#স্রোতস্বিনী
#মুগ্ধতা_রাহমান_মেধা
পর্ব ০৯
মেহরাদ বুঝতে পারছে না কি করবে,বিয়ের তারিখ এগিয়ে দিবে?দিলে উনাদের কেমন প্রতিক্রিয়া হবে?আবার স্রোতস্বিনী, সেই বা কি ভাববে?তাহলে কি বিয়ের তারিখ পেছাবে?পেছালে যদি স্রোতস্বিনীর মন ঘুরে যায়,তখন?মেহরাদের মন খারাপ দেখতে পেয়ে বনলতা বেগম এসে কারণ জিজ্ঞাসা করলে মেহরাদ তাকে সব জানায়।সব শুনে বনলতা বেগম বলেছে,চিন্তা করিস না,আমি সব ঠিক করে দিবো।
রাত বারোটা।স্রোতের আজকে কেনো জানি ভালো লাগছিলো না,পড়ায় মন বসছিলো না।তাই আজকে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছে,ভোরে উঠে পড়বে।অন্যদিকে,মেহরাদ বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করছে।ভালো লাগছে না কিছু,স্রোতকে হারানোর ভয় কাজ করছে।সে স্রোতকে চায়,খুব চায়,খুব কাছ থেকে চায়,খুব তাড়াতাড়ি চায়।তার স্রোতকে দেখতে ইচ্ছে করছে হঠাৎ।তাই হুট করে এটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো।
স্রোত ঘুমোচ্ছে।ঐদিকে ফোন বেজেই চলেছে,দু’বার বেজে উঠার পর তিনবারের মাথায় সে নাম না দেখেই ঘুমের মধ্যে কল রিসিভ করে রাগান্বিত স্বরে বলে,
“কে ভাই এতো রাতে ফোন দিচ্ছেন?শরীরে কি দয়ামায়া বলে কিছু নেই?
মেহরাদ শুনেছে ঘুমের মধ্যে কথা বললে নাকি ছেলেদের স্বর নে শাক্ত শোনায়,এখন তো দেখছে মেয়েদের স্বরেও মা দ ক তা মেশানো থাকে।
সে শান্ত গলায় বললো,
” বারান্দায় আসুন।”
ঘুমের মধ্যে অতি পরিচিত কন্ঠ শুনে স্রোতের ঘুম উবে যায়,সে ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে সোজা হয়ে বসে।সে ভাবছে ঘুমের ঘোরে কি বলেছে,লোকটা না জানি কি ভাবছে!
স্রোতকে চুপ থাকতে দেখে মেহরাদ আবার বললো,
“বারান্দায় আসুন।”
স্রোত ভাবছে বারান্দায় কেনো যেতে বলছে?সে আবার বাসার নিচে চলে আসে নি তো?তাড়াহুড়ো করে জামা ঠিক করে ওড়না গায়ে জড়িয়ে বারান্দায় যায় সে।গিয়ে দেখতে পায়,মেহরাদ তার গাড়িতে পিঠ ঠেকিয়ে কানে ফোন ধরে বারান্দার দিকে তাকিয়ে আছে। স্রোতকে দেখতে পেয়েই একটা হাসি উপহার দিয়ে অন্য হাত দিয়ে “হাই” বুঝালো।
স্রোত শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।সে সে অবাক হয়েছে তা মেহরাদকে বুঝতে দিলো না।স্বাভাবিকভাবেই জিজ্ঞাসা করলো,
“এতো রাতে আপনি এখানে?”
“কেনো?আসতে পারি না আমি?”
“সেটা না,এতো রাতে কেনো?”
“আপনাকে শুনতে ইচ্ছে করছিলো।”
“ফোন দিলেই পারতেন।”
“একটু একটু দেখতেও ইচ্ছে করছিলো,না না একটু না অনেক বেশিইইইই।”
স্পষ্ট জবাব মেহরাদের। দু’জোড়া চোখ একে অপরের দিকে আবদ্ধ, কানে ফোন।মেহরাদ বললো,
“আমাকে একটু সময় দেওয়া যাবে এখন,প্লিজ?”
“স্যরি?”
“আপনাকে নিয়ে মাঝরাতের শহর দেখবো।সঙ্গী হবেন আমার?”
