#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৭৬
.
🍂
—” কিহ আমাকে তোমার সপ্ন মনে হচ্ছে, আর আমাকে নিয়ে সপ্নের এমন কামড়াকামড়িই করে থাকো সবসময় তুমি…..
.
রিদের এমন কথায় মায়া নিজের মাথা নাড়িয়ে সুমতি জানায় যার অর্থ হ্যা সে সবসময় রিদকে নিয়ে সপ্নের মধ্যে এমন কামড়াকামড়ি করে থাকে…….
.
মায়ার মাথা নাড়িয়ে সুমতি জানাতে দেখে মূহুর্তে রিদ বোকা বনে যায় সে তো জানে বউ তার বড্ড বোকা তার দ্বারা এমন কিছু স্বপ্ন দেখা অসাধ্যকর কিছু কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে বউ তার থেকেও একধাপ বেশি এডভান্স এসব বিষয়ে, রিদ খানিকটা সন্দেহ দৃষ্টিতে মায়ার দিকে তাকিয়ে থেকে কপাল কুচকে বলে উঠে….
.
—” মাথা ঠিক আছে তোমার, কি বলছো জানো তুমি……
.
রিদের এমন কথায় মায়া আবারও নিজের মাথা নাড়িয়ে আস্তে করে বলে….
.
—” হুমমম
.
—” দারুণ, আর কি কি করো স্বপ্নে শুনি একটু আমার তো জানা দরকার আমার বউটা কত দূর পযন্ত এগিয়েছে এসব বিষয়ে, পরে নাহয় আমি সেই অনুযায়ী আগাবো কি বলো…
.
রিদের এমন কথায় মায়া রিদের দিকে তাকিয়ে থেকে ওর কোলে ওপর বসে থাকায় অবস্থায় আস্তে করে নিজের মাথাটা রিদের বুকের মধ্যে রেখে রিদকে নিজের দুই হাতে শক্ত করে জরিয়ে ধরে চুপচাপ বসে থাকে মায়া, মায়াকে নিজের বুকের ওপর মাথা রাখতে দেখে রিদও বিনা বাক বয়ে সাথে সাথে বউকে আদুরে দু’হাতে জরিয়ে নেই নিজের সাথে,,,,,,,
.
এইভাবে কিছুক্ষণ বসে থাকার পর রিদের বুকের ওপর ঐ অবস্থায় ঘুমিয়ে পরে মায়া, রিদ মায়াকে নিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকার পর খানিক বাদেই মায়াকে হালকা হাতে নাড়িয়ে নাড়িয়ে আস্তে করে আদুরে সুরের ডেকে বলে উঠে…….
.
—” বউ বউ…..
.
রিদ মায়াকে নড়াচড়া করতে না দেখে হালকা বাকা হয়ে মায়ার দিকে তাকাতেই চোখে পড়ল মায়ার ঘুমন্ত চেহেরাটা, রিদ মায়াকে নিজের সাথে লেপ্টে ঘুমাতে দেখে সেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে নিরবে, তার এই বউকেই তার কাছে আসতে বাধ্য করতে কম কাঠহুর পুড়াতে হয়নি রিদের অবশেষে বউ তার কাছে আসতে দ্বিধা বোধ করে না ভয়ও পাই না আর, সবকিছু ভেবে রিদ চোখ তুলে দেয়ালের ঘুরিটা দিকে তাকায় এখনো পাঁচটা দশ বাজতে দেখে রিদ আবারও মায়াকে নিয়ে ঐ অবস্থায় শুয়ে পরে বিছানায় আরও একটু ঘুমানোর জন্য,,,
.
সকাল আটটা বারো বা তেরো হবে এখনো রিদও মায়া দুজনেই ঘুমে তলিয়ে আছে গভীর ভাবে দীর্ঘদিন পরে যেন দুজনেই এমন একটা প্রশান্তির ঘুম ঘুমচ্ছে একে অপরের বুকের মধ্যে রেখে,,,,,
.
মায়াকে নিজের সাথে জরিয়ে নিয়ে রিদ শান্তিতে ঘুমিয়ে আছে এতটা সকালেও, আজ আর রিদের সকালে উঠার চিন্তা ভাবনাটা আপাতত রুটিন এর মধ্যে নেই,, কিন্তু মায়া ঠিকই রুটিন মাফিক আবারও ঘুম থেকে কুড়মুড়িয়ে উঠে বসে রিদের পেটের ওপর হামি তুলতে তুলতে নিচে রিদের দিকে তাকায়, ঘুম ঘুম চোখে রিদের ঘুমন্ত মায়াবী চেহেরাটা দিকে তাকিয়ে থাকার পর হঠাৎ চমকে উঠে দ্রুততা নিজের একটা হাত রাখে রিদের কাটা ঠোঁটের ওপর, পরে করুণ চোখে রিদের কাটা ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে থেকে মূহুর্তেই মন খারাপ হয়ে যায় মায়া, কি করেছে রিদের সাথে সেটা বুঝতে পেরে আদুরে হাতে আস্তে আস্তে বুলিয়ে দিতে থাকে রিদের ঠোঁটের ওপর,,,,
.
