দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা) #লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৪৭ 🍂

0
914

#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লিখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৪৭
🍂
” ভালোবাসা” ভালোবাসা শব্দটি সত্যি বড্ড অদ্ভুত তাই না,, যে পাই যে সর্ব সুখী, আর যে হারায় সে নিঃস্ব বাসি,,,পাওয়া না পাওয়ার অদ্ভুত খেলা চলতেই থাকে মানুষের জীবনে,, কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার কি জানেন, যে ভালোবাসা পায় সে আরও বেশি চাই,,, মনে হয় এত এত ভালোবাসা ও কম,,, আর যদি ভালোবাসার মানুষ গুলোর মাঝে নিজের বিচরণ খুঁজে পাই তো কোনো কথা নেই,,,,

তখন আমাদের চাহিদা কৌটাটা অনেকটাই বেড়ে যায়,, সাথে এড হয় অদ্ভুত সব আবদার,,, সেই আবদার গুলো যদি ভালোবাসার মানুষ গুলো হাসি মুখে পুরণ করে তাহলে তো কোনো কথা নেই,, মনে মধ্যে এক শান্তিময় হওয়া বয়ে যায়,,, যা এই মুহূর্তে আমার মনে বয়ছে,,,,বাড়ির সবার কাছে এক মুঠো ভালোবাসার জন্য হাত বাড়াতেই,,, সবাই ভালবাসার ঝুলি নিয়ে হাজির হয় আমার কাছে, এতো এতো ভালোবাসা দেখে সত্যিই আমি হতবাক,,, বাড়ির সবাই এটা সেটা দিয়েই যাচ্ছে ভালোবাসা নামক বস্তুটি জন্য,,,, আর আমি দু’হাতে সবার ভালোবাসা কুড়াচ্ছি,,,
ছোট-বড় সবার ভালোবাসা কুড়ালেও শূন্য খাতায় থেকে যায় উনার (রিদ) ভালোবাসা বরাবরই মতোই,,,,
কারণ আমার স্বামী সব ভালোবাসা শুধু ডলি আপু জন্য বরাদ্দ তাই আমি আমার স্বামীর ভালোবাসার কৌটাটা শূন্যই ছেড়ে দিলাম,,,, থাক না কিছু জিনিস শূন্য খাতায়,,

.
ড্রয়িংরুমে সোফায় দাদীর কোলে মাথা রেখে এমন সব চিন্তায় ভাবনায় বিভোর আমি, তখনই কেউ পাশ থেকে আমাকে টেনে তুলে বসায় আমায়,, আমি চমকে বিরক্তি নিয়ে পাশে তাকাতেই চোখে পড়ল ফিহাকে,,,,
ফিহাকে দেখো আমার কোন ভাবান্তর হলো না, আমি আগে ন্যায় আবারও দাদীর কোলে শুয়ে পড়লাম, তখনই ফিহা আবারও আমাকে টেনে তুলতে তুলতে বলে উঠে,,,,

.
—” তোর সাথে আমার ইম্পর্টেন্ট কিছু কথা আছে মায়া উঠে বস না প্লিজ,,,,

.

ফিহার কথায় আমি বিরক্তি নিয়ে বসতেই দাদি চলে যাই উনার কাজে আমাদের রেখে,,, দাদীর চলে যাওয়াতে ফিহা সুস্হির নিশ্বাস ফেলে, যেন দাদী যাওয়াতে ওহ বেঁচে গেল,,, ফিহার এমন হাব ভাব দেখে কপাল কুচকে এলো আমার, আমাকে এমন করে ফিহার দিকে তাকাতে দেখে নড়েচড়ে বসে আমতা আমতা করে বলে ওঠে,,,

.
—” আঙ্কেল আন্টি কেমন আছে মায়া,, না মানে তোকে বাসায় আনার পর তো ওনারা চলে গেছে তাই আরকি, জানতে চাইলাম ভালো আছে কিনা,,,

.
—” ভালো আছে,, (স্বাভাবিক ভাবেই)

—” সবাই ভালো আছে…? তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে

—” হুম সবাই আছে,,, (স্বাভাবিক ভাবেই)

—-” ওহ আচ্ছা,,, আঙ্কেল কি করে রে,,,

—” ব্যাংকে ম্যানাজার,,

—” আর আরিফ, মানে আরিফ ভাইয়া কি করে রে…?

