যেখানে_দিগন্ত_হারায় #পার্ট_২ জাওয়াদ জামী জামী

0
455

#যেখানে_দিগন্ত_হারায়
#পার্ট_২
জাওয়াদ জামী জামী

” মাশিয়াত কোথায়, কল্পনা? বাসায় এসেছে নাকি বন্ধুদের সাথেই আছে? ” মিরাজ মোর্তাজা বাসায় এসেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন স্ত্রী’র দিকে। কল্পনা মোর্তাজা স্বামীর দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারলেন ঘটনা কিছু ঘটেছে।

” রুমেই আছে। ভার্সিটি থেকে এসেই রুমে ঢুকেছে, আর বের হয়নি। লাঞ্চ, ডিনার কিছুই করেনি। সেই দুপুর থেকেই গাল ফুলিয়ে নিজের রুমেই বসে আছে। বাসায় এসে আমাকে বলল কে নাকি ওকে থা’প্প’ড় মে’রে’ছে। কিন্তু আমি ওর কথা আমলে নেইনি। হয়তো ও নিজেই কাউকে মে’রে এসে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। ”

” ও সত্যিই বলেছে। ওর ভার্সিটির টিচারের হাতে থা’প্প’ড় খেয়েছে। বিষয়টা আমার জন্য কতটা লজ্জার এটা বুঝতে পারছ, কল্পনা? আমার ভার্সিটির টিচারের হাতে থা’প্প’ড় খেয়েছে আমারই মেয়ে! আর কত বোঝালে তোমার মেয়ে শোধরাবে? পড়াশোনাটাও ঠিকমত করছেনা, দিনরাত লাফাঙ্গাদের মত বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মেতে আছে। ভার্সিটির সবাই ওর ভয়ে তঠস্ত থাকে। কেউ কিচ্ছুটি বলার সাহস করেনা। ভুল করে কিছু বললেই তাকে ভার্সিটিসুদ্ধ স্টুডেন্টদের সামনে হেনস্তা করে। শুধু ওর এরকম কর্মকান্ডের জন্য আমি লজ্জায় ভার্সিটিমুখো হইনা। ” মিরাজ মোর্তাজা বিরসবদনে সোফায় বসে রইলেন। তিনি সত্যিই মাশিয়াকে নিয়ে চিন্তিত।

” পাপা, তুমি এসেছ? কতবার তোমাকে ফোন দিলাম। কিন্তু তুমি রিসিভ করলেনা। জানো, তোমার ভার্সিটির এক বেয়াদব টিচার আজ আমাকে থা’প্প’ড় দিয়েছে? তুমি কালকেই তাকে ভার্সিটি থেকে বের করে দেবে। তার সাহস কত চেয়ারম্যানের মেয়েকে থা’প্প’ড় দেয়! দুই টাকার টিচার হয়ে আমার গায়ে হাত তোলে! তুমি তাকে বের করে দেবেতো, পাপা? ” বাবার পাশে বসে তাকে জড়িয়ে ধরে আহ্লাদি স্বরে বলল মাশিয়াত।

” আমি তাকে বের করার কেউ-ই নই। সে নিজের যোগ্যতায় ভার্সিটিতে জয়েন করেছে। ইনফ্যাক্ট গভর্নিংবডি তাকে ভার্সিটিতে চেয়েছিল। আর তাকে ভার্সিটিতে আনতে অনেক কাঠখড় পোহাতে হয়েছে। তুমি না জেনেই তাকে দুই টাকার টিচার বলে আখ্যায়িত করতে পারোনা। আমি যতদূর শুনেছি, সে তোমাকে এমনি এমনিই থা’প্প’ড় মারেনি। যেটা বাবা-মা হয়ে আমাদের করা উচিত ছিল, সেই কাজ সে করে দিয়েছে। তোমাকে আগেও ওয়ার্নিং দিয়েছিলাম। বারবার বলেছিলাম, ভার্সিটিতে এমন কিছু করোনা, যাতে আমাকে লজ্জা পেতে হয়। কিন্তু তুমি শোনোনি। এমনটাতো নয় যে, সারাজীবন সবাই তোমার হুকুম মেনে নিবে। একটা না একটা সময় কেউ প্রতিবাদ করতই। মনে কর, আজকেই সেই দিন এসেছে। ” মাশিয়ার কথার জবাবে কাটকাট উত্তর দিলেন মিরাজ মোর্তাজা।

