#হিয়ার_মাঝে ৪৫.
#মেঘা_সুবাশ্রী ®️
সময় যেনও ঘূর্ণির মতই প্রবাহমান। চট্রগ্রাম থেকে ফিরে আসার পনেরো দিন পেরিয়েছে। মন’টা শান্ত হয়নি আজও। জিতু সেদিন রাত’টা কোনোভাবে কাটিয়ে চট্টগ্রাম থেকে বরিশালের উদ্দেশ্য রওনা দেয়। সেখানে নুহার পুরো কেইসের ডিটেইলস চাক্ষুষ দেখে এসেছে। কিন্তু বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল তার। এসআই হারুন যা বলেছে সবই ঠিক। তাহলে ভুল’টা কি? কোথাও যেন তার বড্ড ভুল হচ্ছে। যেনো কোথাও সে কিছু একটা মিস করে এসেছে। মর্মদহনে পুড়ছে। নুহাহ তার হয়নি সে মানতে পেরেছে কিন্তু সে ছলনাময়ী ছিল এটা কিছুতেই মানতে পারবে না। কখনই নয়। সে আরও বিস্তারিত জানতে চাইল। নুহার স্বভাব, আচার-আচরণ ও তার পড়াশোনা সম্পর্কে। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি! সে একটা কথা শুনে বাকরুদ্ধ।
নুহাহ এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। কিন্তু সম্পূর্ণ পরীক্ষা শেষ করতে পারেনি। পরীক্ষার এক মাস আগেই তার বিয়ে হয়। এই বিয়ের জটিলতার জের ধরেই শেষের পরীক্ষাগুলো তার দেয়া হয়নি। আর সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং পার্ট হচ্ছে মেয়ে’টা ৪ই মার্চ রাতে সুই,,সাইড করে। ভোরের আলো ফুটতেই তার ঘরে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত লা’শ পাওয়া যায়। অথচ সে ৫ই মার্চ সকালেও তার নুহার সাথে কথা হয়েছে। তাহলে তার নুহাহ, সে এখন কোথায় আছে? মস্তিষ্ক যেন অসাড়তায় আচ্ছন্ন। অজস্র প্রশ্নবাণে নিজেই জর্জরিত।
আজকাল দিনের বেলায় বাড়িতে তার ছায়া পাওয়াও দুষ্কর। অস্থিরতায় সারাদিন মলে দিন কাটে তার। রাতের বেলায় সে চুপচাপ খেয়ে ঘুমিয়ে যায়। দিন দিন নুবাহর প্রতিও প্রচন্ড উদাসীন হয়ে পড়ছে। নুহার চিন্তায় তার দিকে তেমন নজরও দেওয়া হয় না। কিন্তু রাতে ঘুম না ধরলে তৎক্ষণাৎ নুবাহর কাছে ছুটে যায়। মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরতেই দু’চোখে রাজ্যের ঘুম নামে। প্রায় রাতে হঠাৎই তাকে দেখে নুবাহ আৎকে উঠে। কিন্তু মুখ ফুটে কিছুই বলে না। কেমন যেন মেয়েটা আগের মত হাসে না, কথা বলে না। শুধু হ্যাঁ’ না’ বলে উত্তর দেয়। সেও খুব বেশি ঘাটায় না। সারাদিনের অস্থিরতা যেন মেয়েটার কাছে ছুটে গেলে এক নিমেষে শেষ হয়ে যায়। ক্লান্তিকর তনুমন জুড়ে প্রশান্তির ছোঁয়া লাগে। তখন সে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। শুধু একবার সে তার নুহাহকে দেখতে চায়। মেয়েটা জীবিত আছে। নিজের জীবনে ভালো আছে অন্তত এইটুকু স্বস্তিদায়ক খবর সে চায়। এই দোটানা সে নিজেও সহ্য করতে পারছে না। নুবাহ তার এখন অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাকে এভাবে কষ্ট দেয়া উচিৎ নয়। নুবাহর প্রতি এমন অবহেলা তারও ভালো লাগে না। কিন্তু সে যে বড্ড অপরাগ।
ভার্সিটি যাওয়া হয় না দীর্ঘদিন। তাই আজকে একবার ঘুরে আসতে চাইল। যদি মন’টা শান্তি পায়। ভার্সিটিতে পা দিতেই অন্যরকম এক ভালোলাগায় চেয়ে গেল তার তনুমন। সেমিনার রুমেই বন্ধুদের আড্ডা বসেছে। সে বসতেই চিন্ময় প্রশ্ন ছুঁড়ল,
‘এ কয়দিন ভার্সিটি আসলি না কেন?’
