#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৭২
🍂
নদীর পানিতে পা ডুবিয়ে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে রিদও মায়া, পড়ন্ত বিকেল সূর্য পশ্চিম আকাশে ডলে ডলে ভাব, চারপাশে গোধূলির আলোমাখা লাল আলো রশ্মি আকাশপথ ধরে সোজা নদীতে এসে পরছে, আর সেই আলোর রশ্মিতে নদীর পানি গুলো লাল মুক্ত মতো চিকচিক করছে হালকা ঝিরিঝিরি বাতাসে সাথে, প্রকৃতির এমন মনোরম দৃশ্য উৎফুল্লতা দৃষ্টিতে তাকিয়ে উপভোগ করছে মায়া, চোখে মুখে যেন মুগ্ধতা ছেয়ে আছে গভীর ভাবে হাত বাড়িয়ে যেন ছুয়ে দিতে চাই একান্ত ভাবে,, মায়া সাথে সাথে রিদও সাক্ষী হয়ে আছে এই প্রকৃতির দৃশ্যের রিদ পশ্চিম আকাশে সূর্যের দিকে তাকিয়ে থেকে শান্ত ভাবে মায়াকে উদ্দেশ্য করে বলে……
.
—” এই জায়গায়টা যে আমার পছন্দের জায়গায় তেমন কিছুই কিন্তু নয়, আমি এখানে আগে কখনোই আসিনি তবে মাঝে মাঝে এই নদীর পাশে যে রাস্তাটা আছে সেটা দিয়ে যাওয়া আসার সময় চোখে পড়তো এই জায়গায়টা, এখানে কখনো আসেনি আমি তোমাকেই নিয়ে প্রথম এসেছি, তারও একটা কারণ আছে,, আমি চাই আমাদের সবকিছু আমি প্রকৃতি থেকে শুরু করি, কারণ তোমাকে আমার কাছে এই প্রকৃতিই নিয়ে এসেছে আমি এই প্রকৃতির কাছে ঋণি হয়ে আছি, নিজের ঋণ শোধ করতে মূলত এখানে আসা,,,
.
কথা গুলো বলেই রিদ মায়ার দিকে তাকায় মায়াও সাথে সাথে রিদের দিকে ফিরে তাকায় দু’জন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকা পর রিদ আস্তে করে মায়াকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে, পিছনে থেকে মায়াকে নিজের সাথে জরিয়ে ধরে মায়ার কাঁধে নিজের থুঁতি রাখে, মায়ার রিদের এমন কাজে সুমতি জানিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে রিদ বুকের সাথে নিজের পিঠ টিকিয়ে পরে রিদ সামনে দিকে তাকিয়ে থেকে আবারও বলে….
.
—” তুমি আমার লাইফে সবথেকে বড় পাওয়া, দাদা-দাদি আমাকে জোর করে বিয়ে দিলেও এখন ইচ্ছে করে তাদেরকে সালাম করতে, আমি কখনোই ভাবিনি তুমি আমার লাইফে এতোটা ইমপোর্টেন্স হয়ে যাবে, তোমাকে ছাড়া আমি নিজেকে চিন্তা করতে পারি না আমার এমন মনে হয় আমি মরলেও তোমাকে সাথে করে নিয়ে মরবো তবুও তোমাকে রেখে কোথাও যাবো না আমি,, তোমাতে যে কতটা আসক্ত আমি তা আল্লাহ ভালো যানে,,, অবশ্যই তোমাকে দেখার প্রথম দিন থেকেই আসক্ত ছিলাম আমি তোমার, আর এখন পাগল হয়ে গেছি পুরপুরি ভাবে,, এখন আমার অবুঝ বউ কি তার পাগল স্বামীর পাগলামো গুলো ভালোবেসে সহ্য করে নিতে পারবে না হুমমম……. (মায়াকে উদ্দেশ্য করে)
.
