দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা) #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৬৫

0
677

#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৬৫
🍂
ডলি আপুর আবারও গুলি করবে তার আগেই উনি আমাকে জরিয়ে ধরা অবস্থায় নিজের একটা পা দিয়ে লাতি মেরে মাটিতে পরে থাকা হকিস্টিকটা ডলি আপুর দিকে ছুড়ে মারতেই আপুর হাতে থাকা বন্দুকটা নিজের পরে যায়, আর সাথে সাথে সেটা উনি নিজের হাতে কেঁচ করে নেয়, হাতের বন্দুকটা গুড়াতে গুড়াতে বাকা দৃষ্টিতে ডলি আপুর দিকে তাকিয়ে থেকে বাঁকা হেঁসে ইনোসেন্ট ফেস করে ডলি আপুকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,,,,,,

.
—” ডলি বেবি ইউ আর ফিনিশ….

.
রিদের এমন কাজে মূহুর্তেই ডলি মা-বাবা ও ডলি, সাথে তার ভাড়া করা গুন্ডারাও ভয়ে জড়সড় হয়ে বারবার শুকনো ঢুক গিলতে লাগে সাথে ভীতু চোখে রিদের দিকে তাকিয়ে থেকে, কারণ তারা সবাই জানে তাদের সাথে কি হতে চলছে রিদ তাদের কাউকেই জানে ছেড়ে দিব না,,, এখন রিদের হাত থেকে নিজেদেরকে কিভাবে বাঁচাবে সেই টেনশনে একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে বারবার,, ডলির ভাড়া করা গুন্ডারাও প্রথমে জানতো নাহ যে রিদ খাঁনের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে তাদের, জানলে কখনোই তারা ওয়ালডের মাফিয়া কিং এর বিরুদ্ধে যাওয়ার দুঃসাহস করতো না এই জীবনে, কিন্তুু পরে যখন রিদকে চোখের সামনে দেখতে পেল তখনি তারা বুঝতে পারে যে রিদ খাঁনের বিরুদ্ধে ভাড়া করা হয়েছে তাদের, তখনই তারা ভয়ে সিটিয়ে যাওয়া অবস্থায় রিদের কাছ থেকে ক্ষমা ছেয়ে নিতো কিন্তুু ডলি আর রিদের কথার মাঝে তারা নিজেদের কথা গুলো বলার সময় হয়ে ওঠেনি, কিন্তুু এখন যখন রিদের হাতে বন্দুকটা চলে যায় তখনি ডলির ভাড়া করা গুন্ডারা মূহুর্তেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে রিদের পায়ে কাছে,, রিদের পায়ের কাছে পরতেই চোখ তুলে তাকায় ওদের দিকে রিদ, গুন্ডা গুলোর দিকে রিদকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাতে দেখে গুন্ডা গুলোর মধ্য থেকে একজন ভয়ে জড়সড় হয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় দ্রুত বলে উঠে……..

.

—” বস ক্ষমা করে দেন আমাদের, আমরা জানতাম না যে এই (ডলিকে দেখিয়ে) আমাদের আপনার বিরুদ্ধে ঠিক করেছে, সত্যি বলছি জানলে কখনোই আসতাম না এখানে,, প্লিজ বস আমাদের জানে মারবেন নাহ, আমরা আর কখনোই এমন দুঃসাহস দেখাবো না আপনি বল্লেন তো আমরা এই শহর ছেড়ে চলে যাব, তবু জানটা ভিক্ষা চাচ্ছি আমরা…….

