#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৪৫
🍂
কেবিনে অজ্ঞান অবস্থা শুয়ে আছে মায়া, আটচল্লিশ ঘণ্টা হতে চললো কিন্তুু মায়ার কোনো রকম উন্নতি হচ্ছে না,,, বরং চ আরও মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ সরাসরি ইফেক্ট হচ্ছে, যার জন্য মায়ার শরীর রেসপন্স করা ছেড়ে দিচ্ছে ক্রমাগত,,, এতে করে ডক্টরা বেশ চিন্তিত,,, মায়ার এক্সিডেন্ট ফলে মায়ার মাথায় বাইগ্রেনের রগ গুলোর মধ্যে রক্ত জমাট বেঁধে আছে যা অপারেশন করেও ঠিক করতে পারে নি ডক্টরা,, সাকসেসফুলি অপারেশন হলেও মায়ার মাথার জমাট বেঁধে থাকা রক্ত গুলো থেকেই যায়,,, ডক্টরা ইচ্ছে করে রেখে দিয়েছে বা তারা এই রক্ত বেড় করতে পারেনি এমন কিছু না, ডক্টরা পারতো তখন জমাট বেঁধে থাকা রক্ত গুলো পরিস্কার করতে, কিন্তুু করেনি এতে করে মায়াকে একদমই বাঁচানো যেতে না,,, কারণ মায়ার শরীর রেসপন্স করা ছেড়ে দিয়েছিল আর মায়ার অবস্থাও বেশ খারাপ ছিল তাই ডক্টরা বাধ্য হয়ে এমনটা করতে হয়েছে,,,, তবে এই জমাট বেঁধে থাকা রক্তের জন্য তেমন কোনো ক্ষতি সমক্ষীন হতে হবে না মায়াকে,,, নিয়মিত ওষুধ খেলে ভালো হয়ে ওঠেবে এমনটাই আশাহত ডক্টরা,,, তাই এখন পেসেন্টের রেসপন্স করা কথা, জ্ঞান ফিরা কথা, কিন্তুু ওল্টো এখন পেসেন্টের অবস্থা ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে, এতে করে ডক্টরা বেশ চিন্তিত কারণ এমনটা হওয়ার কথা নয়, তবুও এমনটাই হচ্ছে,,, তাই ডক্টরদের এমন মনে হচ্ছে যে পেসেন্ট ইচ্ছকৃত ভাবে ঠিক হতে চাচ্ছে না,, তাই পেসেন্টে মস্তিষ্ক তার নিজ বডি কাজ করা ছেড়ে দিয়েছে,,, চব্বিশ ঘণ্টা মধ্যে যদি পেসেন্টে জ্ঞান না ফিরে তো তাকে আর বাঁচানো যাবে না,,,, এমন সব চিন্তা ভাবনায় নিয়ে ডক্টর রেবা মায়ার রিপোর্ট গুলো দেখতে লাগলো,,, রিপোর্ট দেখা শেষে মায়াকে একপলক দেখে নার্সকে মায়ার সাথে থাকতে বলে বেড় হওয়ার জন্য উল্টো ঘুরতেই তখনি কেউ দরজা টেলে হুড়মুড়িয়ে মায়া কেবিনে ভিতর ঢুকে হতভম্ব হয়ে,,,,
.
ডক্টর রেবা চমকে উঠে সাথে সাথে দরজা দিয়ে আসা ব্যক্তি দিকে তাকিয়ে থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন,,,
কারণ তিনি কিছু বললেও ব্যক্তিটি কান পযন্ত পৌঁছাবে না তাও তিনি ভালো করেই জানেন,,, বিগত আটচল্লিশ ঘন্টায় তিনি অনেক কিছু দেখেছেন,,, এই ব্যক্তিটির অতিরিক্ত মাত্রায় পাগলামো আর এই মেয়েটি জন্য অসীম ভালোবাসা কতটা ভয়াবহ রুপ ধারণ করছে তা সবাই দেখেছে,,, তাই ডক্টর রেবা কোনো রকম ভনিতা ছাড়াই উজ্জীবিত কন্ঠে হাসি মুখে বলে উঠে,,,,
.
