#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৭৪
.
🍂
রিদ খাবার প্লেট সামনে নিয়ে চোখ তুলে তাকায় সামনের দিকে মায়াকে নিজের দিয়ে হা হয়ে তাকাতে দেখে কপাল কুচকে এলো রিদের, পরে নিজের দিকে এক পলক তাকিয়ে থেকে আবারও মায়ার দিকে তাকায়, মায়ার হা হয়ে তাকানোর মানে বুঝতে পেরে দুষ্ট হাসে রিদ, পরে মায়ার দিকে তাকিয়ে থেকে নিজের একটা ভ্রুঁ উঁচু করে ইশারা করে কি হয়েছে,,,, ইশারা করার পরও মায়ার কোনো হেলদোল না দেখে রিদ টেবিলের দিকে তাকিয়ে স্মিত হাসে, বউ তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে তাই সবার সামনেই পাগলামো করছে,,
.
রিদ মাথা তুলে আবারও মায়ার দিকে তাকায় মায়াকে তখনো নিজের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে রিদ সর্তক চোখে চারপাশে সবাইকে এক নজর দেখে নেই, আপাতত কেউ তাদের দিকে তাকাচ্ছে না বলে আবারও আস্তে করে মায়ার দিকে তাকায় রিদ, মায়ার দিকে তাকিয়ে থেকে মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি আটকিয়ে নিজের একটা হাত ঠোঁটের এক সাইড ঢেকে রেখে মায়াকে ইশারা করে দুই ঠোঁট চুমু স্টাইলে উচু করে হওয়াতে চুমু খাই রিদ,,,
.
রিদকে এমন করে চুমু খেতে দেখে মূহুর্তেই মায়া নড়েচড়ে ওঠে চোখে মুখে লজ্জা ভাব নিয়ে সাথে সাথে নিচের দিকে তাকিয়ে নিজের দৃষ্টি লোকায়,,, মায়া নিজের কাজের জন্য নিজেই লজ্জিত কিভাবে পারলো বেহায়ার মতো রিদের দিকে এমন করে তাকিয়ে থাকতে, তাকে এই ভাবে তাকাতে দেখেই তো রিদ এমন কাজটা করলো সবার সামনে, সবার কথা মনে পরতেই মায়া সাথে সাথে চমকিয়ে চোখ তুলে একপাশে সবার দিকে তাকায় সবাইকে যার যার মতো করে খেতে দেখে স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে মায়া, পরে আরচোখে রিদের দিকে তাকাতেই সাথে সাথে দুজনের চোখাচোখি হয়,,,
.
মায়া রিদের দিকে তাকাতেই চোখে পড়ল রিদের ঠোঁটের দুষ্ট হাসি, রিদ মায়াকে লজ্জায় ফেলতে পেয়ে ঠোঁট কামড়িয়ে দুষ্টু হেসে চলছে মতে মতে, মায়া রিদের এমন কান্ড দেখে সাথে সাথে আবারও নিয়ে নজর নিচের দিকে করে ফেলে,,
.
রিদ মায়াকে পর পর লজ্জায় ফেলতে পেরে দুষ্টু হেসে সে নিজেও যখন চোখ ঘুরিয়ে খাবার প্লেট এ রাখতে যাবে তখন চোখ পরে আরাফ খানের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি যাহ এতক্ষণ রিদ ও মায়ার ওপর এই ছিল, মায়া তার এক পাশের সবাইকে দেখে অন্য পাশ দেখা প্রয়োজন বোধ মনে করেনি বলে আরাফ খানর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দেখতে পাইনি যদি করতো তাহলে দেখতে পেতো আরাফ খানের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি যাহ তখন মায়ার ওপর এই নিক্ষেপ করা ছিল,,
.
রিদ নিজের দাদাভাইয়ের এমন দৃষ্টি দেখে মূহুর্তেই থমথমে খেয়ে যায় পরে নিজের চুরি ধরার পরার ভয়ে রিদ নিজেরও আরাফ খানের দিকে ভ্রুঁ কুচকে তাকায় এমন একটা ভাব করে যেন এখানে কিছুই হয়নি, আর যদি কিছু হয়েও তাকে তাহলে সেটা রিদ অনাহেষে কিছুই জানে না,
.
