দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা) #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৬৮

0
867

#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৬৮

রিদ কপাল কুচকে ডলিও তার মা-বাবা দিকে তাকিয়ে থেকে লাফ দিয়ে চেয়ার থেকে উঠে ওদের সামনে টেবিলের ওপর বসে পরে দুই পা ঝুলিয়ে,, পরে নিজের হাতের বন্দুকটা দিয়ে কপাল চুকলাতে চুকলাতে আসিফের দিকে তাকিয়ে থেকে কপাল কুচকে বলে উঠে…..

.

—-” আসিফ তোর ডলি ম্যাডামের জন্য কি খাতির দাড়ি করা যায় বলতো,,, ভালো কিছু বলবি কেমন একদমই ইউনিক স্টাইলে আসলে তোর ডলি ম্যাডামের নরমাল কিছুই পছন্দ না ওহ আবার খুবই এক্সপেন্সিভ তো,, তাই তোর ডলি ম্যাডার বিষয়টা মাথায় রেখে কিছু বলতো শুনি…….

.
রিদ এমন কথা শুনে আসিফ ডলির দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ ঘুরিয়ে রিদের দিকে তাকায়, পরে খানিকটা ইতস্তত বোধ করে থমথমে গলায় রিদকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…..

.
—” কিন্তুু ভাই উনি তো মেয়ে মানুষ, সাথে আপনার মামা-মামি আর মামাতো বোনও হয়, তাহলে ওদেরকে কিভাবে কি করবো আমরা….

.
আসিফের কথায় রিদ ঘাড় ঘুরিয়ে ভ্রুঁ কুঁচকে তাকায় আসিফের দিকে পরে মেজাজ দেখিয়ে উচ্চ স্বরে বলে উঠে…….

.
—” তো আমি কি করবো,, ওরা আমার বিষয়টা মাথায় রাখিনি, শর্কখ করে ক্ষতি করতে এসেছে আমার তাই এবার ভুক্তভোগী হোক, ওরা সবাই আমার সম্পর্কে সবটা জেনেও এসে তাই আপাতত আমার কিছু করার নেই, এখন বেশি কথা না বলে বল কি করা যায় এদের সাথে…..

.
রিদের কথায় পিষ্টে আসিফ কোনো কথা বলবে তার আগেই সামনে থেকে ডলির বাবা দ্রুত বলে উঠে….

.
—” রিদ তুই এমনটা করতে পারিস না আমাদের সাথে, আমি তোর মার ভাই হই, সম্পর্কে তোর মামা হই আমি, তাই তুই আমাদের সাথে খারাপ কিছু করতে পারিস না,,,,

.
ডলির বাবা কথা শুনে রিদ ভ্রুঁ কুচকে এলো ঘাড় ঘুরিয়ে সামনে দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে একটা পলক দেখে নিয়ে, টেবিলের ওপর বলটা হাতে ঘুরাতে ঘুরাতে বলটির দিকে তাকিয়ে থেকে চাপা সুরে বলে উঠে….

.
—-” তাই, ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল নট ব্যাড,

.
কথাটি বলেই রিদ খানিকটা থেমে সামনের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে…..

.
—” মায়া জিনিসটি দাদা-দাদি ছাড়া অন্য কারও প্রতি কখনোই কাজ করেনি আমার, তবে যখন থেকে রিত আমার জীবনে এসেছে অদ্ভুত ভাবে আমি আমার রিতের মায়ায় জড়িয়ে গেছি গভীর ভাবে না চাইতেও, এখন বউ ছাড়া কোনো কিছু ভালো লাগে না আমার, কোনো মেয়েকে নিজের সাথে জড়ানোটা কখনোই প্লানিং এ ছিল না আমার, তাই বিয়েটা আমি চাপের পরে করলেও ভালোবাসাটা আসে আমার গভীর ভাবেই বউয়ের জন্য,, এখন মনে হচ্ছে বউ ছাড়া দুনিয়া ধংশ করে দিব আমি তবুও বউ ছাড়তে পারবো না, বউয়ের সামান্য ব্যাথায় নিশ্বাসটা আটকে আসে আমার আর সেই বউকে মারতে চেয়েছিলেন আপনারা, ক্ষমা করা শব্দটি আমার ডিকশনারি কখনোই ছিল না তাই সম্পর্কের দোহাই দিয়ে হয়তো আমার সাথে কিছু করলে বাঁচা যেতো ছেড়ে দিতাম কিন্তু বউ মারতে চাওয়া বিষয়টি কোনো কালেই ছাড় দিব না আমি তাই সব সম্পর্ক বাদ, আমার বউ নাই তো কেউ নেই, আর আপনাদের এখন ছেড়ে দিলে নেক্সট টাইম আবার আমার বউকে মারতে চাইবেন, তাই এটা তো আর হতে দিতে পারবো না বউকে নিয়ে তো আর কোনো রকম রিক্স নিতে পারবো না আমি,,