.
গুন্ডা গুলোর এমন কথা ডলি আরও একধাপ ভয় বেড়ে যায়, যাদের ওপর ভরসা করে রিদকে হুমকি দিচ্ছিল সেই তারাই এখন ভয়ে রিদের কাছে নিজের জীবন ভিক্ষা চাইছে,, ডলি পরিস্থিতি শিকার হয়ে ভিষণ বাজে ভাবে ফেঁসে যায় ডলিও তার মা-বাবা, এই মূহুর্তে রিদের সামনে কিছু বলার সাধ্য নেই তাদের কারও তাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে রিদের হাতে মরা ছাড়া কোনো উপায় নেই,,

.
গুন্ডা গুলোকে এমনি আকুতি সুরে কথা গুলো বলতে দেখে মায়া কান্না বরত অবস্থায় রিদের বুকে থেকে নিজের মাথাটা তুলে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় নিচের দিকে তখনই চোখে পড়ল রিদের পা জরিয়ে ধরা অবস্থায় গুন্ডা গুলোকে, মায়া এক পলক গুন্ডা গুলোর দিকে তাকিয়ে থেকে কান্না অবস্থায় আবারও শক্ত করে জরিয়ে ধরে নিজের মাথাটা রিদের বুকে চেপে ধরে মুখ লুকায়, মায়াকে এমন করতে দেখে আদুরে একহাত মায়ার মাথায় শক্ত করে চেপে ধরে রিদ,, এই মূহুর্তে মায়া সবকিছু জন্য ভিষণ ভাবে ভয় পাচ্ছে এখন যদি রিদ মায়ার সামনে ডলি বা তার ভাড়া করা গুন্ডা গুলোকে কিছু করতে যায় তাহলে এতে করে মায়ার মাথা মস্তিষ্কের চাপ পরতে পারে সেটার জন্য, আর এমনটা হবে মায়ার আগে এক্সিডেন্ট হওয়ার ফলে,, তাই এদের সবার সাথে যাহ করতে হবে যেটা একান্তই ব্যাক্তিগত ভাবে করতে মানে মায়ার চোখের আড়ালে এদেকে শাস্তি দিতে হবে,,

.

রিদ সবকিছু আপন মনে ভেবেই মায়ার দিকে এক পলক তাকিয়ে থেকে আবারও তাকায় ডলি দিকে তাকায় পরে কিছু একটা আনমনে ভাবে বন্দুকটা ডলির দিকে তাক করা অবস্থা নিচে গুন্ডা গুলোর দিকে তাকিয়ে থেকে ভ্রুঁ কুঁচকে বলে উঠে…..

.
—” ক্ষমা করাটা আমার রোলছের মধ্যে পড়ে নাহ,, তাই তোদের করতে পারছি না এই মূহুর্তে তবে তোরা যদি আমার কথা মতো কাজ করিস তাহলে তোদের জানটা ভিক্ষা দিতে পারি আমি, কিন্তুু কম হলেও তোদের শাস্তি পেতে তো হবেই,, আসলে বউ ছাড়া কারও প্রতি বিন্দু মাত্র মায়া কাজ করে না আমার,, তাই শর্তে রাজি থাকলে বল নয়তো….

.
রিদের বাকি কথা গুলো শেষ করার আগেই তুমুল গতিতে গুন্ডা গুলোর নিজের মাথা একসাথে নাড়িয়ে ঝটপট উত্তরে বলে উঠে…….

.

—” রাজি রাজিই, আমরা রাজি বস, আপনার সব শর্তে আমারা রাজি,,,
.

—” সিউর তো…(ভ্রুঁ কুঁচকে)

.
গুন্ডা গুলোর নিজেদের মাথা নাড়িয়ে সুমতি জানাতেই রিদ আবারও ডলিও ওর মা-বাবা দিকে তাকিয়ে থেকে বাঁকা হেঁসে গুন্ডা গুলোকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে…..

.

—” বেশি কিছু না, তোমাদের ডলি ম্যাডাম ও তার বাবা মা এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে বোর হচ্ছে ভিষণ ভাবে,, তাই তাদের থাকার ব্যবস্হা করা হোক, ওদের স্পেশাল থিওরি মানে উনাদের স্পেশাল খাতির যত্ন করা জন্য আমার স্পেশাল গোডাউন নিয়ে যাহ,, যতক্ষণ না আমি আসছি ততক্ষণ ওদের ফুটন্ত গরম পানিতে দাঁড়া করিয়ে রাখবি, বাকিটা আমি এসে দেখে নিব, এবার যাহ তোদের ম্যাডামকে নিয়ে….

.

