স্রোতস্বিনী #মুগ্ধতা_রাহমান_মেধা পর্ব ০৭

0
302

#স্রোতস্বিনী
#মুগ্ধতা_রাহমান_মেধা
পর্ব ০৭

[অতীত]
প্রকৃতিতে বসন্তকাল বিরাজমান হলেও মাথার উপর সূর্য গ্রীষ্মের মতো প্রভাব ফেলছে।মেহরাদ ভাবলো স্রোতের সাথে আজকে যোগাযোগ করবে।যেই ভাবা সেই কাজ কল দিলো স্রোতকে।দুটো কল দেওয়ার পরেও যখন কেউ ফোন তুললো না তখন সে ভেবে নিলো স্রোত হয়তো ব্যস্ত,পরে আবার কল দিবে।স্রোতের দিনেরবেলা খুব ব্যস্ততায় কাটে।ফোন সাইলেন্ট করা থাকে সবসময়।সেই ফোন সে দেখলো সন্ধ্যায় যখন সে বাড়ি ফিরলো।কিন্তু ব্যাক করে নি,তার মতে যার দরকার সে আবার কল দিবে।
রাত আটটা দশ,স্রোত পড়ছে।মোবাইলটা তার সর্বোচ্চ গতিতে বাজতে শুরু করলো।স্রোত দেখলো ঐ নাম্বারটা থেকেই কল এসেছে।সে কল রিসিভ করতেই ঐপাশ থেকে পরিচিত গলার স্বর ভেসে আসলো।মেহরাদ সালাম দিলো,
“আসসালামু আলাইকুম।”
“ওয়ালাইকুম সালাম।”
“কেমন আছেন?”
“আলহামদুলিল্লাহ।আপনি?”
“আমিও আলহামদুলিল্লাহ।দিনেরবেলায় কল দিয়েছিলাম,ব্যাক করেননি কেনো?”
“আমার মতে যার দরকার সে আবার কল দিবে।” কাঠখোট্টা জবাব স্রোতের।
“একজন ফিউচার ডক্টরের এমন স্বভাব কেনো?ঐদিকে রোগী মরে যাবে অথচ ডক্টর কিনা ফোন সাইলেন্ট করে রাখে,ফোন ব্যাক করে না।” মজা করে বললো মেহরাদ।
স্রোত দাঁত কিড়মিড়িয়ে বললো,
“আমার ফোন দু’টো।হসপিটালের কাজের জন্য আলাদা সিম,আলাদা ফোন,ঐটা সাইলেন্ট করা থাকে না।এটা আমার পারসোনাল নাম্বার,অন্য ফোন।আমি আমার দায়িত্ব ভালো করেই পালন করতে পারি।”
এই মেয়ে যে কি পরিমাণ তেজস্বী তা তো প্রথমদিনই দেখেছে মেহরাদ।হেসে বললো,
” বাহ,ইন্টেলিজেন্ট গার্ল।”
“অ্যাজ অলওয়েজ।”
দু’জনের কেউই যেনো নিজেদের নিজস্ব খোলস থেকে বের হতে পারছে না,অস্বস্তি কাজ করছে।দু’জনই চুপ,একে অপরের নিঃশ্বাস শুনতে পাচ্ছে।নিরবতা ভাঙ্গলো মেহরাদ নিজেই,
“কি করছিলেন এতোক্ষণ? ”
“ঘোড়ার জন্য ঘাস কাটছিলাম,খাবেন আপনি?পাঠাবো?”
মেহরাদ মুচকি হেসে বললো,
“আপনি ভালোবেসে যত্ন করে পাঠালে আমি খেতে রাজি আছি।”
“পা গল লোক।”
“আপনার জন্যেই তো পা গল হয়ে গেছি স্রোতস্বিনী। নিজেকে নিজেই চিনতে পারছি না।আমার ডেইলি রুটিন এলোমেলো হয়ে গেছে।আমার গোছালো জীবন অগোছালো হয়ে গেছে।আপনি এসে সব এলোমেলো করে দিয়েছেন স্রোতস্বিনী।আপনি এসে এই অগোছালো জীবন গুছিয়ে দিন না স্রোতস্বিনী।” এক নিঃশ্বাসে মনের সব কথা বলে দিলো মেহরাদ।
স্রোত যেনো এই কথা আশা করে নি,সে চুপ হয়ে রইলো।মেহরাদ আবার বলতে শুরু করলো,
” আমি কখনো লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইটে বিশ্বাস করতাম না।কিন্তু আপনাকে দেখার পর অনুভব করলাম আমি ভেসে গেছি,কোনো এক স্রোত আমাকে ভাসিয়ে দিয়েছে।কোনো কূল কিনারা পাচ্ছি না।যেকোনো সময় ডুবে যেতে পারি,সমুদ্রের অতল গহ্বরে হারিয়ে যেতে পারি।আমাকে এসে ধরুন স্রোতস্বিনী, আমাকে তীরে নিয়ে যান।”

