#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৭১
🍂
মায়ার এমন কথায় রিদ উৎফুল্লতা হয়ে তেজি সুরে হাসি মুখে বলে ওঠে……
.
—” আহহ ম্যাডাম আপনি এবার শেষ…….
.
কথাটা বলেই রিদ মায়াকে চেপে ধরা অবস্থায় আস্তে করে কপালে চুমু খেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মায়াকে হুট করেই কোলে তুলে নিয়ে বাহিরে যাওয়ার জন্য কনফারেন্স রুমের দরজার দিকে পা বাড়ায় হাসি মুখে। রিদ মায়াকে কোলে তুলার সাথে সাথে মায়া আদুরে দু’হাতে রিদের গলা জরিয়ে ধরে বুকের ওপর মাথা রাখে আস্তে করে, রিদ মায়াকে গলা জরিয়ে ধরতে দেখে সামনের দিকে হাঁটতে হাঁটতে বাঁকা হেঁসে মায়াকে উদ্দেশ্য করে বলে….
.
—” ম্যাডাম বুঝিয়েন কিন্তু আপনাকে নিয়ে দেশান্তর হচ্ছি আমি…
.
রিদের এমন কথায় মায়া নিজের নাক দিয়ে রিদের বুকের মধ্যে ঘষে দেয় আলতু করে এতে করে রিদ মায়ার সুমিত পেয়ে খুশিতে উৎফুল্লতা হয়ে আহত সুরে বলে……
.
—” উফফ ম্যাডাম আজকে আপনি আমাকে মেরেই পেলবেন…
.
কথাটা শুনার সাথে সাথে মায়া খানিকটা লজ্জা মাখা চেহেরাটা আরও শক্ত করে চেপে ধরে রিদের বুকে মধ্যে, রিদ মায়াকে লজ্জা পেতে দেখে সামনের দিকে হাঁটতে হাঁটতে আহত সুরে হেঁসে মজা করে বলে উঠে…….
.
—” আহ ম্যাডাম লজ্জা পেয়ে আমাকে আর মারবেন না আপনি একটু ধৈর্য ধরুন, আমার সাথে সাথে আপনাকেও পুড়িয়ে মারবো আমি,, দহনের আগুনে একসাথই পুড়বো দুজন,,,,
.
কথা গুলো বলেই রিদ মায়াকে অফিসে সবার সামনে দিয়ে মায়াকে কোলে করে বাহিরের নিয়ে আসে এতে করে অফিসে উপস্থিত সবাই অবাক চোখে রিদের দিকে তাকিয়ে ছিল, কারণ তারা কখনোই রিদকে কোনো মেয়ে সাথে দেখা তো দূর কাজ ছাড়া পাশে দাঁড়িয়ে কথাও বলতে দেয় না, সেখানে রিদ মায়াকে কোলে তুলে নিয়ে হেঁসে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে এমনটা সবার কাছে অবিশ্বাস ব্যাপার রিদের এমন পরিবর্তন যেন কেউ বিশ্বাস করতে পারছে না তাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে রিদের যাওয়ার দিকে কারণ কেউ জানে না মায়া রিদের বউ সেটা,,, আর এমনটা না যে মায়া এই অফিসে আগে আসেনি এসেছিল আগেও একবার তখন মায়া সাথে রিদের এমন গভীরতা ভাব কেউ দেখেনি তাই সবার অবিশ্বাস চোখটা যেন কৌটা থেকে বের হওয়ার উপক্রম।
.
রিদ মায়াকে আস্তে করে গাড়ির সামনের সিটে বসিয়ে দিয়ে নিজের ড্রাইভিং সিটে বসে পরে মায়ার দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু একটা ভেবে ভ্রুঁ কুঁচকা আসে রিদের, কিছুক্ষণ মায়ার দিকে ভ্রুঁ কুচকে তাকিয়ে থেকে হুট করেই আবারও বসা অবস্থায় টেনে নিজের কোলের ওপর বসিয়ে দিয়ে একহাতে মায়াকে নিজের সাথে শক্ত করে আঁকলে রেখে অন্য হাতে গাড়ি ড্রাইভ করতে থাকে আপন মনে,,,,
.
মায়া রিদের এমন কাজে থমকে উঠে হালকা নড়াচড়া করতে যাবে তার আগেই আবারও রিদ শক্ত করে চেপে ধরে নিজের সাথে যাতে করে মায়া কোনো রকম নড়াচড়া করতে না পারে আর সাথে বলে উঠে,,
.
