দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা) #লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৪৬ 🍂

0
940

#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৪৬
🍂
সময়টা টিকটিক করে চলে যাচ্ছে আপন গতিতে, সবকিছু সময়ে তালে আপন গতিতে চললেও থেমে যায় রিদের জীবন,, সবকিছুই ঠিক আছে তবুও ঠিক নেই কিছুই,,, ভালোবাসা দহনে পুড়ছে রিদ যা থেকে চাইলেও সে বেড় হতে পারবে না,,, তার রিত তাকে খনে খনে পুড়িয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিচ্ছে,,, রিদের মনের এক অশান্ত আগুন জ্বলছে প্রতিটা মূহুর্তে,,, আর সেই আগুনে রিদ তার বউকেও পুড়াতে চাই ,,, একসাথে জ্বলতে চাই ভালোবাসা দহনে,,, কিন্তুু রিদ চাইলেও জ্বলতে পারছে না ভালোবাসার দহনে,,, আর না নিবাতে পারছে মনের অশান্ত আগুনটাকে,,, সবটা শুধু নিরব দর্শকের মতো দেখতে হচ্ছে তাঁকে,,,, কারণ রিত তাকে সেই সুযোগটাই দিচ্ছে না,,, রিদের যা চাই সে কখনো আপোষ করে নিয়েছে কিনা সন্দেহ আছে, সে সবসময় নিজের মতো করে চিনিয়ে বা জোর করে নিজের করে নিয়েছে,,, তার বউয়ের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হতো জোর করে হলেও তার যা চাই তা আদায় করে নিয়ে নিত মায়ার থেকে,,, কিন্তুু রিদ তা করতে পারছে না কারণ এতে করে হিতে বিপরীত হতে পারে,,,

.

মায়া সুস্থ হয়ে খাঁন বাড়িতে এসেছে আজ পনেরো দিন হয়েছে,,, এই পনেরো দিনে রিদ মায়ার থেকে যথেষ্ট পরিমাণ দূরে থেকেছে,,, কাছে যায়নি, কথা বলেনি, কোনো রকম ভয়ও দেখায়নি মায়াকে,,, সবটা করে এসেছে শুধু মায়ার জন্য,,, মায়ার অসুস্থতা কথা চিন্তা করে চুপ থাকতে হচ্ছে রিদকে,,, নয়তো বউ বলে ছাড় কখনোই পেত না মায়া,,,

কথা গুলো নিজের অফিস রুমে কক্ষে দাঁড়িয়ে একমনে ভাবছিলো রিদ,, পকেটে দুহাত গজিয়ে স্টং হয়ে দাঁড়িয়ে, কাঁচের গ্লাস বেথ করে দৃষ্টি তার দূর আকাশে শূন্যে ভাস্যমান,,, তখনি হঠাৎ রিংটোনে শব্দে ভাবনার জগৎ থেকে বের হয়ে আশে রিদ,,, হালকা বিরক্তি নিয়ে পাশে থাকা টেবিলে ওপর ফোনটির দিকে তাকায় রিদ,,, ফোনে স্ক্রীনে আশিকের নাম দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে,,, পরে চোখে মুখে কোনো রকম ভনিতা ছাড়ায় ফোনটি হাতে তুলে নেই রিদ,,, কারণ রিদ জানে আশিক কি জন্য ফোন করেছে তাঁকে,,, তাই কল রিসিভ করে কানে ধরতেই আশিক বিচিলিত কন্ঠে বলে উঠে,,,,,

.
—” বস ম্যাম তো ভালোবাসা খুঁজছে সারা বাড়িতে,,, সবাইকে অস্থির করে তুলেছে ভালোবাসা এনে দিতে,,, এখন কি করবো বস,,,

.
আশিক এমন কথায় মূহুর্তেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায় রিদের,,, তাঁকে এভাবে ভালোবাসা দহনে পুড়িয়ে শান্তি মতো থাকতেও দিচ্ছে না মেয়েটা,,, তাঁকে আরও পুড়ানো জন্য আবার ভালোবাসাও চাই,,, না কাছে যেতে দিচ্ছে,, না কাছে টেনে নিচ্ছে,,, সবসময় পাগলামোতে মেতে থাকে নিজের মতো,,, অন্যের ফিলিংস এর কোনো ধারণায় নেই মেয়েটার,,, না তার ফিলিংস সম্পর্কে জানতে হবে, বুঝতে হবে তার মনে কথা গুলো এভাবে মেয়েটাকে ছাড় দেওয়া যাবে না,,,, এত সহজে সবটা যেতে দিবে না রিদ, কথা গুলো ভেবেই রিদ কপাট রাগ দেখিয়ে খানিকটা উচ্চ স্বরে আশিককে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,,,,

.