কি করুণ কন্ঠ,আকূল আবদার।স্রোত খট করে ফোনটা কেঁটে দিলো।বুকটা ধুকপুক করছে,হৃদপিণ্ড তার সর্বোচ্চ গতিতে লাফাচ্ছে।সে এখনো ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে আছে।তখনই মেহরাদের নাম্বার থেকে মেসেজ আসলো,
“আপনার চব্বিশ ঘন্টার কয়েকমিনিট আমার জন্য বরাদ্দ রাখবেন,স্রোতস্বিনী।ঐ কয়েকমিনিট আমি আপনাকে জ্বালাতে চাই।”
মেসেজটার দিকে তাকিয়ে বিড়বিড়িয়ে বললো,
“আপনি একাই ভেসে যাননি মেজর সাহেব,আমাকেও ভাসিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আমি তো এতো সহজে ধরা দিবো না।”

পরেরদিন বনলতা বেগমের কল দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি দেন নি।তিনি জানেন স্রোত রাজি হবে।তিনি আরেকটা কাজ করে বসলেন। স্রোতকে না জানিয়েই স্রোতের বাবার সাথে কথা বলে বিয়ের তারিখ ঠিক করে ফেললেন।দুপুরবেলায় তিনি,নোলক সাহেব, মাধবী বেগম আর মেহরাদ স্রোতের বাড়িতে হাজির।স্রোত তখন বাসায় নেই।বনলতা বেগমের পরিকল্পনাতেই সব হয়েছে।মান্ধবী আজকে বাসায়,সে জানতো উনারা আজকে আসবেন।গত রাতেই বনলতা বেগম সিরাজ সাহেবের সাথে কথা বলেছিলেন।উনি বলেছিলেন বাহিরে রেস্টুরেন্টে দেখা করার জন্যে।কিন্তু সিরাজ সাহেবই নিষেধ করলেন,যতই হোক কুটুম বাড়ি বলে কথা।স্রোতের মা নেই তো কি হয়েছে উনি উনার সাধ্যমতো সব করবেন।সিরাজ সাহেব রাতেই স্রোতের মামা-মামিকে ফোন করে আসতে বলেছেন।ওনাদের বাড়ি কাছে হওয়াতে সকালেই চলে এসেছেন।স্রোতের মায়েরা এক ভাই-বোন ছিলেন,নানা-নানী বেঁচে নেই। মামা-মামির কোনো সন্তান না থাকায় স্রোত-মান্ধবীকে নিজের সন্তানের মতোই দেখেন।তাই স্রোতের মামি তাড়াতাড়ি এসে বাসার কাজের লোক আর মান্ধবীর সাহায্য নিয়ে সব তৈরী করে ফেললেন।
স্রোতের মামা একটু নারাজ ছিলেন,স্রোত রাজি না বলে।কিন্তু মেহরাদকে সামনাসামনি দেখার পর,কথা বলার পর তিনিও রাজি হয়ে গেছেন।স্রোতের বাবাও আগে মেহরাদকে দেখেন নি।মেহরাদকে উনার খুবই পছন্দ হয়েছে।মেহরাদ তাকে আলাদা করে নিয়ে বলেছে,
“আঙ্কেল আমাকে মেয়ের হাসবেন্ড হিসেবে না ভেবে বড় ছেলে হিসেবে ভরসা করবেন।আমি শুধু স্রোতের না,আপনাদের সবার ভরসা হতে চাই।”