জিতু প্রসঙ্গ বদলাতে বলে উঠল, ‘মলে ঝামেলায় ছিলাম। নতুন মাল এসেছে তা চেকিং করতে করতে ক্লান্ত। তাই আর ভার্সিটি আসা হয়নি।’
‘কিন্তু তুই তো বাড়িতেও থাকিস না।’ চিন্ময় পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ল।
জিতু ফের একই উত্তর দিল। বন্ধুদের এত প্রশ্ন যেনো আজ বিরক্তিকর মনে হচ্ছে। সে উঠে দাঁড়ালো। সেমিনার রুম থেকে বেরুতেই চোখ পড়ল বিজ্ঞান ভবনের প্রবেশ পথে। জাকী একটা মেয়ের সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। সে আরেকটু এগিয়ে গেল। হঠাৎই বক্ষস্থল কেঁপে উঠল। এতক্ষণ নুবাহর সাথেই এত রসিয়ে রসিয়ে কথা বলছে। মেয়েটা কি তাহলে জাকীকে পছন্দ করে। তাদের মধ্যে কিছু ছিল? তখন ভার্সিটিতে দেখত প্রায় সে ম্যাথ বিভাগে যেত। জাকীর সাথে দেখা করত। তার খুব জানতে ইচ্ছে করল। নুবাহর জীবনেও কি এমন কেউ এসেছিল? ভাবতেই কেমন বক্ষ বেদনায় দগ্ধ হল। সে নিজের পায়ের কদম বাড়িয়ে নুবাহর ক্লাসের প্রবেশ পথে দাঁড়াল।
নুবাহ নিজের ক্লাসে প্রবেশ করতেই আচমকাই দু’জনের দৃষ্টি বিনিময় হয়ে গেল। কিন্তু সে পাশ কাটিয়ে নিজের ক্লাসে ঢুকল। জিতু ভীষণ রকম অবাক হল। মেয়েটা তাকে এড়িয়ে গেল। কোনো বাক্যে বিনিময় নেই তাদের মাঝে। নিশ্চুপতা বিরাজমান দু’জনের মাঝে। বিরসবদনে ক্লাসের সামনেই দন্ডায়মান। দৃষ্টি তার নুবাহর যাওয়ার দিকে। নুবাহ ক্লাসে প্রবেশ করে পেছনের সারিতে গিয়েই বসল। তাসনিহার পাশে তার জন্য জায়গা খালি ছিল। সে বসতেই তাসনিহা প্রশ্ন ছুঁড়লো।
‘প্রস্তুতি কেমন?’
