দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা) #লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৩৯

0
932

#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৩৯
🍂
বিয়ে মানেই ব্যস্ততা হৈ হুল্লোড়,,,,, আর এই বিয়ে নামক ব্যস্ততার বিষয়টি সবার মাঝে থাকে হোক সে বড় বা ছোট,,, শুধু ব্যস্ততা ধরণটা ভিন্ন থাকে,,, ছোটরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ততায় সময় পার করে আর বড়রা বিয়ে আয়োজন নিয়ে,,,, আর এই বিয়ে বিষয়টি ছোটদের মাঝে যতটা আনন্দের থাকে, বড়দের মাঝে ততটাই ব্যস্ততা ঘিরে থাকে,,, তাই এই বিয়ে নামক বিষয়টি আমার আর ফিহা কাছে যতটা আনন্দের সহিত,,, ততটাই বাকি সবার কাছে ব্যস্ততার সহিত,,,,

.

বিছানার উপর পা ঝুলিয়ে বসে আছি আমি,,, আর আমার হাতে রয়েছে ঐ দিনের দুটো কাতান শাড়ি মধ্যে কালো শাড়িটি,,, নিহা আপুর বিয়ে শপিং এর জন্য যাচ্ছে সবাই,,,,, তাই দাদী আমাকে রেডি হতে বলেছে,,, কিন্তুু আজ কেন জানি আমার অন্য কিছু পড়তে ইচ্ছা করছে না,, শুধু এই দুটো শাড়ির মধ্যে থেকে একটা শাড়ি পড়তে ইচ্ছা করছে,,,, নিজের ইচ্ছার প্রধান্য দিতে মালা (কাজের মেয়ে) আমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিবে,,,, কারণ দাদী এ মূহুর্তে ব্যস্ত নিচে সবাইকে নিয়ে,,, ফয়সাল ভাইয়া ফ্যামেলিও আমাদের সাথে যাবে বিয়ে শপিং এর জন্য,,,,,

নিহার আপুর বিয়ে ডেট ফিক্সড হয়েছে পনেরো দিন পর,,,, আপুর এনগেজমেন্ট এ পর আজ তিন মাস হতে চললো,,,, উনার জন্য বিয়ে ডেট পিছানো হয়েছিল, আর এখন যেহেতু উনি বাসায় তাই তাড়াতাড়ি বিয়েটা সাড়তে চাই ফয়সাল ভাইয়ারা,,,,

.

পনেরো দিন বিয়ে জন্য সেটা খুবই কম সময় হলেও,,, কেউ কোনো রকম দ্বিমত পোষণ করছে না এই বিষয়ে,,
সবাই সবটা বুঝে কাজে উঠে পরে লেগেছে শুধু আমার গুনধর স্বামী ছাড়া,,, উনাকে তো দেখায় জায়না আর ঐ দিনের পর তো উনি ইচ্ছে করেই আমার সামনে আসে না,,, এখন কেন আসে না সেটা আমি বলতে পারি না,,, তবে আমিও চাই উনি (রিদ) আমার সামনে না আসুক,,, লাগবে না আমার উনাকে,, উনি মানেই আমার জন্য আতংক,,,, সবসময় আমাকে ভয় দেখিয়ে চলে তাই উনি আমার সামনে না আসলেই বাঁচি আমি হুহহহহ,,,

,

মালার কাছ থেকে শাড়িটা পড়া হয়ে গেল আমার,,, আয়নার সামনে দাড়াতেই চমকে উঠি আমি,,, শাড়িটা আমাকে কেমন যেন অদ্ভুত ভাবে জরিয়ে নিয়েছে,,,, মনে হচ্ছে কেউ তার ভালোবাসা ঘার রং এ রাঙ্গি তুলেছে আমাকে,,, দাদী বলেছে, দাদী শাড়ি দুটো দেয়নি আমাকে,,, তাহলে কে দিল এই শাড়ি দুটো,,, আর অদ্ভুত বিষয় হলো আমাকে তো কেউ রিত্ত বলে ডাকে না,,,, এতটা ভালোবেসে কে আমাকে রিত বলে ডাকলো,,,, আমার এমন সব চিন্তা ভাবনায় মাঝে মালা পিছন থেকে বলে উঠে,,,,,,

.
—” আপামনি আফনেরে যেই সুন্দর লাগতাছে,,, একদম পরীর লাহান ফকফক্যা লাগতাছে,,,,

.
মালার কথায় ঠোঁট প্রশারিত করে হাসি আমি,,, পরে মালাকে রেডি হতে বলে নিজের কাজে মন দেয় আমি,,, আজ নিজেকে সাজাতে বড্ড মন চাইছে আমার,,, ভালোবাসা এই রংটাই নিজেকে রাঙ্গিতে ইচ্ছা করছে,,,, তাই নিজের ইচ্ছে প্রধান্য দিয়ে বসে পড়লাম নিজেকে সাজাতে,,,, দু’হাত পুড়ে কালো কাচের রেশমী চুরি পড়লাম,,, চোখে ঘাড় কাজল, ঠোঁটে ভারী পিংক লিপস্টিক,,, কপালে সাদা ছোট পাথরের টিপ,,, কানে কালো পাথরের টপ পড়ে নিলাম,,, শাড়ি আঁচলটা ছেড়ে পড়লাম,,,, পরে সব ঠিকঠাক করে দাঁড়িয়ে আছি চুল গুলো হাতে নিয়ে,, কি করবো ভেবে না পেয়ে ছেড়ে দিলাম আলতো হাতে,,, আয়না একবার নিজেকে দেখে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম ড্রয়িংরুমে উদ্দেশ্য,,,,

.