যেহেতু মেহরাদের ছুটি পঁচিশ দিনের ছিলো,আর মধ্যে অনেকগুলো দিন চলে গিয়েছে,তাই মেহরাদ যাওয়ার দুইদিন আগে বিয়েটা হবে।স্রোতের বাবা অনুষ্ঠানের কথা তুলতে নিলে মেহরাদ-বনলতা বেগম দু’জনই নিষেধ করেছেন।তারা বলেছে,
“স্রোতের সামনে এতো বড় পরীক্ষা, অনুষ্ঠান করলে স্রোতের লেখাপড়ার হ্যাম্পার হবে।তাই ঘরোয়া ভাবেই বিয়ে হবে।”

স্রোতের বাবা,মামা দু’জনই অবাক,এখনই স্রোতের ভালো-খারাপের কথা ভাবছেন উনারা।স্রোতের সাথে ভালোকিছু হতে চলেছে ভেবে প্রসন্ন হলেন দু’জন।

স্রোত বাসায় এসে মামা-মামি কে দেখে অবাক হয়নি একটুও,কারণ উনারা কয়েকদিন পরপরই আসেন।তাই আর মাথা ঘামায়নি। কিন্তু সে জানতেও পারলো না তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।

দিনগুলো স্রোতের স্বাভাবিক কাটলেও রাত গুলো কাটে না।রাত একটা ছুঁইছুঁই।স্রোত পড়ছে।পড়লেও মাথায় কেনো যে মেহরাদের ভাবনা আসছে।হঠাৎ মেসেজের টুংটাং শব্দে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখতে পায় “মেজর সাহেব” দিয়ে সেইভ করা নাম্বারটা থেকে একটা ভয়েস মেসেজ এসেছে।ভয়েসটা অন করতেই খোলা গলায় গাওয়া একটা গান….

tthodee-thodee katthi see uski aankhen
thodi surame bhari
tthodee-thodee katthi see uski aankhen
thodi surame bhari
uske honton pe muskuraae
haay duniyaa meri

o-ho chakhnaa bhee chaahoon
rakhnaa bhee chaahoon
sabse cchopa ke use haay

rabbaa-rabbaa mere rabbaa-rabbaa
muje bas ek jhalak to dikhaa
ho-ho rabbaa-rabbaa mere rabbaa-rabbaa
chaahe badle mein le-le too jaan