অপরাধী দৃষ্টিতে রিদের ঘুমন্ত চেহেরাটা দিকে তাকিয়ে থেকে মূহুর্তেই কপাল কুচকে এলো মায়ার, কপাল কুচকে রিদকে ভালো করে দেখে নিয়ে হঠাৎই বিশাল দুঃখ আবির্ভাব হয় মায়ার মধ্যে, পরে নিজের গাল ফুলিয়ে ঠোঁট উলটিয়ে দুঃখ দুঃখ ভাব নিয়ে দ্রুত রিদের পেটের ওপর থেকে নেমে আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে হটিয়ে হটিয়ে দেখতে লাগে মনোযোগ দিয়ে,,,,
.
নিজেকে ভালো করে দেখে নিয়ে আবারও দৌড়ে রিদের সামনে ফ্লোরের বসে পরে একটু ঝুকে রিদের চেহেরাটা ভালো করে দেখে নিতেই আবারও একরাশ কষ্টরা ভর করলো মায়াকে ভিষণ ভাবে, আর সেই কষ্টে শোকাহত হয়ে নিজের ঠোঁট উলটিয়ে কান্না চেপে রাখার চেষ্টা করতে থাকে নিজের মধ্যে,,, নিজের এমন সাধ সিঁদ চেষ্টায় মায়া সফলতা অর্জন করতে না পেরে উচ্চ স্বরে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কান্না করে দেয় রিদের দিকে ঝুকে থাকা অবস্থায়…….
.
মায়ার এমন ভ্যা ভ্যা করে কান্নায় রিদ ঘুম থেকে ধুরফুরিয়ে উঠে বসে পরে ঘাড় ঘুরিয়ে পাশ ফিরে তাকায় মায়ার দিকে পর অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে…….
.
—” আবার কি হয়েছে তোমার, কান্না করছো কেন তুমি….
.
রিদ এমন কথায় মায়া হিচকি তুলে কান্না করতে করতে কোনো রকম বললো…..
.
—” আপনি এত সুন্দর কেন, আপনাকে শুধু সুন্দর দেখাচ্ছে আমাকে কেন সুন্দর দেখেচ্ছে না, আপনার মতো এতটা সুন্দর নয় কেন আমি, আপনাকে আমার কাছে এতোটা আদুর আদুর লাগে কেন,,,,,
.
মায়ার এমন কথায় মূহুর্তেই রিদ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়, মায়ার এমন কষ্ট সিদ্ধ কান্নায় দেখে রিদ কি বলবে সেটাই বুঝতে পারছে না তার সৌন্দর্য নিয়েও যে বিপদে পরতে হবে সেটাও রিদের চিন্তা ভাবনায় বাহিরের ছিল, তাই বউকে ভুলানোর চেষ্টা করতে করতে শান্তনা সুরে বলে উঠে ……
.
—” আমি সুন্দর তোমাকে কে বললো, তুমি তো বেস্ট সুন্দরী আমার দেখা, যাকে দেখে আমি প্রথম বারই অস্থির হয়ে হয়েছিলাম কিন্তু তুমি হয়ওনি তাহলে বলো কে বেশি সুন্দর,,,
.
—” মানবো আমি আপনি আমাকে ভুলবাল বুঝাচ্ছে, আমি একদমই সুন্দরী না আপনার মতো,,, (নাকের পানি মুছতে মুছতে বললো)
.
মায়ার এমন কান্ডে রিদ কিছু একটা ভেবে নিয়ে হঠাৎ করে মায়াকে টেনে নিচে থেকে তুলে নিজের কোলের ওপর বসিয়ে কমড় জরিয়ে ধরে মায়ার ঘাড়ের ওপর নিজের থুঁতি রেখে মাতাল করা কন্ঠে বললো…..
.
—” তাই আমি তোমাকে ভুলবাল বুঝাচ্ছি…..
.
—” কি করে……
.
—” মিথ্যা বলে বলে বুঝাচ্ছেন,
.
—” বউ মিথ্যাটা নেই আমার মধ্যে…. (ঘাড় নাক ডুবিয়ে আস্তে করে)
.
—” নেই মানে আছে আপনার মধ্যে শত% মিথ্যা, এই যে দেখেন আপনি,,,,
.
কথাটা বলেই মায়া নিজের হাত রিদের সামনে বাড়িয়ে দিয়ে পরে টেনে রিদের হাতও নিজের হাতের পাশাপাশি রাখে, মায়ার এমন কাজে রিদ ঘাড় থেকে মাথা তুলে ভ্রুঁ কুঁচকে তাকায় সেদিকে যে মায়া কি করতে চাইছে বুঝার জন্য, মায়া রিদকে দু’হাতে দেখাতে দেখাতে বলে উঠে……
.