—” হ্যালো মিস্টার ARK, এখন কেমন আছেন আপনি,,,
ডক্টর রেবা কথা হয়তো রিদের কান পযন্ত পৌঁছাতে পারেনি,, রিদ হতভম্ব হয়ে দৌড়ে এসে সিটের সামনে মায়ার মাথার কাছে হাঁটু গেড়ে বসে পরে,,, মায়াকে ভালো করে পযবেক্ষন করে তাকিয়ে থেকে বিচিলিত কন্ঠে বলে উঠে,,,
.
—” ডক্টর আ আমার রি রিত,, ওহ ওঠছে না কেন,,,?
.
ডক্টর রেবা কিছু বলার আগেই বাকি সবাই হুরমুড়িয়ে মায়ার কেবিনে ভিতর প্রবেশ করে,,, রিদের জন্য, রিদকে থামাতে,,, কারণ রিদ এর আগে আরও একবার পাগলামো করেছে,,, রিদকে যখন চব্বিশ ঘণ্টার জন্য ঘুমের ইনজেকশন দিয়েছিল, চব্বিশ ঘণ্টা পর রিদের ঘুম ভাঙতেই মায়া জন্য আবারও পাগলামো শুরু করে দেয় রিদ,,, নিজের কেবিনে সবকিছু ভাঙচুর করতে শুরু করে দেয়,, মায়ার জন্য প্রচন্ড হাইপার হয়ে ওঠেছিল হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে যা হাতে কাছে পাচ্ছিল তাই ছুঁড়ে মারছিল,, আর মায়াকে নিজের কাছে এনে দেওয়ার জন্য চিল্লা চেচামেচি করা শুরু করে দেয়,,,
.
রিদের হাতে সেলাই তারটা টান দিয়ে চিরার ফলে হাত থেকে অনর্গল রক্ত পড়তে থাকে কিন্তুু রিদের সে দিকে কোনো খেয়াল ছিল না তার শুধু রিতকে চাই, তার বউকে তার কাছে চাই ই চাই,,, নয়তো সবকিছু ধংশ করে দিবে সে,,,, আরাফ খান রিদের অবস্থা দেখে বাধ্য হয়ে ডক্টরকে বলে আবারও চব্বিশ ঘণ্টা ঘুমের ইনজেকশন দেওয়ানো হয়,,, নয়তো মায়া আগে রিদকে হারাতে হবে সবাই,,,,
.
রিদের এমন সব পাগলামো দেখে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল হেনা খাঁন, আয়ন, আর মায়ার পরিবার,,,
মায়ার এক্সিডেন্ট কথা শুনে তারা আরও আগেই এসে পরেছিল হসপিটালের,,, মায়ার জন্য ভেঙে পড়লেও আরাফ খান আর আয়ন শান্তনা দেন তাদের,,, আর মায়ার বড় ভাই আরিফ চট্টগ্রাম থেকে এসেছে আরও একদিন আগে,,, আসার পর থেকে নিজের শান্ত রাখতে পারছে না কারণ নিজের আদুরে ছোট বোনকে এভাবে শুয়ে থাকতে দেখে ভিতরটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে আরিফে,,, তারপর আবার রিদের এমন সব পাগলামো দেখে একদমই স্তব্ধ হয়ে যায় আরিফ,,,,
.
ডক্টর রেবা সবাইকে একসাথে মায়ার কেবিনে ভির জমাতে দেখে উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠে,,,
.