ভয়েসটা শেষ হতেই স্রোতের মুখে হাসি ফুটে উঠে।
অন্যদিকে মেহরাদ অপেক্ষা করছিলো কখন মেসেজটার নিচের দু’টো টিক চিন্হ নীল হবে অর্থাৎ স্রোত মেসেজটা দেখবে।সাথে সাথেই সিন হওয়াতে মেহরাদ খুশি হয়েছে।কিন্তু কোনো রিপ্লাই না পাওয়ায় খুশি বেশিক্ষণ টিকলো না।আবার ভাবলো,এই কঠিন মানবীর থেকে রিপ্লাই পাওয়ার আশা করা আর হাত দিয়ে দেওয়াল ভাঙ্গার চেষ্টা করা একই।যা করার তাকেই করতে হবে সে জানে।তাই সে কল্ করলো স্রোতকে।স্রোত যেনো জানতোই মেজর সাহেব কল করবেন,তাই হলো,কল এলো,কিন্তু সে ঠিক করেছে ধরবে না।মেহরাদও নাছোড়বান্দা কল দিচ্ছে তো দিচ্ছেই।স্রোত ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখছে।স্রোতের এবার কেনো জানি ইচ্ছে করছে কল রিসিভ করার আবার একটু একটু ভয়ও লাগছে।ভয় কিনা সে জানে না তবে কেমন জানি একটা অদ্ভুত অচেনা অনুভূতি, বুক ধুকপুক করা অনুভূতি,তাই সে এটাকে “ভয়” নামেই অ্যাখ্যায়িত করলো।স্রোত কল রিসিভ করলে মেহরাদ বলে উঠলো,
“এটা কিন্তু আপনার বাজে অভ্যাস স্রোতস্বিনী।কতগুলো কল দিয়েছি।”
স্রোতকে চুপ থাকতে দেখে গাঢ় স্বরে বললো,
“সমস্যা নেই আপনার সব বাজে অভ্যাসের সাথে আমি নিজেকে মানিয়ে নিবো, স্রোতস্বিনী।”
স্রোতের কেমন জানি লাগলো কথাটা শুনে,নিঃশ্বাস যেনো ভারী হয়ে আসলো,আগে তো এমন হয় নি কখনো। এখন কেনো হচ্ছে?সে এবারও চুপ করেই রইলো।
মেহরাদ ঐপাশের নিঃশ্বাসের শব্দ ঠিকই শুনতে পাচ্ছে। অস্থির হয়ে বলে উঠলো,
“কথা বলছেন না কেনো?”
এবারও স্রোতকে চুপ থাকতে দেখে বুকভরা নিঃশ্বাস ফেলে স্রোতকে বললো,
“কথা বলবেন না স্রোতস্বিনী? রেখে দিবো?”
তৎক্ষণাৎ ফোনের ঐপাশ থেকে জবাব এলো,
“কি বলবো?”
মেহরাদ হাসলো।জিজ্ঞাসা করলো,
“কিছুই বলার নেই?”
“বুঝতে পারছি না আসলে।”
“আচ্ছা বলুন,আমার গান কেমন লাগলো?”
“ভালো।” কাঠকাঠ গলায় বললো স্রোত।
“শুধুই ভালো?” মজা করে করুণ কন্ঠে বললো মেহরাদ।
“হ্যাঁ”,কাঠখোট্টা জবাব স্রোতের।
” এই গানটা যদি আমি ফেসবুকে আপ দিতাম আপনি জানেন শত শত মেয়ে আমাকে প্রপোজ করতো,কেউ কেউ তো বাসায়ও চলে আসতো।আপনি আমার মর্ম বুঝলেন না স্রোতস্বিনী।”দুষ্টুমি করে বললো মেহরাদ।
“তো ফেসবুকেই আপ দিতেন,আমাকে কেনো দিলেন? আজব।”
“আমি আমার ব্যক্তিগত মানুষকে নিজে গান গেয়ে শুনিয়েছি।তাতে আপনার কি,হুহ?
“প্রেমে ফেলতে চাচ্ছেন?”
“প্রেমে পড়েছেন?”
“নাহ,এতো সহজে প্রেমে পড়ার লোক নই আমি।”
“আপনাকে এখন প্রেমে পড়তে হবে না,বিয়ের পরে পড়লেও হবে।আপনি শুধু বিয়েটা করে নিন।”
“করবো না বিয়ে।”রাগান্বিত কন্ঠে বললো স্রোত।
মেহরাদ এবার শব্দ করে হেসে ফেললো।বললো,
” বিয়ে তো আপনাকে করতেই হবে আর আমাকেই করতে হবে।রাখছি,পড়তে বসেন।আমার বউ ফেইলটু হোক আমি চাই না।” মুচকি হেঁসে বলে ফোন রেখে দিলো মেহরাদ।

অন্যদিকে,স্রোতের রাগ লাগছে,অনেক রাগ লাগছে।এই বদলোকটা তাকে “ফেইলটু” বললো?সে ফেইলটু?রেগে ফোন বন্ধ করে বিছানায় ছুড়ে মারলো।ঐলোককে সে দেখে নিবে।