.

.
🍁
ওপর সিরি থেকে নিচে ড্রয়িংরুমে একটা পলক চোখ বুলায়,,, সবাই যার যার মতো করে ব্যস্ত,,, দাদা-দাদী, ফুপা-ফুপি, ফয়সাল ভাইয়ার ফ্যামিলির সাথে সোফায় বসে আছে,,, নিহা আপুর আর ফয়সাল ভাইয়া অন্য পাশের সোফায়,,,, ফিহা নিজের ফোনে চেটিং করছে রেডি হয়ে বসে,,,, আয়ন ভাইয়া নাকি নাকি অফিসে আছে এখন,, আমাদের সাথে শপিং মলে দেখা করবেন পরে,,,

.
সবাইকে ওপর থেকে এক পলক দেখে নিজের মতো করে এগিয়ে যাচ্ছিলাম নিচে দাদা-দাদি উদ্দেশ্য,,, কিন্তুু মাঝ পথে আমার পা দুটো থেমে যায়, কাউকে দেখে,,,,
কান্তি মাখা শরীর নিয়ে মেইন দরজা দিয়ে এগিয়ে আসছে উনি (রিদ),,, একহাতে কোটটা ভাজ করে হাতে রাখা আর অন্যহাতে ফোন দিয়ে কানে ধরে রেখে কথা বলছেন,,, চোখে মুখে কান্তির সাথে সাথে বিরক্তিও প্রকাশ পাচ্ছে,,,,,

উনার এমন হঠাৎ আগমনে উপস্থিত সবাই খুশি হয়,,, দাদী হাসি মুখে এগিয়ে এসে আদুরে সুরের বলে উঠে,,,,,

.
—” আমার সোনাবা কি আজ খুব বেশি কান্ত,,,, আর আজ তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরেছিস ভালো হয়েছে, সবার সাথে আজ তুই সারাটা সন্ধ্যা থাকবি,,,, যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়,,,,,

.
দাদী কথায় উনি পাশ ফিরে তাকায় দাদির দিকে,, পরে কল কেটে দাদীকে স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠে,,,,,

.

—” হুম একটু কান্ত আমি,,,, আর দাদী ভালো লাগছে না আমার তোমরা সবাই যাও প্লিজ,,, এসব বিষয়ে আমাকে টেনো না,,,, আমি কোথাও যেতে পারবো না সরি,,,,

বলেই উনি সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিজের মতো করে কিছুটা এগিয়ে এসেও থেমে যায়,,,, আমাকে ভূত দেখার মতো চমকে আছেন তার চেহেরা দেখেই বুঝা যাচ্ছেন,,,, এক প্রকার হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে,,, আমি কখনোই উনাকে এমন অদ্ভুত নজরে তাকাতে দেখেনি,,,, উনি কেমন করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে বারবার আমার উপর থেকে নিচ পযন্ত চোখ বুলাচ্ছে,,,, আর আমি তার এমন দৃষ্টি দেখে জমে যাচ্ছি,,, আমার কেমটা লাগছে আমি নিজেই বুঝতে পারছি না,,,, আর উনার (রিদ) এই দৃষ্টিও নিতে পারছি না আমি,,, মনের মধ্যে অজানা একটা ভয় কাজ করছে,,,, তাই ভয় ভয় নজরে উনার দিকে তাকিয়ে থেকে আস্তে করে ধীর পায়ে উনার সামনে এগিয়ে আসছি মাথা নিচু করে,,,,, উনি তখনো টায় জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে আমার দিকে তাকিয়ে,,,, আমি উনার এমন দৃষ্টি অপেক্ষা করে দাদাজান এ পাশে গিয়ে দাড়ায়,,,, আর বারবার বাঁকা চোখে উনার দিকে তাকায় উনি তখনও পিছন ঘুরে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে,,,,, এবার আমি উনার এমন দৃষ্টি দেখে লজ্জা হঠাৎ হেসে দাদা পিছনে লুকিয়ে পরে আবারও মাথা হালকা বের করে উনাকে দেখি,,,,

.
উনি আমার এমন কান্ড দেখে জোরে হেসে উঠে,,,, উনার হাসিতে সবাই হতবাক হয়ে, ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে আছে উনার দিকে,,, আর বুঝার চেষ্টা করছে কি হচ্ছে এখানে,,,,,,

চলবে…………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here