—” মিস্টার আরাফ খান প্লিজ সবাইকে বাহিরে যেতে বলুন,,, পেসেন্টের কেবিনে এভাবে ভির জমালে পেসেন্টে আরও ক্ষতি হবে,,,,, তাই সবাইকে বাহিরে যেতে বলুন, আর আপনার সাথে পেসেন্টকে নিয়ে কিছু কথা আছে,, তাই আপনি বাধে সবাইকে বাহিরে যেতে বলুন প্লিজ,,,,
.
ডক্টর রেবা কথা শুনে আরাফ খান আসিফ কে ইশারা করতেই একে একে সবাইকে নিয়ে বেড় হয়ে যায় আসিফ,,,, কিন্তুু আয়ন, আরিফ, বাঁধে,,,, ডক্টর রেবা আয়ন, আর আরিফকে দেখে আরাফ খান এর দিকে তাকাতেই, তিনি ডক্টর রেবা তাকানো মানে বুঝতে পেরে ইশারা করে ডক্টর রেবাকে বুঝান যে ওরা থাকলে কোনো সমস্যা হবে না,,, ডক্টর রেবা আরাফ খানের ইশারা আশাহিত হয়ে পিছন ঘুরে করুন ভাবে তাকায় রিদের দিকে,,, রিদ মায়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, মায়ার একহাত আঁকড়ে ধরে নিজের দুহাতে,,, তখনি ডক্টর রেবাকে নিজের দিকে তাকাতে দেখে রিদ ডক্টর রেবা দিকে না তাকিয়ে মায়ার দিকে নিজের দৃষ্টি স্থিত রেখে ডক্টর রেবাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,,,,,
.
—” ডোন্ট বি ডেয়ার ডক্টর রেবা,,,, আমাকে এখান থেকে যাওয়া জন্য ভুল করেও একটা ওয়াট মুখে উচ্চারণ করলে হিতের বিপরীত হতে পারে,,,,, বউ আমার তাই সবটা জানার অধিকারও আমার,,, যা বলার চুপচাপ দাঁড়িয়ে আমার সামনেই বলুন সবটা,,,
.
রিদের এমন শান্তষ্টি ঠান্ডা মাথায় হুমকি মানে বুঝতে পারে ডক্টর রেবা, তাই কোনো রকম ভনিতা ছাড়াই স্বাভাবিক ভাবেই বলে উঠে,,,,
.
—” আসলে আমি যেটা বলতে চাইছি সেটা আপারা প্লিজ ঠান্ডা মাথায় নেওয়া চেষ্টা করবেন,,, কারণ কথা গুলো সত্যি তাই আমাকে বাঁধ্য হয়ে বলতে হচ্ছে,,,
.
কথা গুলো বলেই কিছুক্ষন থামে ডক্টর রেবা,, নিশ্চুপে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে রিদকে একটা পলক দেখে আবারও আরাফ খানকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,,,,,
.
—” দেখুন মিস্টার খান আমাদের হাতে যতটুকু সম্ভব ছিল আমরা সেই সবটাই চেষ্টা করেছি পেসেন্টকে বাঁচানো জন্য,,,, আমাদের ট্রিকমেন্ট সঠিক ভাবে দেওয়া ফলেও পেসেন্টের কাছ থেকে কোনো রকম রেসপন্স পাচ্ছি না আমরা,,, আমাদের এমনটা মনে হচ্ছে যে পেসেন্ট ইচ্ছাকৃত ভাবে নিজের বডি থেকে মস্তিষ্ককে আলাদা করতে চাইছে,,, হয়তো পেসেন্টে মাথায় এমন কিছু মেমোরিস গেঁথে আছে যার জন্য পেসেন্ট নিজেই রেসপন্স করতে চাইছেনা,,,, তাই আমরা আমাদের সাদ্দ মতো চেষ্টা করে চলছি আরও করবো,,, কিন্তু পেসেন্টকেও আমাদের সাহায্য করতে হবে,,, নয়তো আমাদের একার পক্ষে সম্ভব নয় উনাকে ঠিক করা,,,, পেসেন্ট আমাদের সব কথা শুনতে পারবে কিন্তুু কোনো রকম রেসপন্স করতে পারবে না,,, সাইন্স আমারা সবাই জানি তবে সাইন্সও মাঝে মাঝে ম্যাজিকে বিশ্বাস করে,,, তাই উনাকে ম্যাজিক ছাড়া ঠিক করা দায়, এখন সবকিছু আল্লাহ হাতে,,, আপনারা আল্লাহকে ডাকুন,,,
.