“আজকেই কেনো?”
“পরে যদি সময় না পাই।”
স্রোতের মনে হলো মেহরাদের মন খারাপ।সে কিছু বললো না,ভাবছে সে।
মেহরাদ আবার জিজ্ঞাসা করলো,
“নিচে আসবেন?যাবেন আমার সাথে?”
কি করুণ আকুতি!!
স্রোত কিছু না বলে কল কেটে দিয়ে ভেতরে চলে গেলো।বারান্দার দরজা লাগালো,কিছুক্ষণ পর রুমের লাইট নেভালো।
মেহরাদ সবই নিচ থেকে দেখছে।তার কেন জানি মনে হচ্ছে স্রোত আসবে,ফিরিয়ে দিবে না তাকে।
হলোও তাই,কিছুক্ষণ পর “স্রোতস্বিনী” নামক বাড়িটা থেকে স্রোত বের হলো।মেহরাদের মুখে প্রশান্তির হাসি।
স্রোতের পড়নে শুভ্র রঙের পোশাক,চুলগুলো ক্ল্য ক্লিপ দিয়ে আটকানো।মায়ের মৃত্যুর পর স্রোতের জীবন বর্ণহীন হয়ে যায়,তাই তো তার বেশিরভাগ কাপড়ই বর্ণহীন,সাদা।
স্রোত মেহরাদের সাথে কোনো কথা না বলে সোজা গাড়িতে উঠে বসে। মেহরাদ চুপচাপ দেখে যায়,হেঁসে নিজেও উঠে পড়ে।
গাড়ি চলছে নিজ গতিতে।স্রোত বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে,মেহরাদ একটু পরপর তাকে দেখছে।স্রোত তা বুঝলেও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না।রাতে শহর,কত সুন্দর! চারিদিকে আলো ঝলমল করছে,দিনের বেলার মতো হাজার হাজার মানুষ,যানবাহন না থাকলেও রাস্তা কিন্তু একদম নিরব নয়।যানবাহনের আনাগোনা চলছেই।সময় পার হয়েছে অনেক।একটা সময় পর স্রোত বুঝতে পারলো তারা শহরের বাহিরে চলে এসেছে।এখন রাস্তা নিরব,নিস্তব্ধ।
স্রোত এতোক্ষণে মুখ খুললো,
“কোথায় যাচ্ছি?”
“বিশ্বাস করেন আমায়?
“প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন করা আমার পছন্দ না।”
“প্রশ্নতেই উত্তর থাকে,শুধু বুঝে নিতে হয়।”
স্রোত এবার মেহরাদের দিকে তাকালো।মেহরাদের দৃষ্টি সামনে।মেহরাদ ওর তাকাতেই চোখ সরিয়ে নিলো।
মেহরাদ আবার জিজ্ঞাসা করলো,
“বলুন না,বিশ্বাস করেন আমায়?”
“বিশ্বাস না করলে এতো রাতে বেড়িয়ে আসতাম না নিশ্চয়ই।”
ভণিতা ছাড়াই উত্তর দিলো স্রোত। হ্যাঁ,সে বিশ্বাস করে মেহরাদকে,তার খুউউব ইচ্ছে করছিলো লোকটাকে বিশ্বাস করতে।
মেহরাদের চোখে মুখে প্রশান্তির ছোয়া।হঠাৎ গাড়ি থামলো,মেহরাদ নিজে নেমে স্রোতকে নামতে বললো।
গাড়ি থেকে নামতেই স্রোতকে দখিনা বাতাস এসে ছুয়ে দিলো,সারা শরীর যেনো কেঁপে উঠলো।সামনে তাকাতেই দেখলো একটা নদী আপন গতিতে বয়ে যাচ্ছে।নদীর পাড়ে কিছু লাইট লাগানো,যার জন্য পরিবেশ টা আলো ঝলমলে লাগছে।আর আকাশে তো স্বয়ং চাঁদ নিজের উপস্থিতির প্রমাণ দিচ্ছেনই।নদীর পানিতে চাঁদের প্রতিবিম্ব প্রতিভাত হচ্ছে,মনে হচ্ছে ঢেউয়ের সাথে চাঁদও দুলছে।স্রোতের চোখে-মুখে মুগ্ধতা।