—” উঁহুম, কোনো রকম নড়াচড়া নয় এইভাবেই বসে থাকবে তুমি, আমার এইভাবেই ভালো লাগছে….
.
রিদের পাগলামোতে মন্ত হয়ে মায়াও নিজের দুহাত দিয়ে রিদকে ঝাপটে ধরে বুকে মাথা রেখে চুপচাপ ঘাপটি মেরে বসে থাকে রিদের কোলের ওপর, রিদ মায়াকে শান্ত ভাবে বসে থাকতে দেখে ড্রাইভ করতে করতে আস্তে করে মায়ার মাথার ওপর চুমু খায়,,,
.
বিবাহ জীবনের দীর্ঘ একটা বছর পর রিদ ও মায়া দুজনই আজ একসাথে মনের কথা গুলো প্রকাশ করেছে একে অপরের সঙ্গে, আর রিদ তার বাচ্চা বউকে কাছে পেয়েছে অনেক দিন পর সেটা কি সে এমনই এমনই যেতে দিবে নাকি প্রশ্নেই উঠে না, কিছুটা তো স্পেশাল বানাবে সে তাই মায়াকে নিয়ে আপাতত রিদ দেশান্তরি হতে চাই, তার বউকে আরও একান্ত ভাবে পেতে চাই এরপরে কি হবে সেটা পরে দেখে নিবে সে, এমন সব মনোভাব নিয়ে রিদ মায়াকে একহাতে আঁকলে রেখে ড্রাইব করতে থাকে…..
.
.
🍁
রেডি হয়ে তাড়াহুড়ো করে বেড় হচ্ছে ফিহা তার জন্য আগে থেকেই গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে সাহিল, দুজনেই মার্কেটে যাচ্ছে কিছু কাজের জন্য দুজনেই প্ল্যানিং করে নিহা ও ফয়সাল এর জন্য সারপ্রাইজ রেডি করতে মূলত বাহিরের যাওয়া তাদের উদ্দেশ্য তাই ফিহা ফোন করে আগেই বলে রেখেছিল সাহিলকে এখানে আসতে তাই সাহিল ফিহাকে নিতে এসে হাজির হয় খান বাড়ির গেটের সামনে, ফিহা সাহিলকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে একটা হাসি দিয়ে এগিয়ে যায় সামনের দিকে ,,
.
ফিহাকে হাসি মুখে এগিয়ে যেতে দেখে কেউ শুক্ক নজরে তাকিয়ে থাকে সেদিকে, বাগানের একপাশে চেয়ার বসে কাজ করছিল আরিফ, সাহিলের গাড়ির হনের শব্দের চোখ তুলে তাকায় সেদিকে ফিহাকে তাড়াহুড়ো করে বেড় হতে দেখে শুক্ক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সেদিকে, ফিহার বেশি বেশি ছেলেদের সাথে মেলামেশাটা পছন্দ না তার সেই জন্যই ফিহাকে নিজের জীবনের সাথে জড়াতে চাই না আরিফ, আরিফ ধারণা ফিহাও বাকি বিদেশি মেয়েদের মতো প্রেম ভালোবাসাই বিশ্বাসী নয়, শুধু মজা করে সবটা উড়িয়ে দেওয়াতে বিশ্বাস স্হাপন করে,,
.
কিন্তু আরিফের তো উড়ন্ত ভালোবাসা চাই না তার তো এমন একটা হাত চাই যেটা শক্ত ভাবে তাকে ও তার পরিবারকে আঁকলে রাখতে পারবে, আর সেই শক্ত হাতটা অন্তত ফিহা হতে পারবে না, কারণ ফিহার পরিবেশটা আর তার পরিবেশটা সাথে আকাশ সমান পার্থক তাই কিছু জিনিস দূরে থাকায় ভালো,,,
.
দূরে থাকার জন্য সে নিজেরও চলে যেত তার পরিবার সাথে অনেক আগেই কিন্তু কিছু বিজনেস এসোসিয়েট জন্য ঢাকা থাকতে হচ্ছে তাঁকে, তারপরও নিজের বোন এর শশুর বাড়িতে থাকার ইচ্ছা ছিল না কোনো কালেই, সে কোনো হোটেল গিয়ে উঠতো কিন্তু হেনা খাঁন এর জড়াজড়িতে সে কোথাও যেতে পারেনি এখানেই থাকতে হয় বাধ্য হয়ে, তাই দ্রুত কাজটা শেষ করে এখান থেকে যেতে চাই আরিফ…….
.
.
চলবে……………