কথা গুলো বলার সাথে সাথে গুন্ডা গুলোর তুমুল গতিতে ওঠে দাঁড়িয়ে ডলি ও তার মা-বাবা গলায় ছুরি চেপে ধরে নিয়ে যেতে লাগলো, ডলিকে টেনে হেচরে নিয়ে যেতে যেতে ডলি চিৎকার করে রিদকে থামাতে বলে সবকিছু,, কিন্তুু রিদ ডলির এমন চিৎকার দেখে সেদিকে তাকিয়ে থেকে বাঁকা হেঁসে ওঠে, পরে হাতের থাকা বন্দুকটা মাটিতে ফেলে আসিফকে কল দেয় ওদের কাছে এসে মায়াকে এখান থেকে নিয়ে যেতে বাড়িতে, আসিফকে কল করে মোবাইল টা নিজের পকেটে গজিয়ে, নিজের দুহাত মায়াকে জরিয়ে ধরে শক্ত হাতে, মায়াও আবেশে রিদের বুকের মধ্যে নিজের জায়গায় করে নেই পরম যত্নে…..

.

দুজনেই দুজনকে চোখ বন্ধ করে জরিয়ে ধরে থাকে বেশ কিছুক্ষন,, ওদের এমন জরিয়ে ধরা অবস্থায় খানিক বাদে আসিফ গাড়ি নিয়ে এসে ওদের সামনে দাড়ায়, গাড়ির হর্নের শব্দের ঘুর্র ভাঙ্গে রিদের এক পলক গাড়িটির দিকে তাকিয়ে থেকে আস্তে করে মায়াকে নিজের বুকের ওপর থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতেই মায়া ঝটকা দিয়ে রিদের হাতটি সরিয়ে দেয় নিজের ওপর থেকে পরে আরও শক্ত করে চেপে ধরে থাকে রিদের বুকে মধ্যে,,,

.

আসিফ গাড়ির থেকে হতভম্ব হয়ে দৌড়ে এসে রিদের সামনে দাঁড়িয়ে এক পলক দুজনের দিকে তাকিয়ে থেকে আস্তে করে রিদকে ডেকে বললো…..

.

—” ভাই…….

.
আসিফের এমন ডাকে চোখ তুলে তাকায় রিদ পরে একটা স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে জোর করে টেনে মায়াকে নিজের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ে আসিফের সাথে বাড়িতে পাঠানের জন্য আসিফকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……

.

—” আসিফ তোর ভাবিকে বাড়িতে নিয়ে যাহ তো….

.

—” জ্বিই ভাই… ভাবি চলেন আমার সাথে….( শান্ত ভাবে)

.
আসিফের কথায় নাহুচ সুরে মায়া বললো……
.

—” উঁহুম যাবো না আমি…

.
মায়ার এমন কথায় তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে রিদ মায়ার উদ্দেশ্য করে বলে উঠে………

.
—” কেন যাবে না তুমি…..

.
রিদের কথায় মায়া সাথে সাথে স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠে……
.

—” আপনার সাথে থাকবো আমি তাই,, আর আপনি কতটা ব্যাথা পেয়েছেন হাতে আমাকে দেখতে হবে তো সেটা….

.
মায়ার এমন কথায় রিদ এক পলক গুলি খাওয়া হাতটার দিকে তাকিয়ে থেকে আবারও মায়ার দিকে তাকায় পরে কপাট রাগ দেখিয়ে বললো…..
.

—” দেখতে হবে না তোমাকে যাহ তো তুমি এখান থেকে বিরক্তি করো না আমাকে…….

.
রিদের এমন রাগ দেখানো কথা শুনে মায়া কোনো কিছু চিন্তা ভাবনায় না করেই দৌড়ে গিয়ে রিদের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের দু-হাতে রিদের শার্টের একটা কোনা আঁকড়ে ধরে শক্ত করে পরে জিদ্দি সুরে রিদকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……..
.

—” নাহ জানো না…….

.
রিদ মায়াকে নিজের শার্টের কোনা আঁকড়ে ধরতে দেখে সাথে মায়ার জিদ্দি সুরের কথা শুনে রাগে চাপা সুরে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে……

.

