#আমার একটাই যে তুই❤️
#সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি
#পর্ব_২
কতখনএতক্ষণ পর চোখ খুলেছিলাম সেদিন ঠাহর করতে পারিনি আমি। চোখ মেলে তাকাতেই সারা রুম জুরে বসে আছে পুরো পরিবার।আর আমার পাশেই বসে আছেন ভ্রু কুচকে ইউসুফ ভাই। তাকে দেখে আবার চমকে উঠি। সাথে সাথে আমার চোখ জোরা বড় বড় হয়ে যায়। আমাকে এভাবে তাকাতে দেখে তিনি সেদিন ভ্রু কুচকে বলেছিলেন,,
–” আমি কি ভুত? না বাঘ, ভাল্লুক?? যে আমার এক চাহনিতে জ্ঞান হারালি??”
সেদিন আমার বলতে ইচ্ছে করছিল। ইউসুফ ভাইয়া আমি আপনাকে দেখে নয়, আপনার সেই সুন্দর, গভীর বিড়াল চোখ দুটির অতলে হারিয়েছিলাম, আপনার নেই মায়াবী চোখ দুটো যে আমার হুশ উড়িয়ে বেহুশ করে দিল! এটা কি আমার দোষ বলুন তো?দোষটা তো আপনার। আপনি কেন এত সুন্দর ইউসুফ ভাই আপনি একটু কম সুন্দর হতে পারলেন না? কিন্তু মুখ দিয়ে যেন একটি বাক্য বের হলো না আমার! তার দিক শুধু ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ছিলাম আমি বেহায়ার মতোন! সত্যি সেদিনের কথা মনে হলে এখনো লজ্জা লজ্জা করে কেমন যেন।
–“ওয়াও”
“ওয়াও” কথাটিতে ভাবনার ফোঁড়ন কাটতে যথেষ্ট ।পাশে দাঁড়িয়ে তিথি মুখে হাত দিয়ে। তার দিক জিগাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই সে আমাকে আয়নায় তাকাতে ইশরা করে। আর বলে,
–“কুহু তোকেতো আসমানে পরি মনে হচ্ছেরে!বোইন আজ যে কেউ তোরে দেখলে জ্ঞান হারাবে।”
তিথির কথায় হাসলাম আমি। মনে মনে বললাম শুধু,
–“আমি তো ওল রেডি এক জনের উপর জ্ঞান হারিয়ে! আর কারো হারালো তা দিয়ে আমার কি কাজ? যার উপর নিজেকে হারিয়েছি সে হারালেই চলে আমার উপর আর কাউকে চাইনা আমি! হোক বেটা সাইকো! প্রেমে পড়লে সব ঠিক ঠাক করে দিব পিটিয়ে।এসব ভাবচ্ছি আর লজ্জায় লাল নীল হচ্ছি।তখনি তিথি ধাক্কা দিতে লাগে। আর ভ্র কুচকে বলে,,
–“ওই আবার কই হারাইলি? আর এত লজ্জা কেন পাচ্ছিস?কাহিনী কি?”
–” কোনো কাহিনী নাই চলতো!”
–“বুঝি বুঝি সব বুঝি? তলে তলে টম্পু চালাও না? আর আমরে বললে দোষ?”
–” সত্যি এমন কিছু না বোইন চল নিচে যাই হলুদ শুরু হলো বলে!”