নুবাহ বুঝলো না প্রথমে। তাই চমকে উঠল, ‘মানে।’
তাসনিহা ফের বলে উঠল, আজকে বির্তক প্রতিযোগিতার প্রস্তুতির শেষ দিন। ভুলে গেলে, কালকে ম্যাথ বিভাগের সাথে আমাদের বির্তক প্রতিযোগিতা আছে।’
নুবাহর দ্রুতই মনে পড়ল। ‘ওহ, হ্যাঁ তাই তো! প্রথমে ভুলেই গেছিলাম। যাই হোক প্রথম ক্লাস শেষ হলে বির্তক ক্লাবে যাব।’
তাসনিহাও হ্যাঁ বলে মাথা নাড়ালো। প্রথম ক্লাস করে দু’জনেই বির্তক ক্লাবের দিকে অগ্রসর হল। তাদের পিছু পিছু নিরবও ছুটে এল। নুবাহ কিঞ্চিৎ বিরক্ত হল। কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে প্রকাশ করল না। বির্তক ক্লাবে প্রবেশ করেই নুবাহ ভড়কালো। অথচো পাশে থাকা তাসনিহা খুশিতে ডগমগ করছে। মুখের কোণে মুচকি হাসি। নুবাহকে ফিসফিস করে বলল,
‘বোন আমি জাষ্ট ফিদা। ইশশ! কত্তদিন পর আমার জান্সকে দেখছি।’
নুবাহ চমকে উঠল৷ দু’চোখে ঘোর বিস্ময়। ‘কে তোর জান্স?’
‘কে আবার, ঐ যে আমার জিতু জান্স।’
নুবাহ মুহূর্তে বিষম খেল। ঠোঁট উল্টিয়ে বলল, ‘কবে থেকে হল তোর জান্স?’
‘যবে থেকে দেখেছি।’
‘ভালো, চালিয়ে যা।’
নিরবও তাদের পাশে বসল। অধরকোণে মিষ্টি হাসি ঝুলছে। নুবাহর দিকে স্থিরদৃষ্টি দিয়ে বলল, ‘নিশাত, আমি সাংবাদিক ইউনিয়নে যোগ দিয়েছি। তুমিও যোগ দিবে?’
নুবাহ কিঞ্চিৎ ভাবল।
‘দিলে তোকে জানাবো?’
‘আচ্ছা, তোমার সাথে প্রায়ই মধ্যবয়সী এক পুরুষকে দেখি। সে কে তোমার?’
‘আমার আঙ্কেল।’
‘অহহ, আমি তো তোমার বাবা ভাবছিলাম।’
নুবাহ নিরবের কথোপকথন একজনের দৃষ্টিতে পড়ল। তার বড্ড রাগ হচ্ছে। স্বামী যে সামনে বসে আছে এই মহিলার খবর নেই। কেমন রসিয়ে রসিয়ে গল্প করছে পরপুরুষের সাথে। সকালেও জাকীর সাথে কথা বলতে দেখেছে। আবার এখন নিরবের সাথে। সামান্য ভয়ও করছে না মেয়েটার মনে। নিজমন হিসহিসিয়ে উঠল। বির্তকের জন্য ডাকা হল নুবাহকে। সে মাত্রই মাইকের সামনে দাঁড়াল। কিন্তু অযাচিতভাবে বির্তক ক্লাবের জানালা ভেদ করে তার দৃষ্টি পড়ল বাইরে। দীর্ঘ তিন বছর, তাও সেই মুখ চিনতে সেকেন্ডও ব্যয় হয়নি তার। কালক্ষেপন না করেই বির্তকের ক্লাস ছেড়েই ছুটল সেই দিকে।
নুবাহর আকস্মিক এহেন দৌড়ে বির্তক ক্লাবের সবাই হতভম্ব। জিতু নিজেও। তার বউ কি পাগল হয়ে গেল না’কি? সে না উঠলেও বাইরে তার দৃষ্টি পড়ল ঠিকই। মেয়েটা কিছু একটা খুঁজে চলেছে। কিন্তু কি? চিন্ময়, মুবিনও হতবাক। তারা অপেক্ষা করছে নুবাহ আসার জন্য। জিমান নেই আজ। তার পরিবর্তে সানি বসেছে। সভাপতির আসনে বসা স্যার বিরক্ত হলেন। মেয়েটা ভদ্রতা জানে না না’কি? সময় পেরুলো কিন্তু নুবাহ আর আসেনি ক্লাবে।