—” তোর ম্যামকে ভালোবাসার ডোস শরবত গলিয়ে খাওয়াবো আমি রাতে,,, আসতে দে আমায়,,, তাই বাকিটা সময় নজরে রাখিস তোর ম্যামকে,,,

.
কথা গুলো বলেই কল কেটে দেয় রিদ আশিকের বাকি কথা গুলো শুনার প্রয়োজন বোধ মনে করেনি সে,,পরে হাতে থাকা ফোনটা সজোরে টেবিলে ওপর রেখে, আবারও আগের নেয় দাড়িয়ে পরে মায়ার চিন্তায় মন্ত হয় সে,,,

.

মায়া জ্ঞান ফেরা পযন্ত সবিই ঠিক ছিল,,, কিন্তুু বিপত্তি ঘটে যখন মায়ার জ্ঞান ফেরা পরে রিদকে দেখে ভয়ে অস্থির হয়ে ওঠাটা,,, মায়ার সবার সাথে নরমাল থাকলেও রিদকে দেখে ভয়ে সিটিয়ে যায়,,, মূহুর্তের চোখে মুখে আতংক ছেয়ে যায়,,, নিজেকে রিদ থেকে বাঁচানো জন্য অন্যকে আঁকড়ে ধরাটা রিদের জন্য ছিল একরাশ ভারাক্রান্ত কষ্ট,,, রিদ যতবার মায়ার কাছে যেতে চেয়েছে ঠিক ততবার মায়ার জন্য থামতে হয়েছে তাঁকে,,, ভিতরটা শুধু খনে খনে পুড়তো বরাবরই মতো,,,, প্রতিবারই রিদ শুধু অসহায় মতো তাকিয়ে থাকতো মায়ার দিকে,,, কি করবে সে, নিজের জন্য তো আর মায়ার জীবন রিক্স নিতে পারবে না,,, কারণ ডক্টরদের ভাষ্য মতে মায়ার মাথার আঘাতটা গভীর হওয়া এবং মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ রক্ত জমাট বেঁধে থাকাই আর সেটা পরিস্কার করতে না পারাই, মায়ার মাথায় এটি অনেক সময় সরাসরি ইফেক্ট করবে,,, আর এর জন্য মায়া অনেকটাই পাগলামো করবে অনেক কিছুতেই,,, আবার অনেক বেশি রিয়েক্টও করবে এতে করে সবাইকে নিরবে সয্য করতে হবে,,, যতদিন না মায়ার পুরপুরি সুস্থ হয়ে ওঠছে,,, কিন্তুু ততদিন সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে মায়াকে নিয়ে,,,
আর যদি মায়াকে কোনো কিছুর জন্য জোর বা বাধ্য করা হয় তাহলে এতে করে মায়ার মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ সরাসরি ইফেক্ট করবে এবং মায়া সেই মস্তিষ্কের চাপ নিতে পারবে না,,, পরে মায়া বড় কোনো ক্ষতিও হতে পারে যেমন অকালে মৃত্যু হতে পারে,,,, তাই রিদ মায়ার থেকে দূরে দূরে থাকছে,,, পরিবারের সবাই মায়ার জন্য রিদের করা পাগলামো দেখলেও মায়ার জন্য চুপ থাকতে হচ্ছে তাদের,,, কিন্তুু রিদ সবটা আর মেনে নিতে পারছে না, মায়াকে হসপিটালের বিশ দিনের মতো রাখা হয়েছিল, আর আজ পনেরো দিন হয়েছে বাড়িতে এসেছে মায়া,, চোখে মুখে সেই আগে মতোই চঞ্চলতা ফোটে উঠেছে,, আবার সেই আগের মতোই সবকিছুতে চোখে পড়লেও রিদকে চোখে পড়ে না মায়ার,,,

.