এমন একটা মুহুর্ত তার জীবনে প্রথম,এমন স্নিগ্ধ পরিবেশ স্রোত আগে দেখেনি।মেজর সাহেব ভালো,বড্ড বেশিইই ভালো।সে ঘাসে হাটু ভেঙে বসে হাটুতে মুখ দিয়ে বসে আছে। সে দেখছে,খুব কাছে থেকে প্রকৃতি অনুভব করছে সে।প্রতিটা ঠান্ডা বাতাস শরীরে কাঁপুনি ধরিয়ে দিচ্ছে।কি সুন্দর ঘ্রাণ!!!আচ্ছা এটা কি প্রকৃতির ঘ্রাণ?রাত,নদী, গাছপালা সবকিছুর সংমিশ্রণে তৈরী ঘ্রাণ?এতো সুন্দর!স্রোতের চোখেমুখে মুগ্ধতা,প্রশান্তি। কতদিন পর এতো ভালো লাগছে।নিজেকে এই রাজ্যের রাণী মনে হচ্ছে। এমন লাগছে যেনো এই রাতের আকাশ,এই নদীর ঢেউ,এই শুনশান নিরব প্রকৃতি তাকে,তাদের রাণীকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে,সাদরে বরণ করপ নিচ্ছে।মেহরাদ চোখ আটকে আছে স্রোতের চোখ-মুখের মুগ্ধতায়।সে আপন মনে বলে উঠলো,
“আপনি মুগ্ধ হয়ে আটকে গেছেন এই রাতের প্রকৃতিতে,আর আমি আটকে গেছি আপনার চোখ-মুখের ঐ মুগ্ধতায়।”
স্রোতের ধ্যান ভাঙ্গতেই সে মেহরাদের দিকে তাকায়।মেহরাদ এখনো এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকানো।স্রোত হঠাৎ লজ্জা পেয়ে নিজের চোখ নামিয়ে ফেলে।আস্তে আস্তে বলে,
“থ্যাংক ইউ সো মাচ মেজর সাহেব ফর গিভিং মি সাচ অ্যা মোমেন্ট।ইট ইজ ওয়ান অব মাই মেমোরেবল নাইটস্।উফফ,নো নো ইট ইজ দ্য বেস্ট নাইট এভার আই হ্যাড।থাংকস্ অ্যা লট,মেজর সাহেব।”
মেহরাদ বিপরীতে একটা হাসি উপহার দেয়।দুষ্টুমি স্বরে বলে,
“বেস্ট নাইট?তাহলে তো আমি আপনাকে এখানে আনতাম না।”
স্রোত ভ্রু কুঁচকে মেহরাদের পানে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো,
“কেনো?”
মেহরাদ বাঁকা হেঁসে বলে,
“আই ওয়ান্টেড টু মেইক আওয়ার ফার্স্ট নাইট, বেড অব রোজেস মেমোরেবল।এন্ড থ্যট্ দ্যাট উড্ বি দ্য বেস্ট নাইট উই হ্যাড। বাট হলো না,ফিলিং স্যাড ফর মি।”
শেষের লাইনটা নাক টেনে কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো মেহরাদ।
মেহরাদের কথার মানে বুঝতে পেরে স্রোতের কান দিয়ে যেনো গরম ধোয়া বের হচ্ছে। মন চাচ্ছে মাটিকা ফাঁক হয়ে যাক,সে ঢুকে পড়ুক।আলোর অল্প তীব্রতায় মেহরাদ বুঝতে পারলো স্রোত লজ্জা পেয়েছে,সে জোরে হেসে ফেললো।তার হাসির শব্দ শুনতেই স্রোত রাগী চোখে তাকালে সে আবার বলে,
“প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ”
বুকের বা পাশটায় নিজের হাত রেখে নাটকীয়ভাবে মেহরাদ বলে,
“ঐ রাগী চোখে তাকাবেন না,ঐগুলোয় আমার সর্বনাশ করেছে।শেষ আমি শেষ।”
মেহরাদের কান্ডে স্রোত মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো।
মেহরাদ এবার বললো,
“আমি আপনার কোলে মাথা রেখে শুতে পারি কি স্রোতস্বিনী?”