—” ভাইয়া আপাতত কিছু করে না,, তবে চট্টগ্রামে নিজের বিজনেস দাড় করাচ্ছে,, সেখানেই থাকে ভাইয়া,,,

আমার কথায় ফিহা ঝটপট তাড়া দিয়ে বলে উঠে,,,,

—” কেন চট্টগ্রাম কেন বিজনেস করতে চাচ্ছেন উনি,, ঢাকার উনাকে আসতে বল, এখানে কোথাও করতে বল,, তাছাড়া রিদ ভাইয়া বা আয়ন ভাইয়া উনাকে হেল্প করতে পারবে তাই না,,, তুই বল আরিফ ভাইয়াকে আমাদের সাথে এসে থাকতে,,,

ফিহা কথায় আমি এক পলক তাকিয়ে থেকে বলে উঠি,,,

—” আরিফ ভাইয়া খুব আত্মনির্ভরশীল মানুষ,, ভাইয়া কখনোই মানবে না ঢাকায় এসে উনাদের থেকে হেল্প নিতে,,, ভাইয়া নিজস্বতা সবকিছু করতে চাই,,, তাই তো ভাইয়া চট্টগ্রাম থেকেই নিজের মতো করে সবটা সামলাচ্ছেন,,,
.

ফিহা আপন মনে কিছু একটা বিরবির করতে লাগলো,, ফিহাকে বিরবির করতে দেখে কপাল কুঁচকে এলো আমার,,, ফিহার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাতেই আবারও প্রশ্ন করে উঠে,,,

.
—” আচ্ছা আরিফ ভাইয়া কি আসবেনা নিহা আপুর বিয়েতে,,, না মানে দুদিন বাদেই তো আপুর বিয়ে,, তাই জানতে চাওয়া আরকি,,,

—” সঠিক বলতে পারিনা তবে আম্মু আব্বু আসতে পারে,, ভাইয়া চট্টগ্রাম থাকে সুবাদে নাও আসতে পারে,,,

আমার এমন কথা তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে ফিহা,,, ওকে এভাবে জ্বলতে দেখে বোকা বনে গেলাম আমি, কি এমন বললাম যে এতটা রেগে গেল মূহুর্তের,,, ফিহা সেই রাগে রেশ ধরে, আমার সাথে তেজ দেখিয়ে বলে উঠে,,,,

—” আসবে না মানে কি,,,? এত সোজা না আসাটা,,, তুই নাম্বার দে এখন আমাকে,,,

কথাগুলো বলেই আমার অপেক্ষা না করে নিজের মতো করে আমার ফোন থেকে ভাইয়ের নাম্বার নিয়ে নেয় ফিহা,,,, আর আমি মুহূর্তে বোকা বনে গেলাম ওকে দেখে, কি হচ্ছে বোঝার জন্য ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম করুন ভাবে,,, আমাকে এভাবে তাকাতে দেখে ফিহা ঠোঁট কামড়িয়ে হেসে বলে উঠে,,,

—” তুই কিছু মনে করিস না মায়া,, আসলে সবাই আসবে আরিফ ভাইয়া আসবে না তাই নাম্বারটা নেওয়া আরকি,,, আচ্ছা এখন আমি যায় আমার অনেক কাজ আছে তোর সাথে আর বসতে পারবো না রের,,,

বলেই আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে হাসিমুখে ফোন দেখতে দেখতে দু কদম এগিয়ে যাই ফিহা,, পরে আবারো পিছন ফিরে হাসি মুখে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে,,,,

—” তুই কিন্তুু কিছু মনে করিস না আবার মায়া,,

বলেই নিজের রুমে প্রস্থান করে ফিহা,, আর আমি ওর যাওয়ার দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলাম,, কি বলে গেলো মেয়েটা কিছুই বুঝতে পারছি না আমি,,, কিছু মনে না করার জন্য এটা বলে গেল ,,, নাকি কিছু মনে করার জন্য ইশারা করে গেল,,,

.

.