কিন্তুু না আর মায়াকে ছাড় দিবে না রিদ,, কোনো কিছুতেই না,, অনেক হয়েছে এমন লুকোচুরি খেলা, এই খেলা খেলতে খেলতে সে নিজেই কান্ত হয়ে পড়েছে,,,
এবার মায়াকে তার সাথে সামিল করবে সবকিছুতেই,,, সে কেন একা পুড়বে এই আগুনে মায়াকেও পুড়তে হবে,, মায়াকেও ছাই হতে হবে ঠিক তাঁর মতো করে,, সে যতটা চটপট করছে বউকে কাছে টেনে নিতে না পেরে, মায়াকেও ঠিক ততটাই চটপট করতে হবে তাঁকে কাছে পাওয়া জন্য,, একসাথে মেতে ওঠতে হবে দহনে আগুনে,,, দুজনেই একে অপরকে সাথে পিষে হবে,,,
কথা গুলো একমনে দাঁড়িয়ে ভাবছিল রিদ, পরে কিছু একটা ভাবে বেড়িয়ে যায় অফিস থেকে,,,,,
.

.

.

🍁
অন্বেষণ নামক যুদ্ধে মেতে উঠেছি আমি,,, খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে এই যুদ্ধ পরিচালনা করছি আমি,,, আমার দাবি পুরণ না হওয়া পযন্ত কাউকে ছাড় দিব না আমি,, তাই শত কষ্টে করেও আমি আমার যুদ্ধ পরিচালনা করেই যাচ্ছি,,, আর আমার যুদ্ধের প্রধান কারণ হলো ” ভালোবাসা,,

.

ডলি আপুর ভাষ্য মতে সবাই নাকি আমাকে ভালোবাসে না,,, আমি নাকি এমনি এমনি এই বাড়িতে পরে আছি,,, কেউ আমাকে চোখেও দেখতে পারে না,,,
আর আমার গুন্ডা স্বামীও নাকি আমাকে সয্য করতে পারে না,,, তিনি নাকি শুধু ডলি আপুকে ভালোবাসে,,,

এই বাড়ির সবার কাছে ভালোবাসা ও ভালোবাসার মানুষ দুটোই আছে,,,, শুধু নাকি আমার কাছেই নেই,,, আমাকে নাকি কেউ ভালোবাসে না,,, তাই আমার ভালোবাসা ও ভালোবাসার মানুষ দুটোই চাই-ই চাই,,, নয়তো কাউকে ছাড় দিব না আমি,,, তাই সেই সকাল থেকে সারা বাড়ি ঘুরঘুর করছি আমি ভালোবাসা নামক জিনিসটি পাওয়ার আশা,,, কিন্তুু বরাবরই মতো আমাকে শূন্য হতে হচ্ছে,,, তারপরও আশা ছাড়ছিনা আমি,,, সবার পিছন পিছন ভালোবাসা নামক জিনিসটি জন্য ঘুরে বেড়ালেও, এতে করে ভাবান্তর হচ্ছে না কারও,,, দাদা-দাদি, ফুপি-ফুপা, নিহা আপুর, ফিহা, বাড়ির সব সার্ভেন্ডরা কারও কাছে ভালোবাসা পাচ্ছি না আমি,,, তাই বাধ্য হয়ে অন্বেষন করতে হয়েছে আমাকে,,, যতক্ষণ না আমি ভালোবাসা পাবো, ততক্ষণ পযন্ত কিছুই খাব না আমি,,, আমার এমন কথায় বাড়ির সবাই শুধু অসহায় ফেস করে তাকিয়ে ছিল আমার দিকে,,, কিন্তুু এতে করে আমার কোনো রকম প্রতিক্রয়া ছিল না,, কারণ সবার কাছে যদি ভালোবাসা থাকে তো আমার কাছে কেন নেই,,, তাই নিজের যুদ্ধ জারি রেখে ড্রয়িংরুমে সোফায় ঘাপটি মেরে গাল ফুলিয়ে ঠোঁট উলটিয়ে বসে আছি আমি,, আর গোল গোল চোখ সবাইকে পযবেক্ষন করছি,,,,

চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here