মায়া কথা গুলো শুনে মূহুর্তেই উল্টো ঘুরে ঝাপটে ধরে রিদের বুকে নিজের মাথা রাখে শক্ত করে পরে কাতর কন্ঠে বলে উঠে…….
.
—” আমি পারবো, আমি সব পারবো, আমি আপনার সাথে মরতেও পারবো, আমি শুধু আপনাকে চাই, অনেক অনেক অনেকটাই চাই আপনাকে…..
.
মায়া এমন কাতর কন্ঠে কথা শুনে রিদ নিজের দুহাতে মায়াকে জরিয়ে ধরে শক্ত করে পরে প্রশান্তির নিশ্বাস ফেলে চুপ করে থাকে দুজন কিছুক্ষণ পরে রিদ নিজের দুহাতে মায়ার গাল আঁকড়ে ধরে কপালে আলতো করে একটা চুমু খায়, রিদের চুমু খাওয়ার সাথে সাথে মায়া নিজের চোখ বন্ধ করে নেই আপনাআপনি, মায়াকে চোখ বন্ধ করে রাখতে দেখে রিদ দুষ্ট হেঁসে মজা করে বলে উঠে…..
.
—” বউ কি আরও আদর পেতে চাই নাকি,
.
রিদ এমন কথায় মায়া সাথে সাথে নিজের চোখ খুলে তাকায় রিদের দিকে, রিদ কি বলতে চাইছে কিছু বুঝতে না পেরে অসহায় ফেস করে তাকিয়ে থাকে, রিদ মায়ার এমন দৃষ্টির মানে বুঝতে পেরে হেঁসে আবারও বলে উঠে……
.
—” চোখ বন্ধ করে রাখছো যে তুমি কি শ্বাসরুদ্ধকর রোগে আক্রান্ত হতে চাও নাকি মানে তোমার কি এখন আরও আদর লাগবে আমার থেকে চাইলে দিতে পারি আমি কি বলো দিব,, আচ্ছা তুমি কি বাকি কাজ গুলো এখানেই সারতে চাও নাকি,,,,(চোখ মেরে)
.
রিদের কথার মানে এবাও বুঝতে না পেরে গোল গোল চোখে তাকিয়ে থেকে কনফিউজড হয়ে বলে উঠে…..
.
—” মানে….
.
মায়াকে মানে মানে করতে দেখে রিদ আস্তে করে মায়ার কানে কানে ফিসফিস করে বলে উঠে…..
.
—” মানে চুমু খাব,,,,
.
রিদের এমন কথায় মায়া মূহুর্তেই চমকে উঠে নিজের দুহাত দিয়ে রিদের বুকের ওপর রেখে ধাক্কা দিয়ে সাথে সাথে নিজের কাছ থেকে খানিকটা দূরে সরিয়ে দেয়, পরে নদীর অল্প পানিতে এলোমেলো ভাবে দৌড়াতে থাকে হাসতে হাসতে,,,
.
আকস্মিক ঘটনায় তাল সামলাতে না পেরে দুকদম পিছিয়ে যায় রিদ, মায়াকে নদীর পানির ওপর এলোমেলো ভাবে দৌড়াতে দেখে সাথে মায়ার হাসির ঝলকালো শব্দে রিদ সাথে সাথে নিজের বামহাত দিয়ে বুকের বামপাশের হৃদপিণ্ডটা চেপে ধরে শক্ত করে,, পরে মায়ার দিকে তাকিয়ে থেকে আহত সুরে বলে উঠে……..
.
—” আহ মরেই যাবো…..
.
কথাটা বলেই সাথে সাথে রিদ মায়ার পিছন পিছন দৌড়াতে থাকে মায়াকে ধরার জন্য, পানির ওপর দুজনের লাগামহীন ছুটাছুটি পর রিদ হাত বাড়িয়ে মায়াকে ধরে ফেলে, পরে শক্ত হাতে পিছন থেকে মায়ার কমড় চেপে ধরে মায়াকে ওপরে তুলে গোল গোল ঘুরে মায়াকে নিয়ে জায়গায় আস্তে করে বসে পরে পানির ওপর,,,
.