—” দেখেন আপনি কতটা সুন্দর আমার থেকে, আমার হাত হলুদ হলুদ সুন্দর আর আপনার হাতটা একদম সাদা সাদা সুন্দর, তারপর আপনার চোখ গুলো ব্রাউন কালার এর আর আমারটা কিছু না, ঠোঁট গুলো কি সুন্দর লাল লাল আর আমারটা কিছু না, আপনার চুল গুলোও অনেক সুন্দর আর আমারটা কিছু না, আপনি কত লম্বা আর সাথে বিশাল বড় ও শক্ত বডি আপনার, আর আমি ছোট ও নরম নরম শরীর, আপনার মধ্যে সুন্দরের ছড়াছড়ি আর আমার মধ্যে ছিটা ফোটাও নেই, এটা তো অন্নায় আমি এটা মানবো না এ্যাঁ এ্যাঁ…..
.
কথা গুলো বলতে বলতেই আবারও মায়া হাত পা ছড়িয়ে কান্না জোড়ে বসে রিদের কোলের ওপর, রিদ একহাতে মায়ার কমড় জরিয়ে ধরে অন্য হাতে মায়ার চুলের মুঠো ধরে টেনে নিজের কপাল সাথে মায়ার কপাল টেঁকিয়ে সুপ্ত কন্ঠে বলে উঠে…….
.
—” শিইইই, তুমি কিছু না কে বললো, তোমার গায়ের রংটা সবাই পাই না শতকে কয়েকজন পাই, সাদা সুন্দর সবাই হয় কিন্তু হলুদ সুন্দরটা সবাই হতে পারে না, তোমার এই বড় বড় ডাগর আঁখিতে আমি প্রথম ফিদা হয়েছিলাম,তোমার গোলাপি ঠোঁটের মিষ্টি হাসিতে আমি জীবনের প্রথমবার ভুল করেছিলাম কাজে, আর তোমার চুল উফফ কি বললো, তোমার দিগুণ কালো চুলে বার বার আমি নিজেকে হারাতে মন চাই, তোমার ভরপুর কিউটন্সে পাগল হয়ে যায় আমি, আর তুমি পাঁচ ফুট উচ্চতা হলেও আমার জন্য সেটা পারফেক্ট কারণ তুমি খুব সহজেই আমার হৃদয়ের স্পন্দন শুনতে পারবে, তোমার সবকিছুই আমার খুবই পছন্দের,,, মাঝে মাঝে মনে হয় আল্লাহ আমার পছন্দের দিকটা চিন্তা করে তোমাকে বানিয়েছে আমার জন্য……
.
রিদের কথা গুলো মায়া চুপচাপ নিজের চোখ বন্ধ করে শুনছিল সাথে অনুভব করছে, রিদের প্রতিটা কথা ছিল মন ছুঁয়ে যাওয়া টাইপ, রিদ মায়াকে চুপ থাকতে দেখে আবারও বলে উঠে…..
.
—” তুমি চাইলে আমার সব সৌন্দর্য তোমাকে দিয়ে দিতে পারি, যদি তুমি নিতে চাও তো…….
.
রিদের এমন কথায় মায়া চোখ খুলে তাকায় পরে নিজের মাথাটা নাড়িয়ে সুমতি জানায় সাথে আস্তে করে বলে উঠে…..
.
—” নিব তো কিন্তু কি করে…..
.
মায়াকে সুমতি দিতে দেখে রিদ ঠোঁট কামড়িয়ে দুষ্ট হেঁসে মায়াকে নিজের সাথে চেপে ধরে বললো……
.
—” তুমি হলুদ রঙ্গে আমি সাদা, আমাদের দুজনেই রংটা যদি একত্রি হয়ে একটা বেবি হয় তাহলে আরও বেশি সুন্দর হতে পারে এতে করে তুমি আমাকে বেশি বেশি জ্বালাতে পারবে বেবি দিয়ে বলতে পারবে যে আমার থেকে তোমার বেবি বেশি সুন্দর কি লাগবে তোমার বেবি….
.
—” সত্যি,, (খুশিতে গদগদ করতে করতে)
.
—” জ্বিই ম্যাডাম….
.
রিদের এমন কথায় মায়া খুশিতে আত্মহারা হয়ে বলে উঠে…..
.
—” তাহলে চলুন না বেবিটা নিয়ে আসি তাড়াতাড়ি হসপিটাল থেকে,,,
.
মায়ার কথায় রিদ হেসে উঠে বলে…..
.
—” হসপিটাল থেকে কেন নিয়ে আসতে যাবো আমার কাছে আছে তো তোমার সুন্দর বেবি,,,,
চলবে…………