—” এই তুমি কি আমার হাতে গুলি খেয়ে মানবে…..
.

—” হুমমমমম…. (মাথা ওপর নিচ নাড়িয়ে)
.
মায়া হুমমম বলাতে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে মায়ার দিকে তাকিয়ে থেকে রিদ মায়াকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে……

.

—” এই তোমার কলিজা তো অনেক বড় হয়ে গেছে, আমাকে ভয় লাগছে না তোমার…..

.
—” নাহহহহ লাগছে নাতো কি করবো আপনিই বলুন….. (ঠোঁট উলটিয়ে)

—” তাই, আচ্ছা একটা কাজ করি ভয় যখন তোমার লাগছেই নাহ আমাকে তাহলে তোমাকে আমি গুলি করে মেরে দেয় এই মূহুর্তে কি বলো….. (দাঁতে দাঁত চেপে)

.
রিদের কথায় মায়ার পাল্টা জবাবে বলে উঠে…..
.

—” আপনি আমাকে গুলি করলে আমি আপনাকে শক্ত করে কামড়িয়ে দিব একদম…..

.

—” সেই, বউ পেয়েছি একটা আমি আস্ত পাগল,, আচ্ছা আমি তোমাকে আগে গুলিটা করলে আমাকে কামড়াবে কি করে শুনি….. (দাঁতে দাঁত চেপে বললো)

.

—” ঠিক তো আপনি আমাকে আগে গুলি করলে আমি আপনাকে কামড়াবো কি করে, আগে তো ভেবে দেখিনি আমি এটা….. (চিন্তা সুরে)

.

—” সেটাই,, তোমার মাথায় মগজ থাকলে তো চিন্তাটা আসবে তাই না….. (বেঙ্গ করে)
.
রিদ এমন বেঙ্গ করা কথার মানে বুঝতে না পেরে মায়া সোজা-সাপটা ভাবে বলে উঠে…..

.

—” আরে নাহ আমার মাথায় অনেক বুদ্ধি আছে আপনি জানেন দাদীর বলে আমাকে,, দাড়ান আপনাকেও একটা বুদ্ধি দেয়, আচ্ছা আমি আগে আপনাকে কামড়িয়ে নিব ইচ্ছা মতো পরে আপনি আমাকে গুলি করে মেরে দিবেন, তাহলে তো হলো তাই না,, আমার কামড়ানোও হলো আপনার আমাকে গুলি করাটাও,,, দারুণ না বুদ্ধিটা………

.
মায়ার এমন কথায় রিদ মায়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বিরক্তি নিয়ে দুই ভ্রুঁ উঁচু করে মাথা দুলিয়ে বলে উঠে….

.
—-” unbelievable…..
.

রিদ কথাটা বলেই গাড়ির দিকে রেগে হনহনিয়ে যেতে লাগলো মায়াও রিদের শার্টের কোনা আঁকড়ে ধরে পিছন পিছন দৌড়ে যেতে লাগলো রিদের হাঁটার সাথে তাল মিলিয়ে,, এতক্ষণ আসিফ রিদ আর মায়ার খুনসুটি কথা গুলো শুনছিল মনোযোগ সহকারে পরে রিদকে রেগে গাড়ির দিকে যেতে দেখে ঘুর্র ভাঙ্গে আসিফের,, দৌড়ে ড্রাইবার সাথে সামনে সিটের বসে পরে আসিফ, পরে পিছনে দিকে এক পলক তাকায় রিদ ও মায়ার দিকে পরে আবারও সাথে সাথে সামনের দিকে ঘুরে বসে আসিফ, কারণ তখনো রিদ মায়ার ওপর বিরক্তি নিয়ে গম্ভীর মুখে বসে আছে আর মায়া তখনো রিদের শার্টের কোনা দুহাতে আঁকড়ে ধরে রিদের দিকে ঘুরে বসে আছে ঘাপটি মেরে অসহায় ফেস করে রিদের দিকে তাকিয়ে থেকে,, রিদ মায়ার হঠাৎ এতোট সাহস কোথায় থেকে এলো সেটাই ভেবে পাচ্ছে না এই মূহুর্তে…….

চলবে……………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here