পরেরদিন বনলতা বেগম কল করলেন স্রোতকে।সালাম বিনিময়,কুশলাদি বিনিময় করার পর সরাসরি জিজ্ঞাসা করলেন,
“কি ডিসিশন নিলে স্রোত?”
“আন্টি আমি….” কিছু একটা বলতে নিয়েই চুপ করে গেলো স্রোত।কেমন জানি লাগছে বলতে।
“চুপ করে গেলে কেনো বলো?”
“আমি বিয়েতে রাজি।”আমতা আমতা করে বলেই ফেললো স্রোত।তার মনে হচ্ছে একদল লজ্জারা তাকে ঘিরে ধরেছে।
” আলহামদুলিল্লাহ।আমি জানতাম মা তুমি রাজি হবে।আমি সবাইকে জানিয়ে দিচ্ছি।”অনেক খুশি হয়ে বললেন বনলতা বেগম।
“আন্টি আমার একটা শর্ত আছে।”
“কি শর্ত?”
“আপনার ছেলেকে এখনই জানাবেন না, আমি যে রাজি।”
বনলতা বেগম জোরে হেসে ফেললেন।বললেন,
“আচ্ছা আচ্ছা,বুঝেছি।বলবো না আমার ছেলেকে।”
আরো কিছু কথা বলে ফোন রেখে দেন বনলতা বেগম।
তখনই হঠাৎ করে পেছন থেকে স্রোতকে “কংগ্রাচুলেশনস আপু” বলে ঝাপটে ধরে।স্রোত টাল সামলাতে পেরে দুজনই বিছানায় পড়ে যায়।স্রোত রাগ দেখাবে কি,এর আগেই দুই বোন হাসতে হাসতে শেষ।কতদিন পর স্রোতের নিজেকে নিশ্চিন্ত লাগছে,কিন্তু কোথাও একটা ভয় আছে,সময় লাগবে।
অন্যদিকে,রাতের বেলায় মেহরাদ মায়ের কাছ থেকে জানতে চায় স্রোত কি বলেছে।বনলতা বেগম দুঃখী দুঃখী মুখ করে বলেন স্রোত না করে দিয়েছে।মেহরাদ যেনো ভাবতে পারে নি স্রোত না করে দিবে।সে রুমে চলে যায়,মায়ের সামনে রাগ দেখায় না সে।সে জানে তার মা রাগ সহ্য করতে পারে না।দরজা লাগিয়ে বিছানায় বসে পড়ে,তার মাথায় আগুন জ্বলছে,রাগে কপালের রগগুলো ফুলে উঠেছে,দু’হাতে নিজের চুল টানছে,রিজেকশন মানতে পারছে না।সে স্রোতকে কল দেয়।স্রোত যেনো মেহরাদের কলের অপেক্ষাই করছিলো।সে মুচকি হেসে মনে মনে বললো,
“আজকে সবকিছুর উসুল তুলবো মেজর সাহেব।”
ফোন রিসিভ করতেই মেহরাদ শান্ত গলায় বলে উঠে,
“কালকে আপনি আমার সাথে দেখা করবেন।”
স্রোত শান্ত স্বর শুনে ভয় পেয়ে যায়।সাহস জুগিয়ে বলে,
“আমি দেখা করতে ইচ্ছুক নই।”
“তুলে নিয়ে আসবো।” দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলে মেহরাদ।কোনোভাবেই রাগ সংবরণ করতে পারছে না সে।
স্রোত বুঝলো,আরো রাগানোর জন্যে বলে,
“আমি তো বাসায় থাকি না,কোথা থেকে তুলে নিবেন?”
“মেডিকেল কলেজের নিউ বিল্ডিংয়ের থার্ড ফ্লোরের তিনশ ছাব্বিশ নাম্বার রুম থেকে তুলে আনবো।”শক্ত গলায় বলে মেহরাদ।
স্রোতের চোখ যেনো কোটর থেকে বেড়িয়ে আসতে চাচ্ছে,সে অবাক,হতবাক।এই লোক এটাও জানে?সত্যি সত্যি চলে আসবে?
তখনই মেহরাদ ধারাজ কন্ঠে বলে,
” ভাববেন না মজা করছি,আপনি সব লিমিট ক্রস করে ফেলেছেন।সত্যি সত্যিই তুলে আনবো।”
স্রোত কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো,
“আপনি এগুলো জানেন কিভাবে?”
মেহরাদের এতো রাগের মাঝেও হাসি পেলো।বাঁকা হেসে বললো,
“আপনাকে ছাড়া আপনার সব ডিটেইলস আমার জানা শেষ।এখন শুধু আপনাকে জানা-দেখা দুটোই বাকি।”
“ছিহ!!এড্রেস পাঠিয়ে দিয়েন,চলে আসবো।”বলে স্রোত।