আরাফ খান রিদকে ভ্রুঁ কুচকে নিজের দিকে তাকাতে দেখে কপাল কুচকে এলো তার, রিদের এমন দৃষ্টি দেখে আরাফ খানের মনে হচ্ছে যে যাহ কিছু করেছে সব উনিই করেছে রিদের কোনো দোষ নেই হতেই পারে না যাহ দোষ সবিই তো আরাফ খানের নিজেরই, কথায় আছে না চুরে চুরি করে উল্টো সাহেবকে বকে ঠিক তেমনটাই হচ্ছে এই মূহুর্তে আরাফ খানের সাথে….
.
রিদ আরাফ খানের দিকে তাকিয়ে থেকে নিজের ভ্রুঁ নাচিয়ে ইশারা করে প্রশ্ন করে কি হয়েছে, আরাফ খান রিদের ইশারা বুঝতে পেরে কপাল কুচকেই ইশারা করে বুঝায় যে কিছুই হয়নি,, রিদ আবারও ইশারা করে বুঝায় কোনো দিক না তাকিয়ে নিজের খাবারটা শেষ করতে তাড়াতাড়ি,, আরাফ খান রিদের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আস্তে করে নিজের খাওয়ায় মন দেয় আর বারবার আড়চোখে রিদের দিকে তাকায়,,,
.
আরাফ খান রিদের মনে অবস্থা আরও অনেক মাস আগেই বুঝতে পেরেছেন তাই রিদকে এসবকিছুর জন্য ছাড় দিয়ে থাকে প্রথম থেকেই নিজের বউয়ের অগোচরে,, এতদিন মায়াকে নিয়ে আরাফ খানের অনেকটাই ভয় ছিল কিন্তুু আজকে সেটাও অনেকটা পরিস্কার হয়ে গেছে, কারণ মায়াও রিদের সাথে তাল মিলাচ্ছে রিদের ভালোবাসায় এমন সব কথা গুলো নিজের মনে আওরাতে থেকে হালকা হেসে উঠে নিজের খাওয়ায় মন দেয় আরাফ খান,,,,,,
.
রিদ নিজের দাদাভাইকে ঘুরাতে পেরে সেও স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে নিজের খাওয়ায় মনোযোগী হয়, খেতে খেতে বারবার চোখ তুলে মায়ার দিকে তাকাচ্ছে আর খাচ্ছে, রিদের এমন করের খাওয়ার মধ্যে দিয়েই হঠাৎ করে জোরেসোরে ভিষম লেগে যায় রিদকে ভিষম লাগতে দেখে চমকিত হয় ডাইনিং টেবিলের উপস্থিত সবাই আর হেনা খাঁন ও মায়া দ্রুত এক সাথে খাবার পানি এগিয়ে দেয় রিদকে, রিদ কাশতে কাশতে দুজনের দিকেই করুণ চোখে তাকায় আর পাশ থেকে আরাফ খান এমন অবস্থা দেখে হেসে উঠে,,,
.
মায়া হেনা খাঁনকে রিদের জন্য পানি দিতে দেখে আস্তে করে সে পানির গ্লাসটা নিচে রেখে দিয়ে জায়গায় বসে পরে রিদের দিকে তাকিয়ে থেকে,,,
হেনা খাঁন উত্তেজিত কন্ঠে রিদকে পানির গ্লাসটা এগিয়ে দিতে দিতে বললো…..
.
—” কি করিস তুই আস্তে আস্তে খেতে পারিস না……
.
হেনা খাঁনের এমন কথায় রিদ চুপচাপ থাকলেও আরাফ খান চুপ থাকতে পারেনি উনি বেশ উৎফুল্লতা সাথে সুযোগ পেয়ো রিদকে খুঁচা মেরে বলে উঠে…..
.
—” খাবার দেখে দেখে খেলে তো ঠিক থাকতো তোমার সোনাবাবা, খাবার প্রতি কি তার নজর আছে নাকি, তার নজর তো থাকে অন্য দিকে থাকে আজকাল,,,,
.
হেনা খাঁন স্বামীর কথা কিছু বুঝতে না পেরে বলে উঠে…..
.
—” মানে………
.
হেনাকে কিছু বুঝতে না দেখে আরাফ খান চোখ তুলে তাকায় হেনা খাঁনের দিকে বউটা আজকাল কেমন যেন অবুঝ অবুঝ মনে হচ্ছে উনার কাছে, কই আগে তো উনি কিছু উল্টা পাল্টা করতে গেলেই ধরে ফেলতো উনার বউ আর আজকে নিজের নাতি বিষয়টা ধরতে পারছে না এতো বলার পরও,, তার কেমন যেন সন্দেহ হতে থাকে হেনা খাঁনকে নিয়ে আরাফ খানের কেন যানি মনে হচ্ছে হেনা খাঁন সবিই বুঝতে পারে কিছু ধরা দিতে চাই না কারও কাছে বিশেষ করে রিদের কাছে, না জানার ভান ধরে রাখলে রিদ কিছু বলার সাহস করবে না হয়তো, যদি রিদের কাছে ধরা দেয় তাহলে উনার রিদের কাছে হার মানতে হবে মায়াকে নিয়ে আর সেটা উনি কখনোই করতে চাইবেন না,,,,,, আরাফ খান হেনা খাঁনের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে……
.