স্রোত অবাক হয়ে তাকালে মেহরাদ বলে,
“প্লিইইইজ,একটু?এমন রাত যদি আর না পাই!”
শেষ কথাটায় অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে।স্রোত কিছু না বলে সোজা হয়ে বসে পা এমন ভাবে রাখলো যেনো মেহরাদ মাথা রাখতে পারে।মেহরাদের মুখে প্রশান্তির হাসি।স্রোতের কোল পেতে দিতে দেরী,মেহরাদের শুতে দেরী হয় নি।সে চোখ বন্ধ করে রেখেছে,অসম্ভব ভালোলাগা কাজ করছে তার।স্রোতের কেমন জানি সব স্বপ্ন স্বপ্ন লাগছে।মেহরাদের অনুরোধগুলো সে ফেলতে পারছে না কেনো?তবে তার মন্দ লাগছে না এই মুহুর্তটা।মেহরাদ চোখ বন্ধ করেই স্রোতের কাছে আবদার করে বসলো,
“স্রোতস্বিনী?”
“হুম?”
“একটা গান ধরুন না,প্লিইইজ!”
“আমি গান গাই না।” কাঠ কাঠ গলায় বললো স্রোত।
“কেনো?মান্ধবী তো বললো আপনি ভালো গান করেন।
” মায়ের শখ ছিলো।তাই শিখেছিলাম।মা মারা যাওয়ার পর বাদ দিয়ে দিয়েছি।যে পৃথিবীতে নাই তার শখ কেনো জীবিত রাখবো?”
“এটা ভুল বললেন আপনি।উনি নেই বলেই তো উনার শখগুলোর মাধ্যমে উনার উপস্থিতি জানান দিবেন।”
স্রোত হয়তো কথাটা বুঝলো তাই চুপ করে রইলো।মেহরাদ আবার বললো,
“গান ধরুন একটা।আর আজকে এই সুন্দর মুহুর্তে শাশুড়ী আম্মুর শখের জানান দিন।”
“আপনার মন খারাপ কেনো? ”
স্রোতের সোজসাপটা প্রশ্ন।মেহরাদ যেনো এই প্রশ্ন আশা করে নি।সে লুকাতে চাইলো,বললো,
“কই না তো।”
“এখনই মিথ্যে বলা শুরু করেছেন?আমাকে হিউম্যান সাইকোলজি বুঝাতে আসবেন না।আমি শুরু থেকেই খেয়াল করেছি আপনার মন খারাপ।”
“আপনাকে হারানোর ভয়ে।” বুকভরা নিঃশ্বাস নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো মেহরাদ।
“মানে?”
“আমার ছুটি পাঁচদিন কমানো হয়েছে।সেটা আজ সন্ধ্যায় জানতে পেরেছি।বিয়ে আটদিন পর ঠিক হয়েছে আর আমি আছি মাত্র পাঁচদিন।আপনাকে পেয়েও যেনো হারিয়ে ফেললাম।”
“এখানে হারানোর প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে?”
“আমি আবার কবে ছুটি পাই তার ঠিক নেই।এতো জরুরি তলব, অবশ্যই কোনো দরকারে।আপনি যদি ততদিনে আপনার ডিসিশন চেঞ্জ করে ফেলেন!”
স্রোত হাসতে হাসতে বললো,
“এর জন্য আপনার মন খারাপ?”
“আপনি হাসছেন স্রোতস্বিনী?” করুণ স্বরে বলে মেহরাদ।
“আটদিন পরের বিয়ে তিনদিন পরে হবে,তাহলেই তো হয়।”
ভণিতা ছাড়াই বললো স্রোত।
“আপনি এই কথা বলছেন?”
চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো মেহরাদ।
“আটদিন পরে বিয়ে করলেও আমাকে করতে হবে,তিনদিন পরে করলেও আমিই করবো,চিলল।”
স্রোতের কথা শুনে মেহরাদ খুশি হয়ে কোল থেকে উঠে স্রোতকে জড়িয়ে ধরে।স্রোত যেনো পলক ফেলতে ভুলে গেলো,শ্বাস নিতেও পারছে না,কি হলো ব্যাপারটা?কি করেছে বুঝে আসতেই মেহরাদ স্রোতকে ছেড়ে দিলো।স্রোতকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বোকা হাসি হেসে মাথার চুল ঠিক করতে করতে বলে,
“স্যরি,খুশিতে এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছিলাম।স্যরি।”
মেহরাদের বোকা বোকা হাসি দেখে স্রোত নিজের অদ্ভুত অনুভূতির কথা ভুলে হেসে ফেললো।মেহরাদ আবার স্রোতের কোলে শুয়ে পড়লো,ভাব এমন যেনো এইমাত্র কিছুই হয়নি।আবার বললো,
” একটা গান গেয়ে মুহুর্তটাকে সুন্দর করে দিন না স্রোতস্বিনী।”
স্রোত সামনের দিকে তাকিয়ে গেয়ে উঠলো,
হয়ে যাক,যেনো রূপকথাদের ডাকছি অসময়
বুঝে নিক,কেনো স্বপ্নগুলোর এমন কেনো হয়
তখন মেহরাদের দৃষ্টি স্রোতের দিকে।মেহরাদ তাল মেলাতেই স্রোত মেহরাদের দিকে তাকায়,
“সে তুমি এতো অল্প কথায় বুঝিয়েছো আমায়
সে তুমি জ্বেলে অন্য আলো জ্বালিয়েছো আমায়।
মেহরাদ থামলে স্রোত আবার শুরু করলো,
ছুয়ে দিলে,ছুয়ে দিলে
ছুয়ে দিলেই মুখ পো ড়া রোদ হেসেছে
কোন গোপনে মন ভেসেছে…….
দৃষ্টিতে দৃষ্টি আবদ্ধ,কারো মুখে কোনো নেই।এই নদীর পাড় যেনো অদ্ভুত, অসম্ভব সুন্দর একটা মুহুর্তের সাক্ষী হলো।
একটা সময় পর স্রোত নিরবতা ভাঙলো,
” মেজর সাহেব ভোর হয়ে এসেছে। চলুন বাড়ি যাই।”
“একটু অপেক্ষা করুন।আরেকটা সুন্দর দৃশ্যের স্বাক্ষী হয়ে যান।”
“কি?”
“একটু পরেই দেখতে পাবেন।”
“স্রোতস্বিনী সামনে তাকান।”
স্রোত তাকালো,আসলেই সুন্দর, অসম্ভব সুন্দর।
ভোরবেলা,একটা দিনের সূচনা ঘোষণা করে সূর্যোদয়ের মাধ্যমে।সূর্যোদয় এক নৈসর্গিক সৌন্দর্য।নদীর পাড়ে সিদুর রাঙা সূযের উদয়, মনে হয় ঐ তো ঐ দূরের পানির মধ্যে থেকে সূর্যটা উপরে উঠছে আর চারিপাশে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।এ যেনো এক স্বর্গীয় দৃশ্য।স্রোত সমুদ্রের তীর থেকে সূর্যাস্ত দেখলেও কখনো এমন সূর্যোদয় দেখা হয় নি।আজ দিনটা ভালো,সব ক্রেডিট মেজর সাহেবের।
স্রোতের মুগ্ধতায় ঘেরা চেহারা যেনো মেহরাদের শান্তির চাবিকাঠি।স্রোতের দৃষ্টি সামনে,তার দৃষ্টি স্রোতে নিবদ্ধ।
একসময় মেহরাদ হেঁসে বলে উঠলো,
“বলো নদী,কার স্রোত বেশি সুন্দর,তোমার নাকি আমার?”
#চলবে……
[আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। লাস্ট লাইনটা আমি ওয়াসিকা নূযহাত আপুর অক্টোবর রেইন বই থেকে কপি করেছি,,ঐখানে লাইনটা এমন ছিলো যে,
“বলো পৃথিবী কার অক্টোবর বেশি সুন্দর তোমার নাকি আমার।” আমি আগেই ক্লিয়ার করে দিলাম কারণ আমি চাই না আমি কোনো সমালোচনায় পড়ি।কল্পনার বহিঃপ্রকাশ করতে আসছি,এখানেই থাকতে চাই।সমালোচনায় জড়াতে চাই না,ধন্যবাদ]
সবাই ফলো দিয়ে রাখুন 👉 Bindas Life