…
নুবাহর মনটাই বিষিয়ে গেল। যাকে দেখে এত দৌড়ঝাঁপ সেই ব্যক্তিই উধাও। দেখা হয়েও হল না। ক্লাস শেষে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিল। বাস যানজটের জন্য মাঝপথে থামল। আচমকাই বাসের জানালা দিয়ে ফের সেই মুখশ্রী দেখল। তখন যানজট ছুটেছে। বাস চলতে শুরু করেছে মাত্রই। সে বাস থামিয়ে নেমে পড়ল। ব্যস্ত রাস্তা ছেড়ে সেই জায়গায় ছুটে গেল। এবারও ফলাফল শূন্য। দেখেও সে ছুঁতে পায় না। এ কেমন দহন তার? হতাশায় মূর্ছিত হল ফের। বিমূর্ত দন্ডায়মান। আচমকাই তার কাঁধ ধরে কেউ ঝাঁকালো। সে তাকানোর আগেই ঝাঁঝালো গলায় ধমক ভেসে আসল।
‘তুমি পাগল না’কি? এভাবে মাঝ রাস্তায় উদ্বাস্তুদের মত কেন দৌড়াচ্ছো? যদি কিছু হয়ে যেত।’
‘কি হত আর, মরে যেতাম।’
জিতু তেতে উঠল।
‘থাপ্পড় দেব বেয়াদব। এমন কথা মুখে তুলবে না আর।’
সে আলতো হাতে নুবাহকে জড়িয়ে ধরল। মেয়েটা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। হিজাবের আদলে আবৃত মুখ। কালো রঙা হিজাব ভিজে যাচ্ছে তার নোনাজলে। সে চোখের পানি মুছে দিল। মলিন গলায় বলল,
‘কি হয়েছে বোকা মেয়ে? কাঁদছো কেন?’
নুবাহ জবাবহীন। মনটা তার নীল বিষাদে বিষাক্ত হয়ে গেছে। এই লোকটাকে এই মুহূর্তে তার বড্ড অসহ্য লাগছে। তার লোক দেখানো যত্নগুলোও শরীরে কাঁটার মত বিঁধছে। সে জিতুর হাত’টা সরিয়ে দিল দ্রুতই। কর্কশ গলায় চেঁচিয়ে উঠল,
‘এখানে না আমি আপনার বউ, না আপনি আমার স্বামী, আর না এটা আপনার বেডরুম। তাই যখন তখন ছুঁতে আসবেন না।’
‘এমন ব্যবহার করছো কেন?
‘আপনার থেকে অন্তত ভালো ব্যবহার করছি।’
জিতু তাচ্ছিল্যের সুরে হাসল।
‘আচ্ছা, তাহলে কি জাকীর জন্য মনে প্রেম জেগেছে?
নুবাহ কিঞ্চিৎ শব্দ করে হাসল। কিন্তু সেই হাসিতে মাধুর্য নেই বরং তিক্ততার হাসি।
‘আপনি যদি বউ রেখে প্রেমিকার জন্য পাগল হতে পারেন, তাহলে আমিও প্রেমিকের জন্য করতে দোষ কোথায়?’
নুবাহর বলা প্রতিটি বাক্যেই যেনো তার বক্ষে গিয়ে তীর ছুঁড়ল। সহসাই দু’হাত মাথার চুলে গিয়ে ঠেকল। দু’হাতে চুলগুলো টান দিল। ফের সেই তীব্র যন্ত্রনা গ্রাস করল তাকে। এত দহন কিভাবে নিবে সে?
