#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_২৮
🍂
ড্রয়িংরুমে রাজকীয় সোফায় আলিসান ভাবে বসে আছে রিদ পায়ে ওপর পা তুলে,,, একহাতে তার বন্ধুক যেটা দিয়ে কপালের স্লাইড করছে, অন্য হাত সোফা উপর রাখা,, তার সামনে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মায়া,,, চোখ মুখে ভয়ে ছাপ স্পষ্ট, চোখ দুটো পানিতে টলটলে,,,রিদ মায়াকে ভয় দেখিয়ে এখানে দাঁড়া করিয়ে রেখেছে,,, মায়া সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ না হয়ে এখানে দাড়িয়ে আছে দীর্ঘ এক ঘন্টা যাবত রিদের সামনে,,, কিন্তুু রিদের কোনো ভাবান্তর নেই সে নিজেকে শান্ত রেখে হাতে থাকা বন্ধুকটা নড়াচড়া করে দেখতে লাগল,, পরে রিদ শান্ত দৃষ্টি বঙ্গি রেখে নিজের হাতে বন্ধুকটা কপালে স্লাইড করতে করতে মায়াকে উদ্দেশ্য করে বললো….
.
—-” বেশি কথা বলাটা আমার পছন্দ না,, আর না কাউকে বলতে দেয়,,,, সো পয়েন্ট এ আসি,,, তোমার সামনে টেবিলে ওপর কিছু পেপার আছে,, ঐ গুলোর মধ্যে তোমার সাইন লাগবে তাই সুন্দর করে সাইন করে দাও কোনো কথা না বলে,,,,
.
কিছুক্ষন থেমে মায়ার দিকে তাকায়,, মায়াকে কাচুমাচুম করতে দেখে সোজা হয়ে বসে ভ্রু কুঁচকে আবারও বললো…..
—-” কি কথা বলতে চাও বলতে পারো আমার কোনো সমস্যা নেই, তোমার একটা কথা সাথে একটা করে গুলি ফ্রী,,, এবার তাড়াতাড়ি করে সাইন গুলো করে দাও,,, (সোফায় হেলান দিয়ে বসতে বসতে)
মায়া রিদের ভয়ে আশেপাশে সবার দিকে তাকাচ্ছে অসহায় এর মতো,,, চেনা পরিচিত কারও মুখ খুঁজে চলছে নিজেকে রিদ থেকে বাঁচানোর জন্য,,, আর এদিকে ওদিকে তাকাচ্ছে বারবার টলটলে চোখে,,,,
রিদ মায়ার মনে অবস্থা বুঝতে পেরে পাশে থাকা আসিফ কে উদ্দেশ্য করে বললো,,,
—” আসিফ তুই সবাইকে নিয়ে বাহিরে যাতো,,,, তোর ভাবি আমার সাথে কোয়ালিটি টাইমস স্পেন করতে চাচ্ছে তাই না বউ (মায়াকে দেখে)… তাই তুই সবাইকে নিয়ে বাহিরের যা আর শুন মেইন দরজা বাহির থেকে লক করিস,,,
আসিফ রিদের বলার সাথে সাথে সকল গার্ড ও বাংলোর সকল সার্ভেন্ড নিয়ে বাহিরে প্রস্তান করে দ্রুত সাথে আর মেইন দরজা ও লক করে দেয়…..
সবাই বাহিরে যেতেই রিদ মায়ার দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই বললো….
—” তো ম্যাডাম সবাই তো চলে গেলো,,, এখন কি আরও পাগলামী করবেন নাকি শেষ হয়ে গেছে আপনার পাগলামির কৌটা,, কোনটা (ভ্রু নাচিয়ে)
সবাই চলে যাওয়াতে মায়া কিছু বলতে পারিনি শুধু অসহায় এর মতো চলে যাওয়া দিকে তাকিয়ে ছিল,,, এতক্ষণ সবাই সামনে দাঁড়িয়ে থাকাতে যতটা না ভয় কাজ করে ছিল,,, এবার মায়াকে রেখে সবাই চলে যাওয়াতে ভয়টা যেন মায়াকে জেঁকে বসেছে,,,, এবার শুধু মায়া আর রিদ একা,,, রিদ যদি মায়াকে কিছু করে তাহলে কে বাঁচাবে মায়াকে এসব ভাবতেই মায়া চোখ থেকে নিরবে অঝর দ্বারা জল পরতে লাগলো,,, আর সেটা মায়া বারবার নিজের হাত দিয়ে মুছতে লাগলো মাথা নিচু করে,,,, কিন্তুু জায়গায় থেকে কোনো নড়াচড়া করছে না টাই দাঁড়িয়ে আছে মায়া,,,
.
মায়া কোনো ভাবান্তর না দেখে রিদ ভ্রু কুঁচকে মায়াকে কিছুক্ষন দেখে সোজা হয়ে বসে টেবিলে ওপর রাখা পেপারস গুলো মায়ার দিকে এগিয়ে দিতে দিতে বললো…..
.
—-” তো ম্যাডাম কি জানতে চাই এ পেপার গুলো কিসের হুম,,,, এটা তোমার মুক্তি পত্র বলতে পারো,, আমার থেকে তোমার না মুক্তি চাই এগুলাই তোমার মুক্তি পত্র,,, এই পেপার গুলোর মধ্যে লেখা আছে যে আমি তোমাকে আর ভয় দেখাবো না,,, তোমাকে দাদা দাদী কাছে দিয়ে আসবো আজকের ভিতর,,,, এখন তুমি সাইন করে দিলেই তোমার মুক্তি পাওয়াটা কর্মফ্রাম হয়ে যেতু আর কি,,, এখন বল সাইনটা করে বাসায় যাবে নাকি না করে এখানে থাকবে,,,, আমার কি……
রিদকে আর কিছুই বলতে হয়নি, কারণ মায়া রিদ সামনে হাস্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে হাসি মুখে কলম হাতে নিয়ে বসে আছে,,,, চোট জল, ঠোঁটে প্রাপ্তির হাসি, চোখ মুখ খুশিতে চকচক করছে,,, সেই হাসিটা বজায় রেখে মায়া রিদকে বললো,,,
.
—” আমি সব গুলো সাইন করে দিলেই আপনি আমাকে আর মারবেন নাতো,,, আমি বাসায়ও ফিরে যেতে পারবো,,, আপনি বলোন কোথায় কোথায় সাইন করতে হবে আমাকে,,,,
.
রিদ মায়ার কোনো কথা উত্তর না দিয়ে একটা একটা করে পেপারস গুলোর মধ্যে মায়ার সাইন করিয়ে নেই,,, পরে পেপারস গুলোর ভালো করে চোখ বুলিয়ে মায়ার দিকে এক পলক তাকিয়ে মায়াকে কিছু না বলে উপরে নিজের রুমে দিকে পা বাড়ায় পেপারস গুলো নিয়ে,,,,
…………………………
🍁
বাংলোর সুইমিং পুলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে রিদ,,,
মনের মধ্যে হাজারো চিন্তা ভাবনায়,,, রিদ কি ভাবে একমাত্র রিদেরই জানা,,, আজকে মায়ার সাথে যা করেছে তা করাটা জরুরি ছিল,,, আর জরুরি না থাকলেও সেটাই করতো রিদ,,,, আজকের পর হয়তো মায়ার দেহটা সাথে সাথে নিশ্বাসটাও এখন রিদের নামে করা,,, যেটা মায়া নিজেও জানে না,,,,
চলনে………..