স্রোতের কথা শুনে ফোন কেটে দেয় মেহরাদ।তার রাগ লাগছে,কখনো কোনো মেয়ের দিকে তাকায়নি,কেউ মন ছুঁতে পারে নি।আর এই মেয়ে তাকে ভাসিয়ে দিলো।সারারাত আর ঘুম হলো না তার।বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেটের ধোঁয়া উড়িয়েছে আর রাতের আকাশ দেখেছে।
অন্যদিকে,বিরক্ত লাগছে স্রোতের ।কই ভেবেছিলো বদলোকটাকে একটু টাইট দিবে,নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাবে,তা না ঐ বদলোকটাই তাকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছে,আর সে কিছুই করতে পারছে না।তবে যাইহোক,একটু রাগাতে তো পেরেছে,,এতেই শান্তিইইইইইইই।

সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই স্রোত দেখে তার মেজর সাহেব একটা রেস্টুরেন্টের ঠিকানা পাঠিয়েছেন,সময়ও বলে দিয়েছেন,সকাল দশটা।আজ স্রোত কলেজ যায় নি,ভালো লাগছে না তার।ভাবছে,
“দেখা হওয়ার পর কি হবে?ঐলোক কি তাকে থাপ্পড় মা র বে?সে কি বলে দিবে সে যে বিয়েতে রাজি?না না বলা যাবে না,একদম না।সেও কি কম নাকি!
তারপর সময়মতো রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরে সে।পৌঁছাতেই দেখে মেহরাদ অপেক্ষা করছে।চোখগুলো লাল হয়ে আছে,বুঝাই যাচ্ছে রাতে ঘুমোয়নি সে।স্রোতের যেনো মায়া লাগলো।আবার,ভয়ও হলো।হঠাৎ এমন ভয় কেন ঝেঁকে ধরলো তাকে বুঝতেই পারলো না।সে গিয়ে বসতেই মেহরাদ তাকে জিজ্ঞাসা করলো,

“মেজর মেহরাদ সাদাফকে রিজেক্ট করার কারণ কি?”

চলবে…….

[অতীত শেষ,,,,,হিজিবিজি হয়ে গেছে,স্যরি।ভুলগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আর ধরিয়ে দিবেন,ধন্যবাদ]

সবাই ফলো দিয়ে রাখুন 👉 Bindas Life

পর্ব ৮
https://m.facebook.com/groups/2794654214007538/permalink/2928447507294874/?mibextid=Nif5oz

পর্ব ৭
https://m.facebook.com/groups/2794654214007538/permalink/2928237030649255/?mibextid=Nif5oz

পর্ব ৬

https://m.facebook.com/groups/2794654214007538/permalink/2927393364066955/?mibextid=Nif5oz

পর্ব ৫
https://m.facebook.com/groups/2794654214007538/permalink/2926608987478726/?mibextid=Nif5oz

পর্ব ৪
https://m.facebook.com/groups/2794654214007538/permalink/2925928897546735/?mibextid=Nif5oz

পর্ব ৩
https://m.facebook.com/groups/2794654214007538/permalink/2925756014230690/?mibextid=Nif5oz

পর্ব ২
https://m.facebook.com/groups/2794654214007538/permalink/2925365577603067/?mibextid=Nif5oz

পর্ব ১

https://m.facebook.com/groups/2794654214007538/permalink/2925296520943306/?mibextid=Nif5oz

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here