কথাগুলো বলে হনহন করে এগিয়ে গেল নুবাহ। পেছন ফিরে তাকালো না আর। ছুটে চলল অজানা গন্তব্যেই। দু’চোয়াল বেয়ে ঝরছে তার নোনাপানি। হৃদয়ের বদ্ধ কুঠিরে কত কথা জমা রেখেছিল সে। তার অধম টিচারকে প্রথম সামনে পেলে জড়িয়ে বলত, ‘আপনি কেন আসেন নি সেদিন? আপনার বোকাপাখি সারাদিন অপেক্ষা করেছে তো, সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেছে। জানেন সেদিনের পর থেকে আপনার বোকাপাখির জীবনটাই বদলে গেছে। সে আর বোকা পাখি নেই, খাঁচাবন্ধি পাখি হয়ে গেছে।
…
রাতের খাবার খেয়ে রুমের ল্যাম্পলাইটের আলো জ্বালিয়ে নুবাহ পড়তে বসেছে। ঘড়ির কাটায় রাত এগারো’টা। আগামীকাল তার বির্তক প্রতিযোগিতা। সেই জন্যে আরেকবার নিজেকে যাচাই করছে। নিচ থেকে সহসাই তার শাশুড়ীর চিৎকার ভেসে এল। হন্তদন্ত হয়ে সে নিচে নামল। শাশুড়ী মা’ সোফায় বসে আছেন। এক পা’য়ে হাত দিয়ে কাতরাচ্ছেন। তাকে দেখে বলল,
‘ছোট বউ’মা এদিকে আসো, হাঁটুর ব্যথায় অস্থির হয়ে যাচ্ছি। একটু মালিশ করে দাও তো।’
নুবাহ ফিরতি জবাব না দিয়ে বসল। শাশুড়ী মায়ের পা’ মালিশ করল। দীর্ঘ একঘন্টা তার পা’ মালিশ করতে হয়েছে। তার নিজেরই হাত ব্যথা হয়ে গেছে। বড্ড ক্লান্ত লাগছিল। রুমে এসে দপ করে বিছানায় শুয়ে পড়ল। কখন দু’চোখ মুদে এসেছে তার জানা নেই। সে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।
রাত ক্রমশই বাড়ছে। কিন্তু জিতুর দু’চোখে ঘুম নেই। তার দিকে নুবাহ ফিরেও তাকাচ্ছে না আজ। তার বড্ড কষ্ট হচ্ছে। আচমকাই মেয়েটা এত পরিবর্তন কেন হয়ে গেল? কত কঠিন কঠিন কথা বলল তাকে। সে বেহায়ার মত নুবাহর দরজায় দাঁড়ালো। ভেতর থেকে দরজা লক করা। সে বারান্দার দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করল। পর্দা সরিয়ে নুবাহর শুভ্র মুখশ্রী দেখে মুহুর্তে ভারী মন’টা হালকা করল। কপালের ছোট চুলগুলো সরিয়ে চুমু খেল। মাথার পাশে নিজের মুখ রেখে ফিসফিসিয়ে বলল,
‘রেগে আছো বউ? আমার উপর রাগ কর, অভিমান কর সমস্যা নেই। কিন্তু কখনও ছেড়ে যাবে এটা বলো না। সহ্য করতে পারব না, একদম নিঃস্ব হয়ে যাব বউ।’
অপলক দৃষ্টি জোড়া নুবাহতে নিবদ্ধ জিতুর। নেত্রকোণায় জল ছলছল করছে। কিছুসময় এভাবেই কাটল। ইচ্ছে করছিল নুবাহকে কম্বল সরিয়ে নিজের বক্ষপিঞ্জরে বেঁধে নিতে। কিন্তু আজ নিজের ইচ্ছেকে দমালো, বউয়ের ঘুম ভাঙালো না। মেয়েটা তার মায়ের পা’ মালিশ করে অনেক রাতে ঘুমিয়েছে। ঘুমুক সে। উঠার আগেই কপালে ফের তার অধরের প্রগাঢ় চুম্বন বসালো। নৈশব্দে পা ফেলে নিজের রুমে ফিরে এল। জিতু যেতেই নুবাহর ঘুম ভাঙলো। আনমনে বিড়বিড় করল,
‘আজ কেন বুকে নিলেন না? আমার যে আপনিময় বাজে অভ্যাস হয়ে গেছে, জিতু। আপনি ছাড়া বুক’টা যে ভীষণ ফাঁকা মনে হয়। কেন এভাবে চলে গেলেন?’
চলবে,,,