—” মানেটা রিদকেই প্রশ্ন করো, ওহ বলতে পারবে ভালো….
.
আরাফ খানের কথা হেনা খাঁন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে রিদের দিকে তাকায় রিদ খানিকটা বিরুক্তি নিয়ে আরাফ দিকে এক পলক তাকিয়ে থেকে আবারও হেনা খাঁনের দিকে তাকায় পরে সুপ্ত কন্ঠে বলে উঠে…….
.
—” কিছু না দাদী দাদাভাই ফালতু বকছে.
.
রিদের এমন কথায় আরাফ খান হেসে আস্তে আস্তে নিজের খাবার খেতে থাকে আর হেনা খাঁন রশিদের খাবার প্লেট দিকে তাকিয়ে থেকে আবারও রিদকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…..
.
—” কি হয়েছে রিদ ঠিক করে খাচ্ছিস না কেন……
.
—” খাচ্ছি তো….
.
রিদের এমন কথায় আরাফ খান আবারও রিদকে খুঁচা মেরে মজা করে বলে উঠে……..
.
—” হুমমম খাচ্ছে তো তবে অন্য কিছু, খাবার খাওয়া তো আমাদের রিদ ছেড়ে দিয়েছে ওহ তো এখন অন্য কিছু খেয়ে পেট ভরে নারে রিদ,,,,
.
আরাফ খানের কথা রিদও এবার রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে……
.
—” কি করবো দাদাভাই ঠিক করে কোনো কিছুই তো খেতে পারছি, আমি বেশ পুষ্টিহীনতায় ভুগছি বুজেছো, আমার চারপাশে প্রচুর ডিস্টার্বেন্স তার জন্য ঠিক করে কিছু করা ওঠা হচ্ছে না….
.
রিদের এমন করুণ পরিণতি দেখে শব্দ করে হেসে উঠে আরাফ খান আর চারপাশে সবাই করুন চোখে তাকিয়ে থাকে রিদের দিকে রিদ কোন পুষ্টিহীনতার কথা বলছে আপাতত কিছুই বুঝতে পারছে তারা, মায়াও ঠিক তাই করছে হা হয়ে তাকিয়ে আছে রিদ এর দিকে…….
.
রিদ নিজের খাবার শেষ করে চুপচাপ নিজের রুমে চলে যায় কাউকে কিছু না বলে, মায়া চুপিচুপি রিদের যাওয়ার দিকে বেশ কয়েক বার তাকায় পরে সবার সাথে মায়া নিজেরও খাবার শেষ করে হেনা খাঁনের সাথে নিজের রুমে চলে যায়, কিন্তু মায়া বেশ অস্থিরতায় ভুগতে থাকে রিদের জন্য মায়ার হঠাৎ করে রিদের কাছে ছুটে যাওয়ার জন্য প্রবল ইচ্ছা জেগে ওঠে, কিন্তু হেনা খাঁনের জন্য সেই ইচ্ছাটা দমে রাখতে হয়, কারণ হেনা খান মায়াকে ঘুম পারিয়ে তারপর নিজের রুমে যায় এখনো তাই হচ্ছে হেনা খাঁন মায়াকে ঘুম পারানোর চেষ্টা করছে বরাবরই মতোই,,,,
.
মায়া একরাশ কষ্ট নিয়ে চটপট করতে করতে ঘুমিয়ে পরে খানিক বাদেয়, মায়াকে ঘুমিয়ে পরতে দেখে হেনা খাঁন ও মায়ার কপালে আস্তে করে একটা চুমু খেয়ে নিজের রুমে চলে যায় দরজাটি বাহির দিয়ে লাগিয়ে দিয়ে…..
.
গভীর রাত রিদ নিজের রুমে সুমিং পুলের সামনে কাউচের ওপর বসে আছে নীল পানির দিকে নিজের দৃষ্টি স্থির রেখে মনটা বেশ চটপট করছে বউটার জন্য তার,,,,,,,,,,,
.
চলবে….