ডক্টর রেবা কথা শুনে আরাফ খান সাথে সাথে রিদের দিকে তাকায়,,, রিদকে শান্ত হয়ে বসে থাকতে দেখে আরাফ খানের মনে অজানা ভয় কাজ করতে শুরু করে দেয়,,,, আরাফ খানের সাথে সাথে ডক্টর রেবাও রিদের দিকে তাকায়,,,,, আরিফ আর আয়ন সবটা শুনে পাথর মূর্তির মতো দাড়িয়ে পরে, কিছু বলার মতো ভাষা তাদের জানা নেই,,,, তখনি ডক্টর রেবা কিছু বলার জন্য মুখ খুলবে তার আগেই রিদ শান্ত দৃষ্টিতে মায়ার দিকে তাকিয়ে থেকে স্বাভাবিক কন্ঠে সবাই কে বলে উঠে,,,,
.
—” ড্রামার ডোরস শেষ সবার,,, এবার বিনা বাক্যে এক এক করে সবাই রুম ত্যাগ করো,,, আমি এক কথা দুবার রিপিট করবো না,,, সো হাঁড়িআপ
.
রিদের কথায় আয়ন রেগে কিছু বলতে নিলে আরাফ খানের জন্য থামতে হয় তাঁকে,,,, আরাফ খান আয়নের হাত ধরে থামিয়ে দেয়, আর ইশারায় বুঝায় রিদকে একা ছাড়তে মায়ার সাথে,,,, আয়ন সেটা মানতে নারাজ হলেও শেষে নানাভাই কাছে হাড় মানতে হয় তাঁকে,,, পরে জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে মায়াকে এক পলক দেখে বিনা শব্দ রুম ত্যাগ করে আয়ন,,,, সাথে আরিফ, ডক্টর রেবা ও আরাফ খান, আয়নের পিছন পিছন বেড়িয়ে যায় কেবিন থেকে,,,,,
.
সবাই বাহিরে যেতেই রিদ কমড় থেকে বন্ধুকটা বেড় করে মায়ের সামনে একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ে,,, চেয়ারে একপা তুলে তাতে নিজের হাতে থাকা বন্দুকটা ঠেকিয়ে কপালের স্লাইড করতে থাকে,,, আর অন্য হাত চেয়ার ওপর তুলে রাখে,,, বন্দুকটা চেপে ধরে কপালে ঠেকিয়ে মায়ের দিকে শান্ত দৃষ্টি রেখে বলে উঠে,,,,
.
—” এত তাড়াতাড়ি আমার ওপর থেকে তোমার ভয় ওঠে গেছে,,, আমাকে ভয় করছে না তোমার কলিজা কেঁপে উঠছে না তোমার,,,, আমাকে ছেড়ে যেতে চাও তুমি,,
.
কথা গুলো বলেই রিদ চেয়ার থেকে লাফ দিয়ে ওঠে পরে, পরে বন্দুকটা দিয়ে নিজের কপাল চুকলাতে চুকলাতে মায়ার সামনে দাঁড়িয়ে বলে উঠে,,,,,
.