🍁
আজ নিহা আপুর গায়ে হলুদ,,, আমার অসুস্থতার কারণে বিয়েটা পিছাতে হয়েছিল সবাইকে,,, এখন যখন সবকিছু ঠিকঠাক আছে, তাই বিয়েতে আর বিলম্ব করতে চাচ্ছেন না ফয়সাল ভাইয়া পরিবার,,, তাই সবকিছু সেই সূত্র অনুযায়ী চলছে,,,

আমি হসপিটাল থেকে বাসায় এসেছি আজ বিশ দিন হয়েছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও উনার সাথে আমার তেমন একটা ঠিক নেই কোনো কিছুতেই,,, উনাকে দেখে যতটা ভয় কাজ করে তার চেয়ে বেশি অস্থিরতা কাজ করে মনের মাঝে,,, পাওয়া না পাওয়ার অংকটা সাথে সাথে মাথা চেপে বসে,,, কারণ ডলি আপু সবসময় আমায় সেটা মনে করিয়ে দেয় সবকিছুতে,, যে উনি ডলি আপু ভালোবাসে আর বিয়েও করতে চাই,,, তাই আমি বাধ্য হয়ে উনার থেকে দূরে দূরে থাকছি,,,

নিহা আপুর হলুদের অনুষ্ঠানে দাদাজান এই বাড়িতেই করছেন,,,,তাই সবাই যার যার মতো করে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে কাজে,,, অতশত কাজের মধ্যে আমার খেয়াল রাখছে সবাই,,, আমার পরিবার থেকে আব্বু আম্মু আসলে ও ভাইয়া এখনো এসে পৌঁছায়নি,,, হয়তো বা রাতে এসে পৌঁছাবে এখানে,,, নিহা আপুকে পার্লারের লোক দিয়ে সাজানো হচ্ছে,,, সাথে বাড়ি সুদ্ধ সব আত্মীয়-স্বজন যে যার মতো করে সাজগোজ ব্যস্ত আর আমি সবাইকে পর্যবেক্ষণ করতে ব্যস্ত,,,

.
আমি গোল গোল চোখে সবাইকে পর্যবেক্ষণ করতে করতে পাশ ফিরতেই তখনই কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে পরতে পরতে বেঁচে গেলাম,,, তাকিয়ে দেখি দাদী আমার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে আছে হাতে একটা শপিং পেকেট নিয়ে,,,,

আমি কিছু বলার আগেই দাদী রেগে আমাকে বলে উঠেন,,, তুই এখানে কি করছিস মায়া,,, রেডি না হয়ে এখানে ঘুরে বেড়াচ্ছিস কেন, চল আমার সাথে,,, বলেই আমার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যেতে লাগলো উপরের রুমে দিকে,, আর আমি গাল ফুলিয়ে অসহায়ের মতো ফেস করে দাদীর পিছন পিছন চলতে লাগলাম,,,,

.
কাঁচা হলুদ বিশিষ্ট হলুদ শাড়ি পরানো হয়েছে আমায়,, শাড়িটি বাঙালি ভাবে মানে,, ডালা ভাবে শাড়ি পরিয়ে দিয়েছেন দাদী আমাকে,,, মুখে হালকা মেকাপ, চুলগুলো খোপা করা তাতে গঁজানো সাদা গোলাপ একপাশে,,, কানে বড় বড় ঝুমকো রয়েছে,,, গলা খালি,,, কিন্তুু দুহাত কাঁচা হলুদ চুরিয়ে ভরপুর,,, দাদী আমাকে এক পলক দেখে জরিয়ে ধরে কপালে একটা চুমু দিয়ে কানে পাশে একটা নজর টিকা লাগিয়ে দেন,,, পরে আমাকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন নিহা আপুর হলুদ স্টেজের দিকে,,,

(গল্পের #দেওয়ানা পাগলামোর ভালোবাসা শুরু হবে মায়ার জন্য,,, রিদ বাসিদের অভিনন্দন জানান সেই পাগলামোতে,, আসবেন কিন্তুু রিদ আর মায়ার ভালোবাসার স্বাগতম জানাতে,,, পাটটি আরও বড় করতে চেয়েছিলাম কিন্তুু কালকে পাটটি সারপ্রাইজ রাখতে এখানে শেষ করতে হয়েছে,,,)

.
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here