দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা) #লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া #পর্বঃ_৮৮

0
834

#দেওয়ানা(আমার ভালোবাসা)
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
#পর্বঃ_৮৮

.
🍂
হলুদ শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে আছে মায়া, চারপাশে হৈ হুল্লোড় জমজমাট পরিবেশ সবার মুখে খুশিতে চকচক করলেও মায়ার চোখে দুটো টলমলে ভাব,, তাই কাউকে কিছু না বলে ড্রয়িংরুমে এক পাশে দাঁড়িয়ে নিজের শাড়ির আঁচল দিয়ে বার বার নিজের চোখ মুচ্ছে আর চারপাশে তাকাচ্ছে,, চারপাশে তাকিয়ে হয়তো কাউকে খুঁজছে হয়তো না,, মায়া এমন মায়ার কান্না কারণটা কি সেটা হয়তো মায়া নিজেই নিদিষ্ট করে কিছু বলতে পারবে না,, কারণ যেটাই হোক তবে কষ্টটা মায়ার ভরপুর, তাইতো এমন খুশি খুশি ভাব আর মেতে উঠা সবকিছুর সাথে মায়া দুঃখ ভাব যেন অপ্রত্যাশিত কিছু,, মায়ার এমন ডুবু কান্না হঠাৎ করেই একজন ওয়েটার সামনে এসে দাড়িয়ে খানিকটা উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠে………

.

—” রিতুপাখি তোমার কি হয়েছে কান্না করছো কেন……

.

হঠাৎ করে কারও কথা কানে আসতেই চমকে উঠে মায়া, চোখ তুলে তাকাতেই চোখে পড়ল ছদ্মবেশে একজন ওয়েটার কে, তার কন্ঠ মায়া বেশ পরিচিত হলেও এই মূহুর্তে তাঁকে চিনতে পারছে না মায়া,, তাই এক পলক ছদ্মবেশি ব্যাক্তিটির দিকে তাকিয়ে থেকে আবারও নিজের কান্না মন দেয় মায়া,,,, সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছদ্মবেশি ওয়েটার ব্যাক্তিটি মায়ার কোনো রকম হেলদোল না দেখে আবার নরম সুরে প্রশ্ন করে বলে উঠে……..

.

—” কি হয়েছে পাখি বলবে তো আমায় নাকি……….

.

আবারও মায়া নরম সুরে প্রশ্ন করতে দেখে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় মায়া পরে কান্না জড়িত কন্ঠে নাক টেনে বলে উঠে……..

.

—” বললো না আপনাকে আমি, কে আপনি যান তো,,,,

.

মায়ার এমন কথায় মূহুর্তে চমকে উঠে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছদ্মবেশি ব্যাক্তিটি,, নিজের অবস্থান ভুলে যাওয়া বিষয়টি মনে করতেই দ্রুততা সঙ্গে নিজের ঠিক করে চারপাশে ব্যাস্ত চোখ চালায় ভয়ে ভয়ে,, নিজের পরিচয় গোপন করে নিজের জীবন বাজি রেখে এই খান বাড়িতে এসেছে ওয়েটার বেশে ছদ্মনাম নিয়ে ব্যাক্তিটি,, কিন্তু মায়াকে হঠাৎ করে এমন করে কান্না করতে দেখে মূহুর্তে দুর্বল হয়ে যায় ছদ্মবেশি ব্যাক্তিটি,, তাই নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে মায়া সাথে নিজের কন্ঠে কথা বলে ফেলে এই ছদ্মবেশি লোকটি কিন্তু এখন মায়ার এমন কথায় মূহুর্তেই সবকিছু মনে পরে যায়,, তাই রিদের ভয়ে কাচুমাচু করতে করতে দ্রুততা সঙ্গে মায়ার সামনে থেকে চলে যায় নিজের কাছে,, যে জন্য এখানে এসেছে রিদের এতটা টাইড সিকিউরিটি মধ্যেও,,,,,,

.

মায়া ছদ্মবেশি ওয়েটার ব্যাক্তিটি হঠাৎ এমন কাজে কিছু বুঝতে পারিনি তাই সেদিকে এত মনোভাব স্থির না করে নিজের ভেজা ভেজা চোখে চারপাশে তাকিয়ে থেকে কাউকে কিছু না বলে হনহন করে নিজের রুমে চলে যায়……….

.

🍁

ঘরোয়া পরিবেশ ফিহার হলুদ ছুঁয়া হচ্ছে,, ফিহার বিয়ের আয়োজন বেশ বড়শড় না করলে এতটা ছোট হচ্ছে না,, খান বাড়ির সবাই জাঁক ঝমক করে অনুষ্ঠান করতে চাইলেও আরিফের কথা চিন্তা করে থামতে হয় তাদের,, কারণ আরিফের সাধ্য অনুযায়ী খান বাড়িতে আয়োজন করা হয়েছে ফিহা ও তাই চাই,, আরিফের সামর্থ অনুযায়ী তাদের বিয়েটা হোক ঘরোয়া পরিবেশ,, এতে কারণ কোনো রকম আপত্তি নেই যেখানে ফিহার কোনো কিছু চাওয়ার নেই তাই অন্য কারও কিছু বলার নেই,,,,,,

.