তিথি নড়লো না এক পা। সে আমার দিক সন্দিহান দৃষ্টতে চেয়ে।তা দেখে আমি নিজেই টেনে টুনে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসি তাকে।
হলুদ শুরু হয়েছে অনেকক্ষণ।কিন্তু কোথাও ইউসুফের দেখা নেই। না আছে সেই ইংলিশ মেমের! নিশ্চিয় চিপকে আছে কোথাও ইউসুফ ভাইয়ার সাথে! একে একে আপিকে বাড়ির সকলেই হলুদ দিচ্ছে শুধু তার দেখা নেই।ছেলের বাড়ি থেকে তত্ত্ব নিয়ে হাজির সবাই!সবার যখন দেয়া শেষ, তখন দৌড়ে গেলাম আমি মিশুপিকে হলুদ মাখাতে। আপিকে হলুদ লাগাচ্ছি। আর চোখ দুটো শুধু খুঁজে যাচ্ছে এদিক সেদিক ইউসুফ ভাইয়াকে। নাহ্ তার পাত্তাই নেই।তখনি পাশ থেকে বড় মা মানে ইউসুফ ভাইয়া আর মিশুপির আম্মু আফরোজা বলে উঠেন,
–” কুহু মা দেখতো ইউসুফ কই! বল যে আমি ডাকচ্ছি! যা জলধি! ”
বড় মার কথায় খুশি হয়ে গেলাম আমি মনে মনে হাজারটা ধন্যবাদ দিয়ে তাকে বের হলাম খুঁজতে। পুরো বাড়ি খুঁজে না পেয়ে চলে গেলাম ছাঁদে সেখানেও নেই। ছাঁদ থেকে নিচের দিক উঁকি দিতেই চোখে পড়লো তাকে। বাহিরে দাড়িয়ে কথা বলছেন ফোনে। সাদা পাঞ্জাবিতে কি মারাত্মক না লাগছে তাকে ।সাথে সাথে ছুটে গেলাম সেখানে। ও মা নেই! গেল কই? আচ্ছা উনি কি আমার সাথে হাইড এন্ড সিক খেলছেন? আমি খুঁজবো তাকে, আর ধরা পরলেই বলবো তিল্লা। এসব ভাবতে ভাবতেই কখন যে অনেক এগিয়ে এসে পড়েছি বুজতেই পারি নাই। তাই পিছনে মুরে যেই যেতে নেই অমনি পথ আটকায় এলাকার বখাটে ছেলে পূর্ণ আর তার দল বল। তাদের দেখে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসতে লাগে আমার। ছেলেটি মোটেও ভাল না। এ পর্যন্ত পাঁচটা রেপ আর ছয়টা খুন করেছে। প্রুফ না পাওয়ায় ধরতে পারেনি পুলিশ তাকে।দু, তিন মাস যাবত আমার পিছনে পরে সে। তাই বাসা থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দি। বেশী প্রয়োজন হলে বড়দের সাথে বাহিরে যাই। আর আজ সেই খচ্চরের কাছে নিজ থেকে ধরা দিয়ে দিলাম মনোর অজানতেই। পূর্ন আমার দিক তাকিয়ে শরীর দুলিয়ে বিশ্রী হেসে দিল।সে প্রচুর পান খায়।পানের কষ হাসার সাথে সাথে ঠোঁট বয়ে পড়ছে দেখেই ঘেন্না ঘেন্না করছে। সে হাসি থামালো আর বলল,,
–” কেমন আছো সুন্দরী! লাষ্ট পর্যন্ত খাঁচা থেকে বের হলে তাহলে! আজতো তোমায় হট লাগচ্ছে, পুরাই মাখোন।”
বলে হো হো করে হাসতে লাগলো।সাথে তার সঙ্গ পঙ্গ রাও।তাদের এমন ভাবে দেখে ভয়ে হাত পা কাপতে লাগে আমার। সাহস করে তাদের পাশ কাঁটাতেই আমার সামনে হাত দিয়ে পথ আটকালো আর বলল,
–” আ আ আ..! কই যাও বেবী? আজ তো যেতে দিচ্ছি না! ”
বলে আবার হাসতে লাগে। তাদের এসব দেখে কান্না করে দেই আমি। হাত জোর করে বলি,
–” প…প্লীজ য…যেতে দিন আ…আমায়! আমি ব..বাসায় যাবো!
–“হে বেবী যাবে তো আমার বাসায়! আমার সাথে রাত্রিযাপন করতে! হে হে হে”
এমন বিশ্রী কথা শুনে মেজাজ বিগরে গেল আমার।আর যাই হোক মেয়েদের মান সম্মানে হাত দিলে এই ডোর ভয় থাকে না।তাই রাগের চোটে এক ধলা থুতু ছুড়ে মারি তার দিক।আর বলতে লাগি,,
–“তোর মতো কুত্তাকে না আমি আমার কুত্তার ঘরে জায়গা দেই! আবার দেখে রাত্রিযাপনের স্বপ্ন।”
সে মুখের থুতু মুছে কিড়মিড়ি করে আমার দিক তাকিয়ে বলল,
–“কাজটা ভাল করলি না তুই! ওই রমিন, সেলিম ধর ওরে, ওর তেজ এই রাস্তায় কমামু আমি।”
আমি এসব শুনে গাভরে যাই। সাথে সাথে পিছনে যেতে নেই অমনি ধরে ফেলে তারা আমায়।আর পূর্ন আমার গায় হাত দিতে নিতেই হুংকার করে উঠে পিছন থেকে কেউ..! পিছনে তাকিয়ে দেখি…!
চলবে,
ছোট হওয়ার জন্য সরি। আমাদের শহরে বিদ্যুৎ অফিসে সকালে আগুন লাগায় কারেন্ট ছিল না পুরো শহরে। চার্জ নাই ফোনে তাই দিতে দেড়ি আর ছোট হলো। তার জন্য সরি।