দুজন দুজনাতে মন্ত হয়ে চুপটি করে থাকে রিদ মায়ার ঘাড়ে লেপ্টে থাকা ভেজা চুল গুলো আলতো হাতে সরিয়ে দিয়ে নিজের মুখ ডুবিয়ে গভীর ভাবে একটা চুমু খায়, রিদের এমন কাজে মায়া মূহুর্তেই বারবার কেঁপে কেঁপে উঠছে বসে থাকা অবস্থায়, রিদ মায়াতে মন্ত হয়ে পর পর ডিপলি কিস করছে ঘাড়ের ওপর,
.
এমনত অবস্থায় লাউডলি ফোন বেজে ওঠে রিদের, ফোনের রিং টংয়ের শব্দে জন্য দুজনেই চমকে উঠে সাথে সাথে মায়া রিদ থেকে দূরে সরতে চাইলে রিদ শক্ত হাতে আঁকলে রেখে রাগে কটমট করতে করতে নিজের পকেটে থেকে ফোনটা বের করে, রিদের এমন একান্ত সময়ে মোটেও ডিস্টার্বেন্স পছন্দ না, যে ব্যাক্তি তার এমন একান্ত সময়ে কল করে ডিস্টার্ব করছে তাকে সামনে পেলে মাথায় ওপর তুলে আচার মারতেও দ্বিধা বোধ করবে সে,,
.
এমন সব মনোভাব নিয়ে রাগে রি রি করতে করতে ফোন দিকে তাকায় চোখে পড়ল হেনা খাঁনের হাসোজ্জল ছবি,, ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে থেকে একরাশ রাগ নিয়ে কলটা রিসিভ করে কানে ধরে নিজের, ফোনের ওপাশ থেকে হেনা খাঁন কিছু বলবে তার আগেই রিদ রাগে কটমট করতে করতে বলে উঠে……..
.
—” দাদী তুমি কি ঠিক করে রেখেছো তুমি আমার প্রেমের ভিলেন হবেই….
.
হেনা খাঁন রিদের এমন কথায় থমকে উঠে, রিদ কথার মানে কিছুই বুঝতে পারছে না, রিদকে ফোন করেছে জরুরি ভিত্তিতে, আর রিদ এমন কথায় হেনা খাঁন খানিকটা চমকে উঠে সাথে সাথে বলে….
.
—” মানে…..
.
—” মানে, মানেটাই যদি তুমি বুঝতে দাদী তাহলে তোমাকে আর আমি ভিলেন বলতে হতো না……
.
রিদের এমন গোঁড়ানো পেঁচানো কথা মানে বুঝতে না পেরে মূহুর্তেই রেগে যান হেনা খাঁন, পরে রেগে শাসন সুরে বলে উঠে…..
.
—” হেয়ালিপনা বন্ধ কর রিদ, আমি এমনিতেই টেনশনে আছি আমার সোনামাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না, তোর দাদাভাই লোক লাগিয়েছে খুঁজতে তুইও লোক লাগিয়ে আমার সোনামাকে খুঁজে এনেদে তাড়াতাড়ি…..
.
নিজের দাদীকে চিন্তত হতে দেখে মূহুর্তেই শান্ত হয়ে যায় রিদ পরে হেনা খাঁনকে শান্তনা দিয়ে বলে……
.
—” টেনশন করো না দাদী তোমার সোনামা আমার কাছেই আছে, আমি……
.
রিদের বাকি কথা গুলো শেষ করার আগেই উত্তেজিত কন্ঠে দ্রুত হেনা খাঁন বললো…….
.
—” ওহ তোর কাছে কি করছে, তুই এখুনি আমার সোনামাকে আমার কাছে নিয়ে আই,,,,
.
—” দাদী তোমার সোনামাকে আমি খেয়ে ফেলবো না, তোমার সোনামা কিন্তু আমার বউ হয়……
.
চলবে……………