—” তোমাকে বলেছিলাম না বউ নেই তো কেউ নেই,, সব কয়টাকে একসাথে মারবো আমি,,,, তুমি যেহেতু আমার সাথে থাকবে না তো তোমার ফ্যামিলিকে বাঁচিয়ে আমার কি কাজ,,, তুমি আমার কথা শুনবে না তো বাহিরে যে তোমার মা, বাবা,ভাই, বোন, দাঁড়িয়ে আছে না সব কয়টাকে এক সাথে গুলি করে মারবো আমি সব ঝামেলা একবারে চুকিয়ে ফেলি কি বল ভালো হবে না,,,,
.
কথা গুলো বলে রিদ মনিটর দিকে তাকায় সেখানে মায়ার জীবন রেখা গুলো কোনো পরিবর্তন হচ্ছিল না,, মায়া এতে করেও কোনো রেসপন্স করছিল না,,, রিদ মায়ার ভয়কে ভয় দেখিয়ে রিদের কাছে ফিরে আনবে,,,, তাই রিদ ভাবেছিল মায়া তার ফ্যামেলিকে ভিষণ ভালোবাসে এবং তাদের ভয় দেখালে হয়তো মায়া নিজ থেকে রেসপন্স করতে পারে,,, কিন্তুু রিদের ধারণা ভুল প্রমাণ করে দেয় মায়া, কোনো রকম রেসপন্স না করে,,, রিদ মায়াকে রেসপন্স করতে না দেখে কপাট রাগ দেখিয়ে বলে উঠে,,,
.
—” ঠিক আছে করতে হবে না তোর রেসপন্স,,, আসতে হবে না তোকে আমার কাছে,,, আমি তোর ফ্যামেলির সাথে সাথে আমার ফ্যামেলিকেও মেরে দিব,,,, আর তার করতে একটি বারও ভাববো না আমি,,, তুই ভালো করেই চিনিস আমাকে, আমি আমার কথায় কতটা অটল থাকি,,,, এবার বল কি চাই তোর,,, আমার কাছে ফিরে আসবি নাকি সবাইকে গুলি করে মারবো আমি,,,,
.
এবারও রিদ মনিটারের স্ক্রিনে তাকায় এতে করেও মায়ার কোনো রেসপন্স নেই,,,, রিদ ভিতর থেকে অনেকটাই ভেঙে পরেছে মায়াকে রেসপন্স করতে না দেখে,,,, মায়া যদি ফ্যামেলির তাদের জন্য ফিরতে না চাই তাহলে মায়া কার জন্য ফিরতে চাই,,, মায়ার মস্তিষ্ক জোরে কার বিচরণ যার জন্য মায়া সবকিছু ত্যাগ করতে চাইছে,,,, কার মেমোরি এবং কি এমন মেমোরি মায়ার মাথায় গেঁথে আছে যায় জন্য মায়া সর্বোচ্চ ছাড়তে ইচ্ছুক,,, রিদ কি একটা ভেবে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠে,,,,,
.
—” তোর আয়নকেও মেরে দিব আমি,,, ভালোবাসি না তুই আয়নকে, তোর ভালোবাসাকেও আমি মেরে দিব,,,
.
কাঁপা কাঁপা গলায় কথা গুলো বলেই দ্রুততার সঙ্গে মনিটরের স্ক্রীনে তাকায় রিদ,, এতে করেও মায়াকে রেসপন্স করতে না দেখে শান্তি একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে রিদ,,, পরে টলমলে চোখে মায়ার দিকে তাকায়,,, মায়ার মনে আয়নের জন্য কোনো রকম ফিলিংস না দেখে মূহুর্তের ভালো লাগে ছেয়ে যায় রিদ এর মনে,,,,
কিন্তুু এই ভালো লাগাটা বেশিক্ষন দীর্ঘ স্হায়ী হয়নি কারণ মায়া যদি এদের সবার জন্য ফিরতে না চাই তাহলে কার জন্য ফিরতে চাই এই ভেবেই রিদ আবারও বিচিলিত হয়ে পরে,,,, কি করবে কিছু ভেবে না পেয়ে মায়ার দিকে বন্দুকটা তাক করে, কিছুক্ষন রাখার পর রিদ টলমলে চোখে নিজের মাথায় তাক করে বন্দুকটা,,,, পরে চোখ মুখ শক্ত করে বলে উঠে,,,,
.