.
কথা বলেই রিদ ঘাড় ঘুরিয়ে আসিফকে বলে উঠে…..

.
—” আসিফ যাতো তোকে যাহ করতে বলেছিলাম সেই কাজ গুলো কর গিয়ে তারাতাড়ি ওরা ওয়েট করছে তো,,,,

.
রিদের কথায় আসিফ দ্রুত গলায় বললো….

.
—” জ্বিই ভাই…

.
আসিফ কথাটা বলে যেতে যেতেই পাশ থেকে চিল্লায়ে উঠে ডলি, হাত পা বাঁধা অবস্থায় সর্বো শক্তি দিয়ে ছুটাতে ছুটতে রিদকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…..

.
—” রিদ প্লিজ তুমি আমাদের ছেড়ে দাও আমরা কেউ আর তোমার বউকে আর মারতে চাইবো না,, প্লিজ ভুল হয়ে গেছে আমাদের,,

.

ডলির এমন কথায় রিদ বাঁকা হেঁসে হাতের বলটাকে দেখতে দেখতে বলে উঠে….
.
—” ইন্টারেস্টিং, বিড়াল বলছে সে আর মাছ খাবে না, এটা কি আমরা মেনে নিতে পারি, তাই সরি হুমম,,,,

.
—” প্লিজ রিদ খারাপ কিছু করুনা, আমাদের ছেড়ে দাও, আমরা এই দেশ ছেড়েই চলে যাবো আর আসবো না এই দেশে কখনো,,,, (ডলির মা)

.
—” আপাতত কারও কথায় আমি রাখতে পারছি না কেমন, আমার যাহ করার আমি তাই করবো, আর আপ……

.
বাকি কথা গুলো বলার আগেই আসিফ রিদের সামনে এসে দাড়িয়ে পরে রিদের বলা কাজ গুলো করে, রিদ চোখ তুলে আসিফে দিকে তাকাতেই আরিফ নিজ গতিতে এগিয়ে এসে রিদের বসা টেবিলের পাশে কত গুলো পেপার রাখে পরে আসিফ পিছন ফিরে ইশারা করতেই একজন বডিগার্ড এসে শুধু ডলির পায়ে নিচে ফুটন্ত গরম পানি রেখে দেয় পরে সেই ফুটন্ত পানিতে সাথে সাথে ডলি পা ডুবিয়ে চেপে ধরে, চেপে ধরতেই ডলি সাথে সাথে চিৎকার করে ওঠে প্রাণপূণ, তারপর আবারও নিজের হাত পা ছুটাতে লাগে বাঁচার জন্য ডলিকে এমন করতে দেখে পাশ থেকে কেঁদে ওটে ডলি মা, উনি কিছু বলবে তার আগেই নিচে বসে থাকা বডিগার্ডটি গলগল করে পুরো এক বতুল এসিড ডেলে দেয় পায়ে, এসিডের তীব্র জ্বালাই পাগলের মতো চিৎকার করতে থাকে ডলি, ডলির এমন গলা ফাটা আর্তনাৎ চিৎকারে কেঁপে ওঠে গোডাউনটি,

.

