিক আছে বস্,, , তাই হবে বস্
বলেই কল কেটে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে,,,, আর আমাকে উদ্দেশ্য বলে,,,
—” সরি ম্যাম,,,
আশিক এর কথায় আমি কিছু বুঝতে না পেরে আশিক দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাব তখনি কারো ডাকে পাশ ফিরে তাকায় আমি,,, সাথে সাথে চমকে উঠি আয়ন ভাইয়াকে আমাদের ভার্সিটিতে দেখে,,,,,
🍁
আয়ন ভাইয়া আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে আমাকে টেনে গাড়ির ওপর থেকে নিচে নামায়,,, আর হাসি মুখে বলে উঠে,,,,
—” মায়াপাখি আজ আমি অনেক হেপি,,, নানুমা আমাকে তোমার কাছে আসার জন্য পারমিশন দিয়েছেন,,,, তোমার সাথে কথা বলতে পারবো,,, তোমাকে দেখতে পারবো,,, সাথে তোমাকে ভা,,,,
উনার হঠাৎ থেমে যাওয়াতে কপাল কুচকে এলো
আমার কি বলতে গিয়ে থেমে গেছেন উনি,,,, আর আমার সাথে একটু কথা বলার জন্য এত হেপি হওয়ার কি আছে বুঝলাম না আমি,,, তাই অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম উনার দিকে,,,,
চলবে,,,,,