—” ঠিক আছে তোকে ফিরতে হবে না আমার কাছে,,, তুই মরতে চাইছিস তো মর,,,, তোর সাথে আমি মরতে চাই, এমনিতেই তোকে ছাড়া মরতে মরতে বেঁচে আছি আমি বাকিটা বাচিয়ে কি করবো আমি,,, প্রাণহীন দেহটা নিয়ে কি করবো আমি,,, আমার আর কিছুই ভালো লাগছে না,, তাই তোর আগের আমি নিজেই নিজের প্রাণটা দিয়ে দিব আমি, তুই নাই তোহ আমিও নাই,,, সব কাহিনি এখানেই শেষ,,,
.
বলেই রিদ হাতে থাকা বন্দুকটা শক্ত করে চেপে ধরে ট্রিগার চাপ দিতেই,,, মায়া রেসপন্স করতে থাকে, জোরে জোরে নিশ্বাস উঠা নামা করতে থাকে,,, মনিটরের স্ক্রিনে মায়া জীবন রেখা মূহুর্তের আপন গতিতে চলতে থাকে,,,, সবটা দেখে মূহুর্তের স্তব্ধ হয়ে যায় রিদ কিছু বলার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না রিদ,,, কাকে কি বলবে সে কাকে তার মনে কথা গুলো বুঝাবে সে,,, তার বাচ্চা বউ তার জন্য ফিরতে চাই তাকে ভালোবাসে বলে,,, তার কথা ভেবে সবকিছু ছাড়তে চাই তার বউ,,, শুধু তার জন্য,,, রিদ যাকে অবুঝ ভেবে দুরে সরিয়ে রেখেছিল তারই সেই বাচ্চা বউয়ের সবটা জোরে শুধু তারই বিচরণ,,, মায়ার মনে শুধু রিদের বসবাস আর সে কিনা বুঝতেই পারলো না, পড়তেই পারেনি রিদ তার বাচ্চা বউয়ের মন যদি পারতো তাহলে হয়তো এতটা পথ থাকে আসতে হতো না,,,,
.
রিদ সবটা একমনে ভেবে ধপ করে হাঁটু গেড়ে বসে পরে মায়ার সামনে পরে হাত থেকে বন্দুকটা ফেলে দিয়ে কাঁপা কাঁপা হাত দুটো বাড়িয়ে দেয় মায়ার দিকে,,, রিদের দুহাতের ভাজে মায়ার দু গাল আঁকড়ে ধরে টলমলে চোখে তাকিয়ে তাঁকে মায়ার দিকে,,, পরে নিজের অশ্রুসিক্ত চোখে তাকিয়ে থেকে হুট করেই মায়াকে ঝাপটি ধরে দুহাতে,,,, মায়ার বুকে মায়া রেখে নিরবে চোখে জল ফেলতে থাকে রিদ,,,, তার এই চোখে জলটা সুখে জল,, অপ্রতাশিত কিছু পাওয়ার জল,,, আজ রিদ সবচেয়ে বড় দুটো জিনিস পেল তার জীবনের,,, তার বউ ও বউয়ের ভালোবাসা,,, আজ দুটোই তার,,,,
.
(আমার এই গল্প লিখা নিয়ে কেউ বিরক্ত হলে প্লিজ আমাকে জানাবেন আপিরা,,, তাহলে আমি গল্পটা শেষ করে দিব,, তার পরেও আমাকে কেউ বলবেন না যে আমি অন্যের কোনো কিছু চুরি করছি,,,, কারণ আমি নিজ থেকে লিখতে খুব পছন্দ করি,,, তাই আমার গল্পের ভাষা গুলো সবার ভালো নাই লাগতে পারে,,,)
চলবে………..