রিদ শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ডলির দিকে পরে ঘাড় ঘুরিয়ে আসিফের দিকে তাকাতেই আসিফ আবারও সামনে দিকে ইশারা করতেই দুজন মেয়ে এসে ডলির পাশে দাঁড়িয়ে পরে মেয়ে গুলোকে দেখেই আসিফ বলে উঠে,,,,,

.
—” আপনাদের কাজ হলো ডলি ম্যাডামের বডি ক্রিমের সাথে এসিড মিক্সচ করে এই ম্যাডামে পুরো শরীর লাগিয়ে দিতে হবে ভালো করে, আসলে এই ম্যাডামের রুপের খুব জ্বালা তো তাই আর এই রুপ নিয়ে অংশ ছেলের জীবনও নষ্ট করেছে ফেলেছে তাই ভবিষ্যতে যাতে আর কারও সাথে এমনটা করতে না পারে সেই জন্য এই ব্যবস্হাটা আরকি,,,,,,

.

আসিফে এমন কথায় ডলি আবারও No No No বলে চিৎকার করতে থাকে কিন্তু ডলির এমন চিৎকার অপেক্ষা করে রিদ সেদিকে তাকিয়ে থেকে আসিফ কে ইশারা করে কিছু পেপার রাখেয় ডলির বাবার সামনে, ডলি বাবা মেয়ের দিক থেকে চোখ সরিয়ে সামনে রাখা পেপার তাকায় পরে খানিকটা ভয় নিয়ে কাঁপা হাতে গলায় বলে উঠে…..

.

—” এই গুলা কিসের পেপার…?

.

—” good question, এটা আপনাদের মুক্তি পূণ্য বলতে পারেন, সাইন করে দেশ ছেড়ে চলে যাবে, কিভাবে যাবেন সবটা আমি দেখবো, আর পেপারে কি আছে সেটা আমি পরে বলবো, এখন পড়া যাবে যদি পড়তে যান তাহলে এখান থেকে বেঁচে ফেরা কারও হবে না, সাথে এখন যে অফারটি দিয়েছি সেটাও বাতিল বলে ঘোষণা হবে, তাই কোনো রকম ভনিতা ছাড়াই জাস্ট সাইন ইট……

.

রিদের এমন শান্ত গলায় ভয়ানক হুমকিটা বুঝতে পারছেন উনি, এখন যদি রিদের কথা মতো কাজ না করে তাহলে সত্যি সত্যি রিদ সবাইকে মেরে দিবে সাথে নিজের মেয়ের করুন অবস্থাটা তো উনি নিজ চোখেই দেখতে পেরেছেন তাই করুন চোখে সবাইকে এক পলক দেখে নিয়ে আস্তে করে পেপার গুলোতে সাইন করে দেয়,, সাইন করতেই আরিফ সেগুলো নিয়ে রিদের হাতে তুলে দেয়, রিদ পেপার গুলোকে এক পলক দেখে নিয়ে আপন মনে বলে ওঠে…..

.

—” ডলি তোর তো খুব পছন্দ টাকা, পাওয়ার, সৌন্দর্য, তাই না আর তার জন্য তো আমার বউকে মারতে চেয়েছিলি , কারণ এই সবকিছুই আমার কাছে আছে তাই, এখন তোর কাছে তো কিছুই নেই টাকা, পাওয়ার সৌন্দর্য সবটাই হারালি তুই,, তোর সৌন্দর্য আমি এসিড দিয়ে পুড়িয়ে নষ্ট করে দিয়েছি, সাথে তোর টাকা আর পাওয়ার তোর বাবা সব এখন এই পেপার গুলোতে সাইন করে অনাথ আশ্রমের দিয়ে দিয়েছে তোর জন্য কিছুই তো রাখেনি,এবার তোর কি হবে রেহ তোর বাবা খুব দয়ালু বুঝলি, তোর বাবা মাধ্যমে জীবনের প্রথম আমি কোনো ভালো কাজ করছি অনাথ আশ্রমের দান করে নয়তো এমন ভালো কাজ গুলো কখনোই আমার সাথে যায় নাহ এই সব গুলো দান দাদা-দাদি করে থাকতো, তুই তো জানিস আমিটা কেমন খুবই বাজে, আচ্ছা আমার এমন উন্নতিটা কি রিতের মাধমে এসেছে হুমমম…

চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here