ফিহার হলুদ ছুয়া অনুষ্ঠানে ফিহা সকল বিদেশী ফ্রেন্ড উপস্থিত কারণ ফিহার তাদের স্পেশাল ভাবে দাওয়াত করে বাংলাদেশে এনেছে,, তাই আপাতত খান বাড়ির বন্ধু মহলটা জাঁক ঝমক হয়ে উঠেছে,,, আর সেই বন্ধু মহলে সাথে সমান তালে মেতে উঠে আছে মায়াও,,, ফিহার বিদেশি ফ্রেন্ডের সাথে মায়াও বেশ একটা ভাব জমে উঠেছে,, তাই আপাতত বন্ধু মহলে কারও কোনো রকম সমস্যা না থাকলেও মায়া খানিকটা অন্য মস্কর কিছু কারণ বশত কিন্তু সেটা কি তাহ এখনো পর্যন্ত মায়া কাউকে কিছু বলেনি হয়তো বলার সুযোগ হয়ে উঠেনি তাই,,,

.

হৈ হুল্লোড় সাথে সবাই একে একে ফিহাকে হলুদ ছুঁয়ে দিয়ে হলুদের পর্বটা শেষ করে এখন ফিহার মেহেদী পর্ব শুরু করে,, ফিহার হলুদ সন্ধ্যায় খান বাড়ির সাবাই আয়ন সহ উপস্থিত থাকলেও রিদকে কোথাও দেখা যায়নি,, হয়তো কোথাও ব্যস্ততা সহিত কাজ নিয়ে পরে আছে,,, আর আয়ন হলুদ সন্ধ্যায় উপস্থিত থাকলেও মায়া থেকে বেশ খানিকটা দূরে দূরে থাকছে প্রথম থেকেই,, মায়া আয়নের সাথে বেশ কয়েক কথা বললেও আয়ন ব্যস্ততা দেখিয়ে মায়াকে এড়িয়ে গেছে বরাবরই মতোই,,,, এতে করে মায়া মন খানিকটা খুন্ন হলেও মায়ার মনে না বলা কথা গুলো চাপা পরে যায় সেই খুন্নতার মাঝে,,,,,

.

.

এত কিছুর মায়াও কেউ একজন অপলক দৃষ্টিতে বার বার তাকিয়ে থেকে মায়াকে দেখেই চলছে,, মায়ার চারপাশে থেকে সেই ওয়েটার বেশে ছদ্মবেশি লোকটি মায়াকে লক্ষ করেই চলছে,, একদিকে মায়া এই ব্যাক্তিটি ভালোবাসা, অন্য দিকে তার প্রথম টার্গেটই হলো মায়া রিদকে দুর্বল করার,,, এতো কিছুর মাঝে একটাই তার যে করেই হোক রিদ থেকে ওর সবকিছু কেড়ে নিয়ে হবে আর সেটা প্রথম ধাপটায় হবে মায়া,,,,,,,,

.

ছদ্মবেশি লোকটি খান বাড়ি এক ড্রয়িংরুমের এক পাশে দাঁড়িয়ে শিশ বাজাতে বাজাতে এক পলকে খান বাড়ির সবাইকে দেখে নিয়ে একটা চেয়ারে ওপর আরাম করে বসে বাঁকা হেঁসে রিদকে উদ্দেশ্য করে নিজেই নিজেই বলে উঠে……..

.

—” বস খুব বাজে ভাবে ফেঁসে গেছিস তুই,, এখন যাহ তোর কাল তা আমার,, পারলে এখন নিজের প্রিয়তমার সাথে পাওয়ারকে রক্ষা করে দেখা,,,

.

কথাটা বলেই চেয়ারে নিজের গা এলিয়ে দিয়ে মায়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে,, কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকের হঠাৎ করেই উঠে বসে উত্তেজিত সাথে,, পরে আবারও নিজে নিজেই বলে উঠে……..

.

—” যদি আমরা বিছানো জাল থেকে রিদ হয়ে যায় তো, সবটা শেষ হয়ে যাবে,, হ্যাঁ রিদ ওয়াল্ড মাফিয়া কিং ওর দ্বারা সবিই সম্ভব,, কিন্তু আমিও হার মানবো না গত দুই বছর ধরে আমি রিদকে নিয়ে গবেষণা করে এই জালটা বিছিয়েছি এত সহজে হার মানবো না,, আর যদিও এমন হয়তো………

.

কথা গুলো ভেবেই ছদ্মবেশি লোকটি মায়ার দিকে তাকায় পরে মায়ার দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ মুখ শক্ত করে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বলে উঠে…….

.

—” তাহলে ওর বেঁচে থাকা কারণটা আমি মেরে দিব,, আমি মলি নয় যে সহজে হার মেনে যাব,, সবটা জেনে বুঝেই মাঠে নেমেছি এত সহজেতো আমাকে হার মানানো সম্ভব নয়…….

.

কথা গুলো বলে লোকটি মুহূর্তেই চোখ উদ্বাস্তু অনুভূতি নিয়ে টলমলে চোখে মায়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠে…….

.

—” আই এম সরি পাখি,, তুমি আমার কাছে দ্বিতীয় কোনো অপশন রাখনোনি,, তুমি আমাকে ছেড়ে রিদকে বেছে নিয়েছো আমার ভালোবাসাকে অস্বীকার করেছো,, তাই রিদের সাথে সাথে তোমাকেও মারতে হবে পাখি…….

.

চলবে……………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here