বাবার মুখে এমন কথা শুনে অবাক নয়নে তার মুখপানে তাকিয়ে থাকল মাশিয়া। সে যেন কিছু বলার ভাষা হারিয়েছে।

” এতক্ষণ সন্দেহ ছিল আমি তোমাদের মেয়ে নয়। এখন সেই সন্দেহ তীব্র থেকে তীব্রতর হলো। অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমাকে বিশ্বাস করতেই হচ্ছে আমি তোমাদের মেয়ে নই। হয়তো হসপিটালেই তোমাদের সন্তানের সাথে আমার অদলবদল হয়েছে। সিস্টার ভুল করে তোমাদের মেয়ের বদলে আমাকে তোমাদের কাছে দিয়েছিল। সেজন্যই তোমরা আজ আমার সাথে এমন কঠোর হচ্ছ। একটা নিষ্পাপ মেয়ের কান্নাভেজা চোখও তোমাদের মন গলাতে পারছেনা। আমি থাকবনা তোমাদের সাথে। চলে যাব দূরে কোথাও। থেকো তোমরা শান্তিতে। ” মাশিয়া নিজের রুমের দিকে হাঁটা ধরল।

” কোথায় যাবে? খাবে কি? আমার জানামতে কেউ তোমাকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেবেনা। বন্ধুবান্ধবরাতো অবশ্যই নয়। তারা তোমার কুকর্মের সঙ্গী হতে পারে। বিপদের সঙ্গী কখনোই হবেনা। আর পড়াশোনায়ওতো ভাঁড়ে মা ভবানী। এই রেজাল্টে চাকরি জুটবেনা কোথাও। আমি আমাদের সব আত্নীয় স্বজনদের নিষেধ করে দেব, তোমাকে তারা যেন আশ্রয় না দেয়। তা যাবে কখন? ” কল্পনা মোর্তাজা দাঁত পিষে বললেন।

” আমি সত্যিই চলে যাব। তোমরা কেউ আমাকে ভালোবাসোনা। ভাইয়া যা একটুআধটু ভালোবাসে। সে-ই শুধু আমার জন্য চিন্তা করে। এখন যদি ভাইয়া বাসায় থাকত, তবে তোমরা এভাবে কিছুতেই বলতে পারতেনা। ভাইয়া আমাকে প্রটেক্ট করত। আমি এখনই ভাইয়াকে ফোন করে সব জানাব। ভাইয়াই আমার থাকার ব্যবস্থা করে দিবে। চাইনা আমার তোমাদের মত বাবা-মা। ” সিঁড়ির গোড়ায় থাকা চিনামাটির বড় ফুলদানিতে লাথি মারল মাশিয়াত। ভেঙে চুরমার হয়ে গেল কল্পনা মোর্তাজার শখের ফুলদানি। তিনি চায়না থেকে এনেছিলেন জিনিসটা। মেয়ের এমন কান্ড দেখে তিনি রে’গে আ’গু’ন হয়ে গেছেন। এই মুহুর্তে তার ইচ্ছে করছে মাশিয়াতকে একটা থা’প্প’ড় দিতে। কিন্তু তিনি মেয়ের নাগাল পেলে তো। মাশিয়া ততক্ষণে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেছে।

” দেখেছ তোমার মেয়ের রা’গ? যত দিন যাচ্ছে ও ততই বেয়াড়া হচ্ছে। আমাকে যদি শুরু থেকেই শাসন করতে দিতে, তবে আজ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতোনা। বড় হয়েছে, বিয়ে দিতে হবে। ওর এমন মেজাজ দেখলে কোন ভালো পরিবারে ওকে বিয়ে দিতে পারব? কিংবা ও মানিয়ে চলতে পারবে? সব হয়েছে তোমার জন্য। ” কল্পনা মোর্তাজা তার সব রা’গ ঝাড়ছেন স্বামীর ওপর। মিরাজ মোর্তাজা চুপচাপ বসে থেকে স্ত্রী তীক্ষ্ণ বাণ সহ্য করছেন। তার স্ত্রী ভুল কিছু বলেনি। তিনিই মাশিয়াতকে কখনোই শাসনের আওতায় রাখেননি। অগাধ ভালোবাসা আর স্বাধীনতা দিয়েছিলেন মেয়েকে। যার ফলশ্রুতিতে মাশিয়াত আজ এমন বেয়াড়া হয়েছে।

” গুড মর্নিং, স্টুডেন্টস। কেমন আছো সবাই? আজ থেকে তোমাদের নতুন টিচার তোমাদের ক্লাস নিবে। পরিচিত হও তোমাদের নতুন টিচার শাবাব আরমানের সাথে। ” ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের হেড ক্লাসে এসে স্টুডেন্টদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন আরমানের।

” গুড মর্নিং, স্যার। ” সমস্বরে বলল ছাত্র-ছাত্রীরা।

” আরমান, আপনি এবার নিজে স্টুডেন্টদের সাথে পরিচিত হন। বেস্ট অব লাক। ”

ডিপার্টমেন্টের হেড বেরিয়ে গেলে আরমান ধীরেসুস্থে তার ডেস্কের সামনে এসে দাঁড়ায়।

” হ্যালো। আমার নাম ইতোমধ্যেই আপনারা জেনেছেন। আজ থেকে আমি আপনাদের ফিজিক্স ক্লাস নিব। পড়াশোনা নিয়ে যাবতীয় সমস্যায় আমাকে আপনাদের পাশে পাবেন। তো এবার সবার সাথে পরিচিত হই? একে একে আপনারা আপনাদের পরিচয় দিন। ” আরমান লক্ষ্য করল গতকালকের সেই মেয়েটা প্রথম সারিতে বসে আছে। তার চোখমুখে রাগের ছটা। আরমান সেসব পাত্তা না দিয়ে একে একে সবার সাথে পরিচিত হতে থাকে।

” হ্যালো, স্যার। আমি শেহনাজ মাহতাব তৃষা। আপনার সাথে পরিচিত হয়ে ভালো লাগল। ” মাশিয়ার বন্ধু তৃষার পালা আসতেই সে উঠে দাঁড়িয়ে আরমানকে নিজের পরিচয় দেয়।

তৃষার পাশেই ভাবলেশহীন মুখে বসে আছে মাশিয়া। তৃষা ওর মধ্যে নিজের পরিচয় দেয়ার কোন লক্ষ্যণই দেখলনা। এদিকে তৃষা ওকে ফিসফিস করে নিজের পরিচয় দিতে বলছে। কিন্তু মাশিয়া তৃষার কথায় পাত্তা না দিয়ে বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছে। ক্লাস সুদ্ধ ছাত্র-ছাত্রীদের নজর মাশিয়ার দিকে। মাশিয়া যে গতকালের ঘটনা ভোলেনি এটা তারা স্পষ্ট বুঝতে পারছে।

আরমান মাশিয়ার সামনে এসে দাঁড়ায়।

” এক্সকিউজ মি, আপনাকেই বলছি। উঠে দাঁড়ান এবং নিজের পরিচয় দিন। একে একে সবার সাথে পরিচিত হতে হবে আমাকে। আপনি যদি একাই এত সময় নেন, তবে সবার সাথে পরিচিত হওয়া হয়ে উঠবেনা। আর ফলশ্রুতিতে আজকের ক্লাস মিস হবে। আর অবশ্যই আমি সেটা চাইবনা। আপনিও নিশ্চয়ই চাইবেননা? ”

” গতকাল তুমি বলে সবাইকে অর্ডার করল। আর আজকে সাধু সাজছে। সবাইকে আপনি বলছে! এ-তো দেখছি হাই লেবেলের এ্যাক্টর! ” মাশিয়া রা’গে গজগজ করতে করতে বলল। কিন্তু ততক্ষণে কথাটা আরমানের পৌঁছে গেছে। ও ডান ভ্রু উঁচিয়ে সামনে একটু ঝুঁকে বলল,

” গতকাল প্রয়োজন হলে তুই -ও বলতাম। কালকের সিচুয়েশন আর আজকের সিচুয়েশন সম্পূর্ণ আলাদা। গতকাল আমি কোন অসভ্য মেয়েকে তার কৃতকর্মের জন্য পানিশমেন্ট দিয়েছি। তাই তুমি করে বলেছি। কিন্তু আজ আমি আমার ক্লাসে আছি। এবং স্টুডেন্টদের সাথে কথা বলছি। বিষয়টা ভালোভাবে মাথায় ঢুকিয়ে নিন। আর নিজের পরিচয় দিন। ”

এই বাইশ বছরের জীবনে মাশিয়া এত অপমানিত কবে হয়েছে সেটা মনে করতে পারলনা। ও শুধু এতটুকু বুঝল গতকাল আর আজ ওর জীবনের চরম অপমানের দিন। ও সময়, তারিখ হিসেব করে রাখল। সময় আসলে গুনে গুনে এর শোধ নিবে। এরপর উঠে দাঁড়াল।

” আমি মাশিয়াত বিনতে মোর্তাজা। ” রুমের মেঝের দিকে তাকিয়ে বলল সে। সম্ভাষণের ধারেকাছেও গেলনা।

” সিট ডাউন। আশা করব এরপর থেকে বিহেভিয়ারের উন্নতি হবে। ”

পুরো ক্লাস স্তব্ধ। স্টুডেন্টরা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আরমানের দিকে। যে মেয়েকে তারা আজ-অব্দি মাথা নিচু করতে দেখেনি, আজ সে মাথা নিচু করেছে! যাকে দেখে ভয়ে জড়োসড়ো থাকে পুরো ক্যাম্পাসের সবাই, আজ তাকেই আঙ্গুলে নাচাচ্ছে একজন সাধারণ লেকচারার! তবে তারা এটা বেশ বুঝতে পারছে, আগামী দিনগুলো মাশিয়ার জন্য খুব একটা সুবিধার হবেনা। এই ভদ্রলোক তার লক্ষ্যে অবিচল। আর ওদের সাথে পুরো ক্যাম্পাসের সবাইও এটাই চায় যে, মাশিয়াতকে থামানোর জন্য কেউ একজন আসুক।

পরিচয় পর্ব শেষে আরমান ক্লাস নিতে শুরু করল। ওর বোঝানোর দক্ষতায় সবাই মুগ্ধ। মনযোগ দিয়ে সবাই আরমানের কথা শুনছে।

” গার্লস, কি ফ্যাসাদে পরলাম বলতো? নতুন টিচার দেখছি আমাদের নাকে দড়ি দিতে ঘোরাবে। যে মানুষ মাশিয়াকে নাকানিচুবানি খাওয়াতে পারে, সে আমাদের কি করতে পারে ভেবেই আমার পেটের মধ্যে আলোড়ন হচ্ছে। ” ক্যাম্পাসে গোল হয়ে বসে আড্ডা মাশিয়ার গ্যাং। যেখানে মাশিয়া মধ্যমনি।

” মাশিয়া, এভাবে চুপচাপ বসে আছিস কেন? কিছুতো বল। শোন, নতুন স্যার একটু স্ট্রিক্ট। আমাদের এখন থেকেই সাবধান হতে হবে। সবার সামনে কিছু করা যাবেনা। যা করার আড়ালে করতে হবে। ” তৃষা দাঁতে আঙুল কে’টে বলল।

” বেইবি, এভাবে মন খারাপ করে থাকিসনা। আরমান স্যার স্ট্রিক্ট হলে কি হবে, সে কিন্তু হেব্বি স্মার্ট। আমিতো ফুল ক্রাশ খেয়েছি তার ওপর। কি ফিগার মাইরি। ক্লাসে তার দাঁড়ানোর ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছিল মাথা ঘুরে পরে যাব। এমন এ্যাট্রাকটিভ স্যারও হয়! যে করেই হোক তার সাথে সেটিং করতেই হবে। এই তোরা সাহায্য করবিতো? ” মিতুলের কথা শুনে সবাই একযোগে ওর দিকে তাকায়। মাশিয়ার চোখেমুখে অবিশ্বাস।

” কি বললি তুই! ঐ অসভ্য মাস্টারের ওপর ক্রাশ খেয়েছিস! দুনিয়ায় আর কোন ছেলে ছিলনা ক্রাশ খাওয়ার জন্য? শেষে কিনা ঐ করলার মত তিতা মাস্টারের ওপর ক্রাশ খেলি! দূর হয়ে যা আমার সামনে থেকে। যে মানুষ আমাকে অপমান করেছে, তাকেই তোর ভালো লাগতে হলো? ” রে’গে একাকার মাশিয়া।

” বেইবি, সে করলার মত তিতা কিনা সেটা বুঝতে হলে, তাকে টেস্ট করে দেখতে হবেতো। টেস্ট করতে তোরা আমাকে হেল্প করবি? প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ। তোরাতো জানিসই আমার একটু ক্রাশ খাওয়ার অভ্যাস আছে। প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষের ওপর ক্রাশ না খেলে আমি রাতে ঘুমাতে পারিনা। ”

” তৃষা আমার সাথে চল। এই লুচি মেয়ের সাথে আর নয়। আমি ম’র’ছি অপমানে, আর সে ক্রাশ খেয়ে বেড়াচ্ছে। জয়, তুই ওর সাথে থাকতে চাইলে থাকতে পারিস। ” মাশিয়া আর সেখানে বসলনা। তৃষাকে নিয়ে রওনা দিল ক্লাসের দিকে। আর কিছুক্ষণ পর আজকের শেষ ক্লাস শুরু হবে।

মাশিয়ার যাওয়ার পানে অসহায় চোখে তাকিয়ে থাকল মিতুল। জয় ওর পাশে বসে উসখুস করছে।

দোতলায় আসতেই তৃষার ফোন বেজে উঠল। ও ফোন রিসিভ করে একপাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। মাশিয়া সেখানে না দাঁড়িয়ে ফোন টিপতে টিপতে হাঁটছে।

আরমান সবেমাত্র ক্লাস নিয়ে বেরিয়েছে। ওর হাতে একগাদা বই থাকায় সামনে না তাকিয়ে বইয়ের দিকে তাকিয়ে হাঁটছে।

মাশিয়ার নজর গেল আরমানের দিকে। ও আশেপাশে তাকিয়ে দেখল কেউ আছে কিনা। পুরো বারান্দা খালি। এই সুযোগ কাজে লাগল মাশিয়া। ফোন কানে ঠেকিয়ে জোরে হাঁটতে শুরু করল। ফোনের অপরপ্রান্তে কেউ না থাকলেও কথা বলার অভিনয় করছে আর জোরে হাঁটছে। আরমান লক্ষ্যও করলনা ওর দিকে তেড়ে আসছে কেউ। ওর নজর তখনও বইয়ের দিকে।
হঠাৎই কোন কিছুর সাথে ধাক্কা লেগে হাতের বইগুলো পরে যায়। আরমানও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা খায দেয়ালে। কিন্তু মাশিয়ার সেদিকে খেয়ালই নেই। ও কথা বলতে বলতে হাটঁতে থাকল।

আরমান বুঝল ইচ্ছে করেই মেয়েটা এমন করেছে। ও চারপাশে তাকিয়ে দেখল কেউ দেখছে কিনা। কাউকে না দেখে